৩৬ দিনের দেশ-২; দিল্লী বড় দূর হে…

সিসিবির কসম আমি তোতলাই না। কিন্তু মাহমুদ ভাইয়ের পোস্টে ঢুকলাম, বিশাল একটা পোস্ট দেখে অলস মনে পড়ব, কি না পড়ব…ভাবতে ভাবতে স্ক্রল করে নিচে নামতেই আমার মুখ দেখে বেরোয় আসলো, কা কা কাইয়ূম ভাই!!
তারউপর গত পরশু অনেক অনেক দিন পর তানভীর ভাইয়ের সাথে দেখা…জ্বী, ভালো ছাত্র তানভীর ভাই, যিনি কিনা জিপি সেন্টারে বসে বসে পঁচতেসেন। উনার সাথে দেখা হওয়ার সাথে সাথেই উনি ডেকে আনলেন টুম্পাপুকে। এই প্রথম দেখলাম টুম্পাপুকে, এত ভাল একজন মানুষ (টুম্পাপুর নিজের ভাষায় :D) অথচ উনিও জিপি সেন্টারে বসে বসে পঁচতেসেন। যাই হোক তারপর আমরা তিনজনে মিলে আড্ডা দিলাম অনেক্ষন…আমি কয়েকবার ভদ্রতা করে বলসি উঠি, কিন্তু এই দুজন ব্যস্ত মানুষের উঠার কোন নাম নাই…আমি সিউর উনারা দুইজনেই আমার জন্য নিজ নিজ বসের ঝাড়ি খাইসেন…
তানভীর ভাই এই দিল্লী প্রসঙ্গে কথা তুলতে আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে জিপি বিল্ডিং দেখা শুরু করলাম। জিপি বিল্ডীংটা আসলেই অসাধারন, এক্কেবারে বিদেশ বিদেশ লাগে :p ।
যাই হোক, তখনই ঠিক করেছিলাম, এবারে দিল্লীর পর্বটা পোস্টাতে হবেই হবে। যদিও দুই দিন দেরী হয়ে গেলো, তবুও দিলাম… 😀
এই পর্বটা তাই তানভীর ভাই আর টুম্পাপুর, সাথে একটু খানি কাইয়ূম ভাইকেও দেয়া হলো 🙂
৩৬ দিনের দেশ
৩৬ দিনের দেশ-১
……………………………………………………………………………………………………………………………………..
সারা ট্রেনজার্নিটা অদ্ভুত কাটলো আমাদের। আমাদেরকে সবাই বারবার করে বলে দিয়েছিলো বলে আমাদের ধারণাই হয়ে গেলো, ইন্ডিয়াতে যেকোন কিছুই শেকলে বেঁধে না রাখলে চুরি হবেই হবে, তাই সারা ট্রেন জার্নি আমরা তটস্থ হয়ে ছিলাম এই বুঝি আমার ব্যাগ পাসপোর্ট সব গেলো। ঠিক মনে নেই, তবে সম্ভবত আঠাশ ঘন্টা ছিলো জার্নিটা, এবং সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, এই বিশাল সময়ে একবারও আমি বাথরুমে যাইনি 😀 ।
ট্রেনে ওঠার আগে, সোয়াইন ফ্লু এর ভয়ে সবাই মাস্ক পরে আছি। ছবিসূত্রঃ আজরিন
কোলকাতা থেকে দিল্লী যেতে চমৎকার কিছু ট্রেন সার্ভিস আছে, তবে কম পয়সার জন্য আছে কালকা মেইল, এবং বিশ্বাস করুন, এটি অত্যন্ত জঘন্য। স্টুডেন্ট, কম পয়সা কিন্তু বেশী ঘোরার আকাঙ্খা, তাই আমরা ‘কালকা’ই বেছে নিয়েছিলাম। এই জার্নিটা অত্যন্ত মজার এবং বিস্ময়কর এই অর্থে যে, আপনি এই আঠাশটি ঘন্টায় আপনার পাশের জানালা