হূ আহমেদ এবং রোযার কিছু কায়দা কানুন

বাংলাদেশ এবং দেশে বিদেশে থাকা বাঙালিরা (পূর্ব বঙ্গের)এখন ভুগছে হুমায়ুন আহমেদিয় জ্বরে। আলাদা করে পুর্ব বঙ্গ বলার কারণ কলকাতার ওঁরা নাকি হুমায়ুনের শোকে পাথর হননি। কি আর করা বাংলাদেশের বাঙালিরা এর উপযুক্ত জবাব চায়। ইন্টারনেট (বিষেশত ফেসবুক) ও পত্রিকাগুলো খুললেই পাওয়া যাচ্ছে এসব খবর। কেনো আমি এভাবে ভাবছি?! আমিও তো কয়েকখান স্ট্যাটাস শেয়ার করে দিলেই পারি; কি অপুরণীয় ক্ষতি হয়েছে বাঙলা সাহিত্যের, হুমায়ুন কতো উচু  মাপের লেখক ছিলেন, হিমু, মিসির আলি, শুভ্র, ফিহার কি হবে ইত্যাদি কয়েকখান পোষ্ট দিলেই মুটামুটি কর্তব্য হয়ে যেতো। প্রথম আলোতে আসা এই খবরের সমালোচনা হচ্ছে এভাবে যে উনারা আমাদের পত্রিকায় মন্তব্য করেছেন কিন্তু কেনো কিছু লিখলেন না তাদের পত্রিকায়। এদের মধ্যে সুবোধ সরকারচিত্রা লাহিড়ীর নাম আগে শুনিই নি। সমরেশ মজুমদার আমার খুব প্রিয় লেখক না হলেও অপ্রিয় নন। যার হাত দিয়ে উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ, গর্ভধারিণী, সাতকাহন, অগ্নিরথ, আট কুঠুরি নয় দরজা ইত্যাদি বের হয়েছে তাকে অস্বীকার যাই কেমন করে! সমরেশের এই কলামটিতে কি সমস্যা আছে তা কেউ জানাবেন কি? একজন তো ব্যাপক গালাগালি করেছেন সমরেশকে এই লেখার জন্য। আরেকজন বাংলাদেশের লেখক তো সমরেশকে বলেছেন, সমরেশ একজন জনপ্রিয় মূর্খ লেখক। হায়রে আজব দুনিয়া। আরেকজন বলছেন, মোটা বই লিখলেই সাহিত্যিক হওয়া যায় না। আর কলকাতা ক্যানো কাঁদছে না এই নিয়েও আমাদের ক্ষোভের অন্ত নেই। দেখি আমাদের জনপ্রিয় অনলাইন পাত্রিকাটি কি বলছে! আচ্ছা আমরা কি জানি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে বি এন পি সম্পর্কে কি তথ্য আছে!

দলের নাম বাংলাদেশ জাতীয়তবাদী দলবি.এন.পি
প্রতীক ধানের শীষ
নিবন্ধন নম্বর ০০৭
নিবন্ধনের তারিখ ০৩-১১-০৮
চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া
মহাসচিব এডভোকেট খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন
ঠিকানা ২৮/১, নয়াপল্টন, ভি, আই, পি রোড,  ঢাকা-১০০০
ফোন ৮৩১৮৬৮৭
ফ্যাক্স ৮৩১৮৬৮৭

