(সিসিবির বাচ্চাদের জন্য সতর্কবানী: একটা ছবি ১৮+ হতে পারে। কোন আপত্তি থাকলে আমাকে জানালে আমি সরিয়ে ফেলব। )
প্রতি মাসের প্রথম রবিবার প্যারিসের মিউজিয়ামগুলো দর্শনার্থীদের জন্য ফ্রি। ফ্রি পেলে শুধু যে বাঙ্গালীই ঝাপিয়ে পড়ে তা নয়, বরং সারাবিশ্বই হুমড়ি খেয়ে পরে প্যারিসের জাদুঘরগুলোতে। তার মধ্যে লুভর মিউজিয়ামের লাইনটাই সবচেয়ে বড় নিঃসন্দেহে। এমন ফ্রি ডে তে নিরানন্দ বাসায় বসে কাটানোর কোন মানে হয় না। তাই মেঘলা আকাশ উপেক্ষা করেই বেরিয়ে পড়লাম। উদ্দেশ্য জগতখ্যাত লুভর মিউজিয়াম। এর কথা এতবার শুনেছি যে এটাকে প্যারিসের ক্বাবা বলেই ভেবে এসেছি। এর বিশালত্ব নিয়েও অনেক কাহিনী। কেউ কেউ বলে লুভর নাকি ১ মাসেও দেখে শেষ করা যায় না। তাই আমার প্রস্তুতি সারাদিনের জন্যই ছিল। তারপরও বেলা নয়টার সময়ই প্রবেশ পথে বিশাল লাইন। লাইন দেয়া বাঙ্গালীর ধাতে নেই। আর এই লাইন ধরে চললে ঢুকতে ঢুকতে বেলা ১১টা বেজে যাবে। তাই ছবি তোলার ভান করে লাইনে মিশে গেলাম। ভদ্রতা করে এক বুড়িকে মিষ্টি করে ভাঙ্গা ভাঙ্গা ফরাসীতে ব্ললাম যে ছবি তুলতে গিয়ে লাইন হারিয়ে ফেলেছি , যদি তোমার সামনে দাড়াই তাহলে তুমি কিছু মনে করবে কিনা।ভদ্রমহিলা উই উই বলে অনুমতি দিল। লুভরের সামনের সেই বিখ্যাত ক্রিস্টাল পিরামিডের ভিতর দিয়ে ঢুকে গেলাম। ভেতরে লাখো মানুষের ঢল। আমার প্রথম পছন্দ মোনালিসা, কারন বেলা বাড়লে মোনালিসার সামনে যে ভিড় হয় তা নাকি ঈদের আগে ট্রেনের ভীড়ের মতই। গাইড ম্যাপ ধরে ধরে ইটালিয়ার গ্যালারীতে গেলাম। মোনালিসার সামনে ইতিমধ্যে বেশ ভীড় শুরু হয়ে গেছে। এতবড় জটলা ইউরোপের কোথাও বিরল। এমনকি চিরায়ত “কোয়াইট ইউরোপিয়ান” রাও এখানে হট্টগোলের বাজার বসিয়েছে। লাইনের কোন বালাই নেই, এখানে মিষ্টি করে বললেও কেউ জায়গা দেবে না। তাই খাঁটি সদরঘাটের ভীড়ভাট্টা মনে করে ঠেলেঠুলে এগিয়ে গেলাম। একসময় দেখলাম ভীড় জয় করে চলে এসেছি মাথায়, আর আমার ৫ হাত দূরে দাড়িয়ে মিটিমিটি রহস্যময় হাসি দিচ্ছে সেই ভুরুহীন মেয়েটা। মেয়েটার রুপের যত গল্পশুনেছি, দেখে তেমন আহামরি কিছু মনে হলো না। আমি অবশ্য তার রুপের এমন ভক্তও নই, শুধু খ্যাতি শুনেই আসা। এরপর যখন ধীরে ধীরে অন্যান্য পেইন্টিং সময় নিয়ে দেখতে থাকলাম, মুগ্ধতা ততই বাড়তে থাকলো। একে একে ঘুরে ঘুরে দেখলাম ইটালিয়ান, গ্রীক, ঈজিপশিয়ান গ্যালারীগুলো। হারিয়ে গেলাম কখনও সেই প্রস্তরখন্ডের যুগে, কখনও সেই রেঁনেসার যুগে, কখনও সেই ক্রসেডের যুগে। ইতিহাস নিয়ে আমার জানাশোনা খুব কম, তাই জ্ঞানগর্ভ বিশ্লেষন আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আপন খেয়ালে গ্যালারী থেকে গ্যালারীতে ঘুরে ঘুরে মুগ্ধ বিষ্ময় নিয়ে দেখতে দেখতে শুধু এতটুকুই মনে হলো, মানুষ তিল তিল করে নিজের সন্ঞ্চিত জ্ঞান দিয়ে এই সভ্যতা গড়ে তুলেছে, হয়ত স্বেচ্চাচারিতার কারনে নিজেই আবার সব ধ্বংস করে দেবে কোন দিন।
কথা অনেক বলে ফেলেছি, এবার কিছু ছবি দেখি সবাই মিলে । আমি আর্ট ভালো বুঝিনা, শিল্পীদেরও খুব বেশি চিনি না, এমনকি সবছবির ঐতিহাসিকগুরুত্বও আমার অজানা , তাই আমার ভালোলাগা ছবিগুলোই দিলাম শুধু।
লুভরের প্রবেশ পথে ক্রিস্টাল পিরামিডের সামনে :
ভুরুহীনা সেই রহস্যময় হাসির রমনী আমার ক্যামেরায় বন্দী
ক্রুসিফিকেশন:
লা মর্ট ডি ক্লিওপেট্রা ( ক্লিওপেট্রার মৃত্যু)
রুফ পেইনটিং ঃ
আফটার ক্রুসিফিকেশন :
ফাইট বিটউইন ডেভিড & গোলিয়াথ :
স্ফিংস :
রুফ পেইনটিং :
ফারাও :
মমি coffins:
এখানেই মমি কফিনগুলো রাখা হতো :
মমি :
প্রথমে ছোট কফিন, তারপর বড় কফিন এভাবে একটার মধ্যে একটা রেখে সাজানো হতো মমি :
দেয়াল চিত্র :
ক্যাপিটাল ওফ আপানাডা : (এটা একটা খুঁটি )
উইংড বুল : পাখাওয়ালা ষাড় :
উইংড বুল : পাখাওয়ালা ষাড় :
ফিলিপ পটের শবযাত্রা :
উফফফ, ছবিব্লগ দেয়া অনেক কষ্ট । আজ এ পর্যন্ত পরে আবার কিছু যোগ করার চেষ্টা করব ।
দারুন।
ধন্যবাদ।
প্রথম, পইড়াই 😀
গুড :teacup: খাও এককাপ
সুন্দর! সুন্দর!!
বইয়ে পড়ে আর এভাবে নেটে ছবি দেখে- এটুকুতেই ল্যুভর যাদুঘরকে যতটুকু চেনা। আগ্রহ বাড়িয়ে দিলেন আরো। ভালো লাগলো ভাইয়া।
অফটপিকঃ ৪ নংটার মতো আরেকটা ছবি থাকার কথা; ঐটা তুলেন নাই? 😛
আমি তবু বলি:
এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..
সত্যিটা হলো লুভর মিউজিয়াম দেখার আগে ছবি নিয়ে একটু পড়াশোনা করে নিলে আসল মজা পাওয়া যায়। তখন হয়ত তুমি মিউজিয়াম থেকে বের হতেই চাইবে না 🙂
দারুন ........................ :clap: :clap: :clap:
লেখার বর্ণনা আর ছবিগুলো- সবকিছুই অসাধারণ লাগল মান্নান ভাই। :thumbup:
জীবনে একবার হইলেও ফ্রান্স যাইতে মন চায় (সুনী্লের "সুদূর ঝর্ণার জলে", "মেঘের দেশে কবিতার দেশে" দ্বারা অনুপ্রাণিত)। 😕
সুনীলের কোন বইয়ে একটা ফরাসী মেয়ে নিয়া ছিলো? জটিল ছিলো বইটা।
হ মেয়ে থাকলেতো সব কিছুই তোর কাছে জটিল লাগে। 😛
ওই তোর নাম্বার টা আমারে মেইল এ দে।
itsme@robin757.com
আমার মন্তব্যেই বই দুইটার নাম আছে রবিন।
সুনীলের মার্গারেট ( অথবা মার্গারিটা) র প্রতি মুগ্ধতা এখনও আছে। সুনীলের মত চোখ নিয়ে ফ্রান্স দেখতে পারলে আরো ভালো লাগত নিশ্চয়ই।
মুগ্ধতা রেখে গেলাম........মান্নান ভাই
থ্যান্কু রশিদ।
মোনালিসারে সবাই এত্ত ভালো পায় ক্যান আমি আজ অব্দি বুঝলাম না!! রুফ পেইন্টিং আর মমি বেশি ভাল্লাগসে।
হমম, মোনালিসা আসলে সমালোচকের দৃষ্টিতে সুন্দর। এর সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা তার রহস্যময় হাসিতে। তবে এরচেয়ে অনেক ডিটেইলস ছবি ছিল সে সময়ে।
ছবি দেখে ভালো লাগলো মান্নান ভাই। সময় পেলে আরো কিছু দিয়েন।
লুভ্যর মিউজিয়াম দেখতে মঞ্চায়। 😀
দেখবে নিশ্চয়ই কোন একদিন।
দারুন লাগলো ভাইয়া ছবি আর বর্ণনা 🙂
ধন্যবাদ । ভালো থাকো
১৮+ ছবি কোনটা? :))
ভালো লাগসে...
ঐটা যখন খুঁজে পাওনা, তাহলে তোমার বয়স ১৮ হয়নি 😛
দারুন
পালটে দেবার স্বপ্ন আমার এখনও গেল না
ধন্যবাদ ফয়েজ ভাই।
:))
বাঙ্গালী ট্রিকস 😛
Ekbar france jaite monchay 🙁
chobi deikha iccha ta aro baira uthlo......
mobile hoia jamu 13 tarikh theke....English chara upay nai....
ব্যাপার না, সিসিবির সাথে থেকো ।
মান্নান ভাই, ছবির মানের সাথে আপোস করেন নাই মনে হচ্ছে-ছবি লোড হইতে ব্যাপক সময় লাগছে... 🙁
আমার জন্য ডিসক্লেইমার দেখে প্রথমে ছবি দেখতে চাই নাই... ;;)
তাও সাহস করে দেখলাম... B-)
একটাই ১৮+ ছবি আছে, তাই না?
ক্রুসিফিকেশন
ঐ ছবিতেই একমাত্র ১৮ জনের বেশি মানুষ আছে... :-B :dreamy: ;))
ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ
:khekz: =)) :goragori: :boss: :boss: :boss:
হাহাহাহা =)) =))
১৮+ ছবিতে মানুষ যত কম হয় ততই ভালো 😛
:gulli2: :goragori: :pira:
=)) =)) =)) :khekz: :khekz: :khekz:
:khekz: :khekz: ঐ ছবিতেই একমাত্র ১৮ জনের বেশি মানুষ আছে… :khekz: :khekz:
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
=)) =))
খুব ভাল লেগেছে
:clap:
ফ্রান্স ইটালি এই দেশ গুলোর ব্যপারে আমি এম্নিতেই এক্তু মোহগ্রস্থ,আপনার লেখা পড়ে আর ছবি গুলো দেখে আরও আসক্ত হলাম।
কখন যে যাওয়ার সৌভাগ্য হবে!
আশা পূর্ন হোক ।
সুনিলের
পড়ার পর থেকেই ফ্রান্স এ যাওয়ার আমার সেই ইচ্ছা যে কবে পূরণ হবে?
ছবি দেখে
মুগ্ধ
মুগ্ধ
মুগ্ধ ......
নিশ্চয়ই আশা পূর্ন হবে কোন একদিন।
:thumbup: মান্নান। আমাদের লুভর দেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
"মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"
বস, যাই দেখি সিসিবির সাথে ভাগাভাগি করেই দেখি।
:thumbup:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
:thumbup:
চমৎকার !!
বোস্টন ফাইন আর্টস মিউসিয়ামে গিয়েই আমি মুগ্দ্ধ, ল্যুভর তো আরো বস :boss:
যাইতে মন্চায়।
চমৎকার !!
ঢাকা মিউসিয়ামে গিয়েই আমি মুগ্দ্ধ, ল্যুভর তো আরো বস :boss:
যাইতে মন্চায়।
ময়নামতি বৌদ্ধবিহারের পাশের মিউজিয়ামে গিয়াই আমি মুগ্ধ হইছিলাম, ঢাকা মিউজিয়ামে গেলেতো মারাই যামু, আর লুভর তো ডিরেক্ট বেহেশ্ত আফটার ডেথ 😀
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
=)) =)) =))
রংপুর museum e "শিবলিঙ্গ" পাথরখানা দেখে আমাদের সবাই মুগ্ধ হয়েছিল , মাগার ঐ কালেকশন পুরা লুভর এ নাই :)) :))
চমৎকার !!
National মিউসিয়ামে গিয়েই আমি মুগ্দ্ধ, ল্যুভর তো আরো বস
যাইতে মন্চায়।
আহা ক্লিওপেট্রা ! 😛
ধন্যবাদ মান্নান ভাই।
---------------------------------------------------------------------------
বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।
ক্লিওপেট্রার জন্য মন কেমন করে বুঝি ??
চমতকার লেখা। :thumbup:
পড়ে খুব ভাল লাগল। ছবিগুলো এখনো ডাউনলোড হচ্ছে।
চ্যারিটি বিগিনস এট হোম
ভাইয়া আমার এখানে হাইস্পীড নেট, তাই আসলে বুঝে উঠতে পারিনি এগুলো এই পেজকে কতটা স্লো করে দিবে। আমি ছবিগুলো রিসাইজ করেই দিয়েছি, আরও ছোট করলে হয়ত এত ভালো বোঝা যেত না। আর যেহেতু ছবিব্লগ তাই ছবিই মূল সাবজেক্ট। তবু পেজ স্লো হওয়ার জন্য দু:খিত।
আসলে ইতিহাস জানলে ছবিগুলোর প্রতি আলাদা আকর্ষন হয়। মোনালিসা জনপ্রিয় হবার অন্যতম কারন বোধহয় ব্যক্তি লিউনার্দো।
সুনীলের বইয়ে পড়ছিলাম ভার্সাই প্রাসাদে কোন আলাদা টয়লেটের জন্য রুম বরাদ্দ ছিল না অথচ সারা প্রাসাদে কত শত রুম। এই কালচারটা নাকি ফরাসীরা ইংরেজদের কাছ থেকে আমদানী করেছে। ভার্সাই দেখতে গিয়ে গাইডকে জিজ্ঞেস করেছিলাম এ ব্যাপারে তখন সে এক্টা ঘর দেখিয়ে দিল। মনে হয়েছিলো নতু্ন সংযোজন।
শুধু বাংগালিরাই ইতিহাস বিকৃত করে না, চান্স পেলে অন্যরাও ....
“Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
― Mahatma Gandhi
তবে আপু শ্যাতু গুলো আসলেই খুব সুন্দর। ঐটা নিয়ে না হয় আরেকটা ছবিব্লগ হবে । আপনিও কিছু শেয়ার করুন না।
এরকম একটা বিল্ডিং এর সামনে স্টিল গ্লাসের ক্রিস্টাল পিরামিড, অথচ কি সুন্দর মার্জ করে গেসে :thumbup:
আর ভেতরের জিনিসগুলো তো ক্ল্যাসিক, ভিঞ্চি কোডের কথা মনে করায়া দিলো 😛
দারুন পোস্ট মান্নান :thumbup: :thumbup:
সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!
হমমম, খাঁটি কথা বলেছেন। ইতিহাস ও আধুনিকতার এমন সংমিশ্রন আসলেই নান্দনিক।