নার্ভের রোগ, হেমিফেসিয়াল স্পাজম

কয়েকদিন ধরে ডান চোখটা লাফাচ্ছিল। যে সে লাফ নয়। একএক বার নিজে নিজে বন্ধও হয়ে যায়। লাফালাফির ব্যাপারটা ধরতে পেরেছিলাম,বন্ধের ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম বিশ্রীভাবে। অনেকদিন পর নিজের শহর যশোরে গিয়েছিলাম। এখানে এলে আমার প্রথম কাজ সকাল সকাল বাজারে যাওয়া। সকাল সাতটার মধ্যে চাতালে মাছ চলে আসে। বিলের তাজা মাছ। মাছের প্রতি আমার নিজের কোন আগ্রহ নেই। মেয়েদের জন্যে বাজারে যাই। একেবারে লাফানো ট্যাংরা, একটু আধটু হাটতে পারা চিংড়ি এসব কিনে নিয়ে আসি একগাদা। ব্যাগ থেকে বেরিয়ে মাছ গুলো তিড়িং বিড়িং লাফাতে থাকে। ট্যাংরা গুলির চেহারাতো টাইগার শার্কের মত। সে সব দেখে মেয়েরা খুশি হয়। ছোট মেয়ে শ্রেয়া মাছ কাটতে দেখলে কষ্ট পায়। ছোট্ট একটা একুরিয়াম আছে বাসায়, দাদিমাকে বলে, ‘দাদদাদ, এগুলোকে একুরিয়ামে রাখো’ ।
বাজারে দেখা হয়ে গেল, মোজাম্মেল মাওলানার সাথে। ছোটবেলায় আমার কোরান খতম হয়েছে হুজুরের কাছে। পঞ্চাশ পেরুনো এই পুরোনো ছাত্রটিকে এখনও তিনি ছাত্রই মনে করেন।দেখা হতেই, বাজার ভর্তি লোকজনের মধ্যে বললেন, ‘চোখ মারস ক্যান?’ অবাক হয়ে গেলাম, বিব্রতও হলাম খানিকটা। বললাম, ‘হুজুর এত লোকের মধ্যে এসব কী বলেন?’
‘কী বলি মানে!’
পরিচিত আরও দুই একজন তখন আশেপাশে হাজির হয়েছে, মাওলানা সাহেব একজনকে ডেকে বললেন, ‘দ্যাখতো ও চোখ মারে না?’ হাসাহাসি শুরু হল এইনিয়ে। তিনি আমাকে একটু আড়ালে নিয়ে বললেন, ‘শুধু চোখ না তোর ঠোঁটের এক দিকে চামড়াও কুচকে যায়। ভালো লক্ষণ না। ডাক্তারের কাছে যাইস’।
বাসায় এসে বউকে বললাম, ‘দ্যাখোতো আমার চোখ বন্ধ হয়ে যায় কীনা! বরিশাইল্যা হুজুর আমাকে বলল আমি নাকি চোখমারি’। দীপার হেসে গড়াগড়ি খাবার অবস্থা। বলল, ‘হুজুর তোমাকে ঠিকই চিনতে পেরেছে’। সেদিন আর কিছু হলনা। ঢাকা যাবার সময় বড় মেয়ে সারাহ বলল, ‘বাবা তোমার রাইট আই টা ব্লিঙ্ক করছে কেন?’
ঢাকা সিএমএইচের এক পরিচিত ডাক্তারের কাছে গেলাম। তিনি বললেন, ‘চোখ লাফানো তো ভালো লক্ষণ। কোনটা, বাম না ডান?’
– ডান,
– ওয়াও সৌভাগ্যের লক্ষণ
– স্যার ফান কইরেন না তো, আমি মরছি চোখের জ্বালায়। এবার সিরিয়াস হলেন ডাক্তার। বাতি জ্বালিয়ে অনেকক্ষণ দেখে বললেন ‘তেমন কিছু তো দেখছি না। ব্যাথা করে?
– না
– আর কোন আসুবিধা?
– যখন বেশি লাফালাফি করে পড়তে আসুবিধা হয়।
