ছন্দে আনন্দভ্রমণ ১

‘আমোদ’ শব্দটি আমার খুব প্রিয়। যে জিনিশ খুব প্রিয় হয় মানুষ সবখানেই তার অবয়ব খুঁজে ফেরে। ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ যেমন পেয়েছিলেন ‘অভিধানে আমোদ’। আমি তেমনি ছন্দে আমোদ খুঁজি। ইচ্ছে হলে আপনিও আমার এই আনন্দভ্রমণে সাথী হতে পারেন।

ইংরেজিতে ‘ফিকোয়েন্সি’ বলে একটি শব্দ আছে। বাংলায়  তার বৈজ্ঞানিক পরিভাষা ‘কম্পাঙ্ক’। আমাদের আনন্দভ্রমণে আমরা এমন কাঠখোট্টা শব্দকে সাথে নেব না। কিন্তু যদি আমাদের নেচে নেচে চলবার সাধ জাগে–সবাই যদি একই তালে নেচে নেচে চলতে চাই–তবে ‘ফ্রিকোয়েন্ট’ শব্দটিকে মাথায় রাখতে হয়। কতটা সময় পর পর একই মুদ্রার ‘পুনরাবৃত্তি’ ঘটাতে হবে সেটির প্রতি নজর দিলে যুথবদ্ধ এই চলা ছন্দময় হয়। তাই ‘পুনরাবৃত্তি’ বিষয়টি মাথায় রাখা জরুরি।

আরেকটি বিষয় মনে রাখি। মোটা দাগে আমি শুধু ছন্দের কথাই বলছি। তাই মিলের কথা আপাততঃ শিকেয় তুলে রাখি। ভাইফোঁটার দিন এলে ছন্দ ও মিলের রাখিবন্ধন আপনাতেই হয়ে যাবে।

‘ছন্দ’ বলতে বুঝাতে চাচ্ছি ‘কবিতার ছন্দ’,  আরেকটু নির্দিষ্ট করে বললে, ‘বাংলা কবিতার ছন্দ’। আশঙ্কা হচ্ছে, ‘কবিতা’ শব্দটি পড়বার সাথে সাথে অর্ধেক পাঠকই চম্পট দেবেন। আচ্ছা, তা না হয় দিলেন। তবে একটু বসে তারপর যান। দেখবেন, চম্পট দেয়াটাও ছান্দসিক হবে।

অনেকেই বলেছেন, ছন্দের বিচারে ‘চোখ’-এর চাইতে ‘কান’ বড় হাকিম। আমিও মানি। কিন্তু আমি তেমন করে বলি না। আমি বলি ছন্দের বিচারে সবক’টি ইন্দ্রিয়ানুভূতির অনুরণন ঘটানোর প্রয়োজন আছে। শ্রবণেন্দ্রিয় হচ্ছে অগ্রদূত, বাকিরা অনুসারী।

তাই অক্ষর গুনে নয় আমরা ছন্দের ব্যাপারটা বুঝব প্রধানতঃ ধ্বনি শুনে। আর অবশ্যই মনে রাখব, ছন্দ আর মিল কিন্তু এক জিনিশ নয়, দুই সহোদর ভাই হয়ত।

 

ন্যূনতম চেষ্টায় আমরা শব্দের যতটুকু অংশ উচ্চারণ করতে পারি, তাকেই সাদা কথায় বলবো দল (syllable)। ধ্বনি দুরকম। রুদ্ধদল (closed syllable) ও মুক্তদল (open syllable)।

যে সব ধ্বনি উচ্চারণের সময় মুখের ভেতর প্রবহমান বাতাস জিভের দেয়ালে আটকে যায় তাদের রুদ্ধদল বলা হয়।  যেমন, কর, ধর, সুখ, মুখ, দিক, ধিক,… ইত্যাদি। কান পাতুন, মনে হবে, বাতাস যেন আটকে যাচ্ছে।

মুক্তদলে অবারিত নিঃশ্বাস। যে সব ধ্বনি উচ্চারণের সময় মুখের ভেতর প্রবহমান বাতাস জিভের দেয়ালের কোনো বাধা ছাড়াই বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে তাদের মুক্তদল বলে। যেমন, খেলা, বেলা, ভালোবাসা, মিছে, আশা,… ইত্যাদি। অনুধাবন করুন। ঠিক আছে তো?

