মেয়েটির একটা মন খারাপের গাছ ছিল
পিঠে মায়ের দুমদুম কিল খেয়ে কাঁদত মাঠের ওই কিনারে
গাছের কাছে জানাত নালিশ,
প্রজাপতি আর ঘাসফড়িঙের পিছে ছুটে
ক্লান্ত মেয়েটি হাঁপাত পুকুর পাড়ে ।
মা বলেছে বাড়ি ঢুকলেও জুটবেনা রাতের খাবার
ক্লাসে পড়া না পারার শাস্তি !
সন্ধ্যা নামতেই ঘুমে ঢুলঢুল মেয়েটি ভাবে,
ফের স্কুল পালাবে কাল!
স্কুল পালিয়ে ওই পাড়ার ময়নাকে নিয়ে
দিবে ডুবসাঁতার!
ধড়মড়িয়ে ওঠে বালিকা মায়ের বকুনিতে,
অনিচ্ছায় মায়ের কথামত পা বাড়ায় বাপের দোকানে।
মুঠো ভর্তি বিস্কুট নিয়ে ভয়ে ভয়ে বালিকা
পার হয় বাঁশঝাড় এক ছুটে।
কিছুদুর গিয়েই সাহস ফেরে মেয়েটির
এগিয়ে আসছে কয়েকজন লোক,
আর কোন শাকচুন্নী, শেওড়া গাছের পেত্নী আসবেনা তেড়ে।
কাছে আসতেই টের পায় এক শক্ত থাবা চেপে ধরেছে মুখ,
আর একটা শক্ত দেহ পাঁজাকোলা করেছে তাকে
তারপর……
একদল শকুন
রাতের আঁধারে
ছিঁড়ে খুড়ে খায় মেয়েটির শরীর
প্রতিটি আর্তচিৎকার শকুন গুলোর কাছে লাগে শীৎকারের মত
খুবলে খুবলে হাড্ডি ,মাংস আর রক্তে হায়েনারা ভোজ সারে
পাশবিক অট্টহাসিতে সাঁড়াশির মত দশ আঙ্গুলের চাপে
বধ করে একটি রমণীকে ।।
অনেকগুলো হায়েনার ক্লেদে
এই রমণী প্রায়শ্চিত্ত করে জন্মের পাপের,
নারী হয়ে জন্মানোর পাপ !
হাহাকারে বিষাক্ত বাতাস হানা দেয় মস্তিষ্কে,
ইচ্ছে করে খুবলে খুবলে নিই ওই বেজন্মাদের শরীর
ভোঁতা ছুরির ফলায় খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে
লবণ মাখিয়ে শুকোতে দেই শুটকির মত!
ইট ভাঁটার আগুনে দেই জ্বালানি করে
প্রতিটি আর্ত চিৎকারে আমরা নাচব উদ্দাম ।
ঝলসে যাওয়া মাংসে দেব শকুনের ভোজ !
কিন্তু……শকুনের ও বোধ হয় শকুনের মাংসে বড্ড অরুচি !!
