“পরকীয়া”-জিভের লালা ধরে রাখা দায়

মচমচে নতুন একটা বিষয় উঠে এসেছে,তা বেশ অনেক দিন পর। শেষ টা ছিল সেই কানিজ আলমাস। আসলে এখনকার বিষয় টা আর বেশি মচমচে। কারন পুরানো একটি বিষয় আবার উঠে এসেছে নতুন রঙ লাগিয়ে।আর কিছুই না রুমানা মঞ্জুরের কথাই বলছি।

হাসান সাইদ মারা যাবার পর পরেই জল ঘোলা হয়ে গেল।আর ঠিক তখনই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেল “ইরানি বন্ধুর” সঙ্গে রুমানা মঞ্জুরের ছবি আর ছাপানো মেইল।লোকে বলে” ভাই আর ছবি দেন নারী আর চুচিল সমাজে মুখে গুইজা দেই” কেউ কেউ বলে “রুমানা মঞ্জুর কে সমর্থন করা হবে পরকীয়া আর বেশ্যা বৃত্তকে সমর্থন করা” কেউ বা বলে ” চুশিল সমাজ সকল মেয়ে বউকে এভাবে টেনে বের করে এনে ভোগ করতে চায়”

যাই হোক। পুরো ব্যাপারটার একটা পোস্ট মরটেম হওয়া দরকার।
রুমানা মঞ্জুর দেশের বাইরে পড়াশুনা করছিলেন। তখন যে কারো সাথে তার বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠতেই পারে।এটা সম্পূর্ণই নির্দোষ একটা ব্যাপার।এছাড়া বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যে এ ধরনের ছবি প্রায় সব ছাত্রছাত্রীরই থাকে। এটা তেমন কিছু প্রমান করে না। আর কথা হল এত দিন ছবি কই ছিল? যখনি হাসান সাইদ মারা গেলেন তখনি ছবি গুলো প্রকাশ পেল,কেমন একটু বেখাপ লাগে। সব থেকে বড় কথা এমন নির্দোষ ছবি আমরা নিজেরাও অনেক তুলে থাকি। মেইলের কথা আসে, কথা হল মেইলের যুক্তি কতখানি? রুমানা মঞ্জুর যদি দোষী হয়ে থাকতেন উনি নিজেই সকল মেইল মুছে ফেলতেন।আমি হলে তাই করতাম।

পরের কথা, না হয় মেনে নিলাম উনি পরকীয়া করতেন, শারীরিক সম্পর্কেও জড়িয়েছিলেন। তাই বলে এখন কি ওনার উপর করা অত্যাচার মিথ্যা হয়ে যাবে,আমাদের সব ভুলে যেতে হবে? আমাদের ভোল পাল্টে রুমানাকে বেশ্যা বলে দাবি করতে হবে?
হাসান সাইদ যদি সব জেনে ফেলেছেন তবে উনি বিবাহ বিচ্ছেদের সিধান্ত নিলেন না কেন? জোর করে সম্পর্ক টিকেতে ছেয়েছিলেন? মেয়ের মুখ চেয়ে?
নির্মম সত্য হল ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক কখনও জোড়া লাগে না,আর যদি সেই অসুস্থ সম্পর্ক টিকে থাকতো সেটা ছোট্ট মেয়েটার জন্য হত আর অনেক বেশি ক্ষতিকর। কারন মানুষ পরিবার থেকে শেখে।

সব থেকে বড় কথা হল বিবাহ নামক বন্ধন কি মানুষকে কারাবন্দী করে? রুমানা মঞ্জুর কি বিয়ে করে কারাবন্দী হয়েছিলেন? অনেকে বলে থাকে যদি অনেক আগে থেকে অত্যাচার হয়েছে ওনার উপর,উনি জানান নি কেন? হয়ত শেষ সংঘর্ষ এই সিধান্ত থেকেই হয়েছিল।
পুরুষের বহুগামিতা আমাদের কাছে অনেক ক্ষেত্রেই গ্রহণযোগ্য, কিন্তু নারীর ক্ষেত্রে চুন থেকে পান খসলেই আমি বিদ্রোহী হয়ে উঠি। অনেক কেই দেখলাম হাত তুলে মোনাজাত করতে “খোদা আমাদের জীবনে রুমানা মঞ্জুর দিয়ো না তুমি”।
মানসিক ভাবে আমরা কতটা সুস্থ? আমরা নারী স্বাধীনতা কতখানি গ্রহন করতে পেরেছি? কত টুকু মর্যাদা দিতে পেরেছি নারীকে? নিমিষেই আমাদের সবার সহানুভুতির পাত্রি রুমানা হয়ে গেলেন পড়ালেখা করা বেশ্যা? হয়ে গেলেন হাই সোসাইটির চিক্স?
উনি একজন শিক্ষিকা তাই ওনার বেপারটা আলোকিত হয়েছে, আমাদের গ্রামে গ্রামে এমন পিঠের চামড়া খুয়ানো কিম্বা চোখ খুয়ানো বহু গৃহবধু রয়েছেন। রয়েছেন রুটিন করে মার খাওয়া অনেক মহিলা। যাদের অনেকের বিরুদ্ধেই পরকীয়ার অভিযোগ নেই।

একটা ব্যাপার ভুলে গেলাম, বলা হচ্ছে রুমানা নাকি অন্ধের অভিনয় করছেন। আচ্ছা অন্ধের অভিনয় করে টার লাভ কি?আমি কোন লাভ দেখিনা লস ছাড়া

রোমানা কি আসলেই অন্ধ?
আমার উত্তরঃ অন্ধের ভূমিকায় অভিনয় করে রোমানার প্রচুর ক্ষতি হওয়া ছাড়া কোন লাভের সম্ভাবনা দেখি না। তিনি পিএইচডির সুযোগ হারাচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিও হারাচ্ছেন। কানাডার ইমিগ্রেশন পলিসি এত সহজ যে তার মত যোগ্যতাসম্পন্ন একজন মহিলা এমনিতেই সেখানে ইমিগ্রেশন পেয়ে যেতেন। এই নাটক করার তার কি প্রয়োজন?(একজন ব্লগারের উত্তর তুলে দিলাম)
চরিত্র। পুরুষের বেলায় সাত খুব মাফ।আমরা আর কত নীচে নামবো? এই সব নারীরা আমাদের সমাজের,তাদের ছোট করে আমরা কোন সমাজ আর কোন ধর্ম উদ্ধার করছি?
সব শেষে আমার খুব প্রিয় একটা বচন
“প্রত্যেক পুরুষের মাঝেই একটা করে পশু থাকে,কেউ কেউ পশুটাকে রাখতে পারে মেনি বেড়ালের পর্যায়ে, আর কারো কারো পশুটা বেড়িয়ে আসে হায়েনা রূপ ধরে”

৯,০২১ বার দেখা হয়েছে

৮৪ টি মন্তব্য : ““পরকীয়া”-জিভের লালা ধরে রাখা দায়”

  1. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
    রুমানা মঞ্জুর দেশের বাইরে পড়াশুনা করছিলেন। তখন যে কারো সাথে তার বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠতেই পারে।এটা সম্পূর্ণই নির্দোষ একটা ব্যাপার।

    - ছোটভাই, কোন মাপকাঠিতে এই সিদ্ধান্তে আসলে, জানতে মঞ্চায় 🙁 [বিদেশে আরো শত শত বাংলাদেশী পড়তে আসে- এই বিষয়টা স্মর্তব্য]।

    পরের কথা, না হয় মেনে নিলাম উনি পরকীয়া করতেন, শারীরিক সম্পর্কেও জড়িয়েছিলেন। তাই বলে এখন কি ওনার উপর করা অত্যাচার মিথ্যা হয়ে যাবে,আমাদের সব ভুলে যেতে হবে?

    কোনকিছুই ভোলার দরকার নাই, কিন্তু মনে রাখার দরকার আছে বৈ কি! রুমানা-মঞ্জুর বনাম সাইদ হাসানের কেস বিবেচনায় এইসব মনে রাখা/না-রাখার গুরুত্ব ঠিক ততোটাই যতটা একটা মানুষ হত্যা কে জাস্টিফাই করার জন্য দরকার।

    আর খানিকটা অপেক্ষা করে দেখি, সেই মেইলটা আসলেই রুমানা মঞ্জুরের, নাকি ফেক। তারপর এই বিষয়ে আমার বক্তব্য বলবো। আপাততঃ কোন পক্ষ নিচ্ছি না [অবশ্য আমার এই আপাতঃ 'পক্ষ না-নেওয়াকে'ও সাইদ হাসানের পক্ষে বলে মনে করার যাবতীয় সম্ভাবনা বাংলা ভার্চুয়াল জগতে প্রবল ভাবেই বিদ্যমান]।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
    • আন্দালিব (৯৬-০২)

      মাহমুদ ভাই, শুনেছিলাম পক্ষ না নিয়ে কেউ কোথাও দাঁড়াতে পারে না। নিরপেক্ষও তো একটা পক্ষই। আপনি ঠিক কোন জায়গাতে দাঁড়াচ্ছেন এই ইস্যুতে, এটা একটু ক্লিয়ার করেন।

      ক) হাসান সাঈদ আত্মহত্যা করেছে - এটা শুনলে কোন পক্ষে যাবেন?
      খ) রুমানা মঞ্জুর পরকীয়া করেছে - এটা শুনলে কোন পক্ষে যাবেন?
      গ) ক ও খ সত্য হলে কোন পক্ষে যাবেন?
      ঘ) রুমানা মঞ্জুর পরকীয়া করে নি এবং হাসান সাঈদ আত্মহত্যা করেছে - এটা শুনলে কোন পক্ষে যাবেন?

