মুক্তিযুদ্ধ ভাবনা

(আমি প্রথমেই বলে নিতে চাই,যারা ভাবেন দেশটা যেমন চলছে চলুক আমি ভালো থাকলেই ভাল লেখাটা তাদের জন্য না।)

আমাদের একসময় নাম ছিল ভেতো বাঙালি।অনেক রক্ত আর অনেক প্রাণের বিনিময়ে আমরা এই কটাক্ষের উপযুক্ত জবাব আমরা দিয়েছিলাম পাকিস্তানী জেনারেলদের।তারা বুঝেছিল এই ভেতো বাঙালির তেজ।আমাদের দেশের অনেকে এই কথা শুনে বলবেন আরে ওতো তিরিশ বছর আগের কথা আল্লাহর কসম তাদের মুখে আমি স্যান্ডেলের বাড়ি মারি।আমার জন্ম ১৯৮৮,আমি যুদ্ধ দেখিনি গল্প শুনেছি।আমার বাবার কাছ থেকে।আর অনেক বই পড়ে।
আজ আমি খুব কিছু স্পর্শ কাতর জিনিষ নিয়ে কথা বলল যদি কেউ আমার কথায় দুঃখ পানন আগে থেকেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
আমরা অনেকেই পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অন্ধ ভক্ত,অনেকেই আছে অতিভক্ত।আমার কিন্তু ভক্তদের নিয়ে সমস্যা নেই সমস্যা হল অতিভক্ত আর অন্ধ ভক্তদের নিয়ে।
দুই একটা কাহিনী বলি তাহলেই বুঝতে পারবেন।এইবার ১৬ই ডিসেম্বরের ঘটনা।আমি আমার হোস্টেলের ডাইনিং বসে সকালের নাস্তা করছি আর আর্মি প্যারেড দেখছি।একজন অন্ধ ভক্ত আসলেন আর বললেন পাকিস্তানীদের সাথে যে যুদ্ধ হয়েছে এটা নাকি বাঙালিদের দোষ ছিল।আমার তখন মনে হল একে এখনি একটা প্রচন্ড মার দেওয়া লাগবে না হলে এই বিজয় দিবষে শহীদের আত্মা কষ্ট পাবে।আমি তাই করলাম।এরপর হোস্টেলে একটি মিটিং বসল সবাইকে নিয়ে আমাকে প্রশ্ন করা হল কেন মারলে আমি বললাম আমি বললাম তো কি করা উচিৎ ছিল। সবাই বলল বোঝাতে পারতে।আমি শুধু একটা কথাই বলেছিলাম এর মত বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্ররাই এবসময় যুদ্ধ করেছিল দেশের জন্য আর আর এদের অনেকেই আবার ছিল আলবদর এর মুল শক্তি।অনেকে আমাকে বলল এত ইমোশনাল নাকি হওয়ার কোন যুক্তি নেই।আপানেদের কাছে প্রশ্ন আমি কি ভুল করেছি যদি করি কেন???????????????
আর একটা কথা আমার বাবা একজন ইঞ্জিনিয়ার,তো একবার মাঝে যখন পদ্মা সেতুর কাজ চলছিল তখন আমাদের বাসায় একদিন আব্বুর এক জাপানী বন্ধি এসেছিল।তো আমার মামা-মামি আমেরিকাতে থাকার সুবাদে বাসায় প্রচুর আমেরিকান কসমেটিক ছিল বিশেষ করে সাবান।তো খাবার আগে হাত ধুতে যাবার সময় এস সাবানটা পরিবর্তন কের দিতে বলল আমি সাবান বদলে লাক্স সাবান দিলাম।পরে কথায় কথায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলান সাবান কেন বদলে দিতে হল?
