“আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” উপলক্ষ্যে কিছু কথা

আজ ২১ শে ফেব্রুয়ারী। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং আমাদের মহান ভাষা দিবস। এই দিবসের ইতিহাস আমরা সবাই জানি, তাই এখানে আমি ইতিহাস বর্ণনা করতে যাবনা, শুধুমাত্র এ সংক্রান্ত দু/একটি ঘটনা এবং আমার অনুভুতিটুকু শেয়ার করার চেষ্টা করব।

মূল লেখাতে প্রবেশের পূর্বেই এই দিন উপলক্ষ্যে আমি আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও কৃতজ্ঞতা জানাই ৫২’র ভাষা আন্দোলনে শহীদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার… সহ সেই সব বীর ভাষা সৈনিকদের প্রতি, যাদের অসীম আত্নত্যাগের বিনিময়ে আজ আমরা এই সোনার বাংলায় কথা বলতে, লিখতে, পড়তে এবং মনের ভাব প্রকাশ করতে পারছি। অকুতোভয় সেইসব বীর ভাষা সৈনিকদের জানাই অজস্র :salute:

ঘটনা-১

গত সপ্তাহে আমি গিয়েছিলাম লাইবেরিয়ার পার্শ্ববর্তী দেশ গিনি সংলগ্ন সীমান্ত টহলে (বর্ডার পেট্রোলিং এ)। আমার সাথে ছিল ইউএসএ ও মালি’র দুইজন সামরিক পর্যবেক্ষক (মিলিটারী অবজারভার), সুইডেন এবং জিম্বাবুয়ের দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা (ইউএন পুলিশ, যারা এখানে আনপল নামে সুপরিচিত) এবং স্থানীয় কয়েকটি নিরাপত্তা সংগঠনের আরো কিছু সদস্য।

আমাদের টহলের শেষে চা বিরতির একফাকে কিছুক্ষন তাদের সাথে নিজ নিজ দেশের সংস্কৃতি ও ভাষা নিয়েও আলোচনা হলো। কার ভাষা সহজ, কার ভাষা কঠিন, কার ভাষায় কতটি অক্ষর বা বর্ণ ইত্যাদি প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে বলতে কিছু সাধারন শব্দ যেমন – পানি, চা, চিনি, আদা এগুলোকে কার ভাষায় কি বলে তা নিয়েও আলোচনা হয়ে গেল (তাদের সবাইকে আদা চা খাইয়েছিলাম যেটা সবাই খুবই পছন্দ করেছিল; এজন্য চায়ের উপাদান হিসেবে ঐ মূহূর্তে এসব শব্দের প্রতি তাদের বেশি আগ্রহ ছিল। আমাকে এই আদা চা বানানোর বিস্তারিত পদ্ধতিও বলতে হয়েছিল)। বাংলাতে চায়ের উপাদানের নামগুলো শুনে ওরা সবাই খুব মজা পাচ্ছিল। এসবের ফাকে ফাকে তারা বাংলা ভাষা নিয়ে আমাকে অনেক প্রশ্নও করে ফেলল। এর প্রধান কারন, ইতিমধ্যেই তারা লক্ষ্য করেছে যে লাইবেরিয়ার অনেক মানুষ এখন বাংলা ভাষা শিখে ফেলছে এবং রীতিমত বাংলায় গানও গাচ্ছে। এখানকার একটি রেডিও চ্যানেলে প্রতি সপ্তাহের কিছু নির্দিষ্ট দিনে আমাদের বাংলা গান পরিবেশন করা হয়। তাই ইতিমধ্যে এদেশে বাংলা গানের অনেক ভক্ত শ্রোতা এবং গায়কও তৈরী হয়ে গিয়েছে।

বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের ছোট বড় প্রায় ৩৫ টি দেশের মানুষ এদেশে জাতিসংঘের বিভিন্ন পেশায় ও দায়িত্বে নিয়োজিত, কিন্তু আর কোন দেশের ভাষার প্রতি এদেশের মানুষের এরকম আগ্রহ নেই। তাই এই বাংলা ভাষা কোথা থেকে উৎপত্তি, বাংলাতে কতটি অক্ষর আছে, এই ভাষা শিখতে কতদিন লাগতে পারে ইত্যাদি নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হলো আমাকে। আমি যতটুকু জানি তা দিয়েই ইতিহাস বলার চেষ্টা করলাম। আর্যদের আমলের সংস্কৃত থেকে শুরু করে কিভাবে আধুনিক বাংলার রুপান্তর ঘটেছে তা সংক্ষিপ্তভাবে বুঝানোর চেষ্টা করলাম।

