আসুন হাত কাটাকাটি করি। (১৮+)

শ্রদ্ধেয় আখতার হোসেন স্যারের ওয়ালে ছবিটা দেখে কেমন জানি হত বিহবল হয়ে পড়লাম।

সিরিয়ার মুসলিম জঙ্গীরা চুরির অভিযোগে এক ব্যাক্তির হাত কাটার উৎসবে মেতেছে। টুইটারে তারা লাইভ আপডেট দিয়েছে এই ব্যাপারে। আর বেশ কিছু জিহাদী সোশাল মিডিয়া এই হস্ত কর্তনের ঘটনা আনন্দের সাথে রি টুইট করেছে।
সিরিয়ার দক্ষিণের শহর মাসকানার আলেপ্পোর কাছে এই বর্বোরোচিত ঘটনাটি ঘটে।
হাত কাটার এই মহতী উদ্যোগের সাথে জড়িত জঙ্গী সংগঠনটির নাম ISIS – Islamist State in Iraq and Syria; গ্রুপটি প্রো আল কায়েদা বলে জানা যায়। সংগঠনটি আরো জানায় অভিযুক্ত ব্যাক্তিটি এইভাবে তার হস্ত কর্তনের জন্য অনুরোধ জানায়।

WARNING: GRAPHIC CONTENT

Horrific: This was the first in a series of gruesome images posted on Twitter from extremist group ISIS showing crowds watch an alleged thief have his hand cut off

টুইটারে প্রকাশ হওয়া প্রথম ছবি। মঞ্চ প্রস্তুত, দর্শকরাও। সামনে দাড়িয়ে ISIS এর মুখপাত্র রায় পড়ে শোনাচ্ছেন।

 

Brutal: Militants held the alleged thief back as one advanced with a sword to chop his hand off

অভিযুক্ত চোরকে চোখ বেধে জোর করে ধরে রাখা হয়েছে আর একজন জঙ্গী তলোয়ার দিয়ে হাত কাটতে উদ্যত।

বেশ কিছু জিহাদী বলেছে চোর তার দোষ স্বীকার করেছে এবং এইভাবে নিজের হাত কাটার মাধ্যমে নিজের পাপ স্খলন করার অনুরোধ জানিয়েছে। যদিও এর সত্যতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। r. 

 Graphic: The final image showed the man seemingly passed out after his hand had been severed
হাত কাটার পরে। কাটা হাতটি ব্লার করে দেয়া হয়েছে।

 

Live amputation: The group claimed the man had asked for the punishment to be carried out in Maskanah, near Aleppo in northern Syria, to 'cleanse him of sins'

জঙ্গী সংগঠন ISIS জানায় চোরটি নিজেই তার হাত কেটে তাকে পাপমুক্ত করার অনুরোধ জানায়।

ISIS জঙ্গী সংগঠনটি ২০১৩ সালের এপ্রিলে ইরাকে গঠিত হয়। জানা যায় আল কায়েদার সাথে এদের গোপন যোগসাজোশ রয়েছে। ইতোমধ্যে এরা সিরিয়ার বেশ কিছু অঞ্চল দখল করে নিয়েছে। দলের জঙ্গীরা বেশিমাত্রায় এক্সটিমিজ্মের দিকে চলে যাওয়ায় কেন্দ্র এই বচর ফেব্রুয়ারির তিন তারিখে দলটি ভেঙ্গে দেয়ার কথা ঘোষণা দেয়। যদিও তা বাস্তবায়িত হয় নি।
দলটির অন্যতম নেতা আবু বাকর আল বাগদাদী যিনি দ্যা গোষ্ট নামেও পরিচিত  কে ইতোমধ্যে ইরাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় মধ্যপ্রাচ্যের মোষ্ট ওয়ান্টেড ঘোষণা করেছে।
ISIS সংগঠনটি ISI (Islamic State in Iraq) থেকে উদ্ভুত হয়। ২০১১ সালে ইরাক যুদ্ধ শেষ হবার আগ পর্যন্ত ISI সংগঠনটি আমেরিকার সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছিলো। বর্তমানে ISIS সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত অন্যতম জিহাদী গ্রুপ আর এদের মূল শক্তিই হচ্ছে বিদেশি গেরিলারা। 

Ongoing battle: ISIS control a large proportion of northern Syria and is taking control of the previously disorganised rebel fighting groups as well as imposing Sharia law in the area (stock image)

