নন্দিত নিবাস

নন্দিত নিবাস
———– ড. রমিত আজাদ

‘নন্দিত’ শব্দটির সাথে প্রথম পরিচয় একটি উপন্যাস-এর নামের মধ্যে দিয়ে। উপন্যাসটির নাম ছিলো ‘নন্দিত নরকে’। পারিবারিক লাইব্রেরিতে বইটি রক্ষিত ছিলো। আমার বয়স তখন বছর তেরো হবে। শেলফ থেকে বের করে অপড়া বই দেখে পড়তে শুরু করলাম, যেই শুরু করলাম শেষ না করে আর বইটা হাত থেকে নামাতে পারলাম না। শেষ করার পর অদ্ভুত এক অনুভূতি হলো। এতো সুন্দর গল্প! একেবারেই ভিন্ন ধাঁচে লেখা। লেখার এরকম স্টাইলের সাথে আগে কোন পরিচয় হয়নি। কে লিখেছে এতো সুন্দর গল্পটি? বই পড়ার শুরুতে লেখকের নামের দিকে নজর দেইনি, এবার পরম আগ্রহ নিয়ে দেখলাম, অসচরাচর ও কিছুটা অশালীন ছবি আঁকা মলাটের উপরে উপন্যাসের নামের নীচেই ছাপার হরফে লেখা ‘হুমায়ুন আহমেদ’। আগে কখনো নাম শুনিনি এই লেখকের। চমৎকার লিখেছেন তো এই নতুন লেখক! বইয়ের ভূমিকা পড়ে জানতে পারলাম যে এইটিই লেখকের লেখা প্রথম উপন্যাস, বইটির প্রকাশনা ১৯৭২/৭৩ সাল এবং উপন্যাসটি বাংলা এ্যাকাডেমী পুরষ্কার পেয়েছে (যতদূর মনে পড়ে)। হু হু এত সুন্দর আবেগ সঞ্চারকারী একটা উপন্যাস এর তো পুরষ্কার পাওয়ারই কথা। সেইদিন সারাক্ষণ আমার মাথায় ঐ উপন্যাসটিই ছিলো। রাতের দিকে মনে পড়লো এই উপন্যাস অবলম্বনে একটা নাটক আমি আরো ছোটবেলায় বিটিভি-তে দেখেছিলাম (বিটিভি সেসময়ের একমাত্র টিভি চ্যানেল, এবং অনুষ্ঠান প্রচারনা ছিলো সাদা-কালো)। নাটকটিতে অনবদ্য অভিনয় করেছিলেন মমতাজ উদ্দীন, মিতা চৌধুরী, আল মনসুর প্রমুখ (বাকিদের নাম মনে পড়ছে না)।

এরপর, ঐ আবেগ সঞ্চারকারী লেখকের দ্বিতীয় উপন্যাস পড়েছিলাম ‘সবাই গেছে বনে’। মার্কিন প্রবাসী এক বাঙালী ছেলের সাথে স্ট্রেঞ্জ এক আমেরিকান তরুণীর সহসা প্রেমের কাহিনীর উপর ভিত্তি করে সেই উপন্যাসটি। এছাড়াও মার্কিন প্রবাসী বাংলাদেশীদের জীবনের টুকরো-টাকরাও সেখানে উঠে এসেছিলো। এই উপন্যাসটিও আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছিলো। এই গল্পটি পড়ে আমি প্রথম জানতে পারি ফার্গো শহরের কথা, ধুম বরফ পড়ে একটা শহর কিভাবে তুষারে ডুবে যেতে পারে তাও প্রথম জানি এও গল্প থেকে। সেখান থেকেই বরফে ঢাকা একটি শহর দেখার অদ্ভুত লোভ জন্মায় আমার মনে। যা পরবর্তি জীবনে বাস্তবে রূপ নিয়েছিলো। উপন্যাসটি পড়ে বুঝতে পেরেছিলাম যে লেখক আমেরিকা প্রবাসী, সম্ভবত সেখানে লেখাপড়া করছেন। পড়ে বড় বোনের কাছ থেকে শুনেছিলাম যে, তিনি আমেরিকা থেকে সাপ্তাহিক বিচিত্রায় ‘ওহ আমেরিকা!’ নামে একটি কলাম লিখতেন, সেসময় তরুণ-তরুণীদের মধ্যে কলামটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো।

