ভর্তি যুদ্ধ !!!

আমাদের ছোট ভাই-বোনেরা এখন ভর্তি যুদ্ধ নিয়ে খুব ব্যস্ত ।ইতোমধ্যে তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছে ।অনেকের চান্স হয়েছে, অনেকের হয় নি ।আরও কিছু পরীক্ষা বাকি আছে ।তাদের মুখ থেকে ভর্তির গল্প শুনে এবং আমার কিছু অভিজ্ঞতা আর অনুভূতি থেকে ক্যাডেটদের ভর্তি যুদ্ধের ব্যাপারে কিছু কথা বলছি ।একজন ছাত্রের কোন ভাল প্রতিষ্ঠানে চান্স পাওয়া মূলত দুইটি জিনিস এর উপর নির্ভরশীল ।প্রথমত ছাত্রের অধ্যয়ন এবং দ্বিতীয়ত ছাত্রকে কিভাবে পাঠদান করা হয়েছিল ।চলুন ঘুরে আসি আমাদের প্রিয় ক্যাডেট কলেজ থেকে ।প্রথমে আসি ক্যাডেটদের পাঠদানকারী শিক্ষক প্রসঙ্গে ।দুটি প্রেক্ষাপট এর ভিত্তিতে যদি শিক্ষকের মান বিবেচনা করা যায় ( আমাদের বড় ভাইদের আমলের ক্যাডেট কলেজ এর শিক্ষক আর বর্তমান সময়ের ক্যাডেট কলেজ এর শিক্ষক এবং বর্তমান সময় এর ক্যাডেট কলেজ এর শিক্ষক আর বাইরের নামকরা কলেজ সমূহের শিক্ষক) তাইলে দেখা যাবে যে দুটি ক্ষেত্রেই ক্যাডেট কলেজ এর শিক্ষক এর মান তুলনামূলক ভাবে ভাল নয় ।অনেক ভাল শিক্ষক ক্যাডেট কলেজে সুযোগ সুবিধার অপ্রতুলতার কারণে ক্যাডেট কলেজ ছেড়ে চলে যায় ।এবার আসি ক্যাডেটদের অধ্যয়নের ব্যাপারে ।কলেজ এর বিভিন্ন নিয়ম-শৃঙ্খলা,ডেইলি রুটিন, এক্সট্রাকারিকুলার কার্যক্রম, অথোরিটিকাল চাপ ইত্যাদি সামলিয়ে ক্যাডেটরা তুলনামূলকভাবে বাইরের কলেজ এর ছাত্রদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম পড়াশুনা করার সুযোগ পায় । কলেজ এর বিভিন্ন নিয়ম-শৃঙ্খলা,ডেইলি রুটিন, এক্সট্রাকারিকুলার কার্যক্রম গুলোতে আমার কোন আপত্তি নাই ।আপত্তি হচ্ছে অথোরিটির অতিরিক্ত চাপ ক্যাডেট দের প্রতি। যেটা অথোরিটির দায়িত্বে নিয়োজিত লোকের উপর নির্ভরশীল ।একটা ঘটনা বলি ।কলেজ এ আমরা সর্বশেষ প্রিন্সিপাল হিসেবে যাকে পাই তার কথাই বলি।একদিন রাত দুইটার সময় তিনি সব ক্যাডেটদের ঘুম ভাঙ্গিয়ে হাউস চেক করতে আসেন ।এক ক্যাডেট হঠাৎ করে ঘুম ভেঙ্গে স্যার এর সাথে বাংলায় কথা বলেছিল দেখে তিনি ওই ক্যাডেটকে কষে চড় মেরে বলেছিলেন ,“Bloody cadet why are you speaking  in Bengali ?” স্যার ফ্রিকুএন্টলি হাউস চেকিং এ আসতেন ।স্যার এর রাত দুইটার সময় হাউস এ আসা আর বাংলায় কথা বলার জন্য কোন ক্যাডেটকে চড় মারা আমার কাছে অমানবিক লেগেছিল । এই ধরনের অতিরিক্ত অথোরিটিকাল চাপ এর কারণে ক্যাডেটদের পড়াশুনার অনেক ক্ষতি হয় ।আশা করি কলেজ কর্তৃপক্ষ এই ব্যাপারটি খেয়াল রাখবেন এবং সেই সাথে শিক্ষকের মান উন্নয়নে সচেষ্ট হবেন ।এবার আসি পারিবারিক চাপ এর ব্যাপারে ।পারিবারিক ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে নিজের ইচ্ছা, আশা-আকাঙ্ক্ষা বলী দিয়ে অনেক ক্যাডেটকেই অনেক বিপদে পড়তে হয়।আমার এক জুনিয়র পুরো কলেজ লাইফ প্রস্তুতি নিয়েছিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য ।কিন্তু কলেজ থেকে বের হয়ে বাবা-মার চাপে তাকে ডাক্তারি কোচিং করতে হল ।ফলশ্রুতিতে সে অনিচ্ছা সত্ত্বেও মেডিক্যাল কোচিং করল এবং মেডিক্যাল এ চান্স পেল না ।কিন্তু সে ইঞ্জিনিয়ারিং কোচিং করলে ঠিক চান্স পেত ।