সবুজ প্রজাপতি (দ্বিতীয় পর্ব)

(তিন মাস আগে, জনমানবশূন্য কোন এক চা-বাগানের রেস্ট হাউজে)

আমি তলিয়ে যাচ্ছি। আবার সাথে সাথে ভেসে উঠছি। প্রবল ঝড়ে সমুদ্রের প্রবলতর ঢেউয়ের মতো আমার ভেতরের সত্ত্া আছড়ে পড়ছে। চোখের দৃষ্টি ঘোলাটে হয়ে আছে। কপালে ঘাম জমেছে, মুছতে গিয়ে হাতের ল্যাটেক্স গ্লাভে লেগে থাকা কালচে লাল রক্ত মুখে লেগে গেলো। ক্লকওয়ার্কের মতো মুখ দিয়ে বের হয়ে এলো খিস্তি।
এক অপার্থিব উল্লাসে আমার সমগ্র শরীর থর থর করে কাঁপছে। অনাহারে থাকার পর রাজভোগের তৃপ্তির সাথে এর তুলনা চলে। কিন্তু সেটা অনেক ম্যাটেরিয়ালিস্টিক কম্পেরিজন। এই আনন্দ ইশ্বরের পাশে দাঁড়ানোর আনন্দ। আমি মনে মনে ভাবি।

আমার সামনে পরে থাকা শরীরে কোন স্পন্দন নেই। মাথাটা গলা অব্দি কেটে ধড়ের পাশে রাখা । চোখগুলি অদ্ভুতভাবে খুলে আছে, সেগুলি ভর্তি বিস্ময়। উত্তর আসবেনা জেনেও, আমি তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দিলাম। এটা একটা খেলা। এটাই আমার সত্যিকারের হাসি। মন থেকে আসা। সবার সামনে যে হাসি হাসতে হয়, তাতে বলপ্রয়োগ ছাড়া আর কিছু থাকেনা। দিনের পর দিন অন্যদের জন্য জীবনযাপনের অভিনয় ক্লান্তিকর মনে হয় মাঝে মাঝে। আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার তাকালাম। চুলগুলি অবিন্যস্ত, রক্ত লেগে কেমন লেপ্টে আছে। এই দেহে যখন প্রাণ ছিলো বেশ করে বোঝা যাচ্ছিলো চুলের যত্নে কোন কমতি হয়না। আমার এই বিশেষ ঘরে যারা এসেছে, সবাইকে দেখেছি। আমার স্ত্রীকেও দেখেছি। শ্যাম্পু, তেল, কন্ডিশনার এটা সেটা- আরো কত কি! আমার মাথায় একটা অদ্ভুত চিন্তা খেলে গেলো। যত যত্ন সব মাথায় থাকা চুলের। শরীরের আর কোন জায়গার চুল এতটা যত্ন পায়না। উলটো লজ্জার,বিরক্তির কারণ হয়। কি অদ্ভুত। আমি হাত দিয়ে মেয়েটার তলপেট জুড়ে ছড়িয়ে থাকা কোঁকড়া চুলে হাত বুলিয়ে দিলাম। কিন্তু মাথার চেয়ে এই বিশেষ জায়গার গৌরব,কদর অনেক বেশী- সবার কাছেই,এই একটা ক্ষেত্রে আমিও আলাদা কিছুনা। কি অবহেলায় পড়ে আছে ওরা। মন চাইলো একটু নারিকেল তেল এনে বিলি কেটে দিই। ভাবতে ভাবতেই আমার হাসি এসে গেলো। আমি খুব জোরে এক চোট হেসে নিলাম। নিরেট কনক্রিটের দেয়ালে আমার ভরাট গলা গম গম শব্দ তুলে মিলিয়ে গেলো। খুব ফুরফুরে লাগছে। কিন্তু হাতে সময় কম। সকালের মাঝে বাসায় ফিরতে হবে। কাজে লেগে যেতে হবে। নিজেকে তাড়া দিলাম। আমি উঠে ঘরের কোণায় রাখা সাউন্ড সিস্টেম চালু করে দিলাম। ডিলানের চিরপরিচিত গলা ভেসে আসলো ‘লেই,লেডি,লেই’। মিট-ক্লিভার টা শরীরের পাশেই রাখা ছিলো। আমি শক্ত হাতে হাতলটা ধরে মাথার উপর থেকে নামিয়ে আনলাম পেলভিস লক্ষ্য করে। এখনকার কাজটা বেশ একঘেয়ে, রুটিনওয়ার্ক। তারপরেও আমার বেশ ভালো লাগে। এটাও আরেকটা খেলা। একবার শুরু করে দিলে বেশ একটা ছন্দ চলে আসে শরীরে। মোজার্ট, শোঁপার কাছে ব্যাটন ছিলো- আর আমার আছে ধারালো চাপাতি। সুরের ইন্দ্রজাল সৃষ্টি করি আমি। এই ঘরে লাগানো তীব্র সাদা আলো ছড়ানো বাতির নিচে চকচক করতে করতে ভোঁতা আওয়াজে নেমে আসে ধারালো ক্লিভার। খচাৎ-খচ, খচাৎ-খচ। হাড়ে লাগলে শব্দটা হয় অন্যরকম। আরেকটু জোরালো। মন্ত্রমুগ্ধের মতো সেই আওয়াজে আমি আলাদা করতে থাকি- ঘাড় থেকে মাথা, কোমর থেকে পেট, হাটু থেকে উরু, পায়ের পাতা। একসময় একটু আগেও নিশ্বাস নিতে থাকা মানুষটাকে একটা এলোমেলো জিগ-স পাজলের মতো মনে হয়। আমি মনে মনে এই পাজল মেলানোর চেষ্টা করি। এটাও একটা খেলা। এই আমার মাস্টারপিস- গোছালো, সুচারু, সুন্দর। আমি এক কালজয়ী শিল্পী। আমি ঈশ্বর।

