বাঙলাদেশের টিভি বিতর্কের রূপ

টকশো কি এবং ক্যানো?
বাঙলাদেশের টিভি টকশো গুলোতে কি হয়?
দলীয় প্রপাগান্ডা ছড়ানো ছাড়া আর বেশি কি কিছু হয়!
এমনকি টকশোতে যারা অংশ নেন তাদের সম্পর্কে চলতি একটা নাম পর্যন্ত বাজারে চালু আছে, টকমারানী। হুমায়ুন আজাদ একদা বলেছিলেন, “বাঙলাদেশের প্রধান মূর্খদের চেনার সহজ উপায় টেলিভিশনে কোনো আলোচনা-অনুষ্ঠান দেখা। ওই মূর্খমন্ডলিতে উপস্থাপকটি হচ্ছেন মূর্খশিরোমণি।” (৫৩, প্রবচনগুচ্ছ)

এইতো ২ দিন আগের নিউজ

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ব্লগার ও বিজ্ঞানমনস্ক লেখক অভিজিৎ রায় হত্যার দায় স্বীকার করেছে আল কায়দার উপমহাদেশীয় শাখা ‘আল কায়দা ইন দি ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট’ (একিউআইএস)। এ ছাড়া ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু ও আহমেদ রাজীব হায়দারকে হত্যার দায়ও স্বীকার করে সংগঠনটি।

আল কায়দাসহ অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলোর অনলাইন তৎপরতার ওপর নজরদারি রাখছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এমন একটি ওয়েবসাইট- ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের’ বরাত দিয়ে রোববার এএফপি এ তথ্য জানায়। সংবাদ সংস্থাটি বলেছে, গত শনিবার জিহাদিদের ফোরামে একটি ভিডিওবার্তা পোস্ট করা হয়। সেখানে একিউআইএসের নেতা অসিম ওমর দাবি করেন, তার সংগঠনের লোকজনই অভিজিৎসহ তিন ব্লগারকে হত্যা করে। ভিডিওবার্তায় ড. অভিজিৎ রায়কে তারা ‘ধর্মদ্রোহী’ বলে উল্লেখ করে। (সমকাল – ৪ মে ২০১৫)

আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল কায়দার ভারতীয় উপমহাদেশীয় শাখা (একিউআইএস) কর্তৃক ব্লগার ড. অভিজিৎ রায় হত্যার দায় স্বীকারের বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। ইতিপূর্বে দেশীয় জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম অভিজিৎ হত্যার দায় স্বীকার করেছিল। অভিজিৎ হত্যা মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট ডিবির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, তারা মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছেন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামে আল কায়দার অনুসারী একটি ধর্মীয় জঙ্গিগোষ্ঠী এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। সেক্ষেত্রে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম আল কায়দার ভারতীয় উপমহাদেশীয় শাখার একটি উপশাখা কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্র“পের বরাত দিয়ে এএফপি পরিবেশিত খবরে বলা হয়েছে, শনিবার জিহাদিদের ফোরামে একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করা হয়। সেখানে একিউআইএসের নেতা অসীম ওমর দাবি করেন, আল কায়দা অভিজিৎ রায়কে হত্যা করেছে। তিনি আরও দাবি করেন, অন্য দুই ব্লগার আহমেদ রাজীব হাসান ও ওয়াসিকুর রহমানকেও তারাই হত্যা করেছে। (যুগান্তর – ৫ মে ২০১৫)

সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ নামের ওই ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে এএফপি বলেছে, গতকাল শনিবার জিহাদিদের ফোরামে একটি ভিডিওবার্তা পোস্ট করা হয়। সেখানে একিউআইএস-এর নেতা অসিম ওমর দাবি করেন, তাঁর সংগঠনের লোকজনই অভিজিৎকে হত্যা করেছে।
তবে র‍্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ এএফপিকে বলেছেন, আল-কায়দার এমন দাবি সঠিক কি না সে বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত নন। (জনকন্ঠ ৩ মে ২০১৫)  

মার্কিন ব্লগার অভিজিৎ রায়ের হত্যার দায় নিল জঙ্গি গোষ্ঠী আল কায়দা ইন দি ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট (একিউআইএস)। তেমনটাই দাবি জঙ্গিগোষ্ঠী পর্যবেক্ষক মার্কিন ওয়েবসাইট সাইট-এর। জঙ্গিগোষ্ঠীর শুধু ঢাকার রাস্তায় অভিজিৎকে নয়, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে অন্য ‘ধর্মদ্রোহী’দেরও হত্যা করেছে বলে দাবি একিউআইএস-এর। (আনন্দবাজার ৪ মে ২০১৫) 

