স্বাধীনতা, পরাধীনতা ও নবাব সিরাজউদ্দৌলা – ১

স্বাধীনতা, পরাধীনতা ও নবাব সিরাজউদ্দৌলা – ১
—————————- ডঃ রমিত আজাদ

গত ১৯ শে সেপ্টেম্বর ছিলো নবাব সিরাজউদ্দৌলার ২৮৬ তম জন্মবার্ষিকী।

যে মহান ব্যক্তিটির সাথে আমাদের বাঙালী জাতির ভাগ্য গাঁথা হয়ে গেছে তিনি হলেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা। আগ্রাসী কূটকৌশলী ইংরেজ ও দেশীয় বিশ্বাসঘাতকদের হাতে নবাবের পতন কেবল একটি ব্যক্তির পতন ছিলো না, উনার পতনের সাথে সাথে আমাদের জাতিরও পতন ঘটে। একটি জাতির যখন উন্নয়ন ও শ্রীবৃদ্ধি ঘটে তখন জাতিটিকে স্বাধীন জাতি বলা যাবে, কিন্তু জাতিটির যদি ক্রমাগত অবনতি ঘটতে থাকে তখন সেই জাতিটিকে পরাধীন জাতি বলতে হবে। নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যুর পর থেকে জাতর ক্রমাগত অবনতি ঘটতে থাকে ও আমরাও ধীরে ধীরে শ্রীহীন হয়ে যেতে থাকি। এটাই পরাধীনতা। এভাবেই নবাবের ভাগ্যের সাথে আমাদের ভাগ্য গাঁথা হয়ে গেছে। বর্তমান বাংলাদেশের দৈন্যদশা দেখে চারিদিকে কেবল নবাবের অভাব বোধ করি। মনে মনে কেবলই কামণা করি মীরজাফরেরা দূরিভুত হয়ে সিরাজউদ্দৌলার মত দেশপ্রেমিকে দেশ ভরে উঠুক।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার নানা আলিবর্দী খান বাংলায় এসেছিলেন সুদূর ইরাণ থেকে, ধীরে ধীরে তিনি নিজ গুনে সমাজের উঁচু মহলে স্থান করে নিয়েছিলেন এবং কঠোর অধ্যবসায়ের পর একসময় তিনি এদেশের সর্বচ্চো পদ অধিকার করতে সমর্থ হয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশকে ভালোবাসতেন ও প্রজাহিতৈষী ছিলেন। দেশকে তিনি রেখেছিলেন সুশাসনে।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার জন্ম এই রূপসী বাংলায় (তৎকালীন রাজধানী মুর্শিদাবাদে)। উনার জন্ম তারিখ ও বৎসর নিয়ে ইংরেজরা অনেক বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, উনার জন্ম ১৯ শে সেপ্টেম্বর ১৭২৭ সালে।

নবাব আলিবর্দী খানের কোন পুত্র সন্তান ছিলনা। নাতিদের মধ্যে মীর্জা মোহম্মদ সিরাজউদ্দৌলাই যোগ্যতম ও দেশপ্রেমিক ছিলেন। তাই আলিবর্দী খান তাঁকেই পরবর্তি নবাব হিসাবে ঠিক করেছিলেন। সিরাজউদ্দৌলাও সবসময় নানার সাথে ছায়ার মতো লেগেছিলেন। তিনি আলিবর্দী খানের সাথে একাধিক যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহন করে বীরত্ব প্রদর্শন করেছিলেন।