বাংলা ভাষার ইতিহাস বলার এক পর্যায়ে আমি যখন বললাম যে, এই ভাষায় কথা বলার অধিকার আমরা অর্জন করেছি জীবন বিসর্জন দিয়ে ও রক্তের বিনিময়ে তখন তারা সবাই ভ্রু কুচকে অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো, যেন এরকম অদ্ভুত কথা এর আগে ওরা কখনো শোনেনি। আমি তখন ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারী আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা কিভাবে পাকিস্তানের ভাষা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে আমাদের উপরে চাপিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করেছে এবং আমাদের মাতৃভাষা বাংলার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছে, তার এক সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিলাম। শেষে বললাম এজন্যই ২১ শে ফেব্রুয়ারীকে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে মর্যাদা দেয়া হয়েছে। সারা বিশ্বে এখন এই ২১ শে ফেব্রুয়ারী “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে স্বীকৃত শুধুমাত্র এই বাংলা ভাষার জন্য। সবাই মন্ত্রমুগ্ধের মতো আমার কথাগুলো শুনল। ওরা কেউই বাংলা ভাষার এই ইতিহাস এবং “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” এর কথা জানত না। যাবার আগে হাত মিলিয়ে এবং আমার পিঠ চাপড়ে বয়স্ক দুজন পর্যবেক্ষক এবং পুলিশের কর্মকর্তারা আমাকে যা বলে গেল তার অর্থঃ

“একজন বাংলা ভাষী হিসেবে তোমার সবসময় গর্ববোধ করা উচিত এবং সারা বিশ্বকে এই দিনটির ইতিহাস তোমাদের জানানো উচিত”।

ঘটনা-২

এবারে বলব গতকালের ঘটনা। আমার বর্তমান আবাসস্থল (ক্যাম্প) হতে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে এখানকার সবচেয়ে নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় “কাটিংটন ইউনিভার্সিটি” অবস্থিত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ভারতীয় মুসলিম অধ্যাপক আছেন যার নাম – ‘প্রফেসর ডঃ ইব্রাহীম আব্দুল আজিজ’। প্রতি শুক্রবারে এই ভদ্রলোক আমার এখানে জুমআর নামাজ পড়তে আসেন। তার বাড়ি ভারতের তামিলনাড়ু প্রদেশে। উনার দাদা ছিলেন একজন ইরানী। ভারতে ব্যবসা করতে এসে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন এবং পরবর্তীতে তার বাবার জন্ম হয় সেখানেই। তার বাবা জন্মসূত্রে ভারতীয় হওয়াতে পরবর্তীতে আরেক ভারতীয় মহিলাকে বিয়ে করেন এবং তাদের ঘরেই এই ডঃ ইব্রাহীমের জন্ম হয়। এভাবেই একজন ইরানী বংশোদ্ভুত ভারতীয় নাগরিক তিনি।

নিয়মিত আমার এখানে আসার কারনে তার সাথে এখন আমার বন্ধুর মতো সম্পর্ক। প্রায়ই তিনি আমাকে বিভিন্ন শব্দের বাংলা উচ্চারণ বা অর্থ জিজ্ঞাসা করেন এবং হিন্দী শব্দের সাথে মেলানোর চেষ্টা করেন। এর প্রধান কারন আমরা বাংলাদেশীরা স্যাটেলাইট চ্যানেলের কারনে অনেক হিন্দী বুঝি কিন্তু উনি একদমই বাংলা বুঝেন না। তাই ওনাকে বাংলা শেখাতে গিয়ে প্রায়ই আমার বেশ বেগ পেতে হয়। এর কারন বেশ কিছু শব্দ আছে যেগুলো হিন্দী এবং বাংলাতে একই রকম শোনায়। উনি তখন ভাবে যে, আমি আসলে নিজেই সব বাংলা জানিনা। আমি উনাকে বুঝিয়ে বলি, যে কিছু কিছু শব্দে এরকম মিল থাকা খুবই স্বাভাবিক, কারন আমরা ভৌগলিক ভাবে একই অঞ্চলের (উপমহাদেশের) অধিবাসী। এছাড়াও বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে ‘সংস্কৃত’ থেকে যেটা কিনা উর্দু বা হিন্দী’রও প্রাচীন ভাষা। তাই ভাষাগত কিছুটা মিল থাকা অসম্ভব কিছু নয়।

