হাবিজাবি আর জাবিহাবি

(লেখাটা একটু পুরানো আর সংক্ষিপ্ত )

আমি পশু-পাখি থেকে মানুষকেই বেশি ভালবাসি, তাই ঠিক করেছি মানুষই পোষ মানিয়ে পালব। কোন ভণিতা করে নয়, কোন সস্তা জনপ্রিয়তাও নয়, ভিন্ন ধরণের ভালবাসার কোন আবেগী বহিঃপ্রকাশ ও নয়। ভালবাসার উষ্ণতার ধরণ এমন যে আমার যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি কোন পোষা কুকুর-বেড়ালের নামে উইল করে যাব না বরং এমনই এক অনুভূতি-প্রবণ প্রানীকে দিয়ে যাব যে সম্পদের মুনাফা গুনতে দুখানা হাতই ব্যবহার করতে জানে। আর এ কাজে মানুষের বিকল্প কোথায়?

ভাবি আজ যারা বিশ্বজুড়ে পোষ মানিয়ে রেখেছে হাজার হাজার গৃহপালিত প্রানী, তারা আজ শপথ নেবে পশু-পাখির বিনিময়ে একটা করে মানুষ পালবে। তাতে কি পৃথিবী থেকে দারিদ্র্য নামের শব্দটি একেবারেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে নাকি জাদুঘরে ঠাঁই করে নিবে যার জন্য টিকিট কেটে আমাদের লাইনে অপেক্ষা করতে হবে।

আজকে মানুষেরই তো সবচেয়ে ভালবাসার অভাব। মানুষ আজ কাঙ্গাল। জগতের সকল কাঙ্গালদের গৃহপালিত করে পুষে রাখবে আরেক দল বিত্তবান কাঙ্গাল! ভালবাসার এই দেয়া-নেয়ায় হয়ত সম্পদের সুষম বন্টন ও হবে কিন্তু তা ভেবে আমাদের সামিউলের কী? সে বরং জেনেছে- প্রেম শ্বাশত ,প্রেম দীর্ঘজীবি। তাতে নিজের সন্তান বিসর্জন দিয়ে ইব্রাহিম না হতে পারলে ও আয়েশা হওয়া যায়। আর তাই ঈশ্বরকে জানাই ধন্যবাদ, আমার জননী আয়েশা নন।

মাতৃগর্ভে তোর জায়গা হয়েছিল হয়ত কিন্তু মায়ের আচঁলে তোর ঠাঁই হয়নি, এতে আমি খুব চমকে যাইনি। বরং নয়-নয়টা মাস সেই মায়ার আবরনে ঢাকা নিরাপদ ঘরে তুই কেমন করে কাটিয়েছিস আমার আজকাল খুব জানতে ইচ্ছে করে। ভূমিষ্ঠ হবার পর কি তুই মাতৃদুগ্ধের স্বাদ অনুভব করিসনি, নাকি কোন দাইমার বদান্যতা তোর ক্ষুধা আর পুষ্টির অভাব পূরন করেছে। আমার আরও খুব করে জানতে ইচ্ছে করে তোকে আদর করে তোর মা কি নামে ডাকত? আমি ভাবি ঔরসের উৎস তো দৃশ্যমান নয় কিন্তু গর্ভধারণ তো একেবারেই চাক্ষুষ। তাহলে আয়েশা কি তোর মা নয়? আমার বরং তোর ভাগ্যে হিংসে হয় এই অসভ্য দুনিয়াটাকে তোর বেশীদিন সহ্য করতে হয়নি। বড় হয়ে তুই এমন কি করে দেখাতি যে দেশ-জাতি উদ্ধার হত।

প্রতিটা সভ্যতার ভিত্তিই- মাতৃত্ব। ভাবি মানুষই যদি না থাকে তাহলে কি হবে এই সভ্যতার ইতিহাসের? তাতে কি, মানুষ না থাকলে আমাদের পোষা প্রানীরা আছে না? নাহয় ওদেরকেই দিয়ে যাব আমার সভ্যতার উত্তরাধিকার! সেখানে মানুষ হবে অক্টোপাস আর আমি হতে চাইব পল।

১,৮১৭ বার দেখা হয়েছে

৩৬ টি মন্তব্য : “হাবিজাবি আর জাবিহাবি”

  1. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    কোন কোন মানুষের কারনে নিজেকে মানুষ বলে পরিচয় দিতে ঘেন্না হয়... 🙁
    আজকাল সেই ধরনের মানুষের সংখ্যা হয় বেড়েছে, না হয় বেশি চোখে পড়ছে... :no:


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  2. আব্দুল্লাহ্‌ আল ইমরান (৯৩-৯৯)

    এইসব লেখা পড়তে অসহ্য লাগে।নিজের প্রতি ঘেন্না হয় ক্যান আমি মানুষ।বাবাও না হয় মানলাম বাচ্চাদের সবচে' আপন না।একটা মা কিভাবে পারে ঠান্ডা মাথায় এ কাজ করতে।আমার বদ্ধমূল ধারনা এই মহিলা ওর মা হতে পারেনা।মায়েরা এমন হতেই পারেনা। 😡

    জবাব দিন
  3. সাইফ (৯৪-০০)
    আজকে মানুষেরই তো সবচেয়ে ভালবাসার অভাব। মানুষ আজ কাঙ্গাল। জগতের সকল কাঙ্গালদের গৃহপালিত করে পুষে রাখবে আরেক দল বিত্তবান কাঙ্গাল! ভালবাসার এই দেয়া-নেয়ায় হয়ত সম্পদের সুষম বন্টন ও হবে কিন্তু তা ভেবে আমাদের সামিউলের কী? সে বরং জেনেছে- প্রেম শ্বাশত ,প্রেম দীর্ঘজীবি। তাতে নিজের সন্তান বিসর্জন দিয়ে ইব্রাহিম না হতে পারলে ও আয়েশা হওয়া যায়। আর তাই ঈশ্বরকে জানাই ধন্যবাদ, আমার জননী আয়েশা নন।
    জবাব দিন
  4. সাইফ (৯৪-০০)
    মাতৃগর্ভে তোর জায়গা হয়েছিল হয়ত কিন্তু মায়ের আচঁলে তোর ঠাঁই হয়নি, এতে আমি খুব চমকে যাইনি। বরং নয়-নয়টা মাস সেই মায়ার আবরনে ঢাকা নিরাপদ ঘরে তুই কেমন করে কাটিয়েছিস আমার আজকাল খুব জানতে ইচ্ছে করে।

    আমাদেরো জানতে ইচ্ছে করে

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : তাইফুর (৯২-৯৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।