সমলৈঙ্গিক বিবাহ বিতর্ক নিয়ে বিডি নিউজ২৪-এ প্রকাশিত অপ-এড

এই লিখাটা লিখার তথ্য ও রশদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সিসিবি থেকে একটু বিচ্ছিন্ন হয়ে আছি।

আজ এটা প্রকাশ হলো। আবার সিসিবিতে নিয়মিত হয়ে যাবার ইচ্ছা রাখছি…

সমলৈঙ্গিক বিবাহ বিতর্ক নিয়ে কিছু কথা

এক ঐতিহাসিক রায়ে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত সেখানকার সকল স্টেটে সমলৈঙ্গিক বিবাহেচ্ছুদের বিয়ের অধিকার মেনে নিয়েছেন। ২০০৪ সালে ম্যাসাচুয়েটস স্টেটে প্রথম সমলৈঙ্গিক বিবাহ স্বীকৃতি পাবার পর থেকে চলতি বছর পর্যন্ত আরও সাঁইত্রিশটি স্টেট নিজেদের আইনের মাধ্যমে এর স্বীকৃতি দিয়েছে। এই রায়ের পর সকল স্টেটের জন্য সমলৈঙ্গিক বিবাহ মেনে নেওয়া বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়াল।

ঘটনাটি কীভাবে ঘটল অথবা আমাদের দেশে এর কোনো প্রভাব আছে কিনা, সে আলোচনা এখানে মূল উদ্দেশ্য নয়। উদ্দেশ্য হল, এই ঘটনার পর আমাদের দেশে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর পক্ষে-বিপক্ষে যেসব বাদানুবাদ দেখা যাচ্ছে তার বিশ্লেষণ। এসব বাদানুবাদে তথ্য নয়, আবেগের উপস্থিতি প্রবল। তাই এখানে নৈর্ব্যক্তিকভাবে সেগুলো উপস্থাপনের চেষ্টা করা হবে যেন পাঠক আবেগনির্ভর নয়, তথ্যনির্ভর হয়ে বিষয়টা নিয়ে ভাবতে পারেন।

এই রায়ের পর গোটা আমেরিকার সকল স্টেটের জন্যই সমলৈঙ্গিক বিবাহ মেনে নেওয়া বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়াল

এই রায়ের পর গোটা আমেরিকার সকল স্টেটের জন্যই সমলৈঙ্গিক বিবাহ মেনে নেওয়া বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়াল

আমেরিকায় সমলৈঙ্গিক বিবাহের স্বীকৃতি দীর্ঘ ও জটিল আইনি প্রক্রিয়ায়, ধাপে ধাপে অর্জিত হয়েছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানে দেশটি এখনও পৃথিবীর বৃহত্তম আধারই শুধু নয়, তাদের অর্জন ও চর্চার ক্ষেত্র এতটাই বিশাল যে, অন্য কারও পক্ষে তাদের সমকক্ষতা অর্জনের সম্ভাবনা সুদূর ভবিষ্যতেও দেখা যাচ্ছে না। এ জন্যই তাদের জ্ঞানভিত্তিক ও বিজ্ঞানসম্মত যে কোনো যুক্তিতর্ক অন্যদের জন্য মেনে নেওয়া এক ধরনের বাধ্যবাধকতা হয়ে যায়। আবার সেটি না পারলে এর বিপক্ষে দাঁড়ানোর জন্যও ঢাল-তলোয়ার নিয়ে হাজির হতে হয়।

যৌন-পরিচয় (সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশন) কী? এটা কি জন্মগত নাকি অর্জিত? দীর্ঘ বিতর্ক ও গবেষণার পর প্রায় নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, জৈবিকভাবে একজন নারী বা পুরুষ যা-ই হোন না কেন, তার সম বা বিপরীত যৌন-পরিচয়টি মূলত জন্মগত। ‘প্রায়’ বললাম এ জন্য যে, বিষয়টি পুরোপুরি এখনও নিশ্চিত নয়; যতটুকু তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে তা এই যুক্তি এতটাই সমর্থন করে যে, একে মিথ্যা প্রমাণ করতে হলে যে পরিমাণ বিপরীত তথ্য দরকার, সেটা পাওয়া প্রায় অসম্ভব।

প্রথমে পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা চলুক। পরে কেন তা অপ্রমাণ ‘প্রায়’ অসম্ভব, সেটা নিয়ে আলোকপাত করা যাবে।

এক সময় সমলৈঙ্গিক যৌন-পরিচয়টি অর্জিত বলেই মনে করতেন সবাই। তাই এটাও মনে করা হত যে, চিকিৎসার মাধ্যমে এর পরিবর্তন সম্ভব। ১৯৭৩ সালে বিভিন্ন গবেষণালব্ধ ফলাফল বিশ্লেষণ করে আমেরিকান সাইকোলজিকাল এসোসিয়েশন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, সমলৈঙ্গিক যৌন-পরিচয় অস্বাভাবিকতা নয়। এটি চিকিৎসার মাধ্যমে পরিবর্তনযোগ্য বৈশিষ্ট্যও নয়।

প্রশ্ন হল, এই সিদ্ধান্তে তারা উপনীত হলেন কীভাবে? এমপিরিকাল স্টাডি করেই এটা বুঝতে পারা গিয়েছিল যে, সমলৈঙ্গিক যৌন-পরিচয় এমন একটি বৈশিষ্ট্য যা ঐ পরিচয়ের ব্যক্তিরা পরিবেশগত প্রভাব ছাড়াই অর্জন করেছেন। সেটা কী রকম?

জৈবিকভাবে একজন নারী বা পুরুষ যা-ই হোন না কেন, তার সম বা বিপরীত যৌন-পরিচয়টি মূলত জন্মগত

জৈবিকভাবে একজন নারী বা পুরুষ যা-ই হোন না কেন, তার সম বা বিপরীত যৌন-পরিচয়টি মূলত জন্মগত

যৌন-পরিচয় সম্পর্কে সচেতনতা জাগার বয়সটিতে পৌঁছানোর পর প্রাকৃতিক নিয়মে যেখানে প্রত্যেক শিশুরই বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আগ্রহ জাগার কথা, দেখা গেল, কোনো এক অজ্ঞাত কারণে প্রতি হাজারে ১৭ থেকে ১৮ জনের সে রকম আগ্রহ জাগছে না। এরা কিন্তু অন্য সব দিক দিয়ে স্বাভাবিক। প্রথম অবস্থায় এরা নিজেরাও তা নিয়ে দুর্ভাবনায় পড়ে। এক সময় এদের বেশিরভাগই আবিস্কার করে যে, অন্যদের মতো বিপরীত লিঙ্গের কারও প্রতি আকর্ষণ বোধ না করলেও, সমলিঙ্গের সঙ্গে তারা স্বচ্ছন্দ।

