ক্যাডেট কলেজের দিনগুলো- (১)

প্রথম কিছুদিনঃ উদবাস্তু জীবন

আমি ক্যাডেট কলেজ এ আসার পূর্বে রংপুর জিলা স্কুলে পড়তাম। তাই এখানে ৭/৮ জন পুরাতন বন্ধু পেলাম।আমি ছিলাম তিতুমির হউসে আর অন্য বন্ধুরা ওমর ফারুক হউসে। আমার প্রথম রুম ছিল দোতলা পশ্চিম পাশের ২য় রুম সম্ভবত বর্তমানে ২০২ নম্বর। কারন তখন যে রুম নম্বর ছিল তা পরিবর্তন হয়ে গেছে। তখন পর্যন্ত ক্লাশ ১১ এবং ১২ এর কোন ছাত্র ছিলনা। আমরা ছিলাম ৫১ জন। (৫১ তম ক্যাডেট কাশেম পরে টিবি ধরা পড়ার জন্য আউট হয়ে গিয়েছিল।) আর ছিল ক্লাশ ৮ম, ৯ম এবং ১০ম শ্রেণীর প্রতি ব্যচের ২০-২৫ বা কিছু বেশি কম ছাত্র। সর্বমোট ছাত্র ১০০ এর কিছু বেশী। আমাদের সিনিওররা ঠিক আমাদের সাথে কিভাবে মিশবে বা ব্যবহার করবে তা আমরা জানতাম না। তাছাড়া আমি ইতিপূর্বে বোর্ডিং স্কুল এ পরিনি তাই তাদের সাথে কি করা উচিত বুঝতে পারছিলামনা।

তখন আমদের একমাত্র পথ প্রদর্শক ছিল হাউস বেয়ারার ফজলু ভাই। উনাকে আমরা খুব পছন্দ করতাম।সর্বসাকুল্যে দালান ছিল একটি মাত্র। একাডেমিক বিল্ডিং অবশ্য আলাদা। মসজিদ ছিল আনেক দূরে ২য় প্রধান গেটের পার্শে।
তিনটা হাউস একসাথে এবং তার মধ্যেই নীচতলায় একটা হল রুমে ছিল ডাইনিং হল, দোতলায় টেবিল টেনিস রুম আর টিভি ছাড়া টিভি রুম যেখানে একটা ক্যারাম বোর্ড আর একটা দাবা বোর্ড, আর তিনতলায় ছিল হাউস মস্ক।
এখন বলি খেলার মাঠের কথা। কোয়ার্টার থেকে হাউস আসার পথে যে রাস্তা তার দুপাশে দুটি মাঠ উকরাই ভরা আর এমন উচুনিচু যে বর্ষাকালে লেক বানিয়ে মাছ চাষ করা যাবে।
ফলইন কি জানিনা, সিনিওর কি বুঝিনা, শুধু বুঝতাম স্টাফরা খুব কাটখোট্টা আর এডজুটেন্ড মেজর কির্তি রঞ্জন চাকমা কে পাঠানো হয়েছে কারন উনি আজরাইলের দূর সম্পরকের মামাতো ভাই।

চলবে———-

২৯ টি মন্তব্য : “ক্যাডেট কলেজের দিনগুলো- (১)”

  1. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    কলেজগুলোর শুরুর সময়ের গল্প ভীষন ইন্টারেস্টিং হবে :clap: :clap:
    সারোয়ার ভাইকে অনেক ধন্যবাদ সিসিআর এর কাহিনি আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য। একটা কলেজের ট্র্যাডিশন গুলো কিভাবে সৃষ্টি হোলো সেটা জানার জন্য উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছি। :boss: :boss:


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  2. তাইফুর (৯২-৯৮)

    বস, ভাল লাগল যে আপনি আপনার চমৎকার লেখা নিয়ে ২৬৫*৬ (১০০ দিন ছুটি থাকায় আমরা কলেজে থাকতাম ২৬৫ দিন আর ৬ বছর) সংখ্যক ব্লগ পূরণের পথে রওনা হইছেন।


    পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
    মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

    জবাব দিন
  3. ফয়েজ (৮৭-৯৩)

    ২য় গেটের কাছে মসজিদ আমরাও পেয়েছি। আমরা থাকা অবস্থায় নতুন মসজিদ হল হলের কাছাকাছি। এছাড়া ওমর ফারুক হাউসের হাউস মস্ক আমাদের সময় চেঞ্জ হয়। এর আগে ওমর ফারুক হাউস তিতুমীরে এসে হাউস এসেম্বি করত।

    আমরা ডাইনিং হল আর অডিটরিয়াম প্রথম থেকেই পেয়েছি। এত সাজানো গোছানো ছিল এই দুটো। আমার বড় ভাই এক্স-ফৌজিয়ান ইকবাল খুব প্রশংসা করেছিলেন এই দুটোর। ফৌজদারহাটে নাকি এত সুন্দর ছিল না এগুলো। আর ফুটবল মাঠ, কি বলব, আমরা যখন ক্লাস এইট কি সেভেন, মাটি ফেলে কি সুন্দর করে ফেলল এই দুটো।

    অনেক কিছু মনে পড়ছে আস্তে আস্তে।


    পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না

    জবাব দিন
  4. শরিফ সাগর (৯৭-০৩)

    গল্প শুনতাম হাউসের পিছনের এখনকার এ্যাথলেটিক্স গ্রাউন্ডটা নাকি কাশবন আছিলো। সব উচা দোলা আছিলো এইটা তো জানতাম না ।চাম এ চাম এ রেডিমেড এর উপর দিয়ে ৬ বছর কাটায়ে দিয়া আইলাম। আপনাদের সেই ডাইনিং হল এখন জাহাঙ্গির হাউসের টিভি রুম। হাউস মস্ক আমরা পাইনি। অনেক টেরাই মারছিলাম আমরা,কোনো লাভ হয় নাই। হাসান স্যার নক আউট কইরা দিছে। উনি তখন আমাদের জাহাংগির হাউসের হাউস মাস্টার ছিলেন ।এখন নাকি ফুল হাউস গ্রিল দিয়ে ক্লোজ করে দিছে।খুব সম্ভবত জাহাঙ্গির হাউসের করিডোর দিয়ে শর্টকাট মারা লাস্ট ব্যাচ আমরাই।কলেজের ইতিহাসের আরেক মেজর কির্তি রঞ্জনকে আমরা পাইছিলাম। মেজর জিয়াদ।। এমসিসি-র এক্স ক্যাডেট।ওনাকে দেখলে ক্যাডেট তো দূরে থাক গ্রাউন্ড ও কাপাকাপি শুরু করতো। আমরাও হাউস বেয়ারার ফজলু ভাইকে পাইছি,খুব ভাল মানুষ।তিতুমির হাউসেই দেখে আসছি আমরা। আমদের ছিল অমেদ আলি ভাই। ভাই কইলে খেইপা যাইতো,খেপে গেলে পোলাপাইন কইতো অমেদ দাদা :chup: ।

    চালায়ে যান ভাইয়া। সাপোর্ট দিয়া যামু নে... :thumbup:

    জবাব দিন
  5. আপ্নের্লগে কথা হয় নাই ভাই, ভালো আছেন্নি? আপ্নের্লেখা পৈরা খুবি ভালো লাগ্তাছে। পরের্পার্ট গুলা দেইখা আগে এইটা পর্তে আস্লাম।

    হেব্বি লেখা চালায়া যান বস। :salute: :salute:

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রকিব (২০০১-২০০৭)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।