স্বভাবতই এখন বাঙলাদেশে এটি হট টপিক।
সুতরাং টক শোতে এটি আসবেই।
সোমবার রাতে প্রচারিত একুশে টিভি তে একটি টকশো হয় একুশের রাত নামে। বিষয় ছিলো বাঙলাদেশে জংগীবাদ নিয়ে। ওই আলোচনা অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এম শাহীদুজ্জামানের সঙ্গে আলোচক ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আবদুর রশীদ ও প্রথম আলোর সাংবাদিক টিপু সুলতান। সঞ্চালক ছিলেন মঞ্জুরুল আলম পান্না।
সুলতান মির্জা র ফেসবুক থেকে প্রচারিত ভিডিও টির লিঙ্ক। 

ভিডিওটির ইউ টিউব লিঙ্ক। আর যারা পুরো ভিডিওটি দেখতে চান তারা ক্লিক করতে পারেন।
বিডি নিউজ ২৪ এ এ সংক্রান্ত খবর পড়তে পারবেন এখানে। আলোচকদের বক্তব্য ও এখানে পাবেন।

অবশ্যই এমন ঘটনা কাঙ্খিত নয়। কিন্তু টিভি কতৃপক্ষের ও দায় রয়েছে এক্ষেত্রে। বিতর্ক করতে লোক দের ডেকে তাদের পাশাপাশি বসিয়ে দেয়াটা কতোটুকু যৌক্তিক তা প্রশ্নসাপেক্ষ। অবশ্য এই ধরণের ঝামেলা বাধিয়ে যদি নিজেদের চ্যানেলের টি আর পি বাড়ানো যদি উদ্দেশ্য হয় তবে আর বলার কিছু থাকে না। উপস্থাপক পান্নার সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে  গাজী টিভির সম্পাদক (রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, নিউজ) অঞ্জন রায়  নিজের ফেইসবুক পাতায় লিখেছেন, “চারটে চেয়ার, তিনটে ক্যামেরা, একটা স্টুডিও, ছয় হাজার টাকা আর এক ঘন্টা অন এয়ার টাইম মানেই টকশো না। ঠিক তেমনই মিনিমাম ব্যাকগ্রাউন্ড ছাড়া উপস্থাপক হওয়া যায় না। অনুষ্ঠান নিয়ন্ত্রণের লাগাম না ধরে নির্বাক আতংকিত হয়ে হাল ছেড়ে দেয়ার ঘটনা টকশো চলাকালে কয়েকবার ঘটলো। আমার নিজের গত দশ বছরের কাজের দিকে তাকিয়েই বলবো। লাইভ শোতে অনেক বক্তব্যই আসতে পারে- যা অতিথিদের পরস্পরকে তপ্ত করবে। একজন উপস্থাপকের সেই সময়ে দায়িত্ব অনুষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেয়া। শ্রেফ টিআরপির জন্য, অথবা নিজের মনোবল না থাকার কারনে যদি উপস্থাপক নিয়ন্ত্রণ না করেন- সেটি আমরা যারা টকশোর সাথে আছি সবার জন্যই বিব্রতকর। সরি Abdur Rashid স্যার। একজন গণমাধ্যম কর্মী হিসাবে আমি লজ্জিত। আমি কয়েকদফা ফুটেজটি দেখেছি। কালকের অনুষ্ঠানে আরো অনেক আগে ব্রেক নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা উপস্থাপকের সম্ভব ছিলো।
# লাইভ টকশোর ক্ষেত্রে অনেক অংশেই প্রযোজকের নিয়ন্ত্রণ ততটা থাকে না যতোটা থাকে উপস্থাপকের। এটিও আমার দশ বছরের শিক্ষা।

