যতি চিহ্ন

গতকাল একরাম কবীর ভাই জেসিসির একটা পোষ্ট থেকে জানলাম একজন ক্যাডেট চলে গেছেন।
Our JCC mate Enamul Munir (871/HH) has expired this morning at his Dhaka residence. Innalillah-e-wainna ilaihe raziun.
He possibly passed away in his sleep after a heart attack. His body is being taken to Chuadanga for burial. 
Please pray for our friend.একরাম কবীর 

একে একে নিভিছে দেউটি
এনামুল মুনীর (871/HH-JCC)
আটাত্তর সালে আমরা তিপ্পান্নজন ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হলাম ক্লাস সেভেনে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বার কি তের বছরের কিছু ছেলে, আমারতো প্রথম কদিন গেল কেদে কেটে, নাকের জলে আর চোখের জলে! আস্তে আস্তে বন্ধুত্ব হল, কেটে গেল ছয় বছর। চুরাশি সালে যখন বের হয়ে আসি তখন একে অন্যকে বুকে জড়িয়ে ধরে আবার কান্না! বন্ধু আবার কি হবে দেখা? অনেকের সাথেই আর কখনোই হয়নি! 
মিকাইল বিরাশিতে, শহীদুল দুহাজার নয় এ আর মুনির গেল গতকাল না ফেরার দেশে, ওরা আর কখনোই ফিরবে না, অথচ দুমাস আগেই মুনিরের চুয়াডাঙ্গার বাসায় এক আড্ডায় মেতেছিলাম আমরা, কত গল্প, কত স্মৃতি!? কি আমুদে ছিল ও, আমাদের মাঝে সবচে বেশী হাসিখুশি ছিল ও, কথায় কথায় চুটকি বলত। ইদানিং মাঝে মাঝে মোবাইলে জোকস টেক্সট করে পাঠাতো। 
আশ্চর্য কি ওরা তিনজন আর আমি সবাই ছিলাম বি ফর্মে ( সেকশন), একে একে নিভিছে দেউটি, তবে এবার কার পালা? আমি বা অন্য কেউ….?
ভাল থেকো বন্ধুরা, দেখা হবে আবার না ফেরার দেশে, আজ অথবা কাল!রোমেল সরোয়ার

Adv. Firoz Ahmed

Our great leader Adv. Firoz Ahmed passed away on today 09.03.14 (Innalillahe wa inna ilahe rajwun. Please pray for his departed soul.

আজ আবার দেখলাম জেসিসির ফিরোজ ভাই নেই। গত কিছুদিন যাবৎ ভুগছিলেন ক্যান্সারে। কিছুদিন আগেই জেসিসির মাইন ভাইএর সাথে এই ব্যাপারে কথা হলো। মাইন ভাই বলেছিলেন, প্রষ্টেট এর ক্জান্সার। আমিও শুনে বললাম ক্যান্সারের মধ্যে যতদূর জানি এইটাই বেশি সেফ। ফিরোজ ভাই জেসিসির ২য় ব্যাচ বোধকরি। (কেউ সঠিক টা জানিয়ে দিলে খুশি হবো) ফিরোজ ভাইএর ছেলে তৌফিক ও জেসিসির এক্স ক্যাডেট্য – ৯৯-০৫ এর বোধকরি। প্রাণবন্ত ছেলে। ওর সাথে পরিচয় লন্ডনে। এখন গান গায় রাজত্ব ব্যান্ডে।  বাবার মতো সেও আইনপেশায়। এই কম্বিনেশনটা অদ্ভুত। হয়তো ক্যাডেট বলেই সে পারছে।

ফিরোজ ভাই একজন সৎ রাজনীতিবিদ ছিলেন। বাম্পন্থী রাজনীতি করেছেন আজীবন। নিজের আদর্শের সাথে আপোষ করেননি কোনদিন।  দেশ একজন সৎ মানুষকে হারালো।

