তাড়াহুড়ো

তুমি যখন খুব তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে,
চোখের কাজল লেপ্টে ফেল,
কিংবা মেজেন্টা রঙের জামার সাথে,
ভুল করে পড়ে ফেল নীল চুড়ি।
অথবা তোমার টিপ পয়তাল্লিশ ডিগ্রী কোণ করে,
সরে যায় কপাল থেকে।
তখন মনে হয় এই অগোছালো তুমিই বুঝি,
আমার অসমাপ্ত পৃথিবীর অবিন্যস্ত দেবী।

আচ্ছা,
তখন কেমন লাগে বলবে?
যখন তুমি আমার কনিষ্ঠা আঙুল ধরতে গিয়ে,
অনামিকা ধরে ফেল
নখের আলতো আঁচড়ে আমাকে দাও
ভালোবাসার সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম ব্যথা
আমার রুক্ষ্ম রুক্ষ্ম চুলে মনের ভুলে বুলাও হাত।

তুমি যখন খুব তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে,
চুলের ক্লিপ আনতে ভুলে যাও
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর পতাকা তোমার উড়ন্ত চুল
যখন
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর মানচিত্র তোমার
মুখে এসে পড়ে
সেই উল্লাসে আমিও যে কাঁপি?
বোঝ তুমি?
তুমি যখন খুব তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে,
তোমার লকারের চাবী ফেলে আসো
কিংবা রিক্সা থেকে নামতে গিয়ে তোমার
ওড়না আটকে যায়
তখন সেই চটপটে তোমাকেই আমার
বেশি ভালো লাগে।
তুমি যখন তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে আমাকে ডেকে ফেল
ভুল নামে
ভুল কবিতার ছন্দ খুঁজে যাও
তখন মনে হয় তোমার সেই তাড়াহুড়োকেই
আমি বেশি ভালোবাসি।

কবিতাগ্রন্থঃ নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে কাঁদতে নেই।

১,৬৬৬ বার দেখা হয়েছে

১০ টি মন্তব্য : “তাড়াহুড়ো”

  1. সাইদুল (৭৬-৮২)

    নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে কাঁদতে নেই এর সব কবিতাই কি তাড়াহুড়োর মত?
    তাহলে তো অসাধারণ কবিতার বই


    যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।