উত্তরে মনজুরুল আলম পান্না আবার তার ফেবু ওয়ালে লিখেন,

“গত রাতে (সোমবার) একুশের রাত অনুষ্ঠানে দুই জন সম্মানিত অতিথির মধ্যে যা ঘটেছে, তার জন্য অনুষ্ঠানের একজন উপস্থাপক হিসেবে যে আমি লজ্জিত, তা বিশেষভাবে বলার কিছু নেই। এ বিষয়ে কিছু লেখাটাও আমার জন্য বিব্রতকর। কিন্তু যখন কোন কোন বিশেষভাবে বিদগ্ধজন অহেতুক আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন তখন আর চুপ করে থাকাটা সমীচীন নয় বলে মনে হলো। বিশেষভাবে বিদগ্ধজন ব্যক্তির অভিযোগ, টিআরপি বাড়ানোর জন্য ক্ষিপ্ত প্রতিপক্ষ দুই আলোচককে নিয়ন্ত্রন করা হয়নি ইচ্ছাকৃতভাবে। অভিযোগকারী বিদগ্ধজনকে বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই-
১. কথিত টিআরপি’তে অন্তত একুশে টেলিভিশন বিশ্বাসী নয়।

২. তাকে মনে করিয়ে দিতে চাই, তার চাকরীস্থল টেলিভিশন চ্যানেলে অনুষ্ঠিত কোন এক টক’শো শেষ হয়ে যাওয়ার পর অতিথিদের বক্তব্য বা কথাবার্ত/ কর্মকান্ড গোপনে রেকর্ড করে ইউটিউবে ছেড়ে দেয়া মতো কোন অনৈতিক ঘটনা অন্তত এক্ষেত্রে একুশে টেলিভিশন করেনি।

৩. অবশ্যই আমি নিজেকে এখনও একজন সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিতে কুন্ঠাবোধ করি, বড়জোর দাবি করতে পারি একজন সংবাদ কর্মী হিসেবে। আর টেলিভিশন চ্যানেলের উপস্থাপকদের মধ্যেও আর সবার চেয়ে নিজেকে অনেক বেশী অনভিজ্ঞ, মুর্খ বলে মনে হয় (অন্তত: যারা জ্ঞান দিচ্ছেন, তাদের তুলনায় নি:সন্দেহে)। প্রশ্ন, ওই ধরনের উত্তপ্ত অবস্থায় সংশ্লিষ্ট অতিথিদের কয়েক দফা থামানোর চেষ্টার পর বিরতিতে যাওয়া ছাড়া আর কী-ইবা করার থাকতে পারে। মজা লেগেছে, যিনি জ্ঞান দেয়ার চেষ্টা করছেন তিনিও ওই একই পরামর্শ দিয়েছেন। কিংবা আরো আগে বিরতিতে যাওয়ার যে পরামর্শের কথা বিদগ্ধজন বড় ভাই বলছেন তার উত্তরেও সবিনয়ে বলতে চাই, আলোচকদের প্রতিটি উত্তপ্ত বাক্যে বিরতি নিতে হলে তখন টক’শো বলে কিছু আর থাকবে না, তা হবে বিরতি শো।

৪. টক’শোগুলোতেতো সাধারনত মূর্খ বা সন্ত্রসিী লোকদেরকে ডাকা হয় না, ভদ্র এবং সুবিবেচনাসম্পন্নদেরকেই আমন্ত্রন জানানো হয়। তারাই যদি কখনো কোন অনাকাঙ্খিত এবং অনভিপ্রেত ঘটনার সৃষ্টি করেন, হাতাহাতি বা মারামারির মতো জঘণ্য পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন, তা আগে থেকে বোঝার ক্ষমতা বিশেষ বিদগ্ধজনদের থাকলেও আমার নেই। সত্যিই কী তাদেরও আছে?

৫. আর অতি চেনা প্রিয় মুখ বড়দা বলেছেন, আমি ভীত হয়ে পড়েছিলাম। খুবই সত্য, সেটাইতো স্বাভাবিক। কারণ কোটি কোটি মানুষকেতো টক’শোর নামে কোন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জঘন্য সংঘর্ষ দেখাতে চাই না সরাসরি। আমি লজ্জা নামক ভয়ে ভীত।

বি. দ্র: তারপরও বিদগ্ধজন বড় ভাইকে ধণ্যবাদ সমালোচনার জন্য।

পুণশ্চ: নিজে যারে বড় বলে, বড় সে নয়……” 

আবার বিতর্কে ফেরত যাই।
অধ্যাপক শাহীদুজ্জামান বলেন, “আমি যখন কথা বলছিলাম, তখন উনি (রশীদ) বারবার আমার কথার মাঝে কথা বলছিলেন। আমি আগে জানতাম না যে উনি আসবেন। আগে জানলে আমি কখনোই যেতাম না ওই টক শো’তে। এমন অভিজ্ঞতা আমার আগেও হয়েছে, আমি কথা বলতে গেলেই উনি আমাকে বাধা দেন।” (বিডিনিউজ ২৪)

