পাঠকের ডায়েরিঃ বন্দীশালা পাকিস্তান

সন্ধ্যার সময় কাজ না থাকলে প্রায়ই বইয়ের দোকানে ঘোরাঘুরি করি, খুব যে একটা বই কিনি তা না বরং এসি বা ফ্যানের হাওয়া খাইতে খাইতে বই দেখাই মূল উদ্দেশ্য। এরকম গত কয়েকদিন আগে গরমের মধ্যে “মধ্যমা” নামক দোকানে এসির হাওয়া খাইতে খাইতে হঠাত তাকের একটা বইয়ের দিকে চোখ পড়ল, হালকা পাতলা হলুদ রঙের একটা বই। কয়েক পৃষ্ঠা উল্টাতেই আগ্রহ জাগল তবে বইয়ের দোকানে বই আগ্রহ জাগালেও সব সময় তা গরীব ছাত্রদের পকেটের অবস্থার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয় না। সবসময় না হলেও এইক্ষেত্রে দুইয়ে দুইয়ে চার হল। কারণ বইটার দাম মাত্র ৫৬ টাকা।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে খুব কম নাড়াচাড়া হওয়া একটা বিষয় হল- যুদ্ধের শেষে পাকিস্তানের বন্দীশালায় আটকে পরা বাংগালীরা। যুদ্ধে পরাজয়ের পর পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ আটক করে পশ্চিম পাকিস্তানে থেকে যাওয়া বাঙ্গালীদের। পরবর্তীতে বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান তৃ-পক্ষীয় বন্দী বিনিময় চুক্তির আওতায় ১৯৭৩ সালে মুক্তি পান এইসব আটক বাংলাদেশীরা। কিন্তু কথা হচ্ছে এইসব আটক বাঙ্গালীরা কী সবাই বাংলাদেশ সমর্থন করেছিল? কী অবস্থা ছিল তাদের বন্দীশালায়? এরকম নানা প্রশ্নের উত্তর নিয়ে সৈয়দ নাজমুদ্দীন হাশেমের বই “বন্দীশালা পাকিস্তান”। লেখক নিজেও সে সময় পাকিস্তানে বন্দীশালায় আটক ছিলেন, বইটা মূলত তার সেই সময়ের দিনলিপি। এই রোজনামচার শুরু ১৯৭৩ এর মে মাস থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। এই সময় তিনি মূলত বন্দী ছিলেন কাদেরাবাদ এবং ওয়ার্সাক বন্দীশিবিরে।

বন্দীশালায় থাকা অবস্থায় রাতের বেলা কেন্দ্রীয় সুইচবোর্ড থেকে শিবিরের সমস্ত বাতি নিভিয়ে দেওয়া হলে মোমবাতি বা ঘেরাটোপ দেওয়া হ্যারিকেনের আলোয় শুরু হত এই রোজনামচা লেখা। প্রতিদিন লেখা হয় নি এই রোজনামচা। সময় সুযোগমত লেখা হয়েছে। তাই অনেক সময় রয়েছে সাত থেকে আট দিনের বড় বিরতিও। নাজমুদ্দীন হাশেমের ভূমিকা থেকেই জানা যায় আস্তে আস্তে বন্দী বাংলাদেশীদের মধ্যে এই রোজনামচার কথা ছড়িয়ে পরে, জনপ্রিয়তা পায়। এমনকী লেখার পর পড়েও শুনাতে হত উপস্থিত সবাইকে। গূরুত্বপূর্ণ কিছু বাদ পড়লে উপস্থিত সবার দাবিতে তা আবার লিপিবদ্ধও করতে হত। এভাবে শুধু একজন ব্যক্তি মানুষের নিছক দিনলিপি থেকে এটা হয়ে পড়ে শত্রুভূমিতে বন্দীশিবিরে আটক বাংলাদেশীদের এক অনন্য দলিল।

