মালয়েশিয়া ভ্রমন (পর্ব-২)

মালয়েশিয়া ভ্রমন (পর্ব-১)
অবশেষে ঢাকায় প্রায় ৮ দিন কাটানোর পর ঠিক করতে পারলাম যে, ২৪ তারিখ রাতে যেতে পারবো। ২৩ তারিখ গেলাম বেস্ট এয়ারের অফিসে টিকেট এর তারিখ চেঞ্জ করতে। ওরা বল্লো, ৩১ তারিখের আগে কোনো ফ্লাইট খালি নাই। মেজাজ টা একেবারে গরম হয়ে গেলো।
কি করবো, চলে আসলাম। এম্নিতেই টুর এর এতগুলো দিন নস্ট হলো। পারলে বিমান কিনে চলে যাই। ২৪ তারিখ সকাল এ আমার সাথে যে আসছিলো সেও চলে গেলো। বিকাল বনানীতে ঘুরতে ঘুরতে গেলাম এক ট্রাভেল এজেন্সী তে। সেখানে শুনলাম রাতে বিমান এর একটা ফ্লাইট আছে। মাথায় কোনো চিন্তা আসার আগেই টিকেট নিয়ে নিলাম।ওইদিন আবার প্রায় সারাদিন ছিলাম একটি রাজনৈতিক দলের মিডিয়া সেন্টার এ। ওদের একটা নির্বাচনী ওয়েব এর কাজ করে দিচ্ছিলাম। বাসায় ফিরলাম রাত ৮ টায়।তাড়াতাড়ি করে বের হলাম। কারন রাত ১২ টায় ফ্লাইট।
এয়ারপোর্ট এ গিয়ে দেখি বিমান কাউন্টার এ বিশাল লাইন। কি ব্যাপার? দেখি বিশাল এক শ্রমিক দল মালয়েশিয়া যাবে আমার ফ্লাইট এ। এরা ফ্লাইট এ যে কি করে তা আসার সময় দেখেছি। সবাইকে অস্তির করে তুলে। বিমান উড়ার আগে থেকেই খাবার খুজতে থাকে। তার উপর যাবো একা।
যাক বোর্ডিং পাস নেয়ার সময় বললাম একটু সাইড এ সিট দেয়ার জন্য। এম্নিতেই বাংলাদেশ বিমান সম্পর্কে অনেক কিছু শুনি। এটা আমার প্রথমে বাংলাদেশ বিমান এ চড়া।যাক, ইমিগ্রেশন পার করে দেখি আরো এক ঘন্টা বাকি। কি করি। ডিউটি ফ্রি শপ গুলো ঘুরলাম। কয়েকটা সিগারেট খেলাম। তাও দেখি সময় যায় না।
দূরে দেখি এক পরিবার বসে আছে। সেখানে একটা মেয়ের সাথে চোখে টাংকিবাজি করলাম কিছুখন। অবশেষে সময় হলো চেক-ইন করার।
বিমান এ ঢুকে দেখি আমার সিট দেয়া হয়েছে বিদেশীদের কেবিন এ। আমার পাশের সিট খালি। যাক আরামে যাওয়া যাবে। কিছুখন পর দেখি পিছনের সিট থেকে টোকা দিচ্ছে কেউ। কি ব্যাপার? উকি দিয়ে দেখি সেই মেয়ে।সাথে ওর বাবা মা থাকাতে কিছু বলতে পারলাম না।
পুরো ভ্রমন বিমান সম্পর্কে আমার ধারনাই পালটে দিলো। খুব এ ভালো সার্ভিস। মালয়েশিয়া এর বাংলাদেশ বিমান এর মধে পার্থক্য খুব কম। খালি মালয়েশিয়া এয়ার এ ফ্রি হার্ড ড্রিংস দেয়,টিভি আছে এবং গান শুনা যায়।। একটু পর কম্বল চাওয়াতে বলে শেষ। যা শালা, একটু একটু ঠান্ডা লাগতেছিলো। এয়ার হোস্টেস একটু পরে আবার এসে বলে “she wants to give her blanket to u”. তাকিয়ে দেখি সেই মেয়ে। বাহ, ভালোই তো। সাথে বাবা মা থাকায় বেশি কিছু বলতে পারলাম না। অলপ যা একটু কথা হলো জানা গেলো তারা মুম্বাই থাকে।
যাক ভোর ৫ টার দিকে কুয়ালা লামপুর এয়ারপোর্ট এ গেলাম। প্লেন থেকে নেমে আগে পেট পূজা করবো বলে ঠিক করলাম। তাড়াতাড়ি গেলাম আমার প্রিয় “burger king” এ। এদের বার্গার এক কথায় অসাধারন। খেয়ে দেয়ে পড়লাম বিপদে। এতো বড় এয়ারপোর্ট এ কিছুখনের জন্য খুজে পাচ্ছিলাম না কোন দিকে যাবো। সেখানে ট্রেন দিয়ে আরেক টার্মিনাল এ যেতে হয় ইমিগ্রেশনের জন্য। যাক একটু পরেই পেয়ে গেলাম। যাক ইমিগ্রেশন এ যাবার আগে ভাব্লাম কিছুখন ঘুরে টাইম কাটাই। কারন এতো সকালে বের হবার চেয়ে একটু পরেই যাই। কিছুখন ঘুরে তারপর ইমিগ্রেশন শেষ করলাম। তারপর চিন্তা করলাম কিভাবে যাবো? সেখানে একটি ট্রেন সার্ভিস আছে। শুধু এয়ারপোর্ট থেকে KL এ যায়। খুব এ ভালো সার্ভিস। ভাড়া ৩৫ রিংগিট। ২৮ মিনিটে শহরে যায়। একেবারে এয়ারপোর্ট এর নীচ তলা থেকে যায়। যাক, সেটার টিকেট কেটে শহরে গেলাম। নাম্লাম KL Sentral নামে ট্রেন স্টেশনে। সাথে যেহেতু শুধু হাত ব্যাগ, বড় লাগেজ আগের বার রেখে এসেছিলাম, তাই স্টেশন থেকে বের হয়ে গেলাম মনোরেল এর টিকেট কাটতে। কেটে সোজা হোটেল এ গিয়ে বাকিদের ঘুম ভাংগালাম এবং নিজে ঘুম দিলাম। আগে ঘুমিয়ে নেই তারপর ঘুরা যাবে।
(চলবে…)


