বাচ্চা ভয়ংকর…..কাচ্চা ভয়ংকর…..

বাচ্চাদের সাথে বড়দের বুঝে শুনেই চলা উচিত। বাচ্চাকাচ্চার সাথে কোন অবস্থাতেই টক্কর দেয়া উচিত না। বাচ্চারা তাদের সাথে বিটলামির প্রতিশোধ যে ভয়ংকরভাবে নেয় তা বলাই বাহুল্য। এমন অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই সবারই হয়েছে। আমার অভিজ্ঞতাগুলোই শুনুন তাহলেই বুঝবেন কেন বাচ্চা ভয়ংকর….কাচ্চা ভয়ংকর …. :

আমার ভাগ্নে তামিম এর বয়স ৫ বছর। গত সপ্তাহে তার খৎনা করা হয়েছে। সে ঐ অবস্থায়ই সমানে দৌড়ঝাঁপ করে যাচ্ছে।
আমার ছোটভাই আপাকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করল তামিমের খবর। আপা বললেন যে ভালই আছে কিন্তু দুস্টুমি কিছুতেই কমছে না। আমার ছোটভাইকে অনুরোধ করলেন যেন ওকে একটু ভয় দেখিয়ে দুষ্টুমি করতে মানা করে দেয়। তো আমার ছোটভাই তামিমকে ফোন করে বলল যে,” তামিম এই মোছলমানি কিন্তু বার্থডের মতো প্রতিবছর একবার করে করতে হয়। প্রতিবছর তোমার ঐটা একটু করে বড় হবে, আর কেটে ফেলতে হবে।” শুনে ভাগ্নে কিছুটা ভয় পেয়ে এখন তার আব্বা, নানা সবাইকে জিজ্ঞাসা করছে তাদের কতবার খৎনা হয়েছে , এবছর তাদের আবার কখন খৎনা হবে, তখনও কি এমন আয়েজন হবে কিনা । এখন বুঝুন কি অপ্রস্তত অবস্থা।

আমি কলেজ থেকে ছুটিতে বাসায় ফিরে দেখি আমাদের পাশের বাসায় এক ফুটফুটে ৬ বছরের বাচ্চা এসেছে। ছেলেটা আমাকে ইউনিফর্ম পরা দেখেছিল তাই আমার প্রতি তার কৌতুহল অনেক। প্রায়ই আমার আশে পাশে ঘুরে বেড়ায়। আমিও ওকে খুব আদর করতাম । ওর সাথে টুকটাক দুষ্টুমি করতাম। একদিন আমি ওকে বললাম, আসো দেখি তোমার হাত পাগুলো কি তোমার কথা শুনে নাকি ? ও বলল ওর সব হাত পা ওর কথা শুনে। আমি বললাম, “তোমার ডান হাত উঁচু করো” , ও করল। এবার ডান পা উঁচু করো। তাও করলো ও। এইবার আবার বললাম, “এবার তোমার বাঁ হাত উঁচু করো” , সে তাও করল। এখন সে দুইহাত ও ডান পা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে। এবার বললাম, ” এবার তোমার বাঁ পা টা উঁচু করো” । সে এবার আর কোন উপায় খুঁজে পেলনা এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা পা টাকে উঁচু করার । আমি বললাম “দেখেছো তোমার বাঁ পা টা তোমার কথা শুনে না” । সে কিছুটা কনফিউজড হয়ে তার মায়ের কাছে নালিশ দিল যে তার বাঁ পা টা কিছুতেই তার কথা শুনছে না । তার মা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেও লাভ হলো না । সে সবাইকে বলতে লাগল যে তার বাঁ পা টা কিছুতেই তার কথা শুনে না। তার বাবাও তাকে বোঝানোর চেষ্টা করল। কোন লাভ নেই। সে আকাশ পাতাল জুড়ে কান্না কেন তার পা তার কথা শুনছে না। পরে সবাই আমাকে রাগ করা শুরু করল কেন আমি এমন উদ্ভট আইডিয়া দিলাম তার মাথায় । তারপর সে আমাকে দেখলেই বলতো, এমনকি ঘুম ভাংগিয়েও, “দেখো না ভাইয়া, এখন আমার বাঁ পা টা আমার কথা শুনছে কি না ?” আমাকে পুরো খেলাটা আবার খেলতে হত। একসময় খেলতে খেলতে আমি ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা ।

১৮ টি মন্তব্য : “বাচ্চা ভয়ংকর…..কাচ্চা ভয়ংকর…..”

  1. সাকেব (মকক) (৯৩-৯৯)
    একসময় খেলতে খেলতে আমি ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা

    পুলাপাইন হইলো ফেরেশতা...তারা যখন তোর সাথে এই ধরণের আচরণ করে, তাইলে বুইঝা নে যে তুই কি? :-B


    "আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
    আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"

    জবাব দিন
  2. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    মান্নান ভাই, আপ্নের ভাগ্নেরে আমার হয়ে উইশ করে দিয়েন... B-)
    'হেপ্পি কাটিং সিরিমনি অফ দ্যা ফা ং ইন্সট্রুমেন্ট...' :party:


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।