দিয়ে পাহাড়, সমতল, বালুময় জমি সব দেখে ফেলবেন। কলকাতা থেকে রওনা দিয়ে আপনাকে ঝাড়খন্ড, বিহার, উত্তর প্রদেশ পাড়ি দিয়ে পৌছতে হবে দিল্লী, এর জন্য আপনি প্রথমে পার করবেন বর্ধমান, এরপর দূর্গাপুর, এরপর আসানসোল, এলাহাবাদ, কানপুর, ফিরোজাবাদ, আলীগড় ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি…এদের একেকজনের চরিত্র রূপ একেক রকম। কেউ ধূসর, কেউ সবুজ, কেউবা বাদামী। আমরা যেদিন গিয়েছি সেদিন সম্ভবত পূর্ণিমা ছিল, ঠিক মনে নেই, তবে আঁধার ঘন ট্রেনের ভেতর থেকে পঞ্চান্নটি ছেলেমেয়ে ট্রেনের জানালার বাইরে চলন্ত ও পরিবর্তনশীল সৌন্দর্য দেখে যে অনুভূতিটি পেয়েছিল, তা এখনও মনে আছে ঠিক ঠিক।
ছবিসূত্রঃ নেটবাজী
দিল্লীতে পৌঁছতে পৌঁছতে অনেক রাত হয়ে গেছিলো। ম্যাপে দেখলাম নতুন ঢাকা পুরান ঢাকার মতন দিল্লীরও নতুন দিল্লী আছে, তবে পুরান দিল্লী খুজে পেলাম না। পরে শুনেছিলাম, জামে মসজিদের দিকটাকে (যেদিকে অনেক অনেক কাবাবের দোকান ) অনেকে পুরোন দিল্লী বলেন। ট্রেন থেকে নেমেই সকলে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে গেলো ব্যাগট্যাগ মাঝে রেখে। আমি, তন্ময় আর কে কে যেন ট্যাক্সিতে বেরিয়ে গেলাম হোটেল ঠিক করতে। পুরান দিল্লীতে গিয়ে বেশ কিছু দর কষাকষির পর একটা হোটেল ঠিক হলো, হোটেল লিও। এরপর সব পোলাপান আসলে কোনমতে রুমে গিয়ে ঘুম।
সকাল সকাল উঠে পড়লাম। আমাদের বাস আর গাইড ঠিক করাই ছিলো। এগুলো আপনি হোটেল থেকেই ঠিক করতে পারেন। গাইড একটু দেখেশুনে বা পরিচিত নিলে ভালো, নইলে ইন্ডিয়ান গাইডগুলো খুবই একটু ‘কেমন যেন’ (আমাদের গাইড ছিল পুরাই খচ্চর প্রকৃতির, দুঃখিত এই শব্দ ব্যবহারের জন্য, কিন্তু তিনি এমনই)…প্রথমে যাবো কুতুব কমপ্লেক্সে। মূল শহর থেকে ১৪ কিমি দূরে এই কমপ্লেক্স। ভারতীয় উপমহাদেশে মুহম্মদ ঘুরী আক্রমণ শুরু করেন ১১৭৩ সাল থেকে, ১১৯২ সালে এসে আজমীর ও দিল্লীর শাসনকর্তা পৃথিবীরাজ চৌহান এর কাছ থেকে রাজত্ব ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হন। এই যুদ্ধটি ভয়াবহ ছিল, অত্যন্ত রক্তক্ষয়ী, আর এসব যুদ্ধের মুল আইডিয়া ঘুরী সাহেবের মাথায় ঢুকিয়েছিলেন তাঁর তুর্কী ক্রীতদাস কুতুব-উদ্দিন-আইবেক। ঘুরী তাঁর এই বিশ্বস্ত দাসকে তার অধিকার করা সকল রাজ্যের ভাইসরয় বানিয়ে নিজে ফিরে গেলেন। আর কুতুব উদ্দিন ঠিক এই সুযোগটাই কাজে লাগান, ঘুরীর বশ্যতা অস্বীকার