ভার্টিগোর ভালো মন্দ

ভার্টিগো আমার পিছু ছাড়তাছে না। সেই কবে হিচককের ভার্টিগো মুভি দেইখা মহামুগ্ধ হইছিলাম। কিন্তু ভার্টিগো অসুখটার প্রতি ঠিক মুগ্ধ হইতে পারতাছি না। যারা ভার্টিগো নামের রোগের নাম কখনো শোনেন নাই, তাদের জন্য আমি এক হাজার ওয়েব সাইটের ঠিকানা দিতে পারি। তারা এই ঠিকানায় যাইয়া একজন ভার্টিগো বিশেষজ্ঞ হইতে পারবেন। আর যাদের ওতো সময় নাই তাদের জন্য বললে বলতে হয় ভার্টিগো আর প্রেগনেন্সি সিমটমের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নাই। পার্থক্য কেবল ফলাফলে। ভার্টিগো হইলে কোনো কিছু উৎপন্ন হয় না।
এই ভার্টিগো নিয়া ইন্টরনেট ঘাটতেই একটু ছড়া বা কবিতা পাইলাম। মজা লাগলো। শেয়ার করি—

Old Age Alphabet

A’s for arthritis,
B’s the bad back,
C’s the chest pains – perhaps car-d-iac?

D is for dental decay and decline,
E is for eyesight, can’t read that top line!
F is for fissures and fluid retention,
G is for gas which I’d rather not mention.

H is high blood pressure – I’d rather it low;
I is for incisions with scars you can show…
J is for joints, out of socket, won’t mend,
K is for knees that crack when they bend.

L is for libido, what happened to sex?
M is for memory, I forget what comes next.
N is neuralgia, in nerves way down low;
O is for osteo, the bones that don’t grow!

P is for prescriptions, I have quite a few, just give me a pill and I’ll be good as new!
Q is for queasy, is it fatal or flu?
R is for reflux, one meal turns to two.

S is for sleepless nights, counting my fears,
T is for Tinnitus – there’s bells in my ears!
U is for urinary… big troubles with flow;
V is for vertigo, that’s “dizzy,” you know.

W is for worry – NOW what’s going ’round?
X is for X ray, and what might be found;
Y is another year I’m left here behind,
Z is for zest that I still have – in my mind.

I’ve survived all the symptoms, my body’s deployed, and I am keeping twenty-six doctors fully employed!

খাইছে, এখানে দেখি সব রোগেরই নাম আছে। রোগ আছে বইলাই তো ডাক্তার আছে। গেলাম ডাক্তারের কাছে। বিশাল ডাক্তার। অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত। আইজ নাম লেখাইলে সিরিয়াল পড়রো আগস্টের শেষে। কেমনে কেমনে যেন এক ঘন্টার মধ্যে ঐ দিনেরই সিরিয়াল পাইয়া গেলাম। তাঁর চেম্বারে যাইয়া মাথা চক্কর দিয়া উঠলো। মনে হইলো এইটা একটা জনসভা। কয়েকশ রোগি। তার চেম্বারখানা সুবিধার না। ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই, ছোট এ তরী টাইপ। এতো বড় ডাক্তার, চেম্বারটা ভাল হওয়া দরকার ছিল। তারউপর ছিল না বিদ্যুৎ। মোটামুটি সবাইরে দেখলাম ভেজা অবস্থায়।

ডাক্তারের ফি ৫শ টাকা। একজন রোগীর জন্য বরাদ্দ ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড। সে প্রতিদিন ২শর বেশি রোগী দেখেন। আমি অংকে ভাল না, যারা ভাল তারা তাঁর আয় হিসাব কইরা দেখতে পারেন এখন। অপারেশনও করতে হয় তাঁরে। যারা হিসাব করবেন মাথায় রাইখেন বিষয়টা।