এ থেকে সহজেই অনুমেয় অধ্যাপক সাহেব জেনারেল সাহেবের ব্যাপারে আগে থেকেই নাখোশ। সেক্ষেত্রে দুজনকে একসাথে টকশো তে ডাকলেও দুজনকে পাশাপাশি বসানোর দায়টা একুশে টিভিরই।

অধ্যাপক সাহেব আর জেনারেল সাহেব দুজনেই তাদের বিষয়ে ভালো জানেন। তারপরো একটু খোজ করে দেখি ত যেই বিষয়ে তর্ক তার অস্তিত্ব আছে কিনা। স্ট্রাটেজিকাল ইন্টেলিজেন্স আর ট্যাক্টিকাল ইন্টেলিজেন্স বলে কিছু আছে কিনা/////
সার্চ দিতেই পেয়ে গেলাম।
মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স বা ইন্টেলিজেন্স এর তিনটি ধাপ রয়েছে।
০১ স্ট্রাটেজিক ইন্টেলিজেন্স (Strategic intelligence is concerned with broad issues such as economics, political assessments, military capabilities and intentions of foreign nations (and, increasingly, non-state actors). Such intelligence may be scientific, technical, tactical, diplomatic or sociological, but these changes are analyzed in combination with known facts about the area in question, such as geography, demographics and industrial capacities.)
০২ অপারেশনাল ইন্টেলিজেন্স (Operational intelligence is focused on support to an expeditionary force commander and will be attached to the formation headquarters.)
০৩ ট্যাকটিকাল ইন্টেলিজেন্স (Tactical intelligence is focused on support to operations at the tactical level and would be attached to the battlegroup. At the tactical level, briefings are delivered to patrols on current threats and collection priorities. These patrols are then debriefed to elicit information for analysis and communication through the reporting chain.) – উইকিপিডিয়া 

এছাড়াও এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকায় বলা আছে, ইন্টেলিজেন্স সাধারণত দুই পর্যায়ে বাস্তবায়িত হয়, স্ট্রাটেজিক (Strategic intelligence is information that is needed to formulate policy and military plans at the international and national policy levels.) ও ট্যাকটিকাল লেভেলে (Tactical intelligence is intended primarily to respond to the needs of military field commanders so they can plan for and, if necessary, conduct combat operations.) । এবং এই দুই ধরণের ইন্টেলিজেন্সের পার্থক্য নিরুপণ হয় স্কোপ, পয়েন্ট অফ ভিউ ও লেভেল অফ এমপ্লয়মেন্টের জন্য।

আর তাই খারাপ লাগলেও বলতে হচ্ছে অধ্যাপক শাহীদুজ্জামান একজন একাডেমিক হয়েও ভুল কথা বলেছেন এবং ভুল বিষয়ে তর্ক করেছেন। আমরা যদি আরেকটু গভীরভাবে এই টকশো টি দেখি তবে দেখতে পাবো প্রথম থেকেই অধ্যাপক সাহেব এলোমেলো বক্তব্য দিয়েছেন, তাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে এক বিষয়ে আর উত্তর দিচ্ছেন আরেক বিষয়ে। এমনকি উপস্থাপক ও এই বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। খুব সম্ভবত অধ্যাপক সাহেব মদিরা পান করে টকশো তে এসেছিলেন, নয়তো এতোটা বেচাল হবার কারণ দেখি না। তাছাড়া ইন্টেলিজেন্স এর ধরণ ইত্যাদির দিকে না গিয়েও তিনি তার বক্তব্য দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করবেন ক্যানো। কারণ তাকে প্যাচাতে হবে, জামাত কে বাচাতে হবে।