যদিও এই কথা সব বাবা-মার জন্য প্রযোজ্য নয় ।তাই বাবা-মার উচিৎ তার সন্তানের ইচ্ছাকে অগ্রাধিকার দেয়া ।কলেজ থেকে বেরিয়ে ক্যাডেটদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয় ।ক্যাডেট কলেজ এর বাইরের জগতের সাথে খাপ খাওয়াতে অনেক সময় লাগে ।অধিকাংশ সবাই ঢাকাতে কোচিং করতে যায় ।আর ঢাকাতে থাকা-খাওয়ার সমস্যাটা খুব প্রকট ।ক্যাডেট কলেজ থেকে বের হয়ে তাদেরকে উঠতে হয় বিভিন্ন হোস্টেল কিংবা মেসে ।আমার ব্যাক্তিগত একটা অভিজ্ঞতা বলি ।আমি যে মেস এ উঠেছিলাম সেই মেস এর রুম টা ক্যাডেট কলেজ এর ৪ বেড এর রুম এর চেয়ে ছোট ।কিন্তু ওই রুম এ আমরা ৬ জন ছিলাম ।খাওয়ার কথা না হয় বাদ দিলাম । ক্যাডেট কলেজ এর শৃঙ্খল জীবন থেকে যখন ক্যাডেটরা বাইরের জগতে আসে তখন তারা অনেকটা বেশি উন্মুক্ত হয়ে যায় ।অ্যাডমিশন টাইম এর গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তারা অনেক জায়গায় ঘুরে বেরায় ।এতে তাদের অনেক সময় নষ্ট হয়। কলেজ থেকে বের হবার পর সবার ক্যাডেটদের প্রতি একটা উচ্চ ধারণা থাকে ।আমি যে কোচিং করেছিলাম সে কোচিং এ ক্যাডেট দের জন্য ভর্তি ফি তে ডিসকাউন্ট ছিল ।ক্যাডেটরাও চায় তাদের প্রতি সবার উচ্চ ধারণা থাকে ।কিন্তু কোচিং করার সময় পারফরম্যান্স খারাপ করলে অনেকেই কোচিং ছেড়ে চলে যায় ।আর অনেক ক্যাডেটদেরি স্বপ্ন থাকে ডিফেন্স সেক্টর এ যাবার ।সেই স্বপ্ন পূরণ না হলে অনেকেই মানুষিক ভাবে ভেঙ্গে পরে ।অনেকেই বহুদিন পড়াশুনা করতে পারে না।যে কারণে অনেকদিন সময় অপচয় হয় আর তারা পিছিয়ে পড়ে।কাল এক ছোট ভাই এর সাথে কথা হল ।সে আর্মিতে চান্স না পাবার পর বই-পুস্তক ফেলে দিতে গেছিলো ।পরে আর ফেলে নি ।মোট কথা এই সব আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ।কোন এক জায়গায় চান্স না পেলে মন খারাপ হওয়াটা স্বাভাবিক ।কিন্তু তাকে সবকিছু ভুলে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে ।আর বর্তমান সময়ে ফেসবুক খুব জনপ্রিয় ।এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে,ফেসবুক ছাত্রদের একটা বড় সময় কেড়ে নিচ্ছে ।তাই কলেজ থেকে বেরিয়ে এই ব্যাপারে যত্নশীল হতে হবে ।এই বার মেডিক্যাল এ চান্স প্রাপ্ত এক ছোট ভাই এর সাথে কথা হল ।সে অ্যাডমিশন টাইম এ ফেসবুক ব্যবহার না করার জন্য নরমাল মোবাইল সেট ব্যবহার করতো ।ছোট ভাই-বোন দের প্রতি আমার একটাই অনুরোধ থাকবে যে তারা ভর্তি পরীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ সময় গুলো সঠিক ভাবে ব্যবহার করবে ।আমি এখানে মোটা হরফে ক্যাডেট আর নন ক্যাডেট এর ভিতর পার্থক্য সৃষ্টি করছি না। একটা ফ্যামিলিতে একজন বড় ভাই তার ছোট ভাই বোন দের যেভাবে উপদেশ দেয় তেমনি ভাবে আমি ক্যাডেট কলেজ ফ্যামিলিতে আমার ছোট ভাই-বোনদের কিছু উপদেশ দিলাম ।তবে একটা মজার ব্যাপার হল এই যে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ক্যাডেটরা বিভিন্ন ভাল প্রতিষ্ঠানে চান্স পাচ্ছে ।দোয়া করি এই সাফল্য ধারাবাহিক ভাবে চলতে থাকুক ।আশা করি ক্যাডেটরা জাতির উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে । :thumbup:

৪,৮৩১ বার দেখা হয়েছে

১৬ টি মন্তব্য : “ভর্তি যুদ্ধ !!!”

  1. রেজা শাওন (০১-০৭)

    ১।
    দরকারি পোস্ট। কিন্তু খুব ইম্পরট্যান্ট একটা ব্যাপার বাদ দিছিস। সেটা হলো, ফার্মগেটে ডিফেন্স কোচিংগুলোর নিচে আড্ডা।

    আড্ডা ব্যাপারটা থাকবেই। এটাতে না নাই। কিন্তু দিনচুক্তিতে আড্ডাবাজি করে, অনেককে পরে বিপদে পড়তে দেখেছি। তাই এই ব্যাপারটা বলা।

    ২।
    ক্যাডেট সারাদিন বই ভেজে খাবে, এটা সম্ভব না। কিন্তু জাস্ট একটা নিয়ম করে কিছুটা সময় পড়লেই অ্যাডমিশন ব্যাপারটা খুব একটা কঠিন না। নিজেদের ব্যাচের পোলাপান কলেজে কেমন পড়াশুনা করেছে, এটা এখানে নাই বললাম, কিন্তু সবাই মোটামুটি একটা ভাল অবস্থায় আছে, কারণ অধিকাংশরাই কলেজের ফাকিবাজি বাইরে এসে কাভার করার চেষ্টা করেছে। এবং মোটামুটি ভালভাবেই উতরে গেছে।

    ৩।

    কলেজর স্যারদের কাছ থেকে ক্যাডেটদের একাডেমিক শিক্ষালাভ খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু না। তবে স্যাররা ক্যাডেটদের অনেকাংশেই খুব ভাল কিছু করার অনুপ্রেরনা দিতে পারেন। অন্তত একটা পরিবেশ রাখতে পারেন, সেটা তারা অনেক সময়ে রাখেন না। কলেজের সিনিয়র কিছু স্যার ব্যাপারগুলো বুঝতেন। কিন্তু নতুন কিছু টিচার এসে সব আউল করে ফেলেন।

    আমার মতে এদের শক্ত একটা অরিয়েন্টেশনের দরকার আছে।

    জবাব দিন
    • শরিফ (০৩-০৯)

      ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্য এর জন্য ।

      ক্যাডেট সারাদিন বই ভেজে খাবে, এটা সম্ভব না। কিন্তু জাস্ট একটা নিয়ম করে কিছুটা সময় পড়লেই অ্যাডমিশন ব্যাপারটা খুব একটা কঠিন না

      খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা বললেন ভাই ।আশা করব আমাদের ছোট ভাই -বোনেরা নিয়ম মেনে পড়াশুনা করবে ।

      জবাব দিন
  2. ড. রমিত আজাদ (৮২-৮৮)

    তোমার লেখাটা খুব ভালো লাগলো। ছোট ভাইদের নিয়ে ভাব, এটা দেখেও ভালো লাগল। ক্যাডেটদের ভবিষ্যত জীবনে ভালো করার যে কয়েকটি কারণ তার মধ্যেকার একটি হলো এই পারিবারিক বন্ধন।

    তোমার প্রিন্সিপাল-এর রাত দুইটার সময় ক্যাডেটদের ঘুম ভাঙ্গিয়ে হাউস চেক করতে আসার বিষয়টা নিয়ে তুমি মন খারাপ করার কথা লিখেছ - এতে মন খারাপ করার কি আছে, Its a part of cadet's training। ভবিষ্যত জীবনে এরকম পরিস্থিতে যেন তোমরা ঘাবড়ে না যাও, সহযেই যেন সামলে নিতে পার, এটাই তো উদ্দেশ্য। আমার এক বাইরের বন্ধু বলেছিল, "তোদের ক্যাডেট কলেজে ছেলে-মেয়েগুলোকে আয়রন এন্ড স্টীল বানিয়ে ছেড়ে দেয়। এটা খুবই দরকার।" ক্যাডেট কলেজের মূল উদ্দেশ্য পড়ালেখা হলেও, ওটাই একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। আমি তো মনে করি আরো অনেক কিছু ক্যাডেট কলেজের শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা দরকার (যেটা আমাদের সময় পাইনি), যেমন কারাতে, বক্সিং, সুইমিং, সাইক্লিং, ক্লাইমবিং, এবং শুটিং ও সিভিল ডিফেন্স।

    ক্যাডেট কলেজের শিক্ষকদের মান নীচে নেমে গিয়েছে এটা আমি শুনেছি। এর মূল কারণ বেতন-ভাতা। বেতন-ভাতা সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি বৃদ্ধি না করা পর্যন্ত মেধাবীরা এই পেষায় আগ্রহী হবেনা।

    বিভিন্ন ভাল প্রতিষ্ঠানে চান্স পাওয়া নিয়ে তোমার উদ্বেগ স্বাভাবিক। এইচ এস সি পাশ করার পর আমরাও একই ভাবে উদ্বিগ্ন ছিলাম। তবে তোমাকে আশার আলো দেখাতে পারি। যেই আমরা (৭ম ব্যাচ সিকক) ভবিষ্যতে কি হবে এই দুস্চিন্তায় ঘুমাতে পারতাম না, তাদের বর্তমান অবস্থান: চারজন ডক্টরেট ডিগ্রীধারী, আরও তিনজন বিভিন্ন দেশে ডক্টরেট ডিগ্রীর জন্য ডিসার্টেশন লিখছেন। আটজন লে: কর্নেল। একজন বি এম এ তে গোল্ড মেডেল প্রাপ্ত । একজন এফ সি পি এস ডাক্তার, আরও একজন বিদেশে ডাক্তারির উপর ২য় উচ্চতর ডিগ্রীর জন্য পড়ছেন। একজন বেল ল্যবরেটরী ও আরো একজন টেকসাস ইনস্ট্রুমেন্টস-এর ইন্জিনীয়র, অপর একজন গ্রামীন ফোনের সিটিও হিসাবে কর্মরত ছিলেন। একজন বাংলাদেশ বিমানের সুখ্যাত পাইলট ও ক্যাপ্টেন । মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন দুইজন। একজন কানাডীয় একটি ব্যংকের এনালিস্ট। সকলেই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত।
    তুমি মনে করনা আমি গর্ব করার জন্য লিখছি। আমি কেবল তোমাদের অনুপ্রেরণা দেয়ার জন্যই লিখছি। আমি আশা করি তোমাদের ভবিষ্যত জীবন আরো অনেক উজ্জ্বল হবে।