      এভাবে অনেকগুলো সম্ভাবনার সুতো অনাথ পড়ে আছে। সম্ভবত আপনি কোনো পক্ষ না নেয়াতেই। প্লিজ জানাবেন।

      জবাব দিন
      • হোসেন (৯৯-০৫)

        কবে যেন পেপারে ফরাসী দার্শনিক জা পল সাত্রে নিয়ে পড়েছিলাম যে তিনি সবসময়ই একটা পক্ষ নিতেন। সত্যির সমর্থন করতে গেলে কোন না কোন পক্ষ নিতে হয়। নিরপেক্ষতা বলে আসলে কিছু নেই। নিরপেক্ষতার কাছাকাছি অভদ্র সংজ্ঞা হচ্ছে পিঠ বাচানো। সামাজিক মুখোশটা ধরে রাখা। আমার মনে হয় না রুমানা সাঈদের ঘটনায় পক্ষ নেবার মত তথ্যের অভাব আছে। এটা খুব খেয়াল করে। কারন সেই মেইল সত্যি হলে আমরা আম জনতা কি কিছু বলতে পারি? হাসান সাঈদ এর বৌ তার প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে কি না এটা নিয়া থার্ড পার্সনদের কি মাথা ঘামানোর কিছু আছে? থার্ড পার্সন তখনই মাথা ঘামাবে যখন একজন আরেকজনের চোখ তুলে নেবার চেষ্টা করবে। তার আগে কি থার্ড পার্সনদের মাথা ঘামানো উচিত। কে কার সাথে শুবে সেটা নিয়ে সমাজের এত মাথা ব্যাথা কেন। খেয়াল করেন এই পুরা ঘটনা কিন্তু "প্রভা রাজীব সিকুয়েল টু"। প্রভার ভিডু রাজীব ছারনের পরও সমাজ সেবী এবং কাকলী হোটেল গামী আমজনতার দল রব তুলেছিল "রাজীব ঠিক করছে। এতদিনের প্রেমের পর আরেকজনরে বিয়া করছে। সো রাজীব বাঘের বাচ্চা"। মজাটা হইতেছে রাজীব কেন ভিডু ছারছিল? কারন রাজীব জান্ত যা হওনের প্রভার হবে। তার মানে রাজীব এই সমাজের মেয়েগো উপরে যে আজাইরা "শুচিতার" আবরণ আমরা আরোপ করি সেইটারে এক্সপ্লোয়েট করছে। এইটা অনেকটা এইরকম, যেহেতু দুর্বলতা নিয়ে সুযোগ নেয়া। আমরা কেউই চাই না আমাগো ব্যাক্তিগত ব্যাপার স্যাপার নিয়া পাব্লিক জাস্টিসের সার্কাস চলুক। সুতরাং রুমানা ম্যাডাম কার সাথে শুইছে আর কার সাথে প্রেম করছে এই বিষয় নিয়া কথা কওন অনাধিকার চর্চা এবং ইন এপ্রোপিয়েট। তার পরকীয়া লইয়া কথা কওনের এক্তিয়ার আমাগো নাই। তয়, সাঈদ যে রুমানারে মারছে, কিংবা যদি সাইদ কিভাবে পুলিশ কাস্টডীতে মারা গেল সেইগুলা পাব্লিক ব্যাপার, এইগুলা নিয়া জাস্টিফিকেশন হওন দরকার। মামলা হওন দরকার। সঠিক ঘটনা জানন দরকার। কিন্তু রুমানার পরকীয়া নিয়া না। রুমানার পরকীয়া যদি মামলার সাথে রিলেভেন্ট হয় তাহইলে সেইগুলা লইয়ার গো কাম ঘাটন। আমার আপনার সেই রাইট নাই। আমরা গসিপ করি ভালো কথা। কিন্তু জাস্টিফিকেশন খাড়া করনের রাইট আমাগো নাই। আর রুমানা ম্যাডাম আসলেই আন্ধা হইছে কি না সেঈটা একটা নোঙ্গরা কুটতর্ক। আন্ধা হইলেই কি আর না হইলেই বা কি? সাইদের কাজকর্মের দৃষ্টিকোন থিকা আন্ধা হওন টা কথা না, সাইদ যে আন্ধা বানানোর ট্রাই করছে সেইটাই কথা।

        আমি যতদুর জানি মাহমুদ ভাই প্রসিকিউটরও না ডিফেন্স লইয়ারও না। তাহলে উনি মেইলের সত্যতা জানতে চাইতেছেন সেইটা সিটিজেন ভার্ডিক্টের জন্যে। সেইটার এক্তিয়ার উনার আছে বলে আমার মনে হয় না।

        পাশাপাশি যদি সত্যি সাইদ খুন হইয়া থাকে তাহলে এইসকল মেইল ফেইক হইলেও সেটা খারাপ কাম। মেইল টা লিগালী গুরুত্বপূর্ণ এভিডেন্স হইলেও পাব্লিক নৈতিকতা ইত্যাদির দৃষ্টিকোন থাইকা মেইলের কোন বেইল নাই। কারন সমাজের কোন সে নাই হেগো ব্যাক্তিগত জীবনে নাক গলানোর।
        শেষে মেইন ইস্যু রুমানারে আক্রমন করা হইছে। আর সাইদের রহস্যময় মৃত্যু হইছে। এই ঘটনা দুইটা নিয়ে চিন্তা করলে ঘটনা ভিত্তিতে ব্যাপার যথেষ্ঠ সাদা কালো। এই কাহানে গ্রে এড়িয়ার আমদানি করা হইলে বুঝতে হবে আমদানিকারকের অন্য উদ্দেশ্য আছে।


        ------------------------------------------------------------------
        কামলা খেটে যাই

        জবাব দিন
        • আন্দালিব (৯৬-০২)

          হোসেন, তোমার কমেন্টের অক্ষরে অক্ষরে সহমত। হয়তো আমি বললে এতোটা গুছিয়ে বলতে পারতাম না। গত দুই দিন আগে কলেজের এক ব্যাচমেটের সাথে এই নিয়ে প্রচুর বাদানুবাদ করে বুঝলাম ফ্রিকোয়েন্সি না মিললে আসলে কম্যুনিকেশন দুষ্কর। যে মানসিকতা এখনও একটা বিষয়কে অপরাধ হিসেবেই ধরতে শিখে নাই, কিংবা মানুষের লিঙ্গপরিচয়ের উপরেই উঠতে পারে না, কিংবা নিজস্ব দুয়েকটা অভিজ্ঞতার বাইরের এলাকায় যার যাওয়ার কোন ইচ্ছাই নাই, তার সাথে বাতচিত কঠিন।

          নিচে যেমন লাবলু ভাই বিস্মিত হয়েছেন, আমিও তেমনি মাহমুদ ভাইয়ের মেইলের সত্যতার উপরে ভিত্তি করে পক্ষ নেয়ার অপেক্ষা দেখে যারপরনাই বিস্মিত। মেইলটা হয় সত্য নয় মিথ্যা। সত্য হলে কী যায় আসে? মিথ্যা হলেই বা কী যায় আসে? এটা আসলেই বিস্ময়কর যে মাহমুদ ভাই এই মেইলের উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্তে পৌঁছুতে চাইছেন!

          জবাব দিন
          • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

            @ আন্দালিব,
            প্রথমতঃ আমি কখনোই, কোন অবস্থাতেই সাইদ হাসানকে নির্দোষ ভাবছি না এবং তার কৃতকর্মের দায়ভার রুমানা মঞ্জুরের উপর চাপানোর চেষ্টায় রত নই। তোমার সবগুলো প্রশ্নের উত্তরেই আমার এই অবস্থান। সাইদ হাসান গুপ্তহত্যার শিকার হয়ে থাকলেও তাকে নির্দোষ ভাবি না।

            কিন্তু রুমানা মঞ্জুরের পরকীয়া সত্য হয়ে থাকলে আমার আরেকটা অবস্থানও চলে আসবে। এবং যদি দেখা যায় পরকীয়াই সাইদ হাসানের হিংস্রতার অনুঘটক, তাহলে পরকীয়ার জন্যও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা চিন্তা করতে হবে।

            @হোসেন,
            পরকীয়া অবশ্যই সামাজিক সমস্যা, ব্যক্তিগত নয়। এর ফলে পরিবার ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। কাজেই, সমাজের সবথেকে মৌলিক প্রতিষ্ঠান (সমাজ্জবিজ্ঞানের মতে, আধূনিক সমাজের ভিত্তি) হিসেবে পরিবার যেকোন হুমকির মধ্যে পড়লে সমাজ তা'তে নাক গলাবেই, নিজের অস্তিত্বের স্বার্থেই। তুমি, আমি আর আমরা সেটা উচিত মনে করি আর না-করি।

            রাজীব-প্রভা'র কেস টেনে এনে মেয়েদের উপর আরোপিত 'শুচিতা'কে রাজীবকর্তৃক যেভাবে এক্সপ্লয়েট করার কথা বলছো, সেই একই রিস্ক (যেখানে স্ত্রীর পরকীয়ার কারণে ডমেষ্টিক ভায়োলেন্স ঘটবে, কিন্তু সেটার দায় পড়বে বাই ডিফল্ট স্বামীর উপর) কিন্তু মেয়েদের বেলাতেও দেখা যাবে যদি রুমানা মঞ্জুরের পরকীয়ার সত্যতা পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে বলতে পারো যে, সমাজ কিভাবে রিএক্ট করবে?

            আমি মোটেও কোন "গ্রে এড়িয়ার আমদানি" করি নাই, এটা পঠকের কল্পনাপ্রসূত। আমার বক্তব্য স্পষ্ট- সাইদ হাসান অপরাধী। কিন্তু তারও কিছু বলার ছিল যা' মিডিয়ার পক্ষপাতের কারণে সে বলতে পারে নাই বলে আজ লাশ হয়ে জানিয়ে গেল। তার উত্থাপিত অভিযোগ স্ত্রীর পরকীয়ার প্রতি। অভিযোগ করলেই তা' সত্য হয়ে যায় না, সাক্ষ্য-প্রমাণের মাধ্যমে যাচাই করা লাগে। কিন্তু সেই অভিযোগ পাত্তা না দিয়ে বরং 'তার মৃত্যুতে খুশি হওয়ার মতো মানুষ' হতে হলে আমি বরং অ/না/ঊন-মানুষই থেকে যাবো।

            সবশেষে, পরকীয়া কে কেউ যদি ব্যক্তিগত ব্যাপার মনে করে, তাহলে তার সাথে আমার কখনোই মতের মিল হবে না। সেক্ষেত্রে আলোচনা করাটা অহেতুক সময়ক্ষেপণ।


            There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

            জবাব দিন
            • আন্দালিব (৯৬-০২)

              মাহমুদ ভাই,

              কিন্তু রুমানা মঞ্জুরের পরকীয়া সত্য হয়ে থাকলে আমার আরেকটা অবস্থানও চলে আসবে। এবং যদি দেখা যায় পরকীয়াই সাইদ হাসানের হিংস্রতার অনুঘটক, তাহলে পরকীয়ার জন্যও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা চিন্তা করতে হবে।

              চাইলে কারো হিংস্রতার পিছনে যে কোন অনুঘটক খুঁজে বের করা যায়। এমনকি সিরিয়াল কিলারদেরও হত্যার পিছনে অনুঘটক বের করা হয়, কারো শৈশবে নির্যাতনের ইতিহাস থাকে, কারো মানসিক বিকৃতি, কারো জিনগত সমস্যা ইত্যাদি। কিন্তু এগুলো অনুঘটক কি আদৌ প্রতিরোধ করার মত ব্যাপার?

