অসংলগ্ন ভাবনাচিন্তা ……… প্রেম পর্ব

ইচ্ছে ছিলো ১৩ তারিখ রাতে বা ১৪ তারিখ এই লেখাটা দেবো, কিন্তু ১৩/১৪ দুদিনই ছুটি থাকায় এটা আর শেষ করা হয়নি।

বসন্তকালে অনেক জায়গাতেই দেখা যায় লোকজন হাঁচি-কাশিতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। বাতাসে ভেসে চলা ফুলের পরাগে এলার্জিজনিত কারনেই নাকি এমনটা হয়। আমাদের বসন্তকালটা একেবারে দুরন্তরুপে এসেছিলো আমাদের ক্লাশ টেনের প্রথম টার্মের দিকে। ছেলেপেলে ক্লাশ নাইনের শেষদিক থেকে ছুটিতে বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে লেখাপড়া করার সময় অনেকে অনেকের সাথে পরিচিত হয়েছে। আর বয়সের ওই সময়ে প্রেমের বিষয়টাও মনে হয় অনেক সরল থাকে। কারন টার্মের ছুটিতে প্রেম শুরু করে সেই ছুটির মধ্যেই বা তার পরের ছুটিতে ছ্যাকা হয়ে যেতো। তাদের বেকায়দা আবেগের আসল তোপটা যেত আমরা যারা নিরীহ কিছু ধুমপায়ী ছিলাম তাদের ওপরে দিয়ে। দেখা হলেই ধরে বসতো – দোস্ত একটা সিগারেট দে। সিগারেট দিয়েই অবশ্য রেহাই ছিলোনা, ওদেরকে আবার একাও ছাড়া যায় না। কোন সময় ধরা খেয়ে গেলে, মাইর খেতে খেতে দেখা যাবে নাম বলে বসেছে। অবশ্য ধরা পড়ার চাইতে মাথায় তখন যেটা বেশী ঘুরতো – শালা আমার গোটা একটা সিগারেট একা একাই শেষ করে দেবে ??!! তাই ওদের সাথে সাথে নিজেও যেতাম। প্রথম দিকে যেহেতু সিগারেটের ফ্লেভারটা হালকা থাকে, তাই ওরাই সেটা ধরাতো। তারপরে লাল লাল চোখ ছলছল করে উদাসি ভঙ্গিতে টয়লেটের ফ্লাশের দিকে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বয়ান করতো কিভাবে সেই পাষানী বা পাষানীরা (!!!!) তার বর্তমান এবং ভবিষ্যতে বেঁচে থাকাটা অর্থহীন করে দিয়েছে। যারা টয়লেটে জোড়ায় সিগারেট খেতে অভ্যস্ত, তারা সবাই জানেন, আইনটা হলো, প্রতি দুই টান পর পর বা আগুন গোল্ড লীফের জন প্লেয়ারের R স্পর্শ করা মাত্রই সিগারেট হাত বদল করতে হবে। কিন্তু স্মৃতিচারনে ব্যস্ত থাকা ওইসব অসহায় আত্মাকে ব্যাপারটা মনে করিয়ে দিতে গেলেই এমন একটা দৃষ্টিতে তাকাতো, যার ভাষা থাকলে বলে উঠতো, আমার জীবনটা শেষ, আর তুই আমাকে এই সামান্য সিগারেটটা শেষ করতে দিবিনা ??!!!! আমার বিশ্বাস, সেই যে বিখ্যাত গানটা – অনেক কথা যাও যে বলি, কোনো কথা না বলে —– কবি এই ধরনের কোনো পরিস্থিতি থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে লিখেছেন। অবশ্য ওদের প্যানপ্যানানি শুনতে শুনতে বিরক্তির সাথে সাথে কিছুটা ঈর্ষাও বোধ করতাম। মনে হতো, ইসস … অন্তত ছ্যাকাটাও যদি খেতে পারতাম।