করে। কুতুব উদ্দিন বুঝেছিলেন, যে দিল্লী পেলো, সে গোটা ভারতবর্ষকেই পেয়ে গেলো, কারণ স্ট্রাটেজিকাল দিক দিয়ে দিল্লী ভারতবর্ষের জন্য ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উত্তর পশ্চিম থেকে আসা আক্রমণকারীদের ঠেকাতে দিল্লীর কোন তুলনা নেই, এরা আসত মূলত হিমালয়ের পাদদেশ দিয়ে, অথবা রাজস্থানের মরূভুমি দিয়ে। সে হিসেবে দিল্লীর লোকেশন চমৎকার। গঙ্গা এবং যমুনার মাঝামাঝি তে পড়ায় বাণিজ্যেও সে অনেক সমৃদ্ধশালী ছিল।
কুয়াত-উল-ইসলাম’ মসজিদ
কুতুব উদ্দিন এর খেয়াল ছিল অবশ্য একটু অন্য জায়গায়। তার লক্ষ্য ছিল এ রাজ্যে তাঁর হাত ধরেই ইসলাম প্রবেশ করবে, এবং প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি তাই তাঁর প্রথম দায়িত্ব পালন করলেন একটি মসজিদ নির্মাণ করে, যা ইসলামের সমৃদ্ধিকে প্রকাশ করবে। পৃথিবীরাজের তৈরী করা ‘কিলা রায় পিথৌরা’র মাঝে ১১৯৫ সালে তিনি শুরু করলেন ‘কুয়াত-উল-ইসলাম’ মসজিদ বানানোর প্রক্রিয়া। কুয়াত-উল-ইসলাম অর্থ ইসলামের শক্তি। এ মসজিদটা বানানো তত সহজ ছিল না এই অর্থে যে, এই উপমহাদেশে তখন মসজিদ বানাতে পারদর্শী কোন রাজমিস্ত্রীই ছিল না। কিন্তু ইসলামের শক্তি আর নিজের বিজয় প্রতিষ্ঠার জন্য কিছু একটা খুব তাড়াতাড়ি বানানোর প্রয়োজন, নইলে রাজার মান থাকে না। তাই মান বাঁচাতে কুতুব উদ্দিন আইবেক সাহেব চারপাশের সাতাশটি মন্দির (হিন্দু ও জৈন) ভেঙ্গে তার উপকরণ দিয়ে তৈরি করলেন মসজিদ। এতে করে দুটি লাভ হলো, তাঁর মসজিদ বানানোর উপকরণ পাওয়া গেলো,আর মন্দির ভেঙ্গে নতুন ধর্ম ইসলামের গোড়াপত্তন প্রতিষ্ঠিত হলো।
মসজিদের আঙ্গিনা ধরে হাঁটছিলাম, আর এসব কথা মনে হচ্ছিল। কলাম গুলো দেখলেই বোঝা যায়, মন্দিরের তিনটা কলাম একটির উপর আরেকটি বসিয়ে তৈরী করা হয়েছে মসজিদের এক একটি কলাম। একেকটির নকশা একেক রকম, তবুও এত সুন্দর…আর এত নিখুত…আপনি মুগ্ধ হতে বাধ্য! সামনে দেখা গেল লোহার তৈরী একটি কলাম। কোন মন্দিরে দেখে হয়ত পছন্দ হয়ে গিয়েছিলো সম্রাটের, উঠিয়ে নিয়ে এসে বসিয়ে দিয়েছেন। এই কলামে খোদাই করা সংস্কৃত লেখা থেকে জানা যায় যে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত একটি বিষ্ণু মন্দিরে এটিকে ৪০২ খ্রিষ্টাব্দে স্থাপন করেছিলেন। সেখান থেকে আবার অঙ্গপাল উঠিয়ে নিয়ে এসেছিলেন নিজের বিষ্ণু মন্দিরে বসানোর জন্য। রাজা রাজড়াদের ব্যাপারই আলাদা…