আমি একটি লেখা লিখতে গিয়ে দেখি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর সাইটটিতে ১৯৭৩ ও ২০০১ এর নির্বাচন ছাড়া অন্য নির্বাচনগুলোর সেরকম তথ্য নাই। এর আগেও আনন্দবাজার ফাইজলামি করেছে হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে।  আনন্দবাজারে ছাপা হুমায়ুনের মৃত্যু সংবাদটি এরকম। বিবিসিতে দেয়া সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকার এটি। কিন্তু আমাদের প্রব্লেমটা ঠিক কোথায় তাই ধরতে পারছি না। এদের জন্য মরাকান্না কান্দার জন্য লোক ভাড়া করতে হবে মনে হয়। মনে আছে রুদালী ছবিটার কথা। রুদালীর কাহিনী, বিশেষ করে গানগুলা ছিলো অসাধারণ। একটা দিলামভুপেন-লতার দ্বৈতকন্ঠে দিল হুম হুম করেনাহ আরেকটা দিলাম। অতিপ্রিয় ভুপেন হাজারিকার কন্ঠে সময় গানটাও শুনি না হয়। ভুপেন হাজারিকা আমার খুব প্রিয় একজন গায়ক। বলা যায় আমাদের পরিবারের সবাই তাকে অসম্ভব পছন্দ করতাম। বব ডিলানকে যেমন প্রফেট বলা হয় ভুপেন আমাদের গানের জগতে অনেকটা তাই। সেই তিনিও যখন ২০০৪ সালে বিজেপির হয়ে নির্বাচন করেন সেটা তখন তো বটেই আজো হজম করে উঠতে পারিনি। একই কথা হু আহমেদকে নিয়েও।  থাকুক পাবলিক বিজি হুমায়ুন আহমেদরে নিয়া। আমি পবিত্র মাহে রমযান নিয়া একটু কথা বলি। আজকে তিন নম্বর রোযা চলে গেলো। মনে পড়ে খুব ছোটবেলায় রোযা রাখতে চাইতাম। আব্বা-আম্মা থাকতে দিতেন না কষ্ট হবে বলে। মিথ্যা বলতেন যে, সেহেরিতে ডেকেছেন কিন্তু উঠিনি। আর যেহেতু সেহেরি না খেলে রোযা রাখা যাবে না তাই ঐদিন আর রাখতে পারতাম না। এরপর রোযার পর রোযা যায়। সম্ভবত এর পরের বছরও একই ভাবে আমার রোযা রাখবার মহৎ প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করে দেয়া হয়। তবে দিনে একটা রোযার জায়গায় তিনটা রোযা রাখবার ফতোয়া পাওয়া গেলে দিনে তিনটা করে রোযা রাখতে থাকি। খুব সম্ভবত ক্লাস ফাইভে উঠে প্রথম রোযা রাখি। ঐদিন প্রাইভেট পড়তে গেছি খলিল স্যারের কাছে। খলিল স্যার পুরাই ডেঞ্জার ছিলেন। হঠাত করে আরেকজন স্যার আসলেন; সবুর স্যার (স্যার মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, তার ডান হাতের দুটি আঙ্গুলের একটি ক’রে কর উড়ে গিয়েছিলো নিজের বন্দুকের গুলিতে। উচু জায়গা থেকে নিচে লাফ দিলে স্যারের হাতে ধরা বন্দুক থেকে গুলি বেরিয়ে গেলে বিপত্তিটা ঘটে ) কথায় কথায় জিজ্ঞাসা করলেন কে কে রোযা রেখেছি? আমি হাসিমুখে আরো কয়েকজনের সাথে হাত তুললাম। স্যার এবার জিজ্ঞাসা করলেন, সকালে দাত মেজেছো? উত্তর দিলাম, হ্যাঁ। স্যার এবার দুঃসংবাদটি দিলেন যে আমাদের রোযা নাকি হয়নি। এখানে দেখুন কিছু আলোচনা আছে এ সম্পর্কে। আমরা যারা অহেতুক নানা আচার পালন করি এ সময় কি করা যাবে আর কি করা যাবে না তার জন্য দেখতে পারি এই লিখাটি। এখানে যারা দাত সাদা করতে চান তাদেরকে একটা তথ্য দেই। অনেকেই নিমের ডালের কথা বলেন। নিমের ডালে দাঁত/ দাঁতের গোড়া মজবুত হয় কিন্তু সাদা হয় যয়তুনের ডাল ব্যাবহারে। যারা জানেননা তাদের বলছি যয়তুন হলো  জলপাই বা জলফই। সেই ছোটবেলার একটু জল পাই কোথায় বলুন তো, মনে আছে? কয়েকদিন আগে আন্দালিব আপাত নিরীহ কিন্তু ঝড়তোলা একটা লেখা দিয়েছিলো মুসলমানিত্ব। সেখানে সে রোযাদারদের মুখের দুর্গন্ধের কথা বলেছে।
আমি থাকি ইষ্ট লন্ডনে। গত কয়েকদিন বাসে যাতায়াত করতে গিয়ে এই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। এম্নিতে কোন কিছুর প্রব্লেম নাই, যখনি সহযাত্রীর ফোন আসছে শুধু তখনি কর্ম সাবার; পরবর্তী ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য বাস মুখর হয়ে থাকে এই বেহেশতি গন্ধে।