সে শুধু একটা কথা বলেছিল”i cant make him rich who make us beggar”
তার সেই একটা কথা আমার কানে বাজে এই লোকটার জন্ম দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেক পড়ে তবুও তার ঘৃণা একটা তুচ্ছ আমেরিকান সাবানের উপর।
আর আমাদের কথা ভাবুন।আমার সেই তরুণীর কথা মনে পড়ছে যে ব্যানারে লিখেছিল “‘আফ্রিদি মেরি মি।”
সে কি জানত একাত্তরে কি জান্তব ভাবে তারাই মত মেয়েদের ধর্ষণ করে হত্যা করেছে পাকিস্তানীরা।আমার মনে হয় তাকে এগুলো কেউ কখনো বলেনি যদি সে না জানে এই ব্যর্থতার ভাগীদার কে????????????
আর আমরা যুদ্ধের এতগুরো বছর পরে কি পেয়েছি দুইটি পরিবারের নগ্ন রাজনীতির মাঝে বন্দি।সময় এসেছে ঘুম ভাঙার।আমার একটা জিনিষ মনে হয় আমাদের মত যারা নবীন তাদের দেশের কথা ভাবতে হবে।সবাই বলে রাজনিতি খারাপ কিন্তু কেউ এখানে এসে এর খারাপ দিক গুলো ঠিক করার চেষ্টা করিনা।আমাদের মধ্যে কে আছেন যিনি রাজনীতিবিদ হতে চান কিংবা তার সন্তানকে রাজনীতিবিদ বানাতে চান আমি জানি এর পরিমাণ নাই বললেই চলে।আমরা ধরেই নিছি রাজনীতি খারাপ।আমার কথা থেকে মনে হতে পারে রাজনীতিবিদ ছাড়া দেশের ভালো কেউ করতে পারেনা।
কথাটা আসলে ঠিক না আমাদের দেশটা প্রজাতন্ত্র আইনত কিন্তু আসলে তা না।আমরা চার বছরে একবার ভোট দিয়ে আমাদের কর্তব্যটুকু বেমালুম ভুলে যায়।আমার এলাকার এম.পি এর সাথে আমার জীবেনে কথা হয়নি।তাহলে আমি উনাকে কিভাবে ভরসা করব।আমাদের অনেকেই এই কাজটি করেন একটি বিশেষ মার্কায় ভোটদিয়ে আসছি অনেক বছর ধরে ।এতে হচ্ছে কি রাজনৈতিকদল গুলো ইচ্ছামত প্রার্থী দেয় কারণ তারা জানে ভোট আসবে মার্কা দেখে প্রার্থী দেখে নয়।আমাদের এই ধারা বন্ধ করেতে পারি।আর শুধু জনগণই পারে এটা বন্ধ করতে।
আর একটা কথা কি জানেন আসলে আমাদের দেশের মানুষ অনেক ভালো কিন্তু কিছু মানুষের কারণে আমাদের এই হাল।আমারই পারি এটা করতে
শুধু একটা জিনিষ বুকে রেখে
আমি নিজে ভাল থাকব আর অন্যকে খারাপ কাঝ করতে বাধ্য করবনা।
আমাদের পরিবর্তন হতে হবে।আর কতদিন এভাবে অর্থবর মত চুপটি কের সব সহ্য করে যাব।আমার মনে হয় এখন জেগে উঠার সময় কাজ শুরু
করতে হবে একদম ছোট পরিসরে,প্রথমে আপনি আপনার বাবাকে বুঝান আপনার সন্তানকে বোঝান।আপনি যে অফিসে চাকরি করেন আপনার কলিগদের বোজান,আপনার অধঃনস্তদের বোঝান।আপনারা সবাই শুরু করেন আমি স্বপ্ন দেখি আর বিশ্বাস করি একদিন দেশ পরির্বতন হয়ে যাবে।