কয়েক বছর পরে হুমায়ুন আহমেদ-এর রচিত ধারাবাহিক নাটক ‘এই সব দিন রাত্রি’ নিয়মিত প্রচারিত হতে থাকে বিটিভিতে। শুনেছি, অভিনেতাদের অনেকেই নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বে নাটকটিতে অভিনয় করতে শুরু করেন। তাদের ধারণা ছিলো নাটকটিতে কাহিনী কিছুই নেই, তাই এটা দর্শক চাহিদা মেটাতে পারবে না। গোপনে এক অভিনেত্রী বলেছিলেন যে, কৃশকায় সাদামাটা এই লেখকটিকেও তাঁর কাছে ইমপ্রেসিভ মনে হয়নি। অথচ এই নাটকটি দর্শক চাহিদা মিটিয়ে প্রবল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। ‘টুনি’, ‘সাদেক আলী’, ‘সুখী নীলগঞ্জ’ কথাগুলো তো এখনো অনেকের মুখে শোনা যায়। নাটক দেখে জানতে পেরেছিলাম যে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাঠ শেষ করে বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন। এসেই তিনি মাঠে নেমে পড়েছেন তাঁর সাহিত্য প্রতিভা দিয়ে সবাইকে চমকে দিতে।

একে একে হাতে এলো উনার লেখা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীগুলো। ‘তোমাদের জন্য ভালোবাসা’, ‘নিনাষ’, ইত্যাদি। এর আগে আমরা পড়েছিলাম সত্যজিত রায় রচিত ‘প্রফেসর শঙ্কু’-র গল্পগুলো। সেগুলিকে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী না বলে ফেইরি টেল বলাই ভালো। আমি কিছু রাশিয়ান বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী পড়েছিলাম। অদ্ভুত সুন্দর গল্পগুলো পড়ে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায়না। বাংলা ভাষায় বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী প্রথম লিখেছিলেন হুমায়ুন আহমেদ-ই। উনার নিজের লেখায় পড়েছি যে, রুশ বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী পড়েই তিনি অনুপ্রানিত হয়েছিলেন।

এরপর উনার লেখা অনেক উপন্যাস পড়েছি, অনেক গল্প পড়েছি, অনেক নাটক দেখেছি। বাংলাদেশে থাকা অবস্থায় উনার শেষ ধারাবাহিক নাটক দেখেছিলাম ‘বহুব্রীহি’। আমাদের জেনারেশনে নাটকটির জনপ্রিয়তা যে কি পরিমান ছিলো তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। এরপর দীর্ঘকালের জন্য বিদেশে পারি জমাই। সেখানে থাকা অবস্থায় ভিডিওতে দেখেছিলাম ধারাবাহিক নাটক ‘কোথাও কেউ নেই’।

ইন্টারনেটবিহীন সেই যুগে বাংলা সাহিত্যের চর্চা করার সুযোগ ছিলো কম। কেউ দেশে গেলে তিনি যদি কোন বই নিয়ে আসতেন, সেই বইয়ের উপর হুমরী খেয়ে পড়তাম সাহিত্যপ্রেমিকরা। সেরকমভাবে হুমায়ুন আহমেদ-এর লেখা কিছু বই আমি পড়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। এরকম একটি বই একবার হাতে পড়লো্ হুমায়ুন আহমেদ-এর লেখা ‘আমার ছেলেবেলা’। এর আগে ম্যাক্সিম গোর্কীর লেখা সিরিজ স্মৃতিচারণ ‘আমার ছেলেবেলা’, ‘পৃথিবীর পথে’ ও ‘আমার বিশ্ববিদ্যালয়’ পড়েছিলাম। বিশ্বখ্যাত এই দার্শনিকের লেখা অতুলনীয়। এবার আমাদের দেশীয় লেখকের ‘আমার ছেলেবেলা’ পড়ে দেখি কেমন লাগে! শুরু করলাম পড়া, গোর্কীর গভীর দর্শনের সাথে তুলনা করতে পারবো না, তবে পড়তে ভালোই লাগছিলো। ঐ স্মৃতিচারণ পড়ে বুঝতে পেরেছিলাম যে উনার লেখার অদ্ভুত অদ্ভুত উপাদানগুলো ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই নেয়া। সেখানেই পড়েছিলাম যে উনার শ্রদ্ধেয় পিতা ফয়জুর রহমান কি করে পুলিশ অফিসার হয়েছিলেন। এক জায়গায় বেশিদিন থাকতে ভালোবাসতেন না তিনি, তাই খুব ঘনঘন ট্রান্সফার নিতেন। এভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ছিলেন উনার পরিবার।