তবে ঐ সমলৈঙ্গিকদের মধ্যে যারা তাদের মতো নয় (অর্থাৎ সম নয় বরং বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আগ্রহী), তাদের প্রতি ঐ স্বাচ্ছন্দ্য টিকে থাকলেও আকর্ষণ দ্রুতই কমে আসে। পরে তারা কেবলই তাদের মতো সমলিঙ্গে আকর্ষণ বোধকারীদের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করে। বিপরীত-লিঙ্গীয় এবং সমলিঙ্গীয়দের মধ্যে যারা বিপরীতকামী তারা আর তাদের আকর্ষণের উৎস থাকে না।

এরপর ‘আচরণ-বদলের’ পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়ার পরও দেখা গেল যে, সমলিঙ্গীয় সমআচরণে অভ্যস্তদের প্রতি তাদের আকর্ষণ কমার লক্ষণ দেখা গেল না। এ থেকে বিজ্ঞানীদের জন্য এই আচরণটি অর্জিত নয় বরং জন্মগত স্বাভাবিক ও অপরিবর্তনীয় বলে মেনে নেওয়া ছাড়া গত্যন্তর থাকল না।

এমপিরিকাল স্টাডির পর বিজ্ঞানীরা এই বিরল কিন্তু ভিন্ন আচরণের সুনির্দিষ্ট কারণ জানতে সায়েন্টিফিক স্টাডি শুরু করেন। সম্প্রতি এ সম্পর্কিত জিনেটিক গবেষণায় এ জাতীয় পুরুষ ব্যক্তিবর্গের মধ্যে একাধিক কমন জিনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এখন সুনির্দিষ্টভাবে জানার চেষ্টা চলছে সেই কমন জিনগুলিই ঐ ভিন্নতর পছন্দের কারণ কিনা।

এটাও ঠিক যে, জন্মগতভাবে সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ থাকা কাউকে কাউকে পরিবেশগত প্রভাবে বিপরীত-লিঙ্গীয় সঙ্গীর সঙ্গে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে দেখা যায়। সবাই যে এটা পারবেন, এ রকম নিশ্চয়তাও নেই। সেটা যারা পারেন তাদেরকেও প্রতিনিয়ত নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।

এ তো গেল যৌন-পরিচয়ে পরিবেশগত প্রভাবের স্বপক্ষে কিছু যুক্তি। বিপক্ষের যুক্তিও কম নয়। উন্নত বিশ্বের সমকামী দম্পতিদের বড় অংশ এখন বিভিন্নভাবে সন্তান নিয়ে প্রতিপালন করছেন। এদের আশি ভাগই আবার তাদের কোনো একজনের জৈবিক সন্তান। এই সন্তানেরা জন্মের পর থেকে সমকামী পরিবেশে বড় হবার পরও তাদের মধ্যে সমকামী হবার হার গতানুগতিক দম্পতির কাছে বেড়ে ওঠা সন্তানদের চেয়ে তেমন বেশি নয়।

এ থেকে সহজেই এই সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, জন্মগতভাবে সমকামী বৈশিষ্ট্য না থাকলে কারও পক্ষে কেবলমাত্র পরিবেশের কারণে সমকামী হয়ে ওঠা বা তা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে জন্মগতভাবে সমকামী বৈশিষ্ট্যের অধিকারী কেউ কেউ পরিবেশের কারণে প্রচলিত জীবনযাপন করতে সক্ষম হতে পারেন, আবার নাও হতে পারেন। কিন্তু তার সমলৈঙ্গিক আকর্ষণের যে ভিন্নতা তা যে দূর হবে, সেটা নয়।

কী ছিল মার্কিন সর্বোচ্চ আদালতের বিচার্য বিষয়? সে দেশের সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনী অনুযায়ী যে কোনো ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো রকমের বৈষম্যপূর্ণ আচরণ নিষিদ্ধ।

এখন সুনির্দিষ্টভাবে জানার চেষ্টা চলছে যে, সেই কমন জিনগুলিই ঐ ভিন্নতর পছন্দের কারণ কিনা

এখন সুনির্দিষ্টভাবে জানার চেষ্টা চলছে যে, সেই কমন জিনগুলিই ঐ ভিন্নতর পছন্দের কারণ কিনা

সমকামীরা ‘ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের স্বাভাবিক মানুষ’ হিসেবে বিজ্ঞানসম্মত স্বীকৃতি পাবার পরও পছন্দের সঙ্গীর সঙ্গে বিবাহের ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার বলে নিজেদের দাবি করে আদালতে এর প্রতিকার চান। তাদের বক্তব্য হল, জন্মগতভাবে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করা ব্যক্তিগণ যদি পছন্দের মানুষের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক নামক একটি দায়িত্বপূর্ণ ও দায়বদ্ধ আইনগত সম্পর্ক স্থাপন করার অধিকার রাখেন, তারা তা রাখতে পারবেন না কেন? রাষ্ট্র তাতে বাধা দিলে সেটি বৈষম্যপূর্ণ আচরণ বলে গণ্য হবে না কেন?

আবার আদালতে তাদের দাবির বিরোধিতাকারীদের যুক্তি ছিল, বিবাহের প্রচলিত সংজ্ঞানুযায়ী এটি বিপরীত লিঙ্গের দুজন মানুষের জন্য প্রযোজ্য ব্যবস্থা। সমলিঙ্গের দুজনকে এ ব্যবস্থার সুবিধা দেওয়া হাজার বছরের অনুশীলনের কারণে সম্ভব নয়। এ সময় আদালতে বিচার্য হয় বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানটি দম্পতিদের কী কী সুবিধা দিচ্ছে সেটি এবং তা থেকে সমকামীদের বিরত রাখা কতটা যৌক্তিক। দুপক্ষে যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে, তার প্রমাণ রায়ের ফলাফলই বলে দেয়।

নয় জন বিচারক নানা পক্ষের দীর্ঘ শুনানি শেষে ৫-৪ বিভক্ত রায়ে সমকামীদের জন্য বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানে অন্তর্ভুক্তির পক্ষে আদেশ দেন। আর এ জন্য প্রয়োজনে বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানের সংজ্ঞা পরিবর্তনের পক্ষেও মত দেন তাঁরা।

অনেকেই ভাবছেন যে, এই রায় সমকামের স্বীকৃতি। মোটেও তা নয়। কারণ সমলিঙ্গীয়দের প্রতি আকর্ষণ বোধকারীদের জন্য সমকাম অনেক আগে থেকেই আমেরিকাসহ অনেক দেশে স্বীকৃত বিষয়। এ রায় কেবল ঐ বৈশিষ্ট্যধারীদের বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্য সুবিধা গ্রহণের অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা থেকে রক্ষার উপায়। এর প্রতি সমর্থন তাই সমকাম সমর্থন নয়। বরং এটা অতিক্ষুদ্র একটা জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্য দূরীকরণের উদ্যোগে সহমর্মিতা প্রকাশ।

