“যে কিলাইয়া কাঁঠাল পাকাইয়াছিলো…………”

ছ’ফুট।
তাহারে নিয়া কিভাবে লেখা শুরু করিতে পারি? ক্লাস টুয়েলভে পড়িবার কালে তাহার হাইট ছ’ফুটে গিয়া থামিয়াছিল। এবং ক্লাস সেভেনে যখন তারে প্রথম দেখি, হাইট ছিলো চাইর ফুট আট ইঞ্চি। তাহার মুখ ছিলো এই এক্টুখানি আর কান দু’খানা ছিলো বেশ বড়; দুষ্টলোকেরা তাই তাহার চেহারার সাথে লেমুরজাতীয় কোনো প্রাণীর সাদৃশ্য পাইত। সে তাহার ছ’বছরের সংক্ষিপ্ত কলেজ জীবনে জন্ম দিয়াছিলো অগণিত কিংবদন্তীর। সে কলেজ আউট হইয়াও দিন দশেক পরে ফিরিয়া আসিয়াছিলো আমাদের কাছে বীরের বেশে। ক্লাস সেভেনে সে ফাঁকিবাজির আশায় নিত্য নতুন পন্থায় হাসপাতালে ভর্তি হইয়া হাউস ডিসিপ্লিনে তামসিক ফলাফল আনিয়াছিলো। ইন্টারহাউস ফুটবল কম্পিটিশনে তাহারে গোলকীপার রাখিয়া তারিক হাউস এক অভূতপূর্ব রেকর্ডের সৃষ্টি করিয়াছিলো। এর আগে তারিক হাউস এক ম্যাচে কখনও ১১ গোল খায় নাই! সে আমার ভালো দোস্ত; প্রথম বিড়ি টানিয়াছি একসাথে; কলেজ পলাইয়া বাংলা সিনেমা দেখিয়াছি একসাথে; প্রথম প্যারেন্টস কল হইয়াছে একসাথে; ক্লাস সেভেনে প্রথম প্যাঁদানি খাইয়াছি একসাথে, ক্লাস এইটে দিয়াছিও একসাথে; আরো কত কি!!!

সৃষ্টিকর্তা তাহারে দিয়াছিলো অসম্ভব রসবোধ; সকল কথোপকথনে সে আমাদের হাসাইতে পারিত। কলেজ থেকে বাহির হইবার দু’বছর পরে IUT তে আমরা কজন একত্রিত হইয়াছি, আনন্দগল্পে মশগুল। তাহার নিস্পৃহ ভাব দেখিতেছি আর “সে কেন জানি আর “সেই” নাই”, এমনটা ভাবিয়া দুঃখ পাইতেছি মনে মনে; তখনই আরাফাত শুরু করিল তাহার চীন দেশের কাহিনী।
আরাফাতঃ “……বুঝলি গেছি বাজারে সেবার, হেভী সমস্যায় পড়লাম। শালারা কেউ ইংলিশ বুঝে না। কিনব আবার মুরগী!!…………”
আমরাঃ “তারপর……তারপর???”
আরাফাতঃ “আর কী? মূরগীর মত কঁক! কঁঅক!! কক! আওয়াজ করলাম; তখন ওরা বুঝলো।”
আমরাঃ “ও-ও-ও-ও-ও-ও!!!”
ছ’ফুটঃ “ভাগ্যিস চীনা মুরগীরাও কঁক কঁক-ই করে!!!! তা না হলে কি করতি??”

