কেনিয়াতে ওবামা জ্বর

কেনিয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম কোগোলোতে লোকজন ভোট দিচ্ছে বারাক ওবামাকে । না চমকানোর কিছু নেই এটা সত্যিকারের ভোট নয়, প্রতিকী ভোট মাত্র। কিন্তু সারা কেনিয়া জুড়ে উৎসাহ উদ্দীপনা কোন অংশেই যুক্তরাস্ষ্ট্রের চেয়ে কম নয়। এখানে অলরেডী ওবামার জয়ের খবর পৌঁছে গেছে। সারা কেনিয়া জুড়ে আনন্দের ঢেউ। রাস্তায় রাস্তায় মিষ্টি, পানীয় বিতরন চলছে। যেন ঘরের ছেলেই নির্বাচনে জিতেছে। আজ টিভিতে শুনলাম কেনিয়ার অনেক শিশুর নাম নাকি ওবামা রাখা হচ্ছে । সমস্যায় পড়েছে আসল ওবামা পরিবার। এতদিন কেনিয়াতে শুধু তারাই ছিল ওবামা পরিবার । এখন পুরো কেনিয়া জুড়েই ওবামা দিয়ে ভরা। কোগোলোর মতো ছোট্ট গ্রাম এখন রীতিমত পর্যটন কেন্দ্র। এর আগে কেনিয়ার সরকার একজন সাংবাদিককে ডিপোর্ট করেছে এ্যান্টি ওবামা কার্যকলাপের কারনে। এয়েন কেনিয়ার জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। এমনকি কেনিয়া সরকার আগামীকাল ‘ ওবামা ডে ‘ হিসাবে জাতীয় ছুটি ঘোষনা করেছে। সাথে সাথে আমিও পেলাম অনেক বেলা করে ঘুমিয়ে ডলার কামাইয়ের সুযোগ । কে বলে খালি বাঙ্গালীই হুজুগে ?

কিসুমোর রাস্তায় ওবামার বিজয়ের উল্লাস

২০ টি মন্তব্য : “কেনিয়াতে ওবামা জ্বর”

  1. সায়েদ (১৯৯২-১৯৯৮)

    আমার এখানেও ওবামা জ্বর।
    কিন্তু লাইবেরিয়ানদের নিজস্ব কথার প্যাঁচে পড়ে 'ওবামা' হয়ে গেছেন 'ওমাবা'।
    সকাল থেকেই স্থানীয়দের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে "ওমাবা" "ওমাবা"..... 😛 😛


    Life is Mad.

    জবাব দিন
  2. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    ওবামা ইফেক্টে পুরা বিশ্ব উদ্বেলিত। কেনিয়ায় অবশ্য অনেক অনেক বেশী। আপনার ব্লগ আর ছবি পইড়া তো তাশ্কি খাইলাম। এরা সরকারী ছুটিও আদায় কইরা ফেলছে! উন্নয়নশীল দেশের এই এক হুজুগ। চান্স পাইলেই সরকারী ছুটি। ওরা বুঝে না যে ছুটি না থাকলেও আনন্দ করা যায় এবং উন্মাদনা প্রকাশ করা যায়।
    কেনিয়ানদের এই উন্মাদনা অবশ্যই ইতিবাচক। কারণ, এতে উন্নয়নশীল দেশের প্রতি ওবামার দায়বদ্ধতা বাড়বে। যারা তাকে এতো ভালোবাসলো, এতো উৎসাহ দিলো তাদের জন্য কি ওবামা কিছুই করবে না।
    কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট Mwai Kibaki-র কথা শোনার পর কি ওবামা পাষান থাকতে পারবে:

    The victory of Senator Obama is our own victory because of his roots here in Kenya. As a country, we are full of pride for his success.

    ওবামার পাশাপাশি সকল কেনিয়ানদেরও অভিনন্দন। তাদের আহ্বান জানাই ফাটায়া উৎসব করতে। আগামীকাল যেন কেউ ঘরে না থাকে। ওদের বোঝা উচিত উন্নত দেশের সহযোগিতা ছাড়া উন্নয়নশীল দেশগুলো কখনই উন্নত হতে পারবে না। এই লক্ষ্যেই তারা উৎসব করবে এই কামনা করি।

    জবাব দিন
    • মান্নান (১৯৯৩-১৯৯৯)

      আসলে আফ্রিকার লোকজন বরাবরই উৎসব প্রিয়। যেকোন ছুতোয় উৎসবটাই এদের কাছে মূল । কি নিয়ে , কেন উৎসব এসব কোন ব্যাপার না। গতমাসে দুইটা পাবলিক হলিডে ছিল , দুই প্রেসিডেন্টের নামে 😀
      আমি লোকমুখে শুনেছি কেনিয়ানরা নাকি পাবলিক হলিডে চেয়েছিল একেবারে শুক্রবার পর্যন্ত । অথচ যুক্তরাষ্ট্রে ভোটের দিনেও ছুটি থাকে না !!!

      জবাব দিন
  3. মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

    বাঙালি আর কেনিয়ানদের হুজুগের মধ্যে আসলেই মিল দেখা যায়। ম্যাকেইনের পক্ষে কিন্তু বাংলাদেশের হুজুগের একটা উৎস ছিলো, যদিও সেটা পরোক্ষ। কিন্তু এটা নিয়েই অনেক বাংলাদেশী প্রবাসী ম্যাকেইনরে ভোট দিছে বলে মনে হয়।
    হুজুগটা ম্যাকেইনের মেয়ে "ব্রিজেট"-কে নিয়ে। ১৯৯১ সালে ম্যাকেইনের স্ত্রী "সিন্ডি" বাংলাদেশে আসছিলো। মাদার তেরেসা পরিচালিত একটা এতিমখানায় দুইটা মেয়েকে দেখে তার মায়া হয়। দুজনেরই চিকিৎসার দরকার ছিলো। দুজনকেই তিনি আমেরিকায় নিয়ে যান। তাদের চিকিৎসার পর একজনকে ম্যাকেইন পরিবার অ্যাডপ্ট করে, আরেকজনকে তাদের নিকটাত্মীয়দের মধ্যে কেউ একজন অ্যাডপ্ট করে। তাদের মেয়ের নতুন নাম দেয়ে ব্রিজেট। সিদ্ধান্তটা মূলত সিন্ডির ছিলো। কিন্তু ম্যাকেইন তাতে খুশী হয়।

    এই মেয়ের জন্ম ১৯৯১ সালেই, তার মানে বর্তমানে তার বয়স ১৭ বছর। তার লাকের কথাটা চিন্তা করেন। কোত্থেকে কই গেলো। এজন্যেই তো অনেকে তাকে মাদার তেরেসার আশীর্বাদে ধন্য এক অলৌকিক শিশু বলে অভিহিত করে।
    সাউথ ক্যারোলাইনায় প্রচারণার সময় ব্রিজেটের কালো চামড়া নিয়ে ম্যাকেইনকে কথা শুনতে হয়েছিলো। কিন্তু ম্যাকেইন পরিবারের কেউই দুষ্ট লোকের কথায় কান দেয়নি। ম্যাকেইন পরিবারের সবাইকে এজন্য :salute:
    আর এইটা নিয়া কিছু বাংলাদেশীর হুজুগকেও তাই মাইনা নিলাম।
    bridget
    মাঝের কালো মেয়েটি ব্রিজেট
    mccain
    ভাই-বোনদের সাথে বাবার পিছনে ব্রিজেট। শেষের কালো মেয়েটি।

    জবাব দিন
    • মান্নান (১৯৯৩-১৯৯৯)

      পশ্চিমাদের ( এবং আফ্রিকাতেও ) এই একটা জিনিসটা খুব ভালো লাগে। ওরা খুব সহজেই বাচ্চাকে দত্তক নিতে পারে। এবং এতে ওদের কোন হীনমন্যতা নেই। ওরা ঐবাচ্চাকে নিজের ফ্যামিলি মেম্বারদের মতই ভালবাসে। এমনকি সম্পত্তি শেয়ারের ক্ষেত্রেও। এক্ষেত্রে বাঙ্গালীরা অনেক নিচুমনা বলেই আমার ধারনা ।

      জবাব দিন
      • অর্চি (৯৯-০৫)
        এক্ষেত্রে বাঙ্গালীরা অনেক নিচুমনা বলেই আমার ধারনা ।

        আসলে ব্যাপারটা একটু অন্যভাবে চিন্তা করা উচিত। ম্যাকেইন তার মেয়েকে দিয়ে কিছুটা হলেও পাবলিসিটি করিয়ে নিয়েছে। আর এই তথ্যটাও অনেক কম মানুষই জানেন যে তার আরেকটা মেয়ে ১৫ বছর বয়সে pregnant হয়ে গিয়েছিল...so every coin has its two sides...

        জবাব দিন
        • মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

          দত্তক নেয়ার সময় কি ম্যাকেইন জানতেন যে ২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট ইলেকশনে ব্রিজেটের মাধ্যমে একটু পাবলিসিটি করিয়ে নেয়া যাবে?
          তার আরেকটা মেয়ে ১৫ বছর বয়সে প্রেগন্যান্ট হয়ে গেলে সমস্যাটা কোথায় বুঝলাম না!
          আমার মনে হয়, এসব দিক দিয়ে যে ইউরোপ ও আমেরিকানরা অনেক উদার তাতে কোন সন্দেহই নেই। আমাদের সমাজও একদিন সেরকম হবে। সেদিকে তাকিয়ে আছি।

          জবাব দিন
            • মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

              আহসান ভাই, আমি কিন্তু সেটা বোঝাতে চাইনি। আমি বোঝাতে চেয়েছি, ম্যাকেইনের মেয়ে ১৫ বছর বয়সে প্রেগন্যান্ট হয়ে গেলে স্বয়ং ম্যাকেইনের চরিত্র বা তার ইলেকশন করার যোগ্যতাতে কি সমস্যা তৈরী হয়?
              ১৫ বছর বয়সে প্রেগন্যান্ট হওয়া তো অবশ্যই যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ, সেক্ষেত্রে সে সন্তানও নিতে পারে না আবার অ্যাবরশনও করতে পারে না। কারণ ২৩ সপ্তাহের পর অ্যাবরশন করাকে আমরা অনৈতিক মনে করি। অবশ্য প্রেগন্যান্ট হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে জানতে পারলে অ্যাবরশনে কোন সমস্যা নেই।

              জবাব দিন
            • মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

              আর হ্যা, আমার খুব ক্লোজ কারও ক্ষেত্রে যদি এমন ঘটে (ধরুন বোন কিংবা কন্যা) সেক্ষেত্রে আমি কি করতাম?
              প্রথম কথা হলো, আমি তাকে আগে থেকেই সতর্ক করতাম যে এই বয়সে প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়া ঠিক না। এর অপকারিতা সম্পর্কে বলতাম।
              আর যদি অ্যাকসিডেন্টালি হয়েই যায়, তাহলে তাকে সর্বান্তকরণে সহায়তা করতাম। ২৩ সপ্তাহের আগে হলে অ্যাবরশনে সহায়তা আর ২৩ সপ্তাহের পরে জান পেলে নবজাতকের পুনর্বাসন কিংবা লালন-পালনে সহায়তা। অনেকটা "জুনো" সিনেমার মতো।

              জবাব দিন
              • আসলে ব্যাপারটা একটু

                অন্যভাবে চিন্তা করা উচিত। ম্যাকেইন তার মেয়েকে দিয়ে কিছুটা হলেও পাবলিসিটি করিয়ে নিয়েছে। আর এই তথ্যটাও অনেক কম মানুষই জানেন যে তার আরেকটা মেয়ে ১৫ বছর বয়সে pregnant হয়ে গিয়েছিল…so every coin has its two sides…

                এই দুইটা দুই রকম ব্যপার। একটার সাথে অন্যটার তুলনা করা ঠিক না।

                মুহাম্মাদের কথাই ঠিক আছে।

                ম্যাকেইনের মেয়ে ১৫ বছর বয়সে প্রেগন্যান্ট হয়ে গেলে স্বয়ং ম্যাকেইনের চরিত্র বা তার ইলেকশন করার যোগ্যতাতে কি সমস্যা তৈরী হয়?

                মেয়ে দত্তক নেয়া বা মেয়ের প্রেগনেন্ট হউয়ার সাথে প্রেসিডেন্ট ইলেকসন করার কোন সম্পর্ক খোজা ঠিক হবে না।

                জবাব দিন
        • মান্নান (১৯৯৩-১৯৯৯)

          টিন এজারদের প্রেগন্যান্ট হওয়াটা আমেরিকার একটা সামাজিক সমস্যা এবং খুবই কমন সমস্যা।তাই বলে প্রেগন্যান্ট টিনএজ মেয়েকে সমাজ অচ্ছুৎ করে দেয়না। আমাদের সমাজে এমন হলে তার পরিনতি আরো ভয়াবহ হত।সবাই সেই মেয়েকেই দোষারোপ করত এবং মেয়েকে হয়ত শেষপর্যন্ত আত্মহত্যাই করতে হতো। এক্ষেত্রে আমাদের সমাজ আরো অনেক বেশি নির্মম।

          আমাদের সমাজে কাউকে দত্তক নিলেও সমাজ তাকে প্রতিটা ক্ষেত্রে মনে করিয়ে দেয় সে একটা দত্তক সন্তান এবং সেই পরিবারেও তার অধিকার সীমিত। অথচ এরা কখনও উল্লেখও করেনা ( এমনকি ভুলেও না )যে তার আরেকটি সন্তান দত্তক। আমি আমার এক ম্যানেজারকে অনেক চাপাচাপি করার পর সে স্বীকার করে যে তার দুইটা বাচ্চা দত্তক এবং একটা তার নিজের বাচ্চা। ঠিক একই রকমভাবে এরা সৎভাইকে নিজের ভাইই মনে করে। সৎভাইবোন কনসেপ্টাই এদের কাছে অনেক ভোঁতা।

          জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মুহাম্মদ (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।