অনেকের ধারণা, এ রায়ের কারণে অনেকে সমকামিতায় উৎসাহিত হবেন। এটাও ঠিক নয়। একজন মানুষ সমলিঙ্গীয় নাকি বিপরীত-লিঙ্গীয়ের প্রতি আকর্ষণ বোধ করবেন, সেটা প্রকৃতি-নির্ধারিত। যে পুরুষ নারীদের দেখে আকর্ষণ বোধ করে, এই রায় শোনার পর তার পক্ষে হঠাৎ যাবতীয় পুরুষ-দর্শনে আকর্ষণ বোধ অসম্ভব। তবে হ্যাঁ, ঐ ভিন্ন বৈশিষ্ট্যধারীদের যারা সামাজিক ট্যাবুর কারণে জোর করে তা লুকিয়ে রেখেছেন তারা এখন প্রকাশ্য হবেন।

এই রায়ে সমর্থন জানানোর সঙ্গে সমকামকে উৎসাহিত করার সম্পর্ক নেই, বরং প্রকৃত যৌন-পরিচয় নির্বিশেষে প্রত্যেক মানুষই যেন সম্মানজনক ও নিরাপদ জীবনযাপন করতে পারে সেই আশ্বাস রয়েছে এখানে।

আগে সামাজিক ট্যাবুর কারণে প্রকৃত যৌন-পরিচয় লুকিয়ে রাখা ব্যক্তিদের জন্য দুটি উপায় খোলা থাকত। হয় তিনি ‘সৎ’ থাকতে গিয়ে সারাজীবন সঙ্গীবিহীন অমানবিক জীবন যাপন করতেন; নয়তো ‘অসৎ’ হয়ে নিজের যৌন-পরিচয় লুকিয়ে একজন স্ট্রেইটকে সঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়ে সারাজীবন তার সঙ্গে অভিনয় ও অবিচার করে যেতেন। এর কোনোটাই কি আসলে যা তার নিয়ন্ত্রণাধীন নয় তেমন একটা কারণে তার প্রতি সুবিচার বলে মনে হচ্ছে? এই রায়ে সমর্থন তাই সুবিচারের পক্ষে দাঁড়ানো– লুকোচুরি করে কাউকে বঞ্চিত করার বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ।

কেউ কেউ আবার রায়ের পক্ষাবলম্বনকারীদের প্রশ্ন করেছেন: আপনার সন্তান সমকামী হলে কী করবেন? উত্তরটা নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝে গেছেন। কারণ সমকামী আমার আপনার যারই সন্তান হোক না কেন, তার ঐ পরিচয় তার নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। সে ক্ষেত্রে বাস্তবতা মেনে নেওয়া ও তার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

সমকামী আমার আপনার, যারই সন্তান হোক না কেন, তার ঐ পরিচয় তার নিয়ন্ত্রণাধীন নয়

সমকামী আমার আপনার, যারই সন্তান হোক না কেন, তার ঐ পরিচয় তার নিয়ন্ত্রণাধীন নয়

একজন জানতে চাইলেন, সমকাম যদি জন্মগত হয়, তাহলে তো তা অটিজম, স্লো-সিনড্রোমের মতো কিছু একটা। এ সব ক্ষেত্রে যা করা হয় (অর্থাৎ চিকিৎসা, বিশেষ যত্ন ইত্যাদি), তাই করলেই তো হল। সমস্যা হল, সমকামীরা ওই সব ‘অসুস্থতায় আক্রান্তদের’ মতো নয় যে, তাদের চিকিৎসা দেওয়া লাগবে। তাছাড়া চিকিৎসায় যে কাজ হবে না, সে কথাও বলা হয়েছে আগে।

আবার এভাবে ভাবুন তো, অটিস্টিক বা স্লো-সিনড্রোমের একজন মানুষ যদি তার মতো কোনো সঙ্গীর সঙ্গে জীবন ভাগাভাগি করতে চান, আপনি কি তাকে বাধা দেবেন? নাকি উৎসাহিত করবেন? তাহলে একজন সমকামী যদি তার মতো কারও সঙ্গে জীবন ভাগাভাগি করতে চায়, তাকে বাধা দেবেন কোন যুক্তিতে?

একজন উদার ব্যক্তি বললেন, সমকামীদের নিয়ে ততক্ষণ তার মাথাব্যথা নেই যতক্ষণ না তারা তার সঙ্গীর দিকে হাত না বাড়ান। সমকামীরা কেবল আরেক সমকামীর দিকেই হাত বাড়াতে পারে, স্ট্রেইটের দিকে নয়। কারও বিপরীত-লিঙ্গীয় সঙ্গীর দিকে কোনো সমকামী যদি হাত বাড়ান, বুঝতে হবে যে, ঐ সঙ্গী এতদিন প্রকৃত যৌন-পরিচয় গোপন রেখে অভিনয় করে গেছেন। কিন্তু আরেক সমকামীর আকর্ষণের কাছে তার সেই অভিনয় টিকিয়ে রাখতে পারেননি। অভিনয় করে যাওয়া একজনের সঙ্গে মিথ্যা সম্পর্কের মধ্যে বাকি জীবন কাটানো কি ঠিক? নাকি তার মতো ও তার প্রকৃত পছন্দের মানুষের কাছে তাকে ছেড়ে দেওয়াই শ্রেয়তর?

অজ্ঞতা বা প্রিজুডিসের কারণে অনেকেই একটি জীবনযাত্রা নয়, বরং একটি বিকৃত যৌনতা হিসেবে সমকামিতাকে দেখেন। এই ভুলের কারণে সমকামিতাকে তারা শিশু-যৌনতা, পশু-যৌনতার মতো বিকৃত যৌনতার সঙ্গে তুলনা করে বসেন। সমকামীদের প্রতি অজ্ঞতা বা অন্য কোনো কারণে ঘৃণাভাব পোষণ করার বেশ কিতাবি একটা নাম আছে। একে বলে, ‘হোমোফোবিয়া’। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে যারা মার্কিন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধাচারণ করছেন, তাদের অনেকের মধ্যেই হোমোফোবিয়া যে কাজ করছে এটা সহজেই বোঝা যায়।

তাদের প্রতি অনুরোধ, এটা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করুন। তাতে আপনার জীবন সহজ হয়ে যাবে।

 

৩,৫৯৮ বার দেখা হয়েছে

২৮ টি মন্তব্য : “সমলৈঙ্গিক বিবাহ বিতর্ক নিয়ে বিডি নিউজ২৪-এ প্রকাশিত অপ-এড”

  1. রাব্বী (৯২-৯৮)

    পারভেজ ভাই, এটা খুবই সময়পোযোগী ভাল লেখা। আশপাশে অনেক হোমোফোবিক মানুষজন, বিশেষত বাঙ্গালি সমাজে। যারা মনে করেন আমাদের দেশে সমকাম পশ্চিমা দেশ থেকে আমদানি, তারা অজ্ঞতার স্বর্গে বাস করেন। প্রপঞ্চনাটি বিপরীতকামের মতোই স্বাভাবিক। আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টের এটা একটা মাইলফলক রায় নিঃসন্দেহে। যদিও এখনো ট্রান্সমিসোজিনি এবং হেটেরো-নরমিটিভিটির বিরুদ্ধে লড়াই শেষ হয়নি সেখানে।