কাজী আহমেদ পারভেজ ভাই তার বন্ধুর মৃত্যুতে চমৎকার একটি প্রস্তাব রেখেছেন।
আজ সকালে আমার স্কুল জীবনের (ক্যাডেট কলেজের) এক সহপাঠি হৃদপিন্ডের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে পরলোক গমন করেছে। এই প্রথম আমার এমন একজন সমবয়সি বন্ধু এমন একটা কারনে আমাদের ছেড়ে গেল যা ঐতিহাসিক ভাবেই জীবন সমাপনের একটি স্বাভাবিক পদ্ধতি বলে মানা হয়। ত্রিশ পেরুনোর পর থেকে প্রাকিতিক ভাবে শারীরিক যে অধঃগতি শুরু হবার কথা, তা কারো কারো ক্ষেত্রে এতটাই প্রবল হতে পারে যা পঞ্চাশের আসেপাশে এরকম পরিস্থিতির উদ্রেক ঘটাতেও পারে। আর তা স্বাভাবিক নিয়মেই।

খবরটা জানার পর থেকেই খারাপ লাগছে। খুব খারাপ। দুর্ঘটনায় অন্যকে দোষারোপ করে কিছু সান্তনা পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে সেই সুযোগ নাই।
অবশ্য অনেকেই বলবেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের বর্তমান উতকর্ষতার যুগে এসবই প্রিভেন্টেবল, ট্রিটেবল। কিন্তু সংস্কৃতিগত ভাবে অসচেতনতায় অভ্যস্ততা এবং কমপ্লেন ছাড়া চিকিৎসকের কাছে না যাওয়ার প্রবনতা অনেক ক্ষেত্রেই এই প্রিভেন্টেবল ট্রিটেবল পরিস্থিতি উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে না।
আশা করব এই অভিজ্ঞতা থেকে সবাই শিক্ষা নেবেন এবং বয়স ৪০ হবার পর থেকেই বাধ্যতামূলক ভাবে চিকিতসকের সরনাপন্ন হবেন।
সমস্যা হলো এজন্য কোথায় যেতে হবে, কি বলতে হবে তা আমরা কেউ তেমন একটা জানি না। আমার না হয় বন্ধু Abdullah Al-mamun আছ। সবার তো নাই। তাঁরা কি করবে। হাসপাতালে বা ক্লিনিকে গিয়ে যদি কেউ বলেন, “ডাক্তার দেখাতে এসেছি, কারন আমার বয়স এখন চল্লিশ” – হয়ত হাস্যকর পরিস্থিতিরও উদ্ভব হতে পারে। তাই নয়া? 
আমার প্রস্তাব হলো ক্লিনিক / হাসপাতালগুলোতে “স্বাস্থকর জীবন” এই নামে একটা বিভাগ খোলা হোক যেটা মূলতঃ স্পন্সরসীপ ও ডোনেশন নির্ভর ভাবে চালানো হবে। এতে করে নুন্যতম ব্যয়ে চল্লিশোর্ধগন স্বাস্থ্যসেবা নিতে উৎসাহিত হবেন। প্রিমিয়াম কাউন্টার রাখা যায় যেখানে অগ্নিমূল্যে দ্রুত সেবা দেয়া মানে পরামর্শ দেয়া হবে।
আসলেতো এটা মূলত পরামর্শ কেন্দ্রই কারন যারা এসেছেন তাঁরা কেউ কার্যতঃ অসুস্থ নন। তবে আরও স্বাস্থকর জীবন চাচ্ছেন।
স্পন্সরশীপেও কোন সমস্যা হবার কারন দেখি নয়া। চল্লিশোর্ধগন বেশিরভাগ বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সিএসআর দেখাশুনা করেন। এরকম প্রকল্পে অর্থায়নে তাঁরা উৎসাহিত হবেন ভূমিকা রাখবেন, এটা আশা করাই যায়। তাছাড়াও এঁরা বেশিরভাগ ক্রয় সিদ্ধান্তেই প্রধান ভূমিকাধারী বিজ্ঞাপন ব্রান্ডিং এর জন্য এত জন ডিসিশন মেকারকে একসাথে পাওয়াটাও একটা সুযোগ বৈ কি?
কেমন হবে ব্যাপারটা? – কাজী আহমেদ পারভেজ

১,০৮০ বার দেখা হয়েছে

৪ টি মন্তব্য : “যতি চিহ্ন”

মওন্তব্য করুন : মোস্তাফিজ (১৯৮৩-১৯৮৯)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।