Bukhari :: Book 9 :: Volume 93 :: Hadith 629

Narrated Abu Huraira: The Prophet said that your Lord said, “Every (sinful) deed can be expiated; and the fast is for Me, so I will give the reward for it; and the smell which comes out of the mouth of a fasting person, is better in Allah’s Sight than the smell of musk.” (See Hadith No. 584)

Bukhari :: Book 9 :: Volume 93 :: Hadith 584

Narrated Abu Huraira: The Prophet said, “Allah said: The Fast is for Me and I will give the reward for it, as he (the one who observes the fast) leaves his sexual desire, food and drink for My Sake. Fasting is a screen (from Hell) and there are two pleasures for a fasting person, one at the time of breaking his fast, and the other at the time when he will meet his Lord. And the smell of the mouth of a fasting person is better in Allah’s Sight than the smell of musk.” (See Hadith No. 128, Vol. 3).

Bukhari :: Book 3 :: Volume 31 :: Hadith 128

Narrated Abu Huraira: Allah’s Apostle said, “Allah said, ‘All the deeds of Adam’s sons (people) are for them, except fasting which is for Me, and I will give the reward for it.’ Fasting is a shield or protection from the fire and from committing sins. If one of you is fasting, he should avoid sexual relation with his wife and quarreling, and if somebody should fight or quarrel with him, he should say, ‘I am fasting.’ By Him in Whose Hands my soul is’ The unpleasant smell coming out from the mouth of a fasting person is better in the sight of Allah than the smell of musk. There are two pleasures for the fasting person, one at the time of breaking his fast, and the other at the time when he will meet his Lord; then he will be pleased because of his fasting.”

এবার বাঙলায় বলি, বুখারীর ১৭৭৩ নম্বর হাদিসে আছে, ——– অবশ্যই সাওম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মিসকের (মৃগনাভ/MUSK ) গন্ধের চাইতেও উৎকৃষ্ট, —-।
অথচ নবী দিনের বেলায় মেসওয়াক করেছেন।

রোযা সম্পর্কিত আয়াতগুলি হচ্ছে,তাফসির ইবন কাসির থেকে,  

হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ন্যায় তোমাদের উপরও রোযাকে অপরিহার্য কর্তব্যরূপে নির্ধারিত করা হলো যেন তোমরা সংযমশীল হতে পারো। (বাকারা ১৮৩)
ওটা গণিত কয়েক দিবস কিন্তু তোমাদের মধ্যে যে কেউ পীড়িত বা প্রবাসী হয়, তার জন্যে অপর কোন দিবস হতে গণনা করবে; আর যারা ওতে অক্ষম তারা তৎপরিবর্তে একজন দরিদ্রকে ভোজ্য দান করবে; অতএব যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সৎকর্ম করে তার জন্যে কল্যাণ এবং তোমরা যদি বুঝে থাকো তবে রোযা রাখাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর। (বাকারা ১৮৪)

অনেক সাহাবীই সেসময় নবীর মতোন এক নাগাড়ে দুই দিন রোযা রাখতেন। যা করা কোন ভাবেই সঠিক নয়। হাদিস দ্বারা এটা প্রমাণিত। আর সফরকালীন সময়েও রোযা রাখা উচিত নয়। নবী নিজেও সফরকালীন সময়ে রোযা ভঙ্গ করেছেন যা মুসলিম ও তিরমিযী হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।

