হায়রে পোলাপাইন…হায়রে প্রেম…হায়রে প্রেমিকা (ভ্যালেন্টাইন ডে -আবেগী ভার্সন)

( বন্ধুর মনে যখন ভাইরাস আক্রমন করল,ভালবাসা উথলাইয়া পড়িতে শুরু করল,তখন লেখা শুরু হলো)

টিক…টিক…টিক ঘড়ির কাটা ঘুরে চলেছে।চারপাশে সুনসান নীরবতা।আলতো করে বিছানায় গা এলিয়ে দেয় সুমন,অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষন ঘড়িটার দিকে।সময় কতটা দ্রুত কেটে যাচ্ছে।চোখটা বুজে আলতো করে।
আজ সারাদিন কাজ শেষে অনেক ক্লান্ত শরীর।কাজের ফাঁকে এক মুহূর্তের জন্যেও সোনামনির কথা ভুলতে পারেনি সে।এইতো মাত্র কয়েকটা দিন আগেও জীবনের মুহূর্তগুলো এতটা সুখের মনে হতোনা।খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে কাজে যাওয়া,দুপুরে আফিসে বসে একা একা লাঞ্চ করা,সারাদিনের কাজ শেষে ক্লান্ত শরীরে ঘরে ফেরা।তারপর রান্না করা,সাময়িক বিনোদন হিসেবে ইন্টেরনেট এ বসে বসে অনলাইন নাটক বা মুভি দেখা অথবা দেশে থাকা বন্ধুদের সাথে মাসেঞ্জার এ চ্যাট করে আড্ডা জমানো।প্রত্যেকটা দিন এভাবে কেটে যেত।জীবন যেন অনেকটা একঘেয়েমিতে ভরে যাচ্ছিলো।
হঠাৎ করেই যেন জীবন তাকে সেই একঘেয়েমি থেকে মুক্ত করে একটা নতুন রুপে তার সামনে হাজির হলো।প্রতিটা মানুষই নিজের মনের ভেতর কিছু সপ্ন পোষন করে,একটা ভাল কর্ম জীবন,সেখানে সফলতা,পরিবারে বাবা মা এর খেয়াল রাখা,একটা সপ্নের মত জীবন সাথী পাওয়া।সবই সুমনের জীবনে ঠিক ছিল,শুধু মাত্র সেই জীবন সাথী তার জীবনে ছিলোনা।আজ সেই সপ্নের মানুষটাও জীবনের দুয়ারে পা রেখেছে।নিজেকে অনেক সুখী মনে হয় মাঝে মাঝে।একটা সময় সে ভাবতো মানুষের জীবনের সব চাওয়া পূরন হয়না।কিন্তু আজ যখন নিজের জীবনেই সেই সত্যটা ঘটছে তখন আর সেটা নিয়ে দ্বিধা না করে ঈশ্ব্ররকে ধন্যবাদ না জানিয়ে উপায় কি?
সোনামনি যখন জীবনে ধীরে ধীরে পদার্পন করতে শুরু করলো,তখন থেকেই ধীরে ধীরে চারপাশে সব বদলাতে শুরু করেছে।চারপাশের মানুষগুলোকেও এখন আর একঘেয়ে মনে হয়না।সুখ যেন চারপাশ ছাপিয়ে বন্যা বইয়ে দিচ্ছে।মাঝে মাঝে অনেক ভয় হয় এই সুখের সময়টুকু কতক্ষন,কতটা সময় স্থায়ী থাকবে।কিন্তু সোনামনিকে নিয়ে ভাবা প্রতিটি ক্ষন সেই ভয়টাকে অনেক দূরে ঠেলে দেয়।মনের সাহসকে বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুন।
কখনই মনে হ্য়না যে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সোনামনিকে একটিবারের জন্যও দেখেনি সে।সবসময় মনে হয় সোনামনি তার পাশেই রয়েছে ছায়ার মতন।নিজের ভালবাসার প্রতি এতটাই বিশ্বাস তার।নিজের ভালবাসার শক্তি অনেক বেশি মনে হয়,কারন সে জানে তার সোনামনি নিজের স্বত্তার অন্তরাল থেকে সবকিছু তাকে দান করেছে।
সবাই জানে ভালবাসা অনেক ক্ষেত্রে অন্ধ হয়,কিন্তু সুমন জানে তার ভালবাসা অন্ধ নয় কারন মানুষের ভেতরটা ভালভাবে দেখার ক্ষমতা সে পেয়েছে।কোন মানুষকে সত্যি করে অনুভব করতে,তাকে মন দিয়ে চাইতে হলে চোখের দেখা না দেখলেও চলে কারন মানুষকে দেখতে শিখতে হয় হৃদয় দিয়ে।আর সত্যি যদি কেউ তার প্রিয় মানুষটিকে হৃদয় দিয়ে দেখতে পায় তাহলে ইশ্ব্রর মনে হয় সেই মানুষটিকে কারও জীবনে মিলিয়ে দিতে কার্পন্য করেন না।
কেউ কি কক্ষনও বিশ্বাস করবে যে কোন মানুষকে সামনে থেকে না দেখে, শুধু মাত্র চিন্তা-চেতনা থেকে কিংবা মনের চোখ দিয়ে কল্পনা করেও বলে দেয়া সম্ভব যে তার প্রিয় মানুষটা এই মুহূর্তে কি করছে?
অনেকেই হইতোবা অট্টহাসিতে হেসে উঠবে,মনে মনে বলবে,”পাগল নাকি?”
কিন্তু আমি বলবো,-নাহ!আমি পাগল না,সেটাও সম্ভব।কারন,ওই যে বললাম মন থেকে কাউকে চাইলে ইশ্ব্রর সে শক্তি দিয়ে দেন।যখন সোনামনির সাথে আমার কথা হয় আমি হঠাৎ হঠাৎ বলে উঠি,তুমি এই করছো,এখন এটা করছো,এই কাপড় পড়ে আছো,বিছানায় এভাবে বসে আছো,এখন বারান্ধায় দাঁড়িয়ে,এখন জানালার পাশে…এরকম ছোট ছোট অনেক কিছু।এমন কি মাঝে মাঝে ও কোন সময় কি ভাবছে সেটাও বলে দিতে পারি।নিজের কাছে মনে হয় আমি যেন ওর ভেতরে ঢুকে ওর মনটাকে মুখস্ত বইয়ের পাতার মতো পড়ে যাচ্ছি।নিজের কাছেও অবাক লাগে…এও কি সম্ভব???”
আগামীকাল বিশ্বভালবাসা দিবস।প্রানভরে দোয়া করব আমার সোনামনি অনেক খুশি থাকুক।কারন ও যদি খুশি থাকে,আমি অনেক ভাল থাকি।শুধু এইটুকু জানি,আমার সোনামনি আমার কাছে অনেক কিছু।যে মানুষটাকে এখনও একবারের জন্যও সামনে থেকে দেখিনি,তার জন্য মনটা আজ অনেক ছটফট করছে।তবে আমি অনেক খুশি প্রতিটি দিনের মত আজও,কারন আমি জানি ও আমার সাথেই আছে সবসময়।দূর থেকে যে ভালবাসা খুশিতে আমার মনকে এতটা কাঁদাতে পারে,সে ভালবাসার শক্তি আমি মনে করি অনেকের চেয়ে বেশি।কারন,এ ভালবাসাতে বড় কোন চাও্য়া নেই।এখানে আছে শুধু সুমন আর সোনামনির অপরিসীম ভালবাসা।