গতকাল এই ভাষা নিয়ে কথা বলার এক ফাকে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, আগামীকাল (মানে ২১ শে ফেব্রুয়ারী) যে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন কি না? উত্তর ‘না’ বোধক হওয়াতে উপরের (ঘটনা-১ এ বর্ণিত) একই ইতিহাস আমি তাকেও বললাম। এমনিতেই তিনি পাকিস্তানের ঘোর বিরোধী, তারপর আমাদের মাতৃভাষার এই ইতিহাস শুনে পাকিস্তানীদের প্রতি তার ঘৃনা যেন শতগুনে বেড়ে গেল। শোনার সাথেই তিনি ছি! ছি! করতে লাগলেন। ৭১ এর ঘটনা তিনি কিছুটা জানতেন, তাই আমাকে তিনি প্রায়ই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করতেন, কিন্তু ৫২’র এই ঘটনা তিনি একেবারেই জানতেননা।

পরবর্তীতে তিনি খুব খুশি হলেন যখন জানতে পারলেন যে, ১৯৯৯ সালের ১৭ ই নভেম্বর ইউনেস্কো সর্বপ্রথম আমাদের এই বাংলা ভাষার ইতিহাসকে সম্মান জানিয়ে ২১ শে ফেব্রুয়ারীকে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে স্বীকৃতি জানায় এবং পরবর্তীতে ২০০৮ সালে ‘ইউনাইটেড নেশনস্‌ জেনারেল এসেম্বলী’তে ২১ শে ফেব্রুয়ারীকে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষনা করে এই উপলক্ষ্যে নতুন ধারা (রেজুলেশন) আকারে বের হয়েছে। তিনি আমাদের রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক সহ ২০০৬ এর নোবেল বিজয়ী ডঃ ইউনুস এর নাম পর্যন্ত জানেন কিন্তু আমাদের ইতিহাস এবং আমাদের ভাষার যে এতটা মাহাত্ব্য এটা তিনি আগে জানতেন না। তিনিও খুব প্রশংসা করে বললেন সত্যিই এটা আমাদের জাতি এবং দেশের জন্য একটি অত্যন্ত গর্বের বিষয় এবং বিশ্বের সবার এই ইতিহাস জানা উচিত।

আমার কথা

এবারে আসি আমার নিজের কিছু চিন্তা ভাবনা নিয়ে। সেদিন গিনি সীমান্ত টহলে গিয়ে দেখলাম সে দেশের মানুষ তাদের নিজেদের ভাষা আর ফরাসী ছাড়া আর কোন ভাষা বোঝেনা, এমনকি ইংরেজীও বোঝেনা। এ কারনে আমরা আগে থেকেই সাথে করে দোভাষী নিয়ে গিয়েছিলাম যাতে ইংরেজী এবং ফরাসী উভয় ভাষায় পরস্পরের মত বিনিময় সম্ভব হয়।

টহল থেকে ফিরে এসে রাতে বেশ কিছুক্ষন এই ভাষা নিয়ে চিন্তা করলাম। আমি যতদূর জানি ইংরেজী, ফরাসী এবং স্প্যানিস ভাষা জানলে নাকি পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই কথা বলে মনের ভাব প্রকাশ করা বা নূন্যতম কাজ চালানো যায়, কারন বিশ্বের অধিকাংশ দেশই এই তিন ভাষাভাষীর মানুষের দ্বারা কোন না কোন সময় শাসিত ও শোষিত হয়েছে। আমার খুব কষ্ট হয় যখন এসব শুনি বা ভাবি। কিন্তু উপরের দুটি ঘটনার (১ ও ২) পর থেকে আমার মন বলছে, আমরা ধন-দৌলতে গরীব দেশ হতে পারি, কিন্তু আমাদের অতীত, সংস্কৃতি, আচার, রীতিনীতি, ইতিহাস অত্যন্ত ঘটনাবহুল এবং ঐতিহ্যমন্ডিত; অর্থাৎ আমরা ধনে গরীব কিন্তু মনমানসিকতায় নয়। আমি স্বপ্ন দেখি, এমন এক সময় আসবে যখন সারা বিশ্বের মানুষ বাংলা ভাষার ইতিহাস জানবে এবং বাংলা ভাষাকে সম্মান করবে; ইংরেজী, স্প্যানিশ বা ফরাসী ভাষা শেখার আগে ‘বাংলা’ তে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করবে এবং সবার আগে ‘বাংলা’ শেখার চেষ্টা করবে অর্থাৎ ‘বাংলা’ই হবে এই বিশ্বের এক নম্বর ভাষা।

আমরা কি পারিনা এমন একটি স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে???

