আজ রুমকির বাবার জন্মদিন

আজকে সিসিবির জন্মদিন গেল, বলা যায় এই উপলক্ষ্যে অনেক পুরাতন পাপীদের লেখা দেখা গেল আজ। মন্তব্য, প্রতিমন্তব্য আর ফ্রিজ খুলে মিষ্টি খাওয়ার মাঝে সিসিবি বেশ কয়েকমাসের মধ্যে আজকেই সবচাইতে জমজমাট। তবে এই উতসব উতসব ভাবের মাঝে সম্ভবত সবার অলক্ষ্যেই চলে যাচ্ছে এই ব্লগের এক পুরাতন পাপীর জন্মদিন। এদিকে মাস্ফু ভাই নাকি এই শীতের রাতে চোর ডাকাতের ডিউটিতে ব্যস্ত আর রকিব মিয়া নাকি সুন্দরী বালিকাদের চা বিলানোতে ব্যস্ত কিন্তু তাই বলেতো জন্মদিনের পোস্ট থেমে থাকতে পারে না তাই আজকে রাতের এই কী-বোর্ডবাজি আমাদের ভাতিজি রুমকির বাবার জন্য 😀

তা এই রুমকির বাবার সাথে আমাদের অনেকের পরিচয় ইন দ্যা ইয়ার নাইন্টিন নাইন্টি নাইন। তখন আমরা সবে কুমিল্লা থেকে একটু দূরে ময়নামতির তীরে কোন এক লাল হাউজের সদ্য আগত বাসিন্দা। সেই সময় ক্লাস সেভেনের এক বালক কে প্রথম দিন ডিনারের আগে তার গাইড শিখায় টেবিলে তোমার হাতের ডান পাশের টেবিল লিডারের চেয়ারে যে এসে বসবে তার নাম পারভেজ, ডান পাশের চেয়ারে যে এসে বসবে তার নাম তানভীর আর তানভীরের ডান পাশে যে এসে বসবে তার নাম মোস্তফা। মনে রাখবা এরা হচ্ছে টেবিলের সবচাইতে সিনিয়র আর এনারা আসলে অবশ্যই দাড়াবা। এদিকে গাইড তার ক্লাস সেভেনের পার্টনার কে বারবার নাম গুলা মুখস্ত করায় আর প্রশ্ন করে নাম গুলা মনে আছে তো কিন্তু বেচারা জুনিয়র এত এত অচেনা নামের মাঝে সব ভজঘট পাকিয়ে ফেলে। তখন পার্টনার কে নাম মনে রাখানোর জন্য গাইড এক অভিনব পদ্ধতি বের করে। সবার নামের সাথে তাদের একটা করে বিশেষ গুণ বলে আর বলে প্রত্যেক নামের সাথে এই গুণ গুলো মনে রাখতে বলে। ঠিক সেই সময় তানভীর নামটার জন্য বরাদ্দ ছিল যে কথাটা সেটা হল- ভাল ছাত্র 🙂

তবে সে ভাল ছাত্রের এই গুণের কথা বললেও আরেকটা গুণের কথা আবিষ্কার করতে সেই ক্লাস সেভেনের অবশ্য বেশিক্ষণ লাগে নাই। তো সেই ক্লাস সেভেন সেইদিন জীবনে প্রথমবারের মত হাতে কাটা চামচ নিয়ে যখন তাদের নিয়ন্ত্রনে বেশি ব্যস্ত তখন সেই যুদ্ধের পরিণতি স্বরূপ তার প্লেটের মাংসের আশ্রয় হয় পাশের এক সিনিয়রের শার্টে। এই ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার যখন টেবিলের সবার হাসিতে ব্যতিব্যস্ত গাইড যখন সেই ক্লাস সেভেন কে চাপা স্বরে ঝাড়ি দিতে ব্যস্ত তখন সেই ভাল মানুষ টেবিল লিডারের উক্তি ছিল- ঐ থাক ছাইড়া দাও, প্রথম দিন সবার একটু একটু এমন হয়। ওরে আপাতত বাটি থেকে আমার মাংসটা দাও। তখন নতুন মাংসের টুকরার সাথে কাটাচামচের যুদ্ধ চালাতে চালাতে সেই ক্লাস সেভেন ভাল ছাত্রটার আরেকটা গুণ আবিষ্কার করে- ভাল মানুষ 🙂