              এই যে পরকীয়া নিয়ে এতো হাউ কাউ হচ্ছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে একটা উদাহরণ দেখান যে একজন পুরুষ পরকীয়া করেছে এবং কেউ তার চুলের আগাও স্পর্শ করতে পেরেছে? প্রকাশ্যে পরকীয়ার প্রচার করেও তো আমাদের জনপ্রিয়তম লেখকের জনপ্রিয়তা একবিন্দু কমে নাই। তখন এই সামাজিক প্রতিরোধের দাবি কোথায় ছিল? কিংবা এখন খুঁজলে কোটি কোটি পরকীয়ার উদাহরণ পাওয়া যাবে। সেগুলোর প্রতিরোধ কে করছে?

              কেউই করছে কারণ সেখানে দোষী একজন পুরুষ এবং তাকে এই সমাজের পুরুষরাই নিরাপত্তা দিচ্ছে। তাদের সবার স্পাউস যদি এভাবে নখসভিল বানিয়ে ফেলতো, তাহলেও এই পরকীয়া নিয়ে কোনো প্রকার কথাবার্তা হতো না।

              জবাব দিন
            • নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)
              পরকীয়াই সাইদ হাসানের হিংস্রতার অনুঘটক

              ????????????

              অর্থাৎ এর পেছনে সাঈদের বিবেচনাহীনতা, নিষ্ঠুরতা, আত্মনিয়ন্ত্রণের অভাব --- কোনকছুই বিবেচনায় আসবেনা? স্ত্রীর কথিত সম্পর্কের কারণে সাঈদই প্রাইমারী ভিকটিম, তাই বলে সেটা হিংস্রতাকে উসকে দেয়ার অধিকার রাখে?
              আর এই 'পরকীয়া' কে প্রতিরোধ করা কিভাবে যাবে, সরি বুঝতে পারলামনা। রাম-এর ক্ষেত্রে যা প্রতিরোধ, হয়তো শ্যামের জন্যে তা প্রণোদনা।
              আর আমি বুঝতে পারছিনা, পরকীয়াকে সামাজিক সমস্যা কেন হতেই হবে। যদি দুজন মানুষ (এ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী) তাদের সমস্যা নিজেরাই (সমাজকে না ডেকে) সমাধান করে যে যার পথ বেছে নিতে পারে, তাহলে সমাজ কেন মাথা গলাবে, বা ঘামাবে?
              ইমেইলটি বা ছবিগুলো বুঝে আমি কি করবো, আমি তো জাজমেন্টাল হতে পারিনা একজনের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে। এখানে এই কথিত অপরাধটি একেবারেই ব্যক্তিগত, যার 'শাস্তি' সাঈদ মনে করেছে চোখ নষ্ট করে দেয়া যায়। এখানেই সমস্যা। কিন্তু এমন ইনভলভেন্ট কে আমি সম্পর্কের ব্যর্থতা হিসেবে দেখবো কেবল , সেটা রুমানার হোক কি সাঈদের।আর অন্যের ব্যক্তিগত জীবন বলে এরচে' বেশি জানার চেষ্টা করবোনা; সাঈদ আমি হলেও, রুমানা আমার স্ত্রী হলেও।

              জবাব দিন
            • হোসেন (৯৯-০৫)

              মাহমুদ ভাই
              ঘটনা হইতেছে সেক্সুয়াল জেলাসি সৃষ্টি হয় সাধারনত "মেটিং ভ্যালু" নিয়ে দুই পার্টির বেশকমের কারনে। এই ক্ষেত্রেও তাই হইছে, যে ব্যাটারা মাল্টিপল মিসট্রেস রাখতেছে/বিয়া করতেছে তাগো ক্ষেত্রেও একই কেস। আপনি একটা ভোগবাদী/প্রফিট ম্যাক্সিমাইজেশনের সমাজে বাস করলে এন্ড অফ দ্যা ডে, পাওয়ার,পয়সা আর অবস্থানই "মেটিং ভ্যালু" সেট করে দিবে। আমরা কেউই এই নীতির বাইরে নই। খেয়াল করেন কি সব কারনে পরকীয়া হয়। প্রধানত তাদের নিজেদের কমিউনিকেশন, পারস্পরিক বোঝাপড়া ইত্যাদি কম তাই। প্রশ্ন চলে আসে তাহলে কেন তারা বিয়াটা ভাঙ্গে না। কারন অধিকাংশ সময়ই ঝামেলা এড়ানো এবং বিয়ে না ভাঙ্গার ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়ই নারীরাই স্যাক্রিফাইস করে তাদের অর্থনৈতিক ভিত্তি না থাকার কারনে। অধিকাংশ নারীর আইডেন্টিটি তৈরী হয় স্বামী কে ঘিরে। তাই মধ্যবয়সে স্বামী যখন অফিসের কলিগ ইত্যাদিতে ব্যস্ত থাকে, অথবা বেশী রসিক হইলে আরেকটা বিয়া করে ফেলে তখন স্ত্রী কান্দাকাটি করলেও মেনে নেয়। কিছু করার থাকে না। কারন স্বামীকে ছাড়া অঈ মহিলার কোন আইডেন্টিটি নাই। সুতরাং সে যতই "সেক্সুয়াল জেলাসি" দ্বারা আক্রান্ত হোক না কেন সে কিছুই করতে পারে না।

              শেষ পর্যন্ত কিন্তু বিয়েটাকে আপনি যতই "সামাজিক ফেনমেনন" বলেন, বিয়েটা ব্যাক্তিগতই। নিজেরা হ্যাপি না থাকলে সমাজের খবরদারিতে সেই বিয়ে কতটুকুই যাবে?

              অবিশ্বস্ততা অবশ্যই নৈতিকতার অভাবের কারন। কিন্তু আমাদের বা বর্তমান বিশ্বের সবযায়গায়ই যেই ধরনের সমাজ তৈরী হয়েছে সেই সমাজে আপনার আইডেন্টিটি তৈরী হওয়ার প্রক্রীয়াটাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভুয়া। সুতরাং ঠিক করতে হইলে সমাজ ঠিক করন লাগব আগে।

              সামাজিক প্রতিরোধ কখনই পরকীয়ার কারনে হয় না। নিকটাত্নীয়রা দুইদিন চিল্লাপাল্লা করে। তারপর সবই মিইয়ে আসে। আমিও চাই সকল রকম অবিশ্বস্ততার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আসুক। কিন্তু সমাজ নিজে যেখানে এই সমস্যার উতস সেখানে সমাজের প্রতিরোধ কতটুকু কার্যকর হবে? আমাদের দেশে অনেক মানুষ দুই বিয়া করে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কিছু হইছে? কারন সমাজ তাগো সেই সু্যোগ দিছে। তেমনি বহুগামীতা পুরুষের জন্যে অত্যন্ত কমন। সেইগুলারে আটকানো যাচ্ছে?

              একজন মানুষের আইডেন্টিটি কিভাবে তৈরী হয়, সমাজ তাকে কি মূল্য দেয় সেগুলি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। মেয়েদের আইডেন্টিটি তৈরীর প্রক্রীয়ায় সমাজের আন্দোলন হোক। মেয়েদের স্বকীয় স্বত্বা তৈরী হোক। তাদের অর্থনৈতিক ভিত্তি তৈরী হোক। আর বিবাহ জিনিস্টা সামাজিক শুচিতার ধুয়া তুলে পার্টিসিপেটিং পার্টির বারোটা বাজানো বন্ধ হোক। আইন করে ব্যাটাগো মাল্টিপল বিয়া নিষেধ করা হোক। আসাকরি কিছু সুফল আসবে।


              ------------------------------------------------------------------
              কামলা খেটে যাই

              জবাব দিন
              • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

                আন্দালিব, নুপুর ভাই এবং হোসেন,
                এবার মনে হচ্ছে আমার অবস্থান বোঝানোর জন্য কমেন্ট যথেষ্ট নয়, একটা ব্লগই লিখে ফেলতে হবে।

                আমি ২/৩ দিন সময় চাই। পরশু প্রফেসরের সাথে মিটিং আছে। তারপর বসবো। সেই পর্যন্ত ধৈর্য প্রত্যাশিত।


                There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

                জবাব দিন
            • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)
              আমি মোটেও কোন “গ্রে এড়িয়ার আমদানি” করি নাই, এটা পঠকের কল্পনাপ্রসূত। আমার বক্তব্য স্পষ্ট- সাইদ হাসান অপরাধী। কিন্তু তারও কিছু বলার ছিল যা’ মিডিয়ার পক্ষপাতের কারণে সে বলতে পারে নাই বলে আজ লাশ হয়ে জানিয়ে গেল।

              :thumbup:


              এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

              জবাব দিন
  2. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    হামিম
    বিষয়টি খুব জটিল।
    আর মাহমুদ যেটা বললি পক্ষ নিবি তা কেমন যেন লাগলো।
    দুই ছাগলে ছাগ্লামি করেছে, এইতো।
    তবে হাসান সাইদ ভাইয়ের এভাবে মৃত্যুতে খারাপ লেগেছে।
    সেই শিশুটির কি হবে?