৫৬ টি মন্তব্য : ““আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” উপলক্ষ্যে কিছু কথা”

    • মরতুজা (৯১-৯৭)

      উৎসাহে পানি ঢালার জন্য দুঃখিত, কিন্তু আমি বলব সম্ভব নয়। সংস্কৃতির বিস্তার অর্থনীতি আর রাজনীতির জোরের সাথে সরাসরি সমানুপাতিক। আমি বলব ১৫ কোটি বাংগালির বাংলার চেয়ে ১০ লাখ ইসরাইলির ভাষার এক নম্বর হবার সম্ভাবনা অনেক অনেক বেশি।

      আবেগ দিয়ে সব কিছু হয় না। বড়জোর কিছু লাইবেরিয়ান মুগ্ধ হবে, কিন্তু আমাদের চ্যানেল কোলকাতাতেও প্রচার হবে না, আর আমরা কিউ কি সাস ভি কাভি বহু থি দেখতে থাকব। যতদিন এই দেশে হাসিনা খালেদার রাজনীতি চলবে, দুর্নীতি আমাদের রাহুগ্রস্ত করে রাখবে, ততদিন কিছুই সম্ভব না।

      জবাব দিন
      • সামিয়া (৯৯-০৫)
        সম্ভব নয়

        এখনকার জন্য সহমত, তবে আসলে ভবিষ্যতে কি হবে, এটা আমরা এখন কিভাবে বলতে পারি ভাইয়া? বাংলাদেশের মিডিয়াতে খুব আস্তে আস্তে কিন্তু একটা বিপ্লব ঘটে যাচ্ছে, হয়ত তিরিশ বছর পর আমরা বলব, এটা বাংলা সিনেমা কিংবা নাটকের একটা স্বর্ণযুগ ছিল, আর তখন যে আমাদের নাটক সিনেমা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে না, এবং ভারতীয়রা তাদের কড়া মেকাপের গৃহবধূ দেখতে দেখতে অতিষ্ঠ হয়ে আমাদের কামরুল ভাইয়ের বানানো মেগাসিরিয়াল দেখবে না, এটা কিন্তু এইমুহুর্তে আমরা কেউই বলতে পারি না। তখন তারা নিজেদের সুবিধার্থেই বাংলা ভাষা কাজ চালানোর মত বুঝে নেবে। তবে বাংলা হবে এক নম্বর, এটা কেন যেন ঠিক চিন্তায় আসে না। অনেকটা জুনা ভাইয়ের লেখার মত, অস্থি মজ্জার সমস্যা।

        জবাব দিন
      • রহমান (৯২-৯৮)

        সংস্কৃতির বিস্তার অর্থনীতি আর রাজনীতির জোরের সাথে সরাসরি সমানুপাতিক। আমি বলব ১৫ কোটি বাংগালির বাংলার চেয়ে ১০ লাখ ইসরাইলির ভাষার এক নম্বর হবার সম্ভাবনা অনেক অনেক বেশি

        মরতুজা ভাই, আপনার এই অপ্রিয় সত্য কথাগুলো আমিও স্বীকার করি, কিন্তু আমি কখনো নৈরাশ্যবাদী নই, আমি সবসময়ই আশাবাদী। তাই আমি স্বপ্ন দেখতেই থাকব এবং আমার সাধ্যমতো বাংলাকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে যাব। আমার বিশ্বাস, আমাদের সমাজের সর্বস্তরে এই চেষ্টা থাকলে এবং এই বিষয়ে সবাইকে সচেতন করতে পারলে একদিন বাংলাও প্রথম সারির ভাষা হিসেবে আত্নপ্রকাশ করতে পারবে।

        উদাহরন স্বরূপ বলা যায় ভারতীয় হিন্দী ভাষার প্রসার আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি। হয়তো তাদের চলচ্চিত্রের কারনেই এই প্রসার। একই ভাবে আমি বলব আমাদের দেশের নাটকের মান অনেক উন্নত। আমাদেরও সম্ভাবনা আছে বিশ্বের বুকে বাংলাকে সুপরিচিত করার। অবশ্যই অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক বিষয়গুলো এর সাথে সম্পৃক্ত, যেটা আমি কখনোই অস্বীকার করি না।

        আমি আপনাদের কাছ থেকে ইতিবাচক মতামত বা পরামর্শ চাই, কিভাবে বাংলাকে সারা বিশ্বে সুপরিচিত এবং গ্রহণযোগ্য করে তোলা যায়, কি করলে আমরা বাংলাকে বিশ্বের বুকে প্রথম সারিতে নিয়ে যেতে পারব।

        আপনি আমার বড় ভাই। আপনার প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে আপনার মন্তব্যের কিছু অংশের ব্যাপারে দ্বিমত পোষন করব এখন। আশা করি বেয়াদবী মনে করবেন না।

        আবেগ দিয়ে সব কিছু হয় না। বড়জোর কিছু লাইবেরিয়ান মুগ্ধ হবে, কিন্তু আমাদের চ্যানেল কোলকাতাতেও প্রচার হবে না আর আমরা কিউ কি সাস ভি কাভি বহু থি দেখতে থাকব

