নিজের কিছু বিব্রতকর মূহুর্ত …..

লুঙ্গীর ভেতরে বন্দী :

একবার আমাদের বাসার কাছে মসজিদে জুম্মার নামায পড়তে গেলাম। সামনের লোকটা লুঙ্গী পরে নামায পড়ছে। গরমের সময় বলে মসজিদের সবগুলো ফ্যান সর্বোচ্চ বেগে ঘুরছে আর বাতাসে সামনের লোকের লুঙ্গী ফুলে ফুলে উঠছে। আমি কোন মতে দ্রুত নামাজ শেষ করার ধান্ধায়। আমি সিজদা থেকে উঠছি, আর সামনের লোকটা সিজদায় যাওয়ার জন্য বসতে যাচ্ছে। আমি সিজদা থেকে ওঠার সময় আমার মাথা আটকে গেলো সামনের লোকের ফুলে ওঠা লুঙ্গীর মধ্যে । আমি উপরে তাকিয়ে যে দৃশ্য দেখলাম …….

প্যারেন্টস-ডে তে বিব্রত :

আমার বাসা ছিল যশোর । তাই সব প্যারেন্টস-ডেতে আমার আব্বা-আম্মা রংপুরে আসতে পারতেন না ব্যস্ততা আর বিশাল দূরত্বের কারনে। আব্বা আম্মা না আসলে আমার মামা ছিলেন রংপুরে, উনি আসতেন। এবং মামা আসলেই বেশি মজা হতো। তো মামা তার সদ্য বিয়ের পরে এক প্যারেন্টস-ডে শালী ও মামিকে নিয়ে আসলেন। মামার শালী সম্ভবত আমাদের একব্যাচ বা দুই ব্যাচ জুনিয়র ছিল।

তো আমি মামার শালীর সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে জিজ্ঞেস করলাম, “তোমরা কয় ভাই বোন ?”
সে বলল, ” আমরা তিন বোন”
আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, ” মামি, তুমি আর আরেকজন কে ?” “সে কোথায় ?”
সে বলল, “ছোটটা তিন মাস বয়স”
বলে সে একটু লজ্জা পেল এবং অনেকক্ষন পরে বলল, “আসলে এটা একটা একসিডেন্ট ছিল”।
আমি একথা শোনার সাথে সাথে হাসি চেপে রাখতে না পেরে ফিক করে হেসে দিলাম । তারপরের মূহুর্তগুলো বড়ই বিব্রতকর মূহুর্ত…..

কবিতা আবৃতি:

আমার ক্যাডেট কলেজে ভাইভার ভেন্যু ছিল আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ । আমাকে মেডিকেলের জন্য ডাকা হলো। সাধারনত মেডিকেলের জন্য একজন একজন করে ভেতর ডাকা হচ্ছিল। পরে সময় স্বল্পতার কারনে আরেকজন থাকতেই আমাকে ডাকা হলো। আমি ভেতরে ঢোকার পর দেখলাম আরেকজনের মেডিকেল চলছে। আমাকে নিয়ে এক মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট চোখ, দাঁত, নাক কান এগুলো দেখতে থাকলো।রুমের আরেকপাশে দেখলাম আরেক ক্যান্ডিডেটকে ভবেশদা দিগম্বর করে তার বিশেষ বস্তুটার ওজন করছে আর মেডিক্যাল অফিসারের নির্দেশে হাতপা নাচিয়ে সে নজরুলের কবিতা আবৃতি করছে “কুলি বলে এক বাবুসাব তারে ঠেলে দিলে দুরে” । নজরুলের কবিতার এই দৃশ্য দেখলে স্বয়ং নজরুলও কবর থেকে উঠে আসতেন।

৫৯ টি মন্তব্য : “নিজের কিছু বিব্রতকর মূহুর্ত …..”

  1. একবার তারাবী নামাজ পড়তে গেছি। আমার পাশে এক বুড়া লোক অনেক্ষন বসে বসে নামাজ পড়ছে। ভাবলাম, বয়স্ক মানুষ , ২০ রাকাত টানা দাঁড়িয়ে পড়তে পারবে না এজন্যে বসে পড়ছে।
    তো ১২/১৪ রাকাতের পর হঠাৎ দেখলাম ঐ লোক বেড়িয়ে চলে যাচ্ছে। ভাবলাম আর পারছেনা মনে হয়।

    তো কেউ চলে গেলে তার শুন্যস্থান পুরন করতে হয়। সেটা পুরন করার জন্যে আমার পাশের লোকটা আমার কাছাকাছি আসতে গিয়ে দেখলো এতক্ষন বুইড়া যেখানে বসে ছিলো সেখানে পানির মতো কি যেনো। আরো ভালো করে দেখার জন্যে সে নিচু হয়ে নাকটা কার্পেটের কাছে নিয়ে শুঁকলো, তারপর হঠাৎ নোয়াখালীর ভাষায় বললো, 'ইয়াল্লা ! হেতে মুতি চলি গেছে......'
    :khekz: :khekz: :khekz:

    জবাব দিন
  2. সাকেব (মকক) (৯৩-৯৯)
    অ্যাকিসডেন্টগুলার কথা মনে পইড়া গেলো

    নিজের লেনে অ্যাকসিডেন্ট করলে তাও মন্দের ভালো...
    অন্য লেনে ঢুইকা পড়লেই কিন্তু কাম সাবাড়! 😛


    "আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
    আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"

    জবাব দিন
  3. সাকেব (মকক) (৯৩-৯৯)

    মান্নান বন্ধুরে,
    জব্বর পোস্ট দিসিস...মারহাবা...

    আমি সিজদা থেকে উঠছি, আর সামনের লোকটা সিজদায় যাওয়ার জন্য বসতে যাচ্ছে। আমি সিজদা থেকে ওঠার সময় আমার মাথা আটকে গেলো সামনের লোকের ফুলে ওঠা লুঙ্গীর মধ্যে ।

    তাও ভালো, বসে ঘুইরা চইলা যাওয়ার সময় লুঙ্গির মধ্যে মাথা ঢুকাস নাই... ;))


    "আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
    আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস"

    জবাব দিন
  4. তাইফুর (৯২-৯৮)

    প্রথম ঘটনাতে (লুঙ্গীর ভেতরে বন্দী) মান্নানের চাইতে তো লোকটারই বেশী বিব্রত হওয়ার কথা।


    পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
    মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : তানভীর (৯৪-০০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।