ছাত্র রাজনীতি ও বিব্রতকর কিছু প্রশ্ন

এই লেখাটা যখন শুরু করার জন্য কি বোর্ডে আঙ্গুল চালাই তখন দেখলাম দুজন সদস্য ও জনাকয়েক ভিজিটর রয়েছেন সিসি ব্লগে। একজন সদস্য আমি আর আরেকজন ব্লগ অ্যাডজুটান্ট। ক্যাডেট কলেজের ছয় বছর অ্যাডজুটান্ট নামক প্রাণিটি হাড় মজ্জায় যে ভীতি ঢুকিয়ে দিয়েছিলো তা আজো যায়নি। আজো অ্যাডজুটান্ট নামধারী কাউকে দেখলেই হয়। হৃদকম্প বেড়ে যায় নয়তো কয়েকটা মিস করি। অ্যাডজুটান্টরা বা সামরিক বাহিনীর লোকেরা যে ততটা ভীতিপ্রদ না তা প্রথম বুঝতে পারি ক্যাডেট কলেজ থেকে বের হবার পরে। কলেজে গেছি কাগজ আনতে। নতুন অ্যাডজুটান্ট এসেছে কলেজে, ভাবলাম দেখা করে যাই। অ্যাডজুটান্ট তো স্যার বলেই সম্বোধন করি আমরা তা কলেজে থাকতেই কি বা বের হয়ে আসলেই কি। রুমে ঢোকার পরেই আমার এক বন্ধু সালাম দিয়েই অ্যাডজুটান্টের সাথে হ্যান্ডশেক করে বলল কেমন আছেন অ্যাডজুটান্ট সাহেব। আমি তো টাশকি; ব্যাটা বলে কি? আমি অবশ্য সম্বোধন উহ্য রেখেই কাজ চালিয়ে নিয়েছি। সেইসময়ে কোন কোন অ্যাডজুটান্ট ধূমপায়ী হলে এক্স ক্যাডেটদের ধূমপানের অফার করতেন। আমরা সেই অফার বিনয়ের সাথে প্রত্যাখ্যান করি; কারণ তখনো সেইসব স্যারেরা ছিলেন যাদের করস্পর্শ আমরা পেয়েছিলাম। মেস সিতে (এ, বি তেও)প্রায়ই যেতাম সিনিওর ভাইদের কাছে। আমাদের সময় যশোর বোর্ড তখনো ভাঙ্গেনি। বিসিসি আর জেসিসি তখন রাজত্ব করে বোর্ডের মেধাতালিকায়। বিসিসি নতুন তাই সেইরকম বেইল নাই ঝানু, বৃক্ষশোভিত জেসিসির কাছে। (সিনিওর ক্যাডেট কলেজগুলার এই পোদ্দারি সম্পর্কে কিঞ্চিত জ্ঞান থাকলে আমি অতি অবশ্যই এম সিসিতে ট্রাই করতাম; আমি তখন কালিয়াকৈরে থাকতাম) বিসিসি আর জেসিসি একত্র হওয়া মাত্রই কোন কলেজ বেটার তাই নিয়ে তর্ক শুরু হয়ে যেতো। কোন স্যার যদি জেসিসি থেকে বিসিসি আসতেন তবে তাদের মুখে জেসিসির নিরন্তর প্রশংসা শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে যেতো। এদের উপর তখন বিসিসির স্পেশাল টোটকা প্রয়োগ করা হতো। কিন্তু অ্যাডজুটান্টদের সাথে তো টোটকা প্রয়োগ করা যায় না। তাই বিসিসি যে তোলারাম কলেজের আরেক নাম তাও শুনতে হতো, এবং হজম করতাম। তো মেস সিতে কোন এক সন্ধ্যাবেলা জেসিসির একজন কর্নেল আসলেন বড় ভাইটির রুমে; আড্ডা দেখে তিনিও জয়েন করলেন আমাদের সাথে। তা আর্মির জেনারেলই হোক আর শীর্ষ পর্যায়ের আমলাই হোক, ভার্সিটি পড়ুয়া ছাত্রই হোক Once A Cadet Always A Cadet. আলোচনা তো জেসিসি আর বিসিসির দিকে যাবেই। আমাদের কলেজের রেজাল্ট দিনে দিনে ভালো থেকে ভালোতরো হচ্ছিলো, আর ঐ বয়সে চুড়ান্ত সাফল্য ছিলো সামরিক বাহিনীতে অফিসার পদে যোগ দিতে পারা, আর আমাদের কলেজ থেকে দিনদিন সেনাবাহিনীতে ছেলেপেলেদের যোগ দেবার হারও বেড়ে যাচ্ছিলো দিনকে দিন। তো আমারে পায় কে! তার সাথে তর্ক শুরু করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করলাম না। জেসিসিকে উপরে রেখেই বললাম যতদিন বিসিসি ছিলোনা আপনাদের রেজাল্ট ইত্যাদি এক নম্বরে ছিলো। বিসিসি হওয়ার পর আপনাদের সেই দিন আর নাই। কর্নেল সাহেব চলে গেলে আমার বড় ভাই বললেন তুই তারে ভাই বললি কি মনে কইরা? আমার তো হাসির পালা; বস তাইলে কি বলবো, স্যার? আমার ভার্সিটির বুড়া বুড়া প্রফেসর আর ডক্টররা আমাদের আপনি কইরা বলে আর আমি উনারে স্যার কমু!!! তবে হ্যা, ভাইয়াদের একটা কথা মেনে চলতাম। চুল সবসময় আমার ছোট রাখার অভ্যাস থাকায় গেটে ভুল করে স্যালুট দিতো। ভাইয়াদের বলতেই বলল এরপর যদি দ্যাখো স্যালুট দিচ্ছে তবে সাথে সাথেই হাত তুলে নিষেধ করবে। মেনে চলতাম তার কথা যতদিন ক্যান্টনমেন্ট গুলাতে গেছি। উপরে এতো কথা বললাম, কারণটি কি? আমাদের এই ব্লগটি দেখভাল করার জন্য সেই কলেজ সিস্টেমে প্রিন্সিপ্যাল আছেন আবার অ্যাডজুটান্ট ও আছেন। কিন্তু ক্যাডেট কলেজের মত সব দায়দায়িত্ব কেবল তাদের একার