মুক্তিযুদ্ধে ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ

এক সাগর রক্তের বিনিময়ে

এক সাগর রক্তের বিনিময়ে
বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা
আমরা তোমাদের ভুলব না।
দুঃসহ এ বেদনার কণ্টক পথ বেয়ে
শোষণের নাগপাশ ছিঁড়লে যারা
আমরা তোমাদের ভুলব না।
যুগের নিষ্ঠুর বন্ধন হতে
মুক্তির এ বারতা আনলে যারা
আমরা তোমাদের ভুলব না।
কৃষাণ-কৃষাণীর গানে গানে
পদ্মা-মেঘনার কলতানে
বাউলের একতারাতে
আনন্দ ঝংকারে
তোমাদের নাম ঝংকৃত হবে।
নতুন স্বদেশ গড়ার পথে
তোমরা চিরদিন দিশারী রবে।
আমরা তোমাদের ভুলব না।।

কথাঃ গোবিন্দ হালদার
সুরঃ আপেল মাহমুদ
গেয়েছেনঃ স্বপ্না রায়

কয়েকজন শহীদের ছবি ও তালিকা

১৯৭১; শহীদ ক্যাডেট ও খেতাবপ্রাপ্তদের তালিকা শিরোনামে লেখাটি লিখেছিলাম চার মাস আগে। 

দুঃখের বিষয় ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ সম্পর্কে তেমন কিছুই পাই নি তখন একমাত্র যা জেনেছি তা হলো একটি নাম শহীদ আরবাব আখতার।

আজ ভোরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র ঘাটতে গিয়ে পেলাম নিচের বিবরণীটি। লিখেছেন অধ্যাপক গোলাম জিলানী নজরে মোরশেদ। ১৯৭২ সালে বাংলার বাণীর বিশেষ সংখায় লেখাটি ছাপা হয়। পরে স্বাধীনতার যুদ্ধের দলিলপত্রের অষ্টম খন্ডে স্থান পায়।
৪৮৯ ৮ম ৪৯০ ৮ম

৪৯১ ৮ম

শহীদ অধ্যাপক লেঃ কর্নেল মনজুরুর রহমান
শহীদ অধ্যাপক হালিম খান
শহীদ মালি আবদুস সাত্তার
শহীদ চৌকিদার গাজী  (প্রথম শহীদ) ও
শহীদ সইজউদ্দীন কে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।

সূত্রঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র ঃ অষ্টম খন্ড (২য় মুদ্রণ)

৮ টি মন্তব্য : “মুক্তিযুদ্ধে ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ”

  1. ড. রমিত আজাদ (৮২-৮৮)

    ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধে যোগদানকারী অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে তিনজনকে চিনি/চিনতাম। ১। আমাদের কলেজে আমার হাউজ মাষ্টার হিসাবে কর্মরত অধ্যাপক হাসান স্যার। স্যার তখন ঝিনাইদহ-তে কর্মরত ছিলেন। স্যার সংগঠক মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে কাজ করছিলেন। স্যার ভূগোলের শিক্ষক ছিলেন। স্যার আর এই পৃথিবীতে নেই। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। ২। আমাদের কলেজের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক জনাব শফিকুল ইসলাম স্যার। স্যার আমাদের ইংরেজী পড়াতেন। ১৯৭১ সালে স্যার জেসিসি-র ক্যাডেট ছিলেন। ক্লাস ইলেভেনে পড়তেন। স্যারের বাড়ী কুমিল্লা। সে সময় স্যার বাড়ী চলে আসেন। উনার বাড়ীর তরুণ-রা যুদ্ধে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে বের হলে স্যারও তাদের সাথে যেতে চান। কিন্তু স্যারের বয়স কম হওয়ায় তারা স্যারকে নিতে রাজী হননি। এরপর স্যার লুকিয়ে লুকিয়ে উনাদের পিছু পিছু যান। অনেক দূর যাওয়ার পর তারা স্যারকে দেখে ফেলেন। স্যারের এই মনোবল ও দৃঢ়চেতা মনোভাব দেখে তারা শেষ পর্যন্ত স্যারকে সাথে নিয়ে নেন। ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে, স্যার দেশে ফিরে এসে রণাঙ্গনে যোগ দেন ও বিভিন্ন সফল অপারেশন করেন। স্যার কলেজ থেকে অবসর নিয়েছেন। শুনেছি তিনি বর্তমানে সিলেটের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপাধ্যাক্ষ হিসাবে কর্মরত আছেন। ৩। জনাব হুমায়ুন কবীর। তিনি তখন জেসিসি-তে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। উনার নিজের মুখ থেকে শোনা। উনাদের অধ্যক্ষ কর্নেল রহমান স্যার উনাদেরকে জিয়াউর রহমানের ঘোষণা শোনান। তারপর ক্যাডেটদের উদ্ধুদ্ধ করেন স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগ দিতে। ৩০ মার্চ, ১৯৭১-এ হুমায়ুন ভাই ও আরো তিনজন ক্যাডেট এবং দুজন এন.সি.ও. যুদ্ধে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে কলেজ ছাড়েন। তারপর হুমায়ুন ভাই ৯নং সেক্টরে যুদ্ধ করেন। এই যুদ্ধে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। এর ফলশ্রুতিতে তিনি পরবর্তিতে বি.এম.এ.-তে যোগ দিয়েও অসুস্থতার জন্য চাকুরী করতে পারেননি। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যয়ন সমাপ্ত করেন। তিনি কিশোর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে সম্মাননা পেয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আয়োজিত মেধাবী ছাত্রদের নিয়ে হিজবুল বহরে সমুদ্র ভ্রমণেও তিনি মেধাবী ছাত্র হিসাবে অংশগ্রহন করেছিলেন। পরবর্তিতে স্বৈরাচারী এরশাদ কর্তৃক তিনি গ্রেফতার ও নির্যাতিত হয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। মুক্তিযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হওয়ার কারণে তিনি বোন-ক্যান্সারে ভুগছেন।

    জবাব দিন
  2. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা বই টির লেখক মেজর (অব) কামরুল হাসান ভূইয়া ঝ ক ক এর এক্স ক্যাডেট।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  3. ড.রমিত ভাই এই ৩জন মহান স্বাধীনতার কান্ডারী বাদেও আরও ৩০জন ছিলেন। তাদের কেউ কেউ মারা গেছেন আর কেউ কেউ জীবিত, তবে এনাদের বেশির ভাগই মহান স্বাধীনতার কান্ডারী হয়েও মুক্তিযোদ্ধার প্রাপ্য সম্মান টুকু পায়নি। ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ জার্নাল পড়লেই জানতে পারবেন। এই মানুষ গুলোকে নিয়ে কিছু লিখবেন এই প্রত্যাশায়।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রাশিদুল ইসলাম

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।