আরাফাতরে ছ’ফুট প্রায়ই নাজেহাল করিয়া দিতো এবং ৩৭ তম ব্যাচের সকলেই এ-কথা জানে। আশ্চর্য হইলেও সত্য, এই লেখা ছ’ফুটরে নিয়া দিতেছি আরাফাতেরই পরামর্শে। তবে আরাফাতের নাজেহাল হইবার কাহিনী এখন নয়। এইটা কাঁঠাল পাকাইবার কাহিনী।
আমাদের ছ’ফুট ক্লাস এইটে একদিন তাহার নিত্যকার হাসপাতাল ভিজিট সারিয়া হাউসে ফিরিতেছে, পথের দু’ধারে নানা বৃক্ষ। উহাদের মাঝে একটি কাঁঠাল গাছ তাহার দৃষ্টি কাড়িল। উহাতে এক স্বাস্থ্যবান কাঁঠাল ফলিয়াছে। ছ’ফুট চুপি চুপি তাহা পাড়িয়া বগলদাবা করিয়া রূমে আসিয়া উপস্থিত! সে তাহার কৃতকর্মে অতি আনন্দিত থাকিলেও আমরা কাঁঠাল দেখিয়া ব্যাপক আতংকে শোরগোল তুলিলাম। কারণ আমরা কেবল ক্লাস এইট, বেশি সিনিয়র নই। কাঁঠাল মোটেও ক্ষুদ্রাকৃতির নহে, তার উপর এই নির্দিষ্ট কাঁঠালখানির আয়তন যেকোন কাঁঠালবৃক্ষের গর্বের বস্তু হইবার পারে। কোন বড় ভাই এই জিনিষ দেখিলে কাঁঠাল ও আমরা, উভয়েরই ইস্পিশাল “কিল” খাইবার সম্ভাবনা আছে। তাছাড়াও, কাঁচা কাঁঠাল পাকাইব কিভাবে???
অতঃপর আমরা মিটিং ডাকিলাম, ইস্যু একটাই। কাঁঠাল ফেলিয়া দিব না কাঁঠাল পাকাইব? পাঠকগণ, বিশ্বাস নাই বা করেন, সিদ্ধান্ত এতো সহজ ছিলো না। ওই কাঁঠালের বিরাট আকৃতির কারণে সহজে ফেলিয়া দেয়াও কঠিন। আমরা কাঁচা কাঁঠাল পাকাইবার কোন জনসম্মত উপায়ও জানি না। এমন কী কয়েক বুদ্ধিমানের বুদ্ধিতে আমরা সেই অতি প্রচলিত বাংলা প্রবাদ হাতে কলমে পরীক্ষা করিয়া দেখিলাম; মানে কাঁঠালখানিরে মিনিটখানেক ঘুঁষানো, কিলানো হইল। আমার অভিজ্ঞতায় কাঁচা কাঁঠালের ত্বক খুবই রুক্ষ এবং কর্কশ; মোটেও কিলাইবার উপযুক্ত নহে। পাঠকগণকে এইরূপ কার্য থেকে বিরত থাকিবার পরামর্শ দেয়াই কর্তব্য মনে করিতেছি। যাহাই হউক, আমরা সিদ্ধান্ত নিতে না পারিয়া হাল ছাড়িয়া দিলাম। কাঁঠালখানি অতি সত্বর ছ’ফুটের বেডের নিচে নূতন ঠিকানা খুঁজিয়া পাইল। কয়দিনের মাথায় আমরাও উহার কথা ভুলিয়া গেলাম।
এরপর একদিন হঠাৎ রূমে ঢুকিয়া দেখি মৌ মৌ গন্ধ!! যেন কিছু পাকিয়াছে। গন্ধ অনুসরণ করিয়া গিয়া দেখি কাঁঠাল পাকিয়াছে। ক্ষেতে বাঙ্গী ফাটিলে যেমন শেয়াল জড়ো হয়, তেমনি আমরা সকলে কাঁঠাল ঘিরিয়া জড়ো হইলাম। সবাই ভাবিতেছি শেষপর্যন্ত কি কিলায়ে কাঁঠাল পাকাইলাম! বাংলা প্রবাদ তো ভুল প্রমাণিত হয় হয় ভাব! কথা শুনিয়া কাওসার গেলো ক্ষেপিয়া। সে নাকী কাঁঠালে গোঁজ দিয়াছিলো দিন কয়েক আগে। বেয়াদ্দব যে কাঁঠাল পাকাইবার তরিকা জানে তা আমাদের প্রথম দিন বলে নাই। যাহাই হউক, কাঁঠাল পাকিয়াছে ত। আমরা ইহাতেই খুশি। ছ’ফুটের শুকনা মুখের সামনে আমরা কবে, কোথায়, কখন, কিভাবে কাঁঠালখানা খাইব তাহার পরিকল্পনা আঁটিলাম। ঠিক হইল, ওইদিনই লাঞ্চের পরে আমরা কাঁঠাল খাইব। সেই দুপুরে লাঞ্চে আমরা সবাই; দেখি ছ’ফুট শরীর খারাপ বলিয়া টেবিল ছাড়িয়া আগে আগে উঠিয়া গেলো। লক্ষণ সুবিধার নহে। ব্যাপারখানা আমাদের কারোরই নজর এড়ায় নাই। লাঞ্চ শেষ হইবা মাত্রই আমরা হুড়মুড় করিয়া ১১ নম্বর রূমে ঢুকিলাম।
কিন্তু, সর্বনাশ! কাঁঠাল কোথায়? ছ’ফুটই বা কোথায়??
আমরা মাথায় হাত দিয়া বসিলাম। কাওসারের প্রতিক্রিয়া ছিলো মারাত্মক! কাঁঠাল সে পাকাইয়াছে বলিয়া খুবই লাফ ঝাঁপ দিতে লাগিলো। কাঁঠাল হারাইয়াছে যেন আমাদেরই দোষ। মেজাজ খারাপ করিয়া সে আমাদের উদ্দেশ্যে কাঁঠালের কিছু অযৌক্তিক ও অসম্ভব ব্যবহারের কথাও চেঁচাইতে লাগিলো। একে ত কাঁঠাল গায়েব, তার উপর এই! ইহাতে আমাদেরও মেজাজ গেলো খারাপ হইয়া, আমরা তাহারে কিছু সম্মিলিত পিটুনি দিলাম। কিন্তু কাউরে পিটাইলে কি কাঁঠালের ক্ষুধা মেটে? কেহই এক করিতে পারিলাম না, ছ’ফুট আর কাঁঠাল কোথায় হারাইলো।
আধা ঘন্টা পর, ছ’ফুট রূমে আসিয়া ঢুকিলো। তাহার পেট বেশ ফুলিয়াছে যাহা বৃহস্পতিবারের লাঞ্চ খাইয়া হওয়া অসম্ভব। গা হইতে আসিতেছে কাঁঠালের সুবাস। বোকা ভাবিয়াছে কি? পোলাপাইন তাহারে ঘিরিয়া ধরিয়া এই মারে কি সেই মারে। চিপা খাইয়া ছ’ফুট আসল কথা প্রকাশ করিল। সে এক মর্মস্পর্শী গল্প!
গত কয়দিনে ইষ্টুপিডের নাকি বেডের নিচে কাঁঠালের সহিত বিশেষ সখ্যতা গড়িয়া উঠে। টেলিপ্যাথিক যোগাযোগে কাঁঠাল নাকি ছ’ফুটরে বলিয়াছে, সে যদি কোনদিনও পাকে কেবল মাত্র ছ’ফুটই যেন তাহারে খায়। ছ’ফুটের স্বাস্থ্যবৃদ্ধিতে নাকি কাঁঠালের আত্মা শান্তি পাইবে। তাই কমবখত আগেভাগে রুমে আসিয়া কাঁঠালখানা লইয়া কলেজের পানির ট্যাঙ্কির উপর গিয়া বসিয়াছিল। আধাঘন্টায় সে যতটুকু পারিয়াছে খাইয়াছে, বাকীটুকু ফেলিয়া দিয়াছে।
আমরা কথা শুনিয়া কিংকর্তব্যবিমূঢ় হইয়া গেলাম। কেবল কাওসার পুনোর্দ্যমে ছ’ফুটের উদ্দেশ্যে কাঁঠালের নূতন কিছু অযৌক্তিক ও অসম্ভব ব্যবহারের কথা চেঁচাইতে শুরু করিল। আমরা এতে মাইন্ড খাইলাম না। বরং বিপুল উদ্দোমে স্বর্গীয় কাঁঠাল এবং মর্ত্যবাসী ছ’ফুটের সর্বনাশে ঝাঁপাইয়া পড়িলাম।