    আমার আন্ডারগ্রাডের মনোগ্রাফ ছিল ঢাকা শহরের সমকামের বাজার সংস্কৃতির উপর ২০০৩/০৪ এর দিকে। কাজটা করার আগে এর ব্যাপকতা সম্পর্কে আমার কোন স্পষ্ট ধারনা ছিল না যেহেতু এটি একটি লুকানো প্রপঞ্চনা। এখনো মনে পড়ে, প্রোজেক্টটা করতে বেশ সামাজিক প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল আমাদের "সভ্য" সমাজ থেকে। আমাদের সামাজিক ট্যাবু এবং প্রিজুডিসের কারণে অনেক সমকামী মানুষ জীবনভর কপট জীবনযাপন করে যায়। তাইবলে জীবন থেকে থাকে না। এখন তো পহেলা বৈশাখে প্রাইড প্যারেড হয় ঢাকায়! (সম্পাদিত)


    আমার বন্ধুয়া বিহনে

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      চমৎকার বলেছো।
      লিংকটা ইসিএফ-এ শেয়ার করেছিলাম।
      মনেহলো না পড়েই বেশ কয়েকজন এমন উত্তেজিত হয়ে বিষোদ্গার করা শুরু করলো যে ব্যাপারটা "ঠাকুর ঘরে কে রে"-র কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিলো।
      যাহোক এডমিনরা মনেহয় "ভাতৃত্ব" অটুট রাখতে লিংকের পোস্টটা ডিলিট করে দিয়েছে।
      একজনের অভিযোগ ছিল, "লিখাটা নাকি সেক্স বিষয়ক, তাই ইসিএফ-এর জন্য উপযুক্ত না"।
      হাসতে হাসতে মরে গেলাম.........


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
      • রাব্বী (৯২-৯৮)

        ইসিএফ কি?

        হাহাহা ... সেক্স নিয়ে কি কথা বলা সাঁঝে! এটা নিয়ে শুধু ঢাকগুড়্গুড় চলে! কথা বলতে গেলেই তো অনেকের শুঁড়শুঁড়ী শুরু হয়ে যায়।

        আপনি আপনার মতো লিখে যান। আমি বিডিনিউজে পড়ে এখানে মন্তব্য করলাম।


        আমার বন্ধুয়া বিহনে

        জবাব দিন
  2. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    অভিজিত রায়ের লিখাটা সেদিন পড়লাম। কি চমৎকার বিস্তারিত বিবরণ। এখন পড়লাম আপনার লিখাটি। এই ধরনের লিখা প্রচুর দরকার যদিও লিখালিখি করে মানুষ বদলানোর প্রক্রিয়ার উপর আমার অনাস্থা রয়েছে। আমাদের সমাজটি বড় দাগে অজ্ঞ, অন্ধ, ও অবিবেচক। সেটা হবার পেছনেও কারণ রয়েছে। সমাজের শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান ধর্মকে আমরা প্রশ্নবিদ্ধ আমরা করি না। যারা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে তাদের অনেকের পরিণাম ভাল হয়নি। আবার এদের মাঝেও কিছু আছে উটকো। ধর্মকে হেউ প্রতিপন্ন করে স্বমেহনী স্বাদ নিয়ে থাকেঃ পবিত্র গ্রন্থের উপর চায়ের কাপ, কাবাঘরের সাতরঙা ছবি প্রকাশ এসব করে মাঝে দিয়ে সামাজিক প্রতিষ্ঠানটিকে সঠিক প্রশ্নটি করা হচ্ছে না। এদিকে দ্বিধায় থাকা মানুষ আরো শক্ত করে আঁকড়ে ধরছে ধর্মকে। এদিকে আমাদের কথিত সভ্য সমাজও তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছে। পশুপাখিকে বিবাহের অনুমতি ইত্যাদি নানান হাস্যকর আলাপ আলোচনা। চিন্তা করছিলাম গ্যালিলিওর কথা। প্রথম যখন বললো পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘোরে। হাহাহাহাহা। বেচারা।

    ইদানিং চিন্তা করি নতুন কিছুর সাথে খাপ খাইয়ে নেয়া, অবস্থা বিবেচনায় স্বাভাবিক বলে ধরে নেয়া, এই শিক্ষাগুলো কোথা থেকে আসে বলে আপনার মনে হয়? কেন জিজ্ঞাসা করছি তা বলি। আমি যে পরিবারে বড় হয়েছি সেখানে কিন্তু আমাকে এসব বলা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে কোন কিছু নিয়েই আমাকে বল প্রয়োগ করা হয়নি। আমি যখন মিশিগান টেকে গেলাম তখন শুক্রবার রাতে পানশালার বাহিরে দাঁড়িয়ে দুটো ছেলে চুমু খাচ্ছিলো। বেশ খানিকটা অস্বস্তি নিয়ে তাদের পার হয়ে চলে যাই। কিন্তু আমার মনে ঘৃণা বা বিবমিষার ভাব হয়নি। এরপরে ক্লাসের ছাত্র ছাত্রী পেলাম যাদের লিখা রচনায় উঠে এলো তাদের সমকামী জীবনের সংগ্রামের কথা, বঞ্চনার কথা। সাহস করে ওদের সাথে কথা বললাম (সাহস বললাম কারণ ব্যক্তিগত বিষয়ে ছাত্রের সাথে কথা বলাটা বিপদজনক)। এরপর নোটিসবোর্ড দেখে মিশিগান টেক-এর এলজিবিটি মাসিক মিটিং-এ হাজির হলাম। তাদের কথা, আলোচনা শুনলাম। আমেরিকার মত দেশেও (তখনো) তারা কি পরিমাণ বঞ্চনার শিকার সেটা সেদিন আরো কিছুটা হলেও জানা গেল। অথচ এই মানুষগুলোর মাথায় কি কেউ সীল দিয়ে রেখেছে যে এরা সমকামী? দেখে বোঝার কোন উপায় নেই। তবে এই ঘৃণার উৎস কোথায়? শুধু শুনেই? এই অসহনীয়তার শিকড় লুকিয়ে আছে ধর্মীয় বিশ্বাসে। সবার কাছে তার নিজ নিজ ধর্মের জয়জয়কার কিন্তু মানবধর্ম কারো কাছে নাই। 🙂


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
  3. লুৎফুল (৭৮-৮৪)

