অস্ট্রেলিয়ার টুকিটাকি

অস্ট্রেলিয়ায় আসা অবধি পঁচিশ কুড়ি মাইলের মাঝে ড্রাইভ করছি বটে; কিন্তু কোন কিছুতেই ঠিক জুত পাচ্ছি না! পুরো সিডনী জুড়ে চাপা চাপা রাস্তাঘাট; সেই সাথে মরার ওপর খারার ঘায়ের মত একটু পরপর রাউন্ড এ্যাবাউট! এদের ড্রাইভারস সিটখানা গাড়ির উল্টো দিকে, রাস্তায় গাড়িও চলে উল্টো দিকেই। দুই দশকেরও বেশী সময় ধরে পথের ডানদিক বরাবর ড্রাইভ করে এসেছি তাই উল্টো রাজার দেশে এসে খানিক বিড়ম্বনা যে হচ্ছেনা তা নয়। আতিক আমাকে মুখে কিছু বলেনা ঠিকই কিন্তু মার্কিনীদের পিন্ডি চটকায় মনেমনে! ক্যানবেরাতে বেড়াতে যাবার দিন আমার আলাভোলা বরটি গাড়িতে বসেই ঘোষণা দিল যে, সে আজ শোফার ড্রিভন কারে চড়ে রাজধানীতে যাবে! আমি যতোই বুঝাই যে তোমার শোফারটি তিনশো মাইল দূরের নগরে যাবার জন্য তৈরি নয় কিন্তু কে শোনে কার কথা! জিপিএসে ঠিকানা সেঁটে, দুটো লার্জ কফির অর্ডার দিয়ে আতিক হৃষ্টচিত্ত পাশে এসে বসে। উপায়ান্তর না দেখে চোখে শেয়ালপন্ডিতের মত চশমা এঁটে, সিডিতে শ্রীকান্তকে চাপিয়ে স্টিয়ারিঙে হাত রাখি! চুইং গাম চিবোতে চিবোতে ভেতরকার ধুকপুকানি আড়াল করবার চেষ্টা করি।

সিডনী থেকে ক্যানবেরা অবধি পথটি ছবির মত সুন্দর। কখনো সবুজ ভ্যালির জমিনে সাদা ভেড়ার পাল আবার কখনো সমুদ্রতীরে নীল আকাশে গাংচিলের মেলা দেখে উচ্ছসিত হয়েছি! আতিক আলগোছে আমার বাঁ হাত ছুঁয়ে গলা ছেড়ে গান ধরেছে। আমেরিকান শোফারটি যে আতিককে আশাহত করেনি বুঝা গেল তার আদর আপ্যায়নে। আধাপথ পেরিয়ে লুকআউট পয়েন্টে গাড়ি থামিয়ে দুই বিসি-জিসির বেশ একখানা মুড়ি চানাচুর পারটি হয়ে গেল। পথে যেতে যেতে ক্যাঙ্গারু চোখে পড়েনি একটিও। সাদা-কালোর ছোপওয়ালা অস্ট্রেলিয়ার গরুর পাল দেখে ছোটবেলার ডানো আর রেড কাউ এর টেলিভিশন বিজ্ঞাপনের কথা মনে পড়ে গেল!

লাল পাহাড়ের লুকআউট পয়েন্ট

লাল পাহাড়ের লুকআউট পয়েন্ট

অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরা হলো পৃথিবীর পরিকল্পিত নগরীর একটি। আমেরিকান স্থপতি দম্পতি ওয়াল্টার বার্লি গ্রিফিন এবং ম্যারিয়ন মাহোনি গ্রিফিন ১৯১৩ সালে এই নগরীর পরিকল্পনা করেন। ক্যানবেরার হ্রদগুলোকে কেন্দ্র করে গ্রিফিন এই রাজধানী নগরীর ভাবনা শুরু করেন। এই শহরের গুরত্বপূর্ণ সরকারী ভবনগুলো নানারকম জ্যামিতিক ছাঁচের; কোনটি বৃত্তাকার, কোনটি ষড়ভূজ আবার কোন কোনটি বা ত্রিকোনাকৃতির! লুকআউট পয়েন্টগুলো থেকে রাজধানী শহরের এই ভবনসমূহ বেড়ে লাগে দেখতে!