মূসা ইবন ইসমাঈল (র.) … আব্দুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) একটানা সাওম পালন করতে থাকলে লোকেরাও একটানা সাওম পালন করতে শুরু করে। এ কাজ তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়াল। নবী (সা.) তাদের নিষেধ করলেন। তারা বলল, আপনি যে একনাগাড়ে সাওম পালন করছেন? তিনি বললেনঃ আমি তো তোমাদের মত নই। আমাকে খাওয়ানো হয় ও পান করানো হয়। (বুখারী; ১৮০০)

হযরত বাশীর বিন খাসাসিয়্যাহর (রাঃ) সহধর্মিনী হযরত লাইলা (রাঃ) বলেনঃ ‘আমি ইফতার ছাড়াই দু’টি রোযাকে মিলিত করতে ইচ্ছা করি। তখন আমার স্বামী আমাকে নিষেধকরেন এবং বলেন যে রাসূলুল্লাহ (সঃ) ওটা হতে নিষেধ করেছেন।

জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (স.) বিজয়ের বছর, রমযান মাসে মক্কা অভিযানে বের হলেন। তিনি ও তাঁর সঙ্গী লোকেরা সবাই ‘কোয়ায়েল গামীম’ নামক স্থানে পৌছানোর পূর্ব পর্যন্ত রোযা রাখা অবস্থায় ছিলেন, কিন্তু ওইস্থানে পৌঁছে তিনি এক পেয়ালা পানি আনতে বললেন। পানি আনা হলে তিনি পেয়ালাটি এমনভাবে তুলে ধরলেন যে লোকেরা সবাই দেখতে পেলো, তারপর তিনি সে পেয়ালা থেকে পান করলেন। পরে তাকে বলা হলো, কিছুসংখ্যক লোক রোযা ভাঙ্গেনি। একথা শুনে তিনি বললেন, ওরা বিরুদ্ধাচরণকারী, ওরা  বিরুদ্ধাচরণকারী। (মুসলিম, তিরমিযী)

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী (স.)- এর সাথে এক সফরে ছিলাম। তখন আমাদের মধ্যে কেউ কেউ রোযাদার ছিলো আর কেউ কেউ ছিলো বেরোযাদার। প্রচন্ড সে গরমের দিনে আমরা এক স্থানে অবস্থান করার জন্যে নেমে পড়লাম। আমাদের মধ্যে যাদের কাছে চাদর ছিলো তারা বেশী ছায়াতে ছিলো, আমাদের আরও কিছুসংখ্যক লোক নিজ নিজ হাত দ্বারা রোদ থেকে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিলো। রোযাদার ব্যক্তিরা ক্লান্তিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো এবং বে-রোযাদাররা উঠে তাঁবু খাটালো ও আরোহন করার জীব জন্তুগুলোকে পানি পান করালো। তখন নবী (স.) বললেন, আজ ভোজদারেরা পুরষ্কার নিয়ে নিলো। (বোখারী, মুসলিম ও নাসাঈ)

জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (স.) এক সফরে ছিলেন। এসময় তিনি লক্ষ্য করলেন এক ব্যক্তির কাছে লোকেরা জড়ো হয়েছে এবং তাকে ছায়া দেয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসা করলেন, কি হয়েছে ওর? তারা বললো, লোকটি রোযাদার। তখন রসুলুল্লাহ (স.) বললেন, সফরে রোযা রাখা কোনো নেকী নয় (ইমাম মালেক, বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, এবং নাসাঈ)।

আমর ইবনে উমাইয়া আদ দামারি থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি সফর থেকে ফিরে এসে রসুলুল্লাহ (স.)-এর কাছে গেলাম। তখন তিনি বললেন, হে আবা উমাইয়া, তুমি নাশতা না আসা পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করো। আমি বললাম, ইয়া রসূলুল্লাহ, আমি যে রোযা আছি। তিনি বললেন, ‘তাহলে মোসাফের সম্পর্কে শরয়ী বিধান বলছি শোনো। আল্লাহ তায়ালা মোসাফের থেকে রোযার বোঝা ও অর্ধেক নামায নামিয়ে দিয়েছেন।’ (নাসাঈ)

সূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ হযরত বেলালের (রাঃ) আযান শুনে তোমরা সাহরী খাওয়া হতে বিরত হবে না। কেননা তিনি রাত্রি থাকতেই আযান দিয়ে থাকেন। তোমরা খেতে ও পান করতে থাকো যে পর্যন্ত না হযরত আবদুল্লাহ বিন উম্মে নাকতুম আযান দেন। ফজর প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি আযান দেন না। (বুখারী, মুসলিম)

রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ ওটা ফজর নয় যা আকাশের দিগন্তে লম্বমান ছড়িয়ে পড়ে। ফজর হলো লাল রং বিশিষ্ট এবং দিগন্তে প্রকাশমান। (মুসনাদ-ই-আহমাদ)

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী (স.)-এর সাথে ছিলাম। আমাদের মধ্যে রোযাদার ও ভোজদার উভয় শ্রেণীর মানুষ ছিলো। কিন্তু রোযাদাররা ভোজদারদেরকে এবং ভোজদাররা রোযাদারদেরকে, কেউ কাউকে দোষারোপ করেনি। (ইমাম মালেক, বোখারী, মুসলিম ও আবু দাউদ)

আরেকটি ব্যাপারে বিবাহিত মুসলমানেরা বেশ সংশয়ে থাকেন। রোযার সময় রাতে স্ত্রীর সাথে সহবত করা যাবে কিনা? আমি অনেককে চান রাতে বলতে শুনেছি, এক মাস উপাস ছিলাম, আজ আযান দিয়া হবে। ইত্যাদি ইত্যাদি।

তাফসির ফি যিলালিল কুরআনের সূরা বাকারার ১৮৭ নম্বর আয়াতে আছে, রোযার (মাসের) রাতের বেলায় তোমাদের স্ত্রীদের কাছে যৌন মিলনের জন্য যাওয়া তোমাদের জন্য হালাল করে দেয়া হয়েছে; (কারণ, তোমাদের) নারীরা যেমনি তোমাদের জন্যে পোষাক (স্বরূপ, ঠিক) তোমরাও তাদের জন্যে পোষাক (সমতুল্য); আল্লাহ তায়ালা এটা জানেন, (রোযার মাসে রাতের বেলায় স্ত্রী সহবাসের ব্যাপারে) তোমরা (নানা ধরণের) আত্মপ্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছিলে, তাই তিনি (তোমাদের ওপর থেকে কড়াকড়ি শিথিল করে) তোমাদের ওপর দয়া করলেন এবং (এ ব্যাপারে) আল্লাহ পাক তোমাদের জন্য যা (বিধি বিধান কিংবা সন্তান সন্তুতি) লিখে রেখেছেন তা সন্ধান করো। (রোযার সময় পানাহারের ব্যাপারে আল্লাহর নির্দেশ হচ্ছে), তোমরা পানাহার অব্যাহত রাখতে পারো যতোক্ষণ পর্যন্ত রাতের অন্ধকার রেখার ভেতর থেকে ভোরের শুভ্র আলোক রেখা তোমাদের জন্যে পরিষ্কার প্রতিভাত না হয়, অতপর তোমরা রাতের আগমন পর্যন্ত রোযা পূর্ণ করে নাও, (তবে) মাসজিদে যখন তোমরা এতেকাফ অবস্থায় থাকবে তখন নারী সম্ভোগ থেকে বিরত থেকো; এই হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার নির্ধারিত সীমারেখা, অতএব তোমরা কখনো এর কাছেও যেয়ো না; এভাবেই আল্লাহ তায়ালা তাঁর যাবতীয় নিদর্শন মানুষদের জন্যে বলে দিয়েছেন, যাতে করে তারা (এ আলোকে) আল্লাহতায়ালাকে ভয় করতে পারে।