সব খারাপ ঘটনার আগে বা পিছেই ভাল কিছু থাকেই থাকে। আমার ভার্টিগো শুরু হইছে গত সপ্তাহে, শনিবার থেইকা। শুক্রবার রাতে আমার বউ-এর মনে হইলো ঘরে শান্তি শান্তি ভাব বেশিদিন ধইরা চলতাছে। তাই একটা উপলক্ষ্য বাইর করলো। আমাদের মধ্যে একটা বড়দের বিতর্ক প্রতিযোগিতা হইল। পরের দিন থেইকা আমি ভার্টিগোর রোগি।
ভাল হইলাম বৃহস্পতিবার। অফিসও করলাম। শুক্রবার পুরা ভাল। একটু বাইরেও গেলাম। রাইতে আমার বউয়ের আবার মনে হইলো সেইদিনকার বিতর্ক শেষ হয় নাই। আবার শুরু হইলো। শনিবা থেকে আমার আবার ভার্টিগো।
বউরে কইলাম বুঝছো তো কেন আমার ভার্টিগো হয়?
ভার্টিগো হইয়া আমার লাভও দেখি কম হয় নাই।
১. সেবা যত্ন পাইতাছি আগের চাইয়া অনেক বেশি :shy:
২. ২৪ জুন ছিল আমার বিবাহ বার্ষিকী। ভার্টিগোর কারণে শপিং-এ যাইতে হইলো না। মানিব্যাগ আগের মতোই থাইকা গেলো। 😀 (আগের সপ্তাহেই আমি দুইটা শার্ট অর্গ্রীম কিন্যা বিবাহ বার্ষিকীর নামে চালাইয়া দিছি।)
৩. সাপ্তাহিক বিতর্ক অনুষ্ঠানও আপাতত বন্ধ বইলাই মনে হইতাছে
৪. রাইতে মশারি টানাইতে হইতাছে না। (বিবাহের রাতে এই শর্ত দিছিল আমার বউ, এই একটা কাজ আমার করতে হইবো। ) 😛
৫………(সেন্সর) 🙂

৭,১৯৪ বার দেখা হয়েছে

১০২ টি মন্তব্য : “ভার্টিগোর ভালো মন্দ”

  1. দিহান আহসান

    সালাম শওকত ভাইয়া, এতক্ষন অন্য পিসি তে থাকাএ মন্তব্য করতে পারিনাই।
    ভাইয়া, আমার আম্মা ( শাশুড়ী )র ও এইটা আছে।আপনার কষ্ট অনুধাবন করতে পারছি।
    আর আপনিতো বলেছেন,

    ভার্টিগো আর প্রেগনেন্সি সিমটমের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নাই।

    🙁
    ৫০০ টাকা ফি নিয়ে ডাক্তারের বক্তব্য কি ভাইয়া?
    কবিতাটা আসলেয় মজার।

    জবাব দিন
  2. মুসতাকীম (২০০২-২০০৮)

    গুরু সিরাম লিখছেন 😀 😀 😀 😀 😀

    ৫………(সেন্সর)

    এইটা একটু কেউ বুঝাইয়া দেন না ~x( ~x( ~x( ~x(


    "আমি খুব ভাল করে জানি, ব্যক্তিগত জীবনে আমার অহংকার করার মত কিছু নেই। কিন্তু আমার ভাষাটা নিয়ে তো আমি অহংকার করতেই পারি।"

    জবাব দিন
  3. কামরুল হাসান (৯৪-০০)

    এইটা কি নাক, কান, গলার প্রাণ গোপাল দত্ত? তাইলে তার সাথে একবার মোলাকাতের সৌভাগ্য(!) হইছিলো আমারও। খুব খতরনাক ডাক্তার, খিয়াল কইরা.........

    বিতর্ক প্রতিযোগিতায় আর যাইয়েন না, ভাবিরে ওয়াক-আউট দেন।

    দুনিয়ার সবচেয়ে বিরক্তিকর কাজের ১ নাম্বারে হইতেছে বাজার করা, ২ নাম্বারে মশারি টাঙ্গানো। কলেজে থাকতেই ক্লাস ইলেভেনে মশারি টাঙ্গানো বাদ দিছিলাম, এখনো টানাই না, তবে বাসায় গেলে আম্মা টানাইয়া দিয়া যায়। বাজার করতে হয় বাধ্য হইয়া, নইলে না খাইয়া থাকতে হবে। 🙁

    এখন পুরোপুরি সুস্থ ? নইলে আর কয়টা দিন বিশ্রাম নেন। তবে আপনার লেখা না দেখলে মনটা খারাপ থাকে।

    মাল মুহিতের বাজেট তো পাস হইয়া গেলো। কালো-সাদা নিয়া চ্যানেলে আপনার কথাও শুনলাম কয়দিন। এটিএনের উপস্থাপিকা বেশ আকর্ষনীয় ছিলো কিন্তু ! 😛


