উনিশ’শ একাত্তর: এক শিশুর স্মৃতিচারনা

পচিশে মার্চের স্মৃতিচারনা করতে গিয়ে পাঠকের আগ্রহ দেখলাম শিশুর স্মৃতিচারনা শোনার।
এখানে সেরকম দুটো স্মৃতিচারনা সন্নিবেশিত করে দিচ্ছি।
এগুলো একসময় ফেবু-স্ট্যাটাস আকারে দিয়েছিলাম। ব্লগাকারে দিচ্ছি কারন তা অনেক বেশী সার্চ ও পাঠ-বান্ধব।

প্রথমটি – যা ২৩শে মে ২০১৩ তে লিখা (কিছুটা এডিট করে দিচ্ছি):
==============================
আজ সেই ২৩শে মে। একাত্তরের এইদিনে আমাদের গ্রামে একটি গনহত্যা হয়েছিল। আমরা তখন গ্রামের বাড়িতেই ছিলাম। ঘটনাস্থল আমাদের বাড়ি থেকে দেড়-দুই কিলোমিটার দূরে। ঘটনাটা এইরকমঃ
মধুমতি নদীর দক্ষিনপাড়ে আমাদের গ্রাম ইতনা। সেই সময় বর্ধিষ্ণু এইগ্রামে দুটি ঘাট ছিলো দেড়-দুই কিলোমিটার দূরত্বে। দুইঘাটের মাঝামাঝি অপর পাড়ে ছিল পাকিস্তান আর্মির ক্যাম্প। দিনদুই আগে ঐক্যাম্পের রাজাকারদের সহায়তায় স্থানীয় সন্দেহভাজন তরুন-যুবকদের ধরে আনা হয় মুক্তিযোদ্ধা অভিযোগে। একপর্যায়ে তাঁদের নদীর পাড়ে সারি করে দাড় করিয়ে গুলি করা হয়।
সবাই মারা গেছে ভেবে লাশগুলো নদিতে ফেলে দেয়ার সময় জীবিত একজন নদীতে ঝাপ দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে সে মুক্তিযোদ্ধাদের খবর দেয়। মুক্তিযোদ্ধারা রাতে ওখানে আসে এবং দুর থেকে ক্যাম্প লক্ষ করে গোলাগুলি করে। এই ঘটনায় পাকিস্তানদের কিছু ক্ষয়ক্ষতি হোক বা না হোক, তারা বেশ হতদ্যম হয়ে পরে।
এই অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পরদিন অর্থাৎ ২২শে মে তারা স্থানীয়দের উপর ঝাপিয়ে পরে বেঁচে পালিয়ে যাওয়া তরুনের পরিচয় জানতে। স্থানীয় লোকজন তো নির্দিষ্ট করে তখনো জানে না ওটা কে? আবার অত্যাচারও সহ্য করতে পারছে না। একপর্যায়ে অত্যাচার থেকে বাচতে কেউ একজন বুদ্ধি করে বলে যে ঐ ছেলেটা ওঁদের কেউ না নদীর ওপার থেকে এসেছিল। অর্থাৎ আমাদের গ্রাম থেকে।
এর মধ্যে সন্ধ্যা নেমে যাওয়ায় ক্যাম্পের লোকজন প্রতিশোধ নিতে পরদিন যাবে বলে ঠিক করে।
পরদিন সকালে যে সময়ে তারা নদী পার হয়, তখন ভাটা চলছিল। ভাটার সময় পূর্বদিকের ঘাটে পৌছুনো সহজ বলে তার ঐঘাটে গিয়ে ওঠে। বোট থেকে নেমেই এলোপাথারি গোলাগুলি শুরু করে। এই আক্রমনে নারী শিশুসহ শতাধিক মানুষ মারা যায়। একটা পাড়ায় আগুন ধরিয়ে দেয়। বয়স্ক ও বৃদ্ধ দের জীবন্ত ঐ আগুনে ছুড়ে পুড়িয়ে মারা হয়।
যেই সময়ে ওরা নদী পার হয়েছিল, তখন যদি জোয়ার থাকতো তা হলে কি হতে পারতো?
তাহলে, পূর্ব নয়, পশ্চিমের ঘাটটি, যা আমাদের বাড়ি থেকে এক-দেড়শো গজ দূরে, সেখানে ওরা এসে উঠত। যেভাবে ওরা এগিয়ে ছিলো, আমাদের বাড়িতে এসে পৌছুতে দশ থেকে পনের মিনিট লাগতো। আমরা ছোটরা যেহেতু তখনো ঘুমুচ্ছিলাম, গোলাগুলির মধ্যে পড়ে হতবিহ্বল হয়ে নিশ্চিত মৃত্যু ছাড়া অন্য কিছু হত বলে মনে হয় না।
আজ সেই ২৩শে মে। বেয়াল্লিশ বছর আগে যেইদিন জোয়ার-ভাটার হেরফেরের করনে আমি, আমরা বেঁচে আছি। আর একি কারনে আমাদের গ্রামের আরেক অংশের অনেকগুল নিস্পাপ মানুষ জীবন হারিয়ে ছিলেন। তাঁরা ঐদিন জীবন দিয়েছিলেন বলেই আজ আমরা বেঁচে আছি।
প্রতি বছর ২৩শে মে আসে আর আমি ভাবতে বসি, এটা আসলে কার মৃত্যুদিন? ঐসব মানুষের নাকি আমার, আমাদের? জীবন আর মৃত্যুর মধ্যে দুরত্ব আসলেই কত ক্ষুদ্র হতে পারে। একটা জোয়ার কিংবা ভাটাও নির্ধারন করতে পারে কে বেঁচে থাকবে আর কে মারা যাবে। অদ্ভুত সব বাস্তবতা, গল্পও হার মেনে যায় কখনো কখনো…
===========================================

