সুখের অসুখ

একটা প্রশ্ন ইদানিং ঘুরে ফিরে আমাকে বড় বেশি বিরক্ত করে যাচ্ছে। বিয়ে করে কি ভুল করে ফেললাম? কিছুদিন আগেও তো দিনগুলো এত দ্রুত পার হয়ে যেত না! উলটো স্থবির, শ্লথ, শম্বুক গতির দিনগুলোর একেকটা ঘন্টা এত বেশি সময় ধরে চলত যে বিরক্তি এসে যেত। আর এখন আমার সময় কাটে ঘড়ির কাটার সাথে পাল্লা দিয়ে। চব্বিশ ঘন্টা পার হতে সময় নেয় মাত্র আধ ঘন্টা। এই হারে হিসেব করলে আয়ু যে চরম দ্রুত কমে আসছে সেই চিন্তা থেকেই কি বিরক্তিকর প্রশ্নটা প্রশ্রয় পাচ্ছে ??

সেই যে বাসার ভিতর এসে ঢুকেছি, আর বের হতে ইচ্ছা করে না। দিন, তারিখ, বার ভুলে গিয়ে ছুটির মত ছুটি কাটাচ্ছি। বিকেল হলে বড়জোর ছাদটা, এর বেশি দূরে যেতে মন সায় দেয় না। আগে ঘরের ভিতর কথা বলার মানুষ ছিল না, দম বন্ধ হয়ে আসত ঘরে। বাইরে যেতাম, চিনি কি চিনি না টাইপ মানুষের সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দিতাম কথা বলে। এখন কথা বলার আর শোনার একটা মানুষ সারাদিন আমাকে আষ্টেপৃষ্টে বেধে রাখে, কলজের এক ফুট দূরত্বে ঘুর ঘুর করে। এক রুমে আবদ্ধ থাকার বিরক্তিকর আনন্দময়তা আর বাইরে যাওয়ার ব্যাকুলতার মৃত্যুর জন্যই কি প্রশ্নটা বারবার ফিরে আসছে ??

বাসায় মা আর বউয়ের অসম প্রতিযোগিতা চলে, কে বেশি ভালবাসে, বাসতে পারে, তাই নিয়ে। খাওয়ার টেবিলে অস্বস্তি নিয়ে বসে থাকি, তাও শান্তি। আগে ছিল একজোড়া চোখ, চোখে চোখে রাখত। এখন দু’জোড়া চোখ চোখে চোখে রাখে। স্নেহ আর ভালবাসার সূক্ষ পার্থক্য নিয়ে দু’জোড়া চোখ একইভাবে এই আমার দিকেই তাকিয়ে থাকে। চোখে চোখে রাখার চোখের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কষ্টকর শান্তিই কি তবে প্রশ্নটাকে উস্কে দিচ্ছে বারে বারে ??

এখন আমার সব আছে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেট … সে সময় পেছন থেকে জড়িয়ে ধরার মত মমতাময়ী হাত। গোসল শেষে চুল মুছিয়ে দেয়ার টাওয়েল। নিজে নিজে লোশন মাখার বিরক্তির অবসান। পাশে বসে সিসিবি’র লেখা আর কমেন্ট গুলো পড়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া, ইমটি নয় বরং জীবন্ত খিলিখিলি অভিব্যাক্তি। দুপুর-সকালে ঘুম ভাংগাতে কর্কশ এলার্ম নয়, কানের কাছে ফিসফিস। ইন্সমনিয়ার মত বিরক্তিকর রোগকে গল্প বলা রাতে বদলে দেয়া। লিখতে পারা, না পারা আরও কত সব অভিব্যাক্তি মিলিয়ে দিনে দিনে এই বছরটার সব পেয়েছির বছর হয়ে উঠা …

তবু কেন হিংসুক প্রশ্নটা বারবার আমাকে আরামদায়ক খোচা দিয়ে যায় …

১৫,৮৪৮ বার দেখা হয়েছে

১৩৬ টি মন্তব্য : “সুখের অসুখ”

    • তাইফুর (৯২-৯৮)

      প্রতিযোগী নিজের পারফর্মেন্সে নিজে সন্দিহান হবার কারণে ডোপ টেষ্ট কইরা দেখা গেল প্রতিযোগীর পি...তে বিষ ...
      জয়ের মুকুট টিটো'কে দেয়া হইল।


      পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
      মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

      জবাব দিন
  1. সাকেব (মকক) (৯৩-৯৯)

    উহিয়াহিউয়ায়ুয়হিয়াউহা... :grr:
    মাঠে থাকা ১১জন খেলোয়াড়কে ডজ দিয়া অবশেষে আমিই :hatsoff:

    অনটপিকঃ

    তবু কেন হিংসুক প্রশ্নটা বারবার আমাকে আরামদায়ক খোচা দিয়ে যায় …

    বস, আপনার মনে হয় 'সুখে থাকতে ভূতে কিলায়' রোগ হইসে :-B অবহেলা না করে... 😀


    "আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
    আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"