    ---------------------------------------------------------------------------
    বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
    ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

    জবাব দিন
  4. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    মাসুম ভাইরে তাইলে কি প্রাণ সাহেবের চেম্বার থেইকাই বাইর হইতে দেখলাম? বিশাল এক এক্সরে শীট টাইপের প্যাকেট নিয়া পূর্ণিমার আন্ডারপাসে


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  5. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)

    রাত ১/২টায় ফিরি বইল্যা মশারী টানাতে হয় না। 😀 তবে সপ্তাহে ৫দিন খুলতে আর ভাজ করতে হয়, এমনকি ৫দিন সকালে বিছানাও করতে হয়!! ~x(

    বিছানার কোন পাশে কে শুইবো এইডা নিয়া শিগগিরই একটা যুদ্ধের আশংকা করতাছি...... শহীদ হইলে মোনাজাত কইরো ভাইবোনেরা। আর গাজী হইলে তো দেখা হইবোই.... :(( :(( :((

    নাহ্, মাসুমের মতো ভার্টিগোর ভাব লইতে হইবো মনে হয়.........


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
    • দিহান আহসান
      এমনকি ৫দিন সকালে বিছানাও করতে হয়!

      লাবলু ভাইয়া এটা আমার কাজের তালিকায় পরসে 🙁

      বিছানার কোন পাশে কে শুইবো এইডা নিয়া শিগগিরই একটা যুদ্ধের আশংকা করতাছি

      অসুখ হইলেই একমাত্র বিছানার পাশ নিয়া কিসু কয়না, নয়ত স্যারের মর্জিতে হল শেষ কথা :chup:

      শহীদ হইলে মোনাজাত কইরো ভাইবোনেরা। আর গাজী হইলে তো দেখা হইবোই…. :(( :(( :((

      ইনশাল্লাহ!!! লাবলু ভাই আপনি এগিয়ে চলেন, সিসিবি আছে আপনার সাথে। 😀

      জবাব দিন
  6. মইনুল (১৯৯২-১৯৯৮)

    আমার মতে বড়দের বিতর্কে জয়ী হবা বেস্ট উপায় বিতর্কে না যাওয়া। আমি হিসেব করে দেখছি, এক ঘন্টার মধ্যেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি অনুকুলে চলে আসে, এবং আক্রমনাত্মক দল মনকষ্টে পরে যায় (আহারে এত ভালো মানুষটার সাথে কি ব্যবহার করলাম ......)। তখন রক্ষনাত্মক দল নানা ফ্যাসিলিটিজ পাইতে থাকে :dreamy: :dreamy: :dreamy: । উপযুক্ত সময়ে ফ্যাসিলিটিজ নিতে নিতেই রক্ষনাত্মক দল নিজের মতামত হাল্কা এবং সুন্দর করে উপস্থাপন করলেই, দেখা যায় তাতে দুই দলই সম্মত হয়ে পড়ে।

    ক্যাডেট কলেজে মশারী টাঙ্গাতে আর ভাজ করতে হত দুইটা বিছানার, আমার আর আমার ছোট ভাইয়ের। কলেজে ক্লাস নাইন পর্যন্ত মশারী টাঙ্গিয়েছি তারপরে বাদ। হলে থাকতে টাঙ্গাইনি। বিয়ের পরেও অনেকদিন টাঙ্গানো লাগেনি, আসলে মশা তেমন একটা ছিলোনা ওই এলাকাতে আর জানালাতে নেট ছিলো। বাচ্চা হবার পরে ২-৩ মাস টাঙ্গাতে হয়েছে। এর পরে মশারী দেখলেই মেয়ে চিল চিক্কুর দিতো (লক্ষী মেয়ে আমার ...... বাবার বিরক্তি বোঝে), আর মশারী ব্যবহারই করা হইনি।

    জবাব দিন
  7. দিহান আহসান
    আমি হিসেব করে দেখছি, এক ঘন্টার মধ্যেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি অনুকুলে চলে আসে, এবং আক্রমনাত্মক দল মনকষ্টে পরে যায় (আহারে এত ভালো মানুষটার সাথে কি ব্যবহার করলাম ……)

    সবাই দেখি একি জিনিস এপ্লায় করে ... ;))

