অডিও ব্লগঃ নিশিরাতে কে গান শোনাতো

যে চোখ দিয়ে তোমার আঁধার রাতে জোনাক পোকাদের উৎসব দেখো সেই চোখ দুটো দেখতে বড় ইচ্ছে করে, অধরা! দুপুরের রোদের ঝিলিক কমে আসতেই রংবাহারী প্রজাপতিদের উড়ে ঘুরে বেড়ানোর বাহানা দেখি আমার কাঁচের জানালায়!

লালচে খয়েরী আর বাদামী নীলের পাখনা মেলে তারা উড়ে বেড়ায় পাতায়, ডালে আর ফুলের রেনুতে। বাগানের কোণে ফুটে থাকা ক্রিসেনথিমামের শোভা দেখতে দেখতে দূরদ্বীপবাসিনীর একজোড়া চোখ ভাসে আমার চোখের আয়নায়। গোলাপ, বেলি আর আ্যমারান্থের ভীড়ে সবার অগোচরে নীলচে সাদায় যে ফুল ফুটেছিল ঘাসবনের কোল ঘেঁসে; সে অনাঘ্রাতা ফুলের শোভা অন্য সবার চোখ এড়িয়ে গেলেও আমার পৃথিবী জুড়ে সে সুরভিত সুগন্ধি বৈ অন্য কিছু ছিলনা!

হংসগ্রীবায় পিঠছাপানো চুলে মেঘের বিজুলিতে মায়াময় মুখখানি তার! একদিন ভুরুর ধনুতে প্রশ্নবোধক চিহ্ন এঁকে সেই মায়াবতী বললো, ‘আমায় নেবে মালী?’ তার আনত কাজল চোখে রাজ্যের মিনতি ছিল, ছিল সকল সমর্পণের আকুলতা; থর থর কামনা না থাকলেও স্পর্শসুখের ব্যাকুলতা ছিল সেই উপরোধে।

‘কারনেশন আর ডেইসী সরিয়ে আমায় রাখবে সাজিয়ে দীঘির স্বচ্ছতোয়া জলের ছায়ায়?’ জানতে চাইল সে। আমার বড় ব্যস্ততা তখন। এ্যালাটুনা থেকে সুন্দরবন, সুন্দরবন থেকে চাহা পাহাড়ের চূড়োয় উঠছি কী ভীষণ উল্লাসে। জীবনের সমস্ত অর্জনের পথে সামান্য বিসর্জনের ঢাক যদি বাজাতেই না পারলাম; তুচ্ছ বনফুলকে পায়ে মাড়িয়ে পথের আলে যদি চলতেই না শিখলাম তবে আকাশ ফুঁড়ে বড় হবো কী করে!

তার অশ্রুভেজা তৃষ্ণাটুকু এক ফুৎকারে উড়িয়ে দিলাম অনন্ত নক্ষত্রবিথীর ছায়ায়। সামান্য একটি ঘাসফুলকে রজনীগন্ধা ভেবে বুকের গহীনে রোপন করলেও তাকে জল হাওয়ার চাঁদোয়ায় মুড়ে রাখবার মত বিলাসিতার সময় আমার ছিলনা!

আজ জীবনের সব কোলাহল থেমে যাবার পর আমার ক্ষয়ে যাওয়া চোখ দুটো হারিয়ে যাওয়া নীলচে সাদার সেই ঘাসফুলটিকে খোঁজে যে হারিয়ে গেছে কোন সুদূরে!

৪,৪১৯ বার দেখা হয়েছে

৪৩ টি মন্তব্য : “অডিও ব্লগঃ নিশিরাতে কে গান শোনাতো”

  1. মোস্তফা (১৯৮০-১৯৮৬)

    দেখলাম শব্দবীজে নীল কষ্ট বুনে বুনে কত যত্নে করেছ ছোট্ট পরিপাটি বাগানখানা। অই বাগানের সবুজ ঘাসে আমি আলতো করে পা রাখলাম, যাতে হেমন্তে ঘাসের বুকে যে নীল ফুল ফুটেছে, অসতর্ক পদচারণায় তা যেন মাড়িয়ে না ফেলি।

