ক্যাডেট কলেজ প্রাচীর

১) একবার দুইজন ক্যাডেট রাতের অন্ধকারে কলেজের প্রাচীর টপকে গেল সিনেমা হলে সিনেমা দেখতে। হাউসে ফিরে আসার সময় তাঁরা হাউসের পেছনে এসে উঁকি মেরে দেখলো যে হাউসের সামনে হাউস বেয়ারা আর একজন স্টাফ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করছেন। ক্যাডেট দুইজন ভাবলো যে, চোরের মন পুলিশ পুলিশ না করে স্বাভাবিকভাবে হাউসে প্রবেশ করলে তাদেরকে কেউ কিছুই বলবে না। এই ভেবে তাঁরা হাউসের পেছন থেকে বেরিয়ে এসে হাউসে ডুকতে যাচ্ছিলো। এমন সময় স্টাফ তাদেরকে ডাক দিলেন।

সেই দুইজন ক্যাডেট স্টাফের কাছে ধরা খেতো না, যদি না তাঁরা তাদের পকেটে করে সিনেমা হলের টিকিটটা নিয়ে আসতো। স্টাফ তাদের পকেট চেক করে পেলেন আনন্দ সিনেমা হলের একটি টিকিট। বন্ধুদেরকে সিনেমা দেখে আসার প্রমাণস্বরূপ তাঁরা সেই টিকিটটি তাদের পকেটে রেখে দিয়েছিল।

 

২) একবার শীতকালে এক ক্যাডেট রাতে প্রাচীর টপকে কলেজের বাইরে গেল। ফিরতে ফিরতে তার ভোররাত হয়ে গেল। এমন অবস্থায় তখনকার ডিউটি মাষ্টার স্যার ফজরের নামাজ পড়তে যাবার সময় তাঁকে দেখে ফেললো। আর সবকিছু স্যার অনুধাবন করতে পেরে সেই ক্যাডেটকে বলল, তুমি রুমে যাও, আমি ফজরের নামাজটা পড়ে এসে তোমাকে দেখছি।

সেই ক্যাডেট হাউসের (মানে হলের) রুমে এসে কম্বলমুড়ি দিয়ে ঘুম দিল। স্যার উনার কথা মতো নামাজ পড়ে এসে জৈনক ক্যাডেটকে হাউস মাষ্টার রুমে ডাকলেন। ডেকে বললেন, রাতে তুমি কোথায় ছিলে?

জৈনক ক্যাডেট আকাশ থেকে পড়লো। বলল, স্যার আমি আমার বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলাম।

স্যার বললেন, কেন? তোমার সাথে না আমার ভোররাত্রে দেখা হলো। তুমি তো কলেজের বাইরে গিয়েছিলে। তাই না?

আবার আকাশ থেকে পড়ে ক্যাডেট বলল, না স্যার। আমি ঘুম থেকে এইমাত্র উঠে আসলাম।

স্যার বলল, তুমি বাইরে যাওনি? তোমার সাথে আমার ভোরে দেখা হল যে।

ক্যাডেট বলল, কই না তো স্যার। আপনার সাথে ভোররাত্রে আমার দেখা হবে কেন? আমি তো রুমেই ছিলাম।

স্যার রেগে গেলেন। কিন্তু স্যারের কিছুই করার ছিলো না। কারণ, স্যারের কাছে কোনো প্রকার প্রমাণ ছিল না সেসময়।

 

৩) উচ্চতায় ছোট হলেও তানিম ভাই একজন নিঃসন্দেহে ভালো দৌড়বিদ ছিলেন। উনি কলেজের বাইরে ঘনঘন যেতেন এটা-সেটা কিনতে। আমরা শুনেছি যে আমাদের কলেজ ক্যান্টিনের সাবান উনার পছন্দ হতো না। তাই সাবানের মতোন একটা সাধারণ জিনিস কেনার জন্যও তানিম ভাই রাতে প্রাচীর টপকে কলেজের বাইরে যেতেন।

একবার তানিম ভাই কলেজের বাইরে যেয়ে কেনা-কাটা করে ফিরে আসার সময় প্রাচীর টপকে কলেজের ভেতরে প্রবেশ করছেন। এমন সময় একজন নাইটগার্ড উনাকে দেখে ফেলে তাড়া করলো। নাইটগার্ডরা খাকি পোশাক, বুটজুতা, বাঁশি, আর হাতে একটা বল্লম রাখতো সেসময়। উনাদের সাইকেল অফিসে থাকতো।

তানিম ভাইয়ের পেছনে নাইটগার্ড বাঁশি বাঁজাতে বাঁজাতে দৌড়ে তাড়া করেছিলো ঠিকই কিন্তু ভাই বাতাসের গতিতে দৌড় দিয়ে ঊধাও হয়ে গেল। নাইটগার্ড কিছু বুঝে উঠতে পেরেছিলো কিনা সন্দেহ আছে।

-সমাপ্ত-

১,০৭৯ বার দেখা হয়েছে

৬ টি মন্তব্য : “ক্যাডেট কলেজ প্রাচীর”

মওন্তব্য করুন : আহমদ (৮৮-৯৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।