এবারে কান পেতে রেখেই একটু চোখ খুলি। শব্দের শরীরের ভেতরে সিলেবলকে খুঁজি।

উত্তম=উত্+তম্ ; দুটিই ক্লোজড সিলেবল।

রাধা=রা+ধা ; দুটিই ওপেন সিলেবল।

বাহুবন্ধন=বা+হু+বন্+ধন্ ; এখানে ‘বা’ ও ‘হু’ ওপেন সিলেবল কিন্তু ‘বন্’ ও ‘ধন্’ ক্লোজড সিলেবল।

যুক্তাক্ষর=যুক্+তাক্+খর্ ; তিনটিই ক্লোজড সিলেবল।

বাতায়ন= বা+তা+য়ন্ ; প্রথম দু’টি অর্থাৎ ‘বা’, ‘তা’ ওপেন সিলেবল, শেষেরটি অর্থাৎ ‘য়ন্’ ক্লোজড সিলেবল।

 

মোটা দাগে বাংলা কবিতার তিন সনাতনী ছন্দ। অক্ষরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত ও স্বরবৃত্ত। এদের নাম চেনার চাইতে যেহেতু স্বভাব চিনতেই আমরা বেশি আগ্রহী তাই নামকরণের সাত-কাসুন্দি ঘেঁটে আলোচনা দীর্ঘায়ত করবো না। তবে মন্তব্যে এ সুযোগ অবারিত থাকলো। এই তিন ছন্দ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা যদি শেষতক হালে পানি পায়, তাহলে না হয় এদের ছন্দ ও ছন্দ-মুক্তির আরো কিছু বিষয়ে আলোচনা করা যাবে।

এবারে, আমার কাছে যে ছন্দটিকে সবচেয়ে সহজ বলে মনে হয় তার কথা পাড়ি। মাত্রাবৃত্ত তার নাম। মাত্রাবৃত্তের হিসেব খুব সোজা,

  • ওপেন সিলেবল সবসময় পাবে ১ মাত্রা।
  • ক্লোজড সিলেবল পাবে ২ মাত্রা।

‘মাত্রা’ হলো ছন্দ মাপার একক। সিজিএস, এফপিএস আর এমকেএস পদ্ধতিতে যেমন এককগুলো ভিন্ন, তেমনিভাবে অক্ষরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত ও স্বরবৃত্তেও সিলেবল ভেদে মাত্রার মাপ ভিন্ন। ব্যস, আপাততঃ এটুকু জানলেই চলছে।

 

স্বাধীনতা তুমি/
রবি ঠাকুরের/ অজর কবিতা/ অবিনাশী গান/
স্বাধীনতা তুমি/
কাজী নজরুল/ ঝাঁকড়া চুলের/ বাবরি দোলানো/
মহান পুরুষ,/ সৃষ্টিসুখের/ উল্লাসে কাঁপা-/
স্বাধীনতা তুমি/
শহীদ মিনারে/ অমর একুশে/ ফেব্রুয়ারির/ উজ্জ্বল সভা/
স্বাধীনতা তুমি/
পতাকা-শোভিত/ শ্লোগান-মুখর/ ঝাঁঝালো মিছিল।/

সুপরিচিত এই কবিতাটিকে এই যে ভাগ ভাগ করে দেখালাম, এই ভাগগুলির প্রতিটির নাম ‘পর্ব’। এবার দেখি প্রতি পর্বে কয় মাত্রা। কবিতাটিতে মিলের চাইতে ছন্দ বেশি।

স্বাধীনতা=স্বা+ধী+ন+তা=৪ টি ওপেন সিলেবল। মাত্রাবৃত্তের নিয়মে প্রতি ওপেন সিলেবল ১ মাত্রা, মোট ৪ মাত্রা।

ঠাকুরের=ঠা+কু+রের=২ টি ওপেন সিলেবল, ১ টি ক্লোজড সিলেবল। মাত্রাবৃত্তের নিয়মে প্রতি ওপেন সিলেবল ১ মাত্রা, ক্লোজড সিলেবল ২ মাত্রা। মোট ২+২=৪ মাত্রা।

সাংকেতিক ভাষায় লিখি,

স্বা (১)+ধী (১)+ন (১)+তা (১)=তু(১)+মি(১)=/
(১)+বি(১)= ঠা(১)+কু(১)+রের(২)=/ অ(১)+জর(২)=(১)+বি(১)+তা(১)=/ অ(১)+বি(১)+না(১)+শী(১)= গান(২)=/