        ১। এ বিষয়ে সম্পূর্ণ একমত হতে পারলাম না আপনার সাথে। আবেগ দিয়ে সব না হলেও আমি বিশ্বাস করি, অনেক কিছুই সম্ভব। ১৯৫২ সালের এই দিনে ঐসব বীর ভাষা সৈনিকরা যে তাদের জীবনের ঝুকি নিয়ে রাস্তায় প্রতিবাদ করতে নেমেছিল, তার পেছনেও ছিল আবেগ এবং মাতৃভাষা বাংলার প্রতি ভালবাসা। অস্বীকার করতে পারবেন? বিনিময়ে আমরা কি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে পাইনি? আমরা কি আমাদের অধিকারকে আদায় করে নেইনি??

        ২। ভাইয়া, শুধু লাইবেরিয়ানরাই না, বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের যেসব দেশে ( এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ টিরও অধিক দেশে) শান্তিরক্ষী মিশন করেছে তার অধিকাংশ দেশের মানুষেরই অন্তরের কাছাকাছি পৌছাতে সক্ষম হয়েছে। উদাহরন স্বরূপ বলা যায়, সিয়েরালিওনে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবী। তাই আমার বিশ্বাস, শুধু কিছু লাইবেরিয়ান না, বরং সারা বিশ্বের মানুষকে মুগ্ধ করার মতো ক্ষমতা আমাদের এই ভাষার আছে।

        ৩। মাত্র ২ সপ্তাহ আগে এখানকার রাজধানী মনরোভিয়াতে হয়ে গেল "সাউথ এশিয়ান নাইট" নামক একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেটি পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল আমাদের শান্তিরক্ষীদের। প্রায় ৩৫ টি দেশের মানুষ এই অনুষ্ঠান উপভোগ করেছে এবং খুব প্রশংসাও করেছে। আমাদের বাংলা গানের সুর উপস্থিত সবার মন কেড়ে নিয়েছে। তাই আমি মনে করি, শুধু কলকাতা কেন, সারা বিশ্বেও একদিন বাংলা চ্যানেল প্রচার সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন সবার আন্তরিক চেষ্টা, দেশপ্রেম আর সদিচ্ছা

        ৪। আমি ব্যক্তিগতভাবে হিন্দী ছবি খুবই কম দেখি এবং এখন হিন্দী সিরিয়াল একদমই দেখি না। আমার পরিবারকেও আমি এসব সিরিয়াল দেখার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করি, কারন আমি মনে করি এসব উগ্র সংস্কৃতি আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির জন্য হুমকি স্বরূপ। একটি উদাহরন স্বরূপ বলতে পারি, বারবার হিন্দী সিরিয়ালে মেয়েদের উগ্র মেকাপ, বহুবিবাহ এবং তথাকথিত "লিভ টুগেদার" দেখতে দেখতে আমাদের সমাজেও এখন এটাকে "ফ্যাশন" হিসেবে মনে করা শুরু হয়েছে। এছাড়াও হিন্দী গান ও সিনেমার কাহিনীর নকল করার বদ অভ্যাস তো আছেই। নিজের সংস্কৃতি ভুলে গিয়ে অপরেরটা এভাবে নকল করতে গেলে আমাদের সংস্কৃতি একসময় বিলীন হয়ে যাবে। আর তা যেন না হতে পারে এজন্য আমাদের সবার উচিত এসবের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা। আপনি কি এই জনমত গড়ে তুলতে চান না? নাকি আজীবন নৈরাশ্যবাদী হয়েই থাকতে চান???

        আমার বক্তব্যের মাধ্যমে আপনাকে কষ্ট দিয়ে থাকলে আবারো ক্ষমাপ্রার্থী।

        জবাব দিন
        • এমন এক সময় আসবে যখন সারা বিশ্বের মানুষ বাংলা ভাষার ইতিহাস জানবে এবং বাংলা ভাষাকে সম্মান করবে;

          ইংরেজী, স্প্যানিশ বা ফরাসী ভাষা শেখার আগে ‘বাংলা’ তে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করবে এবং সবার আগে ‘বাংলা’ শেখার চেষ্টা করবে অর্থাৎ ‘বাংলা’ই হবে এই বিশ্বের এক নম্বর ভাষা।

          রহমান ভাই
          আপনার আবেগ আর আমার আবেগ প্রায় কাছাকাছি। তবে আপনার লেখার যে অংশটুকু কোট করেছি তার প্রথম অংশের সাথে আমি একমত। দ্বিতীয় অংশের সাথে পুরোপুরি একমত না।