“রসূন পূরাণ” ঃ
এইখানা ক্লাস সেভেনের ছোট্ট গল্প। আগেই বলিয়াছি ছ’ফুট ফাঁকিবাজির আশায় নিত্য নূতন উপায় বাহির করিত হাসপাতালে ভর্তি হইবার। আপনাদের সকলেরই মনে আছে যে হাসপাতাল হইতে ডিসচার্জের কালে আমরা দিনদুয়েকের পিটি-গেমস এক্সকিউজ পাইতাম। ছ’ফুট সেবার ডিসচার্জ হইলে তিনখান ই,ডি খাইয়া আসিলো। কারণ কি? ওইদিনের ডিউটি মাষ্টার রশীদ স্যারের মুখে শুনিলাম ঘটনা;
সৃষ্টিকর্তার দেয়া মেধা সম্পূর্ণ অ-জায়গায় খাটাইয়া ছ’ফুট এক বস্তুর নূতন ব্যবহার বাহির করিয়াছে। বস্তুটি হইল রসূন। সঠিক উপায়ে ব্যবহার শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। বেয়াদ্দব তাই দুই বগলে রসূন চাপিয়া, টেম্পারেচার ১০১’ করিয়া(স্যারের বক্তব্য, আমার নহে) হাসপাতালে উপস্থিত। ডিউটিরত ষ্টাফও নিরীহমনে তাহারে ভর্তি করিয়া দিলো। ১ম দিন ভালোই কাটিয়াছিলো ছানার, খাইয়া দাইয়া আরামেই ছিলো। বাধ সাধিল রসূন। জ্বর কন্টিনিউ করিতে হইবে বিধায় বগলে সে দিবারাত্রি রসূন চাপিয়াছিলো।
সক্কাল বেলা মেডিকেল ষ্টাফ তাহারে ঘুম থেকে ডাকিয়া তুলিল। ঘুম ভাঙ্গিয়া ছ’ফুট বিরাট আড়মোড়া ভাঙ্গিলে; যথাস্থান হইতে রসূন টুপ টুপ করিয়া ঝরিয়া পড়িল। হতভম্ব ষ্টাফ তাহারে টানিয়া মেডিকেল অফিসার স্যারের কাছে লইয়া গেলো। স্যার ঘটনা দেখিয়া শুনিয়া মুচকি হাসিলেন। অতঃপর ছ’ফুটরে তিনখানা ই,ডি সহ ডিসচার্জ করিয়া দিলেন। আমাদের বাকি যে কয় বুদ্ধিমানেরা একই পদ্ধতি অবলম্বনে ভর্তি হইয়াছিলো তাহাদের সহায় সম্পত্তিতে উত্তম সার্চ দেয়া হইল। সৌভাগ্য যে উহাদের কোনো চিপায় রসূন, পেঁয়াজ, আদা, মরিচ পাওয়া যায় নাই। উহারা সুস্থ স্বাভাবিক উপায়েই ডিসচার্জ হয়। অতঃপর এই রসূন উপাখ্যানের পরিসমাপ্তি ঘটে।