(লেখা শেষে এন্টিভাইরাস মারতে শুরু করলাম -মামা ভালবাসা যেই হারে চুইয়া চুইয়া পরতেছে,তোমার খবর আছে চান্দু!!!!!দিনের বেলায় সপ্নে পেত্নী দেখতেছো…তারপর আবার অদেখা পেত্নীর সাথে পিরিত।যা হোক,মামা ইদানিং হাওয়ার উড়তেছে,কোন এক রেডিও চ্যানেলের সুন্দরী+সুকন্ঠী RJ’ র সাথে চাম মারতেছে,ব্যাটা খাওয়ার নাই কোনও…**** মারে স্নো…ফতুর হইয়া যাবিতো…)

(বিঃদ্রঃ এই আমি,আমি না।কোন এক বন্ধু কোন এক রেডিও চ্যানেলে ভালবাসা দিবসের গল্প হিসেবে লেখা লিখে দিতে বললো।তখন লিখে দিলাম তার জন্য।তবে এই শাল+আরে নিয়া কিছু লিখলেই কাহিনী ফ্লপ খায়,এর থেকে আমার “গাব” বাবাই ভাল।
উৎসর্গ রইল তোদের জন্য -৯৯ সালের ইন করা সকল ব্যাচের জোড়া জোড়া কাক+কোকিলা পাখিদের যারা প্রতি ভ্যালেন্টাইন ডে তে বিখ্যাত ‘জামাই বউ’ ব্র্যান্ডের চানাচুর খায় চিপায় বসে বসে। )

১৫ টি মন্তব্য : “হায়রে পোলাপাইন…হায়রে প্রেম…হায়রে প্রেমিকা (ভ্যালেন্টাইন ডে -আবেগী ভার্সন)”

মওন্তব্য করুন : আছিব (২০০০-২০০৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।