“যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চল রে!”

বেগুনি না খেলে কি রোজা সহীহ হবে না, নাকি? আমার যতদূর মনে পড়ে গত রমজানে আমাদের বাসায় বেগুন কেনা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। কাচাবাজারে গিয়ে যখন দেখতাম কেউ কোন দোকানদারের সাথে তুমুল দরদাম করছে/করছেন। আমি খুব বিনয়ের সাথে বোঝাতাম, বেগুনের দাম বেশি, আপাতত কেনা বন্ধ রাখেন, দাম এমনিতেই পড়ে যাবে। আমার কথায় অনেকে আমাকে পাগল মনে করে তাকাত। আবার অনেকে মনে হয় কনভিন্সডও হতো। এটা ছিল একান্তই আমার এবং আমার পরিবারের নিরব সমাজিক আন্দোলন। এবারেও উলটাপালটা দাম হলে কিনব না, ডিসাইডেড।

যাহোক, আরেকটা কথা, আমি কখনোই রোজার মাসে বা তার আগ দিয়ে ছোলা-বুট-তেল-পেয়াজ-বেসন, এসব কিনে বাসায় স্টক করার পক্ষে না। যার যখন যতটুকু প্রয়োজন, তাই কিনুন, তাহলে অযথা দাম বাড়বে না। আর যদি কোন জিনিসের দাম মাত্রাতিরিক্ত বেশি হয়ে যায়, সম্ভব হলে, কেনা বন্ধ রাখুন। নিরব আন্দোলন। আমি চালিয়ে যাচ্ছি।

“যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চল রে!”

২,৪৩২ বার দেখা হয়েছে

১৮ টি মন্তব্য : ““যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চল রে!””

  1. মাহবুব (৭৮-৮৪)

    ছোলা পেয়াজু বেগুনি হালিম এসব ছাড়া রোজা!!! সর্বনাশ- কালচার বলে ও তো একটা কথা আছে। আর আমাদের বেপারী ভাইদেরই বা কি হবে?!?
    একলা চলোর ব্যাপার বলি- আমি অনেক বছর ধরেই আলাদা ঘটা করে এফতার করা বাদ দিয়েছি, আজান দিলে সোজা ভাত খেয়ে ফেলি। এটা অবশ্য কারোরই তেমন পছন্দ না। গত বছর থেকে কেন জানিনা ওইসব ভাজা ভুজি খেতে ইচ্ছে হচ্ছে।

    জবাব দিন
  2. আহমদ (৮৮-৯৪)

    ভাইয়া, ইফতারের মজা মিস হবে কেন। আমার লেখার মূল বিষয় কিন্তু বেগুন বা বেগুনি নিয়ে নয়। আমার লেখার মূল ফোকাসটা কিন্তু আসলে পরিমিতি বোধের উপর।


    চ্যারিটি বিগিনস এট হোম

    জবাব দিন
  3. লুৎফুল (৭৮-৮৪)

    আসলে মূল ক্ষিদেটা চোখের ।
    মানুষ খুব সহজে এটা বোঝেও না, মানেও না ।

    আর এই প্রতিবাদ !
    ভারতে যদি এমন অনায্যভাবে কোনো পণ্যের দাম বাড়লো তো দেশব্যাপী দুই কি পাঁচ দিনের জন্য কেনা বন্ধ ।
    পণ্য পঁচে যাক । তো যা কিছু হোক । তড়িঘড়ি দাম নেমে আসে ...
    এদেশের লোকের যেনো উলটো । দাম বাড়লো তো তার সেটা কেনার জন্য যেনো আইঢাই অবস্থা তৈরী হয় ।
    সাত দিনের বেগুন বন্ধ আন্দোলন হলে পরে দেখা যেতো দাম কতোটা বাড়ে তার পর !!!

    জবাব দিন
    • আহমদ (৮৮-৯৪)

      ভাইয়া, আমার প্রসংগ কিন্তু শুধু এই বেগুন নিয়ে না। যে কোন কিছুর প্রতি আম জনতার মাত্রারিক্ত ক্রয়ের প্রবনতাই কিন্তু অস্বাভাবিক বাজার দরের একটা অন্যতম কারন হয়ে দাড়িয়েছে। যেখানে অন্য অনেক দেশেই ফেস্টিভাল সেল চলে, সেখানে আমাদের দেশেই এর উলটা চিত্র সবসময়। বিক্রেতা বেশি দাম চাইলে তো আর আমাদের হাতে কিছুই করার নেই অসহায় হওয়া ছাড়া। বরং আমরা একটাই কাজ করতে পারি তা হলো বাড়তি কেনাকাটা কমিয়ে দেয়া। আর ক্রেজি শপিং এর প্রবনতাকে ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক পর্যায়েই নিয়ন্ত্রন করতে হবে। প্রতিটি সামাজিক আন্দোলনের শুরু হতে হবে আমাদের প্রত্যেকের নিজগৃহ থেকেই। হোক না সে এক নিরব আন্দোলন।


      চ্যারিটি বিগিনস এট হোম

      জবাব দিন
  4. মাহমুদ (১৯৯০-৯৬)

    আমেরিকায় বেগুন আগের মতোই, সস্তা। কিন্তু বেগুনী খাওয়ার হুজুগটাই নেই।
    দেশের ইফতারী মিস করি। :dreamy:


    There is no royal road to science, and only those who do not dread the fatiguing climb of its steep paths have a chance of gaining its luminous summits.- Karl Marx

    জবাব দিন
  5. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    চমৎকার প্রস্তাবনা, চমৎকার উদ্যোগ!
    পহেলা রমযানের আগের দিন গিন্নী যে লম্বা ফর্দটি হাতে ধরিয়ে দিয়েছিলেন, তার ১ নম্বরে ছিলো গুনবতী বেগুনের নাম। আমি ফর্দের ঐ ১ নম্বর আইটেমটি ছাড়া আর বাদবাকী সবকিছু কিনে এনেছিলাম, পরিমিত পরিমাণে। কোন কিছুই এক সপ্তাহের বেশী দিনের জন্য নয়। কেমন করে যেন আমার ভাবনাটা তোমার ভাবনার সাথে মিলে গেছে। ক্রয়মূল্য অত্যধিক হলে তা বর্জনীয়। কম পরিমাণে দ্রব্যাদি ক্রয় করলে বাজারের উপর চাপ কমে আসে।
    সময়োপযোগী লেখা। চলার পথে তুমি একেলা নও।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : আহমদ (৮৮-৯৪)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।