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  3. সাব্বির (৯৫-০১)

    যদিও ছবি সব প্রমান করে না, তবে ইমেইল,ছবি,ইরানী লোক,পরকীয়া সব কিছু ছকে ফালানো যায়। এখন এগুলো কত টা সত্য সেটা না জেনে মন্তব্য করা ঠিক না।
    কারো মৃত্যু যেমন কাম্য নয়, কারো নাক,চোখ তুলে ফেলাও কাম্য নয়।
    এখন পর্যন্ত আমার মতামত, এরা দুজনেই অপরাধী। কারো পক্ষ নেয়ার মত রুচি আমার নেই।
    আত্মহত্যা না হয়ে, এটা যদি হত্যা প্রমানিত হয়। তাহলে পানি আরো ঘোলা হবে।

    জবাব দিন
  4. "পুরুষের বহুগামিতা আমাদের কাছে অনেক ক্ষেত্রেই গ্রহণযোগ্য, কিন্তু নারীর ক্ষেত্রে চুন থেকে পান খসলেই আমি বিদ্রোহী হয়ে উঠি। অনেক কেই দেখলাম হাত তুলে মোনাজাত করতে “খোদা আমাদের জীবনে রুমানা মঞ্জুর দিয়ো না তুমি”।"

    আমি এক্মত......কয়েকদিন ধরে ফেসবুক বা ই মিডিয়ায় যে হারে রুমানা মঞ্জুরের গুষ্টি উদ্ধার করা হচ্ছে......তাতে মনে হচ্ছে রুমানা যে কাজ করেছে,সেই কাজের জন্য তাকে অন্ধ করে দেয়া জায়েজ,...... আজিব দুনিয়া ...... এই ঘটনা তা উলটা হলেই এই সব সমাজ সচেতন রা বলত, পুরুষমানুষ একটু আধটু ওরকম করতেই পারে,এগুলা ধরলে কি আর সংসার টিকে? যতসব.........

    জবাব দিন
  5. মোর্শেদ (৯৮-০৪প.ক.ক)

    দুই জনের সব ঘটনাও (যেগুলান দেখা যাচ্ছে) যদি সত্যি হয় তারপরও বলব হাসান সাঈদের কাজটা অমানবিক এবং চড়ম নিষ্ঠুরতা হইছে।

    এটা বলার দরকার নাই যে আমার সাথে এমন হলে আমিও তাই করতাম। একজন মানুষের চোখ উপ্রে ফেলার চেষ্টা বা কামড় দিয়ে নাক খেয়ে ফেলার চেষ্টা করা টা আমি মানতে পারতেছি না।হয়তো সাঈদ সাহেব যাকে এত ভালবাসতেন তার কাছ থেকে এরকম আঘাত পেয়ে রাগে দিশেহারা হয়ে গেসিলেন । তারপরও।

    আর ম্যাডাম যা করলেন তারতো কোন তুলনাই নাই। ম্যাডাম যদি সত্যিই ইরানী প্রেম করে থাকেন, তাইলে আমার খুব জান্তে মন চায় সাঈদের সাথে যে বিশ্বাসঘাতকতা করলেন সেইটা না হয় উদারতা দেখাইয়া মুক্তমনের মানুষ হিসেবে মাফ কইরা দেয়া হইল।কিন্তু তার বাচ্চাটার বিষয়ে উনার কি প্ল্যান ছিল? নিজের বাচ্চার সামনে উনি যে দৃষ্টান্ত রাখলেন এ বিষয়ে ওনার বক্তব্য কি?

    তারমানে এই না যে বলতেছি সাঈদের উচিত শাস্তি হইছে।ঊনার সাথে যেটা হইছে হইছে তা মোটেও ঠিক হয় নাই।সেটার অবশ্যই সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত।

    একজন ছেলে হিসেবে বলি, রাস্তা দিয়ে যখন কোন টাইট জামা পরা সুন্দরী যায় আমি ঠিক ই তাকাইয়া থাকি।অথচ আমার গার্লফ্রেন্ড যখন আমার সামনে কোন সিরিয়ালের নায়ককেও স্মার্ট বলে তখন কলিজার ভিতর চিনচিন কইরা ব্যাথা করে।


    মোর্শেদ_(৯৮-০৪)পাবনা ক্যাডেট কলেজ

    জবাব দিন
  6. মুসতাকীম (২০০২-২০০৮)
    একজন ছেলে হিসেবে বলি, রাস্তা দিয়ে যখন কোন টাইট জামা পরা সুন্দরী যায় আমি ঠিক ই তাকাইয়া থাকি।অথচ আমার গার্লফ্রেন্ড যখন আমার সামনে কোন সিরিয়ালের নায়ককেও স্মার্ট বলে তখন কলিজার ভিতর চিনচিন কইরা ব্যাথা করে।

    ১০০০ লাইক :)) :)) :))


    "আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"

    জবাব দিন
  7. আজিজুল (১৯৭২-১৯৭৮)

    আচ্ছা ,পাশাপাশি ছবি তুললে , হাত ধরলে কি পরকিয়া হয় ?
    না হয় না, কিন্তু ফলশ্রুতিতে যদি সংসার ভেঙ্গে যায় তাহলে কি বলা যায় ?
    তার পরও কথা থাকে, হিন্দু বা খ্রিষ্টান ধর্মে বিধান না থাকলেও ইসলাম ধর্মে 'তালাক' এর বিধান রয়েছে। রুমানার উচিৎ ছিল নিজ দ্বায়িত্তে সেটা প্রয়োগ করে দুই পক্ষের শান্তি রক্ষা করা!
    (কারন যদি পরকীয়া হয়েই থাকে,তাহলে শুরু তার দিক থেকেই! এটা অবশ্য সম্পূর্ণই আমার মতামত)


    Smile n live, help let others do!

    জবাব দিন
  8. নাফিজ (০৩-০৯)

    জীবনে অনেক প্রবাসী বাঙ্গালীকেই দেখেছি ভাই, তবে এই ছবিগুলো আমার কাছে কেন যেন ঠিক স্বাভাবিক মনে হয়নি। তবে এটাও ঠিক, শুধুমাত্র কয়টা ছবিই পরকীয়ার অভিযোগটাকে জাস্টিফাই করেনা- আরো মজবুত এভিডেন্স প্রয়োজন ছিলো।প্রয়োজনে ইরানী ছেলেটির জবানবন্দী নেয়া যেতে পারতো।

    আরো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, অবৈধ সম্পর্ক থাকলেও তা চোখ তুলে নেয়া বা প্রতিহিংসার ব্যাপারটাকে অনুমোদন দেয়না। পৃথিবীতে লাখ লাখ মানুষ অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। এখন সবার পার্টনার যদি চোখ তুলে নেয়া শুরু করে, তাহলে অবস্থাটা কি হবে ? কাজেই হাসান সাঈদের গ্রেপ্তারের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। তবে পুলিশ কাস্টডিতে মারা যাবার ব্যাপারটা ঠিক স্বাভাবিক না।

    ব্যক্তিগতভাবে আমার ধারণা, হাসান সাঈদের মারা যাওয়া, এবং শুধুমাত্র তার পরই রুমানার ছবি এবং চিঠি প্রকাশ পাওয়া- এই ব্যাপারগুলোই বরং কেমন যেন সন্দেহজনক। আখেরে যেই পক্ষের এখনো লাভ হচ্ছে, তারা আসলে এখনো বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আসলেই ঘটনাটার সুষ্ঠু বিচার চাইলে আমাদের উচিত পক্ষ বিপক্ষ নিয়ে অযথা তর্কাতর্কি না করে এই ব্যাপারগুলো খুঁটিয়ে ভাবা।


    আলোর দিকে তাকাও, ভোগ করো এর রূপ। চক্ষু বোজো এবং আবার দ্যাখো। প্রথমেই তুমি যা দেখেছিলে তা আর নেই,এর পর তুমি যা দেখবে, তা এখনও হয়ে ওঠেনি।

    জবাব দিন
  9. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    একটা ছোট্ট ছেলে নাফিস (০৩-০৯) উপরের মন্তব্যে যেভাবে বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করলো তাতে আমি মুগ্ধ। হামীম, তোমাকে তো মনের গভীর থেকে কৃতজ্ঞতা লেখাটির জন্য।

    সাইবার জগতে এসে মানুষের চরিত্র ভালোই বুঝতে শিখছি। পুরুষতন্ত্র যে কতোটা জঘন্য হতে পারে তার প্রমাণ রাখছে এক শ্রেনীর ব্লগার। নোংরামিরও একটা সীমা থাকা দরকার।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  10. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    @ নাফিজ,

    তবে এটাও ঠিক, শুধুমাত্র কয়টা ছবিই পরকীয়ার অভিযোগটাকে জাস্টিফাই করেনা- আরো মজবুত এভিডেন্স প্রয়োজন ছিলো

    আমাদের মিডিয়া আর ব্লগ-জগৎ সেই সুযোগ আর দিলো কই, তার আগেই তো বিচার শেষ! সাইদ হাসানেরও যে কিছু বলার থাকতে পারে, সেটা আমাদের ধর্তব্যের মধ্যেই নেই! কারণ, আমরা তো আগে থেকেই এই অনুমান নিয়ে বিচার শুরু করেছি যে, সাইদ হাসান একটা 'পুরুষ'- পশুত্ব, ঈর্ষাকাতর, পরজীবি, অবিবেচক, ...ইত্যাদি। কাজেই, আমরা আগে থেকেই জানি, সাইদ হাসানই সম্ভবতঃ দোষি, আর তাই বিচারের শুরুতেই অপরপক্ষকে ইনডেমনিটি দিয়ে রেখেছি যে সে কোন দোষ করতেই পারেন না!!!

    হাসান সাইদ পশুত্বের পরিচয় দিয়েছে নাক কামড়ে, চোখ উপড়ে ফেলে। কিন্তু মিডিয়া যে বয়ানটা প্রতিষ্ঠা করেছে, তা'তে রুমানা ম্যাডামকে যেভাবে চিত্রিত করেছে, তা' ভীষণভাবে একপেশে এবং অনৈতিক। এতোটাই যে, সাইদকে হত্যার পরে অনেকেই মনের খুশি প্রকাশ করেছে। সাইদ অপরাধী, কিন্তু একটা মানুষ। আর সেই মানুষটাকে বিচারের জন্য ধরে নিয়ে কারাবন্দী অবস্থায় গুমখুন করা হলো, আর একদন মানুষ তা'তে হাততালি দিলো!!! যেকোন তন্ত্রের দোহাই দিয়েই কি মানুষ হত্যাকে সেলিব্রেট করা যায়? এ' কেমন মনুষ্যত্ব?