    অভিভূত হলাম! অল্পই লিখো, তবে এমন যত্ন করে। তোমার মনের গভীরে যে অন্তঃসলিলা লিরন্তর বয়ে যাচ্ছে, তার প্রতিটি স্পন্দন অনুভব করো দীর্ঘ সময় নিয়ে। তারপর তুলে আনো স্নিগ্ধ আঁজলা ভরে। ঠিক ততটুকু, যতটুকু আঁজলায় স্বচ্ছ হয়ে ভাসে।

    গোলাপ, বেলি আর আ্যমারান্থের ভীড়ে সবার অগোচরে নীলচে সাদায় যে ফুল ফুটেছিল ঘাসবনের কোল ঘেঁসে; সে অনাঘ্রাতা ফুলের শোভা অন্য সবার চোখ এড়িয়ে গেলেও আমার পৃথিবী জুড়ে সে সুরভিত সুগন্ধি বৈ অন্য কিছু ছিলনা

    এই বাক্যটি একটু দেখ। চমৎকার এগুচ্ছিল, কিন্তু শেষটায় এসে কূলে ভিড়তে গিয়ে কেমন জানি বেঁকে গেল। তুমি অবহেলে ফুটে ওঠা একটি ফুলের কথা বলতে চেয়েছ। অথবা ফুলের রূপকে কোন এক অধরা মাধবীর কথা। ঘাসের বুকে ফোঁটা এই 'ফুল'টিকে অনুপম করে প্রথম আমাদের দৃষ্টিগোচর করান জীবন বাবু,

    হেমন্তে ঘাসে নীল ফুল ফোটে —
    হৃদয় কেন যে কাঁপে,
    'ভালোবাসতাম' — স্মৃতি — অঙ্গার — পাপে

    সেখানেও সেই জীবনানন্দীয় বিষণ্নতার ছোঁয়া মাখা ফুলটি হৃদয় কাঁপায়। ফুলটি কি 'ভালবাসতাম' শব্দটিরই প্রতিরূপ? লক্ষ্য কর 'ভালবাসি' নয়—অর্থাৎ, বর্তমান নয় অতীত। ফুলটির সুরভি নেই, আছে হৃদয় খুঁড়ে পুরনো বেদনা জাগাবার অপ্রতিরোধ্য বিস্ময়কর ক্ষমতা!

    আজ, এতটুকুই। (সম্পাদিত)


    দেখেছি সবুজ পাতা অঘ্রানের অন্ধকারে হতেছে হলুদ

    জবাব দিন
    • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

      🙂 🙂 🙂 🙂

      গতকালই জানেন, প্রথমে অপর্ণা সেন এবং পরে কল্যাণ রায়ের কন্ঠে বনলতা সেনের দুটো ভিন্ন ইংরেজী অনুবাদের পাঠ শুনছিলাম মন্ত্রমুগ্ধের মত। জীবনানন্দ পাঠ করবার চাইতে গলা কাঁপিয়ে কাঁপিয়ে মুখস্ত করেছি বেশী বোধকরি। তাঁকে ধারণ করবার বদলে তাঁকে অলংকার বানিয়ে পরবার প্রচেষ্টা বেশী ছিল বলেই আজো জীবনবাবুকে বুঝতে পারিনা বহুলাংশেই।

      দিনশেষে হুকোমুখো হ্যাংলা হয়ে আনমনে টুংটাং বাজাচ্ছিলাম ঘরে বসে। চিত্রা সিং এর এই গানের বিষণ্ণতা আমায় ছুঁয়ে গেল বলতেই হবে। কেবল অডিওটুকু দিলে কেমন খালি খালি বোধ হয় , তাই তর্জনীতে টুক টুকাটুক শব্দ তুলে রিদমিকে লিখে ফেললাম বাক্য ক'টি। সামান্য কয়েকটি চরণ লিখবার শানে নজুল এটুকুনই।

      আপনার পাঠের ব্যাপ্তি মনে ঈর্ষা জাগায় আমার। কী চমৎকার করেই না জীবনানন্দের নীল ফুল অথবা 'ভালবাসতাম' টুকুর গল্পটি বললেন আপনি, ভাইয়া!