    এটা আসলে নতুন কোনো বিষয় নয়। শত শত বছরের পুরোনো । তফাত হলো এই যে ধর্মীয় এবং সামাজিক দৃষ্টিকোন থেকে এটাকে অতীতে কোনো দেশ কোনো সমাজ সেইভাবে স্বীকৃতি দেয় নি । পলিগ্যামি, বাইসেক্সুয়ালিটি, হেটেরোসেক্সুয়ালিটি, গে সেক্স বা লেসবিয়ান সেক্স, এমনকি এনিম্যাল সেক্স এসব শত শত বছর আগে থেকেই সমাজে বিদ্যমান ছিলো । তবে স্বীকৃত ও প্রাওকাশিত ছিলো না।
    যুগে যুগে সামাজিক প্রেক্ষিত, বিবেচনা, মূল্যবোধ এসব পাল্টাতেই থাকে। পৃথিবী কোনো বিষয়েই কোনো একটি জায়গায় থমকে থাকে নি। তবে কথা হলো যে এক দেশের বুলি এক দেশের গালির মতোন পৃথিবীর মানচিত্রে এক এক স্থানে এক এক রকম পারস্পেক্টিভের দর্পণে দৃষ্ট।
    আমার শুধু খটকা লাগে যে এই মানবাধিকারের সোল এজেন্ট আমেরিকায় সেম সেক্স বিয়ের অনুমোদন আদালতে উঠতে পারে। কিন্তু যখন শ্বতাঙ্গ ধর্ষক ও খুনীকে মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে সসন্মানে হ্যান্ডকাফ না পরিয়ে গ্রেফতার করা হয় আর সামান্য রুটি চুরির মতোন অপরাধে কেবল হাতে নয় সর্বাংগে শেকল পরিয়ে নেড়ি কুত্তার মতোন ডিসক্রিমিনেশনের হামানদিস্তায় পিষে গ্রেফতার করা হয় একজন শ্বতাঙ্গকে তখন সেই মানবাধিকার কোথায় হাইবারনেশনে যায়!
    গোটা পৃথিবীতে মানবাধিকারের ঝান্ডা সমুন্নত রাখার ব্রত যার, সে কি করে যখন কোনো রাষ্ট্রে আইন পাশ হয় পালিত কণ্যাকে বিয়ে করতে পারবে পিতা !
    তাহলে তো ইডিপাসের পন্দির করে পূজো হওয়া দরকার।
    আর আমি নিশ্চিত গোপন এনিমেল সেক্সও একদিন তার স্বাধীনতা অর্জন করবেই করবে। আমার ইচ্ছায় যদি আমি সম লিংগের সংগী বেছে নিতে পারি মানবাধিকারের কল্যাণে। তবে আমার পোষা কুকুর বা বিড়ালটিকেই যদি জীবন সংগী হিসেবে বেছে নেবার ইচ্ছে হয় । তাহলে আমার সেই ইচ্ছেকে অনুমোদন না দেয়া মানে নিশ্চয়ই আমার প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ বই অন্য কিছু নয় ।
    আজকে আমার এ কথাকে হয়তো বলবেন রসিকতা । আগামীতে যে এই আইন পাশ হবে না আর আমার সন্তান বা নাতি নাতনী তার কুকুর বা বিড়ালের সংগে বিয়ের পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হবে না সেকথা হলপ করে বলবার সাহস আপনি দেখাবেন কোন যুক্তিতে।
    বিষয় হলো এই যে আমাদের উপমহাদেশেই কয়েক শত বছর আগে থেকেই গাছের সঙ্গে, মাছের সংগে মেয়ে বিয়ে দেবার রীতি ছিলো । তা ছিলো কুসংস্কার। আর এখন সম লিংগের নিয়ে হলো উত্তরাধুনিকতা । আগামীতে আমার সন্তান যখন প্রিয় পোষা প্রাণীটির সংগে তার বিয়ের পর্ব সম্পন্ন করতে পারবে তখন তা হবে দ্বাবিংশ শতাব্দীর মানানসই আধুনিকতা।
    ইয়ু ক্যান নেভার ট্রাভেল দেয়ার টাইম ... সো দে উইল অনলি নো হোয়েন একজাক্টলি দ্য নেক্সট নিউ ল উইল কাম ইন টু এফেক্ট ।
    নান ক্যান হোল্ড ব্যাক দ্য কোর্স অব দ্যা টাইম ট্রাভেলিং এলং দ্য পাথ অব সিভিলাইজেশন।
    উই ক্যান অনলি থিংক এন্ড গেস ।

    - এমন তথ্য সমৃদ্ধ লেখাটির জন্য ধন্যবাদ ।

    জবাব দিন
  4. কাজী সাদিক (৮৪-৯০)

    ধন্যবাদ পারভেজ ভাই। বাংলায় এই বিষয়ে তথ্য নির্ভর লেখালেখি বেশী চোখে পড়ে না। গত কিছুদিন ফেসবুকে অনেক স্ট্যাটাস, কমেন্ট, ঝগড়া-ঝাটি দেখছিলাম। কিন্তু তাতে তথ্যের চেয়ে আবেগের প্রাধান্যই বেশী।

    রেফারেন্সগুলো দিয়ে দিলে ভাল হত না?

    আকাশ নামে আমাদের একজন প্রতিভাবান ফটোগ্রাফার আছেন ঢাকায়। বাংলাদেশের গে'দের নিয়ে একটা সাহসী ফটোস্টোরি করেছিলেন কয়েক বছর আগে। লিঙ্কটা দিলাম এখানে। (ওর অন্য ফিচারগুলোও অসাধারন।)

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      রেফারেন্সগুলো ইচ্ছে করে এভয়েড করেছি। ওগুলো দেখলে কেমন যেন গবেশনাপত্রের মত লাগে।
      পুরো পরিবেশটা ভারী করে দেয়।
      তবে আসল যুক্তি অন্যখানে।
      যারা পড়ছেন ও আমার মতামতটা নিচ্ছেন, তাদের জন্য রেফারেন্সের কোন প্রয়োজন নাই।
      যদি থাকেও, লিখাটা যেহেতু ল্যাপটপে পড়ছেন "gay gene" কী ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ দিলেই সেই সব রেফারেন্সই এসে যাবে, যেগুলো থেকে আমি তথ্য নিয়েছি।
      আর যারা প্রিজুডিস বা হোমোফোবিক হবার কারনে, আমার কথার সিলেক্টিভ হেয়ারিং দিচ্ছেন, এবং তা মানছেন না তাদের জন্য রেফারেন্স আরও অপ্রয়োজনিয়।
      তারা ঐ রেফারেন্সের আন-অথেন্টিক ফালতু সব ক্রিটিসিজম বের করে অযথা তর্কে লিপ্ত হবে।
      যদি তা করতেই চায়, নিজেরা খুজে খুজেই করুক না তা!
      আমি ওদের কাজ সহজ করতে যাবো ক্যানো!!!
      😛 😛 😛 (সম্পাদিত)


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
  5. নাজমুল (০২-০৮)