প্রেমের ব্যাপারটা ছোটবেলা থেকেই বেশ রহস্যজনক লাগে। সিনেমাতে যখন দেখতাম, নায়িকা নায়কের প্রতি বা নায়ক নায়িকার প্রতি খুব বেশী মনোযোগ দেখাচ্ছে, মনে হতো, দরকারটা কি?? এই ছেলে এই মেয়ের সাথে বা এই মেয়ে এই ছেলের সাথে না মিশলে তো অনেক ঝামেলা থেকে বেঁচে যাচ্ছে … কি দরকার শুধু শুধু এতো পেইন নিয়ে। আমার পড়া প্রথম প্রেমজনিত বই ছিলো – প্রেম ভালোবাসা। লেখকের নাম মনে করতে পারছিনা এই মূহুর্তে, তবে মনে আছে বইটাতে তিনটা গল্প ছিলো। দুটো গল্প ছিলো নায়িকা কেন্দ্রিক, এবং আরেকটি ছিলো ইংরেজদের শাসনামলের কিছু বিপ্লবীদের নিয়ে। তিন গল্পের তিন নায়িকা তিন রকম ভিন্ন ভিন্ন কারনে প্রেমে পড়ে। ক্লাস এইটের মাঝামাঝি সময়ে এই বইটা পড়েছিলাম। তখন আসলে মাঝেমাঝেই জানতে ইচ্ছে করতো, মানুষ কেনো বা কিভাবে প্রেমে পড়ে ??

কলেজ থেকে বের হয়ে একটা নতুন থিওরী শুনলাম – ক্যাডেট কলেজের ছেলেপেলে কলেজ থেকে বের হয়েই প্রেমে পড়ে। থিওরীর স্বপক্ষে প্রচুর উদাহরন দেখা গেলো। সংসদ ভবনের আমাদের গুলতানির আড্ডার সদস্যরা ভিড় জমানো শুরু করলো টি এস সি এর মোড়ে, কার্জন হলের সামনে বা চারুকলার আশেপাশে। সেই সব কাছের বন্ধু বান্ধবদের কাছে সেই পুরাতন প্রশ্নের উত্তর পাবার চেষ্টা করতাম – মানুষ বিশেষ করে ছেলেরা, কেনো প্রেমে পড়ে? মেয়েরা কেনো প্রেমে পড়ে এইটা মেয়েরা নিজেরাও ঠিক করে বলতে পারবে কিনা সে ব্যাপারে আমার সন্দেহ আছে। যা হোক, বুয়েটে থাকতে ঝকক এর বন্ধু এবং হলের রুমমেট শহীদের সাথে এইসব উচ্চমার্গীয় ব্যাপারে অনেক জটিল আলোচনা হত।

আমাদের গবেষনাতে পাওয়া প্রথম ক্যাটেগরি হলো — প্রথম দর্শনেই প্রেম। কেন জানি, আরব্য রজনীর নায়ক-নায়িকারা এই প্রথম দর্শনেই প্রেমের খুব ভক্ত ছিলো। আর আমরা যখন বড় হচ্ছিলাম, তখনও প্রায় সময়ই গল্প-উপন্যাসে বা মাঝে মাঝে বাস্তব কাহিনীগুলোতেও এই ধরনের প্রেমের প্রচুর রেফারেন্স পাওয়া যেতো। ব্যাক্তিগতভাবে আমার কাছে মনে হয় না এই ধরনের প্রেম সম্ভব। কারন, প্রথম দেখাতেই কেউ মানুষ হিসেবে কি রকম সেটা আন্দাজ করা খুব কঠিন। বাহ্যিক সৌন্দর্যের কারনে হয়তো কাউকে ভালো লেগে যেতে পারে, কিন্তু সেটাকে কি প্রেম বলা যায়? খুব সুন্দরী একটা মেয়েকে প্রথম দেখে হয়তো খুব বেশী ভালোলাগা বা ক্রাশ (ইংরেজী সিরিজগুলোতে যেমন বলে) ঘটতে পারে। কিন্তু, জীবনের দুপুর, বিকেল, সন্ধ্যা এবং রাত্রি শুধুই তার সাথে কাটাতে চাই — এই অনুভুতিটা আসতে আরো অনেক সময় নেয়ার কথা।