    ঢালাওভাবে পুরুষতন্ত্রের দোষ দেওয়া এক ধরণের বুদ্ধিবৃত্তিক শূণ্যতা, কারণ এই শব্দটা পুরষতন্ত্রের মাঝে নারীর সক্রিয় ভূমিকাকে আড়াল করে।

    নারী এবং পুরুষ, কারো জন্যই পরকিয়া বৈধ নয়। পুরষের পরকিয়ার কথা তুলে রুমানা মঞ্জুরের পরকিয়া (যদি অবশেষ প্রমাণিত হয়) যায়েজ করার জন্য কেউ কেউ বলছে। তাদের জন্য শুধু একটা কথাই বলি, সাইদও কি পরকিয়া জড়িত ছিলো? যদি না-থেকে থাকে, তাইলে এই জাতীয় বক্তব্য দেওয়ার আগে তাদের কথার প্রকৃত অর্থ কি দাঁড়ায় তা' ভালো করে ভেবে দেখার অনুরোধ রইল।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
    • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

      মাহমুদ,

      আমি বেশ বিষ্মিত তোমার মন্তব্যে। বিচার শেষ হলো কোথায়, মাত্র তো শুরু! নতুন নতুন ছবি, মেইল আসা শুরু করছে। 'নয়াদিগন্ত' আর 'আমার দেশ'-এর মতো চরম প্রতিক্রিয়াশীল, দক্ষিণপন্থী পত্রিকা সাঈদের পক্ষে ওকালতিতে নামছে। সাঈদের মা, বোন, ভাইরা মাত্র কথা বলা শুরু করেছে। আর আমাদের ক্যাডেট ভাইদের অনেকে (যারা ক্যাডেট বলে সাঈদের অপরাধকে স্বাভাবিকভাবেই নিজেদের ঘাড়ে নিয়েছে) মাত্র রণক্ষেত্রে নেমেছে। রুমানার পরকীয়া শুধু নয় শারিরীক সম্পর্কের আরো আরো প্রমাণ এলো বলে! তুমি হতাশ হয়ো না।

      একজন ভালোবাসার নারীকে পেতে সামন্তযুগে 'ডুয়েল' হতো। সেটা 'পৌরুষত্ব' দেখানোর এক ধরণের পদ্ধতি ছিল। আর আজকাল, যদিও কথিত পরকীয়া স্বীকার করে নিই, তাহলে দেখতে হচ্ছে, সমস্ত শক্তি দিয়ে নারীর চোখ গেলে দেওয়া, কামড়ে নাক ছিড়ে ফেলা! আর সেটাকে সমর্থন করছে শিক্ষিত সচেতন পুরুষ!! বুদ্ধিবৃত্তিক শূণ্যতা নিয়ে এইসব 'পুরুষ'-এর পক্ষ নেওয়া আমার কোনোদিনই হবে না। দুঃখিত।

      সাঈদের বিচার চেয়েছিলাম, মৃত্যু নয়। ব্যক্তিগতভাবে আমি মৃত্যুদণ্ডেরও পক্ষে নই। কিন্তু ও কিভাবে, কেন মারা গেল তা বের হওয়া জরুরি। আর তা জোরালোভাবেই চাই। ওকে যদি কেউ হত্যা করে থাকে, তারও বিচার হওয়া উচিত। কিন্তু পরকীয়া বা অশ্লীল মেইলের মতো কোনো ভার্চ্যুয়াল বিচার চাই না।


      "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

      জবাব দিন
      • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
        আমি বেশ বিষ্মিত তোমার মন্তব্যে

        - কেন, সেটা স্পষ্ট না বললেও অনুচ্চারে যা' বলেছেন, তা' কোনভাবেই আমার মত নয়। ভাইয়া, আমি কোথায় বলেছি+কি বলেছি যে তা' থেকে আপনার ধারণা হলো আমি সাইদের অপরাধকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করছি?
        অনাবশ্যক ভাবে নয়াদিগন্ত আর আমারদেশকে টেনে এনে আপনি যা' বোঝাতে চাইলেন (আনইন্টেনশনালীও হতে পারে), তা' নিজের মতের বিরুদ্ধে 'সবকিছুকে একটা বিশেষ ক্যাটাগরী'তে ফেলার মতো মনে হচ্ছে। কেন রুমানা মঞ্জুরের বিপক্ষে যায় এমন কিছু বললেই সেটা সাইদের পক্ষে ধরে নিতে হবে?!! আমাদের কি 'হয় এইদল না হয় অবশ্যম্ভাবী ভাবেই অন্য একটা দল' এর বাইরে আর কোন স্থান নেই?

        কোনো ভার্চ্যুয়াল বিচার চাই না

        ভাইয়া, একটা বিনীত অনুরোধ করি- ভালো করে বিবেচনা করে দেখুন তো আপনার (এবং বেশিরভাগেরই যারা আগে রুমানা বা এখন সাইদের পক্ষে কথা বলছে তাদের অবস্থান জাজমেন্টাল কি না।


        There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

        জবাব দিন
        • সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

          মাহমুদ,

          দৃশ্যমান সত্যটা হচ্ছে, যে কোনো কারণেই হোক রুমানা তার স্বামীর হাতে চরমভাবে নির্যাতিত হয়েছেন। এটা বলা বা এই অপরাধের শাস্তি দাবি করাটা 'জাজমেন্টাল' অবস্থান হলে তাই! তার পেছনে পরকীয়া বা অন্য কোনো কেচ্ছা শোনা, দেখা বা পড়ার রুচি আমার নেই।

          আমার অনুরোধ, তুমি নিজের মন্তব্যগুলো আবার পড়ো। আমি একা কি তাহলে তোমাকে ভুল বুঝছি!!


          "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

          জবাব দিন
    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

      কথা তো সেইখানেই। ৮ বছর প্রেম + ১০ বছর সংসার রুমানা বুঝতেই পারলেন না তার স্বামী মানসিক ব্যাধিগ্রস্থ! একটু অবাক করা ব্যাপার তাই না!
      পরকিয়া নিয়া আমার কিছু বলার নাই।
      আমার প্রিয় দুই মিথলজিকাল চরিত্র রাধা কৃষ্ণের ও তো পরকিয়া।


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন
  11. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    দারুন একটা সময়োপযী লেখা দিয়েছ হামীম, তোমার বক্তব্যের সাথে একমত। আমি সেই প্রথম থেকেই অনলাইনে কিছু লোকের নোংরামী দেখে একই প্রশ্ন করে আসছিলাম, রুমানার বিরুদ্ধে হাসান সাইদের সকল অভিযোগ সত্যি হলেও কি তার পাশবিক আচরন যায়েজ হয়ে যায়?

    হাসান সাইদের মৃত্যুর অবশ্যই সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার, সেই সাথে এও তদন্ত করা দরকার এই প্রকাশিত ছবি,মেইলগুলো এতদিন কার কাছে ছিল আর সেগুলো হাসান সাইদের মৃত্যুর সাথে সাথে প্রকাশিত হওয়া কি নিতান্তই কাকতালীয় ?


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  12. গুলশান (১৯৯৯-২০০৫)

    কোন অপরাধই অন্য আরেকটা অপরাধকে জাস্টিফাই করে না। সব অপরাধেরই বিচার হওয়া উচিত। বিচারে বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষেরই বক্তব্য দেওয়ার অধিকার আছে। সেটাও সবার স্বীকার করা উচিত। আর বিচারের ভার মিডিয়া এবং ব্লগগুলো না নিলেই মনে হয় ভাল হয়। কারও যদি ক্লু থাকে সেটা বিচার বিভাগকেই জানানোর চেষ্টা করা উচিত, ঢোল পিটিয়ে সবাইকে জানানোর কোন মানে নাই। আর আমাদের একপেশে চিন্তা-ভাবনা পরিহারের চেষ্টা প্রতিনিয়ত থাকা উচিত।

    জবাব দিন
  13. মেহেদী হাসান (১৯৯৬-২০০২)

    সবার আলোচনা শুনতে বেশ ভালই লাগছে... এই ব্লগের বাইরে অন্য ব্লগ তেমন পড়া হয়ে ওঠে না, সময় পাই না। মাঝে মাঝে এই ধরনের আলোচনা থেকে অনেক শিখতে পারি।

    আমার মতে,
    ১। যদি রুমানা মঞ্জুর পরকীয়া করে থাকে সেটা আমাদের সমাজে অপরাধ এবং সেটাকে মেনে পশ্রয় দেওয়াটা আমাদের সামাজিক ব্যবস্থাকে ক্ষত করবে। সেক্ষেত্রে আমি রুমানা মঞ্জুরকে সমর্থন করবো না।
    ২। হাসান সাঈদ যেটা করেছে তা মানবতা বহির্ভুত, জঘন্য কাজ। আবেগের বসে করলেও তা জঘন্য। তাই তাকেও সমর্থন করতে পারছি না। তার বিচার আমি চেয়েছিলাম।
    ৩। সাঈদ কিভাবে মারা গেলেন তা না জনলেও বুঝতে পারছি যে এটা স্বাভাবিক মৃত্যু না। যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে সেটা অপরাধ এবং সঠিক বিচার দাবি করি।

    পরিশেষে বলতে চাই, যদি রুমানা মঞ্জুর পরকীয়া করে থাকে তার বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন হওয়া উচিৎ, না হলে এই সমাজে এর বিস্তার বড়াতেই থাকবে। আমার এই দাবিকে কেউ পুরুষতান্ত্রিক দাবি বললে আমি তা মানতে পারবো না বলে দুখিঃত। কারণ কোন পুরুষ জড়িত হলেও আমি সেটাকে মেনে নিতে পারবো না এবং পরকীয়ার অভিযোগে হাসান সাঈদের আচরনকে আমি সমর্থন করি না। আমাদের বর্তমান সমাজে এই পরকীয়া রোগটা (নারী-পুরুষ উভয় দিকেই) বেড়েই চলেছে।তাই, এই ঘটনা থেকে আমাদের কি শিক্ষা নেওয়া উচিৎ সেটা নিয়ে আলোচনা হওয়া জরুরী। এই রোগের মূল কোথায় তা বের করে সামজিক সচেতনা তৈরীর জন্য কি ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ সেই বিষয়টা অনেক জরুরী।

