ষোল আনাই মিছে

বাংলাদেশে এমন কোন বাবা- মা নেই যারা চাননা তাদের ছেলের বন্ধু বান্ধব সব ভালো পরিবারের ভালো ছাত্র হোক। খারাপ ছাত্র, ঝরে পরা ছাত্র মানেই খারাপ ছেলে এই ট্যাবু থেকে বের হয়ে আসাটা আমাদের পরিবারগুলোর হয়ে ওঠেনি।

অথচ প্রত্যেকের স্বকীয়তা আলাদা আলাদা। আমার এক বন্ধু এখন ফ্লেক্সিলোডের+ গান/ ছবি ডাউনলোড এর দোকান দেয়, এক বন্ধু স্বর্ণের দোকানে কাজ করে, এক বন্ধু বহু আগেই থেকেই মুদি দোকান দেয়, গার্মেন্টস এ চাকরি করে কয়েকজন, ঢাকায় মামা, চাচার কোম্পানিতে কাজ করে, একদল আছে ভাড়ায় সভা, সমাবেশ, মিছিল করে।
এর একটি কাজও আমাকে দিয়ে হবে কিনা সন্দেহ আছে তীব্র। চিন্তা করে দেখুন আপনাকে দিয়ে হবে কিনা?

আরেকটি ভয়াবহ ট্যাবু হল ভালো পরিবার। সমমানের পরিবার না হলে কিছুতেই মেশা যাবে না বন্ধুত্ব করা যাবে না- লন্ড্রিয়ালা, মুচি, নাপিত, মাছ বাজারি অথবা জেলের ছেলে কখনও অভিবাবকের দৃষ্টিতে সম-মর্যাদা পায় না, কমসে কম মাঝির ছেলে ব্যরিস্টার হবার আগ পর্‍্যন্ত।
ঢাকার থেকে এই অবস্থাগুলো বেশির ভাগ সময়ে মফঃস্বল শহরেই অনুভূত হয়। কারণ মুচির ছেলের রাজউক কলেজে পড়ার নমুনা লাখে একটি।

দ্বিতীয় ধাপের হিসাব আরেকটু জটিল। বাবা মা দের এই ভুল চেতনায় পেষণে অনেকেই সেভাবে গড়ে ওঠে। বন্ধু হিসাবে ভালো ছাত্র, পরিমন্ডল হিসাবে তথাকথিত সমমানের পরিবারের সাথে মেশা, এভাবেই একটা শ্রেনীর সৃষ্টি হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলে সব ধরনের ছাত্রদের পড়বার সুযোগ থাকে, এবং সংখ্যাও থাকে বেশি। এখানেও সহজাত ভাবেই সৃষ্টি হয় শ্রেনী বিভাগ। চোখ বন্ধ করে চলা সেই শ্রেনীটি নিজেরাই একটি পরিমণ্ডল সৃষ্টি করে নেয়, সেখানে অন্য কারো প্রবেশের জায়গা থাকে না।

ছোট বেলা থেকে চমৎকার কিছু বন্ধু পেয়েছি, মানুষের সাথে মিশতে পারার গুনটি ছিল, আর কিছু না থাকুক, আমাদের শহরের সকল ৯০ ভাগ ছেলে মেয়ে আমার মায়ের ছাত্র-ছাত্রী হবার কারণে বাবা- মা বাঁধাও দিতে পারেননি মেশার ক্ষেত্রে।

আমার বন্ধু অপু

মৃধা বাড়ির, তাই অপু মৃধা। ক্লাস টু-তে পড়ি তখন, পরীক্ষার হলে আমার পাশে সিট পরেছে অপুর, অপু আমাকে বলল- আমি যদি তাকে অঙ্ক দেখাই তাইলে সে আমাকে একটা বার্মা বড়ই এর আচার কিনে দেবে, সেই থেকে শুরু, আমাদের বন্ধুত্ব তরল হয়ে গেল, আমি প্রথম স্থান অধিকার করি, আর অপু বিশেষ বিবেচনায় নতুন ক্লাসে ভর্তি হয়, একবার অপু আমাকে নিয়ে গেল ওদের গ্রামে দাওয়াত খাওয়াবে বলে, অপু নৌকা বেয়ে আমাকে মরিচ আর ধান ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে ঘুরালো, বিকালে চরের মধ্যে গাছ থেকে ছেড়া কাঁচা মরিচ দিয়ে ব্যাঙ আর কাঁকড়া রেঁধে খাওয়ালো। আমার জন্মদিনে অপু আমাকে একটা বই উপহার দিল বইয়ের নাম- টাইটানিক জাহাজ ডোবার অপ্রকাশিত রহস্য।
শহর থেকে হুন্ডা চেপে আমরা বেরিয়ে যাই, তরমুজ খেতের পাশে শুয়ে শুয়ে অপু আমাকে বলে কিভাবে শহরের সুন্দর মেয়েদের জাদু-টোনা করতে হবে, বান মারতে হবে। কোন গাছের মাথায় তাবিজ ঝুলিয়ে সফলতা পেয়েছে অপু-