অর্থাৎ প্রতি পর্বে ৬ টি করে মাত্রা। একেই আমরা লিখি ৬+৬+৬+৬। এই ছয়ের চালটি হলো মাত্রাবৃত্তের সবচেয়ে মধুর চাল। মাত্রাবৃত্তের চাল সাকুল্যে চার রকমের। চার, পাঁচ, ছয় ও সাত মাত্রার চাল। অনেক সময় জিরিয়ে নেবার প্রয়োজনে অসম্পূর্ণ পর্বও থাকতে পারে।

১। চার মাত্রার চাল

আমি আর/ ভালোবাসা/ আজন্ম/ সহোদর/
চেনা চেনা/ উঠোনেই/ দুজনের/ বাড়িঘর।/
(শেখ নজরুল, ‘মাত্রাবৃত্ত ভালোবাসা’)

মাত্রা গুনে দেখি,
আ(১)+মি(১) আর(২)/ ভা(১)+লো(১)+বা(১)+সা(১)/ আ(১)+জন্(২)+ম(১)/ স(১)+হো(১)+দর(২)/
চে(১)+না(১) চে(১)+না(১)/ উ(১)+ঠো(১)+নে(১)+ই(১)/ দু(১)+জ(১)+নের(২)/ বা(১)+ড়ি(১)+ঘর।(২)/

মানে, এর পর্ব বিন্যাস ৪+৪+৪+৪, চালটা ৪ মাত্রার চারটি সম্পূর্ণ পর্বের।

২। পাঁচ মাত্রার চাল

দুয়ার এঁটে/ ঘুমিয়ে আছে/ পাড়া/
কেবল শুনি/ রাতের কড়া/ নাড়া/
(শক্তি চট্টোপাধ্যায়, অবনী বাড়ি আছো?)

ভাঙলে,
দু(১)+য়ার(২)+ এঁ(১)+টে(১)/ ঘু(১)+মি(১)+য়ে(১) আ(১)+ছে(১)/ পা(১)+ড়া(১)
কে(১)+বল(২) শু(১)+নি(১)/ রা(১)+তের(২) ক(১)+ড়া(১)/ না(১)+ড়া(১)/

বুঝাই যাচ্ছে, এর পর্ব বিন্যাস ৫+৫+২। পাঁচ মাত্রার দুটি সম্পূর্ণ পর্ব আর দুই মাত্রার একটি অসম্পূর্ণ পর্ব।

৩। ছয় মাত্রার চাল

বিবমিষাময়/ ক্লান্ত নগরে/
রজনীর চুল/ যতো,/
তারও চেয়ে ঢের/ গিলেছো পাঁচন/
রমনদূতের/ মতো।
(সুমন তুরহান, ‘মাতালের গান’)

এবার ভেঙে দেখাব না, চেষ্টা করে বলুন তো?

হ্যাঁ, ঠিক ঠিক বলে দিয়েছেন, ছয়ের চালে মাত্রা বিন্যাস ৬+৬+৬+২।

দু’দিনের ছুটি,/ হাতে গোনা ক’টি/ টাকা/
যেতে হবে বাড়ী/ বিকেলের ট্রেন/ ধরে/
হাতে চিঠি ধরা/ বুকের ভেতর/ ফাঁকা
মা যে লিখেছেন/ কাঁপা কাঁপা অক্ষরে
বাবা তোকে খুব/ দেখতে ইচ্ছে/ করে
(রোমেল চৌধুরী, ‘বাড়ি ফেরা’)

বুঝতে পারছি, এর পর্ব বিন্যাস ৬+৬+২। কিন্তু দুর্বলতাটুকু লক্ষ্য করুন, চার নম্বর অক্ষর শব্দটি ছিঁড়ে-কেটে দু’টি পর্বের মাঝে ভাগ করে দিতে হচ্ছে। এমন বেজায়গায় ভাঙা এড়িয়ে যাওয়াই সমীচীন।