আজকাল চোখ দেখার জন্যে চোখের ডাক্তারদের অনেক যন্ত্রপাতি, নানা রকম পরীক্ষা আছে। তার মধ্যে একটি হলো স্লিট ল্যাম্প এক্সামিনেশন। মাইক্রোস্কোপের মত একটি যন্ত্রের দুই প্রান্তে দুই টুলে বসে ডাক্তার আর রোগী চোখ আর থুতনি যন্ত্রে ঠেকিয়ে চোখা চোখি করেন, প্রায় রোমান্টিক একটা ব্যাপার। চোখাচোখি শেষে ডাক্তার সাহেব বেশ আবেগ নিয়ে বললেন, ‘তোমার চোখে কিছু ময়লা জমেছে। পরিষ্কার করে দিচ্ছি। যদি ঠিক না হয়। বুঝবো চোখের পেছন দিকে ময়লা জমেছে। তার জন্যে অন্য ব্যবস্থা’।
এদিকে আমি ফুলটাইম এমবিএ’র ছাত্র। রীতিমত এডমিশন টেষ্ট দিয়ে MIST তে ভর্তি হয়েছি। সেনাবাহিনীর কোন কিছুই সোজা নয়। আর্মির পয়সায় এমবিএ পড়া আরও কঠিন। আমার অন্য বন্ধুরা যখন চাকরি বাকরির ফাঁকে ফাঁকে উইকএন্ডে দুই একদিন ক্লাশ করে আমারই চোথা নিয়ে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি থেকে ভালো গ্রেড হাতিয়ে নিচ্ছে। আমি তখন নিয়মিত ক্লাশ করেও বি প্লাস জোটাতে হিমশিম খাচ্ছি। MISTতে প্রতি সেমিস্টারে পাঁচটা করে বাধ্যতামূলক কোর্স, ফাইনাল সেমিস্টারে যাবার আগে কোর্স বাঁছাইয়ের কোন সুযোগ নেই। যখন তখন টিউটোরিয়াল হয়। একটি ক্লাশ মিস হওয়া মানে জীবন শেষ। পরীক্ষায় ফেল মানে আবার ইউনিটের জীবনে ফিরে যাওয়া। ইউনিটের জীবন আমার অপছন্দের নয়।সমস্যা শুধু বদলীর জায়গা নিয়ে। আগে এসব নিয়ে ভাবতামনা। তিন বছরে সাতটি বদলীর রেকর্ডও আমার আছে। বিয়ের আগে বদলী মানে একটা ব্যাগ নিয়ে বাসে উঠে পড়া। এখন বদলী মানেই প্রথমে ট্রাক জোগাড় করা। স্থাবর একট্রাকে কুলোয় না। আবার দুই ট্রাক বেশি হয়ে যায়। তারপর বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি, গিন্নীর জন্যে নতুন গৃহকর্মী জোগাড় করা, সবচেয়ে বড় কথা নতুন জায়গায় কবে বাসা পাওয়া যাবে তার কোন ঠিক নেই। ডাক্তারের কাছে, সবকিছু ব্যাখ্যা করে বললাম, ‘স্যার, আপাতত ঠেকা কাজ চলবেতো আপনার ওষুধে?’ ডাক্তার আমাকে ভরসা দিয়ে ফেরত পাঠালেন।
এরপর দুই তিন দিন ক্লাশ করার পর পড়লাম আরেক ঝামেলায়। মনে হলো সহপাঠিনীরা আমার দিকে সরাসরি তাকিয়ে কথা বলছে না। সুন্দরী ধরণের যে দু’টি মেয়ের সাথে আগে নোট চাওয়ার ছলে, সময়ে অসময়ে ইয়ার্কি-ফাজলামি করতাম সেই মেয়ে দু’টিও এড়িয়ে চলছে। গ্রুপ এসাইনমেন্টের সময় এক হাটুর বয়সী সতীর্থ হাসতে হাসতে বলল, ‘ভাই আপনি সাধারণ কথা বার্তার সময়ও দেখি চোখ মারেন! আগে তো আপনি এরকম ছিলেন না এটি কী এমবিএ’র উপকারিতা?’
পরদিন একটা জরুরী টার্ম পেপার জমা দেয়ার কথা। সেসব বাদ দিয়ে বাসায় ফিরে বাথরুমের আয়নার সামনে অনেকক্ষণ সময় নষ্ট করে ফেললাম। তারপর বাথরুম থেকে বেরিয়েই ছুটলাম ডাক্তারের কাছে। টেবিলে খাবার সাজিয়ে বসে ছিলো দীপা বললাম, ‘সময় নেই, দেরি হলে ডাক্তার থাকবেনা’।
