টাই – আমার গলার মালা + ২ টা ফাও জ্ঞান

ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হবার পর আমাদের অনেকেই জীবনে প্রথম টাই পড়েছে। এরপর ৬ বছরে টাই হয়ে হয়ে যায় ক্যাডেটদের প্রতিদিনের সঙ্গী। সেভেন এইটে আমরা যারা সাইজে তত বড়সড় ছিলাম না তারা টাইএর ছোট অংশ যাতে লম্বা না হয়ে যায় বা লম্বা কমানোর ব্যাপারে বেশ কসরৎ করতাম। আর ছিলো টাইয়ে যাতে মাখন না লাগে সেই চেষ্টা। মনে পরে গেলো নভিসেস প্যারেডের আগে ভোরের প্যারেড, একাডেমী আর রাতের প্রেপে পড়তে হতো সাদা শার্ট, সাদা প্যান্ট, কালো জুতা আর টাই।
কলেজে থাকতে চিনতাম সিঙ্গেল নট আর ডাবল নট। কখনো বা স্যাররা ডিনারে বো তাই বেধে আসতেন।কয়েকদিন আগে বিসিসির ২৫ তম ব্যাচের নাজমুল অথবা হামীম ১৮ প্রকার টাই বাধার লিঙ্ক শেয়ার করে। ভাবলাম সেটা এখানেও শেয়ার করি।
প্লাস আজই হয়ে গেলো মেকার গোল্ডেন জুবিলী প্লাস গেট টুগেদার এই লন্ডনে।
ছবি লিঙ্ক 
মেকার কামাল ভাই (৬৫- ৭১) আর ফয়সাল ভাই (৭২-৭৮) এর বদান্যতায় উপহার পেলাম মেকার টাই ও কোট পিন। খুবই আনন্দ লাগছে মনে। ৯৬ এ কলেজ থেকে আসার সময় টাই, বেড কাভার ইত্যাদি দিয়ে আসতে হয়েছিলো কলেজে। অথচ যতদূর মনে পড়ে ৯০ এ যখন কলেজে ভর্তি হই তখন টাকা দিয়েই কিনতে হয়েছিলো ওগুলো। এখনো সেই ৬ বছরের সঙ্গী টাইকে মিস করি। মিস করি বেড কাভারকেও।

1525259_582920428462320_2072207840_nকলেজ টাই পড়ে মোস্তাফিজ ভাই-  আর সি সি (৮৩-৮৯)।

এবার আসুন টাই বাধা শিখি। বেশি না ১৮ প্রকার টাই বাধা শিখুন।

Screen Shot 2013-12-15 at 03.18.43 Screen Shot 2013-12-15 at 03.19.04 Screen Shot 2013-12-15 at 03.19.18 Screen Shot 2013-12-15 at 03.19.34 Screen Shot 2013-12-15 at 03.19.47 Screen Shot 2013-12-15 at 03.19.59 Screen Shot 2013-12-15 at 03.20.10 Screen Shot 2013-12-15 at 03.20.23 Screen Shot 2013-12-15 at 03.20.35 Screen Shot 2013-12-15 at 03.20.48 Screen Shot 2013-12-15 at 03.21.00 Screen Shot 2013-12-15 at 03.21.12 Screen Shot 2013-12-15 at 03.21.26 Screen Shot 2013-12-15 at 03.21.38 Screen Shot 2013-12-15 at 03.21.51 Screen Shot 2013-12-15 at 03.22.02 Screen Shot 2013-12-15 at 03.22.12 Screen Shot 2013-12-15 at 03.22.25সূত্রঃ রিয়েল ম্যান রিয়েল স্টাইল ডট কম।

আর শেষমেষ টাই এর ছোট দিকটা যাতে লম্বা না হয়ে যায় এর একটা চমৎকার সমাধান বলি।
আমরা তখন সেভেনের সেকেন্ড টার্মে বোধকরি। নতুন কলেজ প্রিফেক্ট হয়েছেন আহমেদ মুকতাদা মনোজ ভাই (৮ম ব্যাচ,৮৫-৯১)। প্রেপ টাইমে আমাদের ক্লাসে আসলেন। কথায় কথায় জিজ্ঞাসা করলেন কোন সমস্যা আছে কিনা? একজন ছোটখাট ক্লাসমেট বলে উঠলো জী ভাইয়া, টাইএর নিচের অংশ উপরেরটার চেয়ে বড় হয়ে যায়।
মুকতাদা ভাই ও বিশেষ একটা লম্বা ছিলেন না, পাঁচ চার, বা পাঁচ পাঁচ হবেন বড়জোড়। তিনি হেসে নিজের টাই দেখালেন। আমরা অবাক হয়ে দেখলাম ভাইয়ার টাইএর নিচের অংশ গায়েব। ব্যাপার কি? কলেজ প্রিফেক্ট মানুষ, কলেজের আমাদের সবার বস। কিন্তু তাই বলে যাদু ও জানেন কি!
ভাইয়া দেখালেন কি করে তিনি টাইএর ছোট দিকটা শার্টের ভিতর গায়েব করে দিয়েছেন।
ধন্যবাদ মুকতাদা ভাইকে সেই ছেলেবেলায় আমাদের বিদ্যাটা শিখিয়ে দেবার জন্য।

এবার দুইখানা জ্ঞান

বিসি আর এডি নিয়া খুব ভুগতে হইতো। যারা সমস্যায় পড়েন তাদের জন্য।
Screen Shot 2013-11-18 at 10.13.46 copy
আর এএম, পিএম নিয়া কারো ঝামেলা হয়? আমার হইতো।
Screen Shot 2013-11-18 at 10.12.36 copy

