অভিমান

বুঝ এখন কেমন মজা , আগে আমার কথা তো কেও বিশ্বাস করল না । তাই বুঝুক এইবার মজা । আমি আগে কত করে বললাম যে আমি কাজ টা আমি করি নাই কিন্তু তখনতো কেও বিশ্বাস করল না , আমি বললাম আল্লার কসম এমন কি তার পরেও না । তাইলে আর আমার আর কি করার আছে । এইবার বুঝুক সবাই কেমন মজা ।

দেখ না এই অন্ধকার ঘরটায় কত লোক ভীড় করেছে এমনিতেও এই সময় কারেন্ট থাকে না তারপরও এই রুমে এত ভীড় । কিন্তু আমি কি করব ? আমার কথাতো আর তখন কেও শুনে নি তাই সবাই কষ্ট করুক এই গরমে , আমার কি ? ঐদেখ বারাকাত স্যার কোণায় দাড়িয়ে ঘাম মুছছে , মুছুক । আমাকে সিক্স থেকে এই বার নাইন পর্যন্ত তিন বছর ধরে পড়ালেন তাও কিনা আমার কথা বিশ্বাস করলেন না তাইলে আর আমার কি করার আছে । তাই গরমে দাড়িয়ে দাড়িয়ে হাঁসফাঁস করুন আর আমার কথা বিশ্বাস না করলে কি হয় সেটাই চিন্তা করুন ।

ঐদেখ পাশের বাসার বুবনিও এসে গেছে দেখি । আস , আস তুইও বাকি থাকবি কেন তোর শাস্তি্টাও নিয়ে যা । আরে কত ছোটকাল থেকে কলোনীতে আমরা পাশাপাশি বাসায় থাকি , এক ক্লাসে এক স্কুলে পড়ি তারপরও কিনা তুই আমাকে বিশ্বাস করলি না ? আমাকে বললি – ছিঃ । তোকে আমি কত ভালবাসি তারপরও বললি- ছিঃ । যা তোর সাথে আর কথাই বলবো না । বুঝ তাইলে এইবার মজা বুঝ ।

শুধু ছোটদার জন্য খারাপ লাগছে বেচারা জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে । মন খারাপ লাগলে বোকাটা কিছুই করতে পারে না শুধু জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে । মা কত বকল ওকে তাও বদলালো না মন খারাপ লাগলে শুধু জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে । বেচারা ঢাকায় পড়ে , কিছু না বুঝেই শাস্তি পেয়ে গেল । আহারে ছোটদার জন্য কষ্ট লাগছে ।

মা’র তো ছোটখাট কারনেই অজ্ঞান হওয়া স্বভাব আজকে রুমের কোণায় কয়েকজন মা কে মাথায় পানি ঢালছে আর কেও বাতাস করছে । বেচার জ্ঞান আসার পরপরি অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে । বাবা মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে চাচারা কি কি যেন বলছে । কিন্তু কিছুই তার কানে যাচ্ছে বলে মনে হয় না কখন গেছে বলে মনেও হয় না । নাইলে কি এইভাবে মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকা লাগে । কত করে বললাম আমি নকল করি নাই , পরীক্ষার সময় আমার পাশে পরে থাকা কাগজ টা কার আমি জানি না কিন্তু কেও শুনল না । স্যাররা শুনল না এমন কি তোমরাও না । সবার মত তোমরা কেন আমাকে বললে- ছিঃ ? তাই তোমরা কষ্ট পাও আমার রশিতে ঝুলে পরা লাশের পাশে বসে কষ্ট পাও ।

নিবিড়
nibir110@hotmail.com

৩,৮৭০ বার দেখা হয়েছে

৫৫ টি মন্তব্য : “অভিমান”

  1. তাইফুর (৯২-৯৮)

    নকলও কইরবা, আবার রশিতে ঝুইলা মজাও দেখবা ... এইটা ঠিক না বাচ্চু।
    না হয় ধরাই খাইছ ... এত অভিমান ক্যান ??
    (রাশেদ প্লট আর লেখা'র ধরণ্টা চ্রম হইছে। সাবাস)


    পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
    মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

    জবাব দিন
  2. রহমান (৯২-৯৮)

    প্লটটাতো দারুন :thumbup:

    বসুন্ধরা নাকি ইষ্টার্ণ হাউসিং এর বলতো :-B

    গল্পের নায়ক ছেলে না হয়ে মেয়ে (সেক্ষেত্রে নায়িকা হতো) মনে হয় আরো উপযুক্ত হতো, কারন মেয়েরা বেশি গলায় দড়ি দেয় 😛

    লেখার ধরন ভাল লেগেছে, শেষের লাইন পড়ার আগ পযন্ত বুঝিনি ঘটনা কি ঘটেছে। সাবাশ রাশেদ :clap:

    জবাব দিন
  3. কামরুলতপু (৯৬-০২)

    রাশেদ অসাধারণ হয়েছে প্লটখানা। আমার এক দূরের ভাগনী কেন যেন মায়ের উপর রাগ করে এইরকম ঘটনা ঘটিয়েছে খুব পছন্দ করত আমাকে গেলেই মামা মামা করত আমারো খুব ভাল লাগত। ইচ্ছে হয় তাকে জিজ্ঞেস করি অভিমান প্রকাশের কি আর কোন উপায় জানা ছিলনা তার?

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রাশেদ (৯৯-০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।