    জবাব দিন
    • শরিফ (০৩-০৯)
      “তোদের ক্যাডেট কলেজে ছেলে-মেয়েগুলোকে আয়রন এন্ড স্টীল বানিয়ে ছেড়ে দেয়। এটা খুবই দরকার

      ডায়লগটা খুব ভাল লাগলো । :boss:

      ক্যাডেট কলেজের শিক্ষকদের মান নীচে নেমে গিয়েছে এটা আমি শুনেছি। এর মূল কারণ বেতন-ভাতা। বেতন-ভাতা সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি বৃদ্ধি না করা পর্যন্ত মেধাবীরা এই পেষায় আগ্রহী হবেনা

      কলেজ কর্তৃপক্ষকে এই ব্যাপারে যত্নশীল হতে হবে ।

      তুমি মনে করনা আমি গর্ব করার জন্য লিখছি। আমি কেবল তোমাদের অনুপ্রেরণা দেয়ার জন্যই লিখছি

      অবশ্যই আপনার এই কথাটি সব ভর্তিচ্ছু ক্যাডেটদের জন্য অনুপ্রেরণা দায়ক ।তাদেরকে মনে রাখতে হবে তাদের দ্বারা অনেক কিছুই সম্ভব ।
      পরিশেষে আপনাকে ধন্যবাদ এই মূল্যবান কমেন্টটি করার জন্য । 🙂 (সম্পাদিত)

      জবাব দিন
  3. নাফিজ (০৩-০৯)

    শাওন ভাইয়ের ৩নং পয়েন্টে সহমত হলাম। একটা কথা ঠিক, দুই একটা ব্যতিক্রম বাদে ক্যাডেট কলেজে একাডেমিক শিক্ষালাভ খব একটা খারাপ অবস্থায় নেই। এইচএসসি পর্যন্ত বইপুস্তকের যে সিলেবাস তাতে একটু মন দিয়ে নিজে পড়াশোনা করলেই হয়ে যায়।স্যারদের আসল কাজটা হচ্ছে এনভায়রনমেন্ট তৈরি, যেটা তারা করতে পারেন না।

    উনাদের কাছে ক্যাডেট কলেজ যতটা না একটা কলেজ, তার চে বেশি মনে হয় একটা ডিসিপ্লিনারি প্রতিষ্ঠান । কে কোথায় ডিসিপ্লিন ব্রীচ করলো এইটাই তাদের "জীবনের সবচেয়ে বড় সমস্যা ।" ক্যাডেটগুলো যে এক একটা অল্পবয়সী ছেলে, স্যার এবং অথরিটির কাজ কারবার যে বাকি জীবন তাদের জীবনে প্রভাব ফেলবে- এই ব্যাপারটাই স্যারদের (বিশেষত প্রমোশন-উন্মুখ স্যাররা) মাথায় আসে না।

    আর বাইরে এসে ক্যাডেটরা ভালো যায়গায় চান্স পেতে হলে ওষুধ একটাই। ৬বছর কি বাঁদরামি করেছো না করেছো, কলেজে কেমন ছিলা-কিভাবে সেখানে পাশ করেছো সব ভুলে যাও। এই তিন মাস ভালোমত পড়লেই বাংলাদেশের যেকোন যায়গায় চান্স পাওয়া সম্ভব। আক্ষরিকভাবেই, যেকোন প্রতিষ্ঠানে।

    এবং যদিও মিলিটারি ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে থেকে কোন ক্যাডেট কলেজের পক্ষেই এটা সম্ভব না, তবুও বলছি- ক্যাডেটদের আর্মি নির্ভরতা কমানো দরকার। কেউ যদি আর্মিতে চান্স পেয়ে চলে যায় তাতে আমার কোনই আপত্তি নেই, কিন্তু আর্মিতে চান্স পাওয়ার চেয়ে না-পাওয়ার অংশটাই কিন্তু বড়। এদের অনেকেই আর্মিই-জীবন আর্মিই- মরণ ধ্যান-জ্ঞান নিয়ে বসে থাকে। এদেরকে বোঝানো দরকার। সেটা বড় ভাইদের জন্য ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো হলেও কাজটা করা উচিত। সিসিবির বড় ভাইদের তাই অনুরোধ করছি, পরের ব্যাচটা বের হবার পর সিসিবির পক্ষ থেকে তাদের জন্য একটা-দুইটা ক্যারিয়ার-ওরিয়েন্টেশানের ব্যবস্থা করা যায় কিনা ।