লাল পাহাড়ের লুকআউট পয়েন্ট

লাল পাহাড়ের লুকআউট পয়েন্ট

আমি মূলতঃ ফলাহারী মানুষ হলেও আমার বরটি খেতে এবং খাওয়াতে ভালবাসেন। ছুটির দিনে বন্ধুদের ডাকি খেতে কিংবা নিজেরাই খেতে যাই এদিক ওদিক! কদাচিৎ হটপটে খাবার নিয়ে ধারে কাছের সৈকতে বসে জীবনের সেলিব্রেশন দেখি। গ্রোসারীতে গেলে দেখি কেউ কেউ তিনটে পারসিয়ান শশা কিংবা আধখানা ক্যাবেজ কিনছে, আমি ব্রকলি বা টমাটিলোর পুরো ক্রেট নিয়ে হাঁটতে শুরু করি একাই। উইকডে তে বড় সাদামাটা খাবার আমাদের; দুপুরবেলা ফুলকপির রোস্টের সাথে পারসিমন বা কমলালেবু খাই তৃপ্তির সাথে, রাত্তিরে লাউ কুমড়ো আলুর ঘণ্টের সাথে হয়তো কলা বা স্ট্রবেরি-কিউয়ির কিউব থাকে ডিনারে। খাবারের চ্যানেল ঘেঁটে নানারকম বিনসের সু্যপ বানাই, কখনো বিলাসিতা করতে চাইলে নারকোল সু্যপের সাথে চারটে সলটিন ক্র্যাকারের চমক! সপ্তাহ শেষে শনিবারের ব্রানচে বেশ একটা উৎসব উৎসব ভাব চলে আসে। বৃহষ্পতিবার সকাল থেকেই মনে মনে খাবারের মেনু্য ঠিক করি যদিত্ত শুক্রবার রাতের মাঝে আয়োজনের পরিবর্তন হয় অনেকাংশেই। আমার মতো আধা নিরামিষাশী মানুষ শনিবারের দুপুরে কব্জি ডুবিয়ে কাচ্চি খেতে বসে রায়তা আর রেশমী কাবাবের সাথে। পুরো সামার জুড়ে অর্গানিক সব্জীর বাগান করেছিলাম দুজনে মিলে। টমেটো, মরিচ, জুকিনি, রেইনবো শার্ড, বেল পেপার আর সীমের সীমাহীন ফলনে বেশ একটা চাষী বৌ চাষী বৌ ভাব চলে এসেছে মনে! গাছের লাউপাতায় শর্ষে আর ইলিশ মাছ মুড়ে ইলিশ পাতুরি বানিয়েছিলাম প্রথমবারের মত! পার্সলিতে নারকোল ক্রীম আর লেবুর রসে জারিয়ে আস্ত রেড স্ন্যাপার ব্রয়েল করলাম গেল ছুটির দিনে, সাথে ওয়াইল্ড রাইস আর ভিয়েতনামিজ পুদিনা পাতার চাটনী। আমার ভোজনবিলাসী বরটি খেতে খেতে বলেছেন, তিন পুরুষের পূণ্যে এমন বৌ জুটেছে কপালে!

 ওম নম নম নম!


ওম নম নম নম!

ম্যারিকার সবকিছুই প্রয়োজনের চাইতে একটু যেন বেশীই বড়। আট লেইনের রাস্তাঘাট আমাদের কাছে নস্যি অথচ এখানে আমার গাড়িখানা দুই লেইনের রাস্তায় খাবি খায় হামেশাই! মার্কিন দেশে ম্যাকডোনাল্ডসে গেলে কাগজের গেলাসে যে সোডা পাওয়া যায় সেটির ওজন বত্রিশ আউন্স, সেটিতেও তিয়াশ না মিটলে দোকানে বসে আনলিমিটেড রিফিল পেতে পারো সারাদিন ফ্রিতে। এখানে আমাদের তুলনায় প্রায় সবকিছুই আকারে খানিক ছোট হলেও দাম যেন খানিক বেশীই। আমাদের দেশে শুয়ে বসে থাকা অলস লোকেদের কাউচ পটেটো বলে। এখানে লোকজন বিচের তীরে উদোম শুয়ে চিপস আর গ্যালন গ্যালন সোডা সাবাড় করে বলে এরা দিনদিন আলু নয় আলুর বস্তাতে পরিণত হচ্ছে বলে মনেহলো!