অথচ প্রথম প্রথম কি অগোছালোই না ছিলাম আমি। আমার ইজেল রাখার কোনো জায়গা ছিলোনা, শান্তিতে মাস্টারপিস তৈরী করার মত পরিবেশ ছিলোনা। প্রথম দিকের অনেককেই আমি তাই অমরত্ব দিতে পারিনি। এটা নিয়ে আমার ভেতরে একটা খচখচ আওয়াজ হয়। মানুষ কি এটাকেই আফসোস ডাকে? হতে পারে। মানুষের বেশীরভাগ ব্যাপারই আমার বোধগম্য হয়না। এই যেমন, আজ পর্যন্ত একটি নারীও আমি পাইনি যে আমার দিকে মুগ্ধতার দৃষ্টিতে তাকায়নি। এমন কি আমি আশেপাশে থাকলে পুরুষদের মাঝেও আমি নিয়মিত ইনসিকিউরিটি দেখি। আমার ভাবতে ভালো লাগে যে, এর কারণ আমার ধারালো চেহারা আর তারচেয়েও ধারালো বুদ্ধিমত্তা। তিনটা আলাদা মার্শাল আর্টে থার্ড ডিগ্রী ব্ল্যাক বেল্ট যেমন আমার আছে, তেমনি আয়ত্তে আছে নয়টি ভাষা। শরীরে গ্রীক ভাস্কর্যের মহিমা আছে, আর মাথায় আছে যে কোন অবস্থায় কোট করার মত কবিতার লাইন, ফিল্মের দৃশ্য, কিংবা দর্শনের তত্ত্ব। এসেট প্রায় সতেরো হাজার কোটি টাকা হওয়াটাও একটা কারণ হতে পারে। আমাকে দেখে হয়ত ওদের মনে উপাসনা করার সাধ জাগে। আজ পর্যন্ত কোন নারীর কাছ থেকে আমাকে প্রত্যাখ্যাত হতে হয়নি। আমার ইঙ্গিতপূর্ণ এক হাসিতেই কত পা আমি পলকে ফাঁক হয়ে যেতে দেখেছি! হে পদযুগল, তোমরা দ্বিধা হও,আমি তন্মধ্যে প্রবেশ করি! বাহ! বেশ মিলেছে তো কথাটা! আমি খুব করে আরেক চোট হাসলাম। বাইরে আওয়াজ যাবার সম্ভাবনা নেই। আশেপাশে দশ মাইলে কোন বাড়িঘর নেই, সব পরিত্যাক্ত রেস্ট হাউজ, খালি পড়ে আছে। সুতরাং বাইরে শব্দ গেলেও শোনার মতো কেউ নেই।