সিরাজউদ্দৌলা তার নানা ইংরেজদের পিলে কাঁপানো কঠোর শুশাসক আলিবর্দী খানকে মৃত্যু শয্যায় কথা দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে তিনি সুশাসনে রাখবেন ও যেকোন মূল্যে তাকে রক্ষা করবেন। নানার মতো তিনিও দেশকে ভালোবাসতেন ও প্রজাহিতৈষী ছিলেন।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার ও তার নানা আলিবর্দী খান দুজনই শিক্ষিত মানুষ ছিলেন। শিক্ষার প্রতি তার প্রগাঢ় অনুরাগ ছিল। তিনি শিক্ষিতদের সমাদর করতেন ও পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। তার আমলে বাংলার ফার্সী সাহিত্য ও জ্ঞান-বিজ্ঞান-এর বিশেষ উন্নতি হয়েছিল। ইতিহাসবিদ গোলাম হোসেন তাবাতাবাই লিখেছেন, নবাব আলিবর্দী খান প্রতিদিন দুই ঘন্টা আলেমদের সাথে জ্ঞানালোচনা করে কাটাতেন। মুহম্মদ আলী ফাজিল, হাকিম হাদী আলী খান, নকী কুলী খান, মির্যা হোসেন সেসেবি এবং আরো অনেক পন্ডিত ব্যাক্তি এই আলোচনায় যোগ দিতেন।

মুহম্মদ আলী ফাজিল ধর্ম, দর্শন প্রভৃতি শাস্ত্রে ব্যুৎপন্ন ছিলেন। হাকিম হাদী আলী খান চিকিৎসা শাস্ত্রে খুব খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তাকে সে যুগের গ্যালেন আখ্যায়িত করা হয়েছিল। হাকিম তাজুদ্দিন মুর্শিদাবাদের আরেকজন বড় চিকিৎসা বিশারদ ছিলেন। কাযী গোলাম মুজাফফর, মুহম্মদ হাযিন, শাহ মুহম্মদ হাসান, আবুল কাশিম ও সৈয়দ মুহম্মদ আলী সেই সময়ের খ্যাতনামা পন্ডিত ছিলেন। ইতিহাস লেখক ইউসুফ আলী নবাবের পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেছিলেন। বিখ্যাত ইতিহাস গ্রন্থ ‘সিয়ার-উল-মুতাক্ষেরীণ’ রচয়িতা গোলাম হোসেন তাবাতাবাইও নবাব আলীবর্দী ও সিরাজউদ্দৌলার অনুগ্রহ লাভ করেছিলেন। নবাব আলীবর্দী এতই সুশাসক ছিলেন যে তার সময়ে বাংলা ঐশ্বর্য্যশালী হয়ে উঠেছিল। সেই ঐশ্বর্য্যশালী বাংলাকে রক্ষা করারই প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়েছিলেন তার আদরের নাতি নবাব সিরাজউদ্দৌলা মনসুর-উল-মুল্ক। কিন্তু গুটিকতক বেঈমানের হঠকারিতায় সেই ঐশ্বর্য্য পড়ে শঠ-প্রতারক-লোলুপ ইংরেজদের হাতে। শুরু হয় লুন্ঠনের এক নবযুগের সূচনা – প্রটেস্টান্ট সাম্রাজ্যবাদ। বাংলার সকল ঐশ্বর্য্য স্থানান্তরিত হয়ে যায় ইংল্যন্ডে।

সিংহাসনে আরোহনের পর ১৪ মাস ১৪ দিন তিনি পাগলের মতো ছুটে বেড়িয়েছিলেন এই বাংলার পথে-প্রান্তরে। মুর্শিদাবাদ থেকে কাশিমবাজার, কাশিমবাজার থেকে আলীনগর (কোলকাতা), আলীনগর থেকে পলাশী, সহাস্রাধিক কিলোমিটার তিনি ছুটে বেড়িয়েছিলেন। সেই হিসাবে উনার গতিবেগ ছিলো আলেকজান্ডারের চাইতেও বেশী।

১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন যুদ্ধ নামক এক ষড়যন্ত্রে তিনি পরাজিত হন। এরপর তিনি পাটনা যাচ্ছিলেন সৈন্য-সামন্ত জোগাড় করে আবারও যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার জন্য। কিন্তু আমাদের কপালের দোষ, তিনি ধরা পড়লেন ও নিহত হলেন (২রা জুলাই ১৭৫৭ সাল)। তাকে জনসমক্ষে বিচার করে জনমত যাচাই করে ফাঁসি দেয়া হয়নি। ইংরেজদের ষড়যন্ত্রে মিরনের নির্দেশে কাপুরুষের মত তাকে হত্যা করে সিরাজের সাথে একই থালায় ভাত খাওয়া বেঈমান মোহম্মদী বেগ। আমাদের কপালের লিখন, আমাদের নবাবকে বাঁচাতে পারলাম না। আর এর খেসারত আমাদের দিতে হয়েছে পরবর্তি দু’শো বছর।