সিডনী হারবার ব্রীজের উত্তর কোণে যখন আমরা পৌঁছুলাম তখন ঝলমলে সকাল। ঐ তো অপেরা হাউস; চারদিকে অকারণ উৎসব মুখরতা! পথে যেতে যেতে আতিক তার স্বভাবজাত আমুদে কন্ঠে হারবার ব্রীজের ইতিকথা বয়ান করছিল। হারবার সেতুটির একটি আদুরে নাম আছে, কোটহ্যাংগার! কোটহ্যাংগার আবার নিক হয় নাকিগো? আর্চের মত আকার বলে ব্রীজের এই নামকরণ, আতিকের চটপট উত্তর!
১৯৩২ সালের ঊনিশে মার্চ এনএসএল এর প্রিমিয়ার জন টি ল্যাং হারবার ব্রীজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন; যদিত্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরুর আগেই ঘটে যায় অপ্রীতিকর একটি ঘটনা। নিউ গার্ড প্যারামিলিটারী গ্রুপের ক্যাপটেন ফ্রান্সিস ডি গ্রুট হঠাৎ ঘোড়ায় চড়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। তারপর কেউ কিছু বুঝে ফেলার আগেই ডি গ্রুট সাহেব তার হাতের তলোয়ারটি দিয়ে ঘচাং করে ফিতা কেটে ব্রীজের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। ডি গ্রুট তার সংক্ষিপ্ত ভাষণে বলেন, একমাত্র নীল রক্তের অধিকারী মানুষই এই ব্রীজ উদ্বোধনের দাবীদার! বক্তৃতা শেষে গ্রুট সাহেবকে গ্রেফতার করা হয়, পরে কাটা ফিতা জোড়া লাগিয়ে আবার জন ল্যাং হারবার ব্রীজের উদ্বোধন করেন। আইনশৃংখলা ভাংগার অভিযোগে ক্যাপ্টেন ডি গ্রুটের পাঁচ ডলার জরিমানা হয়!
সেতুটি উদ্বোধনের দিন হাজার মানুষের মেলা বসে হারবার ব্রীজে। শুরুতে ব্রীজের টোল বাবদ মোটরগাড়ি প্রতি ছয় পেন্স এবং প্রতি ঘোড়ার গাড়ি পিছু তিন পেন্স আদায় করা হতো। গাড়ি প্রতি এখন সেই চার্জ বেড়ে হয়েছে আড়াই থেকে চার ডলার যদিত্ত এখন ব্রীজে ঘোড়ার গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ! হারবার ব্রীজে এখন সাতটি গাড়ির লেইন, একটি বাস লেইন, দুটো ট্রেনের লাইন, একটি বাইকার্স লেইন এবং একটি পায়ে হাঁটার পথ রয়েছে।

হারবার ব্রীজ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে প্রকাশিত ডাকটিকিট

হারবার ব্রীজ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে প্রকাশিত ডাকটিকিট

মাদার্স ডে তে আতিক রংবাহারী ফুলপাখি লতাগুল্ম জড়িয়ে একখানা সাইকেল বয়ে নিয়ে এলো বাড়ি। ছোটবেলায় ট্রাইসাইকেলের পর আমার বাইসাইকেলে চড়া হয়নি কখনো। তাই এমন অদ্ভুতুরে উপহার পেয়ে খুশী হওয়ার বদলে মিনমিন করে বলি, সাইকেল দিয়ে কী করবো আমি; চালাতে তো পারিনা! মাথায় লাল-মেরুনের একখানা হেলমেট পরাতে পরাতে সে বললো, আজ পারোনা তো কী হয়েছে, কাল নিশ্চিত পারবে! এই বয়েসে হাড়গোর ভাংলে উপায় আছে? আমার কর্ম নয় এই সাইকেল চালানো! কিন্তু কে শোনে কার কথা! মিনিট দশেকের মাঝে ঘটিবাটি নিয়ে সে যাত্রা করলো এডমন্ডসন মেমোরিয়াল পার্কের উদ্দেশে! বাইরে বেশ মিঠেকড়া একটা রোদ উঠেছে, সপ্তাহান্তের অলস সকাল! পার্কিং লটে নেমে ফল-ইন গোছের কিছু একটা করিয়ে সামরিক কায়দায় ছোটখাট একখানা বক্তৃতা দিয়ে নিল সে। আমি বাইম মাছের মতো মোড়ামুড়ি করতে করতে এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করি সাইকেলে, আতিক হাপাতে হাপাতে ছোটে আমার সাথে সাথে। দরদর করে ঘামছে সে, বোতল খুলে জল ঢালে গলায়। ঢাল বেয়ে তরতরিয়ে নামলেও ওপরে উঠতে গিয়ে প্রাণ ওষ্ঠাগত আমার। আতিক ক্রমাগত সাহস দেয়ার সাথে সাথে বকুনিও কম দেয়না। গেল বছর আমেরিকাতে জগ করতে গিয়ে ডাম্বেল সহ পড়ে গিয়ে এক সপ্তাহ শুয়ে থাকতে হয়েছিল; এখন সাইকেল সহ পপাতধরণীতল হলে হাসপাতালে যেতে হবে নিশ্চিত। আতিক কথা শুনবার পাত্রটি নয়; পারলে কালই আমাকে নিয়ে বাইক চালিয়ে হারবার ব্রীজে সূর্যোদয় দেখতে যায়! আমি গাল ফুলিয়ে মুখে বরফজলের ঝাপটা দিয়ে ছলছল চোখে বসে থাকি গাড়িতে। আমার সাইকেলের দরকার নাই, আমি বাড়ি গিয়ে ঘুমাবো! আতিক ট্রেইলে একা একাই দৌড়ঝাঁপ ছুটোছুটি করে; সাইকেলের বেল বাজায়। আমি পাত্তা দেইনা।