শহীদুজ্জামান নাম দিয়ে সার্চ করতেই এই ভিডিও পেলাম। নিজেকে মুসলমান বাঙালি হিসাবে পরিচয় দেয়া লোকটির রাজনৈতিক অবস্থান এ থেকে পরিষ্কার হয়ে যায়।
অধ্যাপক সাহেব কে নিয়ে ফেসবুক বন্ধু সাঞ্জীবের একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি। “বেশ কয়েক বছর আগের কথা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিং পুলে পাড়ার বন্ধুদের নিয়ে সাঁতার কাটতে গিয়েছি। সে সময়ে আমরা প্রতিদিন বিকেলে যেতাম এবং অকল্পনীয় পর্যায়ের মজা করতাম। সেদিন পুলের শাওয়ারে একটি পিংক রঙের সুইমিং ক্যাপ পেয়ে খুব খুশি লাগলো। ভাবলাম পুলের চাচার (পুলের কর্মচারী) কাছ থেকে কেউ নিয়েছে, ফেরত দিতে ভুলে গেছে। উল্লেখ্য, আমরা চাইলে ক্যাপ, গগোলস, ফিন এসব নিতে পারতাম সুইমিং পুলের কোনায় একটি ঘর থেকে। যাই হোক, সেই পিংক সুইমিং ক্যাপ পরে মনের আনন্দে সাঁতরাচ্ছি। হঠাৎ করে চিৎকার, তাও আমাকে উদ্দেশ্য করে। একজন অত্যন্ত কালো মোটা লোক (অধ্যাপক শহিদুজ্জামান) একটি অত্যন্ত ছোট প্যান্ট পরে চিৎকার করে বলছেন আমি তাঁর সুইমিং ক্যাপ চুরি করেছি। আমি তো একেবারে হতভম্ব। পানি থেকে উঠে তাঁকে তাঁর পিংক সুইমিং ক্যাপ ফেরত দিলাম এবং বললাম কি কারণে আমি ক্যাপটি ব্যবহার করেছিলাম। তিনি মানবেনই না, তাঁর কথা খুব পরিষ্কার, আমি তাঁর ক্যাপ চুরি করেছি। এর আগে কখনো চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়নি, তাই মেজাজ গেলো খুব খারাপ হয়ে। আমি কিছু সুন্দর সুন্দর কথা বললাম। বলে পুলে আবার নেমে গেলাম। এই লোকটি যে টক-শোতেও এমন করবেন তাতে মোটেই অবাক হইনি। প্রচণ্ড রকমের উগ্র এবং অভদ্র।”

আরেকজন পরিচিত শহীদুজ্জামান এর চরিত্র নিয়ে বলতে গিয়ে বলে, “এই শালা পড়ায় দুর্দান্ত, কিন্তু তৃতীয় শ্রেনীর লুচ্চা- একাধিক ছাত্রী তার মলেস্টেশনের শিকার| হারামজাদা নর্থ সাউথে পড়াত, সেইখানেও আকাম করার চেষ্টা করে ধরা খাইসিলো। 
পড়ায় মন্ত্রমুগ্ধের মত করে রাখে, তারপরে সেই সুবাদে সুযোগ নেয়| আস্তা শুওর। এছাড়া গ্রেড ইত্যাদির ভয় দেখায় ফোর্স করত|”

শুভবুদ্ধি, শুভচেতনার জয় হোক। আল কায়েদা আমাদের ব্লগার ও মুক্তমনা লেখকদের হত্যার পিছনে আছে কি নেই তার চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যাদের হাতে রাজীব, অভিজিত, ওয়াশিকুর, দীপ খুন হয়েছেন তারা আল কায়েদা না হলেও আল কায়েদার মতাদর্শে বিশ্বাস করে। তাছাড়া বাঙলাদেশে একযোগে ৬৩ জেলায় প্রায় ৫০০ বোমা ফাটানো হয়েছিলো এটা ভুলে গেলো চলবে না।

বছর দুই আগেও কেউ যদি আই এস বা ইসলামিক স্টেটের কথা বলতো তবে হয়তো হেসে উড়িয়ে দিতাম। কিন্তু আই এস আজ বাস্তব। বাঙলাদেশের ভবিষ্যৎ ঠিক করতে হবে আমাদেরই।

 

২১ টি মন্তব্য : “বাঙলাদেশের টিভি বিতর্কের রূপ”

    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

      লোকজন একে দোষ দিচ্ছে তাকে দোষ দিচ্ছে, কিন্তু strategic intelligence আর tactical intelligence বলে আসলেই কিছু আছে কিনা সেটা নিয়ে কেউ কিছু বলছে না।
      তার উপর মজা হচ্ছে প্রফেসর সাহেব একজন এক্স ক্যাডেট আর জেনারেল সাহেব এক এক্স ক্যাডেটের বাবা। তাই ক্যাডেটরা চাইলেই এদের কোন একজন কে ঢালাও ভাবে দোষ দিতে পারছেন না।