এরপর ইংরেজরা নবাবের চরিত্রে নানাভাবে কলঙ্কলিপ্ত করতে থাকে। সিরাজউদ্দৌলার চরিত্রে কলঙ্ক লেপন করে কলকাতায় একটা মনুমেন্ট তৈরী হয়েছিল। তার নাম ছিল হলওয়েল মনুমেন্ট। পরবর্তিতে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে, ৩রা জুলাই, ১৯৪০ এ হলওয়েল মনুমেন্ট অপসারণের জন্য সত্যাগ্রহ আন্দোলনের ডাক দিলেন । বাঙালী হিন্দু ও মুসলমানেরা এক ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করে ইংরেজদের বাধ্য করে ঐ হলওয়েল মনুমেন্ট তুলে নিতে।

নবাব পরিবারের পুরো ইতিহাস আমাদের পাঠ্যপুস্তকগুলোতে পাওয়া যায়না। তাই অনেকেরই জানা নেই যে, পরম করুণাময়ের কৃপায় নবাবের বংশধরেরা টিকে আছে। আমি নিজেও এই সম্পর্কে জেনেছি সম্প্রতি। নবাব সিরাজউদ্দৌলার অষ্টম ও নবম বংশধর (সৈয়দ গোলাম মোস্তফা ও সৈয়দ গোলাম আব্বাস আরেব)-দের চোখের সামনে দেখে আবেগ আপ্লুত হয়েছি। আমাদের দেশে অনেক শহীদ পরিবার, বুদ্ধিজীবি পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্ত অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গের পরিবারবর্গ সরকারী সাহায্য, সহযোগীতা ও আনুকুল্য পেয়েছে। নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরিবারকেও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করা হোক, সমাজের কাছে এই দাবী আমি করছি।

(চলবে)

১,৩৩৯ বার দেখা হয়েছে

১৫ টি মন্তব্য : “স্বাধীনতা, পরাধীনতা ও নবাব সিরাজউদ্দৌলা – ১”

  1. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যুর পর থেকে জাতর ক্রমাগত অবনতি ঘটতে থাকে ও আমরাও ধীরে ধীরে শ্রীহীন হয়ে যেতে থাকি।
    আগে কি সু উচ্চ মহান ছিলাম আমরা জানতে মন চায়..


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  2. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    অহেতুক বীর পূজা কবে বন্ধ হবে কে জানে!

    মীরজাফর সিরাজের পক্ষে যুদ্ধ না করার পরেও কিন্তু সিরাজের সৈন্য সংখা ক্লাইভের চাইতে বেশি ছিলো।

    এমন না যে সিরাজ আরেক নবাব বা রাজার সাথে যুদ্ধ করছে!
    ক্লাইভের সাথে পরাজয় সিরাজের নেতৃত্বে সমস্যাটাই প্রকট করে।

    দাবা খেললেই দাবারু হওয়া জায় না।
    নানার সাথে একসাথে যুদ্ধ করে সিরাজ কি শিখ্লো?
    তার অস্ত্র, গোলা বৃষ্টিতে ভিজে যায়, তার কামান উচু তে রাখায় সব গোলা গেছে ক্লাভের মাথার উপর দিয়ে।

    যে যুদ্ধ করতে জানে না তার পিছনে দাড়িয়ে যুদ্ধ করা, তার বীরত্ব রচনা করা এক ধরণের -------

    ইংরাজ অনেক খারাপ কাজ করেছে সন্দেহ নাই। দিয়াছে অনেক বেশি।

    ইংরাজ রা মুসলিমদের মতো প্রোটেস্ট্যান্ট্বাজি (যদিও আপনি সেটাই বলতে চেয়েছেন )
    করলে আমরা মনে হয় ৮০-৯০% মুসলিম অধ্যুষিত না হয়ে ৮০-৯০ ভাগ খ্রিষ্টান হতাম।

