এলোমেলো-৮: চলো পাল্টাই

জীবন নাকি একটা বহমান নদীর মত। কিন্তু আমার জীবনটা মনে হয় আর নদীর মত নাই, থেমে আছে চুপটি হয়ে। অফিস যাওয়া, বাসায় ফেরা, গেইম খেলা, খাওয়া, ঘুমিয়ে পড়া-এই টাইপ একটা জীবন যাচ্ছে আমার প্রতিদিন। এর মাঝে অবশ্য ব্যতিক্রমও আছে, সেই দিনগুলোয় মনে হয়- নাহ! পৃথিবীতে সুখ বলে কিছু একটা জিনিস আছে। সেই সুখের স্মৃতিও দীর্ঘস্থায়ী হয়না, পুরনো চক্রে পরে উধাও হয়ে যায়।

চাকরীর জীবন বেড়ে যাচ্ছে, হঠাৎ করে টের পাই। প্রায় পাঁচটি বছর কাটিয়ে দিলাম এখানে। শুরুর দিকের সময়ের সাথে এখন অনেক পরিবর্তন। দায়িত্ত্ব বেড়েছে, বেড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সমস্যা অন্য যায়গায়। ব্যয় সকোচনের প্রভাব আমাদের উপর একটু বেশিই পড়েছে মনে হয়। আমাদের সহকর্মীরা একের পর এক চাকুরী ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, কিন্তু তাদের যায়গায় নেয়া হচ্ছে না কাউকে। ফলাফল- আমাদের কাঁধের উপর অতিরিক্ত চাপ। এভাবেই চলতে থাকবে মনে হয়। প্রতিদিন ভাবি কবে এরকম আমিও সবাইকে বিদায় জানায়ে একটা মেইল দিতে পারব।

সিসিবি আগের মত নেই- এর দায়ভার আমাদের সবার- আমার, আপনার, আমাদের সবার। আমি প্রতিদিন সকালে এসে সিসিবির পেইজটা খুলি, লেখা পড়ি, মনে মনে লেখা নিয়ে দুই-একটা কথা বলি। মনের কথা মনেই থেকে যায়, আগের মত করে মন্তব্যে আর আসে না। সামিয়া আমার জন্মদিনের কথা একটা পোস্টে বলেছিল- সেই পোস্টের জন্যও সামিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়েছি ২ দিন পর!! পোস্টে মন্তব্য করা হয়ে উঠেনি আর। লেখালেখি করতে যে ইচ্ছে হয় না, তা না। মাঝে মধ্যে স্বপ্ন দেখি যে চমৎকার একটা লেখা লিখেছি, সবাই তাতে ঝাঁপায়ে পড়ে মন্তব্য দিচ্ছে, খুব বাহবা দিচ্ছে। কিন্তু লিখতে বসা হয়না, আর লিখতে বসলেও যে এরকম কিছু বের হবে না- তা আমার খুব ভালোভাবেই জানা।

মাঝে মধ্যে সময় না কাটলে মোবাইলে গেম খেলে সময় কাটাই। মাঝখানে তো এংগ্রি বার্ডস নিয়ে ব্যাপক ব্যস্ত সময় কেটেছে আমার। কেমন যেন একটা নেশার মত, যতক্ষণ না সব লেভেল পার হচ্ছি, মনে শান্তি নাই। যখন সব লেভেল শেষ হল, তখন শুরু এক স্টার পাওয়া স্টেজগুলোকে ২/৩ স্টার বানানো। কত্ত কত্ত এন্ড্রয়েড এপ্লিলেশন চারদিকে, যার কাছ থেকে যেটা শুনি- ভালো লাগলে ২-১টা ইন্সটল করি, তারপর ঐটা নিয়ে কিছুক্ষণ গুতোগুতি করি, তারপর আবার ভুলে যাই। এর মধ্যে একটা এপ্লিলেশন বেশ পছন্দ হয়েছে- ভাইবার (Viber)। কথা বলা, আর মেসেজ আদান-প্রদানের বেশ ভালো একটা জিনিস, বিশেষ করে বিদেশে।