 ISIS দক্ষিণ সিরিয়ার বেশ কিছু অঞ্চল দখলে নিয়েছে। এর মধ্যে আজাজ, রাকা রয়েছে। রাকায় খ্রিষ্টান কমুনিটি রয়েছে বলে জানা যায়।
এছাড়াও তারা বিবদমান গেরিলা গ্রুপগুলোর উপর আধিপত্য বিস্তার করতে সমর্থ হয়েছে। শরিয়া আইন এর বাস্তবায়ন এক্ষেত্রে ISIS এর সহায়ক হয়েছে।

ISIS মূলত সুন্নী মতাবলম্বী উগ্রপন্থী মুসলিম জিহাদীদের সংগঠন। এরা ইরাককে সুন্নী রাষ্ট্রে পরিণত করার ব্যার্থ উদ্যোগ নিয়েছিলো। তবে যুদ্ধকালীন সময়ে ইরাকের বাগদাদ ও সালাহ আদ দীনে শক্ত অবস্থানে ছিলো। এরা সে সময় হাজার হাজার ইরাকীকে হত্যা করে যাদের মধ্যে বড় অঙ্কের সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। ISIS এর আড়াই হাজারের বেশি সক্রিয় সদস্য রয়েছে বলে জানা যায়। ২০১৪ এর ৩রা ফেব্রুয়ারি আল কায়েদা এদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে।

ISIS সিরিয়ার রাকায় খ্রিষ্টান অধিবাসীদের উপর জিজিয়া কর চালু করেছে। এক্ষেত্রে জনপ্রতি অমুসলিমকে ১৪ গ্রাম ওজনের সোনা বা সমমূল্যের অর্থ দিতে হবে অথবা তাকে হত্যা করা হবে। ISIS খ্রিষ্টান নেতাদের সাথে দেখা করে তিনটির  যেকোন একটি মেনে নিতে বলেছেঃ

০১ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে হবে; নতুবা
০২ জিজিয়া কর দিতে হবে; নতুবা
০৩ মৃত্যু বরণ করতে হবে।

এর মধ্যে অন্তত ২০ জন খ্রিষ্টান নেতা উপরের আইন মেনে নিয়েছে। যদিও এর মধ্যে অনেক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী পালিয়ে গেছে, তাদের চার্চ ও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। পুড়িয়ে দেয়া চার্চ পুনঃনির্মাণে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ক্রস সহ অন্যান্য খ্রিষ্টীয় সিম্বল দেখানোর ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। প্রকাশ্যে প্রার্থণা করা, চার্চে ঘন্টা বাজানোর ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। শরিয়া আইনের অধীনে ISIS অধিকৃত এলাকাগুলো চলছে।

এ পর্যন্ত সিরিয়ার এদের হাতে ২০০০ এর অধিক লোক মারা গেছে বলে জানা যায়।
সূত্রঃ ডেইলি মেইলের সাহায্য নেয়া হয়েছে।

 

৮ টি মন্তব্য : “আসুন হাত কাটাকাটি করি। (১৮+)”

  1. ০১ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে হবে; নতুবা
    ০২ জিজিয়া কর দিতে হবে; নতুবা
    ০৩ মৃত্যু বরণ করতে হবে।

    তোমরা যুদ্ধ কর আহলে-কিতাবের ঐ লোকদের সাথে, যারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহণ করে না সত্য ধর্ম, যতক্ষণ না করজোড়ে তারা জিযিয়া প্রদান করে। .... ৯:২৯

    এটা তো অনুমোদিত। তাহলে সমস্যা কোথায়?

    ৩ নম্বর পয়েন্টটাতে একটু কনফিউশন আছে ...

    জবাব দিন
  2. হুমায়ুন (২০০২-০৮)

    কয়েকটা তথ্য যোগ করি।এই জঙ্গি সংগঠন "লেভান্ত" নামে একটা বৃহৎ ইসলামিক রাষ্ট্র গঠন করতে চায়।তাদের প্রাথমিক প্ল্যান অনুযায়ী এই রাষ্ট্রের সদস্য হবে প্যালেস্টাইন,জর্ডান,লেবানন,সিরিয়া এবং ইরাক।কিন্তু তারা বোকার মতো তুরস্কের সিরিয়া সীমান্তবর্তী "হাতায়" নামক একটা শহর চেয়ে বসেছে।এবং খুব চাচ্ছি এই ISIS যেন "হাতায়" নেবার চেষ্টা করে কারণ সেদিনই পৃথিবীর ইতিহাসে ISIS নামটা অতীত হয়ে যাবে। 😀


    তুমি গেছো
    স্পর্ধা গেছে
    বিনয় এসেছে।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।