সন্দেহ প্রবণ

কলেজ এর কাহিনির তো শেষ নাই। যাই হোক, প্রথম ব্লগ হিসাবে একটা ঘটনা বলি। কলেজ এর খুব বিরক্তকর কিছু বাশির আওয়াজ এর মধ্যে
আফটার নুন প্রেপ এর বাশি টা ছিল জঘন্যতম। আধো ঘুম, আধো জাগরনের মধ্য একাডেমীর উদ্দেশ্য রওনা হতাম। ৯৭’ এর ঘটনা, আমরা তখন ক্লাস নাইনে পরি।
হাফ প্যান্ট, হাফ শার্ট পরে রাজ্যের ঘুম চোখে নিয়ে হাউস থাকে বের হয়ে একাডেমীতে যাচ্ছি। শার্ট ইন না করা টা একটা কৃতিত্ত্বের ব্যপার। সুতরাং
শার্ট ইন করার কর প্রশ্নই উঠেনা। কিছু দূর যেতেই মুনতাসির ভাইয়ের ডাক। শরীয়তুল্লাহ হাউসের JP। “Sabbir, get back”। ঘটনা বুঝে না বুঝার ভান করলাম।

“কি হইছে, ভাইয়া?”। সে আমাকে শার্ট ইন করার হুকুম দিলেন। আর আমি তা করবনা। কোনো এক কারনে এই ব্যাচ এর JP দের সাথে আমার খুব বেশি খারাপ
সম্পর্ক ছিল। দোষ আমারই। আমি তাদের সহ্য করতে পারতাম না। যাই হোক আমি এবং মুন্তাসির ভাই এর তুমুল কথা কাটাকাটি চলছে। বেশ কিছুক্ষন পর আমি রাজি হলাম কিন্তু শর্তসাপেক্ষে। আমি হাউসে যাব তারপর শার্ট ইন করে আসব। মুনতাসির ভাই বললো আমি না ফিরা পর্যন্ত সে ওয়েট করবে। আমি হাউসে গিয়ে যতটা সম্ভব দেরি করে বের হলাম।

সমস্ত ঘটনা ডিউটি মাস্টার আব্বাস স্যার দূরে দাড়িয়ে দেখছিলেন। সেটা আমি জানি না। আব্বাস স্যার ছিলেন প্রচন্ড সন্দেহপ্রবন। আতিরিক্ত মাত্রায়। স্যার কে কেউ সালাম দিলে বলতো, “এম্নেই সালাম দিলা?নাকি কনো উদ্দেশ্য আছে?”। যাই হোক, আমি হাউস থেকে বের হলাম শার্ট ইন করে।মুনতাসির ভাই আমাকে দেখে চলে গেল। আমি আস্তে আস্তে এগুচ্ছি একাডেমীর দিকে অমনি আব্বাস স্যার তড়িঘড়ি করে আমার কাছে আসল। যে কথা টা উনি আমাকে বলল তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলামনা।
সে কানের কাছে এসে বলল”এই ছেলে, underware পরো না কেন?এখন থেকে সব সময় underware পরবা, তাহলে পুনরায় হাউসে যেতে হবে না”।
এই কথা বলে আমার উত্তর এর অপেক্ষায় না থেকে চলে গেল। স্যার এর এই মন্তব্য শুনে আমি তো আকাশ থাকে পরলাম। বেটা বলে কি? ঘটনা বুঝতে বেশ কিছুক্ষণ সময় লাগল। অতি সন্দেহপ্রবন স্যার ধারনা করেছেন আমি আন্ডারওয়ার পরিনি বলে শার্ট ইন করি নাই। এবং তার ধারনা আমি হাউসে গিয়েছিলাম “ওটা” পরে আসতে।
কি বিচিত্র মানুসের মন!!!!!!!!!
বিঃ দ্রঃ আমি কিন্তু ফার্স্ট টু লাস্ট আন্ডারওয়ার পরা ছিলাম, এই সংক্রান্ত কোনো কথাই মুনতাসির ভাই এর সাথে হয়নি।
(আমার ফার্স্ট লেখা। ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল)

৪,৪২৩ বার দেখা হয়েছে

৪২ টি মন্তব্য : “সন্দেহ প্রবণ”

  1. আমি জানতাম এই ধরনের প্রশ্ন উঠবে, তাই বিঃ দ্রঃ টা add করে দিছি।
    @রায়হান
    আমার ID হল sabbir8, ঘটনা হলো আমি আগে থাকেই wordpress এর মেম্বার। cadetcollegeblog এর জন্য আলাদা কোন মেম্বারশিপ ফর্ম ফিলাপ করতে হবে কিনা বুঝতে পারছিনা। any way, tankx rayhan.