এবার আর সেনাবাহিনীর ফ্রি ডাক্তার নয়। পিজি হাসপাতালের এক চক্ষু বিশেষজ্ঞ। প্রাথমিক প্রশ্নোত্তর আগের মতই। উনি বললেন তা আপনার আসল অসুবিধাটা কী? আগেই ডাক্তারকে সবকিছু বলে ছিলাম। আবার ডাক্তারের একই প্রশ্ন শুনে মেজাজ খারাপ হল, বললাম, ‘অসুবিধা আমার চেয়ে আমার সহপাঠিনীদের বেশি’। সব শুনে উনি গজ গজ করতে করতে বললেন, ‘আজ কাল হয়েছে এক ফ্যাশন সবাই এমবিএ পড়ে। আর্মীর চাকরিতে ভালোই তো আছেন, সবই তো শুনি আপনাদের ফ্রি আবার এমবিএ পড়ার দরকার হল কেন?’ মেজাজ আরও খারাপ হবার আগেই ডাক্তারের হাতে ফি গুজে দিয়ে চলে এলাম’। আসার সময় ডাক্তার বললেন, ‘আপনার মন খারাপ হল আমার কথায়?শোনেন আপনার চোখ আমি দেখেছি, কোন সমস্যা নেই। আপনার হয়েছে মানসিক অশান্তি, বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়ের সাথে ক্লাশ করতে গিয়ে বিব্রত হচ্ছেন। আপনি একটা কাজ করেন তো ভাই, ডার্ক কালারের একটা চশমা কিনে নেন’।
কয়েকদিন পর একজন স্বনামধণ্যা শিক্ষিকা ক্লাশ শেষে ডেকে পাঠালেন।বললেন, ‘আমি ঢাকা আইবিএ, এমআইএসটি ছাড়াও অনেক জায়গায় পড়াই, কিন্তু আপনি আজ যা করলেন এর মত বাজে অভিজ্ঞতা আমার কখনও ঘটেনি। শিক্ষকতার কথা নয় বাদই দিলাম বয়সেও তো আমি আপনার বড়ই হব। আর সব বয়সে সব কিছু কি মানায়?
আর দেরি না করে আবার ছুটলাম, সিএমএইচে। ডাক্তারের তখন সিএমইচের ডাক্তারি শেষ। বিকালে চেম্বার আছে, তিনি রেডি হচ্ছিলেন বাসায় যাবার জন্যে। বললেন, ‘এই শেষ বেলায় এলে? এখনও ঠিক হয়নি? তোমার সমস্যাটা সম্ভবত চোখের নয়। একবার ইএনটি স্পেশালিশটকে দেখাবে নাকি?’
নাক, কান গলার ডাক্তার আমাকে ভালো করে পরীক্ষা করে কয়েকটি ওষুধ লিখে বললেন আপনার কোন আসুবিধা নেই
– তাহলে ওষুধ দিলেন যে!
– ওষুধ তো আর কিনে খেতে হচ্ছে না, খেয়ে দেখেন। কোন সাইড ইফেক্ট নেই।
চোখের দুঃখ ভুলে লেখা পড়ায় মন দেবার চেষ্টা করলাম। মেয়েরা বললো, ‘বাবা তোমার একটা চোখ ছোট হয়ে যাচ্ছে’। অনেকদিন পর মা এসেছিলেন ঢাকায়। ছেলের চোখ দেখে মহাদুশ্চিন্তায় পড়লেন। তার রাজপুত্রের মত ছেলেটির চুল আগেই পড়ে গিয়েছিলো, এখন চোখও পুরো দুইটা রইলো না। তিনি বললেন এসব ডাক্তার কোন ডাক্তারই নয়। তুই বিদেশে যা।
মা’র জোরাজুরি আর মহিলাদের কাছে নিজের চরিত্র নিষ্পাপ প্রমানের লোভে আমাকে আবার সিএমএইচে যেতে হল।পরিচত ডাক্তারটি ততদিনে বদলী হয়ে গিয়েছেন। নতুন যিনি এসেছেন তিনি অল্পবয়সী একজন মহিলা। ডাক্তার বলে তাঁকে মনেই হয়না। ভীষণ সমস্যায় পড়ে গেলাম। ডান চোখের উপর আমার কোন দখল নেই। সেটি যখন তখন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। চোখ খুলে রাখার জন্যে বড় বড় চোখ করে মহিলার দিকে তাকিয়ে রইলাম । আদ্যান্ত শোনার পর তিনি বললেন, ‘রোগটা আসলে আপনার চোখের নয় নার্ভের। আপনি ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে দেখতে পারেন। সম্ভবত এটার নাম হেমিফেসিয়াল স্পাজম। চোখ খোলা বন্ধ করতে যে নার্ভটি কাজ করে সেটি কাজ করছে না। আপনি নিউরো মেডিসিনের ডাক্তার দেখান’।