৩,৫৮৭ বার দেখা হয়েছে

৩১ টি মন্তব্য : “মালয়েশিয়া ভ্রমন (পর্ব-২)”

  1. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    যে যে কারণে খুব কুইক দুইটা পোস্ট দিয়া দিবার পরও রবিনের বিঞ্চিই 😀
    ১. কম্বলদাত্রীর কোনো ছবি না থাকায় তাহাকে ইমাজিন করতে পাঠকদের প্রবল কষ্ট দেয়ায়।
    ২. বোম্বাইয়া আংকেল এবং আন্টি প্যারেডে উপস্থিত থাকার পরও কম্বলদাত্রীর সাথে চোখে চোখে গাজী টাংকি নিয়া টানাটানি করার লাইগা।
    ৩. বার বার বেশরীয়তি কায়দায় সাথে ওর বাবা মা থাকাতে কিছু করতে পারলাম না বলায়
    ৪. বির্গির কিং এ বির্গির নিজে খিয়ে সিসিবির জিন্য কিছি নি ইনিতে x-(
    ৫. আগের ছিবিব্লিগ এ সমুদ্র সৈকতের ডিটেইল ছবি দিমু দিমু কইয়া আর না দেয়াতে।
    ৬. একেকটা পর্ব এতো দেরী কইরা দেয়াতে (পরের পর্বের লাইগা কতদিন বসায়া রাখবি ব্যাটা 😡 )

    সো চলমান সিসিবি ধারায় রবিনের বিন চিই 😉

    ___________________________________________
    ট্রাভেলগ ভালো হচ্ছে রবিন, সাথে দুয়েকটা ছবি ঢুকায়া দে, আরো ভাল্লাগবো :thumbup:


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  2. তাইফুর (৯২-৯৮)

    মাইয়ার আর কুন আপডেট ??

    আমি এক আদম,
    যেই বাসে উঠি, যত ভাল বাসই হোক পূরুষে সয়লাব, নারীরা ওই দিন বাস যাত্রা বয়কট করে।
    যেই ট্রেনে উঠি, সেই বগি তো বগি, পুরা ট্রেনে লুঙ্গী পরা লোক, দুই একটা মহিলা যাত্রী যদি থাকেও ... বুরখাওয়ালী।
    প্লেনে উঠলে ... ষ্টুয়ার্ডেস-এ ভড়া ... হোস্টেস পার্টি'র ধর্মঘট।


    পথ ভাবে 'আমি দেব', রথ ভাবে 'আমি',
    মূর্তি ভাবে 'আমি দেব', হাসে অন্তর্যামী॥

    জবাব দিন
  3. তানভীর (৯৪-০০)

    রবিন, লেখা পইড়া খুব মজকা পাচ্ছি।

    ওদের ট্রেইন সার্ভিসটা আমার ব্যাপক পছন্দ হইছে।

    আমি যেইবার গেছিলাম, তখন শ্রমিক ভাইরা দলে দলে একই প্লেইন এ গেছিল। ওদের কান্ড-কারখানা দেইখা বেশ মজাই পাইছিলাম।

    পরের পর্ব কই? 😡 😡 😡

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রবিন (৯৪/ককক)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।