বলা বাহুল্য ইসলামের প্রথম যুগে স্ত্রীর সাথে সহবত করতে চাইলে তা ইফতারের পর এশার আগেই করতে হতো। নানা বিপত্তি ঘটেছে এ নিয়ে। অনেকে ভুল করে স্ত্রী সহবত করে ফেলতেন। সাহরীর সময় ইত্যাদি নিয়ে ঝামেলা হতো।

সুলায়মান ইবন হারব (র) … আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (স) সাওমের অবস্থায় চুমু খেতেন এবং গায়ে গা লাগাতেন। তবে তিনি তাঁর প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণে তোমাদের চাইতে অধিক সক্ষম ছিলেন। (বুখারী; ১৮০৪)

মুসাদ্দাদ (র)… উম্মে সালামা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (স)-এর সঙ্গে একই চাদরে আমি ছিলাম। এমন সময় আমার হায়য শুরু হল। তখন আমি আমার হায়যের কাপড় পরিধান করলাম। তিনি বল্লেনঃ তোমার কি হলো? তোমার কি হায়য দেখা দিয়েছে? আমি বললাম, হাঁ; তারপর আমি আবার তাঁর সঙ্গে চাদরের ভিতর ঢুকে পড়লাম। তিনি এবং রাসূলুল্লাহ (স) একই পাত্র থেকে গোসল করতেন এবং সায়িম অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (স) তাঁকে চুমু দিতেন। (বুখারী; ১৮০৬)

ইসমাঈল (র)… আবূ বাকর ইবন আবদুর রহমান (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার পিতার সাথে রওয়ানা হয়ে আয়িশা (রা)-এর নিকট পৌঁছলাম। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (স) সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছি, তিনি ইহতিলাম ছাড়া স্ত্রী সহবাসের কারণে জুনুবী অবস্থায় সকাল পর্যন্ত থেকেছেন এবং এরপর এরপর সাওম পালন করেছেন। তারপর আমরা উম্মে সালামা (রা)-এর নিকট গেলাম। তিনিও অনুরূপ কথাই বলেছেন। …..(বুখারী; ১৮০৮)

মিসওয়াক করার জন্য, (যা করলে রোযার ক্ষেত্রে কোন সমস্যাই হবে না) বুখারীর ১২০৮, ১২০৯, ১২১০ নম্বর পরিচ্ছদ দ্রষ্টব্য।

সবাইকে মাহে রমযানের শুভেচ্ছা। অযথা জীবনকে জটিল না করে একটু সহজ করে দেখি।

 

২,৭৪৮ বার দেখা হয়েছে

১২ টি মন্তব্য : “হূ আহমেদ এবং রোযার কিছু কায়দা কানুন”

  1. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    রাজীব,
    হুমায়ুন আহমেদ থেকে ফট করে রোজায় নামলা কেন বুঝতে পারলামনা।

    প্রথম অংশ প্রসংগে: হুমায়ুনের মৃত্যুতে বাংলাদেশ কাঁদছে দেখে পশ্চিমবঙ্গকেও একই তালে মরাকান্না জুড়ে দিতে হবে এমন ছ্যাবলামিমার্কা আব্দারের কথা জেনে অবাক হইলাম।ন্যূনতম আত্মসম্মানজ্ঞান থাকলে এভাবে লেখা যায়?

    জবাব দিন
    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

      আর বইলেন না দাদা; এরা দেশ রে গালি দেয় আবার কয় দেশের শারদীয় সংখ্যায় নাকি পর পর ৮ বার হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাস ছাপা হইছে যা অন্য কারো হয় নাই।
      সো হুমায়ুন আহমেদ গ্রেট লেখক।
      =)) =)) =))

      আসলে ভাই লেখার ইচ্ছা ছিলো রামাদানে সহবত করা যাবে কিনা সেইটা নিয়া লেখার। এর মধ্যে হুমায়ুন আহমেদ মইরা গেলো। আর হুমায়ুন আহমেদ রে নিয়া দুই কলম না লিখলে কেমন হয় আর সবাই যেই হারে পিরালি শুরু করছে। সব মিডিয়া ব্যাস্ত এই নিয়া।