এই রোজনামচায় মূল বিষয়বস্তু কী? বন্দীশিবিরে আটক এই রোজনামচার প্রথম পাঠকদের দেওয়া নাম থেকেই এটা স্পষ্ট- “দালালির দলিল”। নাজমুদ্দীন হাশেমের নিজের ভাষায় বললে- “বন্দীদশায় আমাদের সীমিত জীবনের মৌল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য বনাম পাকিস্তানের দালালি। শিবিরের অভ্যন্তরে দালালদের সংখ্যাধিক্য, তাই সংখ্যালঘু দেশপ্রেমিক সম্প্রদায়কে আপন মনোবল অটুট রাখার প্রয়োজনে এই একটি বিষয় অহোরাত্র আমাদের উত্তপ্ত আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠছিল। একে এক মুহূর্তের জন্য ভুলে থাকার উপায় ছিল না, কারণ শিবিরের হৃদয়হীন কর্তৃপক্ষ ও তাদের বংশবদ বাঙ্গালী অনুচরদের পরিকল্পিত বিরামহীন চাপের মুখে ছিলাম আমরা।” তাই বইটা পড়ার সময় বার বার অবাক হতে হয় দালালি কিছু মানুষের কতটা গভীরে প্রেথিত যে দেশ স্বাধীন হয়ে যাওয়ার পরেও এরা অভ্যাস ছাড়তে পারে না।

তবে বইটা পড়ার সময় সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটা আমাকে ভাবিয়ে তুলেছে সেটা হচ্ছে এইসব পাকমন পেয়ার দালালদের শ্রেণী চরিত্র। নাজমুদ্দীন হাশেম নিজে একজন উচ্চ পদস্থ সরকারী কর্মচারী ছিলেন। তাই বন্দীশিবিরে তার সাথে যারা ছিলেন তারা সবাই ছিলেন সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্রের উচ্চ শ্রেণীর কর্মকর্তা। এই আমলারাই ১৯৭৩ দেশে ফেরত আসার পর সামরিক এবং বেসামরিক আমলাতন্ত্রের উচ্চপর্যায়ে আসীন হন। কিন্তু অবাক হতে হয় এদের দালালি দেখে। একজন প্রাক্তন বাংগালী সচিব যিনি কীনা বন্দীশিবিরে নিজের ফ্রীজ এবং রেফ্রিজারেটর আনার জন্য গদগদ ভাবে তদবির করেন পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের সাথে, নিজের পদমর্যাদা বজায় রাখার কথা বলে যিনি অন্য বাংলাদেশীদের নামে অভিযোগ করেন পাকিস্তানিদের কাছে তখন অবাক হতে হয় একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হওয়ার যোগ্যতা তার আছে কীনা সেটা নিয়ে। কিন্তু আফসোস পরবর্তীতে এরাই ছিল আমাদের স্বাধীন দেশ গড়বার কারিগর।

আবার আরেক ধরণের দালালের সন্ধান পাওয়া যায় এই বইতে। যুদ্ধের পুরো নয় মাস যারা ছিলেন সাচ্চা পাকিস্তানি, এমনকী চাকরি নিয়ে থেকে যেতে চেয়েছিলেন পাকিস্তানেই কিন্তু ভাগ্যের ফেরে শিবিরে এসে পুরোদস্তুর দেশপ্রেমিক। এক পাকিস্তান প্রেমিক অফিসার যিনি কীনা ১৬ ডিসেম্বর জিন্নাহর কবর জড়িয়ে বিলাপ করেছিলেন, পরেরদিন সারা পাকিস্তানের জাতীয় দৈনিকগুলোতে যে ছবি এসেছিল সাচ্চা দেশপ্রেমিকের ছবি হিসেবে তিনি কীনা শিবিরে এসে ভেক ধরেন বাংলাদেশের এক লড়াকু সৈনিকের। অস্বীকার করেন সেই ছবি কে। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস এই সাচ্চা দেশ প্রেমিক দেশে ফেরত আসার পর ঠিকই উচ্চাসনে আসীন হন। আবার আছেন আরেক দল যারা যুদ্ধের পুরোটা সময় বিদেশের কোথাও পোস্টিং নিয়ে ছিলেন কিন্তু সেখান থেকে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেন নি, এমনকী অধঃস্তন কেউ যোগ দেওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দিয়েছেন। এরকম এক গ্রুপ ক্যাপ্টেনের কথা আছে, যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রেষণে সৌদি আরবে ছিলেন এবং থাকার সময় অধঃস্তনদের পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার সময় বাধা দিয়েছেন কিন্তু এত কিছুর পরেও পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের কৃপাদৃষ্টি পান নি তাই স্থান হয়েছে শিবিরে। আর ভাগ্যের ফের বুঝতে পেরে বাংলাদেশ বিরোধী এইসব লোক সেজে বসেন বাংলাদেশপ্রেমী হিসেবে।