কিছু কিছু বন্ধুকে দেখতাম কোনো বিশেষ একটা মেয়ের সাথে দিনের খুব বিশাল একটা সময় কাটিয়ে দিচ্ছে। ব্যাপার কি জানতে চাইলে বলতো, দোস্ত সে আমার জাস্ট ফ্রেন্ড। আমার ধারনা, জানিনা অন্য কেউ আমার সাথে একমত হবে কিনা, আমাদের সমাজে বড় হওয়া একটা সিঙ্গেল ছেলে এবং একটা সিঙ্গেল মেয়ে যারা নিজেদের বেশ সময় কাটাচ্ছে, তারা আর শুধুই বন্ধু থাকতে পারে না। এই নিজেদের মধ্যে সময় কাটানো বলতে আমি শুধু নিজেদের মধ্যে সময় কাটানো বুঝাচ্ছি, বন্ধু গ্রুপের মধ্যে সময় কাটানো না। এই লাইনে থাকা আমার এক বন্ধুকে যখন কোনোভাবেই স্বীকার করাতে পারছিলাম না যে সে মেয়েটিকে ভালোবাসে, তখন ওকে বলেছিলাম — দোস্ত, বিশাল একটা ভার বুকের ওপর থেকে নেমে গেলো। সোনালীকে (অবশ্যই আসল নাম নয়) আমার খুব ভালো লাগে। তুই যেহেতু তার সাথে রিলেশনশীপে নেই, আমি তাহলে একটা চান্স নেবার চেষ্টা করতে পারি। তুই কি ওর কাছে আমার কিছু সুনাম করবি ??? —- বিষদৃষ্টিতে আসলেই যদি বিষ থাকতো, তাহলে সেদিন আমি এমন ছাই হয়ে যেতাম যে স্বয়ং ধনন্তরীর ওষুধও আমার কোনো উপকারে লাগতোনা। যা হোক বিষদৃষ্টির সামনে আমাকে নির্লজ্জের মতন নির্বিকার দেখে আমার বন্ধু বেশ কিছু কিছু লক্ষন ব্যাখ্যা করতে লাগলো যেগুলো পরিষ্কারভাবে নির্দেশ করে যে, সোনালী আসলে কোনো প্রেমের সম্পর্কে নিজেকে জড়াতে চায়না, তাই আমি যেনো আমার মুল্যবান সময় তার পেছনে নষ্ট না করি। পরে ওদের দুজনের বিয়ের পরে আমরা এই ঘটনা নিয়ে বেশ হাসাহাসি করেছি। এই — বন্ধুত্ব থেকে প্রেম —- ব্যাপারটা আরেক ক্যাটাগরির প্রেম এবং এইটা আমার সবচেয়ে পছন্দের। যদিও আমি বুঝিনা কেনো এই শুরুর সময়টাতে ছেলেরা নিজের ঘনিষ্ঠ বন্ধুর কাছেও নিজের অনুভুতির কথা স্বীকার করতে চায়না।

বুয়েটে থাকার বইয়ের নেশা এবং সিগারেট ও ইত্যাদির, নেশা বলাটা ঠিক হবে না বরং সাধ আহ্লাদ বলা যেতে পারে, মেটানোর জন্যে টিউশনি করা শুরু করেছিলাম। ছাত্রী পড়াতো এমন অনেক বন্ধু-বান্ধবকে দেখতাম, যত্ন সহকারে পড়ানোর পাশাপাশি, তাদের পুষ্টির অভাবও দূর করার জন্যে তাদের সাথে নিয়ে ভিন্ন ফাস্ট ফুডের দোকানে যাওয়া শুরু করছে। ছাত্রীর সাথে প্রেম করার এই চলটা আমাদের সময়ে বেশ জনপ্রিয় ছিলো।

সাতকাহনের নায়িকা দীপাবলিকে নিয়ে আমার আর আমার বন্ধুদের মধ্যে অনেক তর্ক হতো। দীপাবলি আমার বেশ পুরোনো প্রেমিকা (একতরফা যদিও) ছিলো। আমার এক বন্ধুর ধারনা, তার মতন মেয়েরা হয়তো প্রেমিকা হিসেবে ভালো, কিন্তু তার মতন ডমিনেটিং / খুব বেশী স্বাধীনচেতা চরিত্রের কারো সাথে কি দীর্ঘদিন সংসার করা সম্ভব? আমার মনে হয়েছে, ছেলেদের চমৎকার ব্যাক্তিত্ব যেমন মেয়েদের আকর্ষন করে তেমনি মেয়েদের চমৎকার ব্যাক্তিত্বও ছেলেদের আকর্ষন করে। এই জন্যেই হয়তো ঘরে বার্বি ডলের মতন বউ রেখেও অনেকে অফিসে মহিলা সহকর্মির প্রতি আকৃষ্ট হয়।

সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়তো না, কিন্তু নিঃসন্দেহে সবচেয়ে মুখরোচক প্রেম হলো পরকীয়া প্রেম। সৌভাগ্যজনকভাবে পরকীয়া প্রেম ব্যাক্তিগতভাবে আমি শুধু বইয়ের পাতাতেই দেখেছি এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রের কমন প্যাটার্ন হলো, ক্যারিয়ারজনিত কারনে একজন আরেকজনকে সময় দিতে পারছে না। যার কারনে দ্বিতীয় জন কোনো এক তৃতীয় জনকে, বেশিরভাগ সময়ই সুযোগ সন্ধানী তৃতীয়জন, বেছে নেয় সময় কাটানোর জন্যে। দ্বিতীয়জন হয়তো বন্ধুত্বের চিন্তা করেই তৃতীয়জনের সাথে এই সম্পর্ক শুরু করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটা আরো দূরে গড়িয়ে যায়। ওয়াহিদা আপার একটা সিরিজে উনি খুব চমৎকার করে ব্যাপারটা তুলে ধরেছিলেন। ইদানিংকার বাস্তব জীবনে পরকীয়ার কতদুর প্রসার ঘটেছে কে জানে, তবে আমার মনে হয়না, ডাক্তারী বা সাংবাদিকতা বাদে অন্য পেশাগুলোতে এমন ব্যস্ত থাকতে হয় যে নিজের দ্বিতীয় জনকে যথেষ্ট সময় দেয়া যাবে না।

আমার বন্ধুরা যারা প্রেম করতো, তাদের মাঝে মধ্যেই প্রশ্ন করতাম, তোরা এই ৫-৬ ঘন্টা কি নিয়ে প্যাচাল পাড়িস?? যা উত্তর আসতো সেটার ফ্রিকোয়েন্সি
অ্যাসেন্ডিং অর্ডার করলে দাঁড়াবে –
৩) এই তো দোস্ত, কিছু এইটা কিছু ওইটা।
২) এই তো দোস্ত, কিছু হাল্কা পাতলা।
১) ভুইলে গেসিরে দোস্ত ……
প্রেমিক-প্রেমিকারা নিজেদের মধ্যে কি নিয়ে গুজগুজ ফুসফুস করে, এখনো সেটা জানতে পারলাম না। অবশ্য প্রেমিক প্রেমিকারা এজেন্ডা নির্ধারন করে আলোচনা করতে যাবে, তারপরে আলোচনার মিনিটস বানাবে, সেটা চিন্তা করাটাও হাস্যকর।

অনেক প্যাচাল পেড়ে ফেললাম। সিসিবিতে থাকা সব প্রেমিক প্রেমিকাদের ভালোবাসা দিবসের বাসি শুভেচ্ছা। আর যারা এখনো একা আছে, তাদের জন্যে শুভ কামনা, আশা করি এক পর্যায়ে সবাই নিজের উপযুক্ত দ্বিতীয়জন খুঁজে পাবে।

৫,০৩১ বার দেখা হয়েছে

৬৪ টি মন্তব্য : “অসংলগ্ন ভাবনাচিন্তা ……… প্রেম পর্ব”

  1. রকিব (০১-০৭)
    ইসস … অন্তত ছ্যাকাটাও যদি খেতে পারতাম।

    :(( :(( :((
    ভাইয়া, অনেকদিন পর লিখলেন, তাও আবার এমন জট্টিল টপিকে।
    বন্ধুদের অনেকে (যেগুলো প্রেমে মরেছে) বলে, জীবনে একবার প্রেম না করলে নাকী জীবনটা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। :khekz:
    কবে যে পূর্ণ হবে :-B