এইবার দ্বিতীয়টি। ২৭শে মে ২০১৩-তে লিখা। এইটা আমি দ্বিতীয়বার পড়তে পারি না। তাই এডিট করা সম্ভব হচ্ছে না। যেভাবে আছে, তুলে দিলাম…
*********************************
২৩শে মে আমাদের গ্রামে যে গনহত্যা হয়েছিল, তাতে ঐদিন আমরা যারা বেঁচে গিয়েছিলাম, পরবর্তিতে তারাও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলাম।
ঐদিনের ঘটনার পর গ্রামে বসবাসকারী বিশেষ করে প্রাপ্তবয়ষ্ক পুরুষগন বুঝলেন, পাকিস্তানী আর্মি ক্যাম্পের এত কাছে থেকে বসবাস করাটা নিরাপদ না। সন্ধ্যা নামলেই তাঁরা ঠিক করলেন দূরে কোথাও গিয়ে রাত্রী যাপন করাটা নিরাপদতর হবে সবার জন্য।
যদিও শুধু নারী ও শিশুদের ঘরে একা ফেলে গ্রাম পুরুষশুন্য হয়ে যাওয়াটা কতটা যৌক্তিক, সেটা ভাববার বিষয় ছিল বটে কিন্তু এরচেয়ে ভাল কোন বিকল্প হয়ত তখন তাঁদের কাছে ছিল না।
গনহত্যার রাত পুরুষশুন্য গ্রাম ইভেন্টলেস ভাবেই কাটলো। সকালে পুরুষগণ বাড়ি ফেরা শুরু করলে গ্রামে আবার প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এলো। কিন্তু আশংকা নিয়ে, যে রাতে আবার পুরুষশুন্য হয়ে পড়বে গ্রামটি।
২৪শে মে দুপুরের পর থেকেই আমার সবচেয়ে ছোটভাই যার বয়স তখন দেড় বছর, সে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। প্রচুর দাস্ত বমি হচ্ছে। তখনকার ভাষায় কলেরা। এখনকার হিসাবে ডাইরিয়া।
গ্রামের একমাত্র এলএমএফ ডাক্তার বললেন স্যালাইন দিতে হবে। স্যালাইন যোগাড় করে আনতে লোক পাঠানো হল। সেই লোক সন্ধ্যার মধ্যে ফিরে এলো না। এদিকে গতদিনের মত গ্রাম পুরুষশুন্য হওয়া শুরু হল।
আব্বা যাওয়ার আগে শেষ অবলম্বন হিসাবে এক হাতুড়ের কাছে রোগী রেখে চলে গেলেন। হাতুড়ে নাড়ি টেপাটেপি করে রায় দিলেন, “মাথায় ক্রিমি উঠে গেছে। কোলে বসিয়ে রাখতে হবে। ক্রিমি নেমে গেলে ঠিক হয়ে যাবে।”
আমার দেড় বছর বয়সের ভাইটা যুদ্ধ-আক্রান্ত, পুরুষশুন্য, চিকিৎসাবিহিন গ্রাম্য পরিবেশে ডাইরিয়ার মারন কামড়ে শুখিয়ে যেতে শুরু করলো।
আমরা, ছোটোরা ঘুমিয়ে যাবার পর, স্যালাইন এসেছিল, কিন্তু তা যিনি দিতে পারতেন, পুরুষশুন্য গ্রামে গভীররাতে তাঁকে পাওয়া গেল না।
আমার মা সহ বাড়ীর মহিলারা সবাই রাত জেগে ভোরের অপেক্ষায় ছিলেন, ডাক্তার সাহেব ফিরলেই স্যালাইন দেয়া হবে, শিশুটা ভাল হয়ে উঠবে।
আমরা ঘুমাচ্ছিলাম দাদীর ঘরে। মা-চাচী অন্যান্য মহিলারা মায়ের ঘরে সারারাত জেগে। ভোররাতে ভাইটা পানি খেতে চেয়েছিল। মা মুখে পানি দিলেন। কিন্তু গিলবার শক্তি পেল না। গড়িয়ে পড়লো।
যুদ্ধের সব নিষ্ঠুরতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আমার ভাই চলে গেল। ওর বয়স হয়েছিল ১৬ মাস ১৮ দিন। সকালটা ২৫শে মে ১৯৭১-এর।
অনেকদিন পর দাদীর সাথে ঘুমিয়েছিলাম। নারীকন্ঠের সমবেত ক্রন্দন স্বরে ঘুম ভাঙ্গলো। ছুটে গেলাম মায়ের মানে আমাদের ঘরে। দেখলাম ছোট্ট ভাইটা নিথর শুয়ে আছে। মনে হচ্ছে ঘুমিয়ে আছে। গভীর ঘুম। কিন্তু গা এত ঠান্ডা কেন?
আমি জানি না যুদ্ধের ক্যাজুয়ালটি মানেই একজনকে শত্রুর গুলিতে আহত বা নিহত হতেই হবে কিনা? তবে আমি নিশ্চিত যে আমার ভাইটা আমার দেখা একজন নুন্যতম বয়সি ওয়ার ক্যাজুয়ালটি। হাতের কাছে স্যালাইন থাকা অবস্থায়ও শুধু যুদ্ধের কারনে তা পুস করতে না পারায় ও মারা গিয়েছিল।
যারা বলে, যুদ্ধে এত লোক শহিদ হয়ে থাকলে তো ঘরে ঘরে শহিদ থাকার কথা। আমি তাদের বলি, হ্যাঁ, আছেতো শহিদ। ঘরে ঘরেই আছে। দেখার চোখ আছে তো?
গত পরশু ছিল ওর বেয়াল্লিশতম মৃত্যু বার্ষিকী।
উৎসর্গঃ কাজী ইউসুফ সাজ্জাদ, জন্ম-৭ই জানুয়ারী ১৯৭০, মৃত্যু-২৫শে মে ১৯৭১…
***********************************
এই লিখাটার একটা ইংরেজী ভার্সন আছে যা আমার আমেরিকা প্রবাসী খালাতো ভাই রাজীবের অনুদিত। যারা ইংলিশ পাঠে বেশী কম্ফর্টেবল তাঁদের জন্য এখানে দিয়ে দিচ্ছি:

Those who survived the mass murder (by the Pakistani Army) in our village on May 23rd of 1971 were still indirectly affected later on.
After the events of that day, the residents of the village – particularly the adult men – realized that it was not safe to live near the Pakistani Army camp. So in the evening, they decided that it would be safer to spend the night somewhere far away. One must wonder whether it was rational to leave the women and children behind, but perhaps they had no better alternative at that time (the genocide of 1971 is also considered by many to be a “gendercide” with the Pakistani soldiers particularly focused on killing Bengali men – so one can imagine why these men thought that they were the sole targets of the Pakistani attack).
Anyway, that night was pretty eventless. In the morning, the men started to return to the village. We, however, remained concerned that everyone would leave again at night.
From the afternoon of May 24th, my youngest brother, who was a year and a half at that time, got pretty sick. He started vomiting severely. At that time, people used to call it “cholera.” Now-a-days, I guess we just call it “diarrhea” (these are names borrowed from English but commonly used in Bengali to describe any disease with symptoms similar to those of gastroenteritis).
The only L.M.F. doctor in the village said that my brother would need IV fluid treatment (commonly known in Bengali as “saline”) **. We sent someone to find saline, but he did not return for some time. At the same time, people started leaving the village in the evening.
As a last resort, my father went to a quack doctor. The quack took my brother’s pulse and delivered his verdict: “He has stomach parasites which moved to his brain. Keep him seated in an upright position, and he will get better as the parasites come down from his head.”
In the war-ravaged village with no men and no medicine, my little brother started to become really weak. After we, the young kids, fell asleep, the “saline” finally came to the village at night. But then, the person in the village who could administer the IV could not be found.
My mother and all other women in the family were up all night waiting for the morning: as soon as the doctor would return, he would administer the IV, and the child would get better.
We were sleeping in our grandmother’s room. My mother, aunt, and others were up all night (in a different room). We woke up hearing cries in female voices. We ran to our mother’s – that is, our – room. My brother was lying there – lifeless. It seemed like he was in a sleep, deep sleep. But why was his body so cold?
I heard later that my brother had wanted some water at dawn. My mother put some water in his mouth. But he had no strength left to swallow. Saying good bye to the cruelties of the war, my brother left. He was 16 months and 18 days old. It was the morning of May 25, 1971
I do not know why the casualty of war must mean being killed or hurt by the bullets of the enemy. I am sure that my brother is the youngest casualty of the genocide of 1971 that I have seen. Even though we got the “saline,” he was killed because there was no one in the village to be able to administer it – there was no one in the village because of the mass murder (of the Pakistani Army).
There are some who say that if so many people were indeed killed in 1971, then there should be martyrs in every family. So I say to them, “Yes, there are martyrs. In every family. You only see them if you have the eyes to see.”
Dedication: Kazi Yusuf Sajjad. Born: January 7, 1970. Killed: May 25, 1971.
** In case you were wondering why he was not given oral rehydration therapy, at that time, IV fluid treatment was considered the primary response to cholera, and the efficacy of oral rehydration therapy was not well known.