কোনভাবেই পোস্টে লিঙ্কাইতে পারলাম না x-( ,তাই কমেন্টে লিঙ্ক টা দিলাম
https://www.facebook.com/photo.php?fbid=297468753669016&set=a.116121165137110.25665.114465365302690&type=1
অসাধারন হয়েছে আগাই বলেছি। আপনার এই পোস্টটা এমন যে আসলে কী মন্তব্য করব তা বোঝা সম্ভব নয়। যতক্ষন বসে আছি এও কবিতার সামনে, ততক্ষন লজ্জা লাগে পুরুষ হিসেবে। কিন্তু লজ্জা ছাড়া আর কিছুই নেই। আমরা কি করব? আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ইভ টিজিং্যের প্রতিবাদ যারা করেছিলাম, তারা আজ আতংক নিয়ে থাকি। কখন উপাচার্যের পোষা লিঙ্গহিন যন্তুরা তেড়ে আসে লাঠি নিইয়ে রাতের আধারে।উপাচার্যের ভাষ্যমতে ছাত্রীরা তার কন্যার সমান, তাই ক্ষমতাবান ছেলেদের আজও বচার হয় নাই।
কবে দিন বদলাবে,আমরা সত্যিই জানিনা,তারপর ও সামনে এগিয়ে লড়াই টা শুরু করার জন্য তোদের অনেক শ্রদ্ধা 🙂
যদিও আমি গদ্যরসিক মানুষ, কবিতার স্বাদ আস্বাদনে বরাবরই অসমর্থ; তাও ভাল লাগল অনেক। :clap:
আর এইসব নরপশুদের ব্যাপারে আসলে বিচারের কিছু দেখি না। এক কথায় মানুষ হিসেবে এদের বাঁচার অধিকার আমি দেখি না। কবিতার শেষ পংক্তিটি তার যথার্থ সারমর্মঃ
এই ঘটনাগুলা পড়লে আসলেই মাথায় খুন চেপে যায় রে 🙁
এ ধরনের ঘটনাগুলোর কথা শুনলে ভাষা হারিয়ে ফেলি। আমাদের ভিতরে কত ধরনের পশুত্ব বাস করে! আর আরো এক প্রকার জীব আছে তারা এর পিছনে ঐ মেয়ের পোষাক পরিচ্ছেদ, চলন বলনের খুঁত বের করে দোষটা এক প্রকার তা ঘাড়েই চাপাতে চাইবে।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷
এটাই হচ্ছে সমস্যা যে আমরা ঘুরে ফিরে মেয়েদের ঘাড়েই দোষ চাপাই। এই মানষিকতা কবে বদলাবে, কে জানে।
একদম সত্যি কথা ভাইয়া ! এবং তার চেয়েও আশ্চর্যের ব্যাপার, এরকম মানুষের সংখ্যা কিন্তু নেহাত কম না। ওই যে পেজ টা তে এই কাহিনীটা পরলাম,ওই পেজেই পাব্লেকের কমেন্টগুলা অন্যরকম হত যদি মেয়েটাকে মেরে না ফেলত। কি আজব দুনিয়া !
নিজেকে পুরুষ হিসেবে ভাবতে লজ্জা লাগে। আমার ভিতরেও কি এমন একজন বাস করে?????? এই প্রবৃত্তি কে ধিক্কার জানাই।
ভাল লাগল সুষমা আপু। আমদের বিবেক আর একবার নাড়িয়ে দিলেন।
তানভীর আহমেদ
মানুষের মাঝে এমন প্রবৃত্তি বাস করেনা রে ! ওরা তো অমানুষ
ফেসবুকে আগেই পড়েছি। কিছু বলার মত পাইনি।
কিছু ঘটনায় রাগে, ক্ষোভে, আর কিছু করতে না পারার যন্ত্রণায় বলার মত কিছু থাকেও না 🙁
আপা ঐ পোস্ট এ কবিতার লিংকটা দিয়ে দিলাম আপনার অনুমতি ছাড়া। ভাল লাগল তাই না দিয়ে থাকতে পারলাম না।
নো প্রবলেম 🙂
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মাঝে মাঝে এমন লেখা দেখলে সালাদের মতন মনে হয়। সুস্বাদু।
ইভ টিজিং নিয়ে কথা,শিশু নির্যাতন,ধর্ষণ। সব গুলোর গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। আমার কাছে একটাই নির্লজ্জ উত্তর,জতদিন পুরুষ ধর্মের আশ্রয় পাচ্ছে ততদিন এগুলো চলতেই থাকবে। আর নারীরা ভেবে নেবে এক প্রস্থ কাপরে আচ্ছাদিত হলেই বুঝি রক্ষা পাওয়া যাবে। সারকাজম।
আপু আপনার লেখা আমায় নাড়িয়ে গেল। বীভৎস মানসিকতার পুরুষের মানসিকতার মৃত্যু হোক।
ভালো থাকবেন।
চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।