          আমিও চাই সারা বিশ্বের মানুষ ভাষার জন্যে আমার ভাইয়ের আত্মত্যাগের ইতিহাস জানবে, এই ব্যাপারটাকে শ্রদ্ধা করবে। এমন ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে আর নেই। একমত।

          তবে অন্য ভাষাভাষী (ইংরেজী, স্প্যানিশ বা ফরাসী ) মানুষরা তাদের নিজেদের ভাষা শিখার আগে বাংলা ভাষা শিখবে এই আশা আমি করি না। সত্যি কথা আমি চাইও না। কারন প্রতিটা মানুষের অধিকার হচ্ছে সবার আগে তার নিজের ভাষায় কথা বলতে পারা। আর অন্য ভাষাভাষী মানুষদের কাছ থেকে বাংলা শুনতে চাওয়ার চেয়ে বেশি জরুরী হচ্ছে আমরা নিজেরা যেনো আমাদের ভাষা বাদ দিয়ে অন্য ভাষায় কথা বলা শুরু না করি (যা এখন অহরহ হচ্ছে)।

          লাইবেরিয়া বা সিয়েরালিওনের মতো দেশে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার সম্মান দেয়াটা আমাদের জন্যে নিঃসন্দেহে সম্মানের। (যদি তা চাপিয়ে দেয়া না হয়ে থাকে) কিন্তু ভেবে দেখুন অন্যরা আমাদের ভাষাকে সম্মান জানিয়ে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিলো আর আমরা নিজেরাই এইদিকে নিজের ভাষা হারাতে বসেছি, এর চেয়ে দুঃখের কি আছে।

          রকিবের পোস্টের শেষ লাইনটা হচ্ছে সচেয়ে সুন্দর আশাবাদ -
          অন্য ভাষাভাষীকে শেখাতে পারি বা না পারি, আমাদের নিজেদের শিকড় যেন থাকে বাংলাতেই গাঁথা।

          জবাব দিন
          • রহমান (৯২-৯৮)

            কামরুল,

            তোমার সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত। খুব ভাল লাগল তোমার এই কমেন্টটা পড়ে।

            বেশি জরুরী হচ্ছে আমরা নিজেরা যেনো আমাদের ভাষা বাদ দিয়ে অন্য ভাষায় কথা বলা শুরু না করি

            এবং রকিবের উক্তিঃ

            অন্য ভাষাভাষীকে শেখাতে পারি বা না পারি, আমাদের নিজেদের শিকড় যেন থাকে বাংলাতেই গাঁথা

            প্রচন্ডভাবে সহমত :thumbup: :thumbup:

            এসব গঠনমূলক আলোচনা করার জন্যই আমার এই লেখাটা। অনেক ধন্যবাদ

            জবাব দিন
  1. আন্দালিব (৯৬-০২)

    রহমান ভাই, খুব চমৎকার একটা পোস্ট দিছেন! পড়তে পড়তে শেষের প্রশ্নটার জবাব আমিও খুঁজতেছিলাম। চিন্তা করে মনে হচ্ছে সমস্যাটা কোথায়? কেন বাংলা সারা বিশ্বে ইংরেজি, স্প্যানিশ বা ফরাসী ভাষার মতো বিস্তার লাভ করবে না?

    অনেক কারণ থাকতে পারে। এখনও করেনি, ভবিষ্যতে করবে বলেই আশা করি। তবে মনে হয় এজন্যে অর্থনৈতিক (সেইসাথে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক) শক্তির একটা সম্পর্ক থাকবে। দেখেন এখন কিন্তু হিন্দি অনেক ছড়ায়ে যাচ্ছে পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে। হিন্দি মুভির কল্যাণে হোক, অভিবাসী এনআরআইদের কারণে হোক বা যে কোন কারণেই হোক, তাদের ভাষাটাকে কিন্তু অনেকেই চিনছে যদিও ভারতও আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের একটা দেশ। আমাদের মনে হয় অর্থনৈতিক শক্তিটা বৃদ্ধি না পেলে কেউ বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিয়ে নিবে না। গরীবের আবার কী মতামত! এখন কিন্তু প্রচুর বাঙালি নানান দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, এটা আশার কথা। একটা সময় হয়তো ভবিষ্যতে আসবে যখন আমাদের দেশও বিশ্বের দরবারে মুখ্যশক্টি হয়ে উঠবে। আমাদের কথা-কাজেরও 'বেইল' থাকবে। আমাদের মুভি কান উৎসবে পাম ডি'অর, হলিউডে অস্কার জিতবে! সেইদিন সবাই বাংলা শিখবে, বাংলাকে সম্মান জানাবে! 🙂