জীবনের লক্ষ্য কি- এইটা নিয়ে চিন্তা করতে গেলে বেশ হিমসিম খেয়ে যাই। একটা সময় ছিল যখন চিন্তা করতাম যে দেশের বাইরে কখনও সেটল হওয়ার চিন্তা করবনা। যা আছে কপালে, দেশেই থাকব। এখন আস্তে আস্তে প্রায়োরিটিতে অনেক পরিবর্তন আসছে, সেই সাথে চিন্তা-ভাবনারও। এখন মনে হয় বাইরে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ পেলে মন্দ হয় না। তার জন্য অবশ্য হ্যাপা কম না, আইয়েল্টস দাও, অনেক ভালো মার্কস পাও (না হলে আবার পয়েন্টের হিসেব মিলবে না), তারপরে কাগজপত্রের যোগাড়যন্ত্র কর, টাকা পয়সা যোগাড় কর, এপ্লাই করে বসে থাক। তারপর উনাদের দয়া হলে অনুমতি মিলবে, তখন আরেকটা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে দৌড়াও। এভাবে কতদিন দৌড়াতে হবে কে জানে।

নতুন গানের সাথে তাল মেলানো অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছি, শুধু মাঝে মধ্যে দুই-একটা গান শোনা হয়ে যায়। “চলো পাল্টাই” ছবির এই গানটা ইদানিং শুনছি, ভালো লেগেছে বেশ।

চাওয়ালা- তোকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। তোর জন্যই এই লেখাটা…

৪,০৫১ বার দেখা হয়েছে

৪৬ টি মন্তব্য : “এলোমেলো-৮: চলো পাল্টাই”

  1. জিহাদ (৯৯-০৫)

    তানভীর ভাই সিসিবিতে ব্লগ দিসে। সেইটা আবার আমাকে বেঁচে থাকতে দেক্তে হইলো। :ডি

    আপনে মিয়া মানুষ ভালো না। আপনারে ভাইবারে মেসেজ দিসিলাম উত্তর দেননাই।

    কামস্ ভাই তো কাম কইরা ফেললো। এইবার তানস্ ভাইয়ের স্ট্যাটাস চেঞ্জের অপেক্ষায় রইলাম।


    সাতেও নাই, পাঁচেও নাই

    জবাব দিন
    • তানভীর (৯৪-০০)

      ভাইবারে কবে মেসেজ পাঠাইসিলা? আমি প্রথমবার ইন্সটল করে ব্লক করে দিয়েছিলাম, চার্জ বেশি যাচ্ছিল বলে। এখান অবশ্য সব ঠিকঠাক। আমি তোমার মেসেজ পাইলে অবশ্যই রিপ্লাই দিতাম। 🙂

      সবাই কি আর তোর মত খোমাখাতায় খোমাছবি দিতে পারে রে? 😉

      জবাব দিন
  2. মুসতাকীম (২০০২-২০০৮)

    পাঙ্খা পুষ্ট :thumbup:
    আছেন কেমন ::salute::


    "আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"

    জবাব দিন
  3. সাকেব (মকক) (৯৩-৯৯)
    সিসিবি আগের মত নেই- এর দায়ভার আমাদের সবার- আমার, আপনার, আমাদের সবার। আমি প্রতিদিন সকালে এসে সিসিবির পেইজটা খুলি, লেখা পড়ি, মনে মনে লেখা নিয়ে দুই-একটা কথা বলি। মনের কথা মনেই থেকে যায়, আগের মত করে মন্তব্যে আর আসে না।

    আহারে! এমন একটা সময় ছিলো যখন আমার বউ সিসিবি কে সতীনের মত দেখতো!
    আবার সেই পরকীয়া শুরু করতে মন চায় =((

    তানভীর,
    পুরনো অনেক মুখের সাথে তোমাকে দেইখাও অনেক ভালো লাগলো :hug:


    "আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
    আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"

    জবাব দিন
  4. রকিব (০১-০৭)

    সিসিবির পক্ষ থেকে একটা অ্যাংরি বার্ড প্রতিযোগিতা হইলে ভালো হইতো; জীবনে তো তেমন কোন মেডেল পাই নাই, এইবার হইলেও হইতে পারতো।
    রুমকীমণি কেমন আছে? স্বাতী ভাবীরে সালাম দিয়েন।
    ধন্যবাদ- কি জন্য সেটা না হয় নাই বললাম 🙂


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  5. সামি হক (৯০-৯৬)

    তানভীর অ্যাংরি বার্ড রিও টা ও খেলতে পার। তাহলে ব্লগে না লেখার আরো অজুহাত পাবা, আর এইটাও বলতে পারবা যে খেলতে যেয়ে রুমকীর মাকে সময় দিতে পারতেছ না। 😀

    জবাব দিন
  6. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    আমার ভাগ্য ভালো যে গেম থিকা বাইর হইয়া আসতে পারছি।
    নতুন চাকুরীর চেষ্টা করাটাই ভালো।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  7. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    নিজের বাড়িতে স্বাগতম তানভীর ভাই... পরের পোস্টের অপেক্ষায় থাকলাম 🙂


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : সামি হক (৯০-৯৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।