২,০০০ বার দেখা হয়েছে

২৬ টি মন্তব্য : “মুক্তিযুদ্ধ ভাবনা”

  1. ইফতেখার আলম খান (৭৯-৮৪)
    আপনেদের কাছে প্রশ্ন আমি কি ভুল করেছি যদি করি কেন???????????????

    তুমি কোন ভুল করনি।

    i cant make him rich who make us beggar

    :salute:

    আমি স্বপ্ন দেখি আর বিশ্বাস করি একদিন দেশ পরির্বতন হয়ে যাবে।

    এই স্বপ্নটা আমিও দেখি, একই সাথে বিশ্বাসও করি যে পরিবর্তন আসবেই। আসতেই হবে।

    জবাব দিন
  2. অসীম (১৯৯০-১৯৯৬)

    সাদিক, তোমার লেখা পড়ে আমার নিজের ছাত্র জীবনের কথা মনে পরছে। আমার বর্তমান বিশ্বাস, জীবনে বিবর্তন সূর্য ওঠার মতো বাস্তব।আমার বয়সে হয়তো তুমিও অনেক ধৈর্য্যশীল হয়ে যাবে। কিন্তু তোমার বয়সে মেরেছ, সঠিক কাজ করেছ। :thumbup: :clap: আমার গুরু (প্রফেঃ আনিসুল হক, নিউরোলজিষ্ট) মনে করেন নিউ ইয়াং জেনারেশানের কাছে মুক্তিযুদ্ধের আবেদন ঐতিহাসিক ঘটনার যে আবেদন, তার চেয়ে বেশী নয়।আওয়ামি লীগের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এতোবেশী নাচানাচি তারা পজিটিভলি নেয়না। স্যারের দ্বিতীয় বাক্যটি সত্যের কাছাকাছি। কিন্তু তার কারন প্রথম বাক্য নয়।স্যারকে তোমার কথা বলব। এই বিষয়ে আমার চিন্তা নিয়ে একটা লেখা পোষ্ট করার চেষ্টা করব। ভালো থেক।

    জবাব দিন
        • রাহাত (২০০০-২০০৬)

          রায়হান ভাই, একটা দেশের জন্মের সময়, যার জন্ম একটা মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম এর মধ্যে দিয়ে, সেখানে সবারই অংশগ্রহন ছিল, দেশ শত্রুমুক্ত হবার পরে তাদের মাঝে রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিন্নতা আসতেই পারে, আর রাজনৈতিক মতাদর্শের পার্থক্য না থাকলে একজনের ভুল ধরার কোন সুযোগ থাকে না, তখন রাজা বলেছেন ওইটাই ঠিক টাইপ হয়ে যায়। রাজনৈতিক কেচালে যেতে চাই না, তবে এটুকু বলছি, যুদ্ধ একা তাঁরা করেন নি। history remembers the king এবং তাই বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির পিতা। কিন্তু উনার সাঙ্গপাঙ্গরা উনাকে নানাভাবেই মানুষের বাজে কথার সম্মুখীন করছে তাদের নানা কাজের মাধ্যমে। মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের যুদ্ধ, একা আওয়ামী লীগের নয়।
          বিএনপি অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজটি করেছে ওই ****বাচ্চাগুলারে সাথে নিয়া। তাদের নেতা যে জনসমর্থন তৈরী করে দিয়ে গিয়েছিলেন, সেইটুকুর শতভাগ পরিবর্তন করে সেখানে সব প্রজন্মের ঘৃণাকে জায়গা করে দিয়েছে দলটির নেতৃত্ব। সুদূর ভবিষ্যতেও ওদের সমর্থন করতে আমার রুচিতে বাধবে।

          জবাব দিন
          • রায়হান আবীর (৯৯-০৫)

            বোঝার ভুল আছে তোমার একটু। জামাতকে বাংলাদেশে রাজনীতির স্বীকৃতি দিয়ে আমাদের ধন্য করেছেন মহান রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। এবং তুমি হয়তো এটাও জানোনা যে, জামাত জিয়াকে গোলাম আজমের মতো শ্রদ্ধা করে। তোমার পরিচিত কোন জামাত নেতা থাকলে তাকে জিজ্ঞেস করে দেখতে পারো। আমি আমার নানাকে করেছি, মুহাম্মদের বাপ জামাতেরে বড় সড় নেতাও তার কাছ থেকেও শুনেছি। সুতরাং বিএনপির সাথে জামাতের সাথে ঐক্য খালদা জিয়ার ব্রেইন চাইল্ড না, বিএনপি সবসময়ই জামাত ঘেঁষা দল। এখন তো আর ঘষা ঘষি না, বিএনপির আড়ালে এখন যেই দল সেইটার নাম জামাত।