    ইউকে তে আসার পর আমার বেশ কিছু কলিগ ছিলেন যারা সমকামী। আমি তাদের নিয়ে গোপনে হাসাহাসি করতাম অন্যদের সাথে।আমার কাছে মনে হতো এরা হয় মানুষিক ভাবে অসুস্থ কিংবা খুব বেশি মর্ডাণ সোসাইটির প্রভাবে এমন হয়েছে। পরে ২০১২/২০১৩ এর দিকে আমি বাংলাদেশের LGBT কমিউনিটি নিয়ে বানানো একটা ডকু দেখে ব্যাপ্রটা অন্যভাবে ভাবতে শুরু করি। গে কলিগদেরকে বিভিন্ন ধরণের প্রশ্ন করি। কিছু কিছু প্রশ্নে তারা খুব অবাক হইতো। পরে স্টিফেন ফ্রাই এর "Out There" দেখলাম অভিজিৎ রয় এর লেখা পড়লাম মুক্ত-মনায়। পরে আমিই যাদের নিয়ে হাসাহাসি করতাম তাদের করতাম তাদের জন্য খারাপ লাগা শুরু হয়।বিদেশের এরা তাও ঝামেলায় থাকেনা খুব একটা, কিন্তু বাংলাদেশের এদের কথা ভাবলে খারাপ লাগে। কত কষ্টে আছে তারা।
    বাংলা ডকুটার লিংকঃ
    https://www.youtube.com/watch?v=x-TUnilAE9A

    ফেসবুকে ওদের পেইজঃ
    https://www.facebook.com/BoBangladesh.LGBT?fref=ts

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      মানুষে মানুষে "ল'জ অব এট্রাকশন"-এ যে ভিন্নতা থাকতে পারে, এইটা বুঝতে না চাওয়াটাই হলো LGBT-রাইট না বোঝার প্রধান অন্তরায়।
      ওরা প্রথম যেদিন আবিষ্কার করে, আসেপাশের আর দশজনের মত বিপরিত লিঙ্গের কারো প্রতি ওদের কোন রকম আকর্ষন জাগছে না - ওরা হয়ত খুব অসহায় বোধ করে।
      হয়তো ওরা আর দশজনের মত একটু চেষ্টাও করে, কিছু আকর্ষন জাগে কিনা, তা দেখতে।
      কিন্তু একটা সময় ওরা যখন বুঝতে পারে যে এই আকর্ষন জাগানোটা ওদের সাধ্যাতিত - কারন ওরা সম্পুর্ন ভিন্ন মনদৈহিক গঠন নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে, কেমন লাগে তাদের?
      কেউ কি একবার ভেবে দেখবেন?
      আমারতো ধারনা, এরপরেই ওরা আশ্রয় খোজে সমশ্রেনীর কাছে।
      আর কি অবাক কান্ড, অসহায় একজন মানুষের এই আশ্রয় পাওয়ার শেষ চেষ্টাটাকে আমরা কি কি নোংরা জিনিষের সাথেই না তুলনা করছি...
      এই যে সমকামিদের সম্পর্কটা যে মূলতঃ পারস্পরিক সাপোর্টেরই বেশী, কেন যেন আমরা স্ট্রেইটরা এটা বুঝতে পারি না।

      আর বুঝতে পারি না বলেই একে এনিম্যাল সেক্স, শিশু-নির্যাতন এমন কি নেক্রোফিলিয়ার সাথেও তুলনা করে ফেলছি কেউ কেউ।
      চুরি, ডাকাতি, খুন, রাহাজানির সাথে তুলনা তো সেখানে অতি সাধারন ব্যাপার।

      একটা কথা কি ভেবে দেখেছি কখনো?
      ম্যাথেমেটিকালি ওদের চেয়ে পঞ্চাশগুন বেশী সঙ্গির অপশন থাকা স্বত্তেও, আমরা স্ট্রেইটরা আসলে কতটা সফল ভাবে উপযুক্ত সঙ্গি খুজে নিতে পেরেছি?
      অথচ ওরা এই সীমাহীন লিমিটেশন ডিঙ্গিয়ে যখন একজন সঙ্গি পেলো, আমরা পঞ্চাশ জন মিলে কথা, টিটকারি থেকে শুরু করে চাপাতি হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ছি ওদের উপরে।
      এরপরেও মানবতার জন্য, মানবাধিকারের জন্য, শিষ্টাচারের জন্য যদি উচ্যবাচ্য করি, সেগুলোকে মায়াকান্না ছাড়া আর কি বলা যাবে??? (সম্পাদিত)


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
  6. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    চমৎকার একটি ডকুমেন্টারি। নাজমুলের সৌজন্যে দেখা হলো। লিঙ্ক।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  7. সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

    🙂 🙂 🙂 🙂

    গত এক সপ্তাহ ধরে এলজিবিটি বিষয়ক আলোচনার মাঝে আমি আলু এবং চনা ছাড়া ব্যতিক্রম ভাবনা কমই দেখেছি। এটি যে আবেগ দিয়ে বিচার্য কিছু নয় তা বুঝিয়ে বলবে কে। অপরের ইমোশন নিয়ে নিজেদের বস্তাপচা আবেগের ডিব্বাটি উপুরঝুপুর করে কী খেলাধুলোটাই না করলো লোকজন অনলাইনে।

    আমার প্রিয়তম বন্ধুটি লেসবিয়ান, যিনি পনের বছর আগে গোপনে বিয়ে করেছেন উত্তরের একটি রাজ্যে কারণ আটলান্টাতে এই বিয়ে বৈধ ছিলনা। আমার ভাল লাগা অথবা মন্দ লাগাতে ওদের কিছু এসে যায়না জানি তবুও কি করে যেন জড়িয়ে গেলাম লরা আর ওর বৌ জেইমির সাথে। ওদের নিজের পরিবারের অধিকাংশ মানুষই তাদের সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করেছেন। তারপরও কি কিছু আটকে ছিল? লরা বলে, ওর মেইল ব্রেইন কেমন করে যে ফিমেল একটা বডিতে ট্র্যাপড হয়ে গেল সেটি ঈশ্বর ছাড়া কে জানে, বল! আমাদের ক্লাসের এক চতুর্থাংশ ছাত্র লরার সংগ পরিহার করেছিল। গেল সপ্তাহে লরা ডিক্যাব কাউন্টিতে আবারো বিয়ে করে বাড়ির সামনে বড় একটা ব্যানারে লিখেছে, একদিন ঈশ্বরও বলবে তার কারিগরীতে ভুল ছিল!