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন
  2. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    'দেশ' এ হুমায়ুনের যে উপন্যাসগুলো ছাপা হইসিলো তার প্রথম দিকের একটা দুইটা এক-দেড় পৃষ্ঠার বেশি আগাইতে পারিনাই। যেমন পারছিলামনা ওই সময়ের সমরেশ, সুনীলদের উপন্যাসের ক্ষেত্রেও। শীর্ষেন্দুও দেদার লিখেছেন বাজারের জন্যে, তবু উনার লেখা কিছুটা পাঠযোগ্য।
    প্রবলেমটা আমাদের, আমরা মনে করি 'দেশ' পত্রিকা মানেই সাহিত্যের সূতিকাগার। আরে ওদের তো ব্যবসা করা দরকার।হুমায়ুনের গল্প ছাপলে বাংলাদেশে হু হু করে বিক্রি হবে এই জিনিস।পাবলিক হুমায়ুন, সুনীল, সমরেশের লেখা সম্বলিত 'দেশ-পূজা সংখ্যা' নিয়া এমন ভাব করবে যেন বাজার থেকে সবচে' বড় ইলিশ মাছটা কিনেছে, আর শর্টকার্টে সাহিত্যপাঠেরো একটা বিজ্ঞাপন হয়ে গেলো!

    এসব লেখক আর এই পত্রিকাগুলো মিলে যখন সমস্ত বাজারটাকে মাছের বাজারের থেকেও বিরাট কিছু বানিয়ে তুলেছে, তখন অন্যদিকে ঠিকই মাথা তুলে দাঁড়াতে শুরু করেছে নবীন আর নিবেদিত লেখকেরা।সিরিয়াস পাঠক মাত্রেই তাদের খুঁজে বার করে নিজ গরজে, না হলে তার ঘুম হারাম হয়ে যায়। সুনীল, সমরেশ, হুমায়ুনরা পচে হেজে গেলেও তাদের কিছু যায় আসেনা।আমি যা দেখলাম খ্যাতি আর প্রাতিষ্ঠানিক পৃষ্ঠপোষকতা পায়ে ঠেলে ফেলে দিতে না পারলে সাহিত্যের মান মেইনটেইন করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা অনেকর পক্ষেই, বদহজমের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

    আমাদের নায়িকাদের মতোই অবস্থাটা: শুরু করলো ক্ষীণ কটি, মৃগনাভি দিয়ে কিন্তু সময় যেতে না যেতেই গতরে মেদের পলি জমে জমে না যায় চেহারার দিকে তাকানো, না সওয়া যায় অভিনয়! এই হস্তীমার্কা চেহারা নিয়ে একেকজন কলেজে যাচ্ছে আসছে, বস্তিবাসী হচ্ছে, কখনো বা নায়কের কোলে চেপে বসছে- এ সার্কাস কাঁহাতক দেখা যায়।

    টাকার তোষকে শুয়ে বিগতদিনের অপুষ্টি/অপ্রাপ্তির শোধ তোলা যায়, সাহিত্য লেখা যায়না।নাটক, সিনেমা, গানের নামে সৃষ্টিশীলতআর নহর বইয়ে দিলেও না।
    পদ্মানদীর মাঝি তাই মানিককেই লিখতে হয়, হুমায়ুনকে লিখে যেতে হয় শুভ্রের গল্প।

    রমজানে সহবত করা যাবে কি না - এই ইস্যুর সমাধান দিলা না চাইলা। বুঝলাম না তো। মাঝে মাঝে বুঝতে পারিনা তুমি বিটলামি করো, না সিরিয়াসলি বলো। :grr:

    এর মাঝে আবার নির্বাচন কমিশনের কথাও আনলা দেখি! 😕

    জবাব দিন
    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

      ভাইরে
      জব্বর উদাহরণ দিছেন নায়িকা নিয়া।
      তয় বাঙলা ছবি নিয়া কেউ খারাপ কিছু কইলে মাইন্ড খাই। এমনকি ময়ূরি, মুনমুন এদের কে নিয়া বললেও। আমার আবার স্বপ্ন আছে বাঙলা ছবি করার।
      এইটা সিরিয়াস ইচ্ছা ভাই।
      ভাই রমযান মাসে রাতে সাহরীর আগ পর্যন্ত সব জায়েয।
      আসলে বিষয়টা কি অনেকে এই চিন্তা করেন সাহরীর আগে আবার গোসল করতে হবে কিনা? যার আদৌ দরকার নাই।
      শেষের তিনটা হাদিস দেখেন ভাই।
      এমনকি হুমায়ুন আহমেদের অনেক আগের এক বইতে পড়েছিলাম নায়িকার বড়বোন স্বামীর ঘর থেকে চলে আসে; অনেকগুলো কারণের একটি এইযে ভোরে সেই মেয়েটিকে তার স্বামী ঘুম থেকে তুলতো সহবতের জন্য।
      নির্বাচন কমিশনের জোক্স টা বুঝলেন না! পায়জামা খোলা মহাসচিব মারা গেলেও কাগজে কলমে এখনো তিনিই মহাসচিব।
      বস আমি তো আবার স্বঘোষিত নিধার্মিক। এইটাই সমস্যা।
      ধর্ম নিয়া লিখলে ধার্মিকেরা মনে করে ইতরামি করতেছি। আর নিধার্মিকেরা ভাবে তওবা কইরা কালেমা পইড়া মুসলমান হইছি।
      ব্যাপক মজা বস।
      আমি ধর্ম সম্পর্কে জানতে খুব পছন্দ করি, তা সে যেই ধর্মই হোক না কেনো; কিভাবে মানুষ রে আফিম খাওয়াইয়া রাখে একবার ভাবেন।
      ধর্ম সংক্রান্ত বিষয় আশয় বড়ই বিনোদন।
      ফোনে কথা হবে।
      আপনারে একটা ইন্টারেস্টিং সহীহ হাদিস বলবো।


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন
  3. আজীজ হাসান মুন্না (৯১-৯৭)

    ""আমি থাকি ইষ্ট লন্ডনে। গত কয়েকদিন বাসে যাতায়াত করতে গিয়ে এই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। এম্নিতে কোন কিছুর প্রব্লেম নাই, যখনি সহযাত্রীর ফোন আসছে শুধু তখনি কর্ম সাবার; পরবর্তী ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য বাস মুখর হয়ে থাকে এই বেহেশতি গন্ধে।""

    এইডা কি হুনাইলেন , ভাই ? আমিও ১০ বছর এই এলাকায় আছি...এইরকম তো মনে হয় নাই কখনো 😀

    রামাদানে সহবত লইয়া আপ্নের বিরাট পেরেশানি হৃদয় ছুইয়া গেল...চক্ষে পানি চইলা আসল :))

    :pira: :pira:

    জবাব দিন
  4. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    আর এক মহান ভ্রাতঃ এক তারা বাজাইছেন দেখে আমার চোখ ফাইটা পানি আসতেছে 🙁
    মহান যদি এসে বলে যান কি লিখবো তবে বাধিত হইবো।
    শালার :bash: আল্লা-নবীরে নিয়া লিখলাম তাও এগোরে খুশি করতে পারি না। :((
    এরপর দেখি নিধার্মিক থেকে ধার্মিকে উত্তরণ নিয়া পোষ্ট দিবো।
    খান দশেকের উপর ৫ তারা পাইলে ঠ্যাকায় কে?
    জাকির ভাইয়ের সাথেও একখান ছবি তুলুম তখন।
    এবারে একটু সিরিয়াস হই।
    লেখা বিষয়ক কোন নির্দেশনা, বা মন্তব্য থাকলে খোলা মন নিয়ে করুন। আমি সমালোচনা সাদরে গ্রহণ করতে পারি। আপনাকে আগাম এক কাপ :teacup: ।
    এইবার আসেন একতারা বাদ দিয়া একটা গিটার বাজাই। :guitar:


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  5. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    আরো এক খান
    http://porimanob.wordpress.com/2012/06/06/%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B2-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%87/


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।