নিউরো সার্জন আমাকে দেখে খুশি হলেন। খুব একটা রোগি টোগী সিএমএইচের নিউরো সার্জনের কাছে আসেনা। তাঁর চেম্বারটি চমতকার। তিনি গভীর মনোযোগে একটি ল্যাপটপের উপর ঝুঁকে পড়েছেন।আমার দিকে একবার তাকিয়ে আবার ল্যাপটপে মনযোগী হলেন। আমার মনে হল ডাক্তারের অখন্ড অবসর। তিনি বললেন, ‘একটি দুর্লভ রোগ বাধিয়েছেন দেখছি। এই রোগটার কথাই ইন্টারনেটে পড়ছিলাম। রোগটা আমেরিকায় লাখে পনের জনের হয়। এর কাছাকাছি একটা রোগ আছে নাম বেলস পালসি, মুখটুখ বেঁকে যায়। আপনি ওমেন সিনেমাটা দেখেছেন?
– না
– সেবা প্রকাশণীর বই আছেনা অশুভ সংকেত! ওইটা ওমেনের অনুবাদ। একটা মাত্র হরর মুভি যাতে গ্রেগরি পেক অভিনয় করেছে।
আমার মাথায় এসব ঢুকছিলো না, বললাম, ‘স্যার আমি খুবই যন্ত্রণার মধ্যে আছি’।
– শোনেন ওই মুভিতে একটি চরিত্র আছে, যার বেলস পালসী হয়েছিলো। মুভিটা দেখলে বুঝতে পারতেন। হেমিফেসিয়াল স্পাজমটা ওরকম একটা রোগ।স্টেটসে যে সব ছেলের এই রোগ হয় তাদের মুখের বাম পাশ থেকে শুরু করে বাম চোখে পর্যন্ত অনেক ধরণের অসুবিধা হয়।
– স্যার, আমারতো সমস্যা ডান চোখে
– তাতো দেখতেই পাচ্ছি। মহিলাদের ক্ষেত্রে রোগটা ডান দিকে বেশি এফেক্ট করে। আপনাকে বটুলিনাম ইঞ্জেকশন দিতে হবে। আমি যখন ইরাকে ছিলাম তখন বেশ কয়েকজনের চিকিতসা করেছি।
এতক্ষণে একটু আশার আলো দেখতে পেলাম। বললাম, ‘স্যার যা দিতে হয় দেন, আমার কোন সমস্যা নেই’।
মিষ্টি করে হাসলেন ডাক্তার অসুবিধা আসলে কারোরই নেই, ‘সমস্যা হল, ওষুধটি অনেক দামি। আমরা রাখি না। আপনি আপাতত ক্যালসিয়াম জাতীয় কিছু ওষুধ আর নার্ভ সামলানোর ট্যাবলেট খান। যদি আরও কয়েকজন রোগী পাই একটি ইনজেকশন এনে সবাইকে একসাথে দিয়ে দেবো। একটি ইঞ্জেকশন চার পাঁচ জনকে ভাগকরে দেওয়া যায়’।
আশায় বুক বেধে ওষুধ নিয়ে এলাম। এবার নতুন উপসর্গ শুরু হলো। এতদিন এক চোখ বন্ধ হত। ওষুধ খাবার পর দুই চোখই বন্ধ হয়ে যেতে থাকে। শুধু ঘুম আসে। পরীক্ষা, এসাইনমেন্ট সব এলোমেলো হয়ে যেতে থাকল।
ক’দিন পর সিএমএইচ থেকে ডাক পড়লো। ইঞ্জেকশন পাওয়া গেছে। ডাক্তার নিজে ফোন দিয়েছেন। তিনি যত্ন করে আমার ডান চোখের বিভিন্ন কোনায় পাঁচ বার সুঁই ফুটালেন। বললাম, ‘ঠিক হবে তো স্যার? টিস্যু পেপার দিয়ে হাত মুছতে মুছতে তিনি বললেন, ‘আশা তো করি অন্ততঃ ছয়মাস ভালো থাকবেন। যদি ঠিক হয় আমাকে মনে করে জানাবেন। আমরা এই ইঞ্জেকশন আরও কিছু এনে রাখবো’।