অপু ছিল ভীষণ রোম্যান্টিক, এমন কোন সুন্দর মেয়ে শহরে ছিল না যাকে অপু প্রেম নিবেদন করেনি, এক কার্টুন ভার্জিন ড্রিঙ্ক কিনে অপু ছোট ক্লাসের মেয়েদের বিলিয়ে দিত, স্যারের মার কম খায় নি সে তাতে ছেদ পরেনি অপুর চমৎকার প্রেমিক মনের।

সময় গড়িয়ে গেল, আমি মেট্রিক পাশ করে গেলাম, আর অপু ফেল করে গেল। পরের বছর টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করার দরুন রেজিস্ট্রেশন করতে দেয়া হল না, অপু সহ অনেককেই, অপু সবাইকে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিছিল করল, গেট ও স্কুলের জানালা ভাংচুর করল, যার ফলাফল স্বরূপ অপুর আর পরীক্ষা দেয়া হল না, পাশ করা হল না মেট্রিক পরীক্ষায়।

এতিমখানা রোডে অপু বসে গেল মুদি দোকান সাজিয়ে, কথিত আছে নারী খদ্দের এলে অপু দুটো পেঁয়াজ, এক ছটাক তেল বেশিই দেয়, একদিন ফোনে অপু আমাকে বলল -আমার বিয়ে। বিয়ে গড়াতে না গড়াতেই অপুর একটা ফুটফুটে মেয়ে হল, দুষ্টু মেয়ে, কোলে উঠেই আমার মুখে নাকে আঙুল পুরে দিয়েছ আয়েশ করে।

এখন অপু বাবা, অপুর চুরি করে নেভি সিগারেট ফুঁকতে হয় না, অপুর দোকানে বসে আমরা চা -খাই, এলাকার রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করি, অপুর মেয়েকে লজেন্স-চিপস কিনে দেই।
এই বছর অপুর মেয়ে আমার মায়ের স্কুলে ভর্তি হয়েছে, বাবা ও মেয়ে দুইজনই আমার মায়ের ছাত্র- ছাত্রী।

আমার বন্ধু বাবু

বন্ধু বাবু ম্যাট্রিক পাশ তবে ইন্টার ফেল। চমৎকার সুন্দর চেহারার জন্য এলাকায় সুখ্যাতি আছে। আমার দেখা সবচেয়ে তীক্ষ্ণ মেধার অধিকারী বাবু, একবার ডাব চুরি করতে গিয়ে আমাকে সাপে কাটে, বাবু নিজেই ব্লেড পুড়িয়ে আমার পা কেটে মুখ লাগিয়ে রক্ত টেনে নেয়।

প্রেম বাবুকে স্থির করেছে, প্রায় এক বছর মেয়ের বাসার সামনে কমল পয়েন্টে আমরা আড্ডা দিয়েছি, বাবু চিঠি দিত ছুঁড়ে দিয়ে, মেয়ে সেইটা তুলে নিয়ে যেত, এমনি কোন একদিনে সন্ধ্যায় দূর থেকে আমরা দেখতে পেলাম হবু ভাবী ফিরছে, বাবু অন্ধকারেই চিঠি ছুঁড়ে দিল, পরক্ষনে আমরা বুঝতে পারলাম যার উদ্দেশে চিঠি ছোড়া হয়েছে সে আসলে আমদের হবু ভাবী নয়, বরং সাপ্তাহিক কুয়াকাটা ম্যাগাজিন পত্রিকার সম্পাদকের মেয়ে, ফলাফল বড্ড খারাপ হল, পরের সপ্তাহের দৈনিক কুয়াকাটা ম্যাগাজিনের ভিতরে একটি অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ পেল, রিপোর্ট অনুযায়ী এলাকায় মাদকাসক্তের পরিমান বেড়ে গেছে এবং ইভ টিজিং এর মাত্রা বেড়ে গেছে, নাম সহ এবং যায়গা সহ ফলাও করে ছাপা হল নিউজ, আমার মা আমার মুখে সাপ্তাহিক কুয়াকাটা ছুঁড়ে দিয়ে বলল- তোর মত ছেলে না থাকলে কি হয়? দুষ্ট গরুর থেকে শুন্য গোয়াল ভালো।