      আমার লেখায় আপনার মন্তব্য আমায় সম্মানিত করে। :hatsoff:

      জবাব দিন
    • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

      🙂 🙂 🙂 🙂

      গতকালই জানেন, প্রথমে অপর্ণা সেন এবং পরে কল্যাণ রায়ের কন্ঠে বনলতা সেনের দুটো ভিন্ন ইংরেজী অনুবাদের পাঠ শুনছিলাম মন্ত্রমুগ্ধের মত। জীবনানন্দ পাঠ করবার চাইতে গলা কাঁপিয়ে কাঁপিয়ে মুখস্ত করেছি বেশী বোধকরি। তাঁকে ধারণ করবার বদলে তাঁকে অলংকার বানিয়ে পরবার প্রচেষ্টা বেশী ছিল বলেই আজো জীবনবাবুকে বুঝতে পারিনা বহুলাংশেই।

      দিনশেষে হুকোমুখো হ্যাংলা হয়ে আনমনে টুংটাং বাজাচ্ছিলাম ঘরে বসে। চিত্রা সিং এর এই গানের বিষণ্ণতা আমায় ছুঁয়ে গেল বলতেই হবে। কেবল অডিওটুকু দিলে কেমন খালি খালি বোধ হয় , তাই তর্জনীতে টুক টুকাটুক শব্দ তুলে রিদমিকে লিখে ফেললাম বাক্য ক'টি। সামান্য কয়েকটি চরণ লিখবার শানে নজুল এটুকুনই।

      মোস্তফা ভাইয়া, আপনার পাঠের ব্যাপ্তি মনে ঈর্ষা জাগায় আমার। কী চমৎকার করেই না জীবনানন্দের নীল ফুল অথবা 'ভালবাসতাম' টুকুর গল্পটি বললেন আপনি!

      আমার লেখায় আপনার মন্তব্য আমায় সম্মানিত করে। :hatsoff: (সম্পাদিত)

      জবাব দিন
      • মোস্তফা (১৯৮০-১৯৮৬)

        রবার্ট ফ্রস্ট একটি চমৎকার কথা বলেছিলেন,

        অনুবাদে যেটুকু হারিয়ে যায় সেটুকুই কবিতা

        বাংলা কবিতার ইংরেজি অনুবাদের শ্রবণ কতটুকু ফলদায়ক তা বুঝাবার জন্য ওই উক্তিটিই যথেষ্ট। তাও আবার বাঙালি হয়ে, যেখানে মূলেই তাঁকে হাতের নাগালেই পাচ্ছি।

        জীবন বাবুর গভীরতা অনেক বেশি, তিনি বোধকরি বাংলা ভাষার সবচাইতে পারফেকশনিস্ট কবি। আমি তাঁর সামান্যই ধরতে পেরেছি।

        লেখায় মন্তব্য উচ্ছ্বসিত প্রশংসার হোক—কিম্বা কঠোর সমালোচনার, সেটি কিন্তু একপ্রকার আন্তরিকতাবোধ থেকেই করা। মননের ছুরিতে শান দিতেও তো পরিশ্রম হয় কিছু। যদি দেখি পরিশ্রমটা বিফলে যাচ্ছে না, তবেই সেই পরিশ্রম শতগুণ প্রাপ্তি হয়ে ফিরে আসে। 🙂


        দেখেছি সবুজ পাতা অঘ্রানের অন্ধকারে হতেছে হলুদ

        জবাব দিন
        • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

          🙂 🙂 🙂 🙂

          ইংরেজীতে বনলতা সেন পাঠ করা হয়নি আমার। বাংলাতেই বুঝতে পারিনা তো ইংরেজীতে কি করবো। কল্যাণ রায়ের বনলতা সেন পাঠের পেছনে একটি গল্প ছিল, ভাইয়া। ইংরেজী সাহিত্যের অধ্যাপক রায় ইউরোপে গেছেন একটি সেমিনারে। সেখানে কথা প্রসংগে বিদগ্ধজনদের বলেছিলেন জীবনানন্দের কবিতার মূল সুর। কল্যাণ রায়ের কাছে কোন অনুবাদ ছিলনা বনলতা সেনের তাই তাঁর পাঠ করা হলোনা। সেদিন হোটেলে ফিরে রাত জেগে অধ্যাপক রায় বনলতা সেন এর অনুবাদ করেন এবং পরদিন সেটির জেরক্স কপি করে সেমিনারে আগ্রহীদের মাঝে বিতরণ করেন। পরবর্তীকালে কল্যাণ রায়ের অনুবাদ বই আকারে প্রকাশিত হয়।

