ব্যাচেলর কর ও স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা

১.
যারা বিয়ে করেননি বা করবেন না বলে ঠিক করেছেন এটা তাদের জন্য খবর। আপনারা এখন বেশ সুখেই আছেন। যদি জন্মাতেন ইতালির মুসেলিনির যুগে কিংবা তারও আগে ১৮২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরিতে তাহলে বিয়ে না করার শাস্তি পেতে হতো। আর এটা অর্থনৈতিক শাস্তি। সেসময় আপনাকে দিতে হতো বিয়ে না করার কর। এই করের নাম ‘ব্যাচেলর ট্যাক্স’।
ইতালির ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রপ্রধান বেনিটো মুসেলিনি (১৮৮৩-১৯৪৫) এই কর আরোপ করতেন। তিনি ইতালি শাসন করেছেন ১৯১২ থেকে ১৯২৩ পর্যন্ত। তার সময়ে ইতালির জনসংখ্যা ছিল মাত্র ৪ কোটি। তিনি চাইতেন আরো ২ কোটি জনসংখ্যা বাড়ুক। মুসেলিনির ধারনা ছিল তাহলেই ইতালি হতে পারবে সুপার পাওয়ার।
তার ছিল দু’টো উদ্দেশ্য। এতে সস্তায় শ্রমিক পাওয়া যাবে এবং তার বিশ্বাস ছিল জনসংখ্যা দিয়েই একটি দেশের শ্রেষ্ঠত্ব বিচার করা যায়। এই বিবেচনায় তিনি ব্যাচেলর ট্যাক্স আরোপ করে বিয়েতে আগ্রহী করতে চেয়েছিলেন। একই সঙ্গে তিনি জস্মনিয়ন্ত্রন ও গর্ভপাততে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটি বড় অপরাধ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন।
মিসৌরি ব্যাচেলর ট্যাক্স আরোপ করে ১৮২০ সালে। ২১ থেকে ৫০ বছর বয়সের ব্যাচেলারদের উপর কর ধার্য হয় ১ ডলার করে। অবশ্য সে সময় ১ ডলারে ৮ মান চাল পাওয়া যেতো কিনা তা জানা যায়নি।
আরও দু’টি অন্য ধরণের করের কথা বলা যেতে পারে। এর একটি হলো সোউল ট্যাক্স। এর বাংলা হবে সম্ভবত আত্মা কর। ১৭১৮ সালে রাশিয়ার পিটার দ্য গ্রেট এই করারোপ করেন। যাজক এবং উচ্চপদস্থ অভিজাতদের বাদ দিয়ে প্রতিটি পুরুষের উপর এই কর আরোপ করা হয়। পিটার দ্য গ্রেট তার সামরিক বাহিনীর সংস্কারের কাজে অর্থ সংগ্রহের জন্য এই করারোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
নোপোলিয়ার বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) নতুন আরেকটি কর আরোপ করেছিলেন। তিনি লবন কর বা সল্ট ট্যাক্স চালু করেছিলেন। ইতালি আক্রমনের তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যেই এই লবন কর আরোপ করা হয়। ফ্রান্সে এই কর ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত চালু ছিল।
এই বাংলায় জমিদার কৃষ্ণদেব রায় দাড়ির ওপর আড়াই টাকা কর বসিয়েছিলেন। (ভাগ্যিস আর নীচে নামে নাই :dreamy:
২.
ব্যাচেলর কর আবার চালু করা উচিৎ। এটা মূলত সুখে থাকার উপর কর। একই দেশে একদল সুখে থাকবে কিন্তু সুখে থাকার ট্যাক্স দেবে না, তাতো হয় না। :chup:
৩.
এই শেষ কটি লাইন সবার জন্য না। যারা বিবাহিত তাদের এই কটি লাইন পড়ার দরকার নাই। ব্যাচেলরদের বলছি……স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা তাদের সবাইকে 😀 কাল ২৬ মার্চ।

৩,৪২০ বার দেখা হয়েছে

৩৫ টি মন্তব্য : “ব্যাচেলর কর ও স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা”

  1. রকিব (০১-০৭)
    এই বাংলায় জমিদার কৃষ্ণদেব রায় দাড়ির ওপর আড়াই টাকা কর বসিয়েছিলেন। (ভাগ্যিস আর নীচে নামে নাই)

    আজো এইটা থাকলে সুব্রত ভাইয়া আর তুহিন ভাইকে নিয়মিত কর দিতে হইতো :guitar: :awesome: :tuski: :awesome:


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  2. আমাগো সিও কই ????
    তার যদি এই পোষ্ট পইরা এট্টূ ভয় ঢুকে...কবে না জানি আবার এই কর আরোপ হয় 😛
    কামরুল ভাই, জুনায়েদ ভাই......
    আসেন আমরা আন্দোলনে নামি......এই কর মেয়েদের জন্য আরোপ করা হোক 😛 তাতে যদি কপালে কিছু জোটে :bash:

    জবাব দিন
  3. ব্যাচেলরদের বলছি……স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা তাদের সবাইকে কাল ২৬ মার্চ।

    গত বছর আমার এক বন্ধুকে এই ডায়লগটা মেসেজ করে পাঠিয়েছিলাম.... রিপ্লাই দেখে আমার মনে হয়েছিল ক্যাডেট ছাড়া আর কারো এই zinc টা বুঝার ক্ষমতা নাই এবং আসলেও তাই...

    জবাব দিন
  4. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    স্বাধীনতা দিবসে সেরকম 😡 পরাধীন হইতে মঞ্চায় 😡 😡 আহসান ভাই যে কই? 🙁 রাস্তাডাও বস ছাড়েনা, 🙁 সাইড যাও দিছিলো বস, উকি দিয়া দেখি মাহমুদ ভাই ওভারটেক করার চেষ্টা করতাছেন 😛


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রায়হান আবীর (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।