গরমের সময়ে আমরা এলাকায় টহল দিতাম বিদ্যুৎ চলে গেলে, গান গাইতাম কবিতা পড়তাম মেয়েদের বাসায় সামনে দিয়ে যাবার সময় সুর করে পড়তাম-
আম পাতা জোড়া জোড়া ( জোড়া স্তন)
মারব চাবুক চড়ব ঘোড়া ( স্প্যাঙ্ক ইন বাট)

অথবা

ও বগী তুই খাস কি?
পান্তা ভাত চাস কি?
পান্তা আমি খাই না
পুটি মাছ পাই না
একটা যদি পাই
অমনি ধরে ঝোলার খাওয়া খাই
(প্রেম করার চান্স পাই না, করতেও চাই না, তবে যদি প্রেম হয়েই যায় তবে ছেড়ে দেয়া হবে না)

অল্প বয়সে সব কিছুতেই একটা আলাদা আনন্দ থাকে, সেই আনন্দ হয়ত অনেকের বিরক্তির কারণ তৈরি করে, হয়ত অনেক ক্ষেত্রে ঠিকও নয়, এখনকার আমি নিশ্চয়ই এইরকম কবিতা পড়ে ঘুরে বেরাতাম না।
এই ধরনের অশ্লীল আচরনে অচিরেই অভিবাবকরা বিরক্ত হলেন, প্রচণ্ড গরমে জানালা বন্ধ রাখা শুরু করলেন, একদিন এক ভদ্রলোক টর্চ মেরে বসলেন পেছন থেকে এবং চিনে ফেললেন আমরা কারা, নালিশ চলে গেল বাসায়, সাহস পেয়ে লোকেরা জানালা দিয়েও টর্চ মারে। বাবুর বুদ্ধিতে এরপর আমরা পিছনে কারো পায়ের আওয়াজ পেলেই লুঙ্গি তুলে মাথায় দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম, ভদ্রলোক টর্চ মেরেই নিভিয়ে ফেললেন, লোমশ নিতম্ব দেখতে কারই বা ভালো লাগে?

বাবুর বিরুদ্ধে কিছু চলমান পুলিশ কেস ছিল, বেশিরভাগই হয়রানি মূলক, তবে টাকার অভাবে নাম কাটানো হয়নি, তাই মাঝে মাঝে পুলিশ তাড়া দেয়, এমনই একদিন আমরা এক বন্ধুর নতুন বাসায় ওঠা উপলক্ষে মিলাদ পড়ছি সেই বাসায়, বাবু উশখুশ করতে লাগলো, আমাকে বলল- আমার কেমন কেমন লাগছে, তোরা থাক আমি যাই। কি আজিব, তার ঠিক ১০ মিনিট পর পুলিশ আসলো সেই বাসায় বাবুকে খোঁজ করতে।

ঢাকা থেকে বাসে করে এলাকায় পৌঁছুতাম সেই শীতের কাক ডাকা সকালে, রোজার দিনে বাবু আর আমার বন্ধুরা অপেক্ষা করত আমার জন্য। ব্যাগ নিয়ে আমাকে বাসায় পৌঁছে দিত, আসলে ঠিক কিসের বিনিময়ে বন্ধুত্বের ঋণ শোধ করা যায় আমার জানা নেই।
বাবুর স্ত্রীকে এখনও কন উপহার দেয়া হয়নি, অনেক অনেক সুন্দর সময়ের সাক্ষী বাবু। চা- চত্বরে এখন ফোন-ফ্লেক্সি এর দোকান আছে, ভালোই আয় রোজগার, সুখেই আছে আমার বন্ধু।

আমার বন্ধু সুজন

এলাকায় নাইয়াপট্টির সুজন এক নামে পরিচিত, মাছ ব্যবসায়ী। জেলেদের কাছ থেকে কম দামে মাছ কিনে বেশি দামে বাজারে বেঁচে, সুজন ছিল ভীষণ স্কিনি, বাতাসে উড়ে যাবে টাইপ কিন্তু হুংকারে সবার সেরা, এমনই একদিনে সুজন ঘোষনা দিল আজ নৌকা ভ্রমন, আমি,সুজন ও আরেক বন্ধু নৌকা চেপে বসলাম, নদীর মধ্যে সুজনের শ্বাস উঠল, প্রথমে অজ্ঞান হয়ে গেল, এরপর পাটাতনে চিত হয়ে শুয়ে রইল। আমি নৌকা বাইতে পারি না, এক ফুট আগাই তো দিক পরিবর্তন হয়ে যায়, আরেক ফুট আগাই তো স্রোতে পিছনে নিয়ে যায়