নয়; আমাদের সবার। এখানে সবাই ১৮ প্লাস। তবে বয়স হইলেই যে সবার বোধ হবে তাতো নয়। কিছুটাতো মেনে নিতেই হবে। কিন্তু ক্যাডেট কলেজ গুলাতে প্রিন্সিপ্যাল, অ্যাডজুটান্ট সহ সকল শিক্ষকদের অনেক কিছু করার বা খেয়াল করার আছে। ক্যাডেটরা সিগারেট খায় কিনা, লাইটস আউটের পর জেগে থাকে কিনা, অন্য হাউসে গিয়ে আড্ডা দেয় কিনা, কার্ড খেলে কিনা ইত্যাদির চাইতেও আরো কিছু জরুরী বিষয় রয়ে গেছে মনে করি। ক্যাডেটদের নীতিকথা শিক্ষা দেওয়া, রাজনীতি সচেতন করে গড়ে তোলা। হয়তো হাস্যকর শোনাচ্ছে। কি করবো, বলতে বাধ্য হচ্ছি। মনে আছে সেই লেখাটির কথা, যা কিনা আমাদের ই বুক সংকলনেও স্থান পায়। হ্যাঁ আমি কিপ ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পেইন এর কথাই বলছি।  সেদিন ক্যাডেটরা সম্মিলিতভাবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল আহমেদের সভায় যোগ দেননি শুধুমাত্র ক্যাডেট কলেজে রাজনীতি প্রবেশ করতে দেবেন না বলে। তখনকার এই সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিলো তা বলবো না। সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশ বলেই হয়তো তৎকালীন ফৌজিয়ানরা তোফায়েল আহমেদের সেই সভায় যোগ না দেবার সাহস দেখাতে পেরেছিলেন আজ এটা কোনভাবেই সম্ভব না। না আমি রাজনীতির কথা বলছি না, সভায় যোগ না দেবার সাহসের কথা বলছি। কিন্তু ক্যাডেট কলেজ বন্ধ করতে চাইলেও সেই ক্যাডেট কলেজ আজো টিকে আছে, চারটির জায়গায় দশটি, তারপর বারোটি হয়েছে। মাঝখানে ৫০ টি বা প্রতিটি জেলায় একটি করে ক্যাডেট কলেজ করার কথাও হয়েছিলো। যাই হোক বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এমনকি দেশের বাইরেও ক্যাডেটরা দেশের মুখ উজ্জ্বল করে চলছে। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের নিহত হবার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা আমূল পরিবর্তন আসে। ৭২ থেকে ৭৫ মুজিব সরকার ক্ষমতায় থাকলেও তাদের যে ভুল ভ্রান্তি কিছু ছিলো না তা বলছি না  কিন্তু এরপর নামে বা লেবাশে মুক্তিযোদ্ধা হলেও অনেক সরকার প্রধানই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কাজ করেছেন, রাজাকারদের ক্ষমতায় নিয়ে এসেছেন। আমরা প্রায়ই নিজামীর গাড়িতে দেশের পতাকা তুলে দেবার কথা বলি; কিন্তু ভুলে যাই সেটাই প্রথম ছিলো না। এদেশের রাষ্ট্রপ্রধান পদে, প্রধানমন্ত্রীর পদে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীরা আগেও বসেছেন। ১৯৭২ সালে তৎকালীন ফৌজিয়ানরা যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন (রাজশাহী ও অন্যান্য ক্যাডেট কলেজও উদ্যমী ভূমিকা নেয় সে সময়) এক আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগ কে প্রতিহত করার জন্য তবে আজ কেনো তা ব্যার্থ। এখানে একটা কথা বলা জরুরী মনে করছি আমি ছাত্র রাজনীতির সম্পূর্ণ বিরোধী। অনেকেই ৫২ র ভাষা আন্দোলন, ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান, ৭১ এর মুক্তি সংগ্রাম, ৯০ এর আন্দোলনের কথা বলেন । আমি নিজেও অস্বীকার করি না ছাত্রদের সেই গৌরবগাথা। কিন্তু আজকের যুগে, এই সময়ে ছাত্র রাজনীতি একটি কালসাপ ছাড়া আর কিছুই নয়। ৯০ এর এরশাদের পতনের পিছনে ছাত্ররাই একমাত্র নিয়ামক ছিলো না, সমস্ত প্রশাসন যন্ত্র তার বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিলো, শেষ সহায় সামরিক বাহিনীও তাদের ছায়া সরিয়ে নিয়েছে। সেই সময়ের আর্মি চিফ নূর উদ্দিন পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। বিমানবাহিনীর আলতাফ হোসেন বি এন পি তে যোগ দেন। নেভির চিফের কথা মনে করতে পারছি না। সেই হিসাবে ৭১ এর পর ছাত্র রাজনীতি আমাদের আন্ডা ছাড়া আর কিছুই দেয়নি। শুধু তাই নয় ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত অনেক সমস্যার পিছনে ছাত্র