সেই নাইন্টি নাইনের পর মেঘনা, গোমতী, তিতাসের বুকে অনেক পানি বয়ে যায় আর আমরা এসে হাজির হই টু থাউজেন্ড টেনে। এর মাঝখানে সেই ভাল ছাত্র ভাল মানুষ কে নিয়ে বলার মত অনেক গুল্প আমাদের অনেকের ভান্ডারে জমা আছে। তা এত গল্পের মাঝে একটা গল্প সবাই জানেন, সেটা হল সেই ভাল ছাত্রের একটা রুমকি নামে একটা ফুটফুটে মেয়ে আছে, রুমকির মা নামে আছে এক সুন্দরী স্ত্রী। তবে যে কাহিনিটা অনেকেই জানেন না সেটা হল রুমকি আর তার বাবা প্রায়ই ফ্রিজ থেকে চুরি করে মিষ্টী খায়। আজকেও সিসিবির জন্মদিন উপলক্ষ্যে বাপ বেটিতে মিলে নাকি ফ্রিজের মিষ্টি সব সাবাড় করেছে। তারপরেও রুমকির মায়ের চোখ রাঙ্গানি এড়িয়ে রুমকি কে নিয়ে আরেকদফা মিষ্টির উপর হামলার পরিকল্পনা করছে রুমকির বাবা। আর সেই মিষ্টি উতসবে আপনাদের সবার আমন্ত্রণ কারণ আজকে রুমকির বাবার জন্মদিন।

শুভ জন্মদিন তানভীর ভাই। তিন প্রহরের বিলে যাবার সময় অবশ্যই রুমকি আর রুমকির মাকে নিয়ে যাবেন 🙂

৪,১৩৫ বার দেখা হয়েছে

৫৯ টি মন্তব্য : “আজ রুমকির বাবার জন্মদিন”

  1. কামরুল হাসান (৯৪-০০)

    আব্বা আম্মা আগে বকা দিত, তুই তানভীরের মত হইতে পারিস না কেন?
    এখন আমি নিজেও ভাবি, আমি তানভীরের মত হইতে পারলাম না কেন?

    শুভ জন্মদিন দোস্ত।
    বড় হয়ে আমরা একদিন তিন প্রহরের বিল দেখতে যাব।


    ---------------------------------------------------------------------------
    বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
    ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

    জবাব দিন
    • তানভীর (৯৪-০০)

      আমার মত হইতে চাইস না, তাইলে আমরা তোর মত পরিচালক আর ক্রীড়া সাংবাদিক আমরা পেতাম না।
      সবাই তার নিজের মত করেই সবচেয়ে ভালো থাকে, অন্য কারও মত কখনও হতে নাই। 🙂

      ইনশাল্লাহ একদিন তিন প্রহরের বিল আমরা দেখতে যাবই। 😀

      জবাব দিন
  2. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    তানভীর ভাই, শুভ জন্মদিন... 😀

    বড় হবার পর খবরদার তিন প্রহরের বিলের দিকে যাবেন না। ওখানকার চা এর দোকানে সিসিবির কয়েকজন ব্যাপক হারে বাকিতে খায়া আসছে...এখন কেউ গেলে কি হবে বলা মুশকিল... 🙁 :no:


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  3. রকিব (০১-০৭)

    বস, লেট করছি, কিন্তু এসএমএস আর ফেসবুকে আগেই বলে আসছি কিন্তু।।
    আবার কই, শুভ জন্মদিন টু রুমকী’স ড্যাড্ডী!!
    এখানেই থেমে গেলে চলবে না ভাইয়া। চুমকী, ঠুমকী, মুমকী, নিমকী সবাইকে নিএ আসতে হবে পৃথিবীর আলোয় B-) ।


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।