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  2. তানভীর (৯৪-০০)
    খুব সুন্দরী একটা মেয়েকে প্রথম দেখে হয়তো খুব বেশী ভালোলাগা বা ক্রাশ (ইংরেজী সিরিজগুলোতে যেমন বলে) ঘটতে পারে। কিন্তু, জীবনের দুপুর, বিকেল, সন্ধ্যা এবং রাত্রি শুধুই তার সাথে কাটাতে চাই — এই অনুভুতিটা আসতে আরো অনেক সময় নেয়ার কথা।
    এই — বন্ধুত্ব থেকে প্রেম —- ব্যাপারটা আরেক ক্যাটাগরির প্রেম এবং এইটা আমার সবচেয়ে পছন্দের।

    এহেম...এইটা একদম জীবন থেকে নেয়া মনে হচ্ছে! 😀

    তবে আমার মনে হয়না, ডাক্তারী বা সাংবাদিকতা বাদে অন্য পেশাগুলোতে এমন ব্যস্ত থাকতে হয় যে নিজের দ্বিতীয় জনকে যথেষ্ট সময় দেয়া যাবে না।

    ডাক্তার এবং সানবাদিকদের জন্য সতর্কবাণী। 😛 😛

    অনেকদিন পর লিখলেন, আপনি এখন কমেন্ট এবং লেখালেখিতে অনিয়মিত মইনুল ভাই।

    জবাব দিন
  3. জাহিদ (১৯৯৯-২০০৫)
    আমার বন্ধু বেশ কিছু কিছু লক্ষন ব্যাখ্যা করতে লাগলো যেগুলো পরিষ্কারভাবে নির্দেশ করে যে, সোনালী আসলে কোনো প্রেমের সম্পর্কে নিজেকে জড়াতে চায়না, তাই আমি যেনো আমার মুল্যবান সময় তার পেছনে নষ্ট না করি।

    :khekz: :khekz: :khekz: :khekz:

    নিঃসন্দেহে সবচেয়ে মুখরোচক প্রেম হলো পরকীয়া প্রেম।

    ;;; ;;; :thumbup: :thumbup:

    প্রেমিক-প্রেমিকারা নিজেদের মধ্যে কি নিয়ে গুজগুজ ফুসফুস করে, এখনো সেটা জানতে পারলাম না।

    :-/ :-/ :-/ যাতি যান্তে চায়

    জবাব দিন
  4. আছিব (২০০০-২০০৬)
    কিছু কিছু বন্ধুকে দেখতাম কোনো বিশেষ একটা মেয়ের সাথে দিনের খুব বিশাল একটা সময় কাটিয়ে দিচ্ছে। ব্যাপার কি জানতে চাইলে বলতো, দোস্ত সে আমার জাস্ট ফ্রেন্ড।

    আমি খালি ওয়েট করতেছি মাসরুফ ভাই এইটা পড়ে কি বলে!!! :dreamy:
    যাঁরা জানেন না , ;)) তাঁদের জন্য আমাদের মধ্যে প্রচলিত একটা ডায়লগ বলি :-B
    "প্রেম করলে পরকীয়া
    সেট কিনলে নোকিয়া।''
    ;;)

    ডাক্তারী বা সাংবাদিকতা বাদে অন্য পেশাগুলোতে এমন ব্যস্ত থাকতে হয় যে নিজের দ্বিতীয় জনকে যথেষ্ট সময় দেয়া যাবে না।

    😕

    ~x( ভাইরে,আগেই কসম খাইছি,ভিলিউ মিডিকিলির মিইয়ি বিয়ি কিরমি নি :no:
    তয় ইঞ্জিনিয়ারদের চরিত্র,ফুলের মত পবিত্র....... :just: ছাত্রী পড়ানোটাই একটু মুদ্রাদোষ আর কি! :shy: :goragori:

    জবাব দিন
  5. রিফাত (২০০২-২০০৮)

    'বাহ্যিক সৌন্দর্যের কারনে হয়তো কাউকে ভালো লেগে যেতে পারে, কিন্তু সেটাকে কি প্রেম বলা যায়? ''.....