সুজন তখন বিড় বিড় করে গান গাইছে

আমি একটা জুয়ান ছেড়ি
ক্যামনে এত দেরী করি
মনে কয় তোরে টাইন্না লই যাই বেলতলা
পিরিতের খাতা দিয়া জাইট্টা ধইরা মাইরালা

এক মাছ ধরার ট্রলারের পাশে দড়ি বেঁধে আমাদের শহরে আসতে হয়েছে, কিন্তু নদীর মধ্যে বিলীন হয়ে যে রোমান্স পেয়েছি সেইটা পয়সা দিয়ে ক্রুইজ কিনে পাওয়া যাবে না।
সুজনের হালকা গাঁজার অভ্যাস ছিল, এমনি কোন এক রাতে সুজনের অন্ডকোষে মশা আক্রমন করল, ঘুম ও গাঁজার ঘোরে সুজন বিশাল থাবড়া দিয়ে মশা মারতে চাইল, ফলাফলে অণ্ডকোষ ফুলিয়া উঠিল, চিৎকার দিয়া এলাকাবাসীর ঘুম ভাঙ্গায়ে দিল সে, এবং সুজন হাসপাতালে ভর্তি হইল।

আমার এই তিন বন্ধুর কথা বলার একটা ছোট কারণ আছে। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির কনফেশন পেইজে একজন লিখেছে – বাঙলা মিডিয়ামের ছেলেরা পকেটে টেম্পো ভাড়া নিয়ে বের হয়, এর বাইরে একটা পয়সা থাকে না। ময়লা জামা কাপড় থাকে, জেল কেনার পয়সা থাকে না তাই পানি দিয়ে চুল স্পাইক করে, বাঙলা মিডিয়ামের মেয়ে গুলো খ্যাত হয়। এবং এদের সাথে মিশে মিশে এনএসইউ এর ক্লাস নীচে নেমে যাচ্ছে।

বন্ধু ও সিসিবি ব্লগার হুয়ামুন কবীরের একটা মন্তব্য তুলে দিচ্ছি প্রতিক্রিয়ায়-

আমি প্রায়ই একটা কথা বলি,আমাদের দেশের একটা গোষ্ঠী মাথায় গোবর না গু নিয়ে বেড়ে উঠতেছে। এদের কাছে স্মার্টনেস মানে চোস্ত ইংরেজি আর দামী জামা কাপড়। আর ক্লাস মানে হলো পিজাহাট কেএফসি। এদের থেকে না একটা কবি সাহিত্যিক বের হবে, না বের হবে একটা ভালো ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার। ভার্সিটিটাই কমপ্লিট করতে হতো না যদি না একটা সার্টিফিকেট এর দরকার না লাগতো।

আমার মন্তব্য ছিল –

হুমায়ুন কবীর, সেই সাথে আর একটা কথা বলা দরকার, এই ধরনের হেট স্পিচ যতদিন চলতে থাকবে, বিভক্তি থেকেই যাবে। সমস্যার গোঁড়া সেই স্কুলের প্রথম শ্রেনি থেকে, ভালো ছাত্ররা একটা আলাদা বলয় তৈরি করে, লাস্ট বেঞ্চিরা আরেকটা বলয়, দুইটা বলয় বিপরীত মেরুর হয়, এবং জীবনেও কখনও বিপরীত মেরুকে গ্রহন করতে পারে না।
আর যারা ইংরেজি মাধ্যমে পড়েছে ছোট বেলা থেকে এরা খুব সাধারন ভাবেই দলছুট শ্রেনি। এরা না মেশার সুযোগ পায়, না মিশতে চায়- এভাবেই চলে আসছে, চলবে। জানি না শেষ কোথায়

হুমায়ুন কবীরের প্রতিমন্তব্য

ইস্যুটা ভালো ছাত্র খারাপ ছাত্রের ব্য্যপার না। আমি বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি জীবনের কোন না কোন প্রান্তে এসে ব্যাকবেঞ্চাররা আর পিছনে থাকেনা,তেমনি সামনে বসা ছাত্রগুলোও সবসময় আর সামনে থাকেনা। ইস্যু হলো মানসিকতা। এখানে কথা হচ্ছে সামাজিক স্ট্যাটাস আর অর্থবিত্তের। একটা শ্রেণী শুধুমাত্র বাবার টাকার জোরে নিজেকে ক্লাসি ভাবতেসে এবং অন্যদের ক্ষেত বলতেসে। হ্যা এটাও ঠিক এই শিক্ষাটাও সে তার বাবা মার কাছ থেকেই পেয়েছে। শুধু বাবা মা নয়,আমাদের সমাজও আমাদের এটাই শিক্ষা দেয়। কয়েকদিন আগের স্ট্যাটাস এ আমি এই কথাটাই বলতে চেয়েছিলাম। সত্যি কথা বলতে কি আমরা এখনো জানিই না কি নিয়ে গর্ব করতে হয় আর কি নিয়ে করতে হয়না। এইসব নাদান পারিন্দে যে কবে বুঝবে “সেটা নিয়েই গর্ব করো যেটা তুমি অর্জন করেছো”