    জবাব দিন
  2. মঞ্জুর (১৯৯৯-২০০৫)
    আমি স্বপ্ন দেখি, এমন এক সময় আসবে যখন সারা বিশ্বের মানুষ বাংলা ভাষার ইতিহাস জানবে এবং বাংলা ভাষাকে সম্মান করবে; ইংরেজী, স্প্যানিশ বা ফরাসী ভাষা শেখার আগে ‘বাংলা’ তে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করবে এবং সবার আগে ‘বাংলা’ শেখার চেষ্টা করবে অর্থাৎ ‘বাংলা’ই হবে এই বিশ্বের এক নম্বর ভাষা।

    মোদের গরব মোদের আশা,আ-মরি বাংলা ভাষা।

    জবাব দিন
  3. সামিয়া (৯৯-০৫)

    পোস্টএর ঘটনা দুইটা পড়ে কেমন কেমন জানি লাগলো, আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো গানটা শুনে আমার পানি না আসা চোখেও কেমনে জানি পানি এসে যায়, কি যন্ত্রণা, এই গানের ভ্যাঞ্চাই ভ্যাঞ্চাই ভ্যাঞ্চাই :bash: :bash:
    তবে বাংলা হবে পৃথিবীর এক নম্বর ভাষা, কিজানি, এই জিনিসটা ঠিক মনে আনতে পারলাম না। অর্থনৈতিক রাজনৈতিক কারণ উপরে সবাই বলেই দিয়েছেন, তার পরেও আরেকটা কথা থাকে, যদিও খুবই ছোট কারণ, বাংলা আসলে কঠিন একটা ভাষা। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, ইংরেজীতে ভাওয়েল মাত্র ছটা, বাংলায় সেখানে এগারটা। একারণেই ইংরেজির চেয়ে স্প্যানিশ কিংবা ফ্রেঞ্চ তুলনামুলক ভাবে কম জনপ্রিয়।

    জবাব দিন
    • রহমান (৯২-৯৮)
      বাংলা আসলে কঠিন একটা ভাষা

      সামিয়া, বাংলা কিন্তু আগে আরো কঠিন ছিল। বাংলাকে আধুনিকীকরন এবং সরলীকরন করা হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। উদাহরন স্বরূপ বাংলা একাডেমীর মাধ্যমে অধিকাংশ যুক্তাক্ষরকে ভেঙ্গে এখন সরল করে লেখার নিয়ম চালু করা হয়েছে, কঠিন সংস্কৃত, বা তৎসম শব্দগুলোর সমার্থক অপেক্ষকৃত সহজ শন্দ চালু করা হয়েছে। কঠিন বলে নিজের ভাষাকে দূরে সিয়ে রাখতে চাইলে চলবে না বরং কিভাবে এটাকে আরো সহজ এবং গ্রহণযোগ্য করে তোলা যায় সে বিষয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে।

      অর্থাৎ এ বিষয়ে আমাদের সদিচ্ছা এবং আন্তরিকতা থাকলে এর সবই সম্ভব। ধন্যবাদ

      জবাব দিন
  4. রহমান ভাই,এই লেখা পড়ে অত্যন্ত আবেগ তাড়িত হয়ে গেলাম।আমরা টাকা পয়সায় গরীব হতে পারি কিন্তু মননশীলতায় নয়-এটা ভেবে বুকটা ভরে গেল।আর বিশ্বে আপনাদের মত শান্তিরক্ষীদের মাধ্যমেও যে প্রসার ঘটছে(আমার এক সিয়েরা লিওনিয়ান বন্ধু নিজে বাংলা শিখেছে যাতে সে সেদেশে আমাদের যোদ্ধাদের সাথে কথা বলতে পারে,ওর মত আরো অনেকেই আছে)সেজন্যে ধন্যবাদ দিয়ে অপমান করার মত ধৃষ্টতাও আমি দেখাচ্ছিনা।

    ভাষা সৈনিক আর বর্তমানে যারা ভাষাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তাঁদের সবাইকে সশ্রদ্ধ সালাম।

    জবাব দিন
    • রহমান (৯২-৯৮)

      ধন্যবাদ মাস্ফ্যু

      এতদিন প্রর্যন্ত তোমার মধ্যে যে দেশপ্রেম এবং আবেগ আমি দেখেছি, তাকে :salute: জানাই।

      দোয়া করি তুমি জীবনে অনেক বড় হও (সাইজে তো হয়েছই 😛 , এখন জ্ঞান বিজ্ঞান আর আদর্শে বড় হওয়ার কথা বলছি), দেশ ও জাতির কল্যানে নিজেকে নিয়োজিত কর এবং একজন আদর্শ মানুষ হও :boss:

      জবাব দিন
  5. ওবায়দুল্লাহ (১৯৮৮-১৯৯৪)

    খুব সুন্দর করে ভাবনাটুকু এঁকেছো রহমান। :clap:

    অনেক অভিনন্দন তোমাকে। :thumbup:

    ভাষা সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।

    আর এই বাংলা'কে ভালবাসার স্বপ্ন নিয়েই তো এখনও বেঁচে আছি আমরা।
    শুভেচ্ছা নিও।


    সৈয়দ সাফী

    জবাব দিন
  6. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)
    আমাদের অতীত, সংস্কৃতি, আচার, রীতিনীতি, ইতিহাস অত্যন্ত ঘটনাবহুল এবং ঐতিহ্যমন্ডিত; অর্থাৎ আমরা ধনে গরীব কিন্তু মনমানসিকতায় নয়।

    হুম, ভালা কতা কইছো।


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
  7. ইউসুফ (১৯৮৩-৮৯)

    রহমান, অনেক ধন্যবাদ একটা সুন্দর এবং অনেক মূল্যবান মন্তব্য-উদ্রেককারী পোস্ট এর জন্য।

    এটা নির্মম সত্য যে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলা ভাষার গুরুত্ব অনেকের কাছে হয়তো কম, কিন্তু বাংলাভাষাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেবার জন্য এটা কোন অন্তরায় হতে পারে না। আমাদের যা কিছু করার, তা আমরা করে যাব (যেমন শান্তিরক্ষা মিশনে আন্তরিকতার সাথে আমাদের দেশকে পরিচয় করিয়ে দেয়া ইত্যাদি)। আর এভাবেই আমাদের (তোমার তো অবশ্যই) স্বপ্ন অনেকাংশে পূরণ হবে।

    আবারও ধন্যবাদ তোমার পোস্টের জন্য।

    জবাব দিন
    • রহমান (৯২-৯৮)

      ইউসুফ ভাই,

      খুব ভাল লাগল আপনার এই মন্তব্যটা পড়ে। আমিও মনে করি, আমরা যে যেখানে আছি সেখান থেকে আন্তরিক ভাবে চেষ্টা করলে আমাদের এই স্বপ্ন বাস্তবে পরিনত করা সম্ভব। বিশ্বের এক নম্বর ভাষা না হোক, অন্তঃত আমরা যেন বাংলাকে এমন এক স্থানে নিয়ে যেতে পারি যাতে করে আমরা গর্বের সাথে বুক ফুলিয়ে সবার সামনে বলতে পারব - "আমরা বাংলাদেশী, আমরা বাংলা ভাষী"। এটুকু করতে পারাটা কি কোন অংশে কম অর্জন?

      আবারো অনেক ধন্যবাদ আপনার এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

      জবাব দিন
      • রকিব (০১-০৭)
        অন্তঃত আমরা যেন বাংলাকে এমন এক স্থানে নিয়ে যেতে পারি যাতে করে আমরা গর্বের সাথে বুক ফুলিয়ে সবার সামনে বলতে পারব - “আমরা বাংলাদেশী, আমরা বাংলা ভাষী”।

        সহমত :thumbup:


        আমি তবু বলি:
        এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

        জবাব দিন
  8. সানাউল্লাহ (৭৪ - ৮০)
    আমার মন বলছে, আমরা ধন-দৌলতে গরীব দেশ হতে পারি, কিন্তু আমাদের অতীত, সংস্কৃতি, আচার, রীতিনীতি, ইতিহাস অত্যন্ত ঘটনাবহুল এবং ঐতিহ্যমন্ডিত; অর্থাৎ আমরা ধনে গরীব কিন্তু মনমানসিকতায় নয়।

    রহমান : তোমার পোস্ট এবং তার সূত্র ধরে বিভিন্ন মন্তব্যে বিষয়টা নিয়ে একটা ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। আসলে শেষ কথা একটাই। আগে নিজেদের শক্তিশালী হতে হবে।
    আরেকটা বিষয়, গত ১০ বছরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রচারে সরকার ও মিশনগুলো তেমন কিছু করছে না।


    "মানুষে বিশ্বাস হারানো পাপ"

    জবাব দিন
    • রহমান (৯২-৯৮)

      সানা ভাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এবং :salute:

      গত ১০ বছরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রচারে সরকার ও মিশনগুলো তেমন কিছু করছে না

      এই বিষয়টা কিভাবে সরকার ও মিশনগুলোর নজরে আনা যেতে পারে? সে ব্যাপারে আপনার মূল্যবান পরামর্শ চাচ্ছি 🙂

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রকিব (২০০১-২০০৭)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।