    আমার মতে এই ভালোলাগা কে...শুধুমাত্র 'প্রেমে পড়া' বলা যাই.
    আর প্রেমে পড়া মানেই..কাউকে ভালবাসা নয়..ভালবাসতে হলে অবস্যই সেই মানুষটাকে জানতে হবে.....

    জবাব দিন
  6. মেহেদী হাসান (১৯৯৬-২০০২)
    অবশ্য প্রেমিক প্রেমিকারা এজেন্ডা নির্ধারন করে আলোচনা করতে যাবে, তারপরে আলোচনার মিনিটস বানাবে, সেটা চিন্তা করাটাও হাস্যকর।

    এটা করতে পারলে মন্দ হত না...

    মইনুল ভাই, এত সুন্দর করে লিখেন কি করে, হিংসা হয় :hatsoff: :hatsoff:

    জবাব দিন
  7. আহমদ (৮৮-৯৪)
    যারা টয়লেটে জোড়ায় সিগারেট খেতে অভ্যস্ত, তারা সবাই জানেন, আইনটা হলো, প্রতি দুই টান পর পর বা আগুন গোল্ড লীফের জন প্লেয়ারের R স্পর্শ করা মাত্রই সিগারেট হাত বদল করতে হবে। কিন্তু স্মৃতিচারনে ব্যস্ত থাকা ওইসব অসহায় আত্মাকে ব্যাপারটা মনে করিয়ে দিতে গেলেই এমন একটা দৃষ্টিতে তাকাতো, যার ভাষা থাকলে বলে উঠতো, আমার জীবনটা শেষ, আর তুই আমাকে এই সামান্য সিগারেটটা শেষ করতে দিবিনা ??!!!!

    :boss: :boss: চোখের সামনে সবকিছু যেন ভেসে উঠছে। দারুন লিখেছো।

    তবে আমার মনে হয়েছে এখানে যাদের বা যে ধরনের প্রেম বা ভালবাসার কথা বলছো (যদিও আসলে এটাই আমরা আসেপাশে দেখে থাকি) এর বাহিরেও অনেক কথা থেকে যায়।

    তোমরা যে বল দিবস রজণী ভালবাসা ভালবাসা।।
    সখী ভালবাসা কারে কয়? ...

    তবে যাই হোক, অনেক মনোযোগ দিয়ে তোমার লেখাটা পড়লাম। পাঠক ধরে রাখার মত করে লিখেছো। :boss:

    আরেকটা কথা ... মাস্ফ্যু কই? জাস্ট ফ্রেন্ড বিষয়ে মাস্ফ্যু-র রি-একশক জানার স্বাধ হচ্ছে। 😉


    চ্যারিটি বিগিনস এট হোম

    জবাব দিন
  8. রাহাত (২০০০-২০০৬)

    প্রথমত : সবাই মাস্ফ্যু ভাইয়ের কথা জানতে চাইতেছে ক্যান ? বস কই আপনে ? :boss:
    দ্বিতীয়ত: অনেক ঘনিষ্ঠ সত্যিকারের বন্ধুত্ব দুইটা ছেলেমেয়ের মাঝে কখনোই থাকে না। বা টিকে থাকে না। পরিনতির দিকে যায়। বসে কঠিন সত্য কথা বলছেন :hatsoff:

    প্রেমিক-প্রেমিকারা নিজেদের মধ্যে কি নিয়ে গুজগুজ ফুসফুস করে, এখনো সেটা জানতে পারলাম না।

    আমার রুমমেট রাতে ফুসফুসাইয়া কথা কইতো আর হাসি চাপতে চাপতে আমি ঘুমাইতে পার্তাম না। এগো ডায়লগ শোনার মধ্যে জটিল শয়তানি মজা আছে।

    ৩) এই তো দোস্ত, কিছু এইটা কিছু ওইটা।
    ২) এই তো দোস্ত, কিছু হাল্কা পাতলা।
    ১) ভুইলে গেসিরে দোস্ত ……

    ফেসবুকের সিস্টেমে গেলে হয়--
    ১) engaged
    ২) In a relationship
    ৩) it is complicated
    আমার এক দোস্তে ৩ নং পয়েন্ট লেখার পরে একজনে কমেন্ট করছিলো---"ছ্যাকা খাবার পরে/প্রপোজ করার আগে এই ডাউটটা সবাই লয়।"