৪। সাত মাত্রার চাল

মাত্রাবৃত্তে যে রীতিতে যুক্তাক্ষরকে ভেঙে ভেঙে পড়তে হচ্ছে, বাংলা কবিতায় আগে সেটি ছিল না। রবীন্দ্রনাথ এই নতুন রীতির প্রবর্তনা ঘটিয়েছিলেন তাঁর ‘মানসী’ কাব্যগ্রন্থে। মাত্রাবৃত্তকে যারা গভীরভাবে চিনতে চান তাদের জন্য এই কাব্যগ্রন্থটি পাঠ করা খুবই ফলদায়ক। সেখান থেকেই আমরা সাত মাত্রার মাত্রাবৃত্তের উদাহরণ দেব,

ছিলাম নিশিদিন/ আশাহীন প্রবাসী
বিরহতপোবনে/ আনমনে উদাসী।
আঁধারে আলো মিশে/ দিশে দিশে খেলিত;/
অটবী বায়ুবশে/ উঠিত সে উছাসি।/
(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ‘বিরহানন্দ’)

এবার নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না। পর্ব বিন্যাস ৭+৭, তাই তো?

আজ আর নয়, চার-পাঁচ-ছয়-সাত মাত্রার চাল চেলে চেলে নিশ্চয়ই ক্লান্ত। একটু তবে জিরিয়ে নেই।

২,২৬৫ বার দেখা হয়েছে

১২ টি মন্তব্য : “ছন্দে আনন্দভ্রমণ ১”

  1. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    প্রথমে তো শিরোনাম দেখে খুশিতে আটখানা হয়ে গেলাম ----- কিন্তু ততোধিক খুশিতে শতধা হয়ে গেলাম ওই '১' সংখ্যাটিকে শিরোনামে যুক্ত হতে দেখে। একাধিক পর্বের প্রতিশ্রুতি যে আঁকা আছে ওতে! 🙂 🙂

    সুমন তুরহান আর রোমেল চৌধুরীর লেখা উল্লেখিত হতে দেখে খুব ভালো লাগলো। আমার খুব ভালো লাগে ওঁদের লেখা/ভাবনা ।
    ছন্দ শিখতে/বুঝতে বহুবার শুরু করেছিলাম কিন্তু আলস্য আর ভয়। ছন্দ মানতে গিয়ে ভাবনা/কল্পনা কেমন গুটিয়ে যেতে চায় ।

    চলুক মোস্তফা ভাই। :boss: :boss: :boss:

    জবাব দিন
    • মোস্তফা (১৯৮০-১৯৮৬)

      তোমার অাগ্রহে খুবই প্রীত হলাম। হ্যাঁ, ছন্দের শুধুই অত্যাবশ্যকীয় বিষয়গুলো বলবো বলে মনস্থ করেছি। তাই গুরুভার হবে না বলেই আশা রাখি।

      ছন্দ মানতে গিয়ে ভাবনা/কল্পনা কেমন গুটিয়ে যেতে চায়।

      কথা সত্যি। এই ভাবনা তোমার প্রিয় রোমেল চৌধুরীকেও ভাবিয়েছে। এই দেখ তার চিহ্ন,

      স্বরবৃত্তে বাঁধতে পারি
      তোমার চুলের বেণী
      দিলেম না হয় চারের চালে
      মাত্রা একটুখানি;

      আঁধার করে গড়িয়ে পড়ে
      তোমার চুলের ঝাড়
      নিলেম না হয় একটুখানি
      ছন্দ ভাঙার ছাড়;

      তাই বলে কি কল্পনা মোর
      মেলবে নাকো পাখা

      নইলে কেন চোখ রাঙিয়ে
      কপট ও রাগ আঁকা?
      ('মান ভাঙানোর ছড়া', রোমেল চৌধুরী)

      তবে এর একটা টোটকা দাওয়াই আছে। আগে কল্পনার পায়রাকে বাধাহীন পাখা মেলতে দাও। তারপর উড়ে যাবার স্বচ্ছন্দ গতির সাথে সংগতি রেখে ছন্দের নিখুঁত নূপুর পড়াও।


      দেখেছি সবুজ পাতা অঘ্রানের অন্ধকারে হতেছে হলুদ

      জবাব দিন
  2. সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

    🙂 🙂 🙂 🙂

    সিসিবির অকবি গোষ্ঠীকে ছন্দের আলোকে আলোকিত করবার এই প্রচেষ্টার জন্য ::salute:: তোমাকে ভাইয়া।

    আরো তিনবার পড়ার পর ফিরে আসবো আবার মন্তব্যের ঘরে। এবার আর ছাড়াছাড়ি নেইগো কবিতা বুঝতেই হবে!