রাজনীতির পরোক্ষ বা কোন কোন ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ হাত রয়েছে। সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশটিতে ছাত্র রাজনীতি বিশেষ করে বামদের ক্রিয়াকলাপ অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে। ৭৫ পরবর্তী সামরিক শাসনামলগুলোতে ছাত্র রাজনীতি অনেকটা সুবিধাবাদিতায় রূপ নেয়। আরেকভাবে বলা যায় সামরিক বাহিনী এদের কে ব্যাবহার করতে থাকে। শুধুমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই এ পর্যন্ত যতোগুলি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার কোনটির আজ পর্যন্ত কোন বিচার হয়নি। সারাদেশে ৭২ থেকে  আজ পর্যন্ত ছাত্র রাজনীতির বলি হাজার হাজার ছাত্র, শারীরিকভাবে পঙ্গু হয়েছে লক্ষাধিক। আজ পর্যন্ত কোন সরকার ছাত্র রাজনীতি বন্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। সবগুলি রাজনৈতিক দল তাদের স্বার্থে ছাত্রদের ব্যাবহার করেছে। বরিশাল পলিটেকনিকের সেই ঘটনা মনে আছে কী? শুধু কি তাই? আরো দেখি। শুধু এগুলোই নয় এরকম হাজার হাজার ঘটনা ছবি হয়ে আছে সংবাদপত্রের পাতায় পাতায়। আর ক্যাডেটরাও যে পিছিয়ে থেকেছে ছাত্র রাজনীতি থেকে তা নয়। মূলধারার রাজনীতির সাথে অনেকে দুঃখজনকভাবে ক্যাডার রাজনীতিতেও জড়িয়েছে, হল পাহাড়া দিয়েছে রাত জেগে। কিছুদিন আগে এক বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিলো। সে কথায় কথায় বলল ক্যাডেট কলেজ তার মূল উদ্দেশ্য থেকে অনেকটাই সরে এসেছে। আমি বললাম কিভাবে? সে বলল, ক্যাডেট কলেজের প্রতিষ্ঠা সামরিক বাহিনীর সহযোগী হিসাবে, বা সামরিক বাহিনীতে যোগ্য ক্যাডেট সরবরাহ করার জন্য। আজ ক্যাডেট কলেজ ১২ টি। প্রতি বছর কলেজ থেকে বের হচ্ছে ৬০০ জন। এই ৬০০ জনের মধ্যে অন্তত ৪৫০ থেকে ৫০০ জন থাকে শারীরিক ও মানসিক (?) ভাবে সামরিক বাহিনীতে যোগদানের জন্য যোগ্য। তো প্রতি বছর সামরিক বাহিনীতে নেয়া হচ্ছে কয়জন? আর সিভিল ছেলেপেলেও তো সামরিক বাহিনীতে যাচ্ছে। প্রতিটি কলেজ থেকে ২টি লং কোর্স মিলে সামরিক বাহিনীতে যোগ দিচ্ছে গড়ে ১৫ জন। আবার ট্রেনিংকালীন ২ থেকে ১ জন ঝরে যায়। সামরিক বাহিনীর ট্রেনিং ইত্যাদিকে ছেলেখেলা বলছি না। কিন্তু ক্যাডেটদের মধ্যে যারা সামরিক বাহিনীতে চলে গেলো তারা ভাগ্যবান। নানা কারণেই তাদের ভাগ্যবান বলবো; বাইরের কঠিন জীবন তাদের ফেস করতে হয় না। বাবা-মার কাছ থেকে টাকা নিতে হয় না; নিজের পায়ে বেশ দাঁড়িয়ে যাওয়া যায়। ভবিষ্যত নিয়ে কোন ভাবনা ভাবতে হয় না। কোন বিষয়ে পড়বে, কোথায় পড়বে, দেশে না বিদেশে ইত্যকার নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় না। টিউশুনীর উপর নির্ভর করতে হয় না মাস কাবারির জন্য। যারা সামরিক বাহিনীতে গেলো ক্যাডেট কলেজ থেকে তাদের জন্য এটা যেনো অনেকটা ভ্যাকেশন শেষে কলেজে যাওয়ার মতোন। তবে কি আমি সামরিক বাহিনীর ট্রেনিং ইত্যাদিকে ছোট করে দেখছি; অবশ্যই না। তবে এটা স্বীকার করে নেয়াটাই অধিকতর যুক্তিসঙ্গত হবে যে যারা যাচ্ছে না বা যেতে পারছে না সামরিক বাহিনীতে তাদের জীবনটা অধিকতর সংশয়পূর্ণ।অথচ বাইরের এই কঠিন, কঠোর জীবন সম্পর্কে অধিকাংশ ক্যাডেটরাই ভীষণভাবে অজ্ঞ। এমনকি ক্যাডেট কলেজ থেকেও সেভাবে তৈরি করে দেয়া হয় না। তবে একথা অনস্বীকার্য যে ক্যাডেট মাত্রই যে কোন পরিবেশে বা পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। কিন্তু যেখানে প্রায় ৭০ শতাংশ ছেলেপেলে সামরিক বাহিনীতে যোগ দিচ্ছে না সেখানে তাদের জন্য কি করা হচ্ছে? কোন ধরণের দিকনির্দেশনা কি পাচ্ছে তারা? মেয়েদেরকে নিয়মিত সামরিক বাহিনীতে নেয়া শুরু হলো এই সেদিন। তাহলে সেই ১৯৮৪ সালেই মেয়েদের ক্যাডেট কলেজ করার কি দরকার ছিলো, কিংবা আদৌ কি দরকার ছিলো অতিরিক্ত ৬টি নতুন ক্যাডেট কলেজ তৈরি করার। বাংলাদেশের মতো