    জবাব দিন
  9. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    লেখা সেইরকম হইছে :clap: আপনি এত কম লেখেন কেন? 😡


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  10. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    রোমান্টিক ছবি বা গল্প এখনও আমার পছন্দের শীর্ষ তালিকায়। এবারের ভালেন্টাইনের সময়টাতে এই পর্যন্ত তোমার লেখাটা আমার মন ভরাল।
    ছেলে-মেয়ের বন্ধুত্বের ব্যাপারে তোমার মতের সাথে দ্বিমত পোষন করছি। দিনকাল যা পড়েছে একপর তো মনে হয় মেয়ে-মেয়ে, ছেলে-ছেলের বন্ধুত্ব নিয়েও প্রশ্ন জাগবে। একটা জিনিষ বেশ অবাক লাগে যে সভ্যতার ধারাবাহিকতা যেসব জায়গায় যতো পুরোনো, সেসব জায়গায় এই সমস্যা ততো প্রকট।
    প্রথম দর্শনে প্রেম - শুনতে ভালো শোনালেও এখন পর্যন্ত কোন সফল কাহিনী শুনিনি।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
    • মইনুল (১৯৯২-১৯৯৮)

      অনেক ধন্যবাদ আপু ...... 🙂 🙂 🙂 🙂 🙂

      ছেলে মেয়ের বন্ধুত্বের ব্যাপারে আমি যেটা লিখেছি, সেটা প্রায় ৬-১০ বছর আগে, অর্থাৎ আমরা যখন শিক্ষার্থী ছিলাম, তখন যেমনটা দেখেছিলাম তা নিয়েই লিখেছি। আর আমি আসলে ছেলেদের পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে এই ব্লগটা লিখেছি। একটা ছেলে আর একটা মেয়ে বেশ কিছুদিন ঘোরাঘুরি করলেই অন্তত ছেলেটার মধ্যে দেখতাম আরো ফিলিংস গ্রো করতে থাকে।

      দিনকাল যা পড়েছে একপর তো মনে হয় মেয়ে-মেয়ে, ছেলে-ছেলের বন্ধুত্ব নিয়েও প্রশ্ন জাগবে। একটা জিনিষ বেশ অবাক লাগে যে সভ্যতার ধারাবাহিকতা যেসব জায়গায় যতো পুরোনো, সেসব জায়গায় এই সমস্যা ততো প্রকট।

      সত্যি কথা ......... তবে আশা করছি সময়ের সাথে সাথে এই ব্যাপারটাও ঠিক হয়ে যাবে ......

      জবাব দিন
  11. মাহফুজ (৯২-৯৮)

    জটিল লিখেছস দোস্ত। আর শহীদের উচ্চমার্গীয় আলোচনার স্বভাব এখনো যায় নাই, তোকে তো আর দেশে পায় না, কাজেই এখন আমাকে ওইসব আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে হচ্ছে 🙂 কি আর করা, আঠার বছরের জিগরী দোস্ত...

    জবাব দিন
  12. সাবিহা জিতু (১৯৯৩-১৯৯৯)
    ইদানিংকার বাস্তব জীবনে পরকীয়ার কতদুর প্রসার ঘটেছে কে জানে, তবে আমার মনে হয়না, ডাক্তারী বা সাংবাদিকতা বাদে অন্য পেশাগুলোতে এমন ব্যস্ত থাকতে হয় যে নিজের দ্বিতীয় জনকে যথেষ্ট সময় দেয়া যাবে না।