    শুরু হয় লুন্ঠনের এক নবযুগের সূচনা – প্রটেস্টান্ট সাম্রাজ্যবাদ।

    আলেকজান্ডারের সাথে তুলনা এতোটাই হাস্যকর যে কিছুই বলতে পারছি না।নতুন একটা ইমো আসছে তা দিয়া দিলাম।

    সিংহাসনে আরোহনের পর ১৪ মাস ১৪ দিন তিনি পাগলের মতো ছুটে বেড়িয়েছিলেন এই বাংলার পথে-প্রান্তরে। মুর্শিদাবাদ থেকে কাশিমবাজার, কাশিমবাজার থেকে আলীনগর (কোলকাতা), আলীনগর থেকে পলাশী, সহাস্রাধিক কিলোমিটার তিনি ছুটে বেড়িয়েছিলেন। সেই হিসাবে উনার গতিবেগ ছিলো আলেকজান্ডারের চাইতেও বেশী।

    :pira2: (সম্পাদিত)


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  3. ড. রমিত আজাদ (৮২-৮৮)

    নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে ইংরেজ ও তাদের তল্পিবাহকদের অপপ্রচার অব্যহত থাকাটাই স্বাভাবিক। ইংরেজরা উদ্দেশ্যমূলকভাবেই সিরাজের চরিত্রে কলংক লেপন করেছিলো। ইংরেজ নামক এই বেহায়া, শঠ, প্রতারক ও নৃশংস জাতিটির মূল উদ্দেশ্য ছিলো আমাদের পুরো জাতির মুখে কলংক লেপন করে তাদের লুন্ঠনকে জাস্টিফাই করা।

    আমাদের দেশে পাকিস্তানি রাজাকার যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে ভারতীয় ও বৃটিশ রাজাকার। রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ চাই।

    রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ গঠন না করা পর্যন্ত জাতীয় উন্নয়নের পথ কন্টকাকীর্ণই থেকে যাবে।

    জবাব দিন
  4. আমিন (১৯৯৬-২০০২)

    গ্যালারিতে বইলাম। বিনোদন দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
    পোস্ট সম্পর্কে একটা কথাই বলি, আনোয়ার হুসেনের সিরাজউদ্দৌলা আর ইতিহাসের কেরামত আলীর বই পড়লেও এড় চেয়ে বেশি জানন যায়।

    জবাব দিন
  5. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    রমিত ভাই,
    আপনার এই পোস্টটি বাংলা উচ্চনম্বরের সিঁড়ির নোট হয়ে গেছে, ইতিহাসপাঠ হয়নি।
    রেফারেন্স দেননি কোন।অবশ্য ট্যাগ করেছেন 'ব্লগর ব্লগর', যাক।
    আনোয়ার হোসেনের সিরাজ আর ইতিহাসের সিরাজ এক নয় - এটা প্রাইমারী স্কুল লেভেলের ইতিহাস ক্লাসও নয়।
    'ব্রিটিশ রাজাকার' রাজীবের মতো আমারো প্রশ্ন: সিরাজের মাহাত্ম্যের রেফারেন্সপূর্বক আলোচনা হোক।

    একটা লিংক দিলাম:

    জবাব দিন
  6. নাফিস (২০০৪-১০)

    একটা সিরিজের প্রথম পর্ব মনে হচ্ছে লেখাটা।সিরিজটার ভবিষ্যত গতিবিধি আন্দাজ করতে পারছিনা। বেশ কিছু জায়গায় খটকা লেগেছে। আলেকজান্ডার এর সাথে তুলনা টা বুঝতে পারলাম না.. আর কিছু রেফারেন্স দিলে ভালো হতো..