গরীব দেশের এতোগুলো ক্যাডেট কলেজের প্রয়োজনীয়তাই বা কি? কি আউটপুটই বা চাচ্ছে জাতি ক্যাডেট কলেজ থেকে? আমাদের সময় যতদূর মনে পড়ে ক্যাডেট কলেজ পরিচালনার বাজেট আসতো সামরিক (আর্মি?) ও শিক্ষা উভয় খাত থেকে। এখন কি অবস্থা? আরেকটা কথা মনে পড়লো, ক্যাডেট কলেজে সুযোগ পাবার জন্য যোগ্যতার মাপকাঠি কি? প্রতিটি ক্লাসের ৫০ জনের মধ্যে ১২ থেকে ১৫ জনের বাবা/মা হয় সামরিক বাহিনীতে আছে, নয়তো ক্যাডেট কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী। বলতে চাইছি কোঠা বলে একটা জিনিস এখানেও কাজ করে। (তারমানে যে সবাই যোগ্য নয় সেটা বলা ধৃষ্টতা ছাড়া আর কিছুই হবে না)  কিন্তু একটা কথাও জানতে ইচ্ছা করে ক্যাডেট কলেজ যেহেতু সামরিক বাহিনী দ্বারা পরিচালিত তো তাদের উদ্দেশ্যটাই বা কি? মূলত ক্যাডেটদের বেছে নেয়া হয় মেধার ভিত্তিতে, এরপর হয় শারীরিক ও মৌখিক পরীক্ষা। ক্যাডেটরা তাদের মেধার প্রাথমিক পরিচয় দেয় এস এস সি ও এইচ এস সি পরীক্ষায়। এখন তো অনেকটাই মুড়ি-মুড়কির এক দর। ইতিহাস বলে একটা সময় বোর্ড স্ট্যান্ড বলে একটা বিষয় ছিলো, স্টার বলে একটা বিষয় ছিলো। (আজকের যুগের গোল্ডেনদের খাটো করে দেখছি না) এই যুগের সাথে সেই যুগের একটা তুলনা করি। আমরা মানবিকের ৬ জনের মাঝে ৩ জন স্ট্যান্ড করে, ১ম, ৩য়, ১০ম। কিন্তু আমরা সবাই, ৬ জনেই ৫ টি করে লেটার পাই। হয়তো এক ধরণের আত্মতৃপ্তি পেতাম এই যুগ হলে। কিন্তু একথা অস্বীকার যাই কেমন করে ঐ ৩ জনের সাথে আমাদের বাকি ৩ জনের মেধার পার্থক্য তো ছিলোই। বিজ্ঞানে ৬টি লেটার পেয়েছিলো ৩ জন; এদের ২ জন স্ট্যান্ডই করেনি।  যাই হোক প্রতি কলেজ থেকে এস এস সি বা এইচ এস সির মেধা তালিকায় অন্তত ১০ থেকে ১৫ জন থাকতো, কখনো সখনো ২০ জনের ও বেশি থাকতো বিজ্ঞান ও মানবিক মিলিয়ে। তখনো দৈনিক পত্রিকাগুলো লিখতো বাণিজ্যে ক্যাডেট কলেজের ভারাডুবি, আজো তাই ল্যাখে। বাণিজ্যে পড়া ছেলেমেয়েদের নাকি সামরিক (আর্মির) বাহিনীর দরকার নাই, তাই ক্যাডেট কলেজেও বাণিজ্য নাই। মেধাতালিকার কথা উল্লেখ করলাম এই কারণে যে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী কি মেধাবী অফিসার চাচ্ছে? এটা কিছুটা মাথা আউলা টাইপ প্রশ্ন। কারণ আমাদের সময় দেখতে পাই সামরিক বাহিনীতে মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া ছেলেদের যাবার বা নেবার একটা হিড়িক পড়েছে। আবার একই সাথে আমরা দেখতে পেতাম প্রিন্সিপাল হিসাবে যেসব কলেজ পরিচালনা করছে সামরিক বাহিনীর অফিসারেরা সেগুলোর রেজাল্ট সিভিল প্রিন্সিপাল পরিচালিত কলেজগুলোর চাইতে বেশ খারাপ। সিভিল প্রিন্সিপালরা ডিসিপ্লিনের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দিতেন বলেই হয়তো সেটা সম্ভব হতো। সামরিক বাহিনীতে চাকুরীরত অফিসারদের মেধা, মনন, চৌকষ ইত্যাদি গুণ নিয়ে আমার বা অন্য কারো বিন্দুমাত্র সন্দেহ থাকার কথা না। কিন্তু এটাও মেনে নেয়া উচিত আমাদের রোমেল, মন্টগোমারী বা প্যাটন দরকার নেই। তার চেয়েও সত্যি এই যে আমাদের সাথে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর যুদ্ধ বাধার আদৌ সম্ভাবনা নাই। আর যদি বাধেও; থাক তখন দেখা যাবে। বলা বাহুল্য আমাদের সামরিক বাহিনী, পুলিশ জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষা মিশনে ব্যাপক অবদান রেখে আসছে শুরু থেকে, এবং ঐসব দেশের জনগণও আমাদের অফিসারদের ভূয়সী প্রশংসা করে থাকে, যা একজন বাঙালি ও বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে যে কাউকে গর্বিত করে।  বিশ্বশান্তি রক্ষা মিশন থেকে বাংলাদেশ প্রতি বছর মোটা অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রাও আয় করে।
আরো আছে।
এই মুহুর্তে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে সেনাবাহিনী তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।