    জবাব দিন
  2. তানভীর (৯৪-০০)

    ধুর! আমাদের মত এলিজিবল ব্যাচেলরদের মনে হিংসা নামক রিপুর উদ্রেক করায় তাইফুর ভাইয়ের ব্যান চাই। 😡 😡

    এই ধরনের "সুখে থাকতে ভূতে কিলায়" টাইপ লেখা দেয়ায় তাইফুর ভাইয়ের আবার ব্যান চাই-ই চাই। 😡 😡

    জবাব দিন
  3. সাকেব (মকক) (৯৩-৯৯)
    জীবনে আরও অনেক কিছু দেখার বাকি, জানার বাকি।

    বৎস, তোমার মনটা ইদানীং বড়ই চঞ্চল বলিয়া বোধ হইতেসে...
    সাবধান! বাঁচতে হলে জানতে হবে :-B


    "আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
    আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"

    জবাব দিন
  4. রবিন (৯৪-০০/ককক)
    এখন আমার সব আছে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেট … সে সময় পেছন থেকে জড়িয়ে ধরার মত মমতাময়ী হাত। গোসল শেষে চুল মুছিয়ে দেয়ার টাওয়েল। নিজে নিজে লোশন মাখার বিরক্তির অবসান। পাশে বসে সিসিবি’র লেখা আর কমেন্ট গুলো পড়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া, ইমটি নয় বরং জীবন্ত খিলিখিলি অভিব্যাক্তি। দুপুর-সকালে ঘুম ভাংগাতে কর্কশ এলার্ম নয়, কানের কাছে ফিসফিস। ইন্সমনিয়ার মত বিরক্তিকর রোগকে গল্প বলা রাতে বদলে দেয়া। লিখতে পারা, না পারা আরও কত সব অভিব্যাক্তি মিলিয়ে দিনে দিনে এই বছরটার সব পেয়েছির বছর হয়ে উঠা …

    তানভীরের সাথে এক মত। ধুর! আমাদের মত এলিজিবল ব্যাচেলরদের মনে হিংসা নামক রিপুর উদ্রেক করায় তাইফুর ভাইয়ের ব্যান চাই।ব্যান চাই। ব্যান চাই।

    জবাব দিন
  5. শরিফ সাগর (৯৭-০৩)

    সিসিবির সংখ্যাগরিষ্ঠ অবিবাহিত ,আনচানিত যুবক পোলাদের মনে আগুন জ্বালানোর সার্থক চেষ্টা চালানোর জন্যে তাইফুর ভাইয়ের ডাইরেক্ট ব্যান চাই :gulli2: ...

    অফটপিকঃ সুখে থাকলে কখনও কখনও ভুতে একটু একটু কিলায়। ~x(

    জবাব দিন
  6. জিহাদ (৯৯-০৫)

    আমি সিগারেট খাইনা।
    লাস্ট কবে লোশন দিসি গায়ে তাও মনে নাই।
    টাওয়েল না, গামছা দিয়া গা মুছি।
    এলার্ম এর দরকার নাই । যখন খুশি তখন উঠি।
    ইমো দিয়াও হাসার দরকার হয় না।
    আর একা একা রাত জাগতেও খারাপ লাগেনা। মনে হয় রাত জিনিসটা জেগে থাকার জন্যই।

    তাইলে না করলেও চলে মনে হয়... :-B


    সাতেও নাই, পাঁচেও নাই

    জবাব দিন
  7. তৌফিক (৯৬-০২)

    বউরে খালি আগে খাওয়ার সময় মিস করতাম। নিজের রান্না ভালো লাগে না। তাইফুর ভাইয়ের ব্লগ পইড়া তো মনে হইতাছে আইজাকাই দেশে চইলা যাই। 🙁

    লন এক কাপ চা খান :teacup:

    ভাবী তো বিরাট ভালো মাইয়া। বিড়ি খাইলেও কিছু কয় না 😀

    জবাব দিন
  8. বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেট … সে সময় পেছন থেকে জড়িয়ে ধরার মত মমতাময়ী হাত। গোসল শেষে চুল মুছিয়ে দেয়ার টাওয়েল। নিজে নিজে লোশন মাখার বিরক্তির অবসান।

    :(( :(( :(( :((

    জবাব দিন
  9. খন আমার সব আছে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেট … সে সময় পেছন থেকে জড়িয়ে ধরার মত মমতাময়ী হাত। গোসল শেষে চুল মুছিয়ে দেয়ার টাওয়েল। নিজে নিজে লোশন মাখার বিরক্তির অবসান। পাশে বসে সিসিবি’র লেখা আর কমেন্ট গুলো পড়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া, ইমটি নয় বরং জীবন্ত খিলিখিলি অভিব্যাক্তি। দুপুর-সকালে ঘুম ভাংগাতে কর্কশ এলার্ম নয়, কানের কাছে ফিসফিস। ইন্সমনিয়ার মত বিরক্তিকর রোগকে গল্প বলা রাতে বদলে দেয়া।

    :(( :(( :((

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : কামরুল হাসান (৯৪-০০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।