বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মন্ত্রী পর্যায়ের ৭ম সম্মেলন জেনেভায় হবে শুনে মনটা একটু খারাপই হয়েছিল। কারণ এর আগে আমি সুইজারল্যান্ড গেছি, এবং জেনেভা, জুরিখ ও দাভোসের অনেকখানি আমার দেখা হয়েছে। নিজের পয়শায় দেশ-বিদেশ ঘোরার সামর্থ্য আমার নাই, আমন্ত্রণে অথবা অফিসের অর্থে যেতে হয়। ভেবেছিলাম এবার সম্মেলন হবে নতুন কোনো দেশে, কাজের ছলে নতুন একটা দেশও দেখা হবে।
২০০৮ সালে যখন সুইজারল্যান্ড যাই, সেসময় দেশটি সেনজেনের মধ্যে ছিল না। ফলে সুইজারল্যান্ড থেকেই ফিরে আসতে হয়েছিল। চুরি করে অবশ্য ফ্রান্সে ঢুকেছিলাম তিন ঘন্টার জন্য, তবে সেটিকে নিশ্চই ফ্রান্স দেখা বলা যায় না।
২ ডিসেম্বর সম্মেলন শেষ হবে, আমি ৫ তারিখ ফিরে আসবো বলে ভিসা ফর্মে লিখে দিয়েছিলাম। তারপরেই আমার মনে হল আমি কেন আরও দু’চারটি দেশ দেখে আসছি না। অফিসকে বলে ফিরতি টিকেট করলাম প্যারিস থেকে। ভিসা পেয়ে দেখি ১৫ তারিখ পর্যন্ত আমি সেখানে থাকতে পারবো। মনে হলো সাগর আছে জার্মানির বনে, সেখানে যাওয়া যায়। সাগর ওর বাসায় থাকতে বলেছে। ব্রাসেলস-এ মাসুদ আছে। ওখানেও থাকা যাবে। কিন্তু আমার একমাত্র আগ্রহ প্যারিস। যদিও হোটেল ছাড়া সেখানে আমার থাকার কোনো জায়গা নেই।
দেবপ্রিয় দা এখন জেনেভায়। তাকে ফোন করে বললাম আমার জন্য প্যারিসে যাওয়ার একটা টিকেট কেটে রাখতে আর একটা হোটেল ঠিক করে দিতে। দেবপ্রিয়দা তাঁর সেক্রেটারীকে দিয়ে যে হোটেলের খবর দিলেন তাতে আমি অনেকটা উৎসাহ হারিয়ে ফেললাম। এক রাতের ভাড়া প্রায় ১শ ইউরো। তাতে আমি ২ বা ৩ দিনের বেশি প্যারিস থাকার সাহস পেলাম না।
এক সময় আমরা বন্ধু নামে আমি একটা ইয়াহু গ্রুপের সদস্য ছিলাম। আমরা বন্ধু এখনো আছে, ইয়াহু গ্রুপ থেকে সেটা ব্লগে পরিণত হয়েছে। একসময়ের জমজমাট সেই গ্রুপের সদস্য প্রীতি। টুটুল জানালো প্রীতিরা সপরিবারে প্যারিস থাকে। প্রীতি আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডও। ওর সাথে খুব কথা হতো না, দুবার মনে হয় একটা কাজে ফোনে কথা হয়েছিল। কিন্তু ফেসবুকে প্রীতিকে আর খুঁজে পেলাম না। তার অ্যাকাউন্ট নিস্ক্রিয়। টুটুলই প্রীতির ই-মেইল ঠিকানা জোগাড় করে দিল। ছোট্ট একটা চিঠি লিখলাম প্রীতিকে। সস্তায় একটা হোটেল খুঁজে দিতে অনুরোধ। সেই মেয়ে ঐদিনই ই-মেইলের জবাব দিয়ে জানালো, আমি তার বাসায়ই থাকতে পারি, যদিও তার বাসা ছোট। কিন্তু বড় কোনো জায়গা যদি লাগে তাহলে প্যারিসে আসার পর হোটেল খুঁজে নেওয়া যাবে।
মনে মনে প্রচন্ড খুশী হলেও ভদ্রলোকের মতো ভদ্রতা করে পাল্টা মেইল করে বললাম তোমাদের তো অসুবিধা হবে। আমি হোটেলেই থাকতে পারবো। প্রীতি অভয় দিয়ে বললো ও তার বাবা-মার সাথে কথা বলেই আমাকে লিখছে। প্যারিসে থাকার জায়গার বন্দোবস্ত হওয়ায় আরাম করে একটা ঘুম দিলাম।
প্রথম যাবো জেনেভা। কিন্তু অন্তর জুড়ে প্যারিস। আবার যেতে হবে ঈদের দিন রাতে। আমি কাতার এয়ারওয়েজে উঠলাম ঈদের দিন রাত ৯টায়।
😀 😀 😀
আমরা বন্ধু গ্রুপে আমিও আছিলাম। এখনো আছি কিন্তু ঢুঁ মারা হয় না ইদানিং।
প্যারিস এর আরো কাহিনী পড়তে মন চায়। জীবনে তো আর দেখা হইবো না, শুইনাই স্বাদ মিটাই। দেশে ফিরে এসেছেন নাকি বিদেশ (এখন কোন দেশে আছেন জানি না তাই বিদেশ লিখাই ভাল 😀 ) থেকেই লিখলেন?
আমি এখন ঢাকায়। দেশে এসেই লিখছি। কয়েক পর্ব হবে।
আমরা বন্ধুতে তুহিন নামেই ছিলা?
লেখায় আমরা বন্ধু নামটা পড়ে কেন জানি পরিচিত পরিচিত মনে হচ্ছিল। হঠাত করে মনে পড়ল ঐদিন এক আড্ডায় শুনছিলাম এই গ্রুপ থেকে নাকি চার খানা পুরুষ শহীদ হয়ে জোড়ায় রূপান্তরিত হয়েছে 😛 এদের মধ্যে একজোড়া আবার অতি পরিচিত 😉
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
শওকত ভাই, পরবর্তী পর্ব থেকে বর্ণনার পাশাপাশি নিয়মিত ছবিব্লগ চাই।
প্যারিসে এসেছিলেন ভাইয়া ? এখন কি ঢাকায় ? ইসসসসস একটু যদি আগে জানাতেন, হয়ত আপনাকে সাথে দেখা করতে পারতাম। একসাথে একটু ঘোরাঘুরিও করতে পারতাম। সিসিবির কাউকে প্যারিসে পেলে অনেক খুশি হতাম।
এক কাজ করেন- সিসিবি প্যারিস চ্যাপ্টারের একটা পিকনিক আয়োজন করেন পরের বার 🙂
একা একাই?
সাংবাদিক হমু, :((
মাগনা মাগনা ইউরোপে যামু :((
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
পারি-র অপেক্ষায় থাকলাম... 🙂
সাতেও নাই, পাঁচেও নাই
উপরের কমেন্ট টা অবশ্য আমার করা... 😀
লেখাটা সুন্দর লাগলো... পরের পর্বের অপেক্ষায়...
সেই ২০০৪ সালে গিয়েছিলাম... এখনো স্মৃতিতে ভেসে আছে সেই কয়েকটা দিন...
কখনও ইউরোপ যাইনি, তাই ইউরোপের দেশগুলোর ভ্রমণ-কাহিনী গোগ্রাসে গিলি।
পরের পর্বে কিন্তু ছবিও চাই মাসুম ভাই।