শুরুর দিকে একটা কথা বলেছিলাম রাজনীতি বিষয়ে। ক্যাডেট কলেজে আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, কম্যুনিস্ট পার্টি না থাকতে পারে, তাদের ছাত্র সংগঠন না থাকতে পারে, জামাতের কিন্তু আছে। প্রতিটি ক্যাডেট কলেজের প্রতিটি ব্যাচে জামাতের ছাত্র সংগঠন শিবির সক্রিয় ।(১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন জনাব মীর কাশেম আলী।) এরা এতো চালাকি আর বুদ্ধিমত্তার সাথে তাদের কাজ করে চলে যে না দেখলে তা বুঝতে পারার কোন উপায়ই নেই। এই সরলমতি ছেলে-মেয়েদের যে কিভাবে ব্রেইন ওয়াশ করা হয় তা আমরা কম বেশি সকলেই জানি। ছুটিতে আসলে বাবা-মার ও নজরদারির প্রয়োজন আছে বলে মনে করি। সাংগঠনিক ভাবে জামাত, শিবির এরা যতটা সক্রিয় তা আর অন্য কোন দল নয়। এদের টার্গেট থাকে কিভাবে এই মেধাবি ছেলে-মেয়েদের কে তাদের রাজনীতিতে শামিল করা যায়। এখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো যে সক্রিয় রাজনীতিতেই যে এরা সবাইকে চায় তা নয়। কিছু ছদ্মবেশীও তাদের দরকার। তাদের তো এইসব প্রতিষ্ঠানগুলো চালাতে হবে। কি নেই এদের? এতোদিন আপনি মাসুদ রানা পড়তেন, আপনার খুব কাছের বন্ধুটিই আপনার হাতে তুলে দেবে আবুল আসাদের সাইমুম। প্রেমের উপন্যাস পড়বেন আছে কাসেম বিন আবু বাকার। অদূর ভবিষ্যতে ইসলামী ডঃ রসময় ও বাজারে আসতে পারে এই জামাতীদের হাত ধরে। (ইসলামী কায়দায় বিবাহ/ স্বামী-স্ত্রী খুজে পাবার লিঙ্কটি কারো কাছে থাকলে শেয়ার করবেন প্লিজ; ইউ টিউব লিঙ্ক) এমনিতেই বাংলাদেশের মানুষ সরলপ্রাণ, ধর্মভীরু। আর জামাত এদের কাছে ইসলাম আর রাজনীতি মিক্সচার কইরা খাওয়াইতেছে। মানুষ ও ভাবছে এক ধাক্কায় পরকাল, ইহকাল দুইই যদি হাতের মধ্যে থাকে তবে সমস্যা কি!
শুধু তাই নয় অনেকের বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজনরাও জামাতে ইসলামী বা এর অঙ্গসংঠনগুলোর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ব্যাঙ্ক, বীমা, ট্রান্সপোর্ট, এনজিও, হাসপাতাল, গার্মেন্টস, মিডিয়া কি নেই এদের! এবং এরা এই সব জায়গায় জামাতিদেরই নিয়োগ দিয়ে থাকে। পেটে ভাতে, পরকালে সব ভাবেই এরা এদের কর্মীদের সাথে থাকছে। জামাতের ওয়েবসাইটে গিয়ে ছবি দেখেন পাবেন অনেক মুক্তিযোদ্ধাদেরও।