          নূপুর কিছুদিন আগে আমাদের বনলতা সেন পাঠ করে মুগ্ধ করেছিল সিসিবিতে।

          তোমার মত গুণীজনের ভাবনাগুলো নিয়তই প্রেরণা যোগায়, ভাইয়া! :boss:

          জবাব দিন
  2. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    "আমার ক্ষয়ে যাওয়া চোখ দুটো হারিয়ে যাওয়া নীলচে সাদার সেই ঘাসফুলটিকে খোঁজে যে হারিয়ে গেছে কোন সুদূরে!"
    এই যে তুমি খুজছো, তারমানে হলো ওটা আসলে হারায়নি।
    অন্তত একজনের মনের মধ্যে যে রয়ে গেছে, সেটাই বা কম কি?

    আবারো চমকিত হলাম কথা আর সুরের মুর্ছনায় ভরা এই প্রযোজনাটি পেয়ে।
    অনেকগুলো :boss: :boss: :boss: :boss:


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
    • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

      🙂 🙂 🙂 🙂

      আমার মনেহয় জীবনের সুন্দরতম অনুভূতি অথবা অভিজ্ঞতার নাম হলো ভালবাসা। সেটি মায়ের প্রতি, ছায়ের প্রতি, বন্ধুজন বা দয়িতার প্রতি অথবা একদা নিকটবর্তিনী কিংবা আপাতঃ দূরদ্বীপবাসিনীর প্রতি ভালবাসার ক্ষেত্রে একই কথা বলবো। এই ভালবাসাটি হার্ডেষ্ট থিং টু আর্ন বাট মোষ্ট পেইনফুল থিং টু লুজ! দিনশেষে সে কিন্তু রইল তোমারই, ভাইয়া।

      'সে ভুলে ভুলুক, কোটি মন্বন্তরে
      আমি ভুলিব না, আমি কভু ভুলিবো না'

      জবাব দিন
    • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

      🙂 🙂 🙂 🙂

      এই মহাজগতে আমি পথের পাশের একটি ধূলিকণা বৈ অন্য কিছু নই, তাসমিয়া আপু। আমায় মনে রাখবার মত সদা দুরূহ কাজটি কেউ করবেন তেমন আমি আশা করিনা বলতে গেলে। খানিক ছায়া হয়ে, খানিক মায়া হয়ে তবুত্ত পথচিহ্ন রেখে যাওয়া, সেওতো পথের পাশেই।

      অনেক ধন্যবাদ তোমায়।

      জবাব দিন
  3. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    "তার আনত কাজল চোখে রাজ্যের মিনতি ছিল, ছিল সকল সমর্পণের আকুলতা; থর থর কামনা না থাকলেও স্পর্শসুখের ব্যাকুলতা ছিল সেই উপরোধে।" - এ কথাগুলোকে বিশ্বের যেকোন শ্রেষ্ঠ গল্পকারের কলমপ্রসূত বলে ভেবে নেয়া যায়।
    কল্পনার শক্তি আর বর্ণনার দক্ষতা, সাথে প্রাণস্পর্শী সঙ্গীত দ্যোতনা, এই ত্রয়ী মিলে এ লেখাকে অপরূপ করে তুলেছে।
    খুব ভালো লাগলো সাবিনা তোনার এ নিবেদন।

    জবাব দিন
    • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

      🙂 🙂 🙂 🙂

      প্রশংসার জোয়ারে তো ভাসিয়েই দিলেন, ভাইয়া! সামান্য মানুষের ততোধিক সামান্য লেখাটি আপনার ভালবাসা পেয়ে যে উড়ে ঘুরে প্রজাপতি হয়ে বেড়াচ্ছে এটি বলে দিতে পারি ঠিক।

      'চাতক চায় চন্দ্রমায়
      আমরা চাই মুগ্ধ চোখ'