২,৭৬৭ বার দেখা হয়েছে

১৬ টি মন্তব্য : “উনিশ’শ একাত্তর: এক শিশুর স্মৃতিচারনা”

  1. সামিউল(২০০৪-১০)

    কালকে আপনার কাছে যুদ্ধের অভিজ্ঞতা শুনতে চাইছিলাম।
    আজকে পড়ার পরে কী বলবো বুঝতেছি না।
    আল্লাহ আপনার ভাইকে নিশ্চয়ই জান্নাতে রেখেছেন, উনি নিশ্চয়ই অনেক ভাল আছেন।


    ... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!

    জবাব দিন
  2. সাবিনা চৌধুরী (৮৩-৮৮)

    :boss: :boss: :boss: :boss

    : যারা বলে, যুদ্ধে এত লোক শহিদ হয়ে থাকলে তো ঘরে ঘরে শহিদ থাকার কথা। আমি তাদের বলি, হ্যাঁ, আছেতো শহিদ। ঘরে ঘরেই আছে। দেখার চোখ আছে তো?

    আমরা অন্ধ ও বধির একই সাথে... ...

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      "আমরা অন্ধ ও বধির একই সাথে... ..."
      সাথে কিছুটা কনফিউজডও।
      নাইলে এখনও স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক হয়?
      ঘোষনাকারী, ঘোষক ও ঘোষনা পত্র পাঠকারি - এগুলোর পার্থক্য বোঝা কি এতই কঠিন কিছু?


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
        • পারভেজ (৭৮-৮৪)

          আমার তো ধারনা, আসলে একটুও না।
          কিন্তু হাওয়া বুঝে ভান করি কনফিউজড হবার।
          তানা হলে ১৭৭৬-এ প্রথম "স্বাধীনতার ঘোষণা" দিয়ে একটি দেশ (ইউএসএ) স্বাধীন হবার পর, পরবর্তি প্রায় দুশো বছরে আর কেউ যে ঘোষণা দিয়ে স্বাধীন হতে পারলো না, ১৯৭১-এ দ্বিতীয় দেশ হিসাবে বাংলাদেশ ঘোষনা দিয়ে তারপরে স্বাধীন হলো, এটা যে কেবলই একটা ঘোষনার কারনে ঘটে নাই, সেইটা বোঝার মত গ্রে-ম্যাটার তো গরু-ছাগলেরও থাকার কথা, তাই না?
          ১৭৭৬-১৯৭১ পর্যন্ত স্বাধীনতা অর্জন করা দেশগুলাতে "স্বাধীনতার ঘোষক" হবার মত একজন মেজর না থাকার কারনেই তাদেরকে বছরের পর বছর বোকার মত স্ট্রাগল করে যেতে হয়েছে - এটা যারা ভাবে, তারা বোকার স্বর্গেই বাস করছে।
          মনেহয় না সেরকম কেউ আছেন।
          আর এই জন্যই বলেছি "কিছুটা কনফিউজড"