জামাত যাক বা থাকুক তার মতো।
তবে যা বলছিলাম আরকি, হেড কোয়ার্টার জানবে না ক্যাডেট কলেজগুলাতে কি হয় তাতো আর না। এমন তো না যে গোলাম আযমের ছেলেকে আর্মিতে নেবার পর তারা জেনেছে যে সে গোলাম আযমের ছেলে! শুধু তাই নয় আরেক রাজাকার (বর্তমানে বিচারাধীন) এর ছেলে কোন এক ক্যাডেট কলেজে পড়েছে। কিছুদিন আগে এক এক্স ক্যাডেট জঙ্গী তৎপরতার সাথে জড়িত থাকার জন্য গ্রেফতার হয়েছে।

মনে আছে কি?লিঙ্কটি দিলাম

আশা করছি সবাই সাবধান হবেন। ৯ মাসের হত্যাযজ্ঞ বটে, ১৪ ই ডিসেম্বর যারা ঘটাতে পারে তারা আর যাই হোক মানুষ নয়।


আমাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে ঘাতকের দল এখনও ক্রিয়াশীল।

২,৮২০ বার দেখা হয়েছে

২১ টি মন্তব্য : “ছাত্র রাজনীতি ও বিব্রতকর কিছু প্রশ্ন”

  1. শাওন (৯৫-০১)
    শুরুর দিকে একটা কথা বলেছিলাম রাজনীতি বিষয়ে। ক্যাডেট কলেজে আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, কম্যুনিস্ট পার্টি না থাকতে পারে, তাদের ছাত্র সংগঠন না থাকতে পারে, জামাতের কিন্তু আছে। প্রতিটি ক্যাডেট কলেজের প্রতিটি ব্যাচে জামাতের ছাত্র সংগঠন শিবির সক্রিয় ।(১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন জনাব মীর কাশেম আলী।)

    সহমত...


    ধন্যবাদান্তে,
    মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান শাওন
    প্রাক্তন ক্যাডেট , সিলেট ক্যাডেট কলেজ, ১৯৯৫-২০০১

    ["যে আমারে দেখিবারে পায় অসীম ক্ষমায় ভালো মন্দ মিলায়ে সকলি"]

    জবাব দিন
  2. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট রাজীব ভাই। বক্ত্যব্যের সাথে সহমত। জামাতীরা এত সাফল্যের সাথে ধর্মের আড়ালে তাদের এজেন্ডা ক্যামোফ্লাজ করে ফেলে যে কিশোর বয়সী ক্যাডেটদের জন্য তা পার্থক্য করা কঠিন হয়ে যায়। আবার কেউ এদের বিরুদ্ধে বলতে গেলেই সেটাকে ইসলাম বিরোধী ট্যাগ দিয়ে আরো উগ্রভাবে তার বিরোধীতা করা হয়। এদের ব্যাপারে আরো সতর্ক হওয়া খুবই জরুরী।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  3. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    আবারো, তোমার কথার ফ্লো-র সাথে তাল রাখতে পারলামনা। বারেবারে খেই হারিয়ে ফেললাম। ছাত্ররাজনীতির সমস্যার সাথে ক্যাডেট কলেজের গল্পের প্রাসংগিকতা খুঁজে পেলামনা। তবে তোমার পোস্টের মূলসুরটা বোঝা গেলো বরাবরের মতোই।
    কয়েকটি প্রশ্ন/শংকা:
    ''প্রতিটি ক্যাডেট কলেজের প্রতিটি ব্যাচে জামাত/শিবির সক্রিয়'' - এ তথ্য কতটা ঠিক?
    মীর কাশেম আলীর নামটা বোল্ড করে গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করা হলো কেন - সে কি এক্স ক্যাডেট?
    এক্স ক্যাডেটরা তো লীগ করছে, দল করছে, সবই করছে - জামাতও করবে বৈ কি। এতে আর অবাক হবার কি আছে? এক্স ক্যাডেটরা তো আর ভিনগ্রহের প্রাণী না।

    ছাত্ররাজনীতি প্রসংগে আমার দু'পয়সা:
    ছাত্ররাজনীতির আজকের কথা আনতে হলে লেজুড়বৃত্তির কথাটা আনতে হবে, তাকে বুঝতে হবে।শুধু ছাত্ররাজনীতির বিরোধিতার কথা বললে হবেনা।ছাত্ররা শিক্ষায়তনে যে সমাজে থাকে সেখানে হোস্টেল আছে, পরীক্ষা আছে, মেস আছে, ক্লাস না হওয়া আছে - লীগ-দল-শিবির-ইউনিয়ন না থাকলেও এসব আছে। এবং এসব ব্যাপারাস্যাপার পৃথিবীর যে কোন একটি প্রান্তেই ঠিকঠাকভাবে চলার জন্য যেটি দরকার সেটি হচ্ছে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব - প্রশাসনের লোকদেখানো প্রতিনিধিত্ব নয়, একেবারে খাঁটি প্রতিনিধিত্ব। কারণ নিজেদের সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলার জায়গা যদি না থাকে সেখানে অনিয়ম চেপে বসে, ছাত্রদের মাথা চিবিয়ে খাবার ব্যবস্থা পাকাপোক্ত হয়। মোটাদাগে এই হচ্ছে ছাত্ররাজনীতি - এর অপরিহার্যতা।