এরকম একটি ট্রান্সফার নিয়ে সার্কেল ইন্সপেকটর জনাব ফয়জুর রহমান এসেছিলেন বান্দরবানে। সেই দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থার দিনে, পার্বত্য বান্দরবান ছিলো একটি প্রত্যন্ত অঞ্চল। সেখানে কেটেছিলো হুমায়ুন আহমেদের দুরন্ত শৈশবের কিছুকাল। তিনি আরো লিখেছিলেন যে উনার সাথে লেখাপড়া করেছিলো মুরং রাজার মেয়ে। কি একটা সমস্যা হওয়ার পর হুমায়ুন আহমেদ কয়েকদিন স্কুলে যাননি। তাকে দেখতে বাসায় এসেছিলো মুরং রাজার মেয়ে ‘সত্যিকারের রাজকন্যা’।

ঘুরে বেড়াতে আমার খুব ভালো লাগে। ক্যাডেট কলেজে পড়ার সুবাদে দেশের জনগণের কৃপায়, আয়োজিত শিক্ষা সফরগুলোতে ঘোরার সৌভাগ্য হয়েছিলো দেশের বিভিন্ন জায়গায়। সেই সুবাদেই প্রথম দেখেছিলাম বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে দাঁড়িয়ে বঙ্গোপসাগরের উথাল-পাথাল ঢেউ। সেই সৈকতে দাঁড়িয়েই প্রথম স্বপ্ন দেখেছিলাম একদিন প্রিয়তমা স্ত্রীকে নিয়ে আবারো এই সৈকতে দাঁড়িয়ে উপভোগ করবো সমুদ্রের উদ্বেলিত ঊর্মিমালা। পরবর্তি জীবনে সোভিয়েত-জর্জিয়া-ইউক্রেন-রাশিয়ার জনগণের কৃপায় প্রাপ্ত স্কলারশীপগুলোর সুবাদে দেখেছিলাম সেই রাষ্ট্রগুলোর প্রাকৃতিক-অপ্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য। সাধ্য-সামর্থ অনুযায়ী বিদেশে ঘুরে দেখেছি যতটুকু সম্ভব। এখন দেশে আছি, অন্যদের কাছে কেমন জানিনা, আমার কাছে এটাই পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর দেশ। খুব ইচ্ছা করে দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত পুরোটা চষে বেড়াতে। পেশাগত ব্যস্ততা ও অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার জন্য সবসময় তা সম্ভব হয়না।

মে মাসে একটা সেমিস্টার ব্রেক হবে জেনে সিদ্ধান্ত নিলাম পুরো পরিবার নিয়ে ঘুরে আসবো বাইরে কোথাও। কোথায় যাওয়া যায় ভাবছিলাম। সিলেট, কক্সবাজার, টেকনাফ দেখা হয়ে গিয়েছে, নতুন কোথাও যাওয়া দরকার একেবারেই ভিন্ন রকম কোথাও। সে সময়ে মনে পড়লো বান্দরবানের নাম। তাছাড়া ইদানিং ফেইসবুক-প্রচার মাধ্যমগুলোতে খুব শোনা যাচ্ছে নীলগিরি-র নাম। সিদ্ধান্ত নিলাম সেখানেই যাবো।