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন
      • পারভেজ (৭৮-৮৪)

        strategic intelligence আর tactical intelligence বলে কিছু না থাকার কোন কারনতো দেখি না।
        আর জেনারেল রশিদ বিষয়টা যেভাবে ব্যাখ্যা করলেন তাতে ওনার না জানা থাকলে, এটা চ্যালেঞ্জ করার মাধ্যমে উনি আসলে কার পারপাজ সার্ভ করছেন?
        উনি কি তাহলে ইগোইস্টিক হয়ে কথাগুলো বলেছেন?
        আমার মনে হয়েছে, জেনারেল রশিদকে যে "নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ" বলা হয়, এটা উনি সহ্য করতেই পারেন না।
        এক্সক্যাডেটদের ইগো এমনিতেই একটু বেশী। ওনার দেখলাম সেটা বেশ বেশী......... (সম্পাদিত)


        Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

        জবাব দিন
        • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

          সেইটাই পারভেজ ভাই।
          আমি নিজে টকশো টো দেখি না। আসলে টাইম নাই। তবে কেউ শেয়ার দিলে বা তেমন কোন ঘটনা ঘটলে দেখি।
          আপনি একটু সময় করে পুরোটা দেইখেন। অবাক হবেন। প্রথম থেকেই অধ্যাপক সাহেব অপ্রাসঙ্গিক ছিলেন। আপনি ঠিক পয়েন্টে হিট করেছেন, উনি আসলে কার পার্পাস সার্ভ করতে গিয়েছিলেন!!!
          আর প্রফেসর সাহেবের নারীপ্রীতির পাশাপাশি বেশ ফান্ডা বা জামাতপ্রীতি ও রয়েছে।


          এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

          জবাব দিন
  1. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    আপনার মত আমারো টক-শো দেখা হয় না। খুবই বিরক্ত লাগে। আওয়ামীলীগ, বিএনপি-জামাত ইস্যুতেও নয়, ওদের কথা শুনলেই বিরক্ত লাগে। কিছুটা করুণাও হয়। নিজের কথা অপরকে শোনানোর জন্য কতটা আকুতি। ব্যতিক্রম বলতে RTV তে কোন একদিন বিকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে ছয়টায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উপর একটা টক-শো হয় সেটা চোখের সামনে পড়লে দেখি। কারণ আলোচনার বস্তুনিষ্ঠতার বিচারে কিছুটা হলেও তথ্যপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ কথা সেখানে হয়। তা বাদে এই চুলাচুলি চিৎকার চেচামেচি দেখার রুচি হয় না। পরিস্থিতি সামাল দেয়া উপস্থাপকের দায়িত্ব--সেদিকে না হয় নাই বা গেলাম!


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
  2. লুৎফুল (৭৮-৮৪)

    টকশো দেখার সময় হয় না। বিতর্কিত ঘটনা না ঘটলে বা ঘনিষ্ঠ কারোটা দেখে মিতামত দেবার ফরমায়েশ না থাকলে। তবে এই ধরনের ঘটনার সং্খ্যা নগণ্য নয় আজ। আমার প্রশ্ন এইসব পেশাজীবী বিতার্কিকদের চাইতে টিভি চ্যানেলগুলোকে নিয়ে বেশী। তারা যে এমন ঘটলে আনন্দিত হয়না এটা বিশ্বাস করা কষ্টকর। কিন্তু তাদের বিশ্বাসের তারল্যের চাইতে এই সব প্রচারের দীর্ঘ মনস্তাত্বিক প্রভাবটি (নিরীহ দর্শকদের ওপর) সম্পর্কে আমরা কতোটুকু বুঝি বা আদৌ বুঝি কিনা সেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এমনিতেই গোটা সমাজের মানসিক বৈকল্য এমন জায়গায় পৌচেছে যে আমরা আমাদের চারপাশে হত্যা ও যৌন সন্ত্রাসের মতোন বিষয়েও আজ আর সেই রকম স্পর্শকাতর নই।
    মনস্তত্ববিদরা (অন্তত আমাদের দেশে) বেজায় আফিম ভক্ত হয়ে পড়েছেন বোধ করি। আর রাষ্ট্রযন্ত্র তো....

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মোকাব্বির (১৯৯৮-২০০৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।