    যদি সব ঠিকঠাক মতো চলতো, তাহলে ৫২, ৬৯ এর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতোনা আর ছাত্রদেরো পথে নামতে হতোনা -কারণ পথে নামাটা তার কাজ নয়, তার কাজ পড়াশোনা করা। কিন্তু যখন সবকিছুই নষ্ট হয়ে যাবার পথে তখন কেবল পড়াশোনা করাটা আর তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়না, তারা পথে নামে। আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা এটা ছাত্রদের প্রাইমারী কাজ নয় - এটা একটা আপদকালীন ভূমিকামাত্র। কাজেই ৫২, ৬৯ এর ছাত্র আন্দোলনের উপর ভর করে দাঁড়ানোটা, ছাত্ররাজনীতির অহংকারের অধ্যায় মনে করাটা আমার কাছে এক্সপ্রয়েটেশনের মতো মনে হয়।বারে বারে ছাত্রদের তাদের আসল কাজটি থেকে বের হয়ে প্রতিবাদমুখর হবার মতো পরিস্থিতি রাষ্ট্র/আমরা সৃষ্টি করে রেখেছে/রেখেছি আর ফেনিয়ে ফেনিয়ে আমরা বলে চলেছি ওই হচ্ছে আমাদের গর্ব।

    ভালো ছেলেরা/ক্যাডেট কলেজের ছেলেরা/মেধাবী ছেলেরা (এবং মেয়েরা) যতদিন ক্যাম্পাসকে বাড়ি বা পরিবার মনে করবেনা, ততদিন কোন পরিবর্তন হবেনা।পড়াশোনায় ভালো করে (বা পাশ করে, শেষ করে) একটা চাকরীই আমাদের লক্ষ্য হতে পারেনা, ক্যাম্পাসে আরো কিছু দায়িত্ব আমাদের প্রত্যকেরই থাকে। সেগুলো তো আমরা বর্গা দিয়ে বসে আছি লীগ-দল-শিবির-ইউনিয়নের কাছে।শেষে দোষ দিচ্ছি ছাত্ররাজনীতিরই।

    একটা বড় কোন লক্ষ্যের জন্যে নিজের 'ভালোমানুষি'টুকু একটু ত্যাগ করার মানসিকতা থাকতে হবে।পাঁকে নামবোনা, জল ছুঁবোনা করে করেই একটু একটু করে একেবারে নষ্ট একটা প্রজন্ম হয়ে গেছে ছাত্ররাজনীতির ধামাধরাদের হাতে। ওতে নেমেই ওকে শুদ্ধ করতে হবে, বর্জন করে নয়। বন্ধ করে দিলেও এসব তলে তলে চলতে থাকে। সভা, মিছিল, পোস্টারিং-ই বন্ধ থাকে - চোরাগোপ্তা রাজনীতি চলতেই থাকে - যেটা আরো ভয়াবহ।

    দেশে বৃহত্তর রাজনৈতিক দলগুলোর যে অবস্থা তাতে করে এদেরকেও তো নিষিদ্ধ/বাতিল করে দিতে টোটকা নিয়ে উর্দিপরা পীরেরা আসেন দফায় দফায় - মারধর, জেল -হাজতে এসব নেতাদের অপদস্থ হতে দেখে আমরা জনতা তৃপ্তির ঢেকুর তুলি, জেনারেলদের আরেকটু লম্বা করে স্যালুট দেই- এই তো! দূরে দূরে পালিয়ে বাঁচি যে জনতা, নিজের শুধু কলামূলো প্রাপ্তি ঘটবে আর দেশের যা করার করবে ওই নেতারা না হয় আর্মি - এই মনোভাব না দেশকে বাঁচায় না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে।

    জবাব দিন
    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

      দাদা
      আপনার মন্তব্য বিশাল। এক ধাক্কায় উত্তর দিতে পারবো কিনা জানা নেই।
      তাল নিয়া :frontroll: সরি আছি ভাই।
      জামাত শিবির নিয়া কোন সন্দেহ নাই। তারা ক্যাডেট কলেজে যথেষ্ট সক্রিয়।
      কোন এক কলেজে এক ছেলের কাছে প্যারেন্টস ডে তে শিবিরের ছেলেপেলে আসতো।
      খুব সম্ভবত ঐ ছেলেকে এসব বাদ দিতে বললে সে কলেজ ত্যাগ করাটাকেই মেনে নেয়।
      ভ্যাকেসনে এসে এরা মিলিত হয়, সভা করে।
      ইন্টার পাস কইরা অনেকেই জামাতের স্কলারশিপে বাইরে পড়তে যায়।
      কাসেম মিয়ারে বোল্ড না কইরা বোল্ড করা উচিত ছিলো ঢা বি মসজিদ। যেই ঢা বি তে কোনদিন জামাতের কোন পায়ের ছাপ পড়েনাই তারা সেখানে ওঁই ঢা বির মসজিদে নতুন দল গঠন করে! সাল টা দেখেন? ১৯৭৭, ক্ষমতায় কে? মুক্তিযোদ্ধা জিয়া।
      ক্যাডেটরা রাজনীতিতে আসুক এটা আমি চাই; কিন্তু মূল ধারার রাজনীতিতে।
      ছাত্র রাজনীতি কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