পরপর দুটি কলাম বসিয়ে তৈরী করা হয়েছে একটি কলাম
ছবিসূত্রঃ উইলিপিডিয়া কমন্স
মকসুরা
ক’বছর যাওয়ার পর এ মসজিদে আরেকটু ইসলামিক ভাব আনতে মসজিদের পশ্চিম দিকে তৈরী করা হয় ইটের তৈরী বিশাআআল এক দেয়াল, যাতে আছে ইসলামিক স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য ‘আর্চ’। ৫০ ফিট লম্বা আর ১০৮ ফিট চওড়া এ দেয়ালটি ৮ ফিট মোটা ছিল, পাঁচটি আর্চ ছিল এতে। সবচেয়ে বড়টি ২২ফিট স্প্যানের। মসজিদের সামনে তৈরী কেবল সৌন্দর্যের জন্য তৈরী করা এই দেয়ালগুলোকে বলে মাকসুরা। এখন আর এগুলি তৈরী হয় না।
মাকসুরাটি লাল স্যান্ডস্টোন (এক জাতীয় পাথর) দিয়ে তৈরী করা,আর পুরা মাকসুরা জুড়ে কোরআন শরীফের আয়াত খোদাই করে লেখা ছিল। এত অসাধারণ সৌন্দর্য নিজ চোখে না দেখলে বোঝা যায় না। মানুষের কাজ কত নিঁখুত হতে পারে, এই মাকসুরা তার প্রমাণ। আসলে এ উপমহাদেশের পাথরশিল্পীরা শক্ত গ্রানাইট আর পাথর কেটে কেটে এতটাই অভ্যস্ত ছিল যে, এই স্যান্ডস্টোন তাদের কাছে মোমের মতই ছিল। কাজগুলো দেখলে আসলেই আপনাদের মনে হবে, মোমেও বোধহয় এত সুন্দর শিল্প তৈরী করা সম্ভব না। আমি মকসুরায় গাল লাগিয়ে খাণিক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম, আমার মনে হলো আমি যেন কতশত বছর আগেকার ঘামে ভেজা মানুষের শিল্পী হাতকে স্পর্শ করছি…
ছবিসূত্রঃ আজরিন
কুতুব মিনারঃ
এই মাকসুরা তৈরী হওয়ার পর কুতুব উদ্দিন আইবেকের শখ হলো তার বিজয় সেলিব্রেট করার। ভারতবর্ষের মত জায়গা জয় করে ফেলার পর শাসক সেলিব্রেট করবেন না, তা তো ঠিকনা…তাই তিনি ঠিক করলেন এমন একটা কিছু বানাবেন, যা আইবেক সাহেবের মাহাত্ম্য ও শক্তি প্রদর্শন করবে। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ যে এবার তিনি কোন মন্দির না ভেঙ্গে একটি বিশাল স্তম্ভ তৈরীর পরিকল্পনা হাতে নিলেন, যা কিনা পরবর্তীতে সারা বিশ্বের অন্যতম সুন্দর স্থাপত্য নিদর্শন হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে। এমনকি এখনও, এই কুতুব মিনার দিয়েই লোকে দিল্লীকে চেনে। ১১৯৯ সালে আইবেক কুতুব মিনারের ভিত্তি স্থাপন করলেন, কিন্তু দুঃখজনক ভাবে মাঝখানে তিনি পটল তোলায় তার জামাই ইলতুতমিশ এর কাজ শেষ করেন। ২০ বছর লেগেছিল এই স্তম্ভটি তৈরীতে।
ছবিসূত্রঃ আজরিন
কুতুব মিনারের আসল উচ্চতা ছিল ২৩৮ ফিট, মানে মোটামুটি ২৪ তলার সমান। ৪৭ ফিট ব্যাসের এই স্তম্ভটি কোণ এর মত, উপরে উঠে এর ব্যাস হয়ে গেছে মাত্র ৯ ফিট। এর এক্কেবারে ওপরে ওঠার জন্য ৩৬০ ধাপের একটা ঘোরানো সিঁড়ি আছে, যেটা সম্ভবত গতবছর থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, পর্যটকদের আর উঠতে দেয় না। মিনারটি পাঁচটি ভাগে বিভক্ত। চারটি ঝুল বারান্দা রয়েছে চারটি ধাপে। এগুলোতে নিখুঁত ভাবে খোদাই করা আছে কুরআনের বিভিন্ন আয়াত ও অন্যান্য নকশা।
ছবিঃ উইকিপিডিয়া কমন্স
মিনারটি তৈরী করার পর একসময় বজ্রপাতে এটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এরপর মুঘল আমলে উপরের দুটি ধাপ যোগ করা হয়, এরও পরে মেজর স্মিথ নামক একজনের ডিজাইনে ব্যালকনির রেলিং গুলো পরিবর্তন করা হয়। এত সব পরিবর্তনের পরও আজও কুতুব মিনার অপরিসীম সৌন্দর্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে…এর নকশাগুলো দেখে মানুষ অবাক হতে বাধ্য।
ইলতুতমিশের কবরঃ
ইলতুতমিশ সাহেব এত কিছুর সাথে নিজের কবরটাও জুড়ে দিয়েছিলেন। তিনি বেঁচে থাকতেই ১২৩৫ সালে এর নকশা করে বানিয়েও গিয়েছিলেন, নিজের পছন্দে এর ভেতরের ক্যালিওগ্রাফীগুলাও করিয়েছেন। ভালই লাগে ঘুরে ঘুরে দেখতে।
আলাই মিনারঃ
আলাউদ্দিন খিলজীর সবকিছুই ছিল বড় বড়। সব কিছুর মধ্য দিয়ে এই দাম্ভিক শাসক তার দম্ভকে প্রকাশ করতে চাইতেন। তিনি ক্ষমতায় আসার পর চাইলেন এই কমপ্লেক্সে তারও কিছু অবদান থাকুক…সেই অবদান হলো আলাই মিনার, আলাই দরওয়াজা আর কুয়াতুলইসলাম মসজিদের এক্সেটেনশন। ইলতুতমিশ এই মসজিদকে তিনগুণ এক্সটেন্ড করেন, আর খলজী সাহেব করেন ছ’গুণ। আলাই মিনার নামক যে বস্তুটি তিনি বানানোর প্ল্যান করছিলেন, তার উচ্চতা হতো কুতুবের দ্বিগুণ, বাস কত ছিল মনে পড়ছে না। এই মিনার যদি বানানো হত, তবে কি যে কুৎসিত অনুপাতের হত, এ ভেবেই আমি একটু শঙ্কিত হলাম। আলাই মিনারের ৭০ফিট মতন বানানোর পর আলাউদ্দিন সাহেব পটল তোলেন, তাই এটি আর বানানো হয়নি।