      কার লেখা বলুন তো? স্মৃতি থেকে লিখছি চরণ দুটি, সেই স্মৃতিও ঝাপসা হয়ে আসছে দিনদিন। লেখক যতই বলুন না কেন যে তিনি নিজের আনন্দের জন্য লেখেন, লেখক কিন্তু ঠিকই পাঠকের রেসপন্সের অপেক্ষা করেন সেটি কেউ স্বীকার করুন বা না করুন। মাঝ রাত্তিরে ঘুম ভেঙ্গে গেলে আমি যেমন এক চোখ মেলে ঠিকই দেখে নেই দয়াবান কোন পাঠক কিছু লিখলেন কিনা হোক না সেটি তুখোর সমালোচনা করে। আমার লেখাটি ঘিরে কেউ যে কিছু একটা লিখছেন এটিই কি সবচাইতে বড় প্রাপ্তি নয়?

      আলোচনা চলুক লেখাকে ঘিরে, আড্ডা হোক, তর্ক বিতর্ক, বাদানুবাদ এমনকি মন কষাকষির মত কিছু হলেও ক্ষতি নেই। ধূমায়িত চায়ের কাপে আবার ঠিকই বসবে মিলন মেলা। সিসিবির সবার ভাবনাগুলো আত্মার খোড়াক যোগাক আটপৌরে দিনগুলোতে।

      অনেক ধন্যবাদ, ভাইয়া! :hatsoff:

      জবাব দিন
  4. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    "দিনশেষে হুকোমুখো হ্যাংলা হয়ে আনমনে টুংটাং বাজাচ্ছিলাম ঘরে বসে। চিত্রা সিং এর এই গানের বিষণ্ণতা আমায় ছুঁয়ে গেল বলতেই হবে।"
    গানটার লিঙ্ক দিতে সফল হবো কিনা কে জানে, কিন্তু কথাগুলো দিলামঃ
    মনে কর যদি সব ছেড়ে হায়
    চলে যেতে হয় কখনো আমায়
    মনে রবে কি রজনী ভরে
    নয়ন দুটি ঘুমে জড়াতে নিশি রাতে
    কে গান শুনাতো।।

    তোমারি পথে ফুল ছড়ায়ে
    কাঁটাগুলি কে দিতো সরায়ে।
    হৃদয় ভরা মাধুরী নিয়ে
    সাথে থেকে কে আশা জাগাতো।।

    তোমারি নামে দিনেরও শেষে
    দীপ জ্বালাতো কে ভালোবেসে
    ছিল জীবনে হাসি হয়ে কে
    ব্যাথা হয়ে কে ব্যাথা রাঙ্গাতো।।

    আর লিঙ্কঃ http://banglasonglyrics.com/2162/%E0%A6%AE%E0%A6%A8%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A6%B0-%E0%A6%AF%E0%A6%A6%E0%A6%BF-%E0%A6%B8%E0%A6%AC-%E0%A6%9B%E0%A7%87%E0%A6%A1%E0%A6%BC%E0%A7%87-%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC/

    জবাব দিন
  5. তানজিনা (১৯৯৮-২০০৪)

    আপা, মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পড়ি আমি আপনার লেখা। প্রতিবারই সেই মুগ্ধতার পরিমাণ আগেরটিকে ছাড়িয়ে যায়! আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

    তবে, আজকের লেখার পেছনের যে উপলব্ধি, - তা ছাপিয়ে গেছে আর সব কিছুকেই! ভুলে যাওয়া গানের সুর, কিংবা প্রিয় কোন গল্প হারিয়ে ফেলার হাহাকার - অনুভূতিগুলো কেমন যেন গলার কাছে এসে থেমে যায়...! বাড়িয়ে বলছি না এতটুকু, রবার্ট ফ্রস্ট কে মনে করিয়ে দিলেন আজ আপনি... :boss: :boss: :boss:


    For most of history, Anonymous was a woman. [Woolf, Virginia]

    জবাব দিন
  6. লুৎফুল (৭৮-৮৪)

    তোমার এই অডিও ব্লগ দেখে কেবলি মনে পড়ছে আমার একটা পুরোনো কবিতার কথা ।
    মাঝের দুটো লাইন তুলে দিলাম এখানে ।