          তবে তোমার ধরাটা দারুন ছিল :hatsoff: :hatsoff:


          Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

          জবাব দিন
  3. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    প্রথমটির দার্শনিক বিশ্লেষণে বিমুগ্ধ, জোয়ার ভাটা কি করে জীবন মৃত্যুর নিরূপক হতে পারে!
    আর দ্বিতীয়টির হৃদয় বিদারক পরিণতিতে বাকরুদ্ধ! ইংরেজী অনুবাদটি আর পড়তে পারিনি।
    আল্লাহতা'লা তাকে বেহেশ্তের বাগানে চির শান্তিতে রাখুন! (সম্পাদিত)

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      ওরা বেরুতো কোন এক অজুহাতে কিলিং স্প্রী নিয়ে।
      যাঁরা মারা পড়তেন, তাঁরা ছিলেন কোন না কোন কারনে দুর্ভাগ্যের শিকার, ওদের সামনে পড়ে যাওয়ায়।
      আমরা যাঁরা বেঁচে গেছি, অনেক সময়ই তা কেবলই কপাল গুনে।
      উল্টোটা ঘটলে আমরাই হতাম নিহত, আর ওঁরা বেঁচে থাকতেন।

      আমি প্রথম যখন ব্যাপারটা বুঝলাম, মনেহলো, আমাদের বেঁচে থাকাটা তাঁদের মৃত্যুর দামে কেনা। তাঁরা নেই কেবল সেজন্যই আমরা আছি।
      আমরা প্রায়ই বলি "লক্ষ প্রানের বিনিময়ে এটা আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা"
      আমার তো মনেহয়, আরও বেশী চিৎকার করে বলা উচিৎ, "ঐসব লক্ষ প্রানের বিনিময়েই আসলে প্রথমতঃ আমাদের এই বেঁচে থাকাটাই"......


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
  4. সাইদুল (৭৬-৮২)

    যুদ্ধের ক্যাজুয়ালটি মানে শুধু গুলিতে নিহত নয়, ওই সময়ের সকল মৃত্যুই যুদ্ধের ক্যাজুয়ালটি। যে সময়ের কথা লিখেছো সে সময় আমাদের এলাকায় ডিরিয়া ছড়িয়ে পড়েছিলো, সেবার ভীষণ বণ্যাও হয়েছিলো আমাদের এলাকায়। আমার দাদাবাড়িকে মনে হত দ্বীপের মত। তোমার ভাইএর জন্য কষ্ট হচ্ছে। যারা শহীদের সংখ্যার হিসাব মেলাতে পারেনা, তাদের এসব জানা উচিত।


    যে কথা কখনও বাজেনা হৃদয়ে গান হয়ে কোন, সে কথা ব্যর্থ , ম্লান

    জবাব দিন
    • পারভেজ (৭৮-৮৪)

      "যারা শহীদের সংখ্যার হিসাব মেলাতে পারেনা, তাদের এসব জানা উচিত" - একদম ঠিক।
      "সেবার ভীষণ বণ্যাও হয়েছিলো আমাদের এলাকায়" - হ্যাঁ, হয়েছিল। একটা ঘুর্নিঝড়ও হয়েছিল, মনে আছে। একে তো যুদ্ধ, তাঁর উপরে সাইক্লোণ, বেশ ভালই বিপদে পড়া গিয়েছিল.........


      Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

      জবাব দিন
  5. নূপুর কান্তি দাশ (৮৪-৯০)

    সাহস করে তবু পড়তে এলাম।
    বাংলাদেশ যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছিল, কোন চুক্তির মাধ্যমে নয়। এত হত্যা এত রক্তপাত -- সেও আমরা ভুলতে বসেছি।
    ঈডিপাস থেকেও আমাদের স্খলন অধিক।

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : সাবিনা (৮৩-৮৮)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।