    জবাব দিন
  7. দিবস (২০০২-২০০৮)
    আমাদের দেশে পাকিস্তানি রাজাকার যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে ভারতীয় ও বৃটিশ রাজাকার।

    বাংলাদেশে আমরা যখন 'রাজাকার' শব্দটা ব্যবহার করি তখন এর সাথে নির্দিষ্ট কিছু অপরাধযুক্ত থাকে।অপরাধগুলোকে সার্বিকভাবে যুদ্ধাপরাধ বলে। পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধের সময় এই রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়। যারা হত্যা,ধর্ষণ,লুন্ঠন,ধর্মান্তকরণের সাথে জড়িত ছিল। এই ঘৃণ্য অপরাধীদের আমরা রাজাকার বলে জানি (আল-শামস,আল-বদর এদেরও রাজাকারই বলি ইন জেনারেল)। এই অপরাধীদের যখন নব্য টার্ম "ভারতীয় রাজাকার" এর সাথে মিলানো হয় তখন আমার মনে হয় রাজাকারদের দোষগুলা সূক্ষ্ণভাবে লঘু করার একটা চেষ্টা থাকে এখানে। ভারতীয় রাজাকার বলতে হয়তো ভারতপ্রীতিকেই বুঝিয়েছেন আপনি। এর জন্য নতুন কোন টার্ম খুঁজে বের করুন দয়া করে। খুন,ধর্ষণ আর 'মনের টান' এই দুটিকে এক্ত্র করে খুন, ধর্ষণকে নিজের অজান্তেই লঘু প্রমাণ করছেন কিনা সেটা ভেবে দেখবেন আশা করি।

    'ব্রিটিশ রাজাকার' এইটা প্রথম শুনলাম 😀


    হেরে যাব বলে তো স্বপ্ন দেখি নি

    জবাব দিন
    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

      এইতো বুঝতে পারছিস।
      এইভাবেই আমাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে রাজাকার তত্ত নিয়ে নানান বিভ্রান্তি।

      তবে এই জেনারেশন কে দেখে বুঝা যায় এতো সহজ নয় এদের ঘোল খাওয়ানো।

      ওয়েল ডান দিবস। :thumbup:


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন
  8. ড. রমিত আজাদ (৮২-৮৮)

    বৃটিশ রাজাকার নতুন কিছু নয়। বরং পুরাতন। হত্যা, ধর্ষণ, লুন্ঠন ইত্যাদিতে বৃটিশরা সিদ্ধহস্ত। কোন অপরাধটি তারা বাকী রেখেছিলো আমাদের দেশে করতে? এই বদমাশ বৃটিশদের তল্পিবাহক সহযোগী ছিলো আমাদেরই দেশের কিছু কুলাঙ্গার। বিনিময়ে তারা পেত বৃটিশদের উচ্ছিচ্ট। যারা বৃটিশ রাজাকারিতে নৈপুন্য প্রদর্শন করতে পারতো তারা পেত জমিদারী। এদের নেতৃস্থানীয়রা পেতো খান বাহাদুর, রায় বাহাদুর উপাধী। এদের অনেকের নাতি-নাতকররা এখনো গর্ব করে। এরকম একজন একবার বলেছিলো, "আমার দাদা ছিলো খান বাহাদুর।" আমার ভাষা সৈনিক ফুপু চিৎকার করে বলেছিলেন, "এতে গর্বের কি আছে? খান বাহাদুর মানে তো বৃটিশের দালাল!" আমাদের পূর্বপুরুষদের ঘাম আর রক্তের বিনিময়ে আমরা বৃটিশদের বিতারিত করেছি। তাই বৃটিশরা আর এখন সরাসরি ঐ অপরাধগুলো আমাদের দেশে করার সাহস ও সুযোগ পায়না। তবে তাদের জাতীয় চরিত্রের পরিবর্তন ঘটেনি। তাদের শয়তানী জাল তারা এখনো বিছিয়ে রেখেছে। আর তাদের তল্পীবাহকরাও এখনো ভিন্নরূপে রয়ে গেছে।

    (উপরোক্ত কথাগুলো সর্বজনবিদিত। এর জন্য কোন রেফারেন্সের প্রয়োজন হয়না। তারপরেও কয়েকটি রেফারেন্স দিচ্ছি : ১। ডিসকভারি অফ ইন্ডিয়া, ২। জুয়েল ইন দ্যা ক্রাউন, ৩। প্যাসেজ টু ইন্ডিয়া।, ৪। বাংলাদেশের সন্ধানে, ৫। ভারতবর্ষের ইতিহাস (রুশ ইতিহাসবিদ বোনগার্দ-লেভিন))

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।