    জবাব দিন
  14. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    খুব বিরক্ত বোধ করছি এই ব্যাপারটা নিয়ে। অনেক কথা বলতে ঢুকেছিলাম, নাফিসের কথা পড়ে মনে হল, যা বলার তা বলা হয়ে গিয়েছে।

    ধন্যবাদ তাকে।


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
  15. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    সবগুলো কমেন্টই পড়ে যাচ্ছি। নিজের অবস্থানটা ক্লিয়ার করা দরকার।

    প্রথমত , হাসান সাঈদ আত্মহত্যা যদি করে সেটা নিয়ে কিছু বলবার নেই। কিন্তু যদি পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হয় সেটা দুঃখজনক। আমরা হাসান সাঈদের বিকৃত আচরণের বিচার চাই তার মৃত্যু নয়। আর হ্যা রুমানার নামে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে সব সত্য বলে প্রমাণিত হলেও হাসান সাঈদ আমার কাছে সাইকো একটা পশু ছাড়া আর কোন জায়গাতেই উঠবেন না।

    দ্বিতীয়ত, রুমানা মঞ্জুর যদি পরকীয়ায় জড়িত থাকেন, সেটা আমি ব্যাক্তিগত ভাবে অপছন্দ করতে পারি এবং বলতে পারি তারা শান্তিপূর্ণ উপায়ে তাদের সম্পর্কের ইতি টানতে পারতেন। কিন্তু সে পথা তিনি যাননি, কিংবা কেন জেনে শুনে এই সাইকো লোকটার কাছে গেলেন সেটা তিনিই ভালো জানেন। তবে পরকীয়ার ব্যাপার প্রমাণ হলেও সেটা অপরাধ হবে ব্যাক্তিগত পর্যায়ে। সেটা নিয়ে আমার কিংবা ভার্চুয়ালের কারোরই ঘাটাঘাটি করাটা অনধিকার চর্চা বলে মনে করি।

    তৃতীয়ত, মেইল এবং ব্যাক্তিগত ছবি প্রকাশের ঘটনা নিন্দনীয়। এর মাধ্যমে কোন ব্যাক্তিগত ব্যাপার আর ব্যাক্তিগত থাকছে না। এটাকে আমার কাছে মনে হচ্ছে ব্যাক্তিস্বাধীনতার চরম লংঘন। ফেসবুক ব্লগে ছবি প্রকাশ এবং সেটা নিয়ে সাইবার বুলিয়িং ঘৃণ্য কাজ ইরেস্পেকটিভ অফ রুমানা মঞ্জুর যাই করুক না কেন।

    চতুর্থত, এই ঘটনার সাথে পরকীয়া সামাজিক ভাবে জায়েজ করার কথা বলাটা হচ্ছে উদ্দেশ্য পূর্ণ কথা। এটা করা করছে এবং কী জন্য করছে সেটা বুঝাও আমাদের জন্য জরুরি।

    সবশেষে সকল সত্য উদঘাটন হোক এটাই হবে চাওয়া। আর পরকীয়া কিংবা দাম্পত্য বিষয়ক যে কোন দ্বন্দ্বই যাতে ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের উদ্ভব না ঘটায় সেটাই হওয়া উচিত সবার চাওয়া। সাদাকালো ভাবে হার্ড লাইনে পক্ষ বিপক্ষ দাঁড় করানো মিসলিডিং। প্রকৃত সত্য বুঝাটাই বেশি জরুরি।

    জবাব দিন
    • তাওসীফ হামীম (০২-০৬)

      আমি শুধু অত্যাচার এর দিক টা তুলে ধরতে চেয়েছিলা্‌ম। এ বেপারে আপনার মন্তব্য ভাল লাগলো। অনেক ধন্যবাদ


      চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।

      জবাব দিন
    • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

      @ আমিন,

      তবে পরকীয়ার ব্যাপার প্রমাণ হলেও সেটা অপরাধ হবে ব্যাক্তিগত পর্যায়ে

      তুমি কি বলতে চাইছো 'পরকীয়া' ব্যক্তিগত অপরাধ, সামাজিক নয়? সামাজিক না হলে বুঝিয়ে বলা দরকার কেন তুমি একে সামাজিক মনে করো না?


      There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

      জবাব দিন
      • আমিন (১৯৯৬-২০০২)

        ভাইয়া আমি সামাজিক অপরাধ বলে মনে করি কি করি না সেটার আগে একটা বিষয় বলা দরকার সামাজিক অপরাধের সংজ্ঞা আমার কাছে স্পষ্ট নয়। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে পরকীয়া করা অপরাধ(অবশ্য ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে প্রেম করাও অপরাধ যদিও আমরা ধার্মিকরা নিজেদের সুবিধামতো সেটাকে শিথিল করে নেই)। এবং ইসলামী ল বলে পাথর ছুড়ে হত্যা জাতীয় কিছু।
        এখন আমরা তো ধর্মীয় দৃষ্টিকে এখানে আনবো না তাহলে অনেক কিছুই দ্বন্দ্বে পড়ে যাবে। কিন্তু সামাজিক অপরাধ মানে যদি হয় সমাজের রেগুলার প্র‍্যাকটিসের ভায়োলেশন তাহলে বলতে হবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের দেশে পরকীয়া সামাজিক অপরাধ না।আমি পরকীয়ার ক্ষেত্রে সামাজিক অপরাধ এর চাইতে ব্যাক্তিগত বিশ্বাসভঙ্গকেই গুরুত্ব দিবো। কারণ, হ্যা কারণ আমি মনে করি আমাদের সমাজ নিজেকে যেদিকে প্রমোট করছে তা পরকীয়াকে উৎসাহিত করছে। যদি সমাজ নিজে কোন ফেনোমেনার জন্য দায়ী থাকে সেক্ষেত্রে সেই ফেনোমেনাকে সামাজিক অপরাধ কোনভাবেই বলা যায় না, বড়জোর সামাজিক অবক্ষয় বলা যায়। এখন ভাই যদি কীভাবে পরকীয়া প্রমোট করছে এটা জানতে চান তাহলে আবার লম্বা কমেন্ট চালাচালিতে যেতে হবে !! (সম্পাদিত) (সম্পাদিত)

        জবাব দিন
        • মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

          আমিন,

          পরকীয়া সামাজিক না ব্যক্তিগত অপরাধ, নাকি আদৌ কোন অপরাধ নয়, তা' বোঝার জন্য ধর্মকে টেনে আনা অনাবশ্যক। আর বলছো, সামাজিক অপরাধের সংজ্ঞা তোমার কাছে স্পষ্ট নয়, আবার শেষে বললে "যদি সমাজ নিজে কোন ফেনোমেনার জন্য দায়ী থাকে সেক্ষেত্রে সেই ফেনোমেনাকে সামাজিক অপরাধ কোনভাবেই বলা যায় না, বড়জোর সামাজিক অবক্ষয় বলা যায়।"- এই অবস্থান বেশ জোরালো, কিন্তু পরস্পর বিরোধী। এবং কোটেড বক্তব্য নিজেই স্ববিরোধী। সংজ্ঞায় স্থির না-হলে আলোচনা ঘুরপাক খেতেই থাকবে।

          শুধু একটা হিন্টস দেই, বিয়ে মাত্রই সামাজিক, কিন্তু লিভ-টুগেদার ব্যক্তিগত। আর তাই, বিয়ের অভ্যন্তরে যা' কিছু, সবই সামাজিক, আর লিভ-টুগেদারে সেসব ব্যক্তিগত। আশা করি, আমি কি বলতে চাইছি তা' ধরতে পারবে। আর না পারলে বাদ দাও। একমত হতেই হবে, এমন কোন দায় নিয়ে আমরা কেউই সিসিবি'তে আসি না, কি বলো?

          এই পোষ্টে আর না, অনেক সময় নষ্ট হলো। ২/৩ টা দিন ফ্রী পাইছি। ভাবছিলাম বিজ্ঞানের দর্শণ নিয়ে হালকা পড়া-লেখা করেছি, তা'র আলাপ করবো একটা পোষ্টে। সেখানে চেষ্টা করবো এই বিষয়টাও ঝাওপ্সার উপর নিয়ে আসতে 🙂 (সম্পাদিত)


          There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

          জবাব দিন
          • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

            দোস্ত তুমি দর্শন নিয়া আসো।
            আমি ইদানিং নিসৎযে (নিৎজে) পড়ার চেষ্টা করতেছি।


            এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

            জবাব দিন
          • আমিন (১৯৯৬-২০০২)

            সামাজিক অপরাধের আমার নিজস্ব ধারণা থেকে বলছিলাম মাত্র। আগেই বলছি আমার কাছে ক্লিয়ার না। তবে আপনার হিন্ট থেকে কিছুটা অনুমান করতে পারি আপনি ঠিক কী বুঝাতে চাইছেন। তবে যেহেতু মিউচুয়াল অথবা ত্বালাকের ব্যবস্থা আছে সেটা নিশ্চয়ই সামাজিক সমাধান নয়। আগের (মানে ২০-২৫ বছর ) দিনে সালিশ করে সামাজিক ভাবে সমাধান করা হতো, কিন্তু সেটা তো আস্তে আস্তে বিলোপ পাচ্ছে। সমাজের কাছে গ্রহনযোগ্যতা ব্যাক্তিগত সমাধানটাই পাচ্ছে এই ভাবনা থেকে বলছিলাম।
            যাই হোক আমিও ফুলস্টপ। আপনার পোস্ট আসবে এই খুশিতে কাজ গুছায়া রাখতেছি। অপেক্ষায় রইলাম।

            জবাব দিন
    • হোসেন (৯৯-০৫)