এই বিশাল চা-বাগান আমার খেলাঘর। মাসে অন্তত একবার এখানে আমাকে আসতেই হয়। যখন ভেতর ডেকে ডাক আসে, আমি সঙ্গিনী খুঁজে নেই। আমার কিছু নিয়ম আছে। পূর্ব পরিচিত কাউকে আমি ডাকিনা। আমার বয়স বাড়লেও, আমার সঙ্গিনীদের বয়স অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। যৌবনপুষ্ট শরীর ছাড়া অমরত্ব অযাচিত। আজ পর্যন্ত আমার কাউকে আনতে বেগ পেতে হয়নি। ইন্টারনেটে পেয়েছি অনেককে, কাউকে বাস-ট্রেনে ভ্রমণ করতে যেয়ে, রেস্টুরেন্টে খেতে যেয়ে, হোটেলের লবিতে, বিয়ের অনুষ্ঠানে। নিষিদ্ধ ভালোবাসার অমোঘ আকর্ষণে পঙ্গপালের মতো ছুটে এসেছে সবকটা। যাকে যখন আমার চোখে লেগেছে আমি এগিয়ে গিয়ে কথা বলেছি। ভোজবাজির মতো আমার সামনে মাখনের মতো গলে গেছে। বিবর্তন আমাকে মানুষের চে উচ্চশ্রেণীর প্রাণীতে পরিণত করেছে। আমার আকর্ষণ এড়িয়ে যাওয়া তাই অসম্ভব। হতে পারে অস্তিত্বের ভেতর ওরা অবচেতনে অনুভব করে যে আমার সাথে বিপদ হবে, কিন্তু মথ আর আগুনের গল্পের মতো আমি ওদের কাছে অনতিক্রম্য।

এখানে আমাকে খুঁজে পাবার কেউ নেই। দেখভাল করার জন্য একজনকে রাখা আছে। কিন্তু এই বাড়ির চাবি শুধু আমার কাছে থাকে। কেউ আসেনা এখানে। আমার সত্ত্বায় ডাক আসলে আমি ওকে তিন-চারদিনের ছুটিতে পাঠিয়ে দেই। বেসমেন্টের ভেতর থেকে তাই আজ অব্দি আমি ছাড়া কেউ বের হয়ে আসেনি। আমি কুলুঙ্গিতে রাখা ড্রামগুলোর দিকে তাকাই। সাতটা জমেছে। আজকেরটা হলে আটটা হবে। এগুলি ঢাকায় নেয়ার সময় এসেছে। আমি কব্জি থেকে ফ্যাকাশে হাতের পাতা আলাদা করতে করতে কাটা মাথাটার দিকে আবার তাকালাম। এতক্ষণ হয়ে গেলো, কিন্তু চোখের অবাক দৃষ্টি এখনো কাটলোনা। অবশ্য অবাক হবারই কথা, ছুরিটা গলায় চালানোর একটু আগেও মেয়েটা আমাকে ভেতরে নিতে নিতে স্বর্গসুখে সৃষ্টিকর্তাকে ডাকছিলো, কিংবা আমাকে ডাকছিলো তার সৃষ্টিকর্তা মনে করে। বিছানায় আমি আর ও ছিলাম- ঈশ্বর তো সেখানে ছিলোনা।

হাত বাঁধা ছিলো বিছানার হেডপোস্টে, এটা করতে ওরা কেনো রাজি হয় আমি আজো বুঝিনি। আমার প্রতি আনুগত্য দেখাতে কিসের এত ব্যাস্ততা! পায়ের উপর একশো টন নীল তিমির মতো চেপে বসেছিলাম আমি। অবাক হয়ে তাই তাকিয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিলোনা ওর,যেমন টা অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে ওর আগে আরো সাতচল্লিশ জন। ফিনকি দিয়ে যখন রক্ত বের হচ্ছিলো তখনো আমি ওর ভেতরে। মৃত্যুভয় আর নিষিদ্ধ সুখ মিলিত হয়ে জন্ম নেয়া অবিশ্বাস প্রসব করছিলো বিস্ফোরিত চোখের মণি।