স্ত্রীর সাথে পরামর্শ করে নির্দিষ্ট দিনে রওয়ানা দিলাম বান্দরবানের উদ্দেশ্যে। যাওয়ার আগে এক ঘনিষ্ট বন্ধুকে জানালাম। তিনি মানবপ্রেমিক দক্ষ একজন মানুষ। আমাকে বললেন, “তুমি যাও, ওখানে থাকার ব্যবস্থা আমি করে দেব।” কথা দিয়ে কথা রাখতে পারেন এমন একজন মানুষ তিনি। ব্যাস সমস্যার সমাধান হয়ে গেলো। নিশ্চিন্ত মনে রওয়ানা হলাম। দুপুরের দিকে চিটাগাং-এ পৌঁছে গেলাম। এসময় একটা টেলিফোন পেলাম অজানা নাম্বার থেকে। টেলিফোন তুলে অজানা কন্ঠস্বর শুনলাম, “আমি বান্দরবান হোটেল প্লাজা থেকে বলছি, আপনারা কখনো পৌছাবেন?” আমি আনুমানিক সময় বললাম। তারপর বন্ধুকে ফোন করে আবার জানালাম যে হোটেল প্লাজা থেকে ফোন পেয়েছি। তিনি বললেন, “না না, হোটেল প্লাজা নয়। আমি আমি আরো ভালো জায়গায় তোমার থাকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।” বন্ধুর উপর আমার আস্থা আছে, বললাম। “যেখানে ভালো মনে করো, সেখানে আমার থাকার ব্যবস্থা করো।” তিনি কিছুক্ষণ পর ফোন করে জানালেন যে, আমাদের থাকার ব্যবস্থা করেছেন ‘নন্দিত নিবাসে’।

তখনও আমার ধারণা ছিলোনা এটা কোন জায়গা। বান্দরবান পৌঁছে শহরের ভিতর যেখানে উঠলাম, এটি বাইরে থেকে থেকে দেখতে পুরোনো আমলের এল শেইপড দোচালা একটি সাদামাটা ঘর। সামনে মোটামুটি প্রসস্ত উঠান। সেখানে আম, কাঠাল, বড়ই ছাড়াও রয়েছে বিরল কিছু গাছ। দীর্ঘ পথ জার্নির শেষে বেশ ক্লান্ত ছিলাম, তাই নিবাসটির সাদামাটা বহিরাবরণ নিয়ে অত গা না করে ভিতরে ঢুকলাম। সাথে সাথে তাক লেগে গেলো! বাইরের সাথে ভিতরের কোন মিল নেই। ভিতরে আধুনিক হোটেলের মত সাজগোজ। কাঠের দেয়াল, সুন্দর মেঝে, সুদৃশ্য সিলিং, বেতের লাইট শেডের ভিতরে এনার্জি বাল্ব, ঝকঝকে বাথরূম, ডিশ এন্টেনা সমেত টেলিভিশন। শীততাপ নিয়ন্ত্রনের ব্যবস্থা নেই তবে এমন শীতল কক্ষগুলো যে ঐ যন্ত্রের কোন প্রয়োজনও নেই। এরপর খট করে আমার মনে বাজলো, বাইরের টানা বারান্দায় কার যেন ছবি দেখলাম?

কক্ষের বাইরে আসলাম, অতি পরিচিত একটি পোট্রেট, এই ছবিটিকে প্রচ্ছদ করে আমি একটি ব্লগ আর্টিকেল লিখেছিলাম, পরবর্তিতে বেশ কয়েকটি অনলাইন পত্রিকা ঐ আর্টিকেলটি পুণঃপ্রকাশ করেছিলো। আমার অন্যতম প্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদ-এর মুখমন্ডলের সাদাকালো একটি ছবি। ছবির পাশে লেখা, ‘তার কৈশোরের প্রায় দু’বছরের দুরন্তপনার দিনগুলো কেটেছিলো এই বাসভবনে ……….।’ বেশ কিছুক্ষণ ছবিটির দিকে তাকিয়ে থাকলাম। এই তাহলে সেই বাড়ী যার কথা আমি পড়েছিলাম ‘আমার ছেলেবেলা’-য়। তাকালাম উঠানের দিকে। দেয়ালের ওপাশে একটি পুরনো তিনতলা বাড়ী। নিবাস-এর দায়িত্বে থাকা তরুণটি আমাকে বললো, “স্যার এই বাড়ীতেই থাকতেন হুমায়ুন আহমেদ, উনার বাবা এখানকার সার্কেল ইন্সপেক্টর ছিলেন। আর দেয়ালের ওপাশে মুরং রাজার পুরাতন রাজবাড়ী।” বুঝলাম বন্ধু ভালোই সারপ্রাইজ দিয়েছে! সুবিদিত উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’-এর লেখকের স্মৃতি বিজড়িত এই বাড়িটির নাম দেয়া হয়েছে ‘নন্দিত নিবাস’।