    ~ ফড়িং ও ঘাসফুলের গল্প ~
    ..................
    আমি তো কেবল এক নগন্য ঘাস্ ফুল ।
    নিরীহ ঘাস ফড়িং ছাড়া আর কোনো দুর্লভ সখ্যতা নেই আমার সঞ্চয়ে ।
    ..................
    [ রচনাকাল ~ ২৭ জুন ২০১৩ ]

    জবাব দিন
  7. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    গতকাল শুনেছিলাম এ সুর। ভীষণ প্রিয় চিত্রা সিং এর এ পুরো এলবামটাই। তখন তো ক্যাসেটের যুগ। এ-পিঠ শেষ হলে পাল্টে বি-পিঠ দেয়া। সেই নস্টালজিয়া ফিরে এলো।
    গদ্য পড়ে বিমোহিত। স্বপ্নময়! (সম্পাদিত)

    জবাব দিন
    • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

      🙂 🙂 🙂 🙂

      নূপুর বিমোহিত হলে নাচ ময়ুরী নাচেরে ছাড়া আর কীইবা বলা যায়, বলো!

      এ-পিঠের পর বি-পিঠে উল্টে কে দেবে? বড় আপার হুকুম মেনে সে কাজটি আমাকে করতে হতো। একই গান শুনতে শুনতে পুরো ক্যাসেটের লিরিক্সই মুখস্ত হয়ে গেল আমাদের। এখন কড়ে আংগুলের ডগায় থাকে জগতের সব গান, জানো। মাথা দুলিয়ে সেই একাগ্রতায় শুনবার মনটি অনেকাংশেই হারিয়ে গেছে এই যা!

      জবাব দিন
  8. সাইদুল (৭৬-৮২)

    সবমিলিয়ে চমতকার। চিত্রা সিং নেমে এসেছিলেন আমার ঘরে। বাজনার সাথে গলা মেলাবেন ভেবে।


    যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান

    জবাব দিন
  9. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    শিরোনাম দেখেই কেন জানি চাইমের এই গানটির কথা মনে পড়ে গেল-
    আজকে রাতে যে গান তুমি মোরে শোনালে

    খুব ভাল লাগল, সাবিনাপা! 😀


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
    • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

      🙂 🙂 🙂 🙂

      চিন্ময়, সাগর, হেমন্ত শুনতে শুনতে বড় হয়েছি আমি। সুমন এলেন কী যে জোয়ার নিয়ে যদি জানতে! বাকী গানের কথা বাদ দিলেও সতের আঠেরোর একটি মেয়েকে পাগল বানাবার জন্য 'তোমাকে চাই' ই যথেষ্ট ছিল। আমি যখন প্রবাসে এলাম সিদ্দীকা কবিরের খাদ্য, রান্না পুষ্টি'র সাথে ফিতেওয়ালা ক্যাসেটে সুমনের সব এলবাম এল। পরে নচিকেতা, অন্জন, শিলাজিত শুনেছি বটে কিন্তু সুমন অনন্য।

      দেশে চাইম, ডিফারেন্ট টাচ, এলআরবি শুনেছি বিস্তর। প্রেমে পড়লে চিন্ময় বিরহে তপন! ক'দিন আগে টিপুর কন্ঠে 'ইশ' শুনে কী যে ভাল লাগলো। তাঁকে কল অব্দি করেছিলাম আমার মুগ্ধতা জানাতে। চাইমের গানটা শুনলাম অনেকদিন পর, জুনা। অনেক ধন্যবাদ তোমাকে, ভাইয়া।

      জবাব দিন
  10. জিয়া হায়দার সোহেল (৮৯-৯৫)

    অসাধারন মিউজিক এর সাথে অসাধারন গদ্য কবিতার মত কি যেন একটা পড়লাম। উদাস মনের মধ্যে কতকাল এই ধরনের লিখা লুকিয়ে ছিল? আপু তুমি বাংলা ইংরেজি মিলিয়ে আধুনিকতার ছোঁয়া দিয়ে যে লিখা লিখো তার অন্য একটা স্বাদ আমি অন্তত পাই। কেন জানি মনে হয় তুমি যদি বড় কিছু লিখতা আমরা হয়তো আরও ভাগ্যবান হতে পারতাম। শুভকামনা অফুরান। :clap: :clap:

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : পারভেজ (৭৮-৮৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।