তবে খিলজী সাহেব একটা চমৎকার জিনিস যোগ করেছিলেন এই কমপ্লেক্সে, আর তা হলো আলাই দরজা। এই কমপ্লেক্সে ঢোকার মূল দরজায় পরিণত হয় সেটি। উপমহাদেশে ইসলামিক স্থাপত্যের খুবই মৌলিক কাজ ছিল এই আলাই দরওয়াজা। আজকে আর টানতে পারতেসি না…আর কোন একদিন লিখব একে নিয়ে 😀 ।
সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ্য থাকুন। বিদায় নিচ্ছি, আমি সামিয়া হোসেন।

২,৭৬৫ বার দেখা হয়েছে

১২ টি মন্তব্য : “৩৬ দিনের দেশ-২; দিল্লী বড় দূর হে…”

  1. রাব্বী (৯২-৯৮)

    এত দিন পর! আমি তো এই সিরিজের কথা ভুলেই গেসোলম।

    সত্যি খুব ভাল লাগলো। তোমার ট্রেনের কথা পড়ে আমার কুড়লাত-হাওড়া এক্সপ্রেস নামের একটা ট্রেনে ৪২ ঘন্টার জার্নি করছিলাম সেইটা মনে পড়লো। সেইটা আরাম-আয়েশি না হলেও মজার সব অভিজ্ঞতা হইছিল। স্থাপত্যের কথাগুলো এবং ইতিহাস দারুন লাগলো।

    পরের পর্বের জন্য "অপেক্ষায় নাজির" 🙂


    আমার বন্ধুয়া বিহনে

    জবাব দিন
  2. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    অনেকগুলো বছর কাটানোর কারণে (আরো নানা কারণে, 😛 ) দিল্লী আমার নিজের শহর।
    কুতুব মিনার সংলগ্ন এলাকা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের একেবারে কাছাকাছি।যদিও ৪/৫ বারের বেশি যাইনি সব মিলিয়ে, তবু আমাদের খুব পছন্দের জায়গা ছিলো ওটা।

    জামে মসজিদ এলাকার কাবাবের কথা মনে পড়ে গেলো, মনে পড়ে গেলো কালকা মেইলের ভয়াবহ যাত্রাগুলোর কথা।

    তোমার আগামী বর্ণণায় কি দিল্লীর কথা থাকছে আরো?

    জবাব দিন
  3. মান্নান (১৯৯৩-১৯৯৯)

    আর্কিটেক্টদের চোখই দেখি আলাদা। আমি তো শুধু গিয়েছিলাম, মিনারের ছবি তুলেছিলাম ,সৌন্দর্য্য দেখে একটু আহা উহু করে চলে এসেছিলাম। তোমার মতো এতো নিখুঁত ইতিহাস, বর্ননা , গঠনশৈলী মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করিনি। তোমার সুবাদে সেসবও জানা হলো আবার।

    জবাব দিন
  4. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    আমার ইন্ডিয়া ঘোরার খুব শখ ছিল।
    তোমার লেখা পইড়া এখন ঘুরতেছি।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  5. আন্দালিব (৯৬-০২)

    ভালই হয়েছে এই সিরিজটা পেয়ে, পরে যখন ঘুরতে যাব, গাইডের খরচটা বেঁচে যাবে!

    পার্সোনালি আমার কাছে এই স্থাপত্যের চেয়ে এর পিছনের ইতিহাসটা অনেক বেশি আকর্ষণীয় লাগে। গত মাসে নেপালে গিয়েও ওখানের ভক্তপুরের ইতিহাস জেনে মজা পেয়েছি। চালিয়ে যাও! :thumbup: :thumbup:

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : সামিয়া (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।