ছ'ফুট যখন চাইর ফুট আট ইঞ্চি ছিলো......

ছ'ফুট যখন চাইর ফুট আট ইঞ্চি ছিলো......

ছ’ফুটের হাইট এখন ছ’ফুট দুই ইঞ্চি। এখন সে মেরিন অফিসার। মহাসাগরে পাল তুলিয়া ঘুরিয়া বেড়াইলেও; মনের বিশুদ্ধতা বজায় রাখিতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, দাড়িও ছাড়িয়াছে। আগের জিনিশ আর সে নাই; টিকিয়া আছে খালি তাহার রসবোধ। সময় করিতে পারিলে তাহারে নিয়া আরো কিছু লিখিব।

২,৫০৫ বার দেখা হয়েছে

৩৫ টি মন্তব্য : ““যে কিলাইয়া কাঁঠাল পাকাইয়াছিলো…………””

  1. রুবেল (৯৯-০৫)

    😀 কাহিনীখানা সেইদিন রাতের বেলা আরাফাতের থেকে বর্ননা সম্বলিত ভাষায় শুনিয়া ছিলাম।আজ লেখায় পড়িয়া বড়ই চমৎকৃত হইলাম।ইদানিং
    আমাদের ভ্যাম্পায়ার স্বরুপ দিন কাটিতেছে,তাই দিনের বেলা জম্পেস ঘুম হয়,আর রাতে জমিয়া উঠে ক্যাডেটীয় আড্ডা।
    জব্বর লেখা।চালাই যাও 🙂

    জবাব দিন
  2. ফারাবী (২০০০-২০০৬)

    :)) :)) লেখনী পাঠ করিয়া অতিশয় আনন্দ পাইলাম
    স্মৃতির পটে ভাসিয়া উঠিল :dreamy: ...একদা বিছানার তলে ১২খানা কাঁঠাল লইয়া হাউস মাস্টারের নিকট ধৃত হইয়াছিলাম :chup: :duel: ...অবশ্য তাহা দ্বাদশ শ্রেণীতে...

    জবাব দিন
  3. রাজীউর রহমান (১৯৯৯ - ২০০৫)

    আমারও একখান বন্ধু ছিল। সে কলেজে আমার থেকে ছোট অবস্থায় ছিল । কিলাস ৮এ সে আমাকে ছাড়িয়ে যায়। এবং কিলাস ১০ এ থাকতে সে কলেজের সবচেয়ে লম্বা হওয়ার গৌরব অর্জন করে। আমি ছিলাম ২য় :shy: কেউ একজন পরামর্শ দিয়েছিল ওর পাশে পাশে থাকলে আমাকে একটু কম লম্বা দেখা যাবে (দুজনেই ছিলাম তালপাতার সেপাই )। তার বর্তমান উচ্চতা ৬'২'' । একই ডিপার্টমেন্টে আমরা এখনো অধ্যয়নরত। একসাথে কলেজ পালাইতাম, বিড়ি খাইতাম ।

    আহারে................... কত সুন্দর ছিল সেই দিনগুলা....

    জবাব দিন
  4. আছিব (২০০০-২০০৬)

    রিজু রীঈঈঈএঈঈএ..................আরো কিছু লিখে ফালা বগাটারে নিয়া...............সবই জম্বে...নো ডাউট =)) :boss:
    ওই,এইবার দেশে আসলে ওইটারে আমরা আবার আরেক রূপে দেখমু,ও নিজেই বলছে :))

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।