    বনের মোষ তাড়ানো মানুষ আমরা তাই অপরের হাঁড়িতে কি ফুটছে জানতে আমাদের আগ্রহের সীমা পরিসীমা নাই। সেটি নিজের পছন্দের খিচুড়ি হলে ভাল, কড়কড়ে ভাজা ইলিশের সাথে জমবে ভারী। তবে সেটি যদি ওল্ড ফ্যাশনড গ্রিটস বা ক্রিসপি বেকন হয় তবেই জাত গেল জাত গেল রব উঠবে। পথের মোড়ে ল্যাম্প পোষ্টে তখন প্রিয় বন্ধুটিকে ঝুলিয়ে ফেলতে আমরা এতোটুকু দেরীও করবো না।

    অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া, তথ্যবহুল এই লেখাটির জন্য। :hatsoff: :hatsoff:

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      কি সুন্দর করে যে বলো না তুমি, চোখ ভিজে যায়।
      আজই আমার এক আমেরিকান বন্ধু বলছিল, তারা নাকি LGBD-দের সমান চোখে দেখে।
      তাই যদি হতো, তাহলে লরাকে কি এত ঝামেলাগুলা পোহাতে হয়।
      আমি তো পরিষ্কার বুঝি, বাইরে থেকে যত উদারই দেখাক, এখনও প্রচুর মার্কিনি ভিতরে ভিতরে ভীষণ গোঁড়া।

      আবার অবাক হয়ে লক্ষ করলাম, উদারদের মধ্যে কেউ কেউ কেবলই LGBD-দের বিয়েটিকে "ম্যারেজ" নামকরনের কারনেই শুধু মানতে পারছেন না থেকে শুরু করে চটেও আছেন।
      তারা শেক্সপিয়ারের "নামে কি বা আসে যায়, গোলাপকে যে নামেই ডাকো, সে সৌরভ বিলোবেই"-টা ভুলে যাচ্ছেন।

      এ ব্যাপারে আমি এক জায়গায় লিখেছিলাম, "গে-ম্যারেজকে ম্যারেজ বলা যাবে কিনা, রায় দেখে আমার মনে হয়েছে - সেটা নিয়ে সুপ্রিমকোর্টও কনফিউশনে পরেছিল।
      তাদের কাছে দুটো উপায় ছিল, ১) নতুন কোন নাম দেয়া (যেমন ইউনিয়ন) ২) ম্যারেজের এমন কোন নতুন সংজ্ঞায়ন, যা গে-ম্যারেজকেও অন্তর্ভুক্ত করে।
      যেকোন কারনেই হোক সুপ্রিমকোর্ট দ্বিতীয় অপশনটা বেছে নিয়েছে।
      আমি নিজে এই অপশনটাকে এইজন্য ভাল মনে করেছি যে, এতে করে নতুন ভাবে আরেকটা ডিসক্রিমিনেশনের সুযোগ আটকানো গেছে।
      ধরা যাক, কোন হোটেল যদি বলে, "হানিমুন প্যাকেজ ইজ ফর ম্যারিড কাপল..." তথন তো গে-কাপলরা আর সেটা চাইতে পারতো না।
      তাদের বলা হতো, তোমরা তো ইউনাইটেড কাপল, ম্যারিড কাপল না।
      পুরো এক্সাসাইজটার উদ্দেশ্যই যেহেতু LGBT-দের ডিসক্রিমিনেশন থেকে উদ্ধার করা, সেখানে নতুন কোন ডিসক্রিমিনেশনের সুযোগ না রাখাটা শ্রেয়তরই হয়েছে বলে মনে করছি....."


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
      • সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

        জগতজুড়ে মানুষ নিত্যদিন হরেক রকমের অন্যায়, অবিচার আর নিযর্াতন করে ধর্ম, বর্ণ অথবা কোন আইডিওলজিকে কেন্দ্র করে। মোদ্দা কথা হলো, যে কোন একটি ঘটনার পর সভ্য মানুষ কিভাবে সেটির প্রতিক্রিয়া দেখাবে, এবং তার প্রেক্ষিতে কি করে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে সেটিই দ্রস্টব্য। লেজটিকে লুকনো সহজ কথা নয় মোটে। আমেরিকা একটি খৃস্টান রক্ষণশীলদের দেশ। এই দেশে এই বিজয় তাই সারা পৃথিবীর সকল মানুষের সম অধিকারের মানবিক বিজয়ের সমতুল্য।

        আরো একটি কথা না বললেই নয়, আইনগত ভাবে ম্যারিড না হলে সম্পত্তির ভাগীদারও বদলে যায় বৈকি।

        জবাব দিন
  8. সাইদুল (৭৬-৮২)

    আমি গবেষক বা সমাজ সংষ্কারক নই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাত্র ১.৭ পার্সেন্ট অথবা তাঁর চেয়ে কম মানুষের চাওয়া পাওয়া নিয়ে সে দেশের আদালত কী মতামত দিয়েছে তা নিয়ে এদেশে উল্লসিত বা দুঃখিত হবার খুব বেশি কিছু আছে বলে আমি মনে করিনা।
    আমি সহজ ভাবে বুঝি, সমাজের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে সাহসের প্রয়োজন হয়। যারা এই রায় চাইছিলেন এবং যারা রায় দিয়েছেন তদের সাহসকে আমি ঈর্ষা করি। তবে এক অর্থে এই চাওয়াটাই ইন্ডিভিজুয়ালিজমের চুড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ, স্বার্থপরতার পরাকাষ্ঠা (এই শব্দটি এখানে যায় কীনা আমরা জানিনা)।এই রায়ের ফলে মনে হচ্ছে পরার্থে বাঁচার দিন ফুরিয়েছে। এ যেন মাত্র ১.৭ পার্সেন্ট লোকের বাকী ৯৮.৩ পার্সেন্ট মানুষের মতের প্রতি বুড়ো আঙ্গুল দেখানো। এটি ইসরাইল রাস্ট্রের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর জন্য পাশ্চাত্য দর্শনের সাথে তুল্য। (চারিদিকে শত্রু পরিবেষ্টিত
    ক্ষুদ্র, অসহায় ইসরাইল রাষ্ট্রকে সমর্থণ না করা হবে মানবতার বিপক্ষে থাকা)।
    তবে বিবাহের এই রায়কে যারা যৌন সম্পর্কের মধ্যে সীমিত রাখতে চাচ্ছেন, তারা ভুলে যাচ্ছেন বিবাহ বিষয়টি অধিকার সম্পর্কিত, উত্তরাধিকার সম্পর্কিত তার মানে এর আর্থ সামাজিক ব্যঞ্জনাটি উপেক্ষা করার মত নয়। যে দেশে বিড়াল কুকুরের ( এই কথায় হয়তো আবার পশু প্রেমিরা নাখোশ হচ্ছেন, - আমার ডগিকে কুত্তা বললেন ক্যান?) কুকুরের নামেও সম্পত্তি লিখে দেওয়া হয় সেখানে অবশ্য উত্তরাধিকারের ব্যাপারটির গুরুত্ব কত খানি আমি জানিনা।
    মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতায় আমার আস্থা আছে, তবে প্রত্যেকে মোরা পরের তরে কথাটায় আমার বিশ্বাস গভীরতর। পরের তরে শব্দ বন্ধটি খুব সহজ নয়, এটির সাথে আত্মত্যাগের সম্পর্ক আছে। আত্মপ্রবঞ্চনার ব্যপার আছে। মহত্ত্বর স্বার্থে আত্মত্যাগের সবচেয়ে সহজ উদাহরণ দেশের জন্যে জীবন দেয়া। সাড়ে আটানব্বই পার্সেন্ট মানুষের চাওয়াটা ১.৭ পার্সেন্ট মানুষের আকাংখার চেয়ে ৯৬ গুণ বড়। আমাদের মাথায় রাখতে হবে সমলৈঙ্গীক বিবাহ অনুমোদনের পক্ষের রায়ে ৯৮ পার্সেন্ট মানুষের মতামত উপেক্ষিত হয়েছে।
    এই রায়কে যারা ইতিবাচক দিক উল্লেখ করতে গিয়ে যারা সমলিংগীয় দম্পতিদের বাচ্চা দত্তকে নেবার কথা উল্লেখ করেছেন, তাঁরা শিশুর বেড়ে অঠার সময় তাঁর মনোজাগতিক বিকাশের কথা কতটুকু ভাবছেন জানিনা। আমার কাছে ‘সম্পর্ক’ বিষয়টি অতি গুরুত্ব পূর্ণ। সমলৈংগিক বিয়ের ফলে যে সব সম্পর্ক দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে নানা-নানী, দাদা-দাদী, ফুফু – খালা সে গুলোর কি হবে বুঝতে না পেরে ঘাবড়ে যাচ্ছি।


    যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      বেশ কিছু তথ্যগত ভুল থাকায় আপনার এই রেসপন্সটা কেমন যেন হয়ে গেল, সাইদুল ভাই...

      ১) আমেরিকায় ওরা ২.৭ (গ্লোবাল পার্সেন্টেজের সামান্য বেশী। গ্লোবালি ১.৭% আর এটা হতেও পারে। ১,৭ যেহেতু গড়) হলেও সংখ্যায় কিন্তু ৯০ লাখ। ক্ষুদ্র বলে মোটেই উপেক্ষা করার মত সংখ্যা না।
      ২) গ্যালপ পোল বলছে, এই মুহুর্তে আমেরিকার ৬০% জনগন LGBT রাইটের সমর্থক। বাকি ৪০%-এর একটা বড় অংশ হয় আনডিসাইডেড নয়তো তাদের সমর্থন বা অসমর্থনে তেমন কোন কারনে নাই। তাহলে প্রকৃত বিরোধিতাকারীর সংখ্যা কিন্তু আসলেই একটা ভয়াবহ মাইনরিটি। আর এইজন্য, তাই ৯৭-৯৮% লোকের মতামত উপেক্ষিত, এটা বলা যাচ্ছে না।
      ৩) এক মিলিয়নের মত LGBT পরিবারে শিশু (দত্তক, সারোগেট বা আর্টিফিশিয়াল ইনসেমিনেশনের মাধ্যমে জন্ম নেয়া) প্রতিপালিত হয় যা তাদের পরিবার সংখ্যার ২২%। আবার আমেরিকায় প্রতি চারজন শিশুর মধ্যে একজন সিঙ্গেল প্যারেন্টের কাছে প্রতিপালিত হয়। এটার অর্থ হলো, প্রতি মিলিয়ন শিশুর আড়াই লক্ষই সেখানে নন স্ট্যান্ডার্ড পরিবারে (মা আছে বাবা নাই, বাবা আছে মা নাই, দুজনের কেউই নাই বলে গ্র্যান্ড প্যারেন্ট শিশুর দেখভাল করেন) বড় হয় সেখানে প্রতি মিলিয়ন শিশুর মাত্র ৩০০০ জন কি আসলেই কোন বড় সমস্যা?
      ৪) ঐ ৬০% জন-সমর্থন কিন্তু এক দিনে আসে নাই। ধীরে ধীরে তারা LGBT রাইটের কথা বুঝেছেন। তাই এটা হুজুগে হয়েছে ভাবার কারন নাই। তা ছাড়া এই রায়ের আগে থেকেই যে ৩৭ টি স্টেটে গে-ম্যারেজের অনুমতি ছিল, সেখানকার জনসংখ্যা কিন্তু আমেরিকার মোট জনসংখ্যার ৭২%। এই বাহাত্তর শতাংশ মানুষের কাছে এটা আইনত সিদ্ধ একটা ব্যাপার কিন্তু আগে থেকেই ছিল। এই রায় বাকি যাঁদের জন্য এটা মানার বাধ্যবাধকতা তৈরী করেছে, তারা কিন্ত আসলে মাইনরিটিই।


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
      • সাইদুল (৭৬-৮২)

        ধন্যবাদ পারভেজ।
        হ্যা এটি যে ক্ষুদ্র একটি জনসমষ্টির চাওয়া পাওয়াকে সম্মান দেখানোর একটা রায় বুঝতে পারছি। ( আমি ছোট তা বলে ফ্যালনা নই)।
        ৬০ মার্কিন জনগণ তাদের এই দাবীর প্রতি সম্মান জানিয়েছে হয়তো তাদের উদার মনোভাবের কারনে।


        যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান

        জবাব দিন
  9. গুলশান (১৯৯৯-২০০৫)

    ক্যাডেট কলেজের প্রেক্ষিতে ব্যাপারটা নিয়ে মনোভাব কেমন হওয়া উচিত বলে মনে করেন? কারণ ক্যাডেট কলেজে এধরণের অনেক ঘটনা ঘটে। আরেকটা কথা,

    তবে ঐ সমলৈঙ্গিকদের মধ্যে যারা তাদের মতো নয় (অর্থাৎ সম নয় বরং বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আগ্রহী), তাদের প্রতি ঐ স্বাচ্ছন্দ্য টিকে থাকলেও আকর্ষণ দ্রুতই কমে আসে। পরে তারা কেবলই তাদের মতো সমলিঙ্গে আকর্ষণ বোধকারীদের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করে। বিপরীত-লিঙ্গীয় এবং সমলিঙ্গীয়দের মধ্যে যারা বিপরীতকামী তারা আর তাদের আকর্ষণের উৎস থাকে না।

    এটা এই প্রথম দেখলাম। এই অংশটুকুর ব্যাপারে আরও জানতে পারলে ভাল হত।

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      ক্যাডেট কলেজে ঘটা ঘটনাগুলোর বেশিরভাগই এডলোসেন্সকালিন নিম্ফোম্যানিয়ার কারনে সংঘটিত বলেই আমার মনে হয়েছে।
      আমি ব্যক্তিগতভাবে ঐরকম আচারে জড়িত যতজনকে চিনতাম, তাদের পরবর্তি কালের যৌন আচরনের খোঁজ খবর যতটা পেয়েছি, তা তাদেরকে হেটেরেসেক্সুয়ালিটিই সমর্থন করে।
      কেউ যদি সমপ্রেমি হয়েও থাকে, অবস্থানের কারনে সেটা আর প্রকাশ্য হয় নাই।
      প্রবাসিদের ক্ষেত্রে দু-একটা কেইস শুনেছি, যারা নাকি সেরকম প্র্যাকটিস ওখানে করছেন।
      তবে তা খুব নিশ্চিত না।

      পরের উদ্ধৃত অংশটা সমপ্রেমিদের সাক্ষাৎকার থেকে অনুধাবন করা।
      বেশ কিছু সাক্ষাৎকার শুনে আমার এই উপলব্ধিটা হয়েছে...


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : গুলশান (১৯৯৯-২০০৫)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।