সময়ের নির্বিকার সাক্ষী

তীব্র আঘাতে নীল আমি চিৎ হয়ে শুয়ে আছি ভরদুপুরের এই ব্যস্ত
রাস্তায়। যেন এক অন্যলোকের বাসিন্দা আমি; চারপাশে হেঁটে
যাচ্ছে অজস্র লোক, খুব কমই চলছে তাদের দুপায়ের উপর
দৃপ্ত আত্মবিশ্বাসে, অন্য প্রায় সবাইকে কেমন উদভ্রান্ত বলে
মনে হয় শুধু। আর আছে সাধ্যমত নানা রকমের যানে চড়ে বসা মানুষ আর মানুষ, বড্ড তাড়ায় আছে হয়তো তারা।

আমি দেখেই যাচ্ছি শুধু…….

রাস্তার ময়লাগুলো গন্ধ ছড়াতে এই ভরদুপুরে কেমন দলা পাকিয়ে আছে।
সদ্য খোঁড়া ড্রেনের পাশে আধন্যাংটা পাগলটা শুয়ে আছে গুটিশুটি মেরে।
কেমন যেন ঘোর ঘোর লাগছে আমার, হঠাৎ কি তবে হয়ে গেলাম শুণ্য?
একটা পা আমাকে মাড়িয়ে গেল, অথচ হোঁচট খেলনা সে, তীব্র একটা
ব্যথার অনুভূতি হলো শুধু বুঝি আমারই দেহে। শরীরটাকে তারপর থেকে
যেন পায়ে পায়ে দলছে, যানগুলো নিষ্ঠুর অবজ্ঞায় আমাকে দীর্ণ করে
ছুটছে তাদের আপন গতির ছন্দে। আমি ছিন্নদেহ হচ্ছি, গা থেকে
থেঁতলে ছিটকে পড়া অংশগুলোকে টেনে এনে আবার জোড়া লাগাচ্ছি।
আশ্চর্য! বেশ খেলা খেলা একটা আবহ যেন তৈরি হয়েছে পুরো ব্যাপারটা ঘিরে। বন্ধুমহলে একসময়ের বকবকানির চাইতেও তো এই খেলাটা দেখি
খুব একটা খারাপ কিছু না, মনে হচ্ছে ছিন্নভিন্ন হয়ে যেতে থাকা নিজের
দেহের অংশগুলোকে নির্বিকারভাবে বারংবার জোড়া লাগানোর নিত্য
এই খেলাটাই আমি সবচেয়ে ভালো পারি।

তাইতো বুঝি এখনো বেঁচে আছি!!

৯৩৩ বার দেখা হয়েছে

৮ টি মন্তব্য : “সময়ের নির্বিকার সাক্ষী”

মওন্তব্য করুন : রশিদ (৯৪-০০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।