বইতে লেখকের দূরদৃষ্টির পরিচয় পাওয়া যায় যখন তিনি বলেন এইসব আমলাদের যদি কোনরূপ শুদ্ধিঅভিযান ছাড়াই যদি বাংলাদেশের আমলাতন্ত্রে স্থান দেওয়া হয় তবে তার পরিণতি হবে ভয়ংকর। তবে ইতিহাস বলে পাকিস্তান ফেরত এইসব আমলাদের প্রশাসনে একত্রিতকরণের সময় এই দূরদৃষ্টির বড় অভাব ছিল। কোনরূপ বাছবিচার ছাড়াই তাদের স্থান দেওয়া হয়েছিল প্রশাসনে। তবে তার পরিণতি বুঝা গিয়েছিল পরবর্তী সামরিক বিদ্রোহগুলোর চরিত্রে এবং বেসামরিক আমলাতন্ত্রের মধ্যে তার সমর্থনের মাধ্যমে।

বন্দীশিবিরের দৈনিন্দিন কর্মকান্ডও উঠে এসেছে এই রোজনামচায়। অপ্রতুল রেশন, দ্রব্যমূল্যের উচ্চদাম, বাসস্থানের জন্য স্বল্প স্থান ইত্যাদি মিলিয়ে শিবিরের লোকদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। রেডক্রস বা অন্যকোন বিদেশী প্রতিনিধি দল আসলে পাকিস্তানিদের শিবিরে একরূপ আর চলে গেলেই অন্যরূপ। আবার পাকিস্তানিদের দোসর হিসেবে কিছু বাংগালীর রেডক্রসের কাছে মিথ্যা বয়ান, বিনিময়ে অন্যসময় তাদের বিশেষ সুযোগ সুবিধা লাভ। দেশে কবে যাওয়া হবে বা আদৌ যাওয়া হবে কীনা তা নিয়ে হতাশা। পাকিস্তানি বন্দীদের ফেরত না দিলে শিবিরে আটক বাংগালীদের বিচারের সম্মুখীন করা হবে ইত্যাদি নানা হুমকির মাঝে নানা ভাবে নিজেদের মনোবল জিইয়ে রাখার প্রচেষ্টা।

বইটার কিছু কিছু তথ্য বেশ বিস্মিত করেছে কারণ তথ্য হিসেবে এইগুলো ছিল আমার জন্য একদম নতুন। যেমন- মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রায় ১৫,০০০ অপহৃতা বাঙ্গালী নারীকে পাকিস্তানি এক “প্রগতিশীল ব্যাংক” (আমার ধারণা লেখক হাবীব ব্যাংক কে ইংগিত করেছেন) এর সহায়তায় মধ্যপ্রাচ্যে পাচার করা হয়। যুদ্ধের সময় আমাদের নারীদের কে যে এইভাবে অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে পাকিস্তানিরা ব্যবহার করেছিল তা ভাবতেই শিউরে উঠতে হয়। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পড়া কোন বইতেই এই বিষয়ে সামান্য উচ্চবাচ্চ্য পাই না। মুক্তিযুদ্ধে নারীদের এইসব আত্মত্যাগের কথা আড়ালেই থেকে যায়। হয়ত সম্মান রক্ষার কথা বলে নিজেরাই নিজেদের আত্মত্যাগকারী বীরদের লুকিয়ে রেখে অসম্মন করি।

এরকম আরেকটি তথ্য হল চরম হিন্দু বিদ্বেষী ভুট্টোর জন্ম পরিচয় নিয়ে। জেনে অবাক হয়ে যাই ভুট্টোর মা একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী। কিন্তু ইতিহাসের কী খেলা, এই লোকটাই পরে হয়ে উঠে এক ভয়ংকর হিন্দু বিদ্বেষী। প্রশ্ন জাগে মনে, ভারত বিরোধী পাকিস্তানের জাতীয় রাজনীতিতে স্থান নেওয়ার স্বার্থেই নিজের জন্ম পরিচয় লুকাতেই কী ভুট্টোর এরকম হয়ে উঠার পিছনের ইতিহাস?

