(নাম নাই, হুদা লেখা)

রোদভাঙা যে জানালা দিয়ে মাখামাখি বাতাসগুলো ঢুকে পড়ত অতর্কিত,সেটা দিয়ে আজ হঠাৎ এক ঝাপটা বৃষ্টি এসে পা দুটো ভিজিয়ে দিয়ে গেল!শিরদাঁড়া বেয়ে ওঠা শীতল স্রোত ডেকে নিয়ে এল রাজ্যের স্মৃতি!

নিদারুণ নির্যাতন থেকে বাঁচতে আমি চোখ মেলি। একটা সিগারেট ধরাই। ধোঁয়া ছাড়ি। জানালা দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে ধোঁয়াগুলো,যেন কতগুলো মেঘশিশু। নাবালক মেঘ, এখনও বৃষ্টি ঝরাতে শিখে নি। ভাগ্যিস শিখে নি!

বের হওয়া দরকার,
আকাশের অবস্থা দেখতে উপরে তাকাই,
যেন লোভী চাতক এক!একমাত্র আকাশটাই দেখার মত আছে, আর সব নষ্ট হয়ে গেছে।
গান, কবিতা, ছবি, পাথুরে মুর্তি, প্রেমিকা ; সব!

রণসজ্জায় পৌনঃপুনিক মেঘ।
অনুগত সান্ত্রির মত আগলে রেখেছে অনন্ত আকাশ,স্থির, দৃঢ়-সংকল্প!প্রেমিকার ভাইদের মত,নাকি পানশালার বাউন্সারদের মত?

ভাল; আমি প্রতিরোধ ভালবাসি। ওই আকাশআমি নষ্ট করেই ছাড়ব!তারপর আরেকটা একটা সিগারেট ধরাব,আমার মেঘশিশুগুলো ধার দেব,সুশীলদের মত হিস্টেরিক হাসি দেব,তারপর আবার নষ্ট করব ওই আকাশ।

এখন একটু বের হতে হবে,
গলির দোকানটায় বেশ কিছু টাকা বাকি হয়ে আছে,এমাসের পত্রিকার বিলটাও।একটা কাজ পাবার কথা।দেখি, দেখা করে আসি লোকটার সাথে। একটা স্যান্ডেলও কিনতে হবে।

আপাতত আকাশটাকে মাফ করে দিলাম,আর নষ্ট সব কিছুকেও,প্রেমিকাকেও! আপাতত বেঁচে নিই।

১,৮৪১ বার দেখা হয়েছে

১৮ টি মন্তব্য : “(নাম নাই, হুদা লেখা)”

  1. সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

    🙂 🙂 🙂 🙂
    তোমার বিক্ষিপ্ত ভাবনার লেখাটি পড়লাম বার দুয়েক, ভাইয়া। সিসিবিতে এসে তুমি আমাদের কাছে এই যে এভাবে ভেন্ট আউট করছো সেটি ভাল লাগলো। মনের কথাগুলো বলা ভীষণ জরুরী!

    একটা গল্প বলি, শোন। কৈশোর ছুঁই ছুঁই একটি ছেলে সাইকেলের জন্য বায়না ধরলো তার বাবার কাছে। দরিদ্র বাবা পুত্রকে বললেন, আমার তো সামথর্ নাই সাইকেল কেনার তুমি বরং খোদার কাছে চাও; খোদা চাইলেই তোমার ইচ্ছাপূরণ করতে পারেন। বালক প্রতিদিন একই প্রাথর্না করে, ও খোদা তুমি আমায় একখানা সাইকেল দাওগো। এভাবে কিছুদিন কাটার পর বালক টের পেলো খোদার রাজ্যে কাজকর্মের নিয়মনীতি অন্য রকম। সুতরাং পলিসি পাল্টাতে হবে। একদিন বালক সবার অগোচরে শহর থেকে একটি সাইকেল চুরি করে এনে রাতে প্রাথর্নায় বসে বললো, সাইকেলের জন্য ধন্যবাদ খোদা; তুমি আমায় চুরির জন্য ক্ষমা করো!

    গল্পটি বলার কারণ হলো, কারো মুখাপেক্ষী না হয়ে থেকে নিজেই নিজেকে সাহায্য করো। বালকের চুরি করা অবশ্যই আইনতঃ গহর্িত; তাই সেটির আলোচনা না করে আমি কেবল বলতে চাইছি ওপরের নীল আকাশ অথবা দু'পয়সার প্রেমিকাটিকে ক্ষমা করে দেবার মত আনন্দময় আর কিছুই হয়না। হৃদয়হীন, অযোগ্য মানুষকে ভারবাহী চতুষ্পদের মত জীবনভর টেনে নিয়ে যাবার কোন মানেই হয়না। গান্ধী বলেছিলেন, দূর্বল কখনোই ক্ষমা করতে পারেনা। ক্ষমা করবার জন্য শৌযর্ দরকার।

    আরো লেখা পড়তে চাই তোমার থেকে। ভাল থেকো, ভাইয়া। আমার ভালবাসা রইল।

    জবাব দিন
    • মামুনুর রশীদ খান(২০০১—২০০৭)

      সাবিনাপা, এরকম ছাইপাশ দুর্মূল্য সময় নিয়ে পড়া এবং ততোধিক ধৈর্য নিয়ে এত চমৎকার মন্তব্য করার জন্য কৃতজ্ঞতা। লেখাটা নিতান্তই একটা বিক্ষিপ্ত, নৈরাশ্যবাদী খিস্তিখেউড়। উত্তম পুরুষে লেখা। ভেন্ট আউট করতে পেরে আমারও হালকা লাগছে। আপনাদের ভালবাসা আমাকে আরো কুঁকড়ে দেয়, আরো অপরাধী করে তোলে। তবুও...আশাবাদী একদিন হয়ত এত এত ভালবাসার যোগ্য করে তুলব নিজেকে। আশাবাদী হব। 🙂


      ক্যাডেট রশীদ ২৪তম,প ক ক

      জবাব দিন
  2. লুৎফুল (৭৮-৮৪)

    কবিতার ডালপালায় ভাবনার পাখীদের ডানা ঝাপটাতে দেখলাম যেনো ।
    যখন যেটাই মনে আসে দুম করে লিখে ফেলো । আর ছেড়ে দাও সিসিবিতে ।
    সম্ভাবনার লতা গুল্মগুলো একদিন দেখতে দেখতে ছড়িয়ে যাবে বটবৃক্ষের মতোন ।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মোস্তফা (১৯৮০-১৯৮৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।