২০ টি মন্তব্য : “নার্ভের রোগ, হেমিফেসিয়াল স্পাজম”

    • সাইদুল (৭৬-৮২)

      তার আর পর নেই। ডাক্তাররা আমাকে গিনিপিগ হিসাবে দেখেছে। অনেকের ভালো হয় আমার ভালো হয়নি। ইন্টারনেটে দেখলাম, এই রোগের তিন প্রকার চিকচিতসা খাওয়ার ওষুধ, ইঞ্জেকশন আর সার্জারি। সার্জারিতে ভালো হবার সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ, তবে যারা একবার ইঞ্জেকশন নিয়েছে সার্জারিতে তাদের সম্পুর্ণ ভালো সম্ভাবনা একটু কমে যায়। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ


      যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান

      জবাব দিন
  1. সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

    নিদারুণ দুঃখ কষ্টের কথা তুমি কী সাবলীল ভাবেই না উপস্থাপন করলে আমাদের সামনে! চমৎকার রসবোধ তোমার, ভাইয়া! পড়তে পড়তে একবার তোমার সাথে চলে গেছি তোমার ক্লাস রুমে তো একবার তোমার মায়ের সামনে তো একবার কন্যার মুখোমুখি! মোজাম্মেল মাওলানার মত কত যে ক্যারেকটার আমাদের চারপাশে ঘুরছেন সেটিও খুঁজে নিলাম এরই মাঝে!

    এতোদিনে হয়তো তুমি চোখ টেপাকে রীতিমতো শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছো!

    বরাবরের মত মুচমুচে, কুড়মুড়ে লেখা! তোমার সর্বাঙ্গীণ সুস্থতা কামনা করছি, ভাইয়া!!

    জবাব দিন
    • সাইদুল (৭৬-৮২)

      টেকো হয়ে যাবার সময় থেকেই দেখেছি, নিজের ত্রুটি বিচ্যুতি আসলে সব সময় খুব খারাপ নয়। অন্যকে নিয়ে রসিয়ে লেখার চেয়ে নিজেকে পচানো অনেক ভালো। কারণ আমি আমাকে যত জানি, অন্যকে কী অতটা জানি!

      ভালো থেকো সাবিনা। ধন্যাবাদ


      যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান

      জবাব দিন
  2. লুৎফুল (৭৮-৮৪)

    সেলিউট ! সেলিউট ।
    যন্ত্রণা ও বিড়ম্বনার গল্প বলে আপনি হাসিয়ে ছাড়লেন ।
    সবাই পারে ! পারে না । লাখে এক জন ।

    আপনার জন্য অমন দুর্লভ ও মানানসই হবার লোভে সে যে অসুখই আসুক ।
    আপনি ভালো হয়ে উঠবেন । ভালো থাকুন । সুস্থ্য থাকুন ।
    হাসি ও আনন্দে নিরন্তর আমাদের ভাসিয়ে রাখুন ।

    জবাব দিন
  3. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    এরকম দুঃখ কষ্টের ঘটনা এত মজার করে বলতে খুব কম লোকই পারে। আপনার দুঃখের কাহিনি দারুন মজা করে পড়লাম স্যার 😛


