ব্যস্ততা দিচ্ছে না অবসর

১. ব্যস্ততা দিচ্ছে না অবসর। হঠাৎ করে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। অফিস থেকেও নতুন কিছু দায়িত্ব পাওয়ায় কাজের চাপও বেড়ে গেছে। ব্লগ পড়া হয়, মন্তব্য করা হয় না, লেখা তো নয়ই। টুটুল ম্যাসেঞ্জারে এসে নক করে, কেন ব্লগে আসি না। অফিস ফেসবুক বন্ধ করে দিছে। প্রক্সি দিয়ে ঢুকলেও আগের মতো সক্রিয় না। কেউ কেউ এসএমএস করে ফেসবুকে আমন্ত্রণ জানালে তবেই ঢোকা হয়। কেমন নিরস হয়ে যাচ্ছি।
২. প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের ফলাফল নিয়ে খুব বেশি উচ্ছসিত হতে পারিনি। ভারত বিরোধী কোনো উগ্র অবস্থান আমার নেই। কিন্তু অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে আমার খানিকটা সমালোচনা করতে চেয়েছিলাম। ইচ্ছা ছিল একটি উপ-সম্পাদকীয় লেখা। মতি ভাইকে বলতেই তিনি বললেন প্রথম পাতার জন্য সংবাদ বিশ্লেষন আকারে লিখতে। লিখেছি, আজ যাচ্ছে। সরকার বিষয়টি কি ভাবে নেয় বুঝতে পারছি না।
৩. আমার প্রথম মোবাইল সিটিসেলের। সম্ভবত সেটটা ছিল নিপ্পন। এর পরে আমি আর কখনো নিপ্পন সেট দেখিনি। সেই সেটটি এক রাতে ছিনতাই হয়ে গেল। আমার বাসার গলিতে আমাকে কে কি বলবে-এই ভাবনায় রাত প্রায় একটার দিকে আড্ডা মেরে ফিরছিলাম বাসায়। ছিনতাইকারী ছিল ৪/৫ জন। হাতে বোমা, পিস্তল আর গলায় ধরা ছিল একটা ছুরি। ভদ্রলোকের মতো তাদের বুঝাতে চেষ্টা করেছিলাম যে সিটিসেল সিডিএম সেট, এটা ব্যবহার করতে পারবেন না। তাদের জানাশোনার মাত্রা এতোটাই কম ছিল, এসব বলা যে বৃথা তার টের পেয়েছিলাম গলায় ছুরির হালকা খোঁচা খেয়ে। সম্ভবত ১৯৯৮ বা ৯৯ সালের ঘটনা। এক বালিকার সাথে ফোনে কথা হতো। তবে তখন মানুষের হাতে হাতে মোবাইল ছিল না বলে টিএন্ডটি লাইনই ছিল ভরসা। ফলে যেসব নাম্বার সেটে সেভ করা ছিল তা নিয়ে খুব একটা আফসুস হয়নি। একটি বালিকারও টেলিফোন হারাতে হয়নি সেসময়।
৪. এবার আর ছিনতাই না, চুরি। ডিসেম্বরের ১৮ তারিখ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বালিশের কাছে রাখা সেটটি নেই। জানালা খোলা ছিল, রাতের কোনো এক সময় চুরি হয়ে গেছে। শীতের রাতে জানালা খোলা ছিল কেন এই প্রশ্ন আমাকে অনেকেই করেছেন। আমি উত্তর দিয়েছি, ‘আই এম সো হট……….’। এটার বাংলা কিন্তু হবে, আমার অনেক গরম।
সেটটা নকিয়ার এন ৭৯ সিরিজের। ঢাকায় দাম মনে হয় ২৪ হাজার টাকার মতো। সেটটি আমি সিঙ্গাপুরে নোকিয়ার এক অনুষ্ঠানে র‌্যাফেল ড্রতে চেয়েছিলাম। তা না হলে এতো দাম দিয়ে সেট কেনার কোনো ইচ্ছা বা সামর্থ্য আমার হওয়ার কথা না। সেটটা চুরি যাওয়ায় ব্যাপক মন খারাপ হয়েছিল। সেটটাতে ছিল আমার খুব প্রিয় প্রায় ৩শ গান। সবগুলো হারাতে হয়েছে। বালিকাদের কত নাম্বার ছিল সেটা না হয় নাই বলি।
ঠিক এক মাস পর সেটটি আবার ফিরে পেয়েছি। পুলিশের কাছে এখন মোবাইল ট্র্যাকিং সিস্টেম আছে। শুধু প্রয়োজন আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুয়েপমেন্ট আইডেনটিটি) নম্বর। সেটে *#০৬#-এ ডায়াল করলেই এই নম্বরটি দেখা যায়। এই নম্বারটি থাকলেই হলো। মুহূর্তে চলে আসে কোন নাম্বার দিয়ে কথা হচ্ছে, কার সাথে কথা হচ্ছে, কোন টাওয়ারের পাশে কথা হয়, সিম কার নামে, এফএনএফ নম্বরগুলো কতো ইত্যাদি। এতো তথ্য পাওয়া গেলে সেট উদ্ধার কী আর এমন কঠিন। তবে বাংলাদেশে তদ্বির ছাড়া কিছুই হয়না। এখানেই বা কিভাবে হবে। গত ২০ জানুয়ারী থেকে সেটটি আবার আমার হাতে।
দয়াবান পুলিশ অফিসার আমাকে বললো এখন সবচেয়ে অনিরাপদ জিনিষ হচ্ছে মোবাইল ফোন। যে কোনো কথা তারা শুনে নিতে পারে সাথে সাথে। আমি না হয় মাসুম, আপনারা?? বুঝে শুনে কথা বলবেন কিন্তু

৩,১৬৫ বার দেখা হয়েছে

৩২ টি মন্তব্য : “ব্যস্ততা দিচ্ছে না অবসর”

  1. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    ভাইয়া লিংক্টা তুলে দিলাম। আপনার বিশ্লেষন আমার ভালো লেগেছে। ঋনের ব্যাপারে আমার খটকাটা থেকেই গেল, বরং আপনার রিপোর্ট সেটাকে আরও বাড়িয়ে দিল।

    রিপোর্টার জন্য আপনাকে টুপি খোলা অভিনন্দন।


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : শওকত (৭৯-৮৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।