পুরো বইটা পড়ার পর বইটা সম্পর্কে আমার একটাই অভিযোগ, আর ভাল করে বললে লেখকের সম্পর্কে। লেখক দালালদের পরিচয় দেওয়ার সময় তাদের নামগুলো বলেন নি। অবশ্য ভূমিকাতে লেখক এব্যাপারে ব্যখ্যা দিয়েছেন কিন্তু আমার মতে গিরগিরিদের পরিচয় ইতিহাসে স্পষ্ট করে লেখা থাকা দরকার। অবশ্য স্পষ্ট করে না বললেও লেখক ইশারা দিয়েছেন দালালদের সম্পর্কে, অর্থাৎ এই গিরগিটিদের কে শেষ কোথায় চাকরি করেছেন, তাদের বিশেষ কীর্তি সূমুহ। আমার ধারণা এইসব সূত্র ধরে একটু গবেষণা করলেই সেই সময়ের অনেক রাঘব বোয়ালেদের আসল চরিত্র বেরিয়ে আসবে। লেখকের ভাষায়- আকেলমান্দকে লিয়ে ইশারাহি কাফি হ্যায়।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধ যেমন আমাদের বীরত্বের ইতিহাস ঠিক তেমনি আমাদের কিছু স্বজাতির দালালিরও ইতিহাস।যে দালালদের আমরা সঠিক সময়ে চিহ্নিত করতে পারিনি বলে তারা বাংলাদেশে হয়েছিল পুনর্বাসিত। পাকিস্তান থেকে যুদ্ধ করে বিচ্ছন্ন হয়ে ঠিক এক দশকের মধ্যেই কেন রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে পাকিস্তানের নীতির অবাধ প্রবেশ বুঝতে হলে, আমাদের বুঝতে হবে তৎকালীন প্রশাসন কে নেতৃত্ব দেওয়া আমালাদের শ্রেণী চরিত্র, তাদের মানসিক গঠক কে। আর এইসব বিবেচনায় বলা যায় সৈয়দ নাজমুদ্দীন হাশেমের “বন্দীশিবির পাকিস্তান” এক অনন্য দলিল।

২,০৮৫ বার দেখা হয়েছে

১৯ টি মন্তব্য : “পাঠকের ডায়েরিঃ বন্দীশালা পাকিস্তান”

  1. নাফিজ (০৩-০৯)

    পড়া দরকার বইটা- নতুন কথা আছে মনে হচ্ছে কিছু।

    সুন্দর লিখেছেন ভাই- রিভিউটা পড়ে বইটার প্রতি আগ্রহ জন্মালো।


    আলোর দিকে তাকাও, ভোগ করো এর রূপ। চক্ষু বোজো এবং আবার দ্যাখো। প্রথমেই তুমি যা দেখেছিলে তা আর নেই,এর পর তুমি যা দেখবে, তা এখনও হয়ে ওঠেনি।

    জবাব দিন
  2. আজিজুল (১৯৭২-১৯৭৮)

    অনেক নতুন তথ্যের জন্যে আর বইটির প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির জন্যে ধন্যবাদ।আমার এক বন্ধু পাকিস্তান শিবিরে অনেক দিন আটকে ছিল। 'ও' এই ধরনের অনেক গল্প বলতে চায়, এবং চায় যে সেসব আমি লিখি ।এখন ব্যাপারটা সিরিয়েসলি ভেবে দেখব।
    আবার ধন্যবাদ।
    পুনশ্চ ঃ স্বাধীনতার ঠিক পর পরই 'কানাডিয়েন সরকার' নাকি বাংলাদেশকে অফার করেছিল, মুক্তি যোদ্ধা শিক্ষিত তরুণদের কানাডায় বিশেষ ট্রেনিং দিয়ে, আমাদের সেক্রেটারিয়েট/প্রশান যন্ত্রকে সম্পূর্ণ ঢেলে সাজিয়ে দিবে। যদি ব্যাপারটা সত্যি হয়ে থাকে,আমরা জীবনের শ্রেস্ট পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছি।


    Smile n live, help let others do!