    জবাব দিন
    • মোস্তফা (১৯৮০-১৯৮৬)

      তোমার মন্তব্য বেশ উপভোগ করলাম। তবু নিজের মনে জমে ওঠা অযথা সংশয় থেকে বলি,

      সিসিবির অকবি গোষ্ঠীকে ছন্দের আলোকে আলোকিত করবার এই প্রচেষ্টা

      না বোন, তা নয়! সে ঔদ্ধত্য আমার স্বভাব-বিরোধী। এ হলো শুধুই একটু আনন্দলাভের প্রচেষ্টা। শুধু ছান্দসিক হলেই যে কবি হওয়া সম্ভব নয়, সে কথা আমি বার বার বলেছি। কখনো নিজে, কখনো গুণীজনের জবানিতে।

      এবার আর ছাড়াছাড়ি নেইগো কবিতা বুঝতেই হবে!

      আমি তো কবিতা বুঝবার জন্য এ ব্লগ লিখিনি!


      দেখেছি সবুজ পাতা অঘ্রানের অন্ধকারে হতেছে হলুদ

      জবাব দিন
  3. কাজী সাদিক (৮৪-৯০)

    'কবিতা’ শব্দটি দেখার সাথে সাথে চম্পট দেওয়াদের মধ্যে একজন আমি। (সিসিবি'র বেশীর ভাগ লিখা তাই পড়াই হয় না।) কিন্তু আপনার কথায় "একটু" বসতে গিয়ে আঁটকে গেলাম যে! আনন্দভ্রমণের শেষ পর্যন্ত আছি...

    জবাব দিন
    • মোস্তফা (১৯৮০-১৯৮৬)

      🙂 ভালো বলেছ। কবিতার ভাষায় ও শব্দে স্বল্প আয়তনে অনেক সৌন্দর্য, অনেক গভীরতা লুকিয়ে থাকে। তাই যারা নিজেদের চিন্তায়, মননে, আচরণে, প্রকাশে রুচিশীলতার ছাপ রাখতে পছন্দ করেন; নিজেকে সৌন্দর্যে, সৌকর্যে অনুপম করে মেলে ধরতে চান; কবিতা পড়া তাদের জন্য একরকম অব্যর্থ দাওয়াই হিসেবে কাজ করে।

      ধন্যবাদ, হালে সাথে থাকার ও শেষ পর্যন্ত সাথে থাকবার প্রতিশ্রুতি দেবার জন্য। এটুকু বলতে পারি, তোমার এই লগ্নী করা সময় বিফলে যাবে না।


      দেখেছি সবুজ পাতা অঘ্রানের অন্ধকারে হতেছে হলুদ

      জবাব দিন
  4. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    "আমি বলি ছন্দের বিচারে সবক’টি ইন্দ্রিয়ানুভূতির অনুরণন ঘটানোর প্রয়োজন আছে। শ্রবণেন্দ্রিয় হচ্ছে অগ্রদূত, বাকিরা অনুসারী।" - চমৎকার বলেছো, কবুল!
    "অনুধাবন করুন। ঠিক আছে তো?" - হ্যাঁ, হ্যাঁ, এ পর্যন্ত তো ঠিকই আছে। অনুধাবন করলাম।
    "এবারে কান পেতে রেখেই একটু চোখ খুলি। শব্দের শরীরের ভেতরে সিলেবলকে খুঁজি" - খুব ভালো লাগছে তোমার এ দরদী প্রচেষ্টা।
    "সিজিএস, এফপিএস আর এমকেএস পদ্ধতিতে যেমন এককগুলো ভিন্ন, তেমনিভাবে অক্ষরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত ও স্বরবৃত্তেও সিলেবল ভেদে মাত্রার মাপ ভিন্ন। ব্যস, আপাততঃ এটুকু জানলেই চলছে।" - ভাই মোস্তফা, এর চেয়ে সহজ করে আর কে বলতে পারবে?
    সবশেষে বলি, প্রথম পাঠের ক-চন্দ্রবিন্দু, সবটাই জলবৎ তরলং। তাই পরের পাঠেও হাজির থাকবো আশাকরি।
    :hatsoff: :hatsoff: :hatsoff:

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মোস্তফা (১৯৮০-১৯৮৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।