ভালোবাসার বন্ধুত্ব- ১৩

ভালোবাসার বন্ধুত্ব- [১] [২] [৩] [৪] [৫] [৬] [৭] [৮] [৯] [১০] [১১] [১২]

৫৭।
নীল বাসায় ঢুকেই দেখে ফারিয়া আর অয়ন বসে আড্ডা দিচ্ছে। নীল কে দেখে ফারিয়া বললো
“কি ব্যাপার , আপনি থাকেন কোথায়?”
নীলঃ “আরে কোথায় আবার ? ভার্সিটি তে ছিলাম”
ফারিয়াঃ কিন্তু নীলিমা নাকি তিন ধরে আপনাকে খুজে পাচ্ছে না। আপনি নাকি ফোন ও ধরছেন না?
নীলঃ হ্যা, একটু ব্যস্ত ছিলাম।
ফারিয়াঃ মাত্র এক বছরেই এ রকম হয়ে গেলেন? অথচ আপনি না নীলিমা কে পাওয়ার জন্য পাগলামি করেছিলেন। আর এখন ওর সাথে কথা বলারও সময় পান না।
নীলঃ তোমরা ব্যাপারটা এভাবে দেখো না কেনো, মানুষ ব্যস্ত থাক্তেই পারে। আর এখন পড়াশোনার চাপ বেড়েছে, অনেক কিছু নিয়ে চিন্তা করতে হচ্ছে।
ফারিয়াঃ যাই বলেন, আপনি অনেক বদলে গেছেন। যাই হোক, আপনাদের ব্যাপার আপনারা বুঝবেন।অয়ন, আমি বাসায় গেলাম। কালকে দেখা হবে।
ফারিয়া যাবার পরেও অনেকখন অয়ন কিছু বললো না। হটাত বললো
“আচ্ছা নীল, তোর কি এখন আর নীলিমাকে ভালো লাগছে না?”
নীলঃ “কিরে তোরা দুই জন কি শুরু করলি?এমন কিছু তো হয় নাই।”
অয়নঃ হয় নাই, কিন্তু ব্যাপারটা কিন্তু চোখে লাগছে যে, তুই নীলিমাকে কিছুটা এড়িয়ে চলছিস।
নীলঃ শোন, এরকম কিছুই হয় নাই। এখন পড়াশোনা শেষের দিকে। তাই একটু চাপ যাচ্ছে। আর সাথে সাথে আমাদের ফার্মটাও শূরু করতে যাচ্ছি। তাই আগের মতো সময় বের করতে পারছিনা।জীবন নিয়েও তো ভাবতে হবে।খালি প্রেম দিয়ে তো জীবন চলবে না।
অয়নঃ তা ঠিক আছে। কিন্তু দেখিস পরে বলিস না যে বলি নাই।
নীলঃ অফ যা তো এখন। রেস্ট নিতে দে।
রাতের বেলায় নীল চিন্তা করতে লাগলো, আচ্ছা ফারিয়া বা অয়ন যা বললো তা কি ঠিক? সে কি আসলেই এড়িয়ে চলছে নীলিমাকে? তা কেনো হবে? ও তো ওদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই যা করার করছে। নীলিমা কি এটা বুঝে না? হ্যা, এটা ঠিক নীল আগের মতো সময় দিতে পারছে না, বা নীলিমার সাথে অনেক সময় কথাও বলতে পারছে না। কিন্তু এটা তো ঠিক, সে নীলিমাকে প্রচন্ড ভালোবাসে।নাহ, দেখি এগুলো নিয়ে ওর সাথে কথা বলতে হবে।কাল্কে যাবে ওর সাথে দেখা করতে।
৫৮।
সকালে নীল গেলো নীলিমার সাথে দেখা করতে।
নীলিমাঃ তুমি দুই দিন ধরে দেখা তো করোই না, এমন কি ফোন ও রিসিভ করো না। কি ব্যাপার?
নীলঃ আসলে বেশ কিছু কাজ নিয়ে একটু ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম।
নীলিমাঃ অন্তত ফোন তো করতে পারো, নাকি এখন আর আমাকে ভালো লাগছে না?
নীলঃ এমন কেনো হবে? শুধু শুধু রাগ করছো।
নীলিমাঃ না বলে রাখছি। কখনো এমন মনে হলে বলে দিও।
নীলঃ সরি। আর এমন হবে না। চলো, মুভি দেখতে যাবো।
নীলিমাঃ ঠিক আছে চলো।
৫৯।
বাসায় ফেরার পথে সোহেলের সাথে দেখা ।
নীলঃ কিরে তুই কোথা থেকে?
সোহেল; আর কোথা থেকে বাসা থেকে আসলাম। তোর কি খবর? তোর ফার্ম এর কতো দূর?
নীলঃ নারে অনেক কাজ বাকি। এতো সোজা না। অনেক ঝামেলা।
সোহেলঃ ঝামেলা না থাকলে তো সবাই দিতো। ব্যাপার না, চালিয়ে যা।অয়ন বলতেছিলো তুই নাকি আগের মতো নীলিমার সাথে দেখা করোস না?
নীল কিছুটা বিরক্ত হলো। অয়ন এর প্রব্লেম কি? এই ঘটনাকে এতো বড় বানাচ্ছে কেনো? এটা তো এমন কিছু না যে ইস্যু বানাতে হবে। নাহ, ওর সাথে মনে হয় এটা নিয়ে সিরিয়াসলি কথা বলতে হবে।
নীলঃ আরে এমন কিছু না, একটু ব্যস্ত ছিলাম তাই। তোর এখন কোনো কাজ আছে?
সোহেলঃ না কেনো?
নীলঃ চল তমালের সাথে দেখা করে আসি। অনেকদিন দেখা হয় না।
সোহেলঃ খারাপ বলিস নাই। আসলেই অনেকদিন দেখা হয় না। চল যাই।
তমালের হোস্টেলে এসে ওর রুমে পাওয়া গেলো না। তমাল আবার মোবাইল ব্যবহার করে না। ওর নাকি ভালো লাগে না। কিন্তু এই কারনে ওর সাথে যোগাযোগে অনেক সমস্যা হয়। এখন ওকে কোথায় খুজে পাবে?
বেশ অনেক্ষন রুমে বসে থাকার পর তমালের রুম মেট আসলো ওর কাছ থেকে জানা গেলো তমাল লাইব্রেরি তে আছে।
নীল আর সোহেলও লাইব্রেরির দিকে রওয়ানা হলো।সেখানে গিয়ে ওকে পাওয়া গেলো।
তমালঃ আরে তোরা? কি খবর?
নীলঃ তোকে কতোদিন বললাম, একটা মোবাইল নে।
তমালঃ আমার ভালো লাগেনা। তারপর খবর বল।
সোহেলঃ এইতো চলছে। তোর পড়ালেখার কি খবর?
তমালঃ আরে মেডিকেলের পড়া তো জানিসই। সারা জীবনই পড়তে হবে।
সোহেলঃ একটা প্রেম করে ফেল। তারপর দুই জন মিলে পড়বি। মেডিকেলে নাকি অনেক সুন্দর মেয়ে আছে।
হঠাত পেছন থেকে একটি মেয়ের কন্ঠ শুন্তে পেলো।
“নীল ভাই, আপনি এখানে?”
নীল নিজের নাম শুনে ঘুরে তাকালো। চিনতে কয়েক সেকেন্ড লাগলো। এতো সেই অনীতা।তার পাশের বসার।
(চলবে)