    জবাব দিন
    • রাশেদ (৯৯-০৫)

      আপনার বন্ধুর কথাগুলো লিখে ফেলেন আজিজুল ভাই। ঐ সময়ের সাক্ষী লোকদের সংখ্যা কমে আসছে। সবাই শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই এইসব লিপিবদ্ধ করে রাখা দরকার।

      অফটপিকঃ কলেজে আমার গাইডের নামও ছিল আজিজুল 😀


      মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

      জবাব দিন
  3. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    খুব দরকারি পোস্ট। একাত্তরে বাংগালি নারীদের উপর যে অত্যাচার হয়েছে এবং পরবর্তীতে যে দুর্বিষহ জীবনের মধ্যে দিয়ে তাদেরকে যেতে হয়েছে তা ভাবলে শিউড়ে উঠি। একজন মুক্তিযোদ্ধা বীরবেশে ঘরে ফিরতে পেরেছে। আর একজন বীরাংগনা পরিবার থেকে বিতাড়িত হয়েছে। এখন জানলাম এদের অনেককে সৌদি আরবে পাচার করা হয়েছে। তারপর কি হয়েছে লেখা নেই কিন্ত আমরা একটা ধারণা পেতে পারি। এমন নির্যাতিত জীবনের থেকেও এদের দুর্ভাগ্য যে কেউ তেমন একটা এদের নিয়ে কথা বলেনি।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
    • রাশেদ (৯৯-০৫)

      কেমন আছেন শান্তা আপা?
      সময়ের হিসেবে একটা ঘটনা থেকে যতদূরে যাওয়া যায় সেই ঘটনার তত নির্মোহ বিশ্লেষণ সম্ভব। আমি আশাবাদী আস্তে আস্তে এইসব ঘটনা আড়াল ছেড়ে বেড়িয়ে আসবে, আমরা মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অবদানের যথাযথ মূল্যায়ন করতে পারব।


      মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

      জবাব দিন
  4. রাব্বী (৯২-৯৮)

    দুর্দান্ত একটি বুক রিভিউ পোষ্ট। বইটা পড়তে ইচ্ছে হচ্ছে বিষয়বস্তুর কারণে।

    আমাদের মুক্তিযুদ্ধ যেমন আমাদের বীরত্বের ইতিহাস ঠিক তেমনি আমাদের কিছু স্বজাতির দালালিরও ইতিহাস।যে দালালদের আমরা সঠিক সময়ে চিহ্নিত করতে পারিনি বলে তারা বাংলাদেশে হয়েছিল পুনর্বাসিত।

    খুবই খাঁটিকথা। বীরত্বগাঠার চেয়ে এই ইতিহাসগুলোর আরো প্রচার হওয়া প্রয়োজন। এদের কৃতকর্ম ঢাকতে এখনো শর্মিলা বোস এবং রুবাইয়াত হোসেনরা উঠেপড়ে লেগে আছে।


    আমার বন্ধুয়া বিহনে

    জবাব দিন
  5. সামিয়া (৯৯-০৫)

    মারাত্মক রিভিউ। রাশেদ তুমি যেকোন কিছুরই রিভিউটা বেশ ভালো লেখো 🙂
    আসলে তুমি যেকোন 'কিছুই' বেশ ভালো লেখো 🙂

    দুঃখের বিষয় এই দালাল গোত্রীয় মানুষদেরই কেন যেন আজকাল চারপাশে বেশি দেখি।

    জবাব দিন
  6. রুম্মান (১৯৯৩-৯৯)

    বইটা পড়তে চাই । আসলে শুধু পড়তেই চাই না ; নিজের কাছে ১টা কপিও চাই ।


    আমার কি সমস্ত কিছুই হলো ভুল
    ভুল কথা, ভুল সম্মোধন
    ভুল পথ, ভুল বাড়ি, ভুল ঘোরাফেরা
    সারাটা জীবন ভুল চিঠি লেখা হলো শুধু,
    ভুল দরজায় হলো ব্যর্থ করাঘাত
    আমার কেবল হলো সমস্ত জীবন শুধু ভুল বই পড়া ।

    জবাব দিন
  7. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    দারুন একটা রিভিও, পড়ার জন্য দূর্দান্ত আগ্রহ তৈরী হয়েছে। যেকোন ভাবেই হোক বইটা সংগ্রহ করতে হবে। একাত্তরে পাকিস্তানে আটকে পড়া আমাদের সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের স্বরুপ জানার আগ্রহ আমার অনেক আগে থেকেই। অনেক আগে কোন একটা লেখায় পড়ে ছিলাম তাদেরকে কোন ফিল্টারিং ছাড়াই প্রশাষনে আত্মিকরনের মধ্যদিয়েই আমাদের জাতির পশ্চাদযাত্রার সূচনা হয়েছিল।

    পাঠকের ডায়েরির পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রাশেদ (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।