    মইনুল ভাই, এই কথাতায় সামান্য দ্বিমত না করেই পারছি না। আমার ব্যাক্তিগত অবসার্ভেশন হতে পারে, কিন্তু আমি এমন কিছু পরকীয়া খুব কাছ থেকে দেখেছি, ভিন্ন ভিন্ন পেশার মানুষদের জরিত থাকতে। পেশার প্রতি যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করেই বলি, সবচেয়ে বেশী জড়িয়ে পরে কর্পোরেট মানুষগুলো। বহুজাতিক কম্পানী, প্রাইভেট ব্যাঙ্ক, সেলুলার ফোন কম্পানী ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেখা যায় ছেলে-মেয়েতে কাজের প্রেসারের দিক থেকে কোন পক্ষপাত নাই। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় কি আটটায় বেড়োয় অফিস থেকে, এর পর চলে যায় ক্লায়েন্ট ভিজিটে। প্রায় সময়ই সহকর্মীকে নিয়ে বেড়িয়ে যেতে হচ্ছে কাজের খাতিরে। সেই সহকর্মী অনেকসময়ই বিপরীত লিঙ্গেরও হয়ে থাকে। আর রক্ত মাংসের মানুষ হওয়াতে কাজের কথার ফাঁকে ফাঁকে তাদের মধ্যে ব্যাক্তিগত সক্ষ্যতাও গড়ে ওঠে...


    You cannot hangout with negative people and expect a positive life.

    জবাব দিন
      • মইনুল (১৯৯২-১৯৯৮)

        তোমার পয়েন্টটা বুঝতে পেরেছি ......... কিন্তু মনে হয় আমি আমার ভাবটা ঠিকঠাক ভাবে বোঝাতে পারিনি ..... আমার ধারণা, স্বামী স্ত্রীদের মধ্যে কোনভাবে গ্যাপ তৈরী হলেই তখন সে গ্যাপ পূরণ করার জন্যে তারা পরকিয়ার পথ ধরে ..... তুমি যে লাইনটা কোট করেছ, সেটাতে আমি বোঝাতে চাচ্ছিলাম, ডাক্তার বা সাংবাদিক বাদে আর কাউকে কাজের জন্যে এতটা সময় বা মনোযোগ দিতে হয়না, যে সে তার স্বামী বা স্ত্রীকে ঠিকঠাকভাবে সময় দিতে পারবে না এবং তাদের মধ্যে পরকিয়া করার ইচ্ছে হবার মতন গ্যাপ তৈরী হবে .....

        আসলে সদিচ্ছাই আসল ব্যাপার ...... কেউ যদি তার স্ত্রী বা স্বামীর জন্যে টাইম রাখতে চায় অবশ্যই পারবে ...... এইখানে দিনের অনেক সময় একসাথে থাকতে হয়, এইটা কোনো অজুহাত না .....এখন এই ব্যাপারটা আরো ভালোভাবে বুঝি ...
        এইযে আমরা প্রায় ১০ জনের টিম মালেয়শিয়া থেকে এসে আলজেরিয়াতে দেড় দুই মাস ধরে কাজ করছি, একই হোটেলে বা আপার্টমেন্টে পাশাপাশি রুমে থাকছি, স্বাভাবিকভাবেই আমাদের সবার মধ্যেই ভালো ব্ন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে ... কিন্তু তার মানে এই না আমরা যে ৪ জন মেয়ে আর ৬ জন ছেলে আছি, তারা এই বন্ধুত্বের লিমিটটা ভুলে যাচ্ছি .......

        জবাব দিন
        • সাবিহা জিতু (১৯৯৩-১৯৯৯)

          আপনিই বোধ হয় ঠিক বলেছেন, মইনুল ভাই। সামাজিক জীব মানুষ মাত্রই সঙ্গপিয়াসী আর নিসঙ্গ হলে আরো বেশী সঙ্গী খঁজতে থাকে মনের অজান্তেই। কিন্তু তাও আমার কাছে মনে হয় ঘরে সুন্দরী, কেয়ারীং স্ত্রী বা স্বামী রেখে যখন কেবল মাত্র সময় কাটাতে গিয়েই পরকীয়া বা টু টাইমিং এ জড়িয়ে পরছে যারা তাদের জন্য কোন অজুহাতই তাদের নির্দোষ প্রমান করার জন্য যঠেষ্ট না। আমি হয়তো অনেক বেশীই ব্যাকডেটেড ভাবনার মানুষ, কিন্তু এখনও "পরকীয়া" আমার কাছে একটা জঘন্য অসামাজিক কাজ বলে গন্য। দুঃক্ষিত মইনুল ভাই, যদি বেশী বলে থাকি।


          You cannot hangout with negative people and expect a positive life.

          জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রেজওয়ান (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।