৪,৫৭৯ বার দেখা হয়েছে

৫২ টি মন্তব্য : “ভালোবাসার বন্ধুত্ব- ১৩”

  1. রকিব (০১-০৭)

    বহুদিন ধরে অপেক্ষায় ছিলাম, অবশেষে......
    অনীতার প্রত্যাবর্তন :awesome: :awesome:
    ভাইয়া বহুদিন পর দারুন একটা পর্ব ছাড়লেন। :thumbup:


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন
  2. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    ব্যাপক হয়েছে রিবিন ভাই... :hatsoff:

    অনীতা এসেছে অবশেষে ……

    :thumbup: :thumbup:


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  3. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    যথারীতি ডজার রবিন বিশাল গ্যাপ দিলো সিরিজটাতে আবার। এবং ডাল মেমোরি নিয়া আবার সব ভুইলা গেছি ক্যাডা কুনডা আছিলো :bash:
    নীল কে? নীলিমার ভাই? অয়ন? ফারিয়া টা কিডা ? অনীতা কে, সোহেলের খালা?? নাহ, সব ভুইলা গেছি আবার, যাই আগের পার্টগুলা রিভিশন দিয়া আসি :bash: :bash:


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  4. হাসান (১৯৯৬-২০০২)
    নীলিমাঃ না বলে রাখছি। কখনো এমন মনে হলে বলে দিও।
    নীলঃ সরি। আর এমন হবে না। চলো, মুভি দেখতে যাবো।
    নীলিমাঃ ঠিক আছে চলো।

    বস এই জায়গাটা একটু খারাপ হইছে, দুই দিন ফোন না ধরলে কোনো মেয়ে এক কথায় মুভি দেখতে রাজি হয় না, আরো কিছু তেল দরকার ছিল। :khekz:

    মেয়ে যদি আরো কিছুক্ষণ রাগ করে থাকত সেটাই পাঠকের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য হত।

    জবাব দিন
  5. শার্লী (১৯৯৯-২০০৫)

    সবার সাথে ভিন্নমত পোষন করে বলছি অনীতাকে যদিও আনলেন, কিন্তু এই পর্বে নাম দেয়াটা ঠিক হয় নাই। একটু সাস্পেন্স দরকার ছিল বলে মনে হচ্ছে। মানে মেয়েটা এই পর্বে আসল আর নাম পরের পর্বে দিলেন এরকম আর কি।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : রবিন (৯৪-০০/ককক)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।