    জবাব দিন
  8. ইউসুফ (১৯৮৩-৮৯)
    শুক্রবার রাতে আমার বউ-এর মনে হইলো ঘরে শান্তি শান্তি ভাব বেশিদিন ধইরা চলতাছে। তাই একটা উপলক্ষ্য বাইর করলো। আমাদের মধ্যে একটা বড়দের বিতর্ক প্রতিযোগিতা হইল। পরের দিন থেইকা আমি ভার্টিগোর রোগি

    ইয়ে, মানে মাসুম ভাই, বুঝলাম না। ভাবী কি ছুঁড়ে মারল? ফুলদানী, পাথরের আ্যাশ-ট্রে নাকি মশারীর রড। আপনার মাথায় স্টিচ লাগে নাই তো?

    বিয়ের ২ যুগ পার করা দেখি বড়ই বিপদজনক!

    জবাব দিন
  9. আন্দালিব (৯৬-০২)

    মাসুম ভাই, লেখা পইড়া, ঈমানে কই, হাসতে হাসতে শেষ! গুরুজনের অসুখ বিসুখে হাসতে হয় না, তাই এখন খারাপ লাগতেছে। আপনি রাগ কইরেন না আবার !!

    ভালো হয়ে উঠেন তাড়াতাড়ি। আপনার পোস্ট পড়লে অনেক সাধারণ জ্ঞান লাভ হয়, এজন্যে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ! :guitar:

    জবাব দিন
  10. সামি হক (৯০-৯৬)

    বিবাহিত জীবনে সুখে থাকার উপায় (ভার্টিগো রোগ প্রতিরোধক) - কথা একদমই কম বলা, আর যাও বা বলা তা বেশিভাগই বউয়ের কথায় সায় দেওয়া :D, বিছানা আমিই করি 😀

    এর লাভও আছে বউ রে রানতে বল্লেই ভালো মন্দ রান্ধে কিচ্ছু বলে না 😀 :D, আর শওকত ভাই যা বল্লো বাকীটা সেন্সর ... :grr: :grr:

    জবাব দিন
  11. রহিমা আফরোজা নূপুর (৯১-৯৭)

    আমি তো স্বনামধন্য ই এন টি ডাক্তার এর ব্যান চাই x-( 😡
    ঐ খানে গেলে সুস্থ্য মানুষের ই ভার্টিগো শুরু হবে...

    দিহান ভাবী, আপনার জামাই এর চেঞ্জ হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম, কারন ক্যাডেটরা (বয়েজ) নিজের কাজ জুনিয়র (!) দের দিয়ে করিয়ে নিতে খুবই এক্সপার্ট! আমার বড় ভাইকে দেখে শেখা...

    ভার্টিগো খুবই খতরনাক একটা রোগ কিন্তু এর সুবিধাগুলি দেখি ভালোই... 😉

    জবাব দিন
    • দিহান আহসান
      দিহান ভাবী, আপনার জামাই এর চেঞ্জ হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম, কারন ক্যাডেটরা (বয়েজ) নিজের কাজ জুনিয়র (!) দের দিয়ে করিয়ে নিতে খুবই এক্সপার্ট! আমার বড় ভাইকে দেখে শেখা…

      আপু ঠিক বলেছেন। এখন সেটা বুঝতে পারছি। 😀

      জবাব দিন
  12. তানভীর (৯৪-০০)

    লেখাটার শুরুতে শওকত ভাইয়ের অসুখের কথা পইড়া একটু খারাপ লাগছিল, কিন্তু পরে আর হাসি থামায়ে রাখতে পারিনাই। :)) :))
    তাড়াতাড়ি সুস্থ্য হয়ে যান শওকত ভাই, আর সিসিবিতে বেশি করে লেখা দিন। আপনার লেখা পড়লেই মন ভালো হয়ে যায়। 🙂

    জবাব দিন
  13. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    ৫ নম্বর পয়েন্টা পইড়া ব্যাপক মজা পাইলাম। বস আপনে পাথ্রান। 😀

    আমার মনে হইতেছে আপনি ডায়েটিং শুরু করছেন, এইজন্য মাথা ঘুরায়। এইটা নিয়া হুদাই এত টেনশন নিতেছেন। পরে না আমার প্রেশার বাইরা যায় আপনের।


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : শওকত (৭৯-৮৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।