কতক্ষণ সময় পেরিয়েছে আমি ঠাওর করতে পারিনা, ক্লান্তিতে আমার চোখ বুজে এসেছিল। হঠাৎ রিয়ার ভিউ মিররে দেখতে পাই দুটি এসপ্রেসো হাতে আকর্ণবিস্তৃত মনভুলানো সেই হাসি!

আমার প্রশিক্ষকের সাথে

আমার প্রশিক্ষকের সাথে

৬,৪১৪ বার দেখা হয়েছে

১৯ টি মন্তব্য : “অস্ট্রেলিয়ার টুকিটাকি”

  1. জিয়া হায়দার সোহেল (৮৯-৯৫)

    ''কখনো সবুজ ভ্যালির জমিনে সাদা ভেড়ার পাল আবার কখনো সমুদ্রতীরে নীল আকাশে গাংচিলের মেলা দেখে উচ্ছসিত হয়েছি!''
    এত সুন্দর প্রকৃতি বর্ণনা দিয়ে যে লিখা শুরু হয়েছে, ভেবেছিলাম সে লিখা অনেক দূর যাবে। ক্যানবেরা থেকে যে কখন রওনা দিয়েছ টের পাইনি। আপু একটু একটু করে পুরো একটা ভ্রমন লিখা লিখে ফেল। অনেক সুন্দর লিখা হয়েছে আপু, আতিক ভাই অনেক হ্যান্ডসাম!! :clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :clap: :clap:

    জবাব দিন
    • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

      কত গল্প যে জমে আছে, জিয়া! বড়সড় কলেবরে লিখতে যে ধৈর্য এবং নিষ্ঠার প্রয়োজন হয় সেটির ঘাটতি আছে আমার তাই লেখা আর এগোতে পারে না। বহুদিন পর ব্লগবাড়ি তে এসে তোমাকে দেখতে পেয়ে ভাল লাগলো।

      আশাকরি কুশলে আছো। আমার ভালবাসা জেনো।

      জবাব দিন
  2. অনেকদিন পর সাবিনা তোর লেখা আবার পড়লাম। মনে হচ্ছে নিজেই ঘুরে আসলাম ক্যানবেরা। অনেক রোমাঞ্চ, অনেক প্রেম,অনেক মমতায় ভরা এই জীবন থাকুক সবসময়। তোদের জন্যে রইলো আমার প্রাণ ভরা দোয়া।

    জবাব দিন
  3. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    দেখেছো, কেমন চাতক পাখির মত অপেক্ষা করছিলাম গোগ্রাসে তোমার লিখা গিলবার জন্য?
    সিসিবির ঘোর দুর্দিনেও এক লিখাই পাচ শতাধিকবার ভিউড, ২৩ বার শেয়ারড!!!
    ভাবা যায়???

    সবসময় যে মুগ্ধতা ছেয়ে থাকে পড়বার পরেও দীর্ঘ সময় ধরে, তা-ই ছেয়ে আছে এখনো।
    ভাল থাকো ডাউন-আন্ডারে, এখনকার মতই সবসময়েই.........


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
    • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

      সিসিবি দেখছি ঘুমিয়ে পড়েছে। চলো সবাই মিলে একে আবার জাগাই!
      তোমার ফাটাফাটি প্রেমের কবিতা দিয়েই না হয় শুরু হোক, ভাইয়া! গতকাল ইসিএফ অস্ট্রেলিয়ার ফোরামে তোমার কবি বন্ধু মিল্টন হাসনাত ভাইয়ার সাথে কথা হলো। তিনি আমাদের নিউক্যাসেলে যাবার জন্য নিমন্ত্রণ করেছেন। আমিও এই সুযোগে তাঁকে সিসিবিতে লিখতে আমন্ত্রণ জানালাম। ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী!

