একরাশ কবিতা – ১

আজ কেন মন?
————- ড. রমিত আজাদ

ঘুমিয়ে ছিলাম ঘুমপুড়িতে ঘুমপাড়ানী গানে,
ঘুম কেন মোর ভাঙিয়ে দিলে, লাগিয়ে দোলা প্রাণে?
স্বপ্ন গুলো হেসে কেঁদে, পড়তো আঁখির ফাঁদে,
আজ কেন মন উদাস হয়ে গাইলো নতুন রাগে?

বিজন বনে, মনের কোনে রাঙিয়ে দিলে আঁখি,
প্রজাপতির ডানায় ভেসে গাইলো নতুন পাখী।
কোন তারা আজ খসে পড়ে জ্বালিয়ে দিলো বন,
হৃদয় আমার বাঁধ ভেঙেছে, মন ছুঁয়েছে মন।

আমি সেই
———- ড. রমিত আজাদ
তুমি কি চিনেছ আমাকে?
আমি সেই, যে তোমার কথা ভেবে ভেবে
রংধনু তৈরী করে, আকাশ রাঙায়
আমি সেই, তোমার অজান্তেই
যে তোমার আপন,
আমি সেই যার স্বপ্নগুলোতে তুমিই নায়িকা,
আমি সেই, যার শুভ্র কাশবনের উপর
উড়ে চলা সাদা মেঘে তুমিই ভেসে বেড়াও,
আমি সেই, যে তোমাকে কল্পনা করে
কবিতা লেখে, ছবি আঁকে, গল্প সাজায়,
আমি সেই, যে একটি দুখের নয়,
সুখের তাজমহল গড়তে চায়,
সুখমহল সে কিন্তু একা গড়তে পারবে না,
তোমাকেও লাগবে সাথে,
তুমি কি একটু চেনার চেষ্টা করবে তাকে?
উহু, কায়ার চোখ দিয়ে নয়,
হৃদয়ের চোখ দিয়ে দেখো,
দেখবে ঠিক ঠিক চিনে যাবে।
ততদিন আমি প্রতীক্ষা করবো।

প্রতারনা না প্রেম?
————— ড রমিত আজাদ

আমি জানি, তৃষিত আঙুলের মধুস্পর্শে,
কলকল করে গেয়ে ওঠে দেহের সবগুলো রক্তের নদী।
বালিকা, ঐ চাতকের মতো তুমিও যে এক তৃষ্ণার্ত চাতকী!

মৃদু আলিঙ্গনের আবেশে,
তনুর প্রতিটি কোষে কোষে বেজে ওঠা সেতারের অনুরনন,
এক মুহূর্তের জন্যও শোনায় না অবিশ্বাসের সতর্ক-বাণী।
বরং কেমন ঝড় তোলে কায়া বৃক্ষরাজীর শাখা-প্রশাখায়!
বিশ্বাসের আগুন কেমন জ্বালিয়ে অঙ্গার করে দেহ-মন।

সুদর্শন পুরুষের একটি মুগ্ধকর হাসিই তো
প্রলুদ্ধ করার জন্য যথেষ্ট।
সেই হাসি কি প্রেমের না প্রতারনার,
তা ভাববার সময় কোথা বালিকার?
সে পরম মায়ায় এলিয়ে দেয় দেহ,
যেমন স্বর্ণলতিকা জড়িয়ে ধরে সবল বিটপী।

অবোধ বালিকা! তোমাকেই বুঝতে হবে,
প্রতারণা আর প্রেমের পার্থক্য।
আর তোমার কাছে যদি দুই-ই হয় সমান অথবা গুরুত্বহীন,
তাহলে আমরা রইবো নিশ্চুপ!

তবে তোমাকে,
শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি,
প্রেমিক পুরুষ যাকে ভালোবাসে তাকে প্রতারণা করেনা,
প্রতারিত করে কেবল তাকেই, যাকে ভালোবাসে না।

তোমাকে বড় বেশী অবহেলা করে ফেলেছি
————————— ড. রমিত আজাদ

তোমাকে বড় বেশী অবহেলা করে ফেলেছি প্রণরেনী,
সুর্যের উষ্ণতা যেমন মূল্যহীন মনে হয়,
কিংবা অথৈ সাগরের জল,
অথবা চারপাশের এই বিস্তৃত বায়ুমন্ডল,
সারাক্ষণ নির্বিঘ্নে টেনে চলা অক্সিজেন,
যার জন্য শোধ করতে হয়না একটি কানাকড়িও।

খুব সহজে যা পাওয়া যায়
সেটাই হয়ে যায় সস্তা,
সস্তা জনপ্রিয়তাকে যেমন করে অবহেলা করে
প্রতারক রাজনীতিবিদরা।

এতদিনে বুঝতে পারলাম
অবহেলা নয়,
আমি আসলে প্রতারণাই করেছি,
তোমার সাথে এবং সেই সাথে নিজের সাথেও।

৮৯৭ বার দেখা হয়েছে

৯ টি মন্তব্য : “একরাশ কবিতা – ১”

মওন্তব্য করুন : রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।