(প্রিয় লেখক যেই উঠানে ছুটেছেন-হেটেছেন আমিও সেখানে হাটলাম। তিনি যেই কক্ষগুলেতে ঘুমিয়েছিলেন আমিও সেখানে ঘুমালাম। তিনি যেই গাছগুলিকে ছুঁয়েছিলেন আমিও সেইগুলিকে ছু্ঁয়ে দেখলাম। জনপ্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদ, আমরা সাহিত্যপ্রেমিরা প্রতিদিন আপনার অনুপস্থিতি টের পাই, আপনার অভাব বড় বেশি বোধ করি। আপনার অভাব পুরণ হওয়ার নয়। আমরা শুধু পারি আপনার সম্মানে কিছু লিখতে, সেটাই চেষ্টা করি। আপনি যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন।)

(উন্নত দেশগুলোতে স্বনামধন্য ব্যাক্তিদের স্মৃতি বিজড়িত জায়গাগুলোকে যত্নের সাথে সংরক্ষণ করে রাখা হয়। আমাদের দেশে এই প্রচলন আগে খুব কম ছিলো। এই নিবাসটি দেখে খুব ভালো লাগলো। খ্যাতিমান লেখক হুমায়ুন আহমেদ-এর স্মৃতি বিজড়িত এই বাড়িটিকে এত যত্নের সাথে সংরক্ষণ করে রাখার জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।)

১,৫৮২ বার দেখা হয়েছে

১৭ টি মন্তব্য : “নন্দিত নিবাস”

  1. সাইদুল (৭৬-৮২)

    চমৎকার লেখা। হুমায়ুন আহমেদের সায়েন্স ফিকশন আমার কাছে সবচেয়ে ভাল লাগে, আর সম্রাট নামে ছোট একটি বই আছে তার। অনুবাদ কীনা জানিনা, ওই বইটিকে মনে হয় অতুলনীয়।


    যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান

    জবাব দিন
    • ড. রমিত আজাদ (৮২-৮৮)

      অনেক ধন্যবাদ সাইদুল ভাই।
      সম্রাট বইটা আমিও পড়েছি। মূল চরিত্রের নাম সম্ভবত 'সম্রাট নিশো'। মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে উনার লেখা 'সৌরভ' উপন্যাসটি আমার মনে ভীষণ দাগ কেটেছে। স্বাধীনতার চমৎকার সংজ্ঞা দিয়েছিলেন তিনি সেখানে।

      জবাব দিন
  2. লুৎফুল (৭৮-৮৪)

    "প্রিয় লেখক যেই উঠানে ছুটেছেন-হেটেছেন আমিও সেখানে হাটলাম। তিনি যেই কক্ষগুলেতে ঘুমিয়েছিলেন আমিও সেখানে ঘুমালাম। তিনি যেই গাছগুলিকে ছুঁয়েছিলেন আমিও সেইগুলিকে ছু্ঁয়ে দেখলাম।" অনন্য অনুভুতিগুলোকে সুন্দর করে আমাদের সাথে ভাগাভাগাই করবার জন্য অনেক অনেক সাধুবাদ ।

    জবাব দিন
  3. মাহবুব (৭৮-৮৪)

    প্রথম ময়মনসিংহ গিয়েছি, ব্রম্মহপূত্রের উপর ছবির মত রেল ব্রীজ, তারই নীচে "মড়াখোলা" শ্মশান। আমার গায়ে কাঁটা দিলো- আমি তখন শীর্ষেন্দুর ভক্ত, তাঁর স্মৃতিচারন মূলক বই উজান-এ এই শ্মশানের কথা আছে। ঘোর লাগা অবস্থা হল আমার- প্রায়ই সেখানে যাই।
    তুমি প্রিয় হুমায়ূনের ছেলেবেলার স্মৃতি মাখা বাড়ীতে থেকেও এসেছ, ভাবলেই হিংসে হচ্ছে!

    জবাব দিন
  4. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    'নন্দিত নরকে' আমিও এক নিঃশ্বাসেই পড়ে শেষ করেছিলাম। এখন 'নন্দিত নিবাস' পড়ে সেই স্মৃতি মনে পড়লো।
    "তাকে দেখতে বাসায় এসেছিলো মুরং রাজার মেয়ে ‘সত্যিকারের রাজকন্যা’" - এই উদ্ধৃতিটুকু লেখার আকর্ষণ অনেকাংশে বাড়িয়ে দিলো।
    ঝরঝরে লেখা, পড়ে মুগ্ধ হ'লাম।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ড. রমিত আজাদ (৮২-৮৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।