      এতক্ষণে একটা মন্তব্য পাইলাম যেইটায় লাইক দেওন যায়। পুরা ঘটনা খুব স্ট্রেইট ফরোয়ার্ড। তারপরো বিভিন্ন পার্টি এই ঘটনারে ঘুরাইতেছে নিজ নিজ স্বার্থে। আমার দেশ নয়া দিগন্ত এই পুরা জিনিস প্রাচ্য পাশ্চাত্যের বিবাদে নিয়ে গিয়েছে। রুমানা নাকি হিজাব পরে গেছিল জিন্স পরে ফেরত আসছে। তাগো প্রচারণার মোদ্দা কথা হইল, "রুমানার দুইটা চোখ যাইবার পারে, কিন্তু আসলে জয় হয়েছে আমাগো গোড়া প্রথার"। সবাই ঘুরাইয়া একই কথা বলতেছে । সবার আচরনই প্রতিক্রীয়াশীল। সবাই এমন আচরন করতেছে যে পরকীয়া এই প্রথম দেখছে। সবগুলাই শাক দিয়া মাছ ঢাকনের কথা কইতেছে।
      ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হইতেছে , যে গোত্র সাইদের পুলিশ কাস্টডিতে মৃত্যু নিয়া মাতম করতেছে তারাই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস/ক্রসফায়ারের প্রসঙ্গে চুপ থাকে, মাঝে মাঝে মানবাধিকারের পুন মারে। শেষ কথা এই ঘটনায় মরাল অফ দ্যা স্টোরি হইল "মানুষের ভন্ডামি তুলনারহিত, তাদের অধিকাংশরই কোন আদর্শিক অবস্থান নাই, তারা কেবল নিজের পালে হাওয়া লাগানোর জন্যে বিভিন্ন মতামত দেয়, তাদের সকল মতামতই ম্যানিপুলেটেড"। আর হ্যা জেনারালাইজেশনটা ইচ্ছাকৃত। ভন্ড হওনের টাইম নাই।
      আশেপাশে তাকান। পরকীয়া প্র্যাক্টিসিং মানুষ আমি নিজেই অনেকগুলা চিনি। তাদের অধিকাংশই পুরুষ । তাদের চোখ অক্ষত থাকে। তাদের উপর অর্থনৈতিক ভাবে নির্ভরশীল মেয়েগুলার সাহস নাই চোখ তুলনের।
      ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হইল যদি সত্যিই রুমানা পরকীয়া কইরা থাকে , এবং যদি দুই জামাই নেওনের সিস্টেম থাকত কোন প্রথার আন্ডারে তাহলে তারে নিয়া এরকম করত কেউ?
      ইন বিটুইন আমি একাধিক বিয়ে করন পরকীয়ার মতই খারাপ মনে করি। কারন সেক্সুয়াল জেলাসি সবার মাঝেই আছে। এই জন্যেই পৃথিবী মনোগামীর দিকে গেছে। পলিগ্যামি মনোগামীর থিকা খারাপ এইটা সবাই মানে। কিন্তু যখন ছেলেরা একাধিক বিয়া করে তাগো নিয়া ব্লগে কমই বিচার বসে। আমার এক ক্লোজ আত্নীয় শেষ বয়সে আইসা দ্বিতীয় বিয়া করছে। তার অনেকগুলা বাচ্চা কাচ্চা আছে। ভেজিটেবল প্রথম বউ কান্দাকাটি করে কিন্তু কিছু কইবার পারে না। সাইদের যেমন সেক্সুয়াল জেলাসি হইছিল তারও তেমন হয়। সে চোখ উপড়াইবার পারে না। বরং সে বেশী জোরে কথা কইবার গেলে তারই চোখ উপরাইয়া যাইব। এইগুলা নিয়া আমাগো সমাজের নৈতিকতার বিচারকরা কিছু কন না। হায়েস্ট বুঝান যে একাধিক বিয়া করা ধর্মে নিষেধ না হইলেও অনুতসাহিত।

      যেকোন ফর্মের পলিগ্যামি অনুতসাহিত করা উচিত। কিন্তু এই ব্যাপারে কনসার্নড পার্টিরাই শেষ কথা বলবে। আমি নিশ্চিত আমাদের সমাজ যদি এইসব ব্যাপারে ইজি হইত অধিকাংশ মানুষ পরকীয়ার দিকে যাইত না। কিন্তু সেইগুলাও প্রাইভেট ব্যাপার।


      ------------------------------------------------------------------
      কামলা খেটে যাই

      জবাব দিন
      • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

        হোসেন তো চমৎকার দুটো কমেন্টে শতভাগ সহমত দেয়ার জন্য ঢুকলাম ব্লগে।

        তবে এসেই যখন পড়েছি তখন গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দুটো কথা বলার লোভ সামলাতে পারছিনা।

        আইন জেনে রাখুন কাজে দিবে। কারণ জুরিসপ্রুডেন্সের একটি কথা আছে "Ignorance of law is no excuse"।

        নারী নির্যাতনের বিষয়টি তো নিষ্পত্তি হবার আগেই সাইদ মারা গেলেন। অভিযুক্ত নিজেই মৃত সুতরাং কথা না বাড়াই।

        পুলিশ হেফাজতে সাইদের মৃত্যুটির তদন্ত করা প্রয়োজন কারণ পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা আগেও ঘটেছে, এখনো ঘটছে, এবং ধরে নেয়া যায় ভবিষ্যতেও ঘটবে। এটা কি আত্মহত্যা নাকি সুপরিকল্পিত হত্যা এই বিষয়ে আইন ও বিচারবিভাগের সুস্পষ্ট ভূমিকায় নামা প্রয়োজন।

        জেনে রাখুন বাংলাদেশের আইন কিন্তু নারীদের প্রতি সহনশীল বেশী। উপরের কমেন্ট গুলোতে দেখছিলাম পরকীয়া নিয়ে বেশ 'পরকীয়া' চলছে। সবার জ্ঞ্যাতার্থে বলছি। বাংলাদেশ দন্ডবিধির ৪৯৭ ও ৪৯৮ ধারা অনুযায়ী -
        "কোন ব্যক্তি যদি, কোন নারীকে অন্য কোন ব্যক্তির বিবাহিতা স্ত্রী জেনেও কিংবা জানার যথেষ্ট কারন থাকা সত্বেও সেই নারীর সহিত দৈহিক মিলনে আবদ্ধ হয়, সেই ব্যক্তি উক্ত নারীর সাথে পরকীয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হবেন তবে তা ধর্ষণ হিসাবে গণ্য হবে না। অপরাধের শাস্তি সরূপ উক্ত ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৫ বছর বিনাশ্রম কারাদন্ডে (জরিমানা সহকারে কিংবা ব্যাতীত) দন্ডিত হবেন। এই ধরনের ক্ষেত্রে উক্ত নারীকে এই অপরাধের উষ্কানিদাতা/সহযোগী হিসাবে গণ্য করা হবে না।

        **ভাই মাথা ঠান্ডা...পুলিশ কিন্তু আপনাকেই খুঁজবে। মেয়েটিকে না...

        সবাই ভাল থাকুন (মানসিক ভাবে) সুস্থ থাকুন এই প্রত্যাশায়...

        মোকাব্বির সরকার, এডভোকেট
        নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালত।


        \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
        অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

        জবাব দিন
      • নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

        হোসেন,
        তোমার বক্তব্যে সহমত। কেবল গালিটা যদি এক্সপাঞ্জ করে দিতে....
        অনেক কথাই মাথায় এলো, সাঈদকে কলেজে পেয়েছিলাম ৪ বছরের জন্য। একই হাউসে ছিলাম। ওদের ব্যাচের সবাইকে ছোট ভাই হিসেবে জেনেছি, তেমনই স্নেহ এখনো করি।সাঈদের খবর যেদিন প্রথম জানলাম সেদিন খুব আঘাত পেয়েছিলাম মনে।

        ও যে কাজটা করেছে, তার স্ত্রী অন্য সম্পর্কে জড়িত ছিলেন কি না সেই প্রশ্নে একটুও না গিয়েই বলা যায়, সেটা কখনোই কাম্য ছিলোনা এবং সেটা একটা নির্মম অপরাধ ছিলো। এর জন্য দেশের আইনে তার শাস্তি প্রাপ্য। 'কোন্‌ মানসিক পরিস্থিতি সাঈদকে এমন করতে বাধ্য করলো'-- এজাতীয় যুক্তি যারা খুঁজতে যাচ্ছেন নানান বিশ্লেষণের মাধ্যমে, তারা মানসিকভাবে অসুস্থ বলে আমার মনে হয়। প্রয়োজনে নিজের পরিবারের নারীকেও (বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অপরাধে বা অপবাদে) এমনটা করতে অনেকেই পিছপা হবেননা বলে আমার মনে হয়েছে।

        অন্যদিকে সাঈদ অপরাধ করেছে বলেই তার উপর আরেকটি অপরাধ সংঘটন ন্যায় হতে পারেনা। সাঈদকে অনেকে চোখে গরম তেল ঢেলে অন্ধ করে দেয়ার মত শাস্তির কথা বলেছেন! তো মেয়েদের (অপবাদে, বা অপরাধে) পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলা বা ছিনতাইকারীকে দিনের আলোয় পিটিয়ে মেরে ফেলা --- এই তো আমরা করছি! সরাসরি না মারতে পারলেও ব্লগে পিটিয়ে অবদমন মেটাচ্ছি।

        আমার কাছে মনে হয়েছে, নারী--পুরুষ নির্বিশেষে এই প্রেক্ষিতে অসহনশীলতা দেখিয়েছেন।কাউকে কাউকে যুক্তি দিতে দেখি সাঈদের বর্বর কাজের পেছেন, কাউকে উল্লসিত হতে দেখি ওর মৃত্যুতে। এবং দু'পক্ষই দেখি এতে 'সুবিচার' হয়েছে বলে মনে করছেন।

        সাঈদ নিশ্চয়ই পারতো সবকিছু সম্মানজনকভাবে শেষ করতে, রাষ্ট্র (বা সমাজ) তাই আশা করে। এমনভাবে সবকিছু তালগোল পাকিয়ে ফেলার পেছনে ওর যেটুকু দায়, সে তো ওর নিতেই হবে। রুমানাকে 'সামাজিক ভাবে অপরাধী' বানিয়েও কি তা এতটুকু কমে? বা সাঈদ মরে গিয়েই কি সেই দায় থেকে মুক্ত হয়? আমি মনে করি, না।'শিক্ষিত' স্বামী বা পুরুষ হিসেবে তাকে মানতেই হবে কাউকে খুঁচিয়ে অন্ধ করা তো দূরে থাক, ছোঁয়া পর্যন্ত যায় না প্রতিশোধের স্পৃহা নিয়ে।
        কিন্তু এই স্খলনের অপরাধে কোন গুপ্তঘাতক তাকে পৃথিবী থেকেই সরিয়ে দেবে, তার যা বলার তা বলতে না দিয়েই, তাও মেনে নেয়া যায়না।

        জবাব দিন
  16. টিটো রহমান (৯৪-০০)
    পরকীয়া কিংবা দাম্পত্য বিষয়ক যে কোন দ্বন্দ্বই যাতে ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের উদ্ভব না ঘটায় সেটাই হওয়া উচিত সবার চাওয়া।

    এইটা দারুণ বলছ...