উপসংহার –
আমাদের বাবা মা কি আসলেই আমাদের মিশতে দিচ্ছেন সবার সাথে? আমরা কি সবাইকে মাপার মতো মিথস্ক্রিয়ায় অংশগ্রহন করি? এই একটা অংশের এমন ভয়াবহ চিন্তা ভাবনার কবে অবসান ঘটবে? সত্যিকারের মগজ খাটিয়ে এরা কবে সুস্থ চিন্তা করবে?
আমার ক্ষেত্রে আমি তো চাই না ইংরেজি মাধ্যমের বন্ধু-বান্ধব। আমার কাছে তাদের ইন্টারেস্টিং মনে হয় না, বিচক্ষন মনে হয় না, আমার বন্ধুদের সাথে আমি স্রেফ হারিয়ে যেতে পারি, আমি জানি যত খারাপ কিছুই ঘটুক না কেন আমাকে তারা ফিরিয়ে আনবে সহিহ সালামতে। আমি ভরসা করতে পারি তাদের উপর, আমার ক্লাসের দরকার নেই আমার দরকার নিখাত বন্ধুত্ব। এরা ঠিক কবে বুঝবে? এবং এই ধরনের হেট স্পিচ বন্ধ করবে? জীবনে যদি ভালো এবং আনন্দদায়ক মানুষের সাথে মেশা না যায়, তবে সেই উঁচু ক্লাস দিয়ে আমরা কি করব? বন্ধু তো কোন শ্রেনি মেইনটেইন করার জন্য নয়, বরং ভালবাসার জন্য, ভরসা করার জন্য।
শেষ করছি সুকুমার রায়ের ছড়া দিয়ে।

ষোলা আনাই মিছে
সুকুমার রায়

বিদ্যেবোঝাই বাবুমশাই চড়ি সখের বোটে,
মাঝিরে কন, ”বলতে পারিস সূর্যি কেন ওঠে?
চাঁদটা কেন বাড়ে কমে? জোয়ার কেন আসে?”
বৃদ্ধ মাঝি অবাক হয়ে ফ্যাল্ফ্যালিয়ে হাসে।
বাবু বলেন, ”সারা জীবন মরলিরে তুই খাটি,
জ্ঞান বিনা তোর জীবনটা যে চারি আনাই মাটি।”

খানিক বাদে কহেন বাবু, ”বলতো দেখি ভেবে
নদীর ধারা কেমনে আসে পাহাড় থেকে নেবে?
বলতো কেন লবণপোরা সাগর ভরা পানি?”
মাঝি সে কয়, ”আরে মশাই অত কি আর জানি?”
বাবু বলেন, ”এই বয়সে জানিসনেও তা কি
জীবনটা তোর নেহাৎ খেলো, অষ্ট আনাই ফাঁকি!”

আবার ভেবে কহেন বাবু,বলতো ওরে বুড়ো,
কেন এমন নীল দেখা যায় আকাশের ঐ চুড়ো?
বলতো দেখি সূর্য চাঁদে গ্রহণ লাগে কেন?”
বৃদ্ধ বলে, ”আমায় কেন লজ্জা দেছেন হেন?”
বাবু বলেন, ”বলব কি আর বলব তোরে কি তা,-
দেখছি এখন জীবনটা তোর বারো আনাই বৃথা।”

খানিক বাদে ঝড় উঠেছে, ঢেউ উঠেছে ফুলে,
বাবু দেখেন, নৌকাখানি ডুবলো বুঝি দুলে!
মাঝিরে কন, ” একি আপদ! ওরে ও ভাই মাঝি,
ডুবলো নাকি নৌকা এবার? মরব নাকি আজি?”
মাঝি শুধায়, ”সাঁতার জানো?”- মাথা নাড়েন বাবু,
মূর্খ মাঝি বলে, ”মশাই, এখন কেন কাবু?
বাঁচলে শেষে আমার কথা হিসেব করো পিছে,
তোমার দেখি জীবন খানা ষোল আনাই মিছে!”

৫,০৮৩ বার দেখা হয়েছে

৩৬ টি মন্তব্য : “ষোল আনাই মিছে”

  1. সামিয়া (৯৯-০৫)

    চমৎকার একটা বিষয় নিয়ে ব্লগ লিখেছিস, কিন্তু আরেকটা বিষয়কে কোন পাত্তাই না দিয়ে। বন্ধুত্বের মাঝে শ্রেণীবিভাগ যেমন চিন্তার বিষয়, তেমন ইভটিজিং ও সমাজের পচুর চিন্তার বিষয়।

    গান গাইতাম কবিতা পড়তাম মেয়েদের বাসায় সামনে দিয়ে যাবার সময় সুর করে পড়তাম-
    আম পাতা জোড়া জোড়া ( জোড়া স্তন)
    মারব চাবুক চড়ব ঘোড়া ( স্প্যাঙ্ক ইন বাট)

    তোমাদের এই কবিতা যে মেয়েরা বুঝত না তা ভাবার কোন কারণ দেখি না। যেই মেয়ের বাসার সামনে দিয়া এই কবিতা পড়তে পড়তে যাইতেছ, তার অস্বস্তিটা একবার কল্পনা করো। ছোটবেলায় না বুইঝা করসো, এখন বড় হয়ে গল্প মারতেসো। চমৎকার। এক সমস্যা নিয়ে ব্লগ লিখসো, যেটার মধ্যে আরেক সমস্যারে সমস্যাই ধরতেসো না। পুরাই দৃষ্টিভঙ্গী। চোখ থেকে পুরুষত্বের চশমা খোলো। আমাদের কিছু কিছু ব্যবহারে মানুষ বিরক্ত হয়, এইটা জাহির করার বিষয় না।

    জবাব দিন
    • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

      প্রচুর ইংরেজী শব্দ ব্যবহার করা লাগতে পারে। আগে থেকেই দুঃখিত। চেষ্টা করব বাংলায় বলতে।

      অবজার্ভেশানের সাথে সম্পূর্ণ একমত কিন্তু হামীমের লেখাটা এভাবে আসার পেছনে আমার নিজের কিছু ব্যাখ্যা আছে।

      ১) প্রত্যেকটা মানুষের পছন্দ অপছন্দ, চিন্তা ভাবনা, এবং সেই অনুযায়ী আচরণ একধরণের লেয়ার কেক এর মত। লেয়ারটা নিচ থেকে উপরে এভাবে উঠে যায় ভ্যালুজ>>বিলিফ বা বিশ্বাস>>ইভালুয়েটিভ বিলিফ>>এটিটিউড বা মনোভাব। এই লেয়ার কেক এর নাম হলো ভার্টিক্যাল স্ট্রাকচার ডায়াগ্রাম অফ এটিটিউড। অর্থাৎ একজন মানুষের একটি বিশেষ বিষয়ের প্রতি মনোভাব এই স্ট্রাকচার অনুসরণ করে তৈরী হয়। স্ট্রাকচারটি আরো বিস্তারিত ও জটিল। এর সাথে আরো অনেক ফ্যাক্টর যোগ হয়। যাই হোক, এই লেখাটা যখন হামীম লিখছে যতদূর বুঝছি তার এটিটিউড সিস্টেমটা শুধু কাজ করছে সামাজিক বৈষম্যের উপর। এই সিস্টেমের মাঝে (লেখার সময়) নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ও ইভ টিজিং সে চাইলেও গেঁথে নিতে পারবে না। আমাদের ধারণা চাইলেই পারি কিন্তু আসলেও সম্ভব হয় না। আর সেই কারণেই

      এক সমস্যা নিয়ে ব্লগ লিখসো, যেটার মধ্যে আরেক সমস্যারে সমস্যাই ধরতেসো না।

      এই ব্যাপারটা শুধু দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই শুরু নয়। এর আগে ঐ জটিল লেয়ার কেক আছে। যেটা আপাদত শুধু একটি বিষয় নিয়ে চিন্তা করছ - সামাজিক বৈষম্য। হামীমকে ইভ টিজিং নিয়ে লিখতে বলা হোক, সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাবে লেখা আসবে কারণ তখন লেয়ার কেক কাজ করবে নারী ও ইভ টিজিং নিয়ে। যদিও ইভ টিজিং এর মাঝে সামাজিক বৈষম্যের একটি বড় অবদান আছে কিন্তু আমরা সাধারণত সব কিছু এক সাথে চিন্তা করি না।

      ২)

      পুরাই দৃষ্টিভঙ্গী। চোখ থেকে পুরুষত্বের চশমা খোলো।

      আমার প্রথম কথার প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় কথা। যেই কগনিটিভ ফিক্সটা (cognitive fix) চাওয়া হচ্ছে -- পুরুষত্বের চশমা খুলে ফেলা -- সেটা আসলে এত সহজ নয়। এখানে মনোভাবের সাথে যোগ হবে মানুষের আচরণ। একটি বিষয়ে মানুষের মনোভাবের পরিবর্তন আসতে পারে তারমানে এই না যে সেই মানুষের আচরণেও পরিবর্তন আসবে। আমরা ধারণা করে থাকি একটি বিষয়ে কোন মানুষের মনোভাব যা আচরণের ক্ষেত্রেও তাই হবে। ব্যাপারটা এত নিশ্চিতভাবে জলবত তরলং না। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে মনোভাব ও আচরণ দুই মেরুতে অবস্থান করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তারা যেকোন এক মেরুতে অবস্থান নেয়। 'আচরণ' একটি তাৎক্ষণিক ও পরিস্থিতি কেন্দ্রিক বিষয়। অপরদিকে লেখা বা মন্তব্য সুচিন্তিত তথা মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। সেই সাথে আগেই বলেছি প্রত্যেকটি মনোভাব সাধারণত একটি বাক্সের মধ্যে থেকে কাজ করে। সেই কারণে আমার মতে লেখায় যা উঠে আসে নি বা যা দেখছি তা খুবই বিষয়কেন্দ্রিক যেটার সাথে তার আচরণের মিল নাও থাকতে পারে।

      কাউকে খাট করার জন্য কথা গুলো বলি নাই। বলেছি জানার জন্য, জানানোর জন্য ও বোঝার জন্য। আশা করি আমার মন্তব্যে কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হয় নাই।


      \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

      জবাব দিন
      • জিহাদ (৯৯-০৫)

        কিছু কিছু ব্যাপারে একমত হতে পারলাম না। সামাজিক বৈষম্য নিয়ে লিখতে গেলে অন্য কোন বিষয়ে আলোকপাত করা যাবেনা ব্যাপারটা এমন কি? আমার মনে হয় এই ব্লগ নিয়ে যে কনফিউশনগুলা সৃষ্টি হইসে তার প্রধাণ কারণ তাওসীফ অকপটে ওর ঘটনাগুলা শেয়ার করসে কিন্তু একজন পরিণত মানুষের দৃষ্টিভঙি থেকে ব্যাপারগুলা নিয়ে এখন সে কী ভাবছে সে বিষয়ে কোথাও কিছু উল্লেখ নাই। সে ব্যাপারে পরিষ্কার করে কয়েক লাইনে এই বিষয়গুলো নিয়ে তার বর্তমান মনোভাব লিখে দিলে পাঠকের মনে হয়তো এ কনফিউশনগুলা তৈরি হতোনা।


        সাতেও নাই, পাঁচেও নাই

        জবাব দিন
        • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

          সঠিক তবে আমি সম্ভাব্য একটি কারণ দেখিয়েছি যেটা সাধারণত এভাবেই কাজ করে। পুরো ব্যাপারটা তুলে ধরবার মত আমার কাছে যথেষ্ট তথ্য নাই। কিন্তু মোটাদাগে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন বিষয়ের প্রতি মনোভাব কম্পার্টমেন্টালাইজড। একই সাথে মানুষের মনোভাব ও আচরণ সবসময় একই রেখায় থাকে না। এগুলো সোশ্যাল সাইকোলজিস্টদের গবেষণালব্ধ কথা। এরপর থেকে এনোটেটেড বিবলিওগ্রাফী দিয়ে দিব যাতে কি বলছি সবার পড়ে যাচাই করার সুযোগ থাকে।


          \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
          অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

          জবাব দিন
    • তাওসীফ হামীম (০২-০৬)

      আপা সত্যি মানুষরে জ্বালানোর কর্তাম না, নিজেদের টাল্টি ফাল্টির জন্য করতাম, ঘটনার বর্ননা দিসি তো, এইজন্য একটু চোখে লাগতেসে। এই নিয়া আমাদেরও অনেক ঝামেলা হইসে, মাইর টাইরও খাইসি, পরে সোজা হয়ে গেসিলাম


      চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।

      জবাব দিন
  2. রেজা শাওন (০১-০৭)

    সুন্দর একটা ব্যাপারকে তুলে এনেছ হামীম। ঘটনা হচ্ছে, সমাজ কিছু ব্যাপার মাপকাঠি তৈরি করে দেয়। স্কেলের এই ব্যাপারটা আবার বিভিন্ন ক্লাসে বিভিন্ন রকম।

    ক্যাডেট কলেজর এই একটা ব্যাপার ভাল আছে। ছোট একটা উদাহারন দেই। মনে কর, কলেজে ক্লাস টেনের আগে ঘড়ি পড়া নিষেধ। কেন নিষেধ এই ব্যাপারটার কারণ খুঁজতে গিয়ে মনে হয়েছে, পারমিট করলে সেই বয়সে এক একজন এক এক ঘড়ি আনতো। হয়তো কেউ কেউ আনতেই পারতো না। যেই ব্যাপারটা একটা ক্লাস ক্রিয়েট করতো। আমরা কালো প্যান্টের সাথে ব্লেট পড়তাম না, আমার মনে হয় এখানেও অথরিটির একই মনস্তত্ত্ব কাজ করে।

    আমার মনে হয় পরিবার থেকেই এই ব্যাপারগুলো খুব ছোট ছোট কিছু অভ্যাস, গল্প, আচার আচরণ এসবের মাধ্যমে চেঞ্জ করা সম্ভব। ইভ টিজিং এর ব্যাপারেও একই চিকিৎসা। বড়সর কোন সামাজিক বিপ্লবের দরকার নাই। সহজ জিনিস পোলাপানকে সহজে বুঝালেই আমাদের সামনের প্রজন্ম এইসব সমস্যামুক্ত হবে আশা করা যায়।

    জবাব দিন
  3. নাফিস (২০০৪-১০)

    আমারো কিছু ফ্রেন্ড আছে এরকম এবং ওদের জন্য আমি গর্ব বোধ করি... আসলে তথাকথিত এই শ্রেণীবিভাগটার পুরোটাই কিছু মানুষের মনে.. তাদের মনগুলো হারপিক দিয়ে পরিস্কার করা দরকার।
    লেখায় একটা বড়সর প্লাস! এ বিষয়ে লেখাটা সময়েরই দাবি ছিল .. :thumbup:

    জবাব দিন
  4. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    হামীম,

    তোমার বন্ধুভাগ্য রীতিমত ঈর্ষনীয়!

    সামিয়ার প্রশ্ন আর তার উত্তরে মোকাব্বিরের বিশ্লেষণটাও চমৎকার লাগল। 🙂

    (এদের সবার সিনিয়র হিসেবে হালকা ভাব নিয়ে ফেললাম আর কি 🙂 )


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
  5. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    আম পাতা জোড়া জোড়া আর চাবুক মারা, ঘোড়ার পিঠে ওঠার যে ভিন্ন মানে থাকতে পারে তা এই প্রথম জানলাম।
    আমি দেখি শিশু রে!

    আর লুঙ্গি মাথায় দিয়া হাটি নাই তা না, কিন্তু সেইটা মনের আনন্দে, লোক দেখানোর জন্য।
    তোরা তো খুব খারাপ ছিলিরে।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  6. দিবস (২০০২-২০০৮)

    আমার বন্ধুরাও নানান জাতের,নানান ক্লাসের। ছোটবেলা থেকেই বাসা থেকে কারো সাথে মেশা নিয়ে তেমন কোন বাধ্যবাধকতা ছিল না। মন খুলে মিশতাম সবার সাথে।

    সুকুমার রায়ের কবিতাটা একসময় মুখস্ত ছিল, আজকে দেখলাম ভুলে গেছি। বয়স হইতেছে বোঝা যায় 🙁


    হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি

    জবাব দিন
  7. আহমদ (৮৮-৯৪)

    লেখাটা পড়লাম। মন্তব্যগুলোও মনোযোগ দিয়ে পড়লাম। হামীমের লেখাটা প্রথাগত লেখার বাইরের বিষয় নিয়ে লেখা, বেশ ভাল লাগল। সামিয়ার মন্তব্যে চিন্তায় পড়ে গেলাম। মোকাব্বিরের ব্যাখ্যাটা তো এককথায় দারুন। আর মাহমুদ যেভাবে ভাব নিয়ে ফেলল, তাতে আমি আর ভাব নেবার সুযোগ পেলাম না।
    :clap: :clap: :clap:


    চ্যারিটি বিগিনস এট হোম

    জবাব দিন
  8. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    শবেবরাত নিয়ে ফেসবুকে নানা স্ট্যাটাস পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল, আমাদের ছোটবেলাটা নিয়ে কিছু লিখি। হামীমের ব্লগটা পড়ে সেটা আরো চাড়া দিয়ে উঠলো। দেখা যাক... 🙁

    আর ইভটিজিং! এখনো মনে আছে, রিকশায় আমরা দু'তিনজন ছেলে থাকলে নিঘার্ৎ পাশের রিকশার একাকি মেয়েটা কিছু শুনতো। আবার কখনো উল্টোটাও হয়েছে। রিকশায় দু বা তিনজন স্কুল বা কলেজ পড়ুয়া মেয়ে একাকি আমাকে টিজ করেছে। তবে সেসব বেশির ভাগই নির্দোষ বিনিময় ছিল নিশ্চয়তা দিতে পারি। 😕


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : সামিয়া (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।