নির্বিঘ্নে নিজের ভালোবাসার কাজ করে যাওয়ার মাঝে একটা নির্ভেজাল আনন্দ আছে। আমি এটা খুব ভালভাবে টের পেয়েছি কেননা একটা সময় পরিকল্পিত একটা সেট-আপের অভাবে আমাকে রাস্তায় মধ্য রাত্রে প্রচন্ড ঝুঁকি নিয়ে শিকারে বের হতে হয়েছে। হ্যাচকা টানে একলা চলতে থাকা কাউকে গলিতে ঢুকিয়ে মুখ চেপে ধরেছি। আমার ইস্পাতের মত হাতের আড়ালে কোন শব্দ ওরা বের করতে পারেনি। কিন্তু আমার প্রিয় দুটি কাজের কোনোটাই শান্তিতে করা যায়নি। সন্তুষ্টি আসেনি মনের ভেতর। রক্ত দেখার একটা আলাদা নেশা আছে। গলির ভেতর শ্বাসরোধ করে মেরে সে নেশার স্বাদ পাওয়া যায়না। আর চোখের যে অবাক দৃষ্টি আমার সবচে বড় নেশা, তার জন্য পকেটের ছোট ফ্ল্যাশ-লাইটের ওপর ভরসা করতে হয়। পুরো বিস্ময়টা তাতে ধরা পড়েনা। কিন্তু তবু আমাকে এমনটা করতে হয়েছে। তিনবার। কিছুদিন যেতেই যে অমোঘ ডাক আমি শুনতে পাই, তার আবেদন অনস্বীকার্য। জলোচ্ছ্বাসের মতো ফুলে-ফেপে ওঠা প্রবৃত্তি শান্ত করার শুধু এই একটাই উপায়। যতক্ষণ না কারো চোখে সেই দৃষ্টি দেখি, যতক্ষণ না কারো ভেতর ঢুকতে পারি- মাথার ভেতর থামের মতোন পা ফেলে লন্ডভন্ড করে একশো হাতি, শুঁড় তুলে নিনাদ তোলে। সে কি ভয়াবহ যন্ত্রণা! কি ভয়ংকর আকুতি! মোমবাতি নেভার আগে দপ করে জ্বলে ওঠে একবার…জীবনীশক্তি বের হওয়ার সময় মণিতেও তেমন একটা খেলা হয়। দেখার সাথে সাথেই কিছুদিনের জন্য আমার মাথার পাগলা হাতিরা শান্ত হয়। স্থির মাঝসমুদ্রের রূপ নেয় জলোচ্ছ্বাস।

কেন আমার এমন লাগে আমি জানিনা। যৌনতার অংশটা পরে এসেছে, প্রথমে শুধু জীবন নেয়ার তাগিদ ছিলো। এগারো বছর বয়স পর্যন্ত বিড়াল,বাচ্চা কুকুর আর পোষা খরগোশ দিয়ে কাজ চলেছে। কিন্তু এক মধ্যরাতে, ফিনকি-ফোটা জোছনায় সিমরান চাচীর ধবধবে সাদা গলা দেখে চেপে ধরার ইচ্ছা আমার মনকে চেপে ধরেছিলো। ঘুমের ঘুরে তার শরীরের আরো অংশ অনাবৃত ছিলো, কিন্তু তা আমার চোখে পড়েনি। সেরাতেই প্রথম পোষা প্রাণী দিয়ে আমার শান্তি হবেনা সেটা বুঝে গিয়েছিলাম। আমি তাকে জাপটে ধরে শুয়ে গলায় হাত বুলিয়ে গেছি। টিপে ধরার সাহস হয়নি। কিন্তু যে প্রবল আকাঙ্ক্ষা হয়েছিলো তা আজ অব্দি একটু ও কমেনি। তাতে নতুন মাত্রাই কেবল যোগ করেছে সব শেষ হবার আগে একবার ভোগের বিলাসিতা দেখানোর আচার। কারো সাথে শারীরিক হবো এই চিন্তা আমাকে উত্তেজনা দেয় না, অতটা কাছে যেয়ে কুড়ে কুড়ে শেষ মুহূর্তগুলির চাক্ষুষ সাক্ষী হতে পারবো এটা ভেবেই আমার শরীর চনমন করে ওঠে। সিংহের চেয়েও আমি বড় শিকারি…সিংহ কখনো জানবেনা হরিণের চুড়ান্ত কাছে যেয়ে বধ করতে কেমন লাগে। আমার হরিণীরা আমাকে ভেতরে নিয়ে বলি হয়।