    জবাব দিন
  2. @ সাব্বির ভাই,

    আপনাকে মেম্বার হিসেবে এড করা হয়েছে।ওয়ার্ডপ্রেস একাউন্টে লগ ইন করলেই আপনার ব্লগসমূহের আন্ডারে ক্যাডেট কলেজ ব্লগ শো করবে।

    আর লেখা আপলোড এর নিয়ম দয়া করে নীতিমালা বিভাগ থেকে দেখে নেবেন।

    আর লেখা জটিল হইসে। চালায়া যান 😆

    জবাব দিন
  3. সাব্বির ভাই,
    বরিশাল ক্যাডেট এর দুই কিংবদন্তী নিয়া লিখছেন। এদের কথা কি আর কইতাম।

    আব্বাস স্যারের সন্দেহ আর মুনতাসির ভাইয়ের সেই দশ হাত লম্বা জিনিসটার কথা আজীবন সবার মনে থাকবে। আমি মুনতাসির ভাইরে পাই নাই। কিন্তু হাসপাতালের হাসেম ভাই একদিন উনার টার বর্ণনা দিছিল। শুইনা রাতে ঘুম হয়নাই। 😀

    মাশ্রুফ ভাইয়ের মতো আমিও ইদানিং বেয়াদপ হয়ে যাচ্ছি। 😉

    লেখা অতি রসালো। চালিয়ে যান...

    জবাব দিন
  4. @মাশ্রুফ ভাই,

    হুনেন তৎকালীন চিকি পোলাপাইনের কথা চিন্তা করে চোখাটা জলে ভিজে ঊঠেছিল। চোখের পানিতে বালিশ ভিজে একাকার। তাই সারারাত ঘুমাইতে পারি নাই...আপ্নি মিয়া অন্য সেন্সে নিলেন... 🙂

    তয় একটা কথা মনে আইছিল। কিন্তু ঐ যে বেয়াদপ হইয়া গ্যাছি। তাই আর কইলাম না... 😉

    জবাব দিন
  5. ধন্যবাদ আবির,
    হাশেম ভাই তো বরিশাল ক্যাডেট কলেজের খুব হিট একটা ক্যারেক্টার। ওনারে নিয়া মজার মজার ঘটনা আছে।আস্তে আস্তে লিখব সব। একটা শুধু বলি্‌......
    উনি কারও নাম জানতে চাইলে বলতেন-"তোমার নাম, কী নাম??"
    আমরা এটা নিয়া অনেক এক্সপেরিমেন্ট করছি। ফলাফল একই--- "তোমার নাম, কী নাম??"

    জবাব দিন
  6. @ সাব্বির ভাই,
    লেখাটা মজাক দিল.........।। 😀

    @ জিহাদ,
    সুন্দররররররররর মার্কা হেডার বানাইসস ...। 😀
    কিন্তু তুই কোনটা বুঝলাম না......সামনেরটা, পিছেরটা, বামেরটা নাকি ডানেরটা... 😉

    জবাব দিন
  7. আচ্ছা আমার লেখা টা কি বাজারে হিট করছে???
    মানে জানতে চাচ্ছি লেখা টা মান সম্পন্ন হয়েছে কিনা??
    আরো অনেক ঘটনা মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে সাহস দিলে সবাই কে জানাতে পারি।

    জবাব দিন
  8. সাব্বির ভাই
    (অসুস্থ ছিলাম, তাই দেরিতে পড়লাম দেরিতে জবাব দিলাম)
    আপনার লেখা সত্যি আনন্দদায়ক। মুনতাসীর ভাইয়ের "দশহাত লম্বা" জিনিসটা কী, আপনার ভাষায় শুনতে চাই।

    জবাব দিন
  9. ধন্যবাদ আলাম,
    জিনিস টা কি সেটা না হয় আবির এর কাছ থাকেই জেনে নিও। ওনার খুব বাজে একটা টিস্‌ নাম ছিল। ব্লগ এর নীতি মালা মেনে চলার চেষ্টা করি তাই ওই ওয়ার্ড টা বলে গেলনা।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : mashroof

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।