            খুব খিয়াল কইরা।

            জবাব দিন
          • মুহাম্মদ (৯৯-০৫)
            তাদের নেতা যে জনসমর্থন তৈরী করে দিয়ে গিয়েছিলেন, সেইটুকুর শতভাগ পরিবর্তন করে সেখানে সব প্রজন্মের ঘৃণাকে জায়গা করে দিয়েছে দলটির নেতৃত্ব।

            এখানে কি ঐ নেতা সাহেবের কথা বলা হচ্ছে না যে জামাতকে বাংলাদেশে পুনর্বাসিত করেছিল?
            জিয়ার রাজনীতিতে ধর্মীয় গোঁড়ামি ঢুকানোর কুকীর্তি বাঙালি আজীবন স্মরণ রাখবে।

            জবাব দিন
  3. এইরকম একটা কথা সেইদিন আমারেও একজনে কইছে। আমরা চারপাঁচ জনে ছিলাম, ধুইয়া দিছি।

    আর যেই পাকিজাত াাল গুলা এইরকম চিন্তা করে, এইগুলারে নিয়া আর কিছু বলার নাই, গদাম লাত্থি ছাড়া কিছুই দিবার নাই ওইগুলারে।

    জবাব দিন
  4. রায়হান আবীর (৯৯-০৫)

    তোমার লেখাটা ভালো লেগেছে। তবে তুমি যেই কয়েক ক্যাটাগরির পাবলিকের কথা বললা, তাদের চেয়েও ভয়ংকর একদল আছে। যারা মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করে, বাংলাদেশকে স্বীকার করে এখন বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানের মতো ধর্মীয় রাষ্ট্র বানানোর চেষ্টায় রত। তাদের থেকেও সাবধানে থেকো।

    জবাব দিন
  5. রাজীউর রহমান (১৯৯৯ - ২০০৫)

    পাকিস্তানের ক্রিকেট ম্যাচ জয়ের পর এক বন্ধু স্ট্যাটাস দিল " পাকিস্তান জিন্দাবাদ " । আমি সেখানে এই স্ট্যাটাস দেওয়া উচিৎ হয়নি বল্লে কয়েকজন তেড়ে এল খেলার সাথে রাজনীতি মেশান উচিৎ নয় বলে । সেখান থেকে সরাসরি চলে গেল ভারত বাংলাদেশের কি পরিমান ক্ষতি করছে, আওয়ামী দুঃশাসনে । ঐ শিবিড়গুলারে পুরা ধুয়ে ফেলছিলাম মনে আছে । এই শ্রেনীর সংখ্য ছাত্রশিবিড় নিয়মিতভাবে বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এই শালাদের ধরে :duel: :duel: দরকার ।

    তুমি যেটা করেছ শতকরা ১০০% সঠিক ছিল। Hats of.

    জবাব দিন
  6. রকিব (০১-০৭)

    আমি কিংবা আপনি একা কিছুই বদলাতে পারবো না; কিন্তু আমরা (সবাই মিলে) পুরোটা দেশটা আমূল বদলে দিতে পারি-- এটা আমি প্রবল ভাবে বিশ্বাস করি। যে জাতি মান্ধাতার আমলের থ্রি নট থ্রি নিয়ে মাত্র মাসখানিকের(বা তারো কম) নামমাত্র প্রশিক্ষণ নিয়ে একটি সুপ্রশিক্ষিত, সশস্ত্র সেনাবাহিনীকে মাটিতে মিশিয়ে দিতে পারে; তাদের জন্য কোন কিছুই অসম্ভব নয়।


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  7. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    জালো জালো, আগুন জালো।

    জয় বাংলা

    এইটা ছিল যুদ্ধের শ্লগান।
    জয় বংঅবন্ধু না।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রায়হান আবীর (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।