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  4. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    প্রথমে ভেবেছিলাম চিকিত্সাবিদ্যা নিয়েই লিখলেন বুঝি! চিকিত্সা বিড়ম্বনা নিয়ে যে লিখেছেন তা জানলাম এই।
    বড়ই কষ্টের কথা। নিজেকে নিয়ে রসিকতা করা চাট্টিখানি কথা না সাইদুল ভাই।

    জবাব দিন
  5. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    এমআইএসটি অংশের বর্ননায় নিজেকে ভিলেন ভিলেন মনে হলো।
    আফটার অল ঐ কঠিন পরিস্থিতি তৈরীতে আমারও তো ভূমিকা ছিল।
    তবে সাইদুল ভাই, গল্পটা জব্বর হয়েছে।
    শুধু গল্প হলে অসুবিধা হতো না।
    সত্যি গল্প বলে একটু অসুবিধা তো হয়ই। কিভাবে যেন গায়ে উঠে পড়ে।
    তারপর নিজেরই ঐ বোধ হতে শুরু করে!!!


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
  6. সাইদুল (৭৬-৮২)

    পারভেজ, MISTতে ভিলেন তো দূরের কথা তুমি ছিলে নায়কের কাছাকাছি। স্টুডেন্টদের পছন্দের তিন জন শিক্ষকের অন্যতম। বাকী দু'জন ছিলেন খায়ের জাহান সোগরা আর তানভীর। আর আমি ব্যক্তিগত ভাবে যে তোমার কাছে কৃতজ্ঞ তাতো জানোই। সত্যি গল্পের ঝুঁকি আছে সত্যি, তবে লিখতে সুবিধা । বেশি কল্পনা করতে হয়না। (সম্পাদিত)


    যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান

    জবাব দিন
  7. আমারো গত এক মাস থেক ডান চোখের পাতা এবং ডান চোখটি ক্রমাগত লাফিয়ে চলেছে। তাই কেন চোখ লাফায় নেটে এই বিষয়টির উপর পড়তে গিয়ে আপনার লেখাটি পড়লাম। অসাধারণ হয়েছে। অনবদ্য লেখা। আমি কী করবো একটু বলবেন কী?

    জবাব দিন
  8. মোঃ আক্তারুজ্জামান গাজী

    আমি আপনার মতো হেমিফেসিয়াল স্পাজমস রোগে আক্রান্ত। আমাকে নিয়ে মানুষ অনেক হাসাহাসি করে। আমি ২০১৫ সাল থেকে এই সমস্যায় আছি। কোনো ঔষধে কাজ হচ্ছে না। ডাঃ আমাকে বোটোনিল ইনজেকশন দিতে বলছে। আমি ইনজেকশন দিতে চাই। কিন্তু ইনজেকশনের দামটা বড় সমস্যা। আমি আপনার কাছে জানতে চাই ইনজেকশন আাসলে কয়টা দিতে হয়? আর ইনজেকশনটা কয় মাস পরপর দিতে হয়? ৩ মাস পর পর না ৬ মাস পরপর দিতে হয়? আর আপনি কি এখনো ইনজেকশনটা নিয়মিত দিচ্ছেন? আপনি নিজের জন্য আসলে কয় মাস পরপর ইনজেকশনটা নিচ্ছেন? এই ইনজেকশনটা দেয়ার ফলে অন্য কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় কি? আমাকে যদি এই তথ্য গুলো দিতেন তাহলে আমার খুব উপকার হতো। আর হ্যা আমার বাড়ি যশোর, থানা সারসা, বাগ আঁচড়া বাজার। আমি ঢাবি থেকে পড়ালেখা করেছি। পড়ালেখা শেষ করার পর ভালোই চলছিলো। কিন্তু এই রোগের কারণে কোনো জাগায় চাকরি বাকরি করতে পারছি না। তাই রোগটা সারানো ছাড়া আর কিছু সম্ভবও হচ্ছে না। আমার জন্য কিছু তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবেন। আপনার জন্য দোয়া করি। আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ হাফেজ।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : সাইদুল (৭৬-৮২)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।