    আর শরীফ মিয়া, লেখাটা ভালো হৈসে, কিন্তু প্যারাগ্রাফ হৈসে। আর্টিকেল হয় নাই 😛 (সম্পাদিত)


    আলোর দিকে তাকাও, ভোগ করো এর রূপ। চক্ষু বোজো এবং আবার দ্যাখো। প্রথমেই তুমি যা দেখেছিলে তা আর নেই,এর পর তুমি যা দেখবে, তা এখনও হয়ে ওঠেনি।

    জবাব দিন
    • শরিফ (০৩-০৯)
      সিসিবির বড় ভাইদের তাই অনুরোধ করছি, পরের ব্যাচটা বের হবার পর সিসিবির পক্ষ থেকে তাদের জন্য একটা-দুইটা ক্যারিয়ার-ওরিয়েন্টেশানের ব্যবস্থা করা যায় কিনা

      নাফিজ এর সাথে এই ব্যাপারে সহমত ।কিছু বড় ভাই-বোন যদি কলেজ থেকে নতুন পাস করে বের হওয়া ক্যাডেটদের নিয়ে কোচিং শুরু এর পূর্বে ক্যারিয়ার-ওরিয়েন্টেশানের উদ্যোগ নেন তাইলে ওই সব ক্যাডেটদের জন্য আসলেই অনেক উপকার হয় ।

      আর শরীফ মিয়া, লেখাটা ভালো হৈসে, কিন্তু প্যারাগ্রাফ হৈসে। আর্টিকেল হয় নাই

      😀 😀 দোস্ত আমি তো আলোচনা করার জন্যই লিখছি ।এইখানে কিন্তু হেব্বি আলোচনা হচ্ছে ।কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট উঠে আসছে ।যা হোক তোর কমেন্ট টা অছাম হইসে । :boss:

      জবাব দিন
  4. ড. রমিত আজাদ (৮২-৮৮)

    সিকক-এ ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং-এর ব্যবস্থা আছে। প্রস্তাবটা আমিই প্রথম দিয়েছিলাম। আর তদানিন্তন (২০০২) ওকাস সভাপতি মামুন ভাই এটা ইমপ্লিমেন্ট করেছিলেন।

    জবাব দিন
  5. মেহেদী হাসান (১৯৯৬-২০০২)
    তোমার প্রিন্সিপাল-এর রাত দুইটার সময় ক্যাডেটদের ঘুম ভাঙ্গিয়ে হাউস চেক করতে আসার বিষয়টা নিয়ে তুমি মন খারাপ করার কথা লিখেছ – এতে মন খারাপ করার কি আছে, Its a part of cadet’s training। ভবিষ্যত জীবনে এরকম পরিস্থিতে যেন তোমরা ঘাবড়ে না যাও, সহযেই যেন সামলে নিতে পার, এটাই তো উদ্দেশ্য।

    সহমত :thumbup:

    খুব ভাল একটা পোষ্ট, এইসময়টা সবার জন্ন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ... কলেজ থেকে বেরিয়ে স্বাধীন হয়ে গেলে চলবে না...সবার জন্য শুভ কামনা রইলো...

    জবাব দিন
  6. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    লেখাটা কয়েক প্যারা করে দিলে ভাল হত, পড়তে আরাম লাগত...

    ছোট ভাইদের নিয়ে ভাব, এটা দেখেও ভালো লাগল।

    :thumbup:


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  7. মোঃ মিরাজুল ইসলাম মিরাজ

    কিভাবে ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হওয়া যা? একটু দয়া করে জানাবেন। পড়াশোনার কি কৌশল অবলম্বন করতে হবে।

    বর্তমানে আমি তৃতীয় শেণীর ছাত্র।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।