      আরেকটা ব্যাপার দেখেন ভাইয়া ৭০ শতাংশ ছেলেপেলে যারা সামরিক বাহিনীতে যাচ্ছে না বা যেতে পারছে না তাদেরকে নিয়ে কেউ কিছু ভাবছে না, তাদের পথ দেখানোর ও কেউ নেই।
      আরেকটা কথা যেটা বলতে চেয়েছি তা হলো এতোগুলা ক্যাডেট কলেজ থাকার মাহাত্বটা কি বলেন তো? :-B
      আর ঐ যে গ্রেফতারের কথা বললাম ঐ ছেলে হরকাতুল জিহাদ না কার জানি পোষ্টারিং করতে গিয়া ধরা খাইছে।
      আর দাদা রাজনীতি রে আমি খুব বড়ো কইরা দেখি। দুষ্ট রাজনীতি আর দুষ্ট আর্মি দেশটারে নিয়া ফুটবল খেলেছে। কিন্তু সুষ্ঠু রাজনীতিই পারে আবার সব ঠিক করতে।


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন
    • রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

      দাদা এইটা আপনার জন্য একটা স্পেশাল নিউজ।
      এক এক্স ক্যাডেটের পোষ্ট আর তার প্রেক্ষিতে আরেক এক্স ক্যাডেটের কমেন্ট দ্যাখেন। (জানেন হয়তো ইকনোমিষ্ট নামে একটা পত্রিকা আছে, তারা এর আগেও খবর ছাপিয়েছিলো যে ভারত গত নির্বাচনে আওয়ামীলীগকে পয়সা দিয়েছে। এবার আরেক এলিগেসন নিয়া তারা হাজির হইছে। তাদের বানানো গাঞ্জায় এক্স ক্যাডেটরাও সুখ টান দিয়া থাকে )
      পোষ্টখানাঃ
      Read and learn how judges, politicians and prosecutors ganged up in Bangladesh to commit injustice (julum) to Islamic leaders there.

      http://www.amardeshonline.com/pages/details/2012/12/09/177212#.UMObxCJWaQI.facebook
      www.amardeshonline.com

      ১ম কমেন্টঃ

      "They plan, and Allah plans. And Allah is the best of planners"

      -Al-Quran

      ২য় কমেন্টঃ

      When judges become corrupted and they are busy licking Government's feet,then how can you expect justice from them?....I was astonished after reading the Skype conversation!!Shame..Shame...

      উপরে দেখতেই পারছেন পাকি রা যেমন প্রকৃত ইতিহাস জানে না তেমনি এদের অবস্থাও কি অনেক টা সেরকম না! বলা ভালো আরো খারাপ। কারণ এদের তো বাংলাদেশের ইতিহাস অজানা থাকার কথা না।

      যারা মনে করেন পাকিরা সবচেয়ে খারাপ জাত, তারা আসলে ভুল জানেন। :grr:


      এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

      জবাব দিন
  4. ড. রমিত আজাদ (৮২-৮৮)

    মুক্তিযুদ্ধের সেই উত্তাল দিনুলোতে, অজস্র তরুণ কি অসম সাহসিকতা নিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করেছিল! ব্যাটা নিয়াজী বলেছিলো, “বাঙালী মার্শাল রেস না”। ২৫শে মার্চের পরপরই যখন লক্ষ লক্ষ তরুণ লুঙ্গি পরে হাটু কাদায় দাঁড়িয়ে অস্র হাতে প্রশিক্ষন নিতে শুরু করল, বাঙালীর এই রাতারাতি মার্শাল রেস হয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তানি শাসক চক্র রিতিমত আহাম্মক বনে যায়।

    মেজাজ ঠিক রাখতে পারছিনা। দেশে যা ঘটছে, মেজাজ ঠিক রাখা মুশকিল। এভাবেই কি চলতে থাকবে? সব কিছুরই তো শেষ আছে। এই সবের শেষ কোথায়? ভাবতে ভাবতে যখন অস্থির হয়ে পরি তখন মনে হয় শেষ ভরসা, আমাদের তরুণরা। এই তরুণরাই এক সময় বিপ্লবীর বেশে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন করে হটিয়ে দিয়েছিল দুশো বছরের গ্লানি। এই তরুণরাই আন্দোলন করে রক্ষা করেছিল ভাষার মর্যাদা। যার জ্বলজ্বলে স্বাক্ষর হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে শহীদ মিণার। এই তরুণদের অবদান আমাদের আনন্দ-বেদনার মহাকাব্য '৭১-এর মহান বিজয়ের পর্বত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এরশাদ বিরোধী আন্দোলন তো আমার স্মৃতিতে এখনও অম্লান।

    সেই অসম সাহস সেই পর্বত প্রমাণ মনোবল আবার ফিরে আসুক বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে। দূর হোক দুর্র্নীতি, হতাশা, গ্লানি, অমঙ্গল। আর একবার জয় হোক বাংলার অপরাজেয় তারুণ্যের।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।