৮,০৯৫ বার দেখা হয়েছে

২৩ টি মন্তব্য : “টাই – আমার গলার মালা + ২ টা ফাও জ্ঞান”

  1. টিটো মোস্তাফিজ

    হরেক রকম গিট্টু দেয়া শিখলাম B-)
    ক্যাডেট কলেজের বিভিন্ন রকম টাইয়ের ছবি দিতে পারতে। রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের এক সময়ের টাই ছিল মেরুন।মনোগ্রাম যুক্ত। আমরা পরেছি লাল নীল আসমানী কাল স্ট্রাইপ। এখন আবার অন্য রকম।


    পুরাদস্তুর বাঙ্গাল

    জবাব দিন
    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

      😀
      মোস্তাফিজ ভাই কই পাবো?
      আমাদের কলেজের টাই পর্যন্ত রেখে আসতে হইছে কলেজে।
      গতকাল ১ম কোন সি সি রিলেটেড টাই পাইলাম মেকা র।

      নেটএ সার্চ দিয়া সুন্দর মতো একটা ক্যাডেট কলেজ এর লোগো পাওয়া যায় না আর টাই!
      তবে মেকারটা ছবি তুলে দিয়ে দিবো। এস এল আরের টা সাইজে বড়। এইখানে পার ছবি দুই মেগার উপর আপলোড হয় না।


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন
  2. সামিউল(২০০৪-১০)

    :clap:
    এত গুলো প্যাঁচ শেখানোর জন্য ধন্যবাদ।

    :teacup: খান।

    যত নতুন প্যাঁচ ই শিখি না কেন, কলেজে শেখা টাই বাঁধার সেই "ঘোরপ্যাঁচ" ই আমার সবচে বেশি পছন্দ। 😀


    ... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!

    জবাব দিন
  3. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    Abdullah Muhammad Farabi - এক প্রসঙ্গ আসলেই কাছাকাছি আরেক প্রসঙ্গ মাথায় উঁকি দেয়। টাইসম্পর্কিত না, তবুও বলি...

    ভেস্ট পড়লে যে কেউ মারা যাবে ব্যাপারটা এমন না। তবুও ধুতে হয় বলে কেউ ভেস্ট পড়তে চাইত না, এটা আমরা সবাই জানি।
    কিন্তু ক্লাসে/প্রেপ টাইমে কতিপয় স্যার সবসময় ভেস্ট চেক করেন। এই সমস্যার সমাধান কি?
    কোন এক উর্বর মস্তিষ্কের মাথায় খেলে গেল সমাধানটা।
    সাদা কাগজ ভেস্টের উপরের অংশের শেপে কাটা হল। সেটা সবসময় হাতের কাছে রাখা হত। বিপজ্জনক কোন শিক্ষক আশেপাশে থাকলেই সেই কাগজ ডাইরেক্ট শার্টের ভিতর চালান।
    -"নাফিস, ভেস্ট পড়েছ?"
    -"জ্বী স্যার। এই যে দেখেন..."
    নাফিস শার্টের উপরের দিকে হালকা ফাঁক করে দেখিয়ে দিত সাদা কাগজের টুকরোটা।

    মরে যাব। তবু ভেস্ট পড়ব না.... বাঁচতে হলে জানতে হবে!!


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
    • সামিউল(২০০৪-১০)

      😀 😀 ভাই, এই কাজ আমরাও করছি।

      কেউ কেউ ভাবছিল এত ঝামেলা করে ভেস্ট পড়ার চেয়ে ভেস্ট সরাসরি শার্টের সাথে সেলাই করে নিলেই হয়।

      আবার একজন নাকি শুনছিলাম ভেস্টের কাঁধে ছিঁড়ে টিপ-বোতাম লাগিয়ে নিয়েছিল। সিস্টেম ছিল এরকম- সবসময় ভেস্ট পড়ে থাকে, কিন্তু বোতাম না লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখে গায়ের সাথে, কোমরে। স্যার চেক করতে আসলে টিপ বোতাম লাগিয়ে নিয়ে ভদ্র ছেলে।

      জীবন যাবে, তবু ভেস্ট পড়বে না। এই না হলে ক্যাডেট!!!


      ... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!

      জবাব দিন
  4. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    আমি বোঝার চেষ্টা করতেসি আমি কোনটা পারি। ছবিতে তো ডিরেকশান উলটায় যায়। মুসিবত। দেখে যতদূর বুঝলাম ফুল উইন্ডসরটাই মনে হয় আমারে শেখানো হইসিলো!


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
      • মোকাব্বির (৯৮-০৪)

        হঠাৎ মনে পড়লো। ক্লাশ সেভেনে টাইয়ের নট তো আর প্রথমেই মুখস্থ হয় না। আমরা কিছু পন্ডিত আছিলাম প্রতিদিন নট খুলতাম আর নতুন করে বাধার চেষ্টা করতাম। এতগুলা ভ্যারিয়েশান দেখার পরে মনে হইল, নিশ্চিত এরমাঝে একটা বা দুইটা নট, উপরের কোন একটার সাথে ঠিকই মিলে যাইতো! 😀


        \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
        অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

        জবাব দিন
  5. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    মোল্লা স্যারের সেই বিখ্যাত তাই পরা একটা ছবি আমার কাছে ছিলো।
    খুজে পেলে এখানে দিয়ে দেবো।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : তাহমিনা শবনম (৮৪-৯০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।