একমনে কাজ করতে করতে কাটাকুটির খেলা শেষ হয়ে আসে। আমি টুকরোগুলি নিখুঁতভাবে হাইড্রোফ্লোরিক এসিড ভরা প্লাস্টিক ভ্যাটে ঢুকিয়ে দেই। কদিন বাদেই সব গলে একটা থকথকে জেলী হয়ে যাবে। শক্ত করে লিড লাগিয়ে সিল করে দেই। এরপর চুল্লী জ্বালিয়ে রক্তমাখা বিছানার চাদর আর লাশ-কাটার প্লাস্টিক শিট পুড়িয়ে ফেলি। আগুনের শিখায় প্লাস্টিক কুঁকড়ে যায়। পুরো ঘরে ব্লিচিং পাউডার ছড়িয়ে দিয়ে গায়ের জামা-কাপড় গ্লাভস খুলে ছুড়ে দেই লকলকে আগুনে। কিছুক্ষন নগ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে থাকি। নিজের নিখুঁত দক্ষতায় গর্ব হতে থাকে। শক্ত ব্রাশ দিয়ে ঘষে বেপরোয়া রক্তের দাগগুলি তুলে ফেললাম। অভ্যস্ত হাতে বেশী সময় লাগেনা আমার। ভেতরে এখন আশ্চর্য এক প্রশান্তি অনুভব করছি। এই শান্তি কোথা থেকে আসে? আবার হুট করে কোথায় চলে যায়?
এই যে অকৃত্রিম ভালো লাগা,এটাই কি স্বর্গ? স্বর্গ নরকের গতানুগতিক হিসেবে আমি কি কখনো নরক ছাড়া আর কিছু পাওয়ার যোগ্যতা রাখি? যদি নাই রাখি…তাহলে কেন এই প্রবল নিঃসঙ্গ মুহূর্তে, নগ্ন শরীরে দাঁড়িয়ে, একটি খুনের চিহ্ন মুছতে মুছতে নিজেকে আমার স্বর্গের বাসিন্দা না, অধিপতি মনে হয়? কত প্রশ্ন! এর একটার ও কি কোন উত্তর আছে? স্পিকারে বব ডিলান উত্তর দেয়
‘The answer my friend, is blowin’ in the wind
The answer is blowin’ in the wind’

সত্যিই তো,হয়ত বাতাসে ভাসছে, আমার সব রহস্যের জবাব।
সব উন্মাদনা থামতেই আমার ঘরে ফেরার জন্য টান লাগলো। আমি নিজেকে আবার তাড়া দিলাম। ভোর হবার আগেই রওনা হয়ে পড়তে হবে। গাড়ির স্টিয়ারিং এর এলাইনমেন্ট এ গণ্ডগোল হয়েছে। সারাতে হবে। অন্তত মাস খানেক আর ভেতর থেকে কোন ডাক আসবেনা। ভেবে আমার স্বস্তি লাগতে থাকে।

টাওয়েল পেঁচিয়ে আমি শাওয়ারে ঢুকি। আজকের গোসলটা বেশ জমবে।

……………….(চলবে)

আগের পর্বের লিঙ্ক-
সবুজ প্রজাপতি (পরব-১)-প্রথম পর্ব

২,০৮১ বার দেখা হয়েছে

৮ টি মন্তব্য : “সবুজ প্রজাপতি (দ্বিতীয় পর্ব)”

  1. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    চলুক।
    কিছু ডিটেইল - পেলভিক বোন/গার্ডল অথবা শুধু 'পেলভিস'; শোপাঁ (শোপিন নয়)

    'ঈশ্বরের চেয়ে বড় ক্রমিক খুনী নেই' -- কথাটা দুর্দান্ত। গল্প নিয়ে বলবো শেষে গিয়ে। শেষপর্যন্ত টানটা টানটান থাকে কি না দেখার কৌতূহল পুষে রাখলাম।

    বানান - সত্তা (ব-ফলা নেই কোথাও), আরো কিছু টুকটাক টাইপো রয়েছে।

    গল্প চলুক। নামকরণ পছন্দ হয়েছে। 🙂

    জবাব দিন
  2. Runa Shabnam (83-89)

    As if, ' Henning Mankel' is just a touch away. Excellent profiling of a homicider, though I hope very much of a presence of a clever ditective to catch this guy !! Hope you can face this new challenge !! :grr:


    মানুষ এমনতয়, একবার পাইবার পর
    নিতান্তই মাটির মনে হয় তার সোনার মোহর.........

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : হক (২০০২-২০০৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।