    পুেরা কিচ্ছাটা খোলাসা হওয়া দরকার। এইসব ছবি ইমেইল প্রকাশ করার জন্য সাঈদ এর মৃত্যুটা পাব্লিক সেন্টিমেন্ট..তৈরিতে বেশ হেল্প করতেছে..কােরা ব্যক্তিগত বা কোনো গোষ্টির মাস্টার কোেনা প্লান হয়ে থাকলে দেশ আসলেই ডিনামাইটের উপর আছে..


    আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

    জবাব দিন
  17. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    টু মাচ পরকিয়া!
    হাসান ভাই আর নাই এইটাই সত্য। মেয়েটা তার বাবারে হারাইলো আর মাও তো বিকলাঙ্গ।
    আর হাসান ভাই ক্যাডেট বলেই কি আমরা কোনোরকম অপরাধবোধে ভুগছি???


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  18. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    হয়তো ফেসবুকে অনেকেই ইতোমধ্যে ছবিগুলো দেখেছেন, তবুও এই ব্লগে রুমানা'র কথিত পরকীয়ার প্রমাণসমূহের একটা লিংক থাকা দরকার ভবিষ্যত পাঠকদের স্বার্থেই।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
  19. আসিফ (২০০১-'০৭)

    অনেক ধৈর্য নিয়ে ব্লগের লেখা আর সব কমেন্ট পড়লাম, একেকজনের বক্তব্য একেক রকম, পয়েন্ট অফ ভিউ একেক রকম। অবশ্য হওয়াটাই স্বাভাবিক ! আমি তাই শুরু করার আগে আমার অবস্থানটা ক্লিয়ার করে নেই, অত্যাবশ্যক বলে মনে হচ্ছে এখানে !

    রুমানা মঞ্জুরের অপরাধটা যাই হোক, থাকুক বা না থাকুক, তা কোনভাবেই সাইদের অপরাধকে জাস্টিফাই করে না, কোন অবস্থাতেই আপনি কারও চোখ খুবলে তুলতে পারেন না, নাক কামড়ে ছিঁড়ে ফেলতে পারেন না, এটা ঘৃণ্য বর্বরতা। কিন্তু 'পরকীয়া' কে যারা একান্ত ব্যাক্তিগত ঘটনা এবং সমাজের এতে মাথা ঘামানোর কোন অধিকার নেই বলতে চান, তাদের সাথে আমি কখনোই একমত পোষণ করতে পারব না, আমার পক্ষে সম্ভব না ।

    এখন আমি যা বলব তা সাইদ বিরোধীদের গায়ে জ্বালা ধরাতে পারে, কিন্তু এতে আমার কিছু করার নাই, তাদের কিছু বলতেও চাই না। সাইদকে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে চিনি না, ব্যাক্তি জীবনে তিনি কেমন লোক ছিলেন তা তাই আমার পক্ষে বলা সম্ভব না । তবে ১৮ বছরের দাম্পত্য সম্পর্কে যিনি স্ত্রীর প্রতি, পরিবারের প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে পারেন, তার প্রতি কিছুটা হলেও এই উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সহানুভুতি থাকবে। 'তীব্র' ভালবাসা আর তীব্র 'ঘৃণা' আসলে প্রায় একই জিনিস, খুবই কাছাকাছি অবস্থান, Gravity এর মত, শুধুমাত্র একটু ধাক্কা দরকার ! Adultery পৃথিবীর সব দেশেই একটা জঘন্য এবং নিকৃষ্ট 'কাজ' হিসেবে বিবেচিত হয়, কারন এর মাধ্যমে শুধু সে নিজে না, পরিবারের সব সদস্যকেও বিপদে ফেলছেন এবং সামাজিক ও সব দিকেই সবাইকে বিব্রতকর অবস্থার দিকে ফেলছেন। আপনি আপনার নিজের পরিবারকে দিয়ে চিন্তা করুন, উত্তরটা পেয়ে যাবেন।

    তারপরও এ নিয়ে এত কিছু বলার থাকত না, কিন্তু মিডিয়ার একচোখা অবস্থান ই এ আসলে উদ্ভুত সাম্প্রতিক অবস্থায় সাইদের প্রতি যারা যারা কথা বলছেন তাদের সহানুভুতি জাগ্রত করেছে বলে আমার মনে হয়।

    এবার ঘটনা প্রসঙ্গে আসি। সাইদ রুমানাকে ক্রনিকালি নির্যাতন করত বলে কোথাও শুনিনি। কোন অপরাধের জন্য কারও যদি বিচার হয় তখন সেটা 'প্রি প্ল্যানড' নাকি 'সাডেন ইম্পালসড' সেটা বিশাল একটা ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচিত হয় । উপরের ঘটনা কোন ক্ষেত্রে পড়ে ,সেটা পাঠকের বিবেচনার উপরেই ছেড়ে দিলাম।

    আমি বিভিন্ন জায়গায় পড়ে যতদূর জানতে পেরেছি, অচিরেই ট্রায়াল শুরু হওয়ার কথা ছিল । ঠিক ট্রায়াল শুরু হওয়ার আগেই কিভাবে এমন একটা ঘটল, তা আসলেই একটা গবেষণার ব্যাপার ! ওই রাতের ১১ কারারক্ষীকে গোপনে সাসপেন্ড করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানি, কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাড়ায়, তা আমি জানতে আগ্রহি ! তবে এদেশে আদৌ কিছু জানা যাবে নাকি সন্দেহ । তবে কি কেউ থলের বেড়াল ' বের হয়ে যাওয়ার ভয়ে শঙ্কিত ছিল ?? জানতে ইচ্ছা হয় ।

    রুমানা মঞ্জুরের প্রতি রয়েছে আমার পূর্ণ সমবেদনা। সে যাই করুক না কেন, সেটা তার বর্তমান অবস্থার সাথে তুলনা করা যায় না। কোন স্ত্রী তার স্বামীর দ্বারা এমন বর্বর ভাবে নির্যাতিত হবেন, এটা কনভাবেই মেনে নেয়ে যায় না। তবে সাইদ যদি জেলখানায় সত্যিই খুন হয়ে থাকেন, তবে কোন ঘটনা এর নিয়ামক এবং কে এর পেছনে দায়ী , তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা দরকার ।ইভেন রুমানার কথিত 'পরকীয়া' ও যদি এর পেছনে থাকে , তবে তাও বিচারের কাঠগড়ায় তোলা দরকার, কারন এটা শুধু এখন একটা 'স্থুল জৈবিক চাহিদা' তেই সীমাবদ্ধ থাকে নি, সাইদের বর্বর আক্রমন এবং আরও ভয়ঙ্কর একটা 'পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের' সাথে এখন অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িত হয়ে গেছে ।

    নারীবাদীদের বা সুশীলদের আমার কমেন্টে বিচলিত হওয়ার কোন কারন নেই ! ঘটনা যদি রিভারস হত অর্থাৎ সাইদের জায়গায় যদি রুমানা হত এবং রুমানার জায়গায় সাইদ, তাহলেও আমার বক্তব্য এর কোথাও বন্দুমাত্র নড়চড় হত না। আমার বক্তব্য তে কেউ যদি কোথাও 'লিঙ্গ বৈষম্য'/পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব খোঁজার চেষ্টা করে, তাদের জন্য রইল আমার পূর্ণ সমবেদনা ! Domestic violence must be stopped at any cost in any level.

    একটি লিঙ্ক দিলাম, দেখতে পারেন। যদিও সে সময় আমিও অন্য সবার মত একচোখা' দৃষ্টিতেই দেখেছিলাম...
    http://www.youtube.com/watch?v=TYz0tDClXGY&feature=related (সম্পাদিত)

    জবাব দিন
  20. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    আসিফ,

    তোমার লিংকটা দেখলাম, শুনলাম। সাঈদ স্পষ্ট বলছে, সে রুমানাকে নির্যাতন করেনি। এ অবস্থায় তার বাকি সব অভিযোগ বিশ্বাস করি কি করে, বলতে পারো? একটা মিথ্যা যে বলতে পারে, সে হাজারটাও বলতে পারে।

    বয়সের কারণেই হয়তো তুমি বেশ একরোখা (নরম ভাষায় বললাম)। তোমাদের মতো আরো অনেকে এমন ভাষা ব্যবহার করো যাতে আমরা অভ্যস্ত হতে পারিনি। হয়তো বয়স একটা কারণ। ব্লগ বা সামাজিক নানা ভার্চ্যুয়াল জগত থেকে নিজেকে ক্রমেই সরিয়ে নেওয়ার একটা সচেতন চেষ্টা করে যাচ্ছি।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
    • আসিফ (২০০১-'০৭)

      ভাই, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এখন এমন অবস্থায় আছে যে তারা যা দেখাতে চায়, যেভাবে দেখাতে চায় ঠিক সেভাবেই দেখায়, এটাতো আরও এডিটেড ভার্শন , এমন ভাবে ঘটনাকে এক্সপ্লয়েট করে যে কি আর বলব ! আমি ভিডিও টা নিয়ে কোন কমেন্ট করব না, একটা জিনিসকে যে যেভাবে দেখে । আমি একভাবে দেখি, কিন্তু আরেকজন ঠিক আমার মত করে দেখবে, আমার মত করে ভাববে, সেটা আমি আশা করতে পারি না ।

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।