      ভাল আছো আশাকরি, ভাইয়া। সিসিবিতে সবাই মিলে তোমার নেতৃত্বে আসন্ন আড্ডার অপেক্ষায় রইলাম।

      জবাব দিন
  4. চাষী বউ ...আফসোস হস্ছে. কেন যে ঝর বাদলার সেই রবিবারে গেলামনা আপনাকে দেখতে....খাবারের নাম গুলো করুন চোখে আমার দিকে তাকাচ্ছে ....তবে আমাদের Sydney r সব রাস্তাই কিন্তু চাপা দুই লেনের না হম ..ম. ম ...? প্রকৃতির এমন বেহিসেবী সৌন্দর্য আর কোথায় আছে বলেন !আতিক ভাইকে অনুরোধ আপনাকে আরো ও মুগ্ধ করুক আর আমরা যে চাতক পাখির মত বসে থাকি আপনার লেখা পড়ার জন্য ,সেই আমাদের তৃষ্ণা মেটাতে আপনি আরো বেশি বেশি কলম ধরেন .... লাভ ইউ আপা!

    জবাব দিন
    • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

      🙂 🙂 🙂 🙂 🙂 🙂

      গেল সপ্তাহের ঝড়জল বড় কোণঠাসা করে রেখেছিল আমাদের, জানো! বৃষ্টি নিয়ে আমার আহাতাহা টাইপের কোন ইমোশন নেই ; বৃষ্টি এলে আমার বড় মন কেমন করে! আমার বরটির আবদারে সেদিন খিচুড়ি আর নারকোল ক্রীমে হাঁস রেঁধেছিলাম খুব আয়োজন করে; সাথে ঝালঝাল জুলিয়েন সালাদ। সানরুমে পাতা টেবিলে বসে খেতে খেতে দেখি বাতাসের তোড়ে উল্টে পরেছে পারগোলাতে রাখা সাকুলেন্টের পট, ডিংডং বাজছে উইন্ড চাইম! আমরা বড় একখানা ছাতা নিয়ে হুডিতে মাথা ঢেকে বৃষ্টি দেখতে বেড়িয়েছিলাম খানিক। দমকা হাওয়া এসে ছাতাটি উড়িয়ে নেবার উপক্রম হলে ফিরে এলাম বাড়ি।

      তোমাকে দেখবার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি, রত্না!

      জবাব দিন
  5. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    বহুদিন পর তুমি সময় করে ব্লগে এলে সাবিনা, এজন্য ধন্যবাদ। লেখা বরাবরেও মতই সাবলীল আর প্রাঞ্জল, লেখায় ছবি ফুটে ওঠে। আর আমি ২০০১ সালে সিডনী, ক্যানবেরা আর পার্থ সফর করেছিলাম। এ জন্যই হয়তো বা ছবিগুলো আরও কিছুটা স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠলো। খুব ভালো লাগলো তোমার এ লেখাটা। কি কারণে এক দিনেই ৬২৩ বার পঠিত আর ২৬ বার শেয়ারকৃত, তা সহজেই বোধগম্য।
    লাল পাহাড়ের লুকআউট পয়েন্টে আমিও গিয়েছিলাম। ওদের সংসদ চলাকালীন সংসদ নেতা আর বিরোধীদলীয় নেতার মাঝে সংসদীয় বিতর্ক শোনার সৌভাগ্যও হয়েছিলো। তিনটি শহরকেই ভিন্ন ভিন্ন কারণে ভালো লেগেছিলো।
    culinary সম্বন্ধীয় তোমার লেখাগুলো বরাবরই খুব আকর্ষণীয় হয়, এ কথাটা বোধকরি আগেও তোমার এ সম্বন্ধীয় কয়েকটা লেখা পড়ে জানিয়েছিলাম। এ লেখাতেও যতটুকু culinary বর্ণনা দিয়েছো, তা এক কথায় সুপার্ব।
    আশাকরি সময় করে আরেকটু নিয়মিতভাবে তোমার নতুন জায়গা ও জীবনের অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করে এ আসরকে সমৃদ্দধ করে যাবে।

    জবাব দিন
    • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

      🙂 🙂 🙂 🙂 🙂 🙂

      প্রকৃতির উপুরঝুপুর লালিত্যে ডুবে আছে অস্ট্রেলিয়া, ভাইয়া! ছোটবেলার পোস্টারে দেখা ছবিগুলো সুযোগ পেলেই চোখের সামনে মূর্তমান হয়। সমুদ্র সৈকতগুলো জগতের সব রূপসুধা নিয়ে ডাকাডাকি করে নগরবাসী মানুষ দের; আছে পাথুরে পাহাড়, জলের ঝাপটা আর কী যে অদ্ভুত নৈঃশব্দ্য চারপাশে! নগরবৈচিত্র্যে আমাদের শহর থেকে অনেকাংশেই অন্য রকম সিডনী।

      আপনার অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণকাহিনী পড়বার অপেক্ষায় রইলাম। অনেক ধন্যবাদ পড়বার জন্য!

      জবাব দিন
  6. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    আপনাদের আম্রিকান দের মজা। রাস্তাঘাট বড়ো বড়ো তাই বড়ো সড়ো গাড়ি রাখতে পারেন, চালাতে পারেন। অথচ ইউ কে তে বেশিরভাগ মানুষ চালায় হ্যাচব্যাক। বড়ো গাড়ি যে চালায় না তা নয়। তবে কম।
    আমি নিজে চালাই ছোট এক টা নিসান মাইক্রা। হাতে একটু টেকাটুকা আসলে কিনবো বিএমডাব্লিউ এর সিরিজ ওয়ান এর হ্যাচব্যাক বা হোন্ডার হাইব্রিড।
    আমার ধারণা ছিল অস্ট্রেলিয়ার রাস্তা বড় হবে। তবে আমার ধারণা অন্তত ইউ কের রাস্তার চাইতে বড় হবে। ইউরোপিয়ানরাই লনডনে এসে রাস্তা দেখে নাক সিটকায়।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
    • মুজিব (১৯৮৬-৯২)

      সময় পেলে MK তে এসো, রাজীব। এখানে রাস্তা গুলো অনেক চওড়া আর সোজা। শুধু কিছুদূর পর পর রাউন্ড-এবাউট, এটাই অনেকের কাছে যা একটু ঝামেলা মনে হয়।
      গোপনে বলি, আমিও কিন্তু লন্ডনের রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় একটু আধটু নাক সিটকাই ... 🙁


      গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

      জবাব দিন
      • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

        যাবো ভাইয়া।
        মিলটন কেইনস অনেক আগে তা প্রায় ৭/৮ বছর আগে গেছিলাম।
        হ্যা ওখানে রাস্তাঘাট অনেকে প্রশস্ত।
        নতুন করা শহর, এজন্যই হয়তো।

        লন্ডনের রাস্তা এমনিতেই চিপা। দুইপাশে সাইকেল লেইন কইরা আরো চিপা করছে।
        আর বছর জুড়েই কাজ চলতেছে রাস্তায়।


        এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

        জবাব দিন
      • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

        রাউন্ড এবাউট এ লন্ডনের বাইরে ঝামেলা কম।
        আউটার লন্ডনে ড্রাউভার রা ভদ্র।
        লন্ডনের ড্রাইভার দের বড় অংশই ইতর।
        আপনি নিঃসন্দেহে টের পান এটা লন্ডনে আসলে।


        এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

        জবাব দিন
  7. মুজিব (১৯৮৬-৯২)

    বরাবরের মতই দারুণ লেখা সাবিনাপু ! :boss: :boss:
    কোনদিন বিলেতে বেরাতে এলে তোমাকে আমার শহরে নিয়ে আসবো। এখানে আমরাও রাস্তার বাম দিক দিয়ে গাড়ি চালাই, এবং পুরো শহরটা জুড়ে আছে হাজারের উপরে রাউন্ড-এবাউট। আমি অবশ্য এটাতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছি, তাই অন্য শহরে ড্রাইভ করার সময়ে কেমন জানি কেমন জানি লাগে।


    গৌড় দেশে জন্ম মোর – নিখাঁদ বাঙ্গাল, তত্ত্ব আর অর্থশাস্ত্রের আজন্ম কাঙ্গাল। জাত-বংশ নাহি মানি – অন্তরে-প্রকাশে, সদাই নিজেতে খুঁজি, না খুঁজি আকাশে।

    জবাব দিন
  8. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    এ বাড়ির ঠিকানা ভুলে জাননি দেখে আনন